উম্মী হওয়া
রসুলেপাক (ﷺ) এর নবুওয়াতের একটি অন্যতম দলীল এই যে, তিনি উম্মী বা অক্ষরের অমুখাপেক্ষী ছিলেন। তিনি লিখতে জানতেন না। তাঁর জন্ম হয়েছিলো এমন সম্প্রদায়ে যারা সকলেই ছিলেন নিরক্ষর। তাঁর প্রতিপালন হয়েছিলো এমন এক শহরে যেখানে জ্ঞানবিজ্ঞানের অধিকারী কেউ ছিলো না। তিনি এমন কোনো শহরে কখনও সফরও করেননি, যেখানে ছিলো জ্ঞানী ব্যক্তিদের বসবাস। তাহলে তাঁর লেখাপড়া শিখে নেয়া সম্পর্কে ধারণা করা যেতো। তাহলে হয়তোবা পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব তওরাত—ইঞ্জিলের জ্ঞান লাভ করতে পারতেন এবং পূর্ববর্তী উম্মতদের খবর ও তাদের অবস্থা জেনে যেতেন। তখন পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবের বড় বড় আলেমও ছিলেন, যাঁরা আপন আপন স্থলে ছিলেন খ্যাতিমান। তৎসত্ত্বেও রসুলেপাক (ﷺ) ওই সকল জাতির প্রত্যেক শাখার অনাচার সম্পর্কে এমন এমন দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন, যা ওই আলেমেরা সমন্বিত চেষ্টাতেও পারতেন না। এটাই এ কথার সর্বপ্রথম দলীল যে, রসুলেপাক (ﷺ) এর কাছে ছিলো আল্লাহ্তায়ালারই রক্ষিত আমানত। একথাটি ভালোভাবে চিন্তা করা উচিত যে, শিক্ষাগ্রহণ এবং জ্ঞানার্জন ছাড়াই তিনি এলেম ও মারেফতের যে মাকামে উপনীত হয়েছিলেন, সেখানে উপনীত হওয়া পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। এও চিন্তা করা উচিত, আরবের যে লোকগুলো মূর্খতা, অজ্ঞতা এবং অসততার দিক দিয়ে নিুতম স্তরে পৌঁছে গিয়েছিলো, তাঁরই (ﷺ) শিক্ষা ও পরিচর্যায় সততার কতইনা উচ্চ স্তরে পৌঁছে গিয়েছিলো তারা। এসব ছিলো আল্লাহ্তায়ালার দান। কেউ যদি নবী করীম (ﷺ) এর চরিত্র, গুণাবলী, পূর্ণত্ব, বিনয় ও শিষ্টাচার সম্পর্কে একটু চিন্তা করে দেখে তবে প্রথমেই তার মনে হবে, তাঁর মতো মানুষ পৃথিবীতে আসেননি।
➥[কিতাবঃ মাদারেজুন নবুওয়াত। মূলঃ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله)]
© | সেনানী এপ্স |