কিতাবঃ কালামে রেযা (হাদায়েকে বকশিশ কিতাব থেকে বাছাইকৃত কাব্যানুবাদ)
মূলঃ আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেজা খান বেরলভী (রহঃ)
অনুবাদকঃ হাফেজ মুহাম্মদ আনিসুজ্জমান
প্রুফ রিডিংঃ
ফাতেমাতুজ জুহরা শাকিলা
শাহেদা আক্তার (শাকি)
প্রকাশনায়: আ’লা হ্যরত রিসার্চ এন্ড পাবলিকেশন্স
কালামে রে
মূল।
হিজরি চতুদর্শ শতাব্দীর মহান মুজাদ্দিদ আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান (রহ.)
কাব্যানুবাদ। মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান
পৃষ্ঠপােষকতায় পীরে তরীকত ফকীহে বাঙাল হযরতুল আল্লামা মুফতী কাজী মুহাম্মদ আমীনুল ইসলাম হাশেমী
উপদেষ্টা, আ'লা হযরত ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ।
সহযােগিতায়। আবু নাছের মুহাম্মদ তৈয়ব আলী
মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন মুহাম্মদ এরশাদ খতিবী
নামকরণে। . মুফতী কাজী মুহাম্মদ শাহেদুর রহমান হাশেমী
প্রকাশনায়। আ’লা হযরত রিসার্চ এন্ড পাবলিকেশন্স
০১৮১৮-৫৭৩৬৯৮
| প্রকাশকাল।
চতুর্থ সংস্করণ: ১০ শাওয়াল ১৪৩৯ হিজরী
| ২৫ জুন ২০১৮ ইং
মুদ্রণ: শব্দনীড়, আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম। ০১৮১৯-৩৭৭১৪৬, ০১৯৭৯-৩৭৭১৪৬ e-mail:shabdaneerad@yahoo.com
শুভেচ্ছা বিনিময় ও ৪৫ ৮
Kalame Reza (With Bengali translation in Poetry) By A'la Hazrat Imam Ahmed Reza (Ra.), translated by Muhammad Anisuzzaman & puw
lished by A'la Hazrat Research & Publication Center
অভিমত
নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লী আলা রাসুলিহিল কারীম
আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলায়হি ৫০ টিরও বেশী বিষয়ে সহস্রাধিক গ্রন্থ রচনা করে প্রতিটি বিষয়ে তাঁর জ্ঞানের অতল গভীরতার প্রমাণ রেখেছেন। তাঁর কাব্যপ্রতিভাও অভাবনীয়। তবে সেটাকে তিনি বিকাশ করেছেন শুধুমাত্র রাসূল প্রশস্তিতে। তাঁর অতুলনীয় কাব্যপ্রতিভার স্বাক্ষর হিসাবে অনতিক্রম্য উচ্চাঙ্গতা নিয়ে রচিত হয়েছে অমর কাব্য গ্রন্থ "হাদায়েকে বখশিশ"। শরীয়তের গন্ডি চুল পরিমাণ অতিক্রম না করেও এমন অপূর্ব নবী প্রশস্তির নমুনা বিশ্ব সাহিত্যে বিরল। তাঁর সে কাব্য থেকে নির্বাচিত কিছু না’ত সম্প্রতি বাংলায় কাব্যানুবাদ করেছে স্নেহাস্পদ হাফেজ মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান। অনুবাদ একে তাে কষ্টসাধ্য কাজ, তদুপরি আ’লা হযরতের কালামের মর্মার্থ ছন্দে প্রকাশ করা আরও দুঃসাধ্য। অনুবাদক জামেয়ার শিক্ষকতার ফাঁকে ফাঁকে সংক্ষিপ্ত পরিধিতে হলেও এক দুরূহ কাজ সম্পন্ন করেছে, তজ্জন্য তাঁকে মুবারকবাদ জানিয়ে দোয়া করছি। আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলায়হি-এর জীবন কর্মের গবেষণা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান আ’লা হযরত রিসার্চ এন্ড পাবলিকেশন্স না'তের এ অনবদ্য সংকলনটি প্রকাশ করছে জেনে আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি। না'তের এ সংকলনটি আল্লাহ্ ও তাঁর প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরাতে কেরামের সদকায় কবুল করুন! সর্বজন প্রিয়তায় এটা সমাদৃত হােক-এই কামনা করি রাম্বুল আলামীনের দরবারে। আমীন, বিহুরমাতি সাইয়্যিদিল মুরসালীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম।
আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন আলকাদেরী
অধ্যক্ষ, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া
উপদেষ্টা, আ’লা হযরত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
অভিমত
নাহমাদুহু ওয়া নূসাল্লী আলা রাসুলিহিল কারীম
হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বেরেলভী (রহ.) বহুমুখী প্রতিভার এক বিস্ময়কর নাম। ইলমে ফিকহের মধ্যে যিনি ছিলেন যুগের ইমাম আবু হানিফা, ইলমে হাদীসের মধ্যে ইমাম বুখারী, দর্শনে যুগের রাযী, এভাবে নাতে রসুল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভূবনেও তিনি ছিলেন যুগের হাসসান বিন সাবিত। হাসসানুল হিন্দু আ'লা হযরতের কাব্য প্রতিভা এবং নাতিয়া কালামের বিষয়টি আরাে বিস্ময়কর। আ'লা হযরত প্রথাগত কবিদের মতাে কাব্যের সাধনা করতেন না, বরং যখনই তাঁর অন্তরে নবী প্রেমের সিন্ধু হিল্লোলিত হতাে, তখনই কলম নিতেন। অনায়াসে, অবলীলায় আসতাে ছন্দের জোয়ার। বলা যায়, স্বয়ং কাব্য প্রতিভাই যেন আরাধনা করতো আ’লা হযরতকে। কুরআন ও হাদীসে প্রিয় নবীর (সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে সব প্রশংসা গীত হয়েছে, আ’লা হযরতের কলমে তা ছন্দে প্রস্ফুটিত হয়ে অমর কাব্য 'হাদায়েকে বখশিশ' এর রূপ নিয়েছে। উর্দু ফার্সীতে রচিত তাঁর এ হাদায়েকে বখশিশ’ কে কুরআন হাদিসের পুঞ্জিত মর্মার্থই বলা যায়। শানে তাওহীদ ও শানে রেসালতকে সু মর্যাদায় তিনি সংরক্ষিত রেখেছেন অপূর্ব দক্ষতায়। 'হাদায়েকে বখশিশ’ নিয়ে অধুনা আরবী কবি সাহিত্যিকরাও গবেষণায় মেতে উঠেছেন। মিসরের গবেষক প্রফেসর ড. হাযেম ‘হাদায়েকে বখশিশ’ এর সালামে
রেযার আরবীরূপ দিয়েছেন। আবার এটা আরবী কাব্যে রূপান্তর করেছেন ড. হুসাইন মুজীব আল মিসরী। হাদায়েকে বখশিশ’র বাকী শে’রগুলো তিনি সম্পূর্ণ আরবী ছন্দে রূপায়ন করেছেন।
অনুবাদ এক কঠিন কাজ। উর্দু-ফার্সীর উচ্চাঙ্গ (Classic) কাব্যগ্রন্থ ‘হাদায়েকে বখশিশ’কে ভাষান্তর করে তা ছন্দে রূপায়ন করা আরাে দুরূহ। বড় বড় আলিম এমনকি স্বভাবজাত কবির পক্ষেও একাজ দুঃসাধ্য। আনন্দের বিষয় যে, 'হাদায়েকে বখশিশ' থেকে নির্বাচিত কিছু না’ত, যা মুসলিম সমাজে জনপ্রিয় ও বহুল পঠিত তা বাংলা ভাষায় ছন্দের মাধ্যমে অনুবাদ করে এ কঠিন কাজটি সম্পাদন করেছেন আ’লা হযরত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক স্নেহভাজন হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান। মূল না'তে আরােপিত সুর অপরিবর্তিত রেখে না’তগুলাে পড়া যাবে। এ কাজটি নিঃসন্দেহে প্রিয় নবীর অনুগ্রহ, আ’লা হযরতের ফয়েজ এবং সর্বোপরি আমার মুর্শিদে বরহক আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রহঃ) এর বিশেষ দোয়ারই ফল বলে আমার বিশ্বাস। আমি অন্তর থেকে দুআ করছি এবং কামনা করছি সুন্নী ওলামা, শিক্ষার্থী সবার কাছে এ সংকলনটি সমাদৃত হােক! আমীন, বিহুরমাতি সাইয়িদিল মুরসালীন।
শেরেমিল্লাত মুফতী ওবাইদুল হক নঈমী
শায়খুল হাদীস, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া
উপদেষ্টা, আ’লা হযরত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
অভিমত
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা (রহ.) বিস্ময়কর পান্ডিত্যের অধিকারী বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব। জ্ঞান বিজ্ঞানের বিশাল অঙ্গনে রয়েছে তাঁর সফল বিচরণ, তার অসাধারণ কৃতিত্ব চির উজ্জ্বল। দেদীপ্যমান তাঁর রচনাবলী আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তাঁর প্রণীত গ্রন্থের সংখ্যা সহস্রাধিক। শুধু সংখ্যায় নয়, গুনেও, পরিমাণে নয় মানেও অনন্য। 'হাদায়েকে বখশিশ', তাঁর অমর কাব্যগীতি সংকলন। তিনি রচনা করেন রসূলের প্রতি প্রেম ভালবাসার অপূর্ব নিদর্শন নাতিয়া সালাম “মােস্তফা জানে রহমত পেহ্ লাখাে সালাম/ শময়ে বযমে হেদায়াত পেহ্ লাখাে সালাম”
এমন শাশ্বত কাব্যপংক্তির কোন নযীর নেই। শত সহস্রবার উচ্চারিত হয়েও এর আবেদন সৌরভ এতটুকু নিষ্প্রভ হয়না। রসূলের সুমহান শান-মান, মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অনুধাবন, আকিদাগত বিভ্রান্তি নিরসন ও বাতুলতার স্বরূপ উন্মােচনে তাঁর লেখনি এক অব্যর্থ প্রতিষেধক। তাঁর রচিত কবিতার ছত্রে ছত্রে নবীপ্রেমের যে অনন্য সূর অনুরণিত হচ্ছে, তা তাঁর অকৃত্রিম আনুগত্য ও মহব্বতের অক্ষয় প্রতিধ্বনি। পৃথিবী কবি ও কাব্য কম দেখেনি; কিন্তু ইমাম আহমদ রেযার অন্তরাত্মা ছিলাে খােদা প্রদত্ত অসাধারণ প্রতিভা, আশ্চর্য প্রভা ও প্রজ্ঞায় আলােকিত। ইমাম বেরলভীর কাব্যমানসের উপর পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু গবেষক এম ফিল, ও পি এইচ ডি ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন। বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি (পাকিস্তান), আলীগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি(ভারত), ওসমানিয়া ইউনিভার্সিটি (ভারত), কলিকাতা ইউনিভার্সিটি (ভারত), মহিশুর ইউনিভার্সিটি (ভারত) সহ বিশ্বের সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়গুলাের অনেক গুলােতে গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে ও হচ্ছে। নিম্নোক্ত গবেষকগণ ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচনা করেন। যথাক্রমে আল্লামা মুফতি নসরুল্লাহ খান (করাচি), আল্লামা ফয়েজ আহমদ ওয়াইসি (ভাওয়ালপুর), আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ খান সাহেব (লাহাের), আল্লামা গােলাম ইয়াসীন আমজাদী প্রমুখ। মিশর আল আযহার’র অধ্যাপক মুহাম্মদ হাযেম, ইমাম আহমদ রেযা প্রণীত অমর কাব্যের ৩৫০ পৃষ্ঠা সম্বলিত এক বিরাট সংকলন প্রকাশ করেন যা “বাসাতিনুল গুফরান” নামে ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত হয়। বর্তমানে আল আযহারে গবেষক মওলানা মমতাজ আহমদ ছদিদি আ'লা হযরতের কাব্যমানসের উপর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার গবেষণা পত্রের শিরােনাম “আশ শায়খ আহমদ রেযা আল বেরলভী আলহিন্দি শায়িরান আরাবিয়ান” ড. হুসাইন মুজিব আল মিসরী আল মানজুমান্স সালামিয়াহ ফি মাদহি খায়রিল বারিয়্যাহ” শিরােনামে আ’লা হযরতের কাসিদায়ে সালাম’এর পদ্যানুবাদ সম্পন্ন করেন।
বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে আ'লা হযরতের রচিত না'তের জনপ্রিয়তা দীর্ঘদিনের। কাব্যের মর্মার্থ ও সুর অবিকৃত রেখে না'ত প্রেমীদের চাহিদা পূরণে কতিপয় নির্বাচিত না'ত’র কাব্য অনুবাদ করেন। ইসলামী চিন্তাবিদ প্রতিশ্রুতিশীল লেখক, গবেষক ও কবি আ'লা হযরত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর সাবেক সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান। আ’লা হযরত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের কর্মপরিষদসহ সংশ্লিষ্ট সকলের পক্ষ থেকে তাঁকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও মােবারকবাদ।
আশা রাখি সংকলনটি নবী প্রেমিকদের আত্মার খােরাক মেটাতে সক্ষম হবে।
আল্লাহ এ প্রয়াস কবুল করুন। আমীন।
মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভী সভাপতি
আ'লা হযরত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
অনুবাদকের কথা-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহ তা'লার অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা, রাহমাতুল্লিল আলামীনের পবিত্র দরবারে অশেষ দরূদ ও সালাম। অগাধ শ্রদ্ধা জানাই নবীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে যারা ধন্য হয়েছেন তাঁদের প্রতি। কতুবুল আউলিয়া হযরত সৈয়দ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহঃ) এর নূরানী হাতে মসলকে আ’লা হযরতের উপর ভিত্তি দেয়া দেশের শ্রেষ্ঠ দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়ার ছাত্র হওয়ার সুবাদে শৈশব থেকে আ’লা হযরতের প্রতি এক দুর্নিবার আকর্ষণ বােধ করতাম। অজস্র গ্রন্থের প্রণেতা, জ্ঞানের বিশ্বকোষ, হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা (রহ.) সম্পর্কে যত জানতে থাকি বিস্ময়ের পরিধি ততই বাড়তে থাকে।
আ’লা হযরতের না'তে রাসূল সম্পর্কে মুর্শিদে বরহক গাউসে যমান হুযুর ক্বিবলাহ আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ (রহ.)'র পবিত্র মুখে শুনেছিলাম “উনকে শে’ রোঁ মেঁ ইতনী তাসীর, খােদা জানে উনকি দিলকী কিয়া হালত হ্যায়।” এ থেকে আ’লা হযরতের না’তের প্রতিও মুহাব্বত বাড়তে থাকে।
পরিণত সময়ে এসে জামেয়ার কিছু প্রতিভাবান ছাত্রদের ঐকান্তিক আগ্রহে যখন আ’লা হযরত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে তখন আমি জামেয়ারই শিক্ষকতায় আত্মনিয়ােগ করি। আলা হযরতের প্রতি পূর্ব অনুরাগ এ ফাউন্ডেশনের সাথে আমাকে সম্পৃক্ত করে নেয়। ছাত্র জীবন থেকেই ছন্দ, কাব্য সাহিত্য ইত্যাদির প্রতি ঝোঁক ছিল বরাবরই। বহুমুখী প্রতিভার মধ্যে আ'লা হযরতের না'ত রচনার বিষয়টি আরাে বিস্ময়কর। তাঁর কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ "হাদায়েকে বখশিশ’র" মূলউপজীব্য নিঃসন্দেহে না'তে রাসূল।
নাতে রাসূল স্বয়ং আল্লাহ তায়ালারই প্রিয় সুন্নাত। ঈমানদারের রুহে না'তের চাইতে বেশী আবেদন অন্য কিছু সৃষ্টি করতে পারেনা। হযরত হাসসান বিন সাবিত (রা.) কে প্রিয় নবীর গুণগান করায় স্বয়ং নবীজি তাঁকে মিম্বরে দাঁড় করিয়ে দোয়া করেছিলেন, “হে আল্লাহ! তুমি হাসসানকে রূহােকুদস দ্বারা সহায়তা দাও”। বুঝা যায় স্বয়ং প্রিয় নবীর কাছেও একান্ত প্রিয় বিষয় ছিল না’তে রাসুল। ইমাম বুসেরী, শেখ সাদী, আল্লামা জামী, রুমী, আমীর খসরু সকলে নবীর গুণ-কীর্তন করেই নবীপ্রেমিকদের অন্তরে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। আ'ল হযরতও কবি ছিলেন। তবে তিনি তাঁর সমগ্র কবিসত্তা দিয়ে প্রিয় নবী এবং নবীজাত পবিত্র সত্তাদের গুণগানই করে গেছেন শুধু। অন্য কোন উদ্দেশ্যে তার কাব্যপ্রতিভা চর্চিত হয়নি কভু। এ বিষয়ে আ’লা হযরত দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন—
“ম্যায় গদা হোঁ আপনে করীম কা, মেরা দ্বীন পারায়ে নাঁ নেহী”
এ দৃষ্টিতে আ’লা হযরত এক অনুপম আদর্শ। পবিত্র কুরআনে এ কবিসত্তাকেই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে সুরায়ে শুয়ারায়। কবিদের আত্মপ্রবঞ্চনার কথা উল্লেখ করে বলা হয়-“(কবিরা) যা করে না, তাই বলে বেড়ায়। তবে তারা ব্যতিক্রম, যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ কাজ করেছে আর অধিকহারে আল্লাহর যিকির করেছে।” এ বৈশিষ্ট্য আ'লা হযরতের মাঝে দেদীপ্যমান। তিনি এজন্য বলেছেন “কুরআন সে মাইনে না’ত গােয়ী সিকহী” অর্থাৎ কুরআন থেকেই আমি নাতে রাসুল শিখেছি। আ’লা হযরতের না'তের সেই অমর কাব্যগ্রন্থ থেকে দু'একটি নাত নির্বাচন করে বাংলা তর্জমা করলাম এবং তাতে ছন্দ প্রয়ােগ করতে চেষ্টা করি। এখানে প্রসঙ্গত বলা সমীচিন যে, আ’লা হযরতের ‘হাদায়েকে বখশিশ’ অতি উচুমানের, তাও কবিতায় সব মিলিয়ে তার মর্মার্থ উপলব্ধি করে নিজ ভাষায় ব্যক্ত করার মত যােগ্যতা আমার মধ্যে সামান্যও নেই। এ জাতীয় দু'একটি কাজ করতে আমি আল্লামা ফয়েজ আহমদ ওয়াইসীর শরহে হাদায়েকে বখশিশ’র দু'একটি খন্ড অধ্যয়ন করেছি। এগুলাের সাহায্য নিয়ে সর্বোপরি আ’লা হযরতের মাধ্যমে প্রিয় নবীর দয়া দক্ষিণা নিতে চেষ্টা করেছি। সম্বল বলতে আমার ওটুকুই। জ্ঞানগত দৈন্য স্বীকারে আমি সবসময়ে অকপট। এ ক্ষেত্রে আমার শিক্ষাগুরুদের মধ্যে শেরে মিল্লাত আল্লামা নঈমী ছাহেব, মুফতী সৈয়দ অছিয়র রহমান, মুফতি আব্দুল ওয়াজেদ, মুহাদ্দিস হাফেজ সুলাইমান আনছারী, আল্লামা আবুল হাসেম শাহ্ সাহেব, আল্লামা ছালেকুর রহমান সাহেব বিশেষ বিশেষ জায়গায় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সর্বোপরি জামেয়ার অধ্যক্ষ মহােদয় আমাকে উৎসাহ যুগিয়ে কৃতার্থ করেছেন। আমি তাদের প্রতি সর্বাত্মক কৃতজ্ঞতা জানাই।
অনুবাদ বিষয়ে আমাকে গােড়া থেকে যিনি প্রেরণা দিয়ে এসেছেন, তিনি হচ্ছেন আ’লা হযরত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র অর্থ সম্পাদক তরুণ লেখক ও অনুবাদক মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন। শুরু থেকে অনুপ্রাণিত করা ছাড়াও কম্পােজ, পেষ্টিং, সেটিং, প্রিন্টিং-এর প্রায় স্তরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিনি আমাকে আন্তরিক সহযােগিতা দিয়েছেন। শুধু এটাই নয়। তার প্রায় চাপের মুখে আমাকে, সালামে রেযার পূর্ণাঙ্গ পদ্যানুবাদ করতে হয়েছে। আমাদের ফাউন্ডেশনের সকল সদস্য, বিশেষত শব্দনীড়ের মওলানা আবু নাছের মুহাম্মদ তৈয়ব আলী সহ সংশ্লিষ্টদের সহযােগিতা এই মুহুর্তে স্মরণ করছি। আ’লা হযরত রিসার্চ এন্ড পাবলিকেশন্স’র প্রকাশনা বিভাগ থেকে সংকলনটি প্রকাশ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। উৎসাহী পাঠক মহলে আবেদন জাগাতে পারলে আমার অতি ক্ষুদ্র এ প্রয়াস সার্থক মনে করবাে।
নাতগুলাের ক্রমবিন্যাসে মূল কিতাব অনুসরণ করেছি। সেখানে আরবীবর্ণ ক্রমানুসারে শেয়েরগুলাের বিন্যাস করা হয়েছে। সাধারণ পাঠকের আকর্ষণ বহাল রাখতে মূল সুর অবিকৃত রাখতে চেয়েছি। না’তগুলাে আ’লা হযরতের। আমি ভাষান্তর করেছি মূল ও অনূদিত বিষয়ের স্বাদ অভিন্ন হওয়া অসম্ভব- তাই অন্তরের খােরাক হিসাবে উভয়টাকে কোন পাঠক যেন তুলনা না করেন। কেননা তাতে ‘হাদায়েকে বখশিশ’র উপর অবিচার হবে। আ’লা হযরতের কালামই যেহেতু মূল বিষয় তাই এটার নামকরণ কালামে রেযা হয়েছে। এ নামকরণের জন্য মুফতী শাহেদুর রহমান হাশেমীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। না’তগুলাের তর্জমাতে শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে আমি সহজবােধ্যতার চেয়ে কাব্যগুণ সমৃদ্ধিকে প্রাধান্য দিয়েছি। কতটুকু সফল হয়েছি জানিনা, তবে আমি অন্তর দিয়ে চেষ্টা করেছি। মুদ্রণ প্রমাদ ও সম্পদনার ক্ষেত্রে ক্রটি পরিলক্ষিত হওয়া অসম্ভব নয়; তাই পাঠকের সহযােগিতা ও পরামর্শ আমার সম্মুখে চলার পাথেয় বিবেচনা করব।
হাফেজ মুহাম্মদ আনিসুজ্জমান
উচ্চারণ - ১ (১ম অংশ)
ওয়াহ্ কিয়া জুওদ্ ও কারাম হ্যায় শাহে বাত্হা তেরা
‘নেহী’ সুনতা হি নেহী মাংগনে ওয়ালা তেরা ॥
ধারে চলতে হেঁ আতা কে উঅহ হ্যায় কতরা তেরা,
তারে খিলতে হেঁ সাখা কে উঅহ হ্যায় যররা তেরা ॥
ফয়য্ হ্যায় ইয়া শাহে তসনীম নিরালা তেরা
আপ পিয়াসোঁ কে তজসসুস মে হ্যায় দরইয়া তেরা ॥
আগনিয়া পালতে হেঁ দর সে উঅহ হ্যায় বাড়া তেরা,
আসফিয়া চলতে হেঁ সর সে উঅহ হ্যায় রাস্তা তেরা ॥
ফরশ্ ওয়ালে তেরী শওকত কা উলু’ কিয়া জানে
খুসরুওয়া আরশ্ পেহ্ উড়তা হ্যায় পহরীরা তেরা ॥
আসমাঁ খান যমীন খান যমানা মেহমান
ছাহেবে খানাহ্ লক্বব কিসকা হ্যায় তেরা তেরা ॥
ম্যায়ঁ তু মালিকহী কহোঁগা কেহ্ হাে মালিক কে হাবীব
ইয়ানী মাহবুব ও মুহিব্ব্ মে নেহী মেরা তেরা ॥
তেরে কদমোঁ মে জু হ্যাঁ গাইর কা মূঁহ কিয়া দেখে,
কৌন নযরোঁ পেহ্ চড়হে দেখকে তলওয়া তেরা ॥
বাহরে সায়েল কা হোঁ সায়েল কোয়েঁ কা পিয়াসা
খােদ বুঝা জায়ে কলিজা মেরা ছিঁটা তেরা ॥
কাব্যানুবাদ - ১ (১ম অংশ)
কী অশেষ দান দখিনা সাহারার বাদশা তােমার,
শােনে না ‘না’ কখনাে ভিখারী যে দ্বারে তােমার ॥
দানেরই ধারা বহে, সে তােমার ফোঁটা গাে হে
ওই অযুত তারা জ্বলে, সে যে এক বিন্দু দয়ার ॥
উপমা নাই করুণার, হে মালিক জান্নাতী ধারার, খুঁজে পিয়াসী কোথা আপনি দরিয়া তােমার ॥
দুয়ারে রাজ রাজড়া গড়ায়, নসীবে পড়বে আশায়,
সুফীরা মাথা ঠেকায় সে পদচিহ্নে তােমার ॥
কী মােদের সাধ্য আবার, তােমারই মর্যাদা মাপার,
ওগাে বাদশাহ আরশে উড়ে পতাকা তােমার ॥
কী যমীন, কী আসমান, যমানা সেও মেহমান,
এ সৃজন মালিকানায় সে তােমারই, তােমার ॥
আমি বলি তাে মালিক, মালিকের প্রিয়তম সঠিক,
প্রেমেরই এ ভূবনে নেই এ তােমার কি আমার ॥
চরণে হয় যে হাজির, কোথা কি যায় সে ফকীর,
ও চরণতল যে হেরে, চোখে ফের কে আসে তার ॥
দরিয়ার ধারাতে চাই, ভিখারী কুপে না যাই,
তােমারই ছিঁটে ফোঁ-টায় জুড়াবে আত্মা আমার ॥
উচ্চারণ ১ : (২য় অংশ)
চোর হাকেম সে চুপা করতে হ্যাঁ এয়াঁ উসকে খেলাফ,
তেরে দামান মে চুপে চোর, আনোক্ষা তেরা ।।
আখী ঠান্ডা হোঁ জিগার তাযে হোঁ জানেঁ সায়রাব,
সাচ্চে সুরাজ উঅহ দিল আরা হ্যায় উজালা তেরা ॥
দিল আবস খাওফ সে পাত্বা সা উড়া জাতা হ্যায়,
পাল্লা হাল্কা সাহী ভারী হ্যায় ভরােসা তেরা ॥
এক মায়ঁ কিয়া মেরে ইছয়াঁ কী হাকীকত কিতনী
মুঝ সে সও লাখ কো কাফী হ্যায় ইশারা তেরা ॥
মুফত পালা কভী কাম কী আদাৎ নাহ্ পড়ী,
আব আমল পুচতে হ্যাঁ হায়ে নিকম্মা তেরা ॥
তেরে টুকড়োঁ সে পালে গাইর কী ঠোকর পেহ্ না ডাল,
ঝড়কিয়াঁ খায়ে কাহাঁ ছােড় কে সদকা তেরা ॥
খার ও বীমার ও খাতাবাওয়ার ও গুনাহগার হোঁ ম্যায়ঁ,
রাফে' ও নাফে’ ও শাফে’ লক্বব আক্বা তেরা ॥
মেরী তাকদীর বুরী হাে তাে ভালী করদে, কেহ্ হ্যায়,
মাহভ্ ও ইসবাত কে দফতর পেহ্ কড়োড়া তেরা ॥
তু জু চাহে তু আবহী মেরে দিলকে ধুলেঁ,
কেহ্ খােদা দিল নেহী করতা কভী ম্যয়লা তেরা ॥
কিসকা মুহঁ তকিয়ে কাহাঁ জাইয়ে কিস সে ক্যহিয়ে,
তেরে হী কদমোঁ পেহ্ মিট জায়ে ইয়ে পালা তেরা ॥
তুনে ইসলাম দিয়া, তু নে জামাআত মে লিয়া,
তু করীম আব কোয়ী ফিরতা হ্যায় আতিয়্যা তেরা ॥
কাব্যানুবাদ - ১ (২য় অংশ)
চোরা হাকীমে লুকায়, নীতি ভিন্ন যে হেথায়,
পাপী আচঁলে বাঁচে, তুলনা নাই গাে দয়ার ॥
আঁখি ঠান্ডা ও পরান তাজা, তৃপ্ত গাে প্রাণ,
আসলে সূর্য সে তাে, চমক অপূর্ব তােমার ॥
মিছে ভয়ে তাে এ প্রাণ, পাতারূপ দেয় কি উড়ান,
পাল্লা হাল্কা হলেও তােমারই ভরসা ভার ॥
আমি এমন কি? আমার পাপেরও গ্লানি কী আর?
লাখাে এমনি পাপীকে সারে ইশারা তােমার ॥
করেছাে মুফত লালন, কাজে নেই অনুশীলন,
আমলের কীইবা হিসাব অকেজো এ অভাগার ॥
তব পালন পেলাম, করাে না পরের গােলাম,
কারই বকুনী খাব ছেড়ে তােমারই দুয়ার ॥
পাপী, লাঞ্চিত, লাচার, পীড়িত এ গুনাহগার
মান ও কল্যাণদাতা সুপারিশ শুধু তােমার ॥
বিধি মন্দ যদি হয়, করাে হে কল্যাণময়,
রাখা না রাখা বিধি, আছে তাে সে অধিকার ॥
তুমি ফিরালে নয়ন, কালিমামুক্ত এ মন,
প্রভু করে না তব শশীমুখ আঁধার ॥
কাকে জ্বালাব কোথায়, ব্যথা কেবা শুধায়,
পূতচরণে এ পােষ্য চাহে মিটে যাবার ॥
তুমি দ্বীন দিয়েছাে হে, করেছাে আশ্রিত হে, তুমি দাতাকে ছেড়ে যাবে কাঙাল কী আর।
মওত সুনতা হোঁ সিতম তলখ হ্যায় যহরা বায়ে নাব
কৌন লা দে মুঝে তলােঔঁ কা গাসালা তেরা ॥
দুর কিয়া জানিয়ে বদকার পে ক্যয়সী গুযরে,
তেরে হী দরপেহ্ মরে বে কস ও তনহা তেরা ॥
তেরে সাদকে মুঝে ইক বােন্দ বহুত হ্যায় তেরী,
জিস দিন আচ্ছোঁ কে মিলে জাম ছলকতা তেরা ॥
হেরম ও তায়বা ও বাগদাদ জিধার কীজিয়ে নিগাহ,
জোত পড়তী হ্যায় তেরী নূর হ্যায় ছুনতা তেরা ॥
তেরী সরকার মে লাতা হ্যায় রেযা উসকো শফী,
জু মেরা গাউস হ্যায় লাডলা বেটা তেরা ॥
শুনেছি তিক্ত মরণ, বিষাদাঁতে সে দংশন,
কে দেবে এনে আমায়, পা ধােয়া পানি তােমার ॥
পাপীরে রেখ না দূরে, কী যে ঝড় বয় অন্তরে
দ্বারে পড়ে সে মরে, একা উম্মত এ লাচার ॥
তব দোহাই হে, মােরে এক বিন্দু বাঁচার তরে,
পাবে যবে প্রিয়রা সুধা, সেই সে পেয়ালার ॥
তৈয়বা, বাগদাদে যেথা, যেদিকে পড়ে সে নেগাহ্
চমকে তােমারই নূর, জ্যোতি সেই নূর তােমার ॥
রেযা সে রাজ দুয়ারে, সুপারিশ নিল কারে,
আমারই গাউস তিনি, প্রিয় সন্তান তােমার ॥
উচ্চারণ ২
লাম ইয়াতি নাযীরুকা ফী নাযরিন, মিসলে তু নাহ্ শুদ পয়দা জানা,
জগরাজ কো তাজ তুরে সরসু, হ্যায় তুঝকো শাহে দোসরা জানা ॥
আলবাহরু আলা ওয়াল মাওজু তাগা, মান বে কস ও তুফাঁ হু-শরুবা,
মুঞ্জধারমে হোঁ বিগড়ী হ্যায় হাওয়া, মােরী নাইয়া পার লাগা জানা ॥
ইয়া শামসু নাযারতি ইলা লাইলী, চু-বতাইবা রসী আরযে বকুনী
তােরী জুত কী ঝলঝল জগমে রচী মুরী শব নে না দিন হােনা জানা ॥
লাকা বাদরুন ফিল ওয়াজহিল আজমাল, খতহালায়ে মাহ্ যুলফে আবরে আজাল,
তুরে চন্দন চন্দর পরাে কুন্ডল রহমত কী ভরন বরসা জানা ॥
আনা ফী আতশিউঁ ওয়া সাখাকা আতাম, আয় গ্যসুয়ে পাক আয় আবরে কারাম,
বরসন হারে রিমঝিম রিমঝিম দো বােন্দ ইধার ভী রা জানা ॥
ইয়া কাফিলাতী যীদী আজালাক রহমে বর হাসরাতে তিশনা লাবাক,
মােরা জীরা লরজে দাড়াক দাড়াক তায়বা সে আভী না সুনা জানা ॥
ওয়াহান লিসুওয়াইআতিন যাহাবাত, আঁ আহদে হুযুরে বা-রে গাহাত,
জব ইয়াদা ওয়াতে মাে হে কিরনা পারাত দরদা উঅহ্ মদীনা কা জানা ॥
আল ক্বলবু শাজি ওয়াল হাম্মু শুজোঁ দিল যারে চুনাঁ ও জাঁ যেরে চুনোঁ
পত আপনি বেপত মে কা সে কহোঁ মােরা কৌন হ্যায় তেরে সিওয়া জানা ॥
আর রূহাে ফিদাকা ফাযিদ হারক্বা ইক শাে’লা দিগর বর যন ইশকা,
মােরা তন-মন-ধন সব ফুক দিয়া ইয়ে জান ভী পিয়ারে জালা জানা ॥
বস্ খামায়ে খামে নওয়ায়ে রেযা না ইয়ে ত্বরয্ মেরী না ইয়ে রঙ্গ মেরা
ইরশাদ আহিব্বা নাত্বেক্ব থা নাচার ইস রাহ্ পড়া জানা ॥
কাব্যনুবাদ - ২
উপমা তােমার কেউ দেখেনি কখন, তােমারই মত কেউ হয়নি সৃজন,
সম্রাট-মুকুট তব শিরে তাে শােভে, দোজাহানে তুমিই তাে এমনি রাজন ॥
সাগর উচ্ছাসে আর ঢেউ বে-সামাল, অসহায় আমি, ঝড় কী যে ভয়াল!
মাঝ দরিয়ায় আমি হাওয়া যে মাতাল, মম কান্ডারী তরী পার করাে হে এখন ॥
হে সূর্য দেখেছ রাত্রি আমার, মদিনায় গিয়ে নিবেদিও এ ব্যাপার,
তব কিরণ জ্যোতি কাটে ভবের আধাঁর, মম রাত্রি কাটেনা বিরহ মগন ॥
সুন্দরতম মুখে পূর্ণ যে চাঁদ, দাগ আছে যেন তায় যুলফের ও বাঁধ,
তব চাঁদ মূখে যুলফও সে মায়ারই অগাধ বর্ষে যে করুণাধারা বর্ষণ ॥
তৃষ্ণার্ত আমি তব দান যে অপার, পূত কেশদামে মেঘ আছে তাে দয়ার,
ঝরে রিমঝিম রিমঝিম ধারা করুণার, দুটি বিন্দু এদিকে হােক না পতন ॥
থামাে আরাে কিছুক্ষণ কাফেলা মাের, দয়া করাে, কাটুক মম তৃষ্ণার ঘাের,
কাঁপে কলজে সে ধুকধুক ভয়ে দূরু দূর, তায়বাতে তবে কি করলাে শ্রবণ ॥
হায় কেটে যায় সংক্ষিপ্ত প্রহর, মদীনাতে কাটে যা চরণে বিভাের,
যবে স্মরণে আসে সেই রূপ মনােহর, ব্যথা জাগে মদীনায় যেতে এখন ॥
হতচিত্ত মম, জ্বালা অবিরত; মন ও প্রাণ জ্বলে তায় তিক্ত ক্ষত,
পথ এমনি বিপথে খুঁজব কত, তুমি ছাড়া বিজনে কে আছে স্বজন ॥
নিবেদিত এ প্রাণ, বাড়ে প্রেমের অনল; প্রেম শিখা হৃদয়ে, এমনি ধকল,
মম তনুমন ধন সঁপে দিয়েছি সকল, প্রিয় নবী ছাড়া নাহি বাঁচে এ জীবন ॥
দাও ক্ষান্ত কলম হে রেযা তােমার; না নিয়ম জানি, না যােগ্য যে তার,
পীড়াপীড়ি সাথীদের ছিল অপার, অসহায়ের এ পথে তাই তাে চলন ॥
উচ্চারণ - ৩
নে'মাতেঁ বাঁটতা জিস সমতে ওয়া যীশান গ্যয়া,
সাথ হী মুন্সীয়ে রহমত কা কলমদান গ্যয়া৷
লে খবর জলদী কেহ্ গাউরোঁ কী তরফ ধ্যান গ্যয়া,
মেরে মাওলা, মেরে আক্বা তেরে কুরবান গ্যয়া ॥
আহ্ উঅহ আখঁ কেহ্ না-কামে তামান্না হী রহী
হায় উঅহ দিল জু তেরে দর সে পুর আরমান গ্যয়া ॥
দিল হ্যায় উঅহ্ দিল জু তেরে ইয়াদসে মা'মূর রাহা,
সর হ্যায় উঅহ সর জু তেরে ক্বাদমোঁ পেহ্ কুরবান গ্যয়া ॥
উনহেঁ জানা উনহেঁ মানা না রাখা গাইর সে কাম,
লিল্লাহিল হামদ, ম্যাঁয় দুনইয়া সে মুসলমান গ্যয়া ॥
আওর তুমপর মেরে আক্বা কী ইনায়াত না সাহী,
নজদিউ, কলমা পড়হানে কা ভী ইহসান গ্যয়া ॥
আজ লে উনকী পানাহ্ আজ মদদ মাঙ্গ উনসে,
ফির না মানেঙ্গে কিয়ামত মে আগর মান গ্যয়া ॥
উফ রে মূনকির ইয়ে বড়হা জোশে তাআসসুব আখের,
ভীড় মে হাথ সে কমবখত কে ঈমান গ্যয়৷
জান ও দিল, হােশ ও খিরাদ সব তাে মদীনা পৌঁহচে,
তুম নেহী চলতে রেযা সারা তাে সামান গ্যয়া৷
কাব্যানুবাদ – ৩
নেয়ামতের বন্টন হয়, সেই শানওয়ালা যেথা যান,
রহমতের লিপিকর তাঁর সহচর হয়ে সাথে যান ॥
ত্বরা নাও, নাও গাে খবর, ঘুরে না যায় অন্তর,
মালিক আমার, হে মুনিব, পূত চরণে তব দেই জান ॥
পিপাসার্ত আজি এই দু’আঁখি রয়ে যায় আশা শুধু বাকী,
সে তাে সার্থক হৃদয় এদ্বারে যার পুরে আরমান ॥
জানি সেটাই তাে হৃদয়, যাতে শুধু তােমারই নিলয়,
জানি সেই শিরই সফল, যা ও চরণে হয় কুরবান ॥
জেনেছি মেনেছি তাকে, ফের চাই অপর কাকে,
শােকর আল্লাহর আমি চলেছি মুমিন প্রাণ ॥
মালিকের সেই বখশিস, পেলনা তােদেরই হদিস
নজদীরা! কলেমা পাওয়ার ভুলেছিস সেও অবদান ।
আজই নে তার আশ্রয়, নেরে নে ঠাঁই তাঁর নির্ভয়,
হাশরে মানতে হবেই, তাই মেনে নে, মান আজই মান ॥
হায়রে অবাধ্যরে হায়, জেদে জেদে জীবন তোরই যায়,
অভাগার দলে ভিড়ে খােয়ালি শেষে ঈমান ॥
মন ও প্রাণ হুঁশ ও ধ্যানে, সবই তাে মদিনা পানে,
তুমি গেলে না রেযা, সব কিছুই আজ আগােয়ান ।
উচ্চারণ - ৪
যহে ইযযত ও এ' তেলায়ে মুহাম্মদ।
কেহ্ হ্যায় আরশে হক্ব যেরে পায়ে মুহাম্মদ।
মকাঁ আর্শ উনকা, ফলক ফর্শ উনকা, মালাক খাদেমানে সরায়ে মুহাম্মদ ॥
খােদা কী রেযা চাহতে হ্যায়ঁ দো আলম,
খােদা চাহতা হ্যায় র্যোয়ে মুহাম্মদ ॥
আজব কিয়া আগর রহমে ফরমায়ে হাম পর,
খােদায়ে মুহাম্মদ বরায়ে মুহাম্মদ ॥
মুহাম্মদ বরায়ে জনাবে ইলাহী,
জনাবে ইলাহী বায়ে মুহাম্মদ ॥
বসী ইত্বরে মাহবিয়ে কিবরিয়া সে,
আবায়ে মুহাম্মদ ক্ববায়ে মুহাম্মদ ॥
বহম আহদে বা-ন্ধে হেঁ ওয়াসলে আবাদকা,
রেযায়ে খােদা আওর রেযায়ে মুহাম্মদ ॥
দমে নযয়ে জারী হাে মেরী যােবাঁ পর, মুহাম্মদ! মুহাম্মদ! খােদায়ে মুহাম্মদ ॥
আসায়ে কলীম আঝদাহায়ে গযব থা,
গিরো কা সাহারা আসায়ে মুহাম্মদ ॥
ম্যাঁয় কুরবান কিয়া পিয়ারী পিয়ারী হ্যায় নিসবৎ,
ইয়ে আনে খােদা উঅহ খােদায়ে মুহাম্মদ ॥
মুহাম্মদ কা দম খাসস্ বাহরে খােদা হ্যায়,
সিওয়ায়ে মুহাম্মদ বরায়ে মুহাম্মদ ॥
খােদা উনকো কিস পেয়ার সে দেখতা হ্যায়,
জু আঁখে হ্যাঁয় মাহভে লেকা-য়ে মুহাম্মদ ॥
জলাে মে ইজাবত খাওয়াসী মে রহমত,
বড়হী কিস তযক সে দুআয়ে মুহাম্মদ ॥
ইজাবৎ নে ঝুক কর গলে সে লাগায়া,
বাড়হী, নায সে জব দুআয়ে মুহাম্মদ ॥
ইজাবৎ কা সেহরা, ইনায়াত কা জোড়া,
দুলহান বনকে নিকলী দুআয়ে মুহাম্মদ ॥
রেযা পুল সে আব ওয়াজ করতে গুযরিয়ে,
কেহ্ হ্যায় 'রাব্বি সাল্লিম’ সদায়ে মুহাম্মদ ॥
কাব্যনুবাদ - ৪
কিরূপ শান ও ইযযত উঁচু সে নবীজির,
খােদার আরশ তার সে চরণে নতশির।
ওই আরশে আসন তাঁর, অলােকে ফরাশ আর,
ফেরেশতা দাঁড়িয়ে সেবায় সে নবীজির ॥
যাচে তুষ্টি আল্লাহর, যত সৃষ্টিকুল আর,
খােদা চাহে সন্তোষ প্রিয় সে নবীজির ॥
যদিই বা দয়া পাই, বিচিত্র কিছুই নাই,
শুধুই তাঁর উসীলায় রহমত ইলাহীর ॥
নবীজি সে আল্লাহর, খােদাও প্রেমিক তাঁর,
প্রেমের সে বিধানে পরস্পর কী প্রীতির ॥
সুরভি কী মাখায়, খােদার সে প্রেমের বায়,
নবীজির যত না পােশাক এ ধরিত্রীর ॥
উভয়ের এ সন্তোষ, হামেশা রহে খােশ,
কী মজবুত প্রতিজ্ঞা পরস্পর সে মৈত্রীর ॥
সে অন্তিম শয্যায়, এ বান্দাহ যেন গায়,
মুহাম্মদ! মুহাম্মদ! আর আল্লাহ্ নবীজির ॥
ছড়ি কালীমুল্লাহর সে, অজগর আকার,
ছড়ি মােস্তাফারই ভরসা এ পাপীর ॥
প্রেমের সে কী বন্ধন, ভাষায় তা অবর্ণন,
নবী শান আল্লাহর, খােদা রব্ নবীজির ॥
নবীজির এ জীবন খােদাতেই সমর্পন,
তাঁরই জন্য যে সব বাকী যা এ সৃষ্টির ॥
খােদা সেই সে যাতে দেখে কী মায়াতে,
নবীজির দিদারে অপলক আঁখি, স্থির ॥
বিশেষে দয়া হয়, কবুল সে সুনিশ্চয়,
যে দোয়া নবীজির, সাথে সে আঁখিনীর ॥
কবুলিয়ত আসলাে, গলাতে মিলালাে,
যখন ওই দোয়ার হাত দুয়ারে ইলাহীর ॥
টোপর মাথে কবুল, করুণা ঝুলে দুল, দুলহানের মতন, তাঁর দোয়া সে প্রশান্তির ॥
রেযা পুলসিরাতে, খুশীই ভরসাতে,
জামিন 'রাব্বি সাল্লিম’ যবানে নবীজির ||
উচ্চারণ - ৫
সর তা বকদম হ্যায় তনে সুলতানে যামান ফুল,
লব ফুল, দাহান ফুল, যাকান ফুল, বদন ফুল ॥
সদকে মে তেরে বাগ তু কিয়া লায়ে হ্যায়ঁ বন ফুল,
ইস গুনচায়ে দিল কো ভী তু ঈমা হাে কেহ বন ফুল ॥
তনকা ভী হামারে তু হিলায়ে নেহী হিলতা,
তুম চাহাে তু হাে জায়ে আভী কোহে মেহান ফুল ॥
ওয়াল্লাহ্ জু মিল জায়ে মেরে গুলকা পসীনাহ্
মাঙ্গে না কাভী ইতুর না ফির চাহে দুলহান ফুল ।।
দিল বস্তাহ ও খোঁ গশতাহ নাহ খােশবু নাহ্ লাত্বাফাৎ,
কেউঁ গুনচাহ্ কহোঁ হ্যায় মেরে আক্বা কা দাহান ফুল ।।
শাব ইয়াদ থী কিন দাঁতোঁ কী শাবনাম কেহ্ দমে সুবহ্,
শওখানে বাহারী কে জড়া-ও হ্যাঁয় কিরণ ফুল ॥
দানদা-ন ও লব ও যুলফ্ ও রুখে শাহ্ কে ফেদায়ী,
হ্যাঁয় দুররে আদন লা, লে ইয়ামান মুশকে খেতান ফুল ॥
বু হাে কে নেহাঁ হাে গ্যায়ে তারে রুখে শাহ্ মে,
লও বন গ্যায়ে হ্যায়ঁ আব তু হাসীনাে কা দাহান ফুল ।।
হোঁ বারে গুনাহ সে নাহ খজল দোশে আযীযাঁ
লিল্লাহে মেরী না’শ কর আয় জানে চমন ফুল ॥
হোঁ বারে গুনাহ সে নাহ খজল দোশে আযীযাঁ
লিল্লাহে মেরী না’শ কর আয় জানে চমন ফুল ॥
দিল আপনা ভী শায়দায়ী হ্যায় উস না খুনে পা কা,
ইতনা ভী মাহে নও পেহ্ নাহ্ আয় চরখে কুহান ফুল ৷৷
দিল খােল কে খোঁ রােলে গমে আরেযে শাহ মেঁ, নিকলে তু কহেঁ হাসরতে খোঁ নাবাহ্ শুদন ফুল ।।
কিয়া গাযা মিলা গিরদে মদীনা কা জু হ্যায় আজ,
নিখরে হুয়ে জু বন মে কিয়ামত কী ফবন ফুল ।।
গরমী ইয়ে ক্যয়ামত হ্যায় কেহ্ কাটে হ্যাঁয় যোঁবাঁ পর,
বুলবুল কো ভী আয় সাকীয়ে সাহরা ও লাবান ফুল ৷৷
হ্যায় কোন কেহ গিরইয়া করে ইয়া ফাতেহা কো আয়ে,
বে কস কে উঠহায়ে তেরী রহমত কে ভরন ফুল ।।
দিলে গম তুঝে ঘে-রে হ্যাঁয় খােদা তুঝকো উঅহ চমকায়ে,
সুরাজ তেরে খিরমন কো বনে তেরী কিরণ ফুল ॥
কিয়া বা-ত রেযা উস চেমনিস্তানে করম কী,
যাহরা হ্যায় কলী জিসমে হুসাইন আওর হাসান ফুল ॥
কাব্যনুবাদ - ৫
নবী রাজেরই আপাদমস্তক তনু-মন ফুল,
পাক-ঠোঁট ও অধর থুতনি কি তাঁর পূর্ণ সে তন ফুল।
দিতে অর্ঘ্য সে পা’য় গুলবাগিচায় কতই বা ফুলপায়,
মাের মন কলিরে দাও ইশারা হােক সে এখন ফুল।
খড় কুটাও না যায় হেলানাে তায়, মােদের এ সত্ত্বায়,
তুমি চাইবে যখন দুঃখ পাহাড় হবেই তখন ফুল।
বলি শপথ সরব পাই তাে গরব ঘামেরই সৌরভ,
তবে চাই না আতর, কিংবা কনে চায় না কখন ফুল।
নেই রূপ কি সুবাস, নেই তাে সুহাস, দিল খুনে আশপাশ,
কেন কইব কলি ফুটছে বুলির প্রতিটি ক্ষণ ফুল।
কাটে স্মরণ নিশির, ভােরের শিশির দন্তে কী জ্যোতির,
ভরা যৌবনে কি হাসছে শােভায় এমনি কানন ফুল।
সেই দন্ত, অধর যুলফি বহর, চেহারা জ্যোতির পর
মরে লজ্জাতে সব মুক্তো কি লাল, খােশবু, কিরণ, ফুল।
সব রূপ হওয়া হয়, সামনে যা রয়, সেই রূপের উদয়,
তার সামনে সবই ম্লান হয়ে যায় রত্ন, বরণ, ফুল।
বাপ ভায়ের ঘাড়ে, গুনাহর ভারে লাজ নাহি বাড়ে,
দেই দোহাই যেন পাই গােরে হে, পুষ্পজীবন ফুল।
নখে পাক চরণের এই জীবনের অর্ঘ্য দিনু ফের,
তবে চাঁদ নিয়ে তুই কীইবা গরব করবি গগন ভুল!
করে রক্তক্ষরণ বিষন্ন মন হেন অশ্রু বিসর্জন,
এই বিষাদ বারি পড়বে যদি হাসবে চরণ ফুল৷
বুঝি সেই মদীনার, ধুল উপহার মাখলাে গায়ে তার,
তাই মনমােহিনী খােশবু ও রূপ পায় সে এমন ফুল।
সেই রােজে হাশর তৃষ্ণা -কাতর কণ্ঠে শুষ্কতর,
এই বুলবুলে দাও সাকী, শরাব, স্বস্তি যেমন ফুল।
কেঁদে বক্ষ ভাসে এগিয়ে এসে দুঃখ কে নাশে,
যদি এই অসহায় সেই করুণায় পায়তাে এখন ফুল৷
হে চিত্ত আমার দুঃখ অপার ঘিরল চারিধার,
খােদা চাইবে যখন সূর্য লাজে ভুলবে আপন কুল।
রেযা বলব কী আর সেই করুণার বাগে কী বাহার,
যাতে যাহরা কলি হাসান হােসাইন প্রিয় দু’জন ফুল।
উচ্চারণ - ৬
হ্যায় কালামে ইলাহী মে শামস্ ও দোহা, তেরে চেহরায়ে নূর ফসা কী ক্বসম ।।
কসমে শব তার মে রায ইয়ে থা, কেহ্ হাবীব কী যুলফে দো তা কী ক্বসম।।
তেরে খুলক্ব হক নে আযীম কাহা, তেরী খালক্ব কো হক নে জমীল কিয়া,
কোয়ী তুঝসা হুয়া হ্যায় নাহােগা শাহা, তেরে খালেকে হুসন্ ও আদা কী ক্বসম ।
উঅহ্ খােদা নে হ্যায় মর্তবা তুঝ কো দিয়া, নাহ্ কিসী কো মিলে না কিসী কো মিলা
কেহ্ কালামে মজীদ নে খাঈ শাহা, তেরে শাহার ও কালাম ও বক্বা কী ক্বসম ॥
তেরা মাসনাদে না হ্যায় আরশে বরী, তেরা মাহরামে রায হ্যায় রূহে আমী
তু হী সরওয়ারে হার দো জাহাঁ হ্যায় শাহা, তেরা মিসল নেহী হ্যায় খােদা কী কসম ॥
ইয়েহী আর হ্যায় খালেকে আরদ্ব্ ও সামা উঅহ রাসূল হ্যাঁয় তেরে ম্যাঁয় বান্দাহ্ তেরা,
মুঝে উনকী জওয়ার মে দে উঅহ্ জাগাহ্ কেহ্ হ্যায় খুলদ্ কো জিসকী সাফা কী ক্বসম ॥
তুহী বান্দা পেহ্ করতা হ্যায় লুৎফ্ ও আতা, হ্যায় তুঝহী পেহ ভরােসা তুঝহী সে দুআ,
মুঝে জলওয়ায়ে পাকে রাসূল দেখা, তুঝে আপনে হী ইযয ও উলাকী কসম ॥
মেরে গরচেহ্ গুনাহ হ্যাঁয় হদ সে সিওয়া, মাগার উনসে উমীদ হ্যায় তুঝছে রাজা,
তু রাহীম হ্যায় উনকা কারাম হ্যায় গাওয়া, উঅহ করীম হ্যাঁয় তেরী আতা কী ক্বসম ॥
ইয়েহী কেহতী হ্যায় বুলবুলে বাগে জিনাঁ, কেহ্ রেযা কী তরেহ কোয়ী সাহরে বয়া
নেহী হিন্দ মে ওয়াসেফে শাহে হুদা, মুঝে শওখীয়ে ত্ববয়ে রেযা কী ক্বসম৷
কাব্যনুবাদ -৬
সে কোরআন মজীদেতে চাঁদ কি সুরুজ, তব নূরানী চেহারা পাকের কসম,
রাতের ও তমসার শপথে হেতু, কেশগুচ্চ মায়াবী দুয়ের কসম ॥
তব আখলাক শুনি হেথা খুলুকে আযীম, তব সুন্দর সৃষ্টি রূপে সে অসীম,
নহে তুল্য তােমার কেউ না হবে কভু; রূপস্রষ্টা মহিমাময়ের কসম ॥
বিধাতা সে মর্তবা দিয়েছে তােমায়, জুটেনি বরাতে কারাে, কভু কেউ তা না পায়,
খােদ কুরআনে করীমও করেছে রাজন, তব বাণী, বসত, জীবনের কসম।
আরশে ইলাহ্ তব পরশে ব্যাকুল, রূহুল আমীন-রাখে রহস্য অমূল,
দোজ্জাহানে তুমিই সম্রাট রাসূল, অতুল, সে করুণাময়ের কসম ॥
এটাই আরজ ওগাে স্রষ্টা ভবের, এ রাসূল তােমার আমি বান্দা জাতের,
তাঁরই কাছে দিও মােরে একটু সে ঠাঁই, যাকে অষ্ট বেহেশত সবের কসম ॥
হে খােদা মায়া তব বান্দা পরে, ভরসা তােমার, মাঙি যুক্তকরে,
মােরে জলওয়া রাসূলের একটু দেখাও, তব ইজ্জত ও মহিমা নিজের কসম ॥
নাহি সীমা যদি বা পাপে আমার, আশা তাঁরই পরে, তাহার তব দৃষ্টি উদার,
তুমি দয়ালু যে তারই দয়া প্রমাণ, তিনি দাতা, তােমারই দানের কসম ॥
বাগে জান্নাতেরই বুলবুলি কহে, সে রেযার মতন যাদুগীত গাহে,
তাঁরই বন্দনা গাইতে যে হিন্দ-এ নাহি, রেযার উৎসাহী এই চিত্তের কসম ॥
উচ্চারণ - ৭
উঅহ কামালে হুসনে হুযুর হ্যায় কেহ্ গুমানে নকসে জাহাঁ নেহী,
ইয়েহী ফুল খার সে দূর হ্যায়, ইয়েহী শমআ হ্যায় কেহ ধোঁয়া নেহী।
দোজাহাঁ কী বেহতরীয়াঁ নেহী কেহ আমানীয়ে দিল ও জাঁ নেহী
কহাে কিয়া হ্যায় উঅহ জু ইয়েহাঁ নেহী মগর ইক ‘নেহী’ কেহ উঅহ্ নেহী।
ম্যায় নেসারে তেরে কালাম পর মিলী ই তুয কিস্ কো বােবা নেহী,
উঅহ সুখন হ্যায় জিস মে সুখন নহাে উঅহ্ বয়াঁ হ্যায় জিসকা বয়াঁ নেহী ॥
বখােদা, খােদা কা ইয়েহী হ্যায় দর, নেহী আওর কোয়ী মাফার মাকার,
জু ওয়াহাঁ সে হাে ইয়েহী আ-কে হাে জু ইয়েহাঁ নেহী তু ওয়াহাঁ নেহী ॥
করে মােস্তফা কী ইহানতেঁ, খুলে বন্দোঁ ইস পেহ্ ইয়ে জুরআতেঁ,
কেহ্ ম্যায়ঁ কিয়া নেহী হোঁ মুহাম্মদী! আরে হাঁ নেহী আরে হাঁ নেহী ॥
তেরে আগে ইউঁ হ্যায়ঁ দবে লচে ফুসাহা আরব কে বড়ে বড়ে,
কোঈ জানে মে যােবাঁ নেহী নেহী বলকেহ্ জিসম্ মে জাঁ নেহী ॥
উঅহ্ শরফ কে ক্বত্বয়ে হ্যাঁয় নিসবতে উঅহ্ করম কেহ্ সব সে ক্বারীব হ্যায়ঁ কোঈ কেহ্ দো ইয়াস ও উমীদ সে, উঅহ্ কাহেঁ নেহী উঅহ্ কাহাঁ নেহী ॥
ইয়ে নেহী কেহ্ খুলদ নহাে নেকো, উঅহ্ নেকোয়ী কী ভী হ্যায় আ-বরাে৷
মগর আয় মদীনে কী আরযু জিসে চাহে তু উঅহ্ সামাঁ নেহী ॥
হ্যায় উনহী কে নূর সে সব আয়াঁ, হ্যায় উনহী কে জলওয়া মে সব নেহী
বনে সুবহে তাবশ মেহর সে রহে পেশে মেহর ইয়ে জাঁ নেহী ॥
উঅহী নূরে হক উঅহী যিল্লে রব, হ্যায় উনহী সে সব, হ্যায় উনহী কা সব,
নেহী উনকী মিলক মে আসমাঁ কেহ্ যমী নেহী কেহ্ যমাঁ নেহী ।
কাব্যানুবাদ - ৭
কী অনিন্দ্য রূপ মাের নবীজির, ভাবনা ক্রটির ও নাই যেথায়,
সে যে ফুল এমন, যাতে কাঁটা নেই, সে তাে দীপ এমন, নাহি ধোঁয়া তায়।
দু’ভূবনেরই কী না পাবে হিত, আশা না পুরােয় কী, সে বুঝি অতীত
বলাে কী আছে যা হেথা নেই? তবে, নাই শব্দটি শুধু নাই হেথায়।
সঁপি নিজেকে কালামে তাঁর, পেইলে কি এমন সে ভাষা তাঁর,
সসে বাণীর পরে কোন বাণী নেই, সে বয়ান নাহি আসে বর্ণনায়।
কসম খােদার এ যে খােদারই দ্বার, এছাড়া নাহি কোন ঠাঁই বাঁচার,
যা সেথায় হবে, তা হেথা থেকেই, যা হেথা নাহি, নাহি তা সেথায়।
করে মােস্তফারই অবমাননা, আরাে ধৃষ্টতা; কী নির্লজ্জ না!
বলে, আমি নই কি মুহাম্মদী? বলি, নয় গাে নয়; তার চিন কোথায়?
তব সকাশে আধােবদন, বড় বড় আরবেরই ভাষাবিদগণ,
মুখে কারাে নেই কোন ভাষা নেই, কারাে ধড়ে বা প্রাণ আসে যায়।
হেন মর্যাদা কাটে কুলমান, অতি নিকটে সে বড় দয়াবান,
ডেকো তাঁরে আর রেখাে প্রত্যাশা, কবে নেই সখা বলি, নেই কোথায়?
চির শান্তি সুখ কে না কয় নেকী, তাঁরে নেকীরই তাে আব্রু দেখি,
তবে মদীনামুখী বাসনা যারে পায় তারে রাখে তাড়নায়।
তাঁরই নূরে সব কিছু আলােময়, তাঁরই উদ্ভাসে সব হাসিমাখা হয়,
তাঁরই চেহারারই নূরে ফোটে ভাের দেখে সূর্যমুখ ম্লান হয়ে যায় ।
সে পরম নূর, ছায়া বিধাতার, সেই নূর হতে সব, বলি, সবই তাঁর,
মালিকানাতে সেই আসমান, আছে যমীন ও কাল সব হেথায় ॥
- ওয়াহী লা মকাঁ কে মকী হুয়ে, সারে আরশে তখতে নশী হুয়ে।
উঅহ নবী হ্যায় জিসকে হ্যাঁয় ইয়ে মকাঁ, উঅহ খােদা হ্যায় জিসকা মকাঁ নেহী।
সারে আরশ পর হ্যায় তেরী গুযার, দিলে পরশ ফর হ্যায় তেরী নাযার,
মালাকুত ও মুলক মেঁ কোয়ী শাই, নেহী উঅহ্ জু তুঝ পেহ্ আয়াঁ নেই,
করোঁ তেরে নাম পেহ্ জাঁ ফেদা, না বস এ্যাক জাঁ দোজাহাঁ ফেদা,
দো জাহাঁ সে ভী নেহী জী ভরা, করোঁ কিয়া কোরােড়োঁ জাহাঁ নেহী ॥
তেরা ক্বন্দ তু নাদেরে দাহর হ্যায়, কোঈ মিসল্ হাে তু মেসাল দে,
নেহী গুল কে পােদোঁ মেঁ ডালিয়াঁ কেহ্ চেমন মে সরাে চমাঁ নেহী ॥
নেহী জিস কে রঙ্গ কা দোসরা, না তু হাে কোঈ না কাভী হুয়া,
কহাে উসকো গুল কহে কিয়া বনী কেহ্ গুলো কা ঢেরা কাহাঁ নেহী ।।
করোঁ মাদাহে আহলে দোয়াল রেযা, পড়ে উস বালা মে মেরী বুলা,
মাই গদা হোঁ আপনে করীম কা, মেরা দীন পারায়ে নাঁ নেহী ॥
লা-মকানেতে তাঁরই বিচরণ, হল আরশ তাঁরই সিংহাসন,
তিনি সেই নবী যাঁর এই যে শান, খােদা জায়গাতে নাহি পাওয়া যায়।
উচুঁ আর্শেও তব বিচরণ, এ ভূবন জুড়েও আছে দু'নয়ন,
মালাকুত মুলকে কিছু নেই এমন, যা তােমারই সেই দৃষ্টি এড়ায় ॥
করি নামে প্রাণ নিবেদিত, একই প্রাণ তাে নয় দূ'ভূবন নীত,
দোজাহানেও নাহি ভরে প্রাণ কোটি বিশ্ব কই আমি পাব হায় ॥
তব কায়া রূপ সে অভিনব, উপমা নাহি তা কী করে দেবাে,
ফুল কিশলয়ে কোন শাখা নেই, সে মালঞ্চরূপ তাঁর কোথা কেবা পায় ।
যাঁরই বর্ণে নেই কোন উপমা, নাহি নাহি কোথা সে সুষমা,
তাঁরই সাথে ফুলে কী তুলনা! লাখাে ফুল আছে বাগ-বাগিচায়।
ধনবানে গুন রেযা নাহি গায়, কী কাজ জড়াবে সে সেই বালায়,
নিজ মুনিবে আমি ডেকে যাই, মম দ্বীনও তাে নয় ‘নানপারায়।
উচ্চারণ – ৮
হাজীউ আও শাহেনশাহ্ কা রওযা দেখাে,
কা’বা তু দেখ চুকে কা’বা কা কা'বা দেখাে ॥
রুকনে শামী সে মিটী ওয়াহশাতে শামে গুরবাৎ,
আব মদীনা কো চলাে সুবহে দিল আরা দেখাে ॥
আ’বে যমযম তু পিয়া খােব বুজহায়েঁ পেয়াসেঁ
আও জুদে শাহে কওসর কা ভী দরইয়া দেখাে ।
যেরে মীযাব মিলে খােব করম কে ছিঁটে,
আবরে রহমত কা ইয়াহাঁ যাের বরসনা দেখাে ।
ধূম দেখি হ্যায় দরে কা’বা পেহ্ বেতাবোঁ কী
উনকে মুশতাকোঁ মেঁ হাসরত কা তড়পানা দেখাে ॥
মিসলে পরওয়ানা ফিরা করতে থে জিস শমআকে গির্দ,
আপনি উস শমআ কো পরওয়ানা ইয়েহাঁ কা দেখাে ॥
খােব আখোঁ সে লাগায়া হ্যায় গিলাফে কা’বা,
ক্বসরে মাহবুব কে পরদে কা ভী জলওয়াহ্ দেখাে ।
ওয়াঁ মুত্বীয়োঁ কা জিগর খওফ সে পানি পায়া,
ইয়াঁ সিয়াহ্ কারোঁ কা দামান পেহ্ মচলনা দেখাে ॥
আউয়ালী খানায়ে হক কী তু যিয়ায়েঁ দেখেঁ,
আখেরী বাইতে নবী কা ভী তজল্লা দেখাে ।
যীনাতে কাবা মে থা লাখ আরুসোঁ কা বনােও, জলওয়া ফরমা ইয়েহাঁ কওনাইন কা দু-লহা দেখাে ॥
কাব্যানুবাদ - ৮
হাজীপ্রাণ ছুটে এসাে হেথা রাজাধিরাজ,
কাবা তাে দেখলে, এখন দেখাে কাবারই রাজ।
রুকনে শামীতে কাটে, যত আঁধার বিজন-বাটে
মদীনাতে প্রাণ নাথ আছে, সেথা চলাে আজ ॥
আবে যমযম্ তাে পেলে, পিয়াস তাে খুব মেটালে,
কাওসারওয়ালার দয়ার জোয়ার দেখে নাও আজ।
মীযাবে রহমত হতে, দয়াসিক্ত হলে মেতে,
মায়ামেঘমালা হতে অঝােরে বরষে নেয়াজ।
ধরে কাবারই সে আচঁল, অনুরাগীদের কোলাহল,
নবীজির প্রেমিকের হাহু তাশ! শােন তারই আওয়াজ ॥
পতঙ্গসম ত্যাজে প্রাণ, যে প্রদীপে করে সন্ধান,
নিজ সেই প্রদীপের পতঙ্গ পুড়ে হেথা আজ ॥
কাবার ওই পূত গিলাফ, চোখে মুছে জুড়ালে তাপ,
তাঁরই প্রিয় নবীরই পর্দা! দেখ অপূর্ব সাজ ॥
যত নেক বান্দা কাবায়, ভয়ে অন্তরাত্মা শুকায়,
হেথা দামানে মাখামাখি যতাে পাপী সমাজ ।
প্রথমে দেখলে কাবা’র, জ্যোতি অহরহ আল্লাহর,
শেষে প্রিয় নবীর নিবাসের দেখাে সাজ ॥
লাখাে বাসরের সজ্জা, ঝলমলে রূপ কাবার পর্দা,
দোজাহানের দুলহা দেখাে শিরে নূরের তাজ ॥
আইমনে তুর কা থা রুকনে ইয়ামানী মেঁ ফরােগ,
শো লায়ে তুর, ইয়েহাঁ আনজুমান আরা দেখাে ॥
মেহরে মাদার কা মযা দেতী হ্যায় আগােশে হাতীম,
জিনপেহ্ মাঁ বাপ ফেদা ইয়াঁ করম উনকা দেখাে ॥
আরযে হাজাত মেঁ রাহা কা'বা কফীলে আনজাহ্
আদাব দাদ রসীয়ে শাহে তৈয়বা দেখাে ॥
ধাে চুকা যুলমাতে দিল বােসায়ে সনগে আসওয়াদ,
খাকে বুসীয়ে মদীনা কা ভী রুতবা দেখাে ॥
কর চুকী রিফআতে কা'বা পেহ নযর পরওয়াযেঁ,
টুপী আব থাম কে খাকে দর ওয়ালা দেখাে ॥
বে নয়াযী সে ওয়াহাঁ কাঁপতী পায়ী ত্বাআত,
জোশে রহমত পেহ্ ইয়েহাঁ নায গুনাহ্ কা দেখাে ॥
জুমআয়ে মক্কা থা ঈদ আহলে ইবাদত কেলিয়ে,
সুজরেমোঁ আ-ও ইয়েহাঁ ঈদে দো শােম্বা দেখাে ॥
মুলতাযিম সে তু গলে লাগ কে নিকালে আরমাঁ,
আদব ও শাওক্ব কা ইয়াঁ বাহাম উলঝনা দেখাে ॥
খাে-ব মাসআ মেঁ বউমীদে বা সফা দোড় লিয়ে,
রেহ জানাঁ কী সফাকা ভী তামাশা দেখাে ॥
রকসে বাসমাল কী বাহারেঁ তু মিনা মেঁ দে-খেঁ,
দিলে খােন নাবাহ্ ফশাঁ কা ভী তড়পনা দেখাে ॥
গওর সে সুন তু রেযা কা’বা সে আতী হ্যায় সদা,
মেরী আখোঁ সে মেরে পেয়ারে কা রওযা দেখাে ॥
আয়মনে তুর কুরআনে যা, রুকনে ইয়ামানীতে আছে তা,
তুরেরই দীপ্ত শিখাটা মদীনাতে দেখ আজ ॥
হাতীমে কাবার ছিল বেষ্টন, মমতা ভরা মায়ের ও বাধঁন,
বাবা-মা যাঁর পায়ে নত করুনা তাঁর নিও আজ।
হাজত যত সামনে নিয়ে, কাবা যায় সব মুক্তি দিয়ে
মুক্তিপাগল উম্মত হেথা লুকায় নিজ নিজ লাজ ।
হাজরে আসওয়াদে যে না চুম্বন, দিলে আঁধার হলােই মােচন
চুমলে মাটি মর্যাদা পাই দেখাে মদীনারই মাঝ ।
কা’বারই উচ্চতা দেখে, দৃষ্টি তােমার পূন্য চাখে,
টুপি মাথে নবীর মাটি বানাও জায়নামায
প্রতাপশালী খােদার তাপে, হেথায় নেকী ভয়ে কাঁপে, ;
দয়ার জোয়ার নবী দ্বারে, ভিড়ে পাপী সমাজ ।
মক্কাতে ঈদ জুমার দিনে, পূণ্যবান তা ঠিকই চিনে,
পাপী দেখাে সােমবারে ঈদ মদীনায় সাজ, সাজ!
মুলতাযিমকে জড়িয়ে ধরে, মাঙলে অনেক কান্না করে,
আদব আশার এই মিতালী মদীনারই মাঝ ।।
সাফা ও মারওয়ার বুকে, ছুটলে তাে খুব পূন্যসুখে,
থামাে, হেথা দিল সাফাইর দেখাে এ কারুকাজ ॥
হাদীর প্রাণীর কী আন্দোলন, দেখলে মিনায় সেই আবেদন,
হিয়ার জখম তড়পে কেমন দেখাে মদীনাতে আজ ॥
মন দিয়ে রেযা শােন, আর্তি করে কাবা যেন,
এ নয়নে দেখাে মম, বন্ধু সে মদিনার মাঝ ॥
উচ্চারণ – ৯
ইয়া ইলাহী হার জাগাহ্ তেরী আত্বা কা সাথ হাে,
জব পড়ে মুশকিল শাহে মুশকিল কোশা কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী ভূল জা-ওঁ নযএ কী তকলীফ কো,
শাদীয়ে দীদার হুসনে মুস্তফা কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী গােরে তীরাহ্ কী জব আয়ে সখত রাত,
উনকে পেয়ারে মুহঁ কী সুবহে জাঁফকা সাথ হে ॥
ইয়া ইলাহী জব পড়ে মাহশর মে শােরে দারওগীর,
আমন দেনে ওয়ালে পিয়ারে পেশওয়া কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী জব যােবানেঁ বাহের আয়ে পিয়াস সে,
সাহেবে কাওসার শাহে জুদ ও আত্বা কা সাথ হাে।
ইয়া ইলাহী সরদ মেহরী পর হাে জব খােরশীদে হাশর,
সাইয়েদে বে-সায়া কে যিল্লে লিওয়া কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী গরমিয়ে মাহশার সে জব ভড়কে বদন,
দামানে মাহবুব কী ঠান্ডী হাওয়া কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী নামায়ে আমাল জব খুলনে লাগে,
আইব পােশে খাল্ক, সাত্তারে খাত্বা কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী জব বহে আখে হেসাবে জুরম মেঁ,
উন তাবাসসুম রে-যে হোঁটো কী দু’আ কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী জব হেসাবে খান্দাহ বে জা রােলায়ে,
চশমে গিরইয়ানে শফীয়ে মুরতাজা কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী রঙ্গ লায়ে জব মেরী বে বাকীয়াঁ,
উনকী নীচী নীচী নযরোঁ কী হায়া কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী জব চলোঁ তারীক রাহে পুল সিরাত,
আফতাবে হাশেমী নুরুল হুদা কা সাথ হাে৷
ইয়া ইলাহী জব্ সরে শমশীর পর চলনা পড়ে,
'রাব্বি সাল্লিম’ কেহনে ওয়ালে গমযদা কা সাথ হাে ॥
ইয়া ইলাহী জু দুআয়ে নেক ম্যাঁয় তুঝ সে কারোঁ,
কুদসীয়োঁ কে লব সে ‘আমীন রাব্বানা' কা সাথ হাে ।
ইয়া ইলাহী জব রেযা খাবে গিরাঁসে সর উঠায়ে,
দওলতে বে দার ইশকে মুস্তফা কা সাথ হাে ॥
কাব্যানুবাদ - ৯
প্রভু হে আমার, সবখানে যেন তােমার করুণা সঙ্গেঁ রয়,
সংকটে যদি পড়ি তবে যেন উদ্ধারকারী সঙ্গে রয়।
প্রভু শুনে রাখাে, ভুলে যাব আমি মরণ যাতনা বেদনাময়,
নবীজির চির মমতার রূপ, যদি এ মুগ্ধ নয়নে রয়।
প্রভু হে যখন আধাঁর কবরে কঠিন রাত্রি শংকাময়।।
সেই প্রিয় মুখে নুরানী প্রভাত জুটে যায় দি,
হাশরে যখন পাকড়াও কালে গর্জন শাের কানে না সয়,
নিরাপত্তার বিধায়ক নবী সাথী হােক প্রভু হে দয়াময়।
প্রভু হে আমার, সকল জিহ্বা যখন তৃষিত শুষ্ক হয়,
কাওসার সুধা বন্টনকারী মাের পরে যেন হােন সদয়।
হে প্রভু, যখন পাপীর উপরে হাশর সূর্য হবে উদয়,
ছায়াহীন সেই নবীর নিশান ছায়াতে যেন গাে পাই আশ্রয়।
পুড়বে যখন অঙ্গ হাশরে ভীষণ সেতাপ অগ্নিময়,
নবীর আচঁলছােয়া সে ঠান্ডা হাওয়ায় যেন তা শীতল হয়।
ওগাে দয়াময় আমলনামার হিসাব যখন সূচনা হয়, ত্রুটিবিচ্যুতি গােপনকারী সে প্রিয়নবী যেন সঙ্গে রয়।।
হে খােদা যখন পাপের গ্লানিতে ছেপে দু নয়ন অশ্রু বয়,
মৃদু হাসিময় পাক সে আঁধারে আশীষ যেন গাে সঙ্গে রয়।
অযথা হাসির অনুশােচনায় কাঁদব যবে হে মহিমাময়,
ক্রন্দসী চোখে সুপারিশকারী সাথে হােন চির নিঃসংশয়।
হাশরে যখন দেখব আমার লাগামহীনতা যত বিষয়,
তাঁর সে আনত দৃষ্টি লাজের সােহবত যেন নসীব হয়।
খােদা হে, যখন পার হতে চাই তীক্ষ্ণ সে পুল তমসাময়,
চাইগাে সঙ্গ হাশেমী রবির আলাের দিশারী জ্যোর্তিময়।
শুনগাে দয়াল শমসের ধারে চলবে যখন চরণদ্বয়,
'রক্ষা করাে হে প্রভু' বলে সেই সমব্যথী যেন আশীষ কয়।
তােমার সকাশে প্রভু হে আমার যতনা ভিক্ষা পূণ্যময়,
সে দোয়ায় যেন পবিত্র মুখ ফেরেশতারাও ‘আমীন’ কয়।
ঘুমঘাের কেটে যখন রেযার এই শির উত্তোলিত হয়,
চেতনার ধন ইশকে রাসুল সাথী হােক থাকি যত সময়।
উচ্চারণ ১০
পেশে হক মুঝদা শাফাআত কা সুনাতে জায়েঙ্গে,
আপ রােতে জায়েঙ্গে হামকো হাঁসাতে জায়েঙ্গে ।।
দিল নিকল জানে কী জা হ্যায় আ-হ কিন আখোঁ সে উঅহ,
হামসে পেয়াসোঁ কে লিয়ে দরইয়া বাহাতে জায়েঙ্গে ॥
কুশতগানে গরমিয়ে মাহশার কো উঅহ জানে মসীহ্,
আজ দামান কী হাওয়া দে কর জিলাতে জায়েঙ্গে ॥
গুল খিলে গা আজ ইয়ে উনকী নসীমে ফয়য সে,
খােন রােতে আ-য়েঙ্গে হাম মুসকুরাতে জায়েঙ্গে ॥
হাঁ চলাে হাসরাতযাদো সুনতে হ্যাঁয় উঅহ্ দিন আজ হ্যায়,
থী খবর জিস কী কেহ্ উঅহ জলওয়া দেখাতে জায়েঙ্গে ॥
আজ ঈদে আশেকাঁ হ্যায় গর খােদা চাহে কেহ্ উঅহ,
আবরােয়ে পাইওয়াস্তাহ্ কা আলাম দিখাতে জায়েঙ্গে,
কুচ খবর ভী হ্যায় ফকীরাে আজ উঅই দিন হ্যায় কেহ্ উহ,
নে'মাতে খুলদ আপনে সদকে মে লুটাতে জায়েঙ্গে ॥
খাকে উফতাদো বস ঊনকে আ-নে হী কী দের হ্যায়,
সাজাদাহ্ মে উঅহ্ খােদগির কর তুম কো উঠাতে জায়েঙ্গে ॥
ওয়াসআতেঁ দী হ্যায়ঁ খােদা নে দামানে মাহবুব কো,
জুর্ম খুলতে জায়েঙ্গে আওর উঅহ্ ছুপাতে জায়েঙ্গে ॥
লাে উঅহ আ-য়ে মুসকুরাতে হাম আসীরোঁ কী তরফ,
খিরমানে ইসইয়াঁ পর আব বিজলী গিরাতে জায়েঙ্গে ॥
কাব্যানুবাদ ১০
আল্লাহ তায়ালর সামনে সেদিন করতে রইবে শাফাআত,
কাঁদবে নিজে চাইবে উম্মত পায় যেন হাসি,নাজাত ।।
কান্না এমন দীর্ণ হৃদয়,অশ্রুধারা প্রাণ যে না সয়,
উম্মতের তৃষ্ণা মেটাতেই নবীজির এ অশ্রুপাত ॥
মাহশরে প্রাণ ওষ্টাগত,তাঁর ছোঁয়াতে ফের জীবন্ত,
দামানের ঠান্ডা হাওয়াতে সে দিন দেবে আবে-হায়াত ।।
আনবে রােদন রহমতের জোশ,খুলবে কপাল, ফুল হবে দোষ,
রক্ত-অশ্রু বর্ষে নবী আনবে মােদের খােশবরাত ॥
হ্যাঁ,চলাে হে দুঃখে হতাশ,আজ হাশর যে দুঃখ-বিনাশ,
দেখব নবীর শান কারিশমা, রূপ দেখাবে নূরী -যাত ॥
আজ খুশীর ঈদ আশেকানের,চাইলে প্রভূ দো'জাহানের,
মর্যাদার হবে সে মিছিল, পড়বাে নবীর পিছে না’ত ॥
খবর আছে কী,সম্বল হীন, আজ কেমন সে দিন,হাশরের,
উম্মতে নেয়ামত বেহেশতী বিলাবে নূরানী হাত ॥
ভেবােনা হে দুঃখী উম্মত,আসার দেরী শুধুই হযরত,
পড়বে সেজদায় নূর নবীজি, আনবে উম্মতের নাজাত ॥
করল প্রভূ কী প্রশস্ত,তাঁর হাবীবের দামান-দস্ত,
উম্মতের পাপ হােক না যত, লুকাবে সে আখেরাত ॥
ওই আসে হাসি হাসিমুখ,কয়েদী পাবে মুক্তিরই সুখ,
পাপেরই স্তুপ নাশে তাঁর রহমতেরই রশ্মি পাত ॥
আঁখ খােললা গমযদো দেখাে উঅহ গিরইয়াঁ আয়ে হ্যায়ঁ,
লওহে দিল সে নকশে গম কো আব মিটাতে জায়েঙ্গে ॥
সােখতাহ্ জানোঁ পেহ্ উঅহ পুর জোশে রহমত আয়ে হ্যাঁ,
আবে কাউসার সে লাগী দিল কী বুঝাতে জায়েঙ্গে ॥
আফতাব উনকা হী চমকে গা জব আওরোঁ কে চেরাগ,
সরসরে জোশে বালা সে ঝিলমিলাতে জায়েঙ্গে ॥
পায়ে কোবাঁ পুল সে গুরেংগে তেরী আওয়ায পর,
রাব্বি সাল্লিম কী সদা পর ওয়াজদ লাতে জায়েঙ্গে ॥
সরওয়ারে দী লীজে আপনে না-তাওয়ানোঁ কী খবর,
নফস্ ও শয়তাঁ সাইয়েদা কব তক দবাতে জায়েঙ্গে॥
হাশর তক ডালেংগে হাম পয়দাইশে মাওলা কী ধূ-ম,
মিসলে ফারেস নজদ কী ক্বিল-এ গিরাতে জায়েঙ্গে ॥
খাক হাে জায়ে আদুভ জল কর মগর হাম তাে রেযা,
দম মে জব তক দম হ্যায় যিকির উনকা সুনাতে জায়েঙ্গে ॥
খােললা আঁখি,হে গােনাগার,ক্রন্দসী চোখ দেখাে হে তাঁরে,
মানসপটে ব্যথার এই দাগ তুলবে তাঁরই মুনাজাত ॥
আসবে নবী দগ্ধ হিয়ায়, প্লাবন তাঁর রহমত-দরিয়ায়,
‘আবে-কাওসার’ দেয় নিভিয়ে দুঃখীপ্রাণের অগ্নিপাত ॥
তাঁরই রােশনী রইবে সেদিন, অন্য প্রদীপকুল সে অচিন,
ঝড় তুফানে, সংকটে ‘নিভূ নিভূ' যায়, যায় হায়াত ॥
সেদিন শুনলে শব্দ তােমার, নির্ভাবনায় হবাে যে পার,
'রাব্বি সাল্লিম’দোয়ায় তুমি, আমরা পার হই পুলসিরাত ॥
বাদশাহ্ ওগাে দো জাহানের, নাও খবর এই অসহায়ের,
কদিন রইব মন্দ সত্তায়, শয়তানে করবে আঁতাত ॥
হাশর তক করবাে যে পালন, মীলাদে মােস্তফার পার্বন,
সেই পারস্যের মতই নজদের কেল্লা ভাঙব, করব মাত ॥
জ্বলে দুশমন হােক না অঙ্গার; কিন্তু এ প্রতিজ্ঞা রেযা’র,
রয় যতক্ষণ এ বুকে দম থাকবে মুখে যিকর ও না’ত ॥
উচ্চারণ - ১১
চমক তুঝ সে পাতে হ্যাঁয় সব পানে ওয়ালে,
মেরা দিল ভী চমকা দে চমকানে ওয়ালে॥
বরসতা নেহী দে-খ্ কর আবরে রহমত,
বদোঁ পর ভী বরসাদে বসানে ওয়ালে॥
মদীনাহ্ কে খিত্তে খােদা তুঝ কো রাক্ষে,
গরীবোঁ ফকীরোঁ কে টেহরানে ওয়ালে॥
তু যিন্দা হ্যায় ওয়াল্লাহ্ তু যিন্দা হ্যায় ওয়াল্লাহ,
মেরে চশমে আলম সে চুপ জানে ওয়ালে॥
ম্যায়ঁ মুজরিম হোঁ আকা মুঝে সাথ লেলাে,
কেহ রাস্তে মে হ্যায়ঁ জা বজা থানে ওয়ালে॥
হেরম কী যমী আওর কদম রাখ কে চলনা,
আরে সর কা মওকা হ্যায় উ জানে ওয়ালো ।।
চল উঠ জবহাহ্ ফরসা হাে সাকী কে দর পর,
দরে জু-দ আয় মে-রে মসতানে ওয়ালে॥
তেরা খায়েঁ তেরে গােলামোঁ সে উলঝেঁ,
হ্যায় মুনকির আজব খানে গুররানে ওয়ালে ।।
রহেগা ইউঁহী উনকা চর্চা রহেগা,
পড়ে খাক হােঁ জায়েঁ জল জানে ওয়ালে ॥
আব আ-ঈ শাফআত কা সা’আত আব আ-ঈ,
যরা চ্যাইন লে মেরে ঘবরানে ওয়ালে॥
রেযা নফসে দুশমন হ্যায় দম মে না আনা,
কাহাঁ তুমনে দেখে হ্যায়ঁ চন্দরানে ওয়ালে।।
কাব্যানুবাদ - ১১
জ্যোতির উৎস তুমি,পাওয়ার যে পেয়ে যায়,
বিকীর্ণ করাে নূর আমারই এ আত্মায়।।
করুণার যে ধারা,অদেখাই সে ঝরা,
করাে গাে হ্যায় বর্ষণ পাপীদের এ সত্ত্বায়॥
মদীনার এলাকায়,খােদা রাখে সে তােমায়,
গরীব আর ফকীরে বাঁচাবে সে দয়ায়॥
শপথ,তুমি যিন্দা শপথ তুমি যিন্দা,
এ পার্থিব চোখে,কভু দেখতে না পায়॥
আমি তাে গুনাহগার,সংগে নিও তােমার,
পথে পথে পাকড়াওকারীরা সদাশয়॥
হেরমের যমীন তায়,এ চরণ ফেলা দায়,
হে পথিক ঝুঁকাও শির আদবে যে তাই চায়৷।
ঘষে তাের সে কপাল,দ্বারে আয় রে বেহাল,
সাকীর দ্বারে বইছে,করুণা নিতে আয়।।
তােমার খায়,তােমার এ দাসেরে উজাড়ে,
এ শত্রু আজব! কার খেয়ে কার গেয়ে যায়॥
রয়ে যাবে তােমার,চর্চা এরূপ আর,
পুড়ে হােক সে অঙ্গার যে হিংসায় জ্বলে যায়॥
এসেছে সে এখন,সুপারিশ ঝরা ক্ষণ,
ধরাে ধৈর্য একটু,ভয়ে যে মৃতপ্রায় ॥
রেযা নফস ও দুশমন, করাে না অনুসরণ,
পথে রাখতে তােড়জোড়, কে আছে আজি হায় ॥
উচ্চারণ - ১২
সরওয়ার কহোঁ কেহ্ মালেক ও মাওলা কহোঁ তুঝে,
বাগে খলীল কা গুলে যে-বা কহোঁ তুঝে ॥
হেরমাঁ নসীব হোঁ তুঝে উম্মীদ গ্যাহ্ কহোঁ,
জানে মুরাদ ও কা'নে তামান্না কহোঁ তুঝে॥
গুলারে কুদস কা গুলে রঙ্গী আদা কহোঁ,
দরমানে দরদে বুলবুলে শায়দা কহোঁ তুঝে॥
সুবহে ওয়াতান পেহ্ শামে গরীবাঁ কো দোঁ শরফ,
বে-কস নওয়াযে গেসোঁ ওয়ালা কহোঁ তুঝে॥
আল্লাহ্ রে তেরে জিসমে মুনাওয়ার কী তাবিশেঁ, আয় জানে জাঁ মে জানে তজল্লা কহোঁ তুঝে॥
বে দাগ লালা ইয়া কমরে বে কুলফ কহোঁ,
বে খার গুল বনে চমন আ-রা কহোঁ তুঝে।।
মুজরিম হোঁ আপনে আফও কা সামাঁ করোঁ শাহা,
ইয়ানি শফী’ রােযে জাযা কা কহোঁ তুঝে॥
ইস মুর্দা দিল কো মুঝদাহ্ হায়াতে আবাদ কা দোঁ,
তা-ব ও তাওয়ানে জানে মসীহা কহোঁ তুঝে।।
তেরে তু ওয়াসফে আইব তানাহী সে হ্যায়ঁ বরী,
হায়রাঁ হোঁ মেরে শাহ্ ম্যায়ঁ কিয়া কিয়া কহোঁ তুঝে॥
কেহ্ লেগী সব কুছ উনকে সনাখাঁ কী খামশী,
চুপ হাে রাহা হ্যায় কেহ্ কে ম্যায়ঁ কিয়া কিয়া কহোঁ তুঝে॥
লে-কীন রেযা নে খতমে সুখন ইস পেহ কর দিয়া,
খালি কা বান্দা খাল্ক কা আ-কা কহোঁ তুঝে ॥
কাব্যানুবাদ - ১২
বাদশাহ বলি, কি মাওলা, মালিক বলি তােমায়,
বাগে খলীলেরই ফুল ঠিক বলি তােমায় ॥
বঞ্চিত ভাগ্য মাের, তবু আশার নাহিতাে ওর,
আশার জীবন রত্ন মানিক বলি তােমায় ॥
কুদসী কাননে ফুল রূপে রংয়ে অতুল,
বুলবুল প্রাণে প্রশান্তি সঠিক বলি তােমায়॥
স্বস্তির প্রভাত না চাই, কষ্টে এ রাত কাটাই,
দুঃখীর সারথী,দক্ষ নাবিক বলি তােমায়॥
নূরানী যাতের আলাে,কাটে সকল কালাে,
জানের ও জান, তজল্লী মৌলিক বলি তােমায়॥
তুমি দাগবিহীন ফুল,যে চাঁদে নেই কলঙ্ক চুল,
কাঁটাহীন ফুলে অলৌকিক বলি তােমায়॥
মুনিব,আমি গােনাগার,উপায় করি যে ক্ষমার,
হাশরে সে শাফাআত সঠিক বলি তােমায়॥
মৃত প্রাণে সুসংবাদ, চিরহায়াতে আবাদ,
ঈসার সঞ্জীবনী চৌদিক বলি তােমায়।।
কত গুন অফুরন্ত শেষ নেই, তা অনন্ত,
হয়রান এ মন চায় আরাে অধিক বলি তােমায়।।
তারীফ করেছে যারা, নির্বাক, ভাষাহারা,
চুপ হই তাে সৃষ্টিতে লা-শরীক বলি তােমায় ॥
কিন্তু রেযা কথা তাঁর, বলে শুধু এ সার,
স্রষ্টার এ বান্দা,সৃষ্টির মালিক বলি তােমায় ॥
উচ্চারণ - ১৩
মুঝদা বা-দ আয় আসিয়োঁ শাফে শাহে আবরার হ্যায়,
তাহনিয়ৎ আয় মুজরিমাে যাতে খােদা গফফার হ্যায়॥
আরশ সা ফরশে যমী হ্যায়,ফর্শপা আরশে বরী,
কিয়া নিরালী তরয কী নামে খােদা রফতার হ্যায়॥
চান্দ শক হাে পেড় বােলেঁ জানওয়ার সাজদে করেঁ,
বারাকাল্লাহ মারজায়ে আলম ইয়েহী সরকার হ্যায়॥
জিনকো সুয়ে আসমাঁ পেহলাকে জল থল ভর দিয়ে,
সদকা উন হাথোঁ কা পিয়ারে হামকো ভী দরকার হ্যায়॥
লব যেলালে চশমায়ে কুন মেঁ গুনধে ওয়াক্তে খমীর,
মুর্দে যিন্দা করনা আয় জাঁ তুম কো কিয়া দুশওয়ার হ্যায়॥
গােরে গােরে পাউঁ চমকা দো খােদাকে ওয়াস্তে,
নূর কা তড়কা হাে পিয়ারে গাের কী শব তার হ্যায় ॥
তেরে হী দামান পেহ্ হার আসী কী পড়তী হ্যায় নযর,
এ্যাক জানে বে খাত্বা পর দো জাঁ কা বার হ্যায়॥
জোশে তুফাঁ বাহরে বে পায়াঁ হাওয়া না সায গার,
নূহ কে মাওলা করম করলে তু বেড়া পার হ্যায়॥
রহমাতুল্লিল আলামী তে-রী দুহাঈ দব গ্যায়া,
আব তু মাওলা বে তরেহ্ সরপর গুনাহ কা বার হ্যায়॥
হায়রাতেঁ হ্যায়ঁ আঈনাদারে উফুরে ওসাসফে গুল,
উনকে বুলবুল কী খমুশী ভী লবে ইযহার হ্যায়॥
গাে-ঞ্জ গােঞ্জ উঠহে হ্যাঁয় নগমাতে রেযা সে বাে-স্তাঁ,
কিউঁ না হাে কিস ফুল কী মিদহাত মে ওয়া মিনকার হ্যায়॥
কাব্যানুবাদ -১৩
দেই সুসংবাদ হে দীনহীন, আছে শফীয়ে মুযনেবীন,
খুশী হ’সব পাপীরা আজ, গাফফার রাব্বে আলামীন।।
আরশসম এই যে যমীন,পা’য় ঝুঁকে আরশে বরীণ,
আল্লাহ,আল্লাহ! কী অভিনব সফরে না সেই আল আমীন।
টুকরাে হয় চাঁদ,গাছ কথা কয়,পশু সিজদায় পতিত হয়,
সুবহানাল্লাহ্! কেন্দ্র সৃষ্টির এই আসনেই সমাসীন॥
উঠায়ে যা আসমানের দিক, ভরলে যমীন জল চারিদিক,
সেই প্রিয় হাতের ওয়াসীলা চাই তৃষিত এই অধীন॥
‘কুন’ শরাবে সিক্ত সেই মুখ,সৃষ্টিলগ্নেই স্রষ্টা উৎসুক,
মুর্দ্দা যিন্দা করতে সেই মুখ নয় তাে কষ্টের সম্মুখীন॥
ফর্সা ফর্সা পাক দু’চরণ,দোহাই আল্লাহর, করাে অর্পন,
নূরে দাও প্রভাত ফুটিয়ে, গােরের এই রাত হােক না দিন॥
সব পাপী উম্মুখ চেয়ে রয়,দামান তােমার নসীব কি হয়,
একটি নিষ্পাপ প্রাণে বােঝা দোজাহানের সেই জামিন॥
জোর তুফান, সাগর যে অকুল বইছে হাওয়া কী প্রতিকুল,
নূহের ও ত্রাণকর্তা চাইলে কাটবে হাল এ অন্তরীণ॥
এ গােলাম আজ গেল ফেঁসে পাপের বােঝা মাথাতে সে,
দোহাই ত্বরাও,তুমি এসে রাহমাতুল্লিল আলামীন।।
বিস্ময়ে এই নিরবতা,প্রচুর না'তের কথকতা,
প্রেম বাগের এ বুলবুলিটার চুপ হওয়াই যে প্রেমবীণ॥
অনুরণিত এই কানন,রেযার কণ্ঠে সুর ও বচন,
নাই বা কেন ফুল সে কেমন, যাঁর গানে সব সুর বিলীন॥
উচ্চারণ - ১৪
আর্শ কী আকল দঙ্গ হ্যায় চরখ মে আসমান হ্যায়,
জানে মুরাদ আব কিধার হায়ে তেরা মকান হ্যায়ঁ॥
বযমে সনায়ে যুলফ মে মেরী আরুসে ফিকর কো,
সারী বাহারে হাশত খুলদ ছােটা সা ইৎরদান হ্যায়॥
আরশ পেহ্ জাকে মুরগে আকল থক কে গিরা গশ আ গ্যায়া,
আউর আভী মনযিলাে পারে পেহলাহী আ-সতান হ্যায়॥
আরশ পেহ্ তাযাহ ছেড় ও ছাড় পরশ পেহ্ তুরফা ধুম ধাম,
কান জিধার লাগাইয়ে তেরী হী দাসতান হ্যায় ॥
ইক তেরে রুখ কী রুশনী চ্যাইন হ্যায় দো জাহান কী,
ইনস কী উনস উসী সে হ্যায় জানকী উঅহী জান হ্যায় ॥
উঅহ্ জু না থে তু কুছ না থা,উঅহ জু না হোঁ তু কুছ নহো,
জান হ্যায়ঁ উঅহ জাহান কী জান হ্যায় তু জাহান হ্যায়॥
গােদ মে আলমে শাবাব হালে শাবাব কুছ না পু-ছ,
গুল বনে বাগে নূর কী আওর হী কুছ উঠান হ্যায়॥
তুঝ সা সিয়াহ্ কার কওন উনসা শফী হ্যায় কাহাঁ,
ফির তুঝহী কো ভূল জায়ে দিল, ইয়ে তেরা গুমান হ্যায়॥
পেশে নযর উঅহ নও বাহার, সেজদে কো দিল হ্যায় বেকারার,
রােকিয়ে সর কো রােকিয়ে হাঁ ইয়েহী ইমতিহান হ্যায়॥
শানে খােদা না সাথ দে, উনকে খেরাম কা উঅহ বায,
সিদরাহ্ সে তা মে জিসে নর্মসী ইক উড়ান হ্যায়॥
বারে জালাল উঠা লিয়া গরচে কলীজা শক্ব হুয়া,
ইউঁ তু ইয়ে মাহে সবযা রঙ্গ নযরোঁ মে ধান পান হ্যায়॥
খাওফ না রাখ রেযা,তু তু হ্যায় আবদে মুস্তফা,
তেরে লিয়ে আমান হ্যায় তেরে লিয়ে আমান হ্যায় ॥
কাব্যানুবাদ - ১৪
লােপ পেয়ে যায় আরশের ও জ্ঞান ফিরছে ঘুরে সে আসমান,
সব উদ্দেশ্যের কোথায় সে জান,হায়রে কোথায়-সে উচুঁ স্থান ॥
কেশদামের গুণগানের মজলিস, দুলহানরূপ এই চিন্তায় হদিস,
আট বেহেশেতের এ বিশাল কানন, ছােট্ট সে এক আতরদান॥
আরশে গিয়ে জ্ঞানের পাখি, পড়ল লুটে, জ্ঞান রয়নি বাকী,
আর ও কত মনযিল যে বাকী, এই নবীর পয়লা সােপান ॥
আরশে নতুন কী সে গুঞ্জন,এ ভুলােকেও কী আয়ােজন,
নবী তােমার চর্চাই শুনি, যে দিকে দেই মনের কান॥
জ্যোতি সে তব চেহারা পাকের,প্রশান্তি আনে দোজাহানের,
মানবের এ প্রেম সেখান হতেই তা' হতে সব প্রাণীরই প্রাণ॥
না ছিল কিছুই, ছিলেনা যখন,না হলে তুমি, নয় এ সৃজন,
প্রাণ তুমি তাে এ জাহানের, প্রাণ হলেই তাে হয় এ জাহান॥
কোলে ভরা যৌবনের ভূবন, মরি মরি এক অপূর্ব মন,
নূর বাগিচার সেই কিশলয় বেড়ে সে যায় ওই লা-মকান॥
আমার মত নেই পাপী ধরায় তাঁর মত দয়ালু কোথায়,
ভাবিস কেন সে যাবে ভুলেই,ভাবনা সে ভুল হে পাপীপ্রাণ ॥
নব বসন্ত সামনে হেরি, দিল পাগল কয় সিজদা করি,
রুখো,রুখাে শির একটু রুখাে আশেকের পরীক্ষা মহান॥
অপূর্ব!সে যায় উর্ধে একা,জিব্রাইলেরও নেই সে পাখা,
সিদরা থেকে এ যমীনে যাঁর সামান্যতম একটু উড়ান॥
কুদরতের সে তজল্লী ভার,বইলাে যদিও বুক ভাঙে তাঁর,
এমনিতে তাঁর নাজুক বদন,দেখতে সে চাঁদ জুড়ায় পরান ॥
ভয় কী রেযা হাশরে আর,গােলাম তুমি যে মােস্তফার,
নির্ভাবনায় থাক তুমি অভয়বাণী শুনলে ‘আমান’॥
উচ্চারণ - ১৫
উঠা দো পর্দা দেখা দো চেহরা কেহ নূরে বারী হেজাব মেঁ হ্যায়,
যমানা তারীক হাে রাহা হ্যায়,কেহ মেহরে কবসে নেকাব মেঁ হ্যায়॥
নেহী উসহ মীঠী নেগাহ ওয়ালা,খােদা কী রহমত হ্যায় জলওয়া ফরমা,
গযব সে উনকে খােদা বাচায়ে জালালে বারী এতাব মেঁ হ্যায়॥
জলী জলী বু সে উসকী পয়দা,হ্যায় সােযিশে ইশকে চশমে ওয়ালা,
কাবাবে আহু মে ভী না পায়া মযা জু দিলকী কাবাব মেঁ হ্যায়॥
উনহী কী বু মাইয়ায়ে সমন হ্যায়,উনহী কা জলওয়া চমন চমন হ্যায়,
উনহী সে গুলশান মেহেক রহে হ্যায়ঁ উনহী কী রঙ্গত গুলাব মেঁ হ্যায়॥
তেরী জলো মে হ্যায় মাহে তায়বা, হেলাল হার মর্গ ও যিন্দেগী কা,
হায়াত জাঁ কা রেকাব মেঁ হ্যায় মামাত আ’দা কা ডাব মেঁ হ্যায়॥
সিয়া লিবাসানে দারে দুনিয়া ও সবযে পােশানে আরশে আ’লা,
হার এক হ্যায় উনকে করম কা পিয়াসা ইয়ে ফয়যে উনকী জনাব মেঁ হ্যায় ॥
উঅহ গুল হ্যায় লবহায়ে নাযুক উনকে, হাযারাে ঝড়তে হ্যায় ফুল জিন সে,
গুলাব গুলশান মে দেখে বুলবুল ইয়ে দে-খ গুলশান গুলাব মেঁ হ্যায়॥
জলী হ্যায় সােযে জিগর সে জাঁ তক, হ্যায় তালেবে জলওয়ায়ে মােবারক,
দেখা দো উঅহ লব কেহ্ আবে হায়ওয়াঁ কা লুৎফ জিনকে খেতাব মেঁ হ্যায়॥
খাড়ে হ্যায়ঁ মুনকার নকীর সর পর না কোয়ী হামী না কোয়ী আ-ওয়ার,
বাতাদো আ’কর মেরে পয়াম্বর কেহ্ সখ্ত মুশকিল জওয়াব মেঁ হ্যায় ॥
খােদায়ে কাহহার হ্যায় গযব পর,খুলে হ্যাঁয় বদ কারীয়োঁ কে দফতর,
বাচালাে আ'কর শফীয়ে মাহশর তুমহারা বান্দা আযাব মেঁ হ্যায়॥
করীম এ্যয়সা মিলা কেহ্ জিসকে খুলে হ্যাঁয় হাথ আওর ভরে খাযানে,
বাতাও এ্যায় মুফলেসাে কেহ্ ফির কিউঁ তুমহারা দিল ইদতিরাব মেঁ হ্যায়॥
গুনাহ কী তারীকিয়াঁ ইয়ে ছুপা'য়ে আমন্ড কে কালী ঘটায়ে আ-য়েঁ,
খােদা কে খােরশীদ মেহর ফরমা কেহ যররা বস ইদতিরাব মে হ্যাঁয়॥
করীম আপনে করম সদকা,লঈম বে কদর কো না শরমা,
তু আউর রেযা সে হেসাব লে'না রেযা ভী কোঈ হেসাব মে হ্যাঁয় ॥
কাব্যানুবাদ - ১৫
উঠাও পর্দা, দেখাও সে চেহারা, খােদার জ্যোতি সে রয়েছে পর্দায়,
জগত আধারে ডুবে ডুবে হায়,কতকাল আর চাঁদ চেহারী লুকায়॥
নহে সে নিছক দয়ারই দৃষ্টি, খােদারই রহমত এ মূর্ত সৃষ্টি,
গজব হতে তাঁর বাচাঁও এ সৃষ্টি,কেননা তায় খােদ খােদা ক্ষেপে যায়।।
পড়ে যাওয়া বাস্প হতে পয়দা, সে চোখ ওয়ালার প্রেমের ব্যথা,
কাবাব হরিণের অত না মজা, দিলের কাবাবে যে স্বাদ পাওয়া যায় ॥
ফুলের পুঁজি কি তাঁরই সে সৌরভ, রূপচ্ছটা তাঁর বসন্তে গৌরব,
তাঁরই করুণা বাগানে বৈভব,তাঁরই রূপে ফুল রাঙ্গা বাগিচায়॥
মাদিনারই চাঁদ তােমারই কব্জায়, ধরা আছে জান, থাকে কিবা যায়,
তােমারই অশ্বের রেকাবে প্রাণ হায়, মরণ শত্রুর সেও এ কব্জায় ॥
কালাে পােষাকে এ দুনিয়াওয়ালা কী আরশে সবুজ লেবাসওয়ালা,
সবার আছে তাঁর দয়ার পিয়াস, চরণে যায় যে করুনা সেই পায়॥
সে পুষ্পসম কোমল দু'ঠোটে হাজারাে পুষ্প ঝরে ও ফোটে,
কাননে ফুল তাই অলিরা জোটে,কত মালঞ্চ এ পুষ্প শােভায় ॥
কী মর্ম জ্বালায় এ দগ্ধ অন্তর, হেরিতে চায় সে শােভা নিরন্তর,
দেখাও দেখাও সে পবিত্র অধর, রয় আবে হায়াত যারি সে ভাষায়॥
শিয়রে মুনকার নকীর দাঁড়িয়ে, না আসে বন্ধু কেউ আগ বাড়িয়ে,
এসাে সওয়ালের জওয়াব শিখায়ে কী সঙ্কটে দাস আজি অসহায়॥
গজবে আছেন খােদা সে কাহহার, হিসাবে পাপী কঠিন সে দরবার,
বাঁচাও এসে হে শফীয়ে মাহশার, তােমারই বান্দা কী দূর্দশায়॥
মিলেছে দাতা কী মুক্ত হস্ত, সে রাজকোষও তাঁর কী প্রশস্ত,
বলাে হে দুঃস্থ, হে রিক্তহস্ত তবু কেন মন তব আশঙ্কায়॥
পাপের আঁধারে ছেয়েছে এ মন, গ্লানির কালিমা জমলাে যে ক্ষণ,
খােদারই সূর্য করুণা এখন অনুপরিমাণ সার এ দশায়॥
দাতা তােমারই দানের দোহাই এ ক্ষুদ্র অধীনে ফেলােনা লজ্জায়,
অপর কাউকে হিসাবে নেওয়া যায়, রেযা বুঝি সে হিসেবে গােনা যায়॥