মাযার নির্মাণ 05
দলিল নং – ৩
হযরত দাউদ ইবনে আবি সালেহ হতে বর্ণিত; তিনি বলেন:
একদিন মারওয়ান (মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের রওযা মোবারকে) এসে দেখে, এক ব্যক্তি রওযাশরীফের খুব কাছাকাছি মুখ রেখে মাটিতে শুয়ে আছেন।মারওয়ান তাঁকে বলে, ‘জানো তুমি কী করছো?’ সে তাঁরদিকে এগিয়ে গেলে সাহাবী হযরত খালেদ বিন যাঈদ আবূআইয়ুব আল-আনসারী (রহ:)-কে দেখতে পায়। তিনি(সাহাবী) জবাবে বলেন, ‘হ্যাঁ (আমি জানি); আমি রাসূলুল্লাহ(দ:)-এর কাছে (দর্শনার্থী হতে) এসেছি, কোনো পাথরেরকাছে আসি নি। আমি মহানবী (দ:)-এর কাছে শুনেছি, (ধর্মের) অভিভাবক যোগ্য হলে ধর্মের ব্যাপারে কাঁদতে না; তবে হ্যাঁ, অভিভাবক অযোগ্য হলে ধর্মের ব্যাপারে কেঁদো।
রেফারেন্স/সূত্র
- আল-হাকিম এই বর্ণনাকে সহীহ বলেছেন; অপরদিকে, আয্ যাহাবীও তাঁর সত্যায়নেরসাথে একমত হয়েছেন। [হাকিম, আল-মোস্তাদরাক, ৪র্থ খণ্ড, হাদীস নং ৫১৫]
- ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ:)-ও তাঁর’মুসনাদ’ গ্রন্থের ৫ম খণ্ডে সহীহ সনদে এটি বর্ণনাকরেন। [হাদীস নং ৪২২]
এবার আমরা মাযার যেয়ারত এবং সেখানে কুরআনতেলাওয়াত ও যিকর-আযকার পালনের ব্যাপারেআলোচনায় প্রবৃত্ত হবো। হযরত আম্বিয়া কেরাম (আ:) ওআউলিয়া (রহ:)-বৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারতের উদ্দেশ্যেসফর করার পক্ষে আদেশসম্বলিত মহানবী (দ:) হতে সরাসরিএকখানা ’নস’ তথা হাদীস শরীফ এক্ষেত্রে বিদ্যমান, যাবোখারী শরীফে লিপিবদ্ধ আছে।
হুযূর পাক (দ:) এরশাদ ফরমান:
আমি যদি সেখানে থাকতাম, তাহলে আমি তোমাদেরকে মূসা(আ:)-এর মাযারটি দেখাতাম, যেটি লাল বালির পাহাড়েরসন্নিকটে পথের ধারে অবস্থিত।— বোখারী শরীফ, ২য় খণ্ড, বই নং ২৩, হাদীস নং ৪২৩
এই হাদীস আবারও রাসূলে খোদা (দ:)-এর কাছ থেকেএকটি ‘নস’ (স্পষ্ট দলিল) এই মর্মে যে তিনি আম্বিয়া (আ:)-গণের মাযার-রওযা যেয়ারত পছন্দ করতেন; উপরন্ত, তিনিসাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর কাছে জোরালোভাবে তা ব্যক্তওকরেছেন।
উপলব্ধির জন্যে নিম্নে পেশকৃত হাদীসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।আর এটি মাযার-রওযা যেয়ারতের আদব পালনে সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর আকীদা-বিশ্বাসেরও প্রতিফলন করে।
হযরত সাইয়্যেদাহ আয়েশা (রা:) বর্ণনা করেন:
যে ঘরে মহানবী (দ:) ও আমার পিতা (আবূ বকর – রা:)-কেদাফন করা হয়, সেখানে যখন-ই আমি প্রবেশ করেছি, তখনআমার মাথা থেকে পর্দা সরিয়ে ফেলেছি এই ভেবে যে আমিযাঁদের যেয়ারতে এসেছি তাঁদের একজন আমার পিতা ওঅপরজন আমার স্বামী। কিন্তু আল্লাহর নামে শপথ! যখনহযরত উমর ফারূক (রা:) ওই ঘরে দাফন হলেন, তখন থেকেআমি আর কখনোই ওখানে পর্দা না করে প্রবেশ করি নি; আমি হযরত উমর (রা:)-এর প্রতি লজ্জার কারণেই এ রকমকরতাম।— মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ২০২পৃষ্ঠা, হাদীসঃ ২৫৭০১
জরুরি জ্ঞাতব্য
প্রথমতঃ এই হাদীসে প্রমাণিত হয় যে শুধু আম্বিয়া(আ:)-এর মাযার-রওযা নির্মাণ-ই ইসলামে বৈধ নয়, পাশাপাশি সালেহীন তথা পুণ্যবান মুসলমানদেরজন্যেও তা নির্মাণ করা বৈধ। লক্ষ্য করুন যে হাদীসে‘বায়ত’ বা ‘ঘর’ শব্দটি উল্লেখিত হয়েছে। মানেমহানবী (দ:)-এর রওযা শরীফের সাথে সর্ব-হযরতআবূ বকর (রা:) ও উমর (রা:)-এর মাযার-রওযাও‘একটি নির্মিত ঘরের অভ্যন্তরে’ অবস্থিত ছিল।
দ্বিতীয়তঃ হযরত উমর ফারূক (রা:)-এর উক্ত ঘরেদাফনের পরে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) পূর্ণপর্দাসহ সেখানে যেয়ারতে যেতেন। এটি এতদসংক্রান্তবিষয়ে হযরতে সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর আকীদা-বিশ্বাস প্রতিফলনকারী স্পষ্ট দলিল, যা’তে বোঝা যায়তাঁরা মাযারস্থদের দ্বারা যেয়ারতকারীদের চিনতেপারার ব্যাপারটিতে স্থির বিশ্বাস পোষণ করতেন।হাদীসটির স্পষ্ট বর্ণনার দিকে লক্ষ্য করুন। তাতে বলাহয়েছে ‘হায়া মিন উমর’, মানে হযরত উমর (রা:)-এরপ্রতি লজ্জার কারণে হযরত আয়েশা (রা:) ওখানেপর্দা করতেন।
আমরা জানি, ওহাবীদের ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে গেলে প্রতিটিসহীহ হাদীসকে অস্বীকার করা তাদের স্বভাবসিদ্ধ ব্যাপার।তারা অহরহ আলবানী (বেদআতী-গুরু)-এর হাওয়ালা দেয়নিজেদের যুক্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে; কিন্তু এক্ষেত্রে তারা তাদেরওই নেতারও শরণাপন্ন হতে পারছে না। কেননা, এই হাদীসএতোই বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য যে এমন কি আলবানীওএটিকে যয়ীফ বা দুর্বল ঘোষণা করতে পারেনি (নতুবা তারকুখ্যাতি ছিল বাঁকা পথে সহীহ হাদীসকে অস্বীকার করার, যখন-ই তা তার মতবাদের পরিপন্থী হতো)। এ কথা বলারপাশাপাশি আমরা এও স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, শুধুওহাবীরাই নয়, আলবানী-ও উসূলে হাদীস তথা হাদীসেরনীতিমালাবিষয়ক শাস্ত্রে একেবারেই কাঁচা ছিল। আমরাকেবল তার উদ্ধৃতি দিয়েছি এই কারণে যাতে শত্রুদের মধ্যথেকেই সত্যের স্বীকৃতি পাওয়া যায়।
ইমাম নূরুদ্দীন হায়তামী (রহ:) এই হাদীসটি সম্পর্কে বলেন:
এটি ইমাম আহমদ (রহ:) কর্তৃক বর্ণিত এবং এর বর্ণনাকারীরাসবাই সহীহ মানব।— মজমাউয্ যাওয়াইদ, ৯:৪০, হাদীসঃ১২৭০৪
ইমাম আল-হাকিম (রহ:) এটি বর্ণনা করার পর বলেন,
এই হাদীস বোখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ।— মোস্তাদরাক আল-হাকিম, হাদীসঃ ৪৪৫৮
নাসিরুদ্দীন আলবানী আল-মোবতাদি আল-মাশহুর (কুখ্যাতবেদআতী) এই হাদীসকে মেশকাতুল মাসাবিহ গ্রন্থের ওপরনিজ ব্যাখ্যামূলক ‘তাখরিজ’পুস্তকে সমর্থন করেছে (# ১৭১২)।
ইবনে কাসীর লিখেছে,
ইবনে আসাকির হযরত আমর ইবনে জামাহ (রহ:)-এরজীবনীগ্রন্থে বর্ণনা করেন: ‘এক তরুণ বয়সী ব্যক্তি নামাযপড়তে নিয়মিত মসজিদে আসতেন। একদিন এক নারী তাঁকেঅসৎ উদ্দেশ্যে নিজ গৃহে আমন্ত্রণ করে। তিনি যখন ওইনারীর ঘরে ছিলেন, তখন তিনি উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করেনকুরআনের আয়াত – নিশ্চয় ওই সব মানুষ যারা তাকওয়ারঅধিকারী হন, যখন-ই তাদেরকে কোনো শয়তানী খেয়ালেরছোঁয়া স্পর্শ করে, তখন তারা সাবধান হয়ে যান; তৎক্ষণাৎতাদের চোখ খুলে যায় (৭:২০১)। অতঃপর তিনি মূর্ছা যানএবং আল্লাহর ভয়ে ইন্তেকাল করেন। মানুষেরা তাঁর জানাযারনামায পড়েন এবং তাঁকে দাফনও করেন। হযরত উমর (রা:) এমতাবস্থায় একদিন জিজ্ঞেস করেন, নিয়মিত মসজিদেনামায পড়ার জন্যে আগমনকারী ওই তরুণ কোথায়? মানুষেরা জবাব দেন, তিনি ইন্তেকাল করেছেন এবং আমরাতাঁকে দাফন করেছি। এ কথা শুনে হযরত উমর (রা:) ওইতরুণের কবরে যান এবং তাঁকে সম্ভাষণ জানিয়ে নিম্নেরকুরআনের আয়াতটি তেলাওয়াত করেন – এবং যে ব্যক্তিআপন রবের সম্মুখে দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেন, তারজন্যে রয়েছে দুটি জান্নাত (৫৫:৪৬)। ওই তরুণ নিজ কবরথেকে জবাব দেন, নিশ্চয় আল্লাহ আমাকে দুটি জান্নাত দানকরেছেন’।— তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৪৯৬ পৃষ্ঠা, আল-কুরআন ৭:২০১-এর ব্যাখ্যায়
[অনুবাদকের জ্ঞাতব্য: খলীফা উমর ফারূক (রা:)-এর কাশফবা দিব্যদৃষ্টির প্রমাণ এখানে পাওয়া যায়। তিনি ওই তরুণেরঘটনা কাশফ দ্বারা জানতেন। নতুবা তিনি কেন ’তাকওয়া-বিষয়ক আয়াত’ তেলাওয়াত করলেন? উপরন্তু, তিনি যে‘কাশফুল কুবুর’ বা কবরবাসীর অবস্থা দিব্যদৃষ্টি দ্বারা জানতেপারতেন তাও এই ঘটনায় প্রমাণিত হয়।]
দলিল নং – ৪
হযরত আবূ হোরায়রা (রা:)-এর সূত্রে বর্ণিত
মহানবী (দ:) এরশাদ ফরমান: “আমি নিজেকে ’হিজর’-এরমধ্যে পেলাম এবং কোরাইশ গোত্র আমাকে মে’রাজের রাতেরভ্রমণ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছিল। আমাকে বায়তুলমাকদিস সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়, যা আমার স্মৃতিতেরক্ষিত ছিল না। এতে আমি পেরেশানগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম; এমন পর্যায়ের পেরেশানির মুখোমুখি ইতিপূর্বে কখনো-ই হইনি। অতঃপর আল্লাহ পাক এটিকে (বায়তুল মাকদিসকে) আমার চোখের সামনে মেলে ধরেন। আমি তখন এর দিকেতাকিয়ে তারা (কুরাইশবর্গ) যা যা প্রশ্ন করছিল সবগুলোরইউত্তর দেই। আমি ওই সময় আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের জমায়েতেনিজেকে দেখতে পাই। আমি হযরত মূসা (আ:)-কে নামাযপড়তে দেখি। তিনি দেখতে সুদর্শন (সুঠাম দেহের অধিকারী) ছিলেন, যেন শানু’য়া গোত্রের কোনো পুরুষ। আমি মরিয়মতনয় ঈসা মসীহ (আ:)-কে দেখি নামায আদায় করতে; সকলমানবের মাঝে তাঁর (চেহারার) সবচেয়ে বেশি সাযুজ্য হলোউরওয়া ইবনে মাস’উদ আস্ সাকাফী (রা:)-এর সাথে। আমিহযরত ইবরাহীম (আ:)-কেও সালাত আদায় করতে দেখি; মানুষের মাঝে তাঁর (চেহারার) সবচেয়ে বেশি সাদৃশ্য হলোতোমাদের সাথী (মহানবী স্বয়ং)-এর সাথে। নামাযের সময়হলে পরে আমি তাতে ইমামতি করি। নামাযশেষে কেউএকজন বল্লেন, ‘এই হলেন মালেক (ফেরেশতা), জাহান্নামেররক্ষণাবেক্ষণকারী; তাঁকে সালাম জানান।’ আমি তাঁর দিকেফিরতেই তিনি আমার আগে (আমাকে) সালাম জানান।— সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, হাদীস নং ৩২৮; ইমাম হাফেয ইবনেহাজর আসকালানী (রহ:)-ও এটিকে নিজ ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪৮৩ পৃষ্ঠায় সমর্থন দিয়েছেন
হযরত মূসা (আ.) ও অন্যান্য আম্বিয়া (আ.)-বৃন্দ তাঁদেরমাযার-রওযায় জীবিতাবস্থায় বর্তমান
হযরত আনাস বিন মালেক (রা:) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ(দ:)-এর হাদীস, যিনি বলেন: “আমি আগমন করি”; আরহযরত হাদ্দিব (রা:)-এর বর্ণনায় হাদীসের কথাগুলো ছিল এরকম – “মে’রাজ রজনীতে ভ্রমণের সময় আমি লাল টিলারসন্নিকটে হযরত মূসা (আ:)-কে অতিক্রমকালে তাঁকে তাঁররওযা শরীফে নামায আদায়রত অবস্থায় দেখতে পাই।— সহীহ মুসলিম, বই নং ৩০, হাদীস নং – ৫৮৫৮
আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযায় তাঁদের রূহানী হায়াতসম্পর্কে হযরত ইমাম সৈয়ুতী (রহ:) বলেন:
রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর রওযা মোবারকে তাঁর রূহানী জীবন এবংঅন্যান্য আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের নিজ নিজ মাযার-রওযায়অনুরূপ জীবন সম্পর্কে যে জ্ঞান আমরা লাভ করেছি তা‘চূড়ান্ত জ্ঞান’ (এলমান কাতে’য়্যান)। এগুলোর প্রমাণ হচ্ছে‘তাওয়াতুর’ (সর্বত্র জনশ্রুতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত)। ইমামবায়হাকী (রহ:) আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের মাযার-রওযায় তাঁদেরপরকালীন জীবন সম্পর্কে একটি ’জুয’ (আলাদা অংশ/অধ্যায়) লিখেছেন। তাতে প্রদত্ত প্রমাণাদির মধ্যে রয়েছেযেমন,১/ – সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত আনাস ইবনেমালেক (রা:) বর্ণিত একটি হাদীসে হুযূর পূর নূর (দ:) এরশাদফরমান, ’মে’রাজ রাতে আমি হযরত মূসা (আ:)-এর(রওযার) পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম এবং ওই সময় তাঁকে দেখতেপাই তিনি তাঁর মাযারে সালাত আদায় করছিলেন’; ২/ – আবূনুয়াইম নিজ ‘হিলইয়া’ পুস্তকে হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে একটি বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন, যা’তে ওই সাহাবীরাসূলে খোদা (দ:)-কে বলতে শোনেন, ’আমি হযরত মূসা(আ:)-এর (রওযার) পাশ দিয়ে যাবার সময় তাঁকে নামাযেদণ্ডায়মান দেখতে পাই’; ৩/ – আবূ ইয়ালার ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে ওইমাম বায়হাকী (রহ:)-এর ‘হায়াত আল-আম্বিয়া’ পুস্তকেহযরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত আছে যে নবী করীম (দ:) এরশাদ ফরমান: ’আম্বিয়া (আ:) তাঁদের মাযার-রওযায়জীবিত আছেন এবং তাঁরা (সেখানে) সালাত আদায় করেন’।
— ইমাম সৈয়ুতী কৃত ‘আল-হাওয়ী লিল্ ফাতাউইয়ী’, ২য়খণ্ড, ২৬৪ পৃষ্ঠা
ইমাম হায়তামী (রহ:) ওপরে বর্ণিত সর্বশেষ হাদীস সম্পর্কেবলেন, “আবূ ইয়ালা ও বাযযার এটি বর্ণনা করেছেন এবংআবূ ইয়ালার এসনাদে সকল বর্ণনাকারী-ই আস্থাভাজন।” ইমাম হাফেয ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:)-ও এইরওয়ায়াতকে সমর্থন দিয়েছেন নিজ ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থের৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪৮৩ পৃষ্ঠায়। [কাদিমী কুতুবখানা সংস্করণের৬০২-৬০৩ পৃষ্ঠায়]
দলিল নং – ৫
ইমাম কুরতুবী (রহ:) হযরত আবূ সাদেক (রা:) থেকে বর্ণনাকরেন যে ইমাম আলী (ক:) বলেন,
মহানবী (দ:)-এর বেসালের (পরলোকে আল্লাহর সাথে মিলিতহবার) তিন দিন পর জনৈক আরব এসে তাঁর রওযামোবারকের ওপর পড়ে যান এবং তা থেকে মাটি নিয়ে মাথায়মাখতে থাকেন। তিনি আরয করেন, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:)! আপনি বলেছিলেন আর আমরাও শুনেছিলাম, আপনিআল্লাহর কাছ থেকে জেনেছিলেন আর আমরাও আপনারকাছ থেকে জেনেছিলাম; আপনার কাছে আল্লাহর প্রেরিতদানগুলোর মধ্যে ছিল তাঁর-ই পাক কালাম – আর যদিকখনো তারা (মো’মেনগণ) নিজেদের আত্মার প্রতি যুলুমকরে, তখন হে মাহবুব, তারা আপনার দরবারে হাজির হয়এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আর রাসূল (দ:)-ওতাদের পক্ষে সুপারিশ করেন, তবে অবশ্যই তারা আল্লাহকেঅত্যন্ত তওবা কবুলকারী, দয়ালু হিসেবে পাবে (আল-কুরআন, ৪:৬৪)। আমি একজন পাপী, আর এক্ষণেআপনার-ই দরবারে আগত, যাতে আপনার সুপারিশ আমিপেতে পারি।’ এই আরযির পরিপ্রেক্ষিতে রওযা মোবারকথেকে জবাব এলো, ‘কোনো সন্দেহ-ই নেই তুমি ক্ষমাপ্রাপ্ত!’— তাফসীরে কুরতুবী, আল-জামে’ লি আহকাম-ইল কুরআন, ৬ষ্ঠ খণ্ড, উক্ত আল-কুরআনের ৪:৬৪-এর তাফসীর