খোতবার বর্ণনা
✍ কৃতঃ আল্লামা আজিজুল হক আল কাদেরী (رحمة الله) ➡ মুনিয়াতুল মুছলেমীন [১ম খন্ড]
❏ মাসয়ালা: (৯৫)
আজকাল সময়ে (বর্তমানে) জুমার খোতবায় বাদশাহগণের নাম নেওয়া হয়। তাদেরকে عادل তথা ন্যায়বিচারক বলা হয়ে থাকে এবং তাদের প্রশংসা ও গুণকীর্তন করার প্রথা খতিবদের মধে পরিলক্ষিত হয়- যা হারাম। কেননা, বাদশাহ্ জালেম আর জালেমকে আদেল তথা ন্যায় বিচারক বলা কুফরী। আর তাদের প্রশংসা করা মিথ্যা-বানোয়াটি এবং তোশামোদ। কোন কোন ইমাম বলেন- তোমরা এ সমস্ত খতিবদের থেকে দুরে বস যেন তাদের মিথ্যা এবং এ সমস্ত জালেম ও ফাসেকের প্রশংসা শুনতে না হয়।
➥ [মেরকাত, মেরআত]
❏ মাসয়ালা: (৯৬)
যখন খুতবা প্রদানের জন্য ইমাম সাহেব মিম্বরে বসেন তখন মুয়াজ্জিন ইমামের বরাবর সামনে কিছুটা দুরে আজান দিতে হবে। তবে প্রথম আজানের আওয়াজ (কন্ঠস্বর) হতে দ্বিতীয় আজানের আওয়াজ নিম্নস্বরে হতে হবে। অনেক ফকীহগণ দ্বিতীয় আজানের জওয়াব দেওয়াটা মাকরূহ বলেছেন। কিন্তু হযরত আমীরে মুয়াবিয়া (রা.)-এর একটি ঘটনা ছহীহ বুখারী শরীফ ১ম খন্ডের ১২০ পৃষ্ঠায় নকল করা হয়েছে, যার উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ফকীহগণ এটি অর্থাৎ আজানের জওয়াব দেওয়া জায়েয বলেছেন।
➠হযরত আবদুল হাই লক্ষ্মৌবী প্রণীত ‘উমদাতুর রে-আয়া’ নামক কিতাবে এটিকে ছহীহ শুদ্ধ বলে মতপোষণ করেছেন।
فلا تكره اجابة الاذان الذى يؤذن بين يدى الخطب وقد ثبت ذالك من فعل معاوية فى صحيح البخارى .
অর্থাৎ: খতিবের সামনে অবস্থানকারীগণ আজানের জওয়াব দেওয়া মাকরূহ নয়। যা হযরত মুয়াবিয়া (রা.) হতে প্রমাণিত।
➥ [উমদাতুর রেআয়া, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-২৪৪]
হ্যাঁ, তবে انصاف তথা সুবিচার ও পক্ষপাতহীন হচ্ছে শ্রোতাগণ অন্তরে গোপনে গোপনে জওয়াব দিবে।
❏ মাসয়ালা: (৯৭)
নামাজের পূর্বে জুমার খুতবা প্রদান ওয়াজিব। আর দু’ঈদের খুতবা নামাজের পরে দেওয়া সুন্নাত। এই খুতবা না পড়া খারাপ এবং সুন্নাত পরিহারকারী। জুমার ক্ষেত্রে খুতবা পরিহারকারী গুনাহগার হবে। জুমার নামাজে অতিরিক্ত কোন তাকবীর নাই; পক্ষান্তরে দু’ ঈদের নামাজের মধ্যে প্রতি রাকাতে তিনটি করে অতিরিক্ত তাকবীর বলা হয়ে থাকে।
❏ মাসয়ালা: (৯৮)
জুমার খুতবার ন্যায় দু’ঈদের মধ্যেও দুটি খুতবা রয়েছে আর এই দুই খুতবার মধ্যবর্তী বসা সুন্নাত।