“প্রচলিত জাল হাদিস” যা মাওলানা মতিউর রহমান এর লিখিত ৬৮-৭২ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী এবং পাকিস্তানের মৌলভী সরফরায খানের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছে যে,লিখেছে, বড় পীর শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী رضي الله عنه এর প্রসিদ্ধ কিতাব ‘গুনিয়াতুত ত্বালিবিন' এবং ইমাম গাযযালী رضي الله عنه রচিত শ্রেষ্ঠতম গ্রন্থ “ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন’র মধ্যে অসংখ্য জাল হাদিস রয়েছে। লিখেছে, এতগুলাে জাল হাদিস রয়েছে গ্রন্থদ্বয়ে যা গণনা করা অসম্ভব। অপরদিকে আবার প্রচলিত জাল হাদিস' গ্রন্থে উভয় বুযুর্গের প্রশংসা করেছেন এবং কারামত বিশিষ্ট বুযুর্গ ওলী আখ্যিায়িত করে। যেমন উক্ত বইয়ের ৬৮ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, “নিঃসন্দেহে হযরত শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী رضي الله عنه তাঁর যুগের বড় বুযুর্গ, কারামত বিশিষ্ট ওলী, ইসলাহের পাঠদানকারী এবং একজন সুবক্তা ছিলেন। তবে তিনি রিযাল শাস্ত্রে (হাদীসে) বিজ্ঞ ছিলেন না। হাদীসের সহিহ, দ্বঈফকে মুহাদ্দিসীনে কেরামের ন্যায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন না।
.আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার “হাদিসের নামে জালিয়াতি" বইয়ে উপরের লেখকের কথার সমর্থন করেছে।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আপনারা দেখলেন, তারা তাকিদ দিয়ে লিখেছে গাউছে পাক رضي الله عنه নিঃসন্দেহে বড় বুযুর্গ ও ওলীয়ে কামেল ছিলেন। তাদের কাছে প্রশ্ন হলাে তারা যদি তাঁদের কিতাবে জাল হাদিস লিখে থাকে, তাহলে কিভাবে এত বড় বুযুর্গ হয়? অথচ তিনি উক্ত গ্রন্থের ৪৩ পৃষ্ঠায় লিখেছে জাল রেওয়ায়েত বর্ণনা করা কবীরা গুনাহ। কবীরা গুনাহগার সকলের মতে ফাসেক এবং আর এই ব্যক্তি জাহান্নামে শাস্তির উপযুক্ত।
তাহলে গাউছে পাক رضي الله عنه ও ইমাম গাযযালী رضي الله عنه তারা উভয়ই জাহান্নামী হলেন তাদের ফতােয়ায়? আবার তারা কিভাবে কারামত বিশিষ্ট ওলী হন। এটা কী একমুখে দু'কথা নয়? তারাই হাদিস উল্লেখ করেছে, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন,
-“যে ব্যক্তি আমার উপর মিথ্যারােপ করবে, সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা খুঁজে নেয়।” সুতরাং তারা একমুখে দুধরনের ফতােয়া দেয়ার মাধ্যমে জাহান্নামের ঠিকানা বানিয়ে নিলাে। উক্ত পুস্তকে আরও লিখেছে যে, শায়খ আব্দুল কাদের জিলানী رضي الله عنه শুধু তাঁর যুগের বড় বুযুর্গ ছিলেন! নাউযুবিল্লাহ! অথচ বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা মােল্লা আলী কারী رضي الله عنه তাঁর উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ “নুযহাতুল খাওয়াতির” গ্রন্থে লিখেন,
-“নিশ্চয় আকাবির ওলামা থেকে আমার কাছে এ খবর পৌঁছেছে যে, হযরত ইমাম হাসান ইবনে আলী رضي الله عنه ফিতনা ফ্যাসাদের কারণে যখন খিলাফতের দাবি ছেড়ে দিলেন, তখন আল্লাহ তা'য়ালা এর পরিবর্তে তাঁর ও তাঁর পরবর্তী সন্তানদের মধ্যে কুতবিয়্যাত-ই-কোবরা (গাউছিয়াত-ই-উযুমা) এর মর্যাদা দান করেছেন। প্রথম কুতুব হলেন সায়্যিদুনা ইমাম হাসান رضي الله عنه মধ্যখানে শুধুমাত্র কুতুব হন হযরত শায়খ আব্দুল কাদির জিলানী رضي الله عنه আর সর্বশেষ কুতুব হবেন ইমাম মাহদী رضي الله عنه
অতএব প্রমাণ হয়ে গেল, গাউছে পাক আব্দুল কাদের জিলানী رضي الله عنه তাঁর যুগের নয় বরং কিয়ামতের পূর্বে ইমাম মাহদী رضي الله عنه আগমনের পূর্ব পর্যন্ত সর্বশ্রেষ্ঠ কুতুবুল আকতাব এবং গাউসুল আযম। শুধু তাই নয়, গাউসে পাক এবং ইমাম গাযযালী رضي الله عنه এর জ্ঞান সম্পর্কে স্বয়ং আশরাফ আলী থানবী এবং পাকিস্তানের সরফরায খান কী পরিমাপ জ্ঞানের বর্ণনা দিবেন ,আসুন তাদের মুখে শুনি।
বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা মােল্লা আলী কারী হানাফী رضي الله عنه লিখেন : গাউছে পাক رضي الله عنه বলেন,
-“আমার রবের ইজ্জতের শপথ। নিশ্চয় ভাগ্যবান ও হতভাগ্য সকলকে আমার নিকট। উপনীত করা হয়। নিশ্চয় আমার চোখের মণি লাওহ-ই-মাহফুযের উপর রয়েছে। আমি তােমাদের সকলের জন্য আল্লাহর দলীল। আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর না'ইব বা প্রতিনিধি এবং পৃথিবীতে তাঁর উত্তরাধিকারী। তিনি আরাে বলতেন, মানবজাতি, জ্বীন জাতি এমনকি ফিরিশতাদেরও পীর রয়েছে, আর আমি হলাম সকলেরই পীর। হুজ্জাতুল ইসলাম,ইমাম গাযযালী رضي الله عنه
মিএটাজুল আবেদীনের ভূমিকায় লিখেছেন ‘আল্লাহ তায়ালা এই গ্রন্থ লিখার পূর্বে আমাকে স্বপ্নে (কাশফে) তথ্য এবং নির্দেশনা দিয়েছেন তা অনুসরণ করে আমি যাতে কিতাব লিখি। | তাই আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের ব্যাপারে কিছু বলতে হলে বুঝে শুনে বলা উচিত।। | আল্লাহর সাথে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চিন্তা করুন। হযরত আবু হুরায়রা رضي الله عنه হতে বর্ণিত , মহান আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার ওলীর সাথে শত্রুতা করলাে, সে আমাকে যুদ্ধ ঘােষণার চ্যালেঞ্জ করেছে। তাই এ সমস্ত লােকেরা এ দুই মহান ওলীর পশমের তুল্য নয়,তাই তাদের কথা আমাদের কাছে এক পয়সার মূল্যও নেই।