আমীরে মুয়াবিয়া কি সরাবী ছিলেন নাউযুবিল্লাহ..? এই অপবাদ রাফজিরা দিয়ে থাকে। তাদের বক্তব্যের দলিল হলো নিম্নোক্ত মুসনাদে আহমাদের হাদীস।
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنِي حُسَيْنٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ بُرَيْدَةَ قَالَ: دَخَلْتُ أَنَا وَأَبِي عَلَى مُعَاوِيَةَ فَأَجْلَسَنَا عَلَى الْفُرُشِ، ثُمَّ أُتِينَا بِالطَّعَامِ فَأَكَلْنَا، ثُمَّ " أُتِينَا بِالشَّرَابِ فَشَرِبَ مُعَاوِيَةُ، ثُمَّ نَاوَلَ أَبِي، ثُمَّ قَالَ: مَا شَرِبْتُهُ مُنْذُ حَرَّمَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " ثُمَّ قَالَ مُعَاوِيَةُ: كُنْتُ أَجْمَلَ شَبَابِ قُرَيْشٍ وَأَجْوَدَهُ ثَغْرًا، وَمَا شَيْءٌ كُنْتُ أَجِدُ لَهُ لَذَّةً كَمَا كُنْتُ أَجِدُهُ وَأَنَا شَابٌّ غَيْرُ اللَّبَنِ، أَوْ إِنْسَانٍ حَسَنِ الْحَدِيثِ يُحَدِّثُنِي
আমাকে হাদীস বয়ান করেছন যাইদ হাবাব, হুসাইন বিন ওয়াকদ হইতে বর্ণিত তিনি বলেন আমাকে হাদীস বর্নণা করেছেন আব্দুল্লাহ বিন বুরাইদাহ তিনি বলেন আমি এবং আমার পিতা আমীরে মুয়াবীয়ার দরবারে দাখিল হলাম... তারপর আমার পিতা সেখানে বিছানায় বসে,পড়লেন এবং তিনি (আমীরে মুয়াবীয়া) কিছু খাবার পরিবেষন করলেন তারপর আমরা তা খেলাম।অতঃপর আমীরে মুয়াবীয়া সারাব নিয়ে এলেন এবং তিনি তা পান করলেন এবং আমার পিতাকে দিলেন তখন আমার পিতা বললেন রসুল হারাম করে দেওয়ার পর ইহা আমি কখনও পান করেননি। অতঃপর আমীরে মুয়াবীয়া ফরমালেন..... আমি যে জিনিশে স্বাদ পেয়েছি, আমি যখন কিশোর ছিলাম সেই সময় শুধু লসসিতে পেতাম। আজ যেমন স্বাদ পেয়েছি তেমন পুর্বেও স্বাদ পেয়েছিলাম।
মুসনাদে আহমাদ, খন্ড-৩৮, হাদীস নং-২২৯৪২
উপরি উক্ত হাদীসের উপর আমার জবাব। প্রথমে তো উক্ত হাদীসে শারাব বলতে পানীয় বোঝায় কারণ আরবী শারাব ( شرابٍ)অর্থ যে কোন ধরণের পানীয়। কিন্তু মুর্খ রাফজিরা পাণীয়কে মদ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে মাত্র। মুর্খ রাফজিদের জানা উচিৎ মদের আরবী হলো -الْخَمْر।যাইহোক উক্ত হাদীসে যেহেতু নিম্নোক্ত লাইন আছে
ثُمَّ نَاوَل َ أَبِي، ثُمَّ قَالَ: مَا شَرِبْتُهُ مُنْذُ حَرَّمَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ অর্থ অতঃপর আমীরে মুয়াবীয়া শারাব নিয়ে এলেন এবং তিনি তা পান করলেন এবং আমার পিতাকে দিলেন তখন আমার পিতা বললেন রসুল হারাম করে দেওয়ার পর ইহা আমি কখনও পান করেননি। রাফজি -শিয়ারা উক্ত লাইনটিই দলিল হিসাবে নেয়। তাই উক্ত লাইনের জবাব দেওয়া প্রয়োজন মনে করি ।জবাব হিসাবে বলা যায় উক্ত হাদীসের সনদ সহি হলেও তা গরীব অর্থাৎ
ইহা খাবরে ওয়াহিদ থেকে প্রমাণিত।খাবরে ওয়াহিদের মতন তেমন নিক্ষুঁত নাও হতে পারে গরীব হাদীসের কথা তো বাদই দিলাম । উপরিউক্ত মুসনাদে আহমাদের বর্ণনার মতন যে নিক্ষুঁত নয় বরং তাতে ক্ষুঁত আছে তা প্রমাণ করে নিম্নোক্ত মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবার বর্ণনা ।
حدثنا زيد بن الحباب، عن حسين بن واقد، قال: حدثنا عبد الله بن بريدة، قال: قال: دخلتُ أنا وأبي على معاوية، فأجلس أبي على السرير وأُتيَ بالطعام فطعمنا، وأُتِيَ بشرابٍ فشرب، فقال معاوية: «ما شيء كنت أستلذه وأنا شباب فآخذه اليوم إلا اللبن – فإني آخذه كما كنت آخذه قبل اليوم –
والحديث الحسن
আমাকে হাদীস বয়ান করেছন যাইদ হাবাব, হুসাইন বিন ওয়াকদ হইতে বর্ণিত তিনি বলেন আমাকে হাদীস বর্নণা করেছেন আব্দুল্লাহ বিন বুরাইদাহ তিনি বলেন আমি এবং আমার পিতা আমীরে মুয়াবীয়ার দরবারে দাখিল হলাম... তারপর আমার পিতা সেখানে বিছানায় বসে,পড়লেন এবং তিনি (আমীরে মুয়াবীয়া) কিছু খাবার পরিবেষন করলেন তারপর আমরা তা খেলাম।এবং সঙ্গে পানীয় ( شرابٍ) নিয়ে এলেন তিনি তা পান করলেন আমরাও পান করলাম...অতঃপর আমীরে মুয়াবীয়া ফরমালেন..... আমি যে জিনিশে স্বাদ পেয়েছি, আমি যখন কিশোর ছিলাম সেই সময় শুধু লসসিতে পেতাম। আজ যেমন স্বাদ পেয়েছি তেমন পুর্বেও স্বাদ পেয়েছিলাম।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, খন্ড-১৬,পৃষ্ঠা-৩১২০১
উক্ত কিতাব দ্বয়ের সনদ লক্ষ করলে বোঝা যায় উভয়ের হাদীসের সনদ একি। কিন্তু দুটো হাদীসের মতন লক্ষ করলে বোঝা যায় মুসানাদে আহমাদে অতিরিক্ত সংযোজন হিসাবে নিম্নোক্ত অংশ যোগ করা আছে
ثُمَّ نَاوَلَ أَبِي، ثُمَّ قَالَ: مَا شَرِبْتُهُ مُنْذُ حَرَّمَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ অর্থ আমার পিতাকে দিলেন তখন আমার পিতা বললেন রসুল হারাম করে দেওয়ার পর ইহা আমি কখনও পান করেননি। কিন্তু উক্ত অংশটি মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাতে নেই । অতএব বলা যেতে পারে উক্ত উদ্ধৃতিটি মুসনাদে আহমাদে অতিরিক্ত সংযোজন করা হয়েছে। যেমন ইমাম হাইসামি নিজের কিতাব মাজমাউজ জাওয়াইদে বলেন মুসনাদে আহমাদের উক্ত লইনটি অতিরিক্ত সংযোজন এবং ইহার মতন মুনকার । নিচে তার দলিল
وهذه الزيادة المشكلة في المتن والتي نجدها في مسند أحمد لانجدها في مصنف ابن أبي شيبة وهي مروية عنده بنفس الطريق.ولهذا نجد الهيثمي استغرابه من هذه النكارة في المتن
ইহার মতনের মধ্যে অতরিক্ত বিভ্রান্তিকর সংযোজন রয়েছে যাহা মুসনাদে আহমাদে আমরা পেয়েছি কিন্তু মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহতে তাহা পাইনি। এবং তার নিকট একি তুরুক হইতে বর্ণিত হয়েছে।অতএব আমরা পেয়েছি, ইমাম হাইশামি ইহাকে গারিব মনে করেছেন যাহার মতন মুনকার ।
মাজমাউজ জাওয়ায়িদ, খন্ড-৫ পৃষ্ঠা -৪২
এইবার দেখা যাক আমীরে মুয়াবিয়ে মদ পান সম্পর্কে কি বলেন যাতে প্রমাণ হবে আমীরে মুয়াবীয়া উপর মদ্যপ হওয়ার অভিযোগ মিথ্যা এবং অপবাদ মাত্র ।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ أَنَّهُ سَمِعَ عَاصِمَ بْنَ بَهْدَلَةَ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ مُعَاوِيَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا شَرِبُوا الْخَمْرَ فَاجْلِدُوهُمْ ثُمَّ إِذَا شَرِبُوا فَاجْلِدُوهُمْ ثُمَّ إِذَا شَرِبُوا فَاجْلِدُوهُمْ ثُمَّ إِذَا شَرِبُوهَا الرَّابِعَةَ فَاقْتُلُوهُمْ
হাদীস বর্ণনা করেছেন মুহাম্মাদ বিন জাফার তিনি বলেন আমাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন সুয়েবাহ তিনি আসিম বিন বাহদালা থেকে শুনেছেন তিনি হাদীস বর্ণনা করেন আবু স্বলেহ থেকে তিনি বলেন আমীতে মুয়াবীয়া বর্ণনা করে বলেন নবীএ আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমান যে কেও মদ পান করে তো তাদের এক শত চাবুক মারো। এবং পুনরায় পান করলে পুনরায় তাদের চাবুক মারো এরপরও যদি এমনকি চুতুর্থবার পান করে তাদের কতল করে দাও।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৪৮
উক্ত হাদীসে মদপানের বিরোধী মূলক বক্তব্য প্রমাণ করে রাফজিরা বিভিন্নভাবে আমীরে মুয়াবিয়ার উপর অপবাদ দিতে চায় যা তাদের একটা কুকৌশল মাত্র।