জ্ঞাতব্য
এটি সমর্থনসূচক দলিল হিসেবে উদ্ধৃত
দলিল নং –  [ঈমানদারদের মা হযরত আয়েশা সিদ্দিকা(রা.) হতে প্রমাণ]
ইমাম দারিমী বর্ণনা করেন হযরত আবূল জাওযা’ আউসইবনে আব্দিল্লাহ (রা:) হতে, ‍যিনি বলেনমদীনাবাসীগণএকবার দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েন। তাঁরা মা আয়েশা (রা:)-এরকাছে  (শোচনীয় অবস্থারব্যাপারে ফরিয়াদ করেন। তিনিতাঁদেরকে মহানবী (:)-এর রওযা শরীফে গিয়ে ওর ছাদেএকটি ছিদ্র করতে বলেন এবং রওযা পাক  আকাশেরমাঝে কোনো বাধা না রাখতে নির্দেশ দেন। তাঁরা তা- করেন।অতঃপর মুষলধারে বৃষ্টি নামে। এতে সর্বত্র সবুজ ঘাস জন্মায়এবং উট হৃষ্টপুষ্ট হয়ে মনে হয় যেন চর্বিতে ফেটে পড়বে। এইবছরটিকে ‘প্রাচুর্যের বছর’ বলা হয়।— সুনানে দারিমী১মখণ্ড২২৭ পৃষ্ঠাহাদীস নং ৯৩
রেফারেন্স:
  • শায়খ মোহাম্মদ বিন আলাউইয়ী মালেকী (মক্কাশরীফবলেন, “এই রওয়ায়াতের এসনাদ ভালবরঞ্চআমার মতেএটি সহীহ (বিশুদ্ধ)উলেমাবৃন্দ এর নির্ভরযোগ্যতার বিষয়টি সমর্থনকরেছেন এবং প্রায় সমকক্ষ বিশ্বস্ত প্রামাণিকদলিল দ্বারা এর খাঁটি হবার বিষয়টি প্রতিষ্ঠাকরেছেন।” [শেফাউল ফুয়াদ বি-যেয়ারতেখায়রিল বাদ১৫৩ পৃষ্ঠা]
  • ইবনে আল-জাওযীআল-ওয়াফা’ বি-আহওয়ালিল্ মোস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) [:৮০১]
  • ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী (রহ:) কৃত ‘শেফাউস্সেকাম ফী যেয়ারাতে খায়রিল আনাম’ [১২৮পৃষ্ঠা]
  • ইমাম কসতলানী (রহ:) প্রণীত ‘আল-মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়াহ’ [:২৭৬]; এবং ইমামযুরকানী মালেকী (রহ:) ‘শরহে মাওয়াহিব’ [১১:১৫০]
সনদ
আবূ নুয়াইম এই বর্ণনা শুনেছিলেন সাঈদ ইবনেযায়দ হতেতিনি মর ইবনে মালেক আল-নুকরীহতেতিনি হযরত আবূল জাওযা আউস্ বিনআবদিল্লাহ (রা:) হতেযিনি এটি বর্ণনা করেন
দলিল নং – 
হযরত আবূ হোরায়রা (রা:) বর্ণনা করেন যে মহানবী (:) এরশাদ ফরমানকেউ আমাকে সালাম জানালে আল্লাহআমার রূহকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন এবং আমি তারসালামের প্রত্যুত্তর দেই।— আবূ দাউদ শরীফ৪র্থ বইহাদীসনং ২০৩৬
ইমাম নববী (রহ:)  হাদীস সম্পর্কে বলেন,
আবূ দাউদ (রহ:) এটি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।— রিয়াযুস্ সালেহীন:২৫৫হাদীসঃ ১৪০২
গায়রে মুকাল্লিদীন তথা লা-মযহাবী (আহলেহাদীস/’সালাফী’) গোষ্ঠীর নেতা কাজী শওকানী এই হাদীসবর্ণনার আগে বলে,
এটি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ:)  ইমাম আবূ দাউদ(রহ:) সহীহ এবং মারফু’ সনদে হযরত আবূ হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণনা করেন।— নায়ল আল-আওতার:১৬৪
দলিল নং – 
হযরত আবূদ্ দারদা (রা:) হতে বর্ণিতমহানবী (:) এরশাদফরমান: “শুক্রবার দিন আমার প্রতি অগণিত সালাওয়াতপাঠ করোকেননা তার সাক্ষ্য বহন করা হবে। ফেরেশতাকুলএর খেদমতে উপস্থিত থাকবেন। কেউ সালাওয়াত পাঠআরম্ভ করলে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমার কাছে পেশহতে থাকবে।” আমি (আবূদ্ দারদাজিজ্ঞেস করলাম তাঁরবেসালপ্রাপ্তির পরও কি তা জারি থাকবে। তিনি জবাবেবল্লেন: “আল্লাহ পাক আম্বিয়া (:)-এর মোবারক শরীরকেমাটির জন্যে হারাম করে দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের মাযার-রওযায় জীবিতাস্থায় আছেন এবং সেখানে তাঁরা রিযক-পেয়ে থাকেন।
রেফারেন্স
  • হযরত আবূদ্ দারদা (রা:) বর্ণিত  তিরমিযীশরীফে লিপিবদ্ধহাদীস নং ১৩৬৬
  • সুনানে ইবনে মাজাহ১ম খণ্ডহাদীস নং ১৬২৬
  • আবূ দাউদ শরীফ২য় খণ্ডহাদীস নং ১৫২৬
দলিল নং – 
ইমাম যাহাবী বর্ণনা করেন:
একবার সমরকন্দ অঞ্চলে খরা দেখা দেয়। মানুষজনযথাসাধ্য চেষ্টা করেনকেউ কেউ সালাত আল-এস্তেসক্কা(বৃষ্টির জন্যে নামায-দোয়াপড়েনকিন্তু তাও বৃষ্টি নামে নি।এমতাবস্থায় সালেহ নামের এক প্রসিদ্ধ নেককার ব্যক্তিশহরের কাজী (বিচারক)-এর কাছে উপস্থিত হন এবং বলেনআমার মতে আপনার এবং মুসলমান সর্বসাধারণের ইমামবোখারী (রহ:)-এর মাযার শরীফ যেয়ারত করা উচিত। তাঁরমাযার শরীফ খারতাংক এলাকায় অবস্থিত। ওখানে মাযারেরকাছে গিয়ে বৃষ্টি চাইলে আল্লাহ হয়তো বৃষ্টি মঞ্জুর করতেওপারেন। অতঃপর বিচারক ওই পুণ্যবান ব্যক্তির পরামর্শে সায়দেন এবং মানুষজনকে সাথে নিয়ে ইমাম সাহেব (রহ:)-এরমাযারে যান। সেখানে (মাযারেবিচারক সবাইকে সাথে নিয়েএকটি দোয়া পাঠ করেন সময় মানুষেরা কান্নায় ভেঙ্গেপড়েন এবং ইমাম সাহেব (রহ:)-কে দোয়ার মধ্যে অসীলাহিসেবে গ্রহণ করেন। আর অমনি আল্লাহতালা মেঘমালাপাঠিয়ে ভারি বর্ষণ অবতীর্ণ করেন। সবাই খারতাংকএলাকায়  দিন যাবত অবস্থান করেন এবং তাঁদের কেউইসামারকান্দ ফিরে যেতে চাননি। অথচ এই দুটি স্থানের দূরত্বমাত্র  মাইল।— ইমাম যাহাবী কৃত সিয়্যার আল-লমওয়ান্ নুবালাহ১২তম খণ্ড৪৬৯ পৃষ্ঠা
জ্ঞাতব্য
এটি সমর্থনসূচক দলিল হিসেবে এখানে উদ্ধৃত
দলিল নং – ১০
ইমাম ইবনুল হাজ্জ্ব (রহ:) বলেন
সালেহীন তথা পুণ্যবানদের মাযার-রওযা হতে বরকত আদায়(আশীর্বাদ লাভকরার লক্ষ্যে যেয়ারত করতে বলা হয়েছে।কেননাবুযূর্গদের হায়াতে জিন্দেগীর সময় যে বরকত আদায়করা যেতোতা তাঁদের বেসালের পরও লাভ করা যায়।উলেমাবৃন্দ  মোহাক্কিক্কীন (খোদার নৈকট্যপ্রাপ্তজনএইরীতি অনুসরণ করতেন যে তাঁরা আউলিয়াবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারত করে তাঁদের শাফায়াত (সুপারিশকামনাকরতেন……কারো কোনো হাজত বা প্রয়োজন থাকলে তারউচিত আউলিয়া কেরামের মাযার-রওযা যেয়ারত করেতাঁদেরকে অসীলা করা। আর  কাজে (বাধা দিতেএই যুক্তিদেখানো উচিত নয় যে মহানবী (:) তিনটি মসজিদ(মসজিদে হারামমসজিদে নববী  মসজিদে আকসাছাড়াঅন্য কোথাও সফর করতে নিষেধ করেছিলেন। মহান ইমামআবূ হামীদ আল-গাযযালী (রহ:) নিজ ‘এহইয়া’ পুস্তকেরআদাব আস্ সফর’ অধ্যায়ে উল্লেখ করেন যে হজ্জ্ব জেহাদের মতো এবাদতগুলোর ক্ষেত্রে সফর করাবাধ্যতামূলক। অতঃপর তিনি বলেন, ‘এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেআম্বিয়া (:), সাহাবা--কেরাম (রা:), তাবেঈন (রহ:) সকল আউলিয়া  হক্কানী উলেমাবৃন্দের মাযার-রওযাযেয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর। যাঁর কাছে তাঁর যাহেরীজীবদ্দশায় সাহায্য চাওয়া জায়েয ছিলতাঁর কাছে তাঁরবেসালের পরও (যেয়ারত করেসাহায্য চাওয়া জায়েয— ইমাম ইবনুল হাজ্জ্ব প্রণীত আল-মাদখাল১ম খণ্ড২১৬ পৃষ্ঠা
ইমাম আবূ আবদিল্লাহ ইবনিল হাজ্জ্ব আল-মালেকী (রহ:) আউলিয়া  সালেহীনবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারত সম্পর্কেএকটি সম্পূর্ণ অধ্যায় রচনা করেন। তাতে তিনি লেখেন:
মুতালিম (শিক্ষার্থী)-দের উচিত আউলিয়া  সালেহীনবৃন্দেরসান্নিধ্যে যাওয়াকেননা তাঁদের দেখা পাওয়াতে অন্তর জীবনলাভ করেযেমনিভাবে বৃষ্টি দ্বারা মাটি উর্বর হয়। তাঁদেরসন্দর্শন দ্বারা পাষাণ হৃদয়ও নরম বা বিগলিত হয়। কারণতাঁরা আল্লাহ পাকেরই বরগাহে সর্বদা উপস্থিত থাকেনযেমহাপ্রভু পরম করুণাময়। তিনি কখনােই তাঁদের এবাদত-বন্দেগী বা নিয়্যতকে প্রত্যাখ্যান করেন নাকিংবা যারা তাঁদেরমাহফিলে হাজির হন  তাঁদেরকে চিনতে পারেন এবংতাঁদেরকে ভালোবোসেনতাদেরকেও প্রত্যাখ্যান করেন না।এটি  কারণে যে তাঁরা হলেন আল্লাহ  তাঁর রাসূল (:)-এরপরে রহমতস্বরূপযে রহমত আল্লাহ-ওয়ালাদের জন্যেঅবারিত। অতএবকেউ যদি এই গুণে গুণান্বিত হনতাহলেসর্বসাধারণের উচিত ত্বরিত তাঁর কাছ থেকে বরকত আদায়করা। কেননাযারা এই আল্লাহ-ওয়ালাদের দেখা পানতারাএমন রহমত-বরকতজ্ঞান-প্রজ্ঞা  স্মৃতিশক্তি লাভ করেন যাব্যাখ্যার অতীত। আপনারা দেখবেন ওই একই মাআনী দ্বারাযে কেউ অনেক মানুষকে জ্ঞান-প্রজ্ঞা  জযবা (ঐশী ভাব)-এর ক্ষেত্রে পূর্ণতা লাভ করতে দেখতে পাবেন। যে ব্যক্তি এইরহমত-বরকতকে শ্রদ্ধা বা সম্মান করেনতিনি কখনোই তাথেকে দূরে থাকেন না (মানে বঞ্চিত হন না) তবে শর্ত হলোএই যেযাঁর সান্নিধ্য তলব করা হবেতাঁকে অবশ্যই সুন্নাতেরপায়রুবী করতে হবে এবং সুন্নাহকে হেফাযত তথা সমুন্নতরাখতে হবেআর তা নিজের কর্মেও প্রতিফলিত করতে হবে।— ইবনুল হাজ্জ্ব রচিত আল-মাদখাল২য় খণ্ড১৩৯ পৃষ্ঠা
দলিল নং – ১১
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা:) বর্ণনা করেন যে হুযূর পূরনূর (:) এরশাদ ফরমান: “আমার বেসালপ্রাপ্তির পরে যেব্যক্তি আমার রওযা মোবারক যেয়ারত করেসে যেন আমারহায়াতে জিন্দেগীর সময়েই আমার দেখা পেল
রেফারেন্স
  • আত্ তাবারানী২য় খণ্ডহাদীস নং ৪০৬
  • ইমাম বায়হাকী প্রণীত শুয়াবুল ঈমান৩য় খণ্ডহাদীস নং ৪৮৯
জ্ঞাতব্য
এই হাদীসটি হযরত ইবনে উমর (রা:) কর্তৃক বর্ণিতহলেও এর এসনাদে বর্ণনাকারীরা একেবারেই ভিন্নআর তাই  হাদীস হাসান পর্যায়ভুক্ত
ইমাম ইবনে কুদামা (রহ:) বলেন, “মহানবী (:)-এর রওযাশরীফের যেয়ারত মোস্তাহাব (প্রশংসনীয়), যা হযরত ইবনেউমর (রা:)-এর সূত্রে আদ্ দারাকুতনী সহীহ সনদে বর্ণনাকরেছেন এই মর্মে যে রাসূলুল্লাহ (:) এরশাদ করেন, ’যেব্যক্তি হজ্জ্ব করেতার উচিত আমার রওযা শরীফ য়েযারতকরাকারণ তা যেন আমার হায়াতে জিন্দেগীর সময়েআমার- দর্শন লাভ হবে।’ তিনি আরেকটি হাদীসে এরশাদফরমান, ‘যে কেউ আমার রওযা যেয়ারত করলে তার জন্যেশাফায়াত (সুপারিশকরা আমার প্রতি ওয়াজিব হয়”— ইমাম ইবনে কুদামা কৃত আল-মুগনী৫ম খণ্ড৩৮১ পৃষ্ঠা
  • ইমাম আল-বাহুতী আল-হাম্বলী (রহ:) নিজআল-কাশাফ আল-ক্কান্না গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ২৯০পৃষ্ঠায় একই কথা বলেন
ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) তাঁর সুপ্রসিদ্ধ ‘শেফা শরীফ’ পুস্তকের ‘মহানবী (:)-এর রওযা মোবারক যেয়ারতেরনির্দেশ এবং কারো দ্বারা তা যেয়ারত  সালাম (সম্ভাষণজানানোর ফযীলত’ শীর্ষক অধ্যায়ে বলেন, ”এটি জ্ঞাত হওয়াউচিত যে মহানবী (:)-এর মোবারক রওযা যেয়ারত করাসকল মুসলমানের জন্যে ‘মাসনূন’ (সর্বজনবিদিত রীতি); আর  ব্যাপারে উলেমাবৃন্দের এজমা’ হয়েছে। এর এমন-ফযীলত যা হযরত ইবনে উমর (রা:)-এর বর্ণিত হাদীস দ্বারাআমাদের জন্যে সাব্যস্ত হয়েছে (অর্থাৎ, ’কেউ আমার রওযাযেয়ারত করলে তার জন্যে আমার শাফায়াত ওয়াজিবহবে’)”— ইমাম কাজী আয়ায কৃত ’শেফা শরীফ’, ২য় খণ্ড৫৩ পৃষ্ঠা
Top