সালামের বর্ণনা
✍ কৃতঃ আল্লামা আজিজুল হক আল কাদেরী (رحمة الله) ➡ মুনিয়াতুল মুছলেমীন [১ম খন্ড]
❏ মাসয়ালা: (২৪৪)
সালামের অর্থ নিরাপত্তার দু‘আ। তাহিয়্যা অর্থ শান্তির জন্য দু‘আ করা।
দুনিয়াবী বিপদ, মানসিক মসীবত, বুযুর্গী, মর্যাদার ও সুস্থতার জন্য দু‘আ করা।
➥ [আল ফিকহুল ওয়াহি:খ,৩ পৃ:২৭৭]
❏ মাসয়ালা: (২৪৫)
কাউকে سَلَامٌ عَلَيْكَ. سَلَامُ عَلَيْكُمْবলার কি হুকুম? তা বৈধ। তবে পরিপূর্ণতার বিপরীত।
❏ মাসয়ালা: (২৪৬)
عَلَيْكَ السَّلَامُবলাকি বৈধ? উত্তর তা মাকরূহ।
➠তিরমিযী ও আবু দাউদে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে, হযরত জাবের ইবনে সালাম যখন রাসূলের সাথে সাক্ষাত করলেন তখন তখন তিনি
اَلسَّلَامُ يَا رَسُوْلَ اللهِ عَلَيْكَ বললেন, তখন নবী (ﷺ) ইরশাদ করেন, তুমি عَلَيْكَ السَّلَامُ বলনা, কেননা তা মৃতদের সালাম। এবং তুমি أَلسَّلَامُ عَلَيْكَ বল।
➥ তার সনদ হাসান, সিরাজুম মুনীর, খ, ৩, পৃ:২৭৮।
❏ মাসয়ালা: (২৪৭)
সালামের উত্তম পদ্ধতি কি? জবাব: ওয়াও ও বহুবচনের সাথে দেওয়া উত্তম। অর্থাৎ, وَعَلَيْكُمُ السَّلَامْ বলবে। এবং سَلَامٌ عَلَيْكُمْবলাও বৈধ।
কেননা তখন ওয়াও একটি উহ্য বাক্যের দিকে ইশারা করে। অর্থাৎ, اَلسَّلَامُ عَلٰى وَ عَلَيْكُمْ তাতে নিজের উপরও সালাম দেওয়া বুঝা যায়।
❏ মাসয়ালা: (২৪৮)
সালামের জবাবে শেষ শব্দ বারাকাতুহু।
❏ মাসয়ালা: (২৪৯)
সালামের উত্তর ইশারা দ্বারা যথেষ্ট নয়। হ্যাঁ যে ব্যক্তি বোবা বা সে দূরে তখন ইশারা দ্বারা জবাব দেওয়া বৈধ। যদি দূরে না হয় তখন ইশারা দ্বারা সালামের জবাব দেওয়া মাকরূহে তাহরিমী। কেননা তা আহলে কিতাবের আমল। ইহুদীরা সালামের জবাব আঙ্গুলের ইশারা দ্বারা দিয়ে থাকেন। খ্রিষ্টানরা সালামের জবাব হাতের ইশারা দ্বারা দিয়ে থাকেন। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমাদের পদ্ধতি গ্রহণ না করে বিজাতীয় পদ্ধতি গ্রহণ করবে সে তাদের দলের। মোট কথা আঙ্গুল বা হাতের ইশারা দ্বারা সালাম ও সালামের জবাব দেওয়া বিজাতীয় রীতি তাই তা গ্রহণ করা যাবে না।
হ্যাঁ যদি কোন মুসলমান দুরে বা একজনের আওয়ায অপরজন শুনে না তখন মুখে বলে হাতে ইশারা করতে পারবে।
❏ মাসয়ালা: (২৫০)
বোবা ও বধিরকে ইশারা দ্বারা সালাম দেওয়া বৈধ। তবে মুখে উচ্চারণ করা উত্তম। হাতের ইশারা করে তাদেরকে জবাব দেওয়াতেও পূণ্য রয়েছে।
❏ মাসয়ালা: (২৫১)
আরবীদেরকে আযমী লোক আযমী ভাষায় সালাম দেওয়া ও আযমীদেরকে আরবীরা আযমী ভাষায় সালাম দেওয়া এবং এভাবে জবাব দেওয়া বৈধ।
❏ মাসয়ালা: (২৫২)
মুয়াজ্জিনকে আযানের সময় সালাম দেওয়া মাকরূহ। বাচ্চাদের সালামের জবাব দেওয়া বালেগদের উপর ওয়াজিব।
❏ মাসয়ালা: (২৫৩)
মহিলা মহিলাদেরকে সালাম করা সুন্নাত। পুরুষ মুহরাম মহিলাদেরকে সালাম করা বা বিবিকে সালাম করা বৈধ। সালামের উত্তর দেওয়া মহিলাদের উপর ওয়াজিব। যুবকদের ফিতনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যুবতী মহিলাদের সালাম দেওয়া মাকরূহ এবং যুবতী মহিলাদের পুরুষের সালামের উত্তর দেওয়াও মাকরূহ। কোন পুরুষকে যদি যুবতী মহিলা সালাম দেয় তখন পুরুষ মনে মনে তাকে উত্তর দিবে তেমনি মহিলাও মনে মনে উত্তর দিবে। মহিলাদের দলকে পুরুষের সালাম দেওয়া বৈধ। তেমনি পুরুষের দলে মহিলাদের সালাম দেওয়া বৈধ।
❏ মাসয়ালা: (২৫৪)
ফাসেক যার ফিসক প্রসিদ্ধ যেমন শরাবী, জুয়াখোর, মিথ্যা সাক্ষী প্রদান কারী, পবিত্র মহিলাদেরকে অপবাদ দানকারী, চোগলখোর, গীবতকারী, ইত্যাদি কবীরা গুনাহতে লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া মাকরূহ এবং ধমকি স্বরূপ তাদের সালামের জবাব দেওয়াও মাকরূহ।
যদি কষ্ট দেওয়ার আশংখা হয়, তখন তাদেরকে সালাম দেওয়া ও তাদের সালামের জবাব দেওয়াও বৈধ।
ঘরে প্রবেশের সময় পরিবারকে সালাম দেওয়া মুস্তাহাব। মজলিস থেকে ফারেগ হওয়ার সময় বিদায়ী সালাম দেওয়া উত্তম।
যখন মহান আল্লাহ হযরত আদম (عليه السلام)কে সৃষ্টি করলেন, তখন তিনি ষাট হাত লম্বা ছিলেন তখন আদেশ দিলেন সে ফেরেশতাদের দলে গিয়ে সালাম কর যারা বসে রয়েছে তাই তা তোমার ও তোমার উম্মতের সালাম।
❏ মাসয়ালা: (২৫৫)
➠হাদিসে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَا مِنْ أَحَدٍ يُسَلِّمُ عَلَيَّ ، إِلاَّ رَدَّ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلَيَّ رُوحِي ( أى رد على نطقى لأنه فى دائما و روحه لا تفارقه لأن الأنبياء أحياء فى قبورهم ) حَتَّى أَرُدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ.
অর্থ: হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন, যে কোন ব্যক্তি আমাকে সালাম দিবে তখন মহান আল্লাহ আমার আত্মাকে ফেরত দেন। [অর্থাৎ, আমাকে কথা বলার সুযোগ দেন; কেননা; তা আমার ভেতর সব সময় থাকে। তার আত্মা তার থেকে কখনো পৃথক হয় না; কেননা নবীরা তাদের কবরে জীবিত থাকেন।] যাতে আমি তাদের সালামের উত্তর দিত পারি।
______________________
টিকাঃ মাসুম বিল্লাহ সানি
হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «ما من أحد يسلم على الا رد الله علي روحى حتى ارد عليه السلام -
رواه ابو داؤد والحمد والطبراني والبيهقي . وقال العسقلاني : رواه أبو داود ورواته ثقات، وقال الهيثمى : وفيه عبد الله بن يزيد الاسكندرانى ولم اعرفه ومهدى بن جعفر ثقه وبقية رجاله ثقات.
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, "যখন তােমাদের কেউ আমার প্রতি দরূদ প্রেরণ করে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা আমার রূহ ফিরিয়ে দেন, এমনকি আমি তার সালামের জবাব দেই।"
তথ্যসূত্রঃ
১.ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, কিতাবু মানাসিক, ২/২১৮ পৃ. হা/২০৪১, সনদঃ সহিহ
২.আন-নাসাই তাঁর কিতাব আল-দু‘ফা ’ওয়া’ ই-মাতরুকিন, পৃষ্ঠা -১৬৮।
৩.আল দারিমির আল-তারিখ, পৃষ্ঠা ২৬০।
৪.ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ১৬/৪৭৭ পৃ. হা/১০৮১৫,
৫.ইবনে ইসহাক আল রাহূইয়াহ তার মুসনাদে, ১/৪৫৩ (৫২৬ & ২০৪১)।
৬.ইবনে ‘আসাকির’ মুক্ততাসার তারিক দিমশাক, ২/৪০।
৭.আবু নু'আয়াম আল-ইস্পাহানীঃ আখবার আল-আসবাহান, ২/৩৫৩।
৮.তাবারানীঃ মুজাম আল-আসাতঃ ৩/২৬২ (৩০৯২, ৯৩২৯)/ ৪:৮৪, হাদীস নং ৩১১৬।
৯.আল-বায়হাকী আল-সুনান আল-কুবরা, ১/৫১৯: হাদীস ১৬৬৬, ৩/২৪৯: হাদীস ৫৭৮৯
১০.বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, ২: ২১৫। হাদিস নম্বর: ১৫৭১।
১১.মুনযিরী: আততারগিব ওয়াত তাহহীব মিনাল হাদীসিশ শরীফ, ২:৩৬২, হাদীস নং ২৫৭৩।
১২.ইমাম সুয়ূতীঃ আল-হাওই লিল ফাতওয়া, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা নং ২৭১-২৭২
১৩.ইমাম আন নওয়াবী (رحمة الله) এই হাদীস সম্পর্কে বলেছেন: رَوَاهُ أبُو دَاوُدَ بإسناد صحيح অনুবাদ: এটি আবু দাউদ (রহঃ) "সহীহ সনদ" দ্বারা বর্ণনা করেছেন।
১৪.নাওয়াইল আল আওতার ৫/১৬৪।
১৫.রিয়াদ উস সালিহীন ১/২৫৫, হাদীস ১৪০২।
১৬.ড. তাহেরুল ইসলাম কাদেরীঃ প্রিয় নবীর পরকালীন জীবন ও খাসায়েল মুস্তফা (ﷺ)
১৭.আলবানীর সংস্করণ জিয়ারাতুল কুবুরের অধীনে (# 2041) এটিকে "হাসান" বলেছে।
১৮.আলবানীঃ সিলসিলাহ আহাদিস আল-সহিহাহ [২২৬৬]
১৯.ইবনে হাজার আল-আসকালানী, তাকরিব-আল তাহযিব, ১/২০০।
২০.আসকালানী, ফতহুল বারী, ৬: ৪৮৮।
২১.আসকালানী, তালখীসুল জহীর। ২: ২৬৭।
২২.ইবনে আল-নাজ্জার, আখবার আল-মদীনা, পৃ .১৪৪।
২৩.তফসীরে ইবনে কাসীর, 6: 464।
২৪.হাফিজ আল-দারাকুতনী ইবন হিব্বান তাঁর আল-সিকাহ, ১৮৮ তে উদ্ধৃত করেছেন।
২৫.হায়সমী: মাজমাউয যাওয়ায়িদ ওয়া মানবাউল ফাওয়ায়িদ, 1/162 এবং ১০:৩৪৯।
২৬.ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/২৯১ পৃ. হা ৯২৫।
২৭.আল্লামা মুত্তাকি হিন্দি, কানযুল উম্মাল, ১/৪৯১ পৃ. হা/২১৫৬,
২৮.মুরতদা আল-জাবেদী, ইতাফ আল-সাদাত আল- মুত্তাকিন, 4/419 এবং 10/365।
২৯.ইবনে রাহবীয়া: আল মুসনাদ, ১/৪৫৩, হাদিস: ৫২৬।
৩০.ইমাম কাসতালানীঃ আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যা, ৩য় খন্ড, ৪২৭ পৃ।
৩১.আল-মিয্যিঃ তাহযিব আল-কামাল, 7/366।
৩২.মুনাবী, ফয়যুল কদীর ৫: ৪৬৭।
৩৩.উনদুলুসী, তােহফাতুল মােহতাজ। ২: ১৯০।
৩৪.আবু তাইয়িব, আওনুল মাবুদ। ৬: ১৯, ২০।
৩৫. যারকানী, শরহুল মুয়াত্তা। ৪: ৩৫৭।
৩৬. শাওকানী, নাইলুল আওতার ৫: ১৮০।
৩৭. ইবনু জাওযী, ছাফওয়াতুছ ছাফওয়া। ১: ২৩৩।
৩৮. সুবকী, শিফাউস সিকাম ফি যিয়ারাতি খাইরিল আনাম। ১৩৬।
৩৯. মুকরীযী, ইমতাউল আসমা। ১: ৩০৬, ৩০৭, ৩০৮।
৪০. ইবনু কুদামা । আল মুগনী । ৩: ২৯৭, ২৯৮।
৪১. ফিরােজাবাদী, আস সালাতু ওয়াল বাশারু ফিস সালাতি আলা খইরিল বাশার । ১০৩, ১০৪।
৪২. সুয়ূতী, আল খাসায়িসুল কুবরা । ২: ২৮০।
৪৩. সুয়ূতী, আর রাসায়িলুলত্ তিস্'। ২৩৫।
৪৪. সাখাবী, আল কওলুল বদী ফিস সালাতি আলাল হাবীবিশ শফী (ﷺ)।
হাদিসটির মান ও সনদ পর্যালোচনা :
▶এ হাদিসকে ইমাম আবূ দাউদ, আহমদ, তাবরানী এবং বায়হাকী বর্ণনা করেছেন।
▶ইমাম আসক্বালানীও বলেন,
ইহাকে ইমাম আবু দাউদ বর্ণনা করেছেন এবং ইহার বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য।
▶ইমাম হায়ছমীও বলেন, ইহার সনদে আব্দুল্লাহ ইবনু ইয়াজিদ আল- ইস্কান্দারানী বর্ণনাকারীকে আমি চিনি না, যখন মাহদী ইবনু জাফর এবং অপরাপর সমস্ত বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য।
______________________
শায়খুল ইসলাম মুহাম্মদ ইবনে সালেম হানাফী নিজ হাশিয়াতে লিখেন, এখানে যে কোন ব্যক্তি সালাম দেবে যদিও সে দূরে হোক কবর থেকে; কিন্তু কিছু লোক এখানে নিকটবর্তী হওয়ার শর্ত লাগান। যদি দূরে হয় তখন ফেরেশতা তা তার দরবারে পৌঁছিয়ে দেন। রাসূল (ﷺ) কবরে স্বচক্ষে দেখেন যেমন দুনিয়াতে দেখতেন কিন্তু তাকে দুনিয়াতে ধর্ম প্রচারের ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন ও মানুষের সাথে উঠাবসার জন্য তার আত্মা আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত থাকার সাথে; কিন্তু কবরে মানুষের সাথে তার সম্পর্ক নেই। তাই তিনি কথা বলেন না, তবে যখন কেউ তাকে সালাম জানাই, তখন তার সম্মানের জন্য তার আত্মা ফেরত দেওয়া হয় তখন তিনি তার উত্তর দেন।
❏ মাসয়ালা: (২৫৬)
فحيوا بأحسن منها الخ
এ আয়াত দ্বারা সাধারণভাবে সকলের উপর সালামের উত্তর প্রদান ওয়াজিব বুঝা যায়। অথচ কিছু লোকের উপর ওয়াজিব। তাই জালালাইন প্রণেতা বলেন, সুন্নাত দ্বারা কিছু তা থেকে ভিন্ন রয়েছে। যেমন কোন কাফির সালাম দিলে তখন তার উত্তর দেওয়া ওয়াজিব নয়। তেমনি ঐ ব্যক্তি যারা বেদাতী অর্থাৎ, সে ইসলামের বিশ্বাস সুন্নাতের বিপরীত আক্বীদা পোষণ করে। যেমন খারেজী ও রাফেযী ইত্যাদি এবং যে ব্যক্তি সুন্নাতের বিপরীত আমল শুরু করবে। যেমন তাজিয়া করা যা তারা পূণ্য মনে করে করে, তেমনি ফাসেক তারা ধর্মে নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত। যেমন ঘোষ নেওয়া, গান বাজনা করা, যেনা করা ইত্যাদি। তেমনি কোন ব্যক্তি তার হাজত পূরণ করছে তাকে সালাম দিলে উত্তর দেওয়া ওয়াজিব নই। তেমনি যে ব্যক্তি গোসল খানায় রয়েছে বা যে ব্যক্তি খানা খাচ্ছে তাকে কেউ সালাম করল তখন তার উপর জবাব দেওয়া ওয়াজিব হবে না; বরং শেষোক্ত ব্যক্তি ব্যতীত অন্যকে সালামের উত্তর দেওয়া মাকরূহ। শেষোক্ত ব্যক্তিকে চাইলে জবাব দিতে পারবে। কাফিরের জবাব যদিও ওয়াজিব নয় তবে তা সত্ত্বেও যদি তাকে জবাব দিতে চায় তখন و عليك বলে জবাব দিতে পারবে। তাদেরকে আগে সালাম করা সুন্নাত নয়।
আলিমগণ বলেন, এ যুগে উত্তম পদ্ধতি হল, হাতে ইশারা করে নিয়ত বিহীন সালাম দেবে বা আর যদি জিহ্বা দিয়ে বলে, তখন আল্লাহর নেক বান্দাহদের নিয়ত করবে, ফেরেশতাদের নিয়ত করবে, বাহ্যিকভাবে তাকে দেওয়া হবে।
নামাযী ব্যক্তিকেও সালাম দেওযা সুন্নাত নয় বা কেউ আযান দিচ্ছে বা খুতবা পড়ছে বা সে দু‘আ করছে তাদেরকেও সালাম দেওয়া সুন্নাত নয়। তাদের উপর জবাব দেওয়াও ওয়াজিব নয়। যে ব্যক্তি শব্দ দিয়ে কোরআন পড়ছে বা হাদিস শরীফ বর্ণনা করছে বা জ্ঞান চর্চা করছে তাকেও জবাব দেওয়া ওয়াজিব নয়। মুলাকাতের সময় সালাম দেওয়া সুন্নাত। ছাত্র যদি সবক নেওয়ার জন্য আসে তখন তার সালামের উত্তর দেওয়া তার উপর ওয়াজিব নয়। সালাম সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ জবাব দেওয়া ওয়াজিব। যে ব্যক্তি সালামের উত্তর দেয়না তার আত্মা খারাপ হয়ে যায় পাপের কারণে। তখন সালাম প্রদানকারীকে ফেরেশতারা উত্তর দেন। তাফসিরে মাদারিকে এসেছে, ইমাম আবূ ইউসূফ থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি দাবা খেলে বা সেরকম অন্য কোন খেলনায় সে ব্যস্ত বা গান গাইছে বা কবুতর দিয়ে খেলা খেলছে তখন তাদেরকে সালাম দিবে না। একা হলে সালাম দেওয়া সুন্নাতে আইন, আর যদি একদল হয় তখন সুন্নাতে কেফায়া অর্থাৎ পুরো দল থেকে একজন যদি সালাম দেয় তখন সকলের জিম্মাদারী থেকে সালাম আদায় হবে; তবে সওয়াব পাবে যে সালাম দিয়েছে। আর যদি সকলে সালাম করেছে তখন সকলকে সওয়াব দেয়া হবে। যদি একজন ব্যক্তিকে একদল সালাম দিল তখন একটি উত্তর সবার জন্য যথেষ্ট হবে, আর যদি একদল হয় তখন সকলে উত্তর দেওয়া উত্তম, আর যদি একজন উত্তর দেয় তখন সকলের পক্ষ থেকে আদায় হবে; তাই পুরো দলের পক্ষ থেকে জবাব দেওয়া ওয়াজিবে কেফায়া এবং জবাব হঠাৎ দেওয়া ওয়াজিব। একদলের পক্ষ থেকে যদি একজন নাবালেগ বাচ্চা উত্তর দেয় তখন তা আদায় হবে না; কেননা সালামের উত্তর নিরাপত্তা দেওয়া, ছোট বাচ্চা নিরাপত্তা দিতে পারে না। তবে তারাবীর নামাযে কিছু পরবর্তী আলিমগণ তাদের ইমামতি বৈধ বলেছেন, যদি সে হাফিয হয়।