১ম অধ্যায়
সিয়াম : অর্থ ও হুকুম
সিয়াম : অর্থ ও হুকুম কি?
প্রশ্ন ১ : সিয়ামের শাব্দিক অর্থ কি?
উত্তর : এটি আরবি শব্দ। সিয়ামের শাব্দিক অর্থ বিরত থাকা। ফার্সী ভাষায় এটাকে রোযা বলা হয়।
উত্তর : এটি আরবি শব্দ। সিয়ামের শাব্দিক অর্থ বিরত থাকা। ফার্সী ভাষায় এটাকে রোযা বলা হয়।
প্রশ্ন ২ : রমযান মাসের সিয়ামের হুকুম কি?
উত্তর : এটা ফরয।
উত্তর : এটা ফরয।
প্রশ্ন ৩ : এটা কোন হিজরী সালে ফরয হয়েছে?
উত্তর : দ্বিতীয় হিজরীতে।
উত্তর : দ্বিতীয় হিজরীতে।
প্রশ্ন ৪ : সিয়াম ফরয হওয়ার দলীল জানতে চাই।
উত্তর :
উত্তর :
(ক) আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ ﴾ [البقرة: ١٨٣]
[১] ঈমানদারগণ!, তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের উপর। যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার।
(বাকারাহ : ১৮৩)
(বাকারাহ : ১৮৩)
﴿ شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدٗى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٖ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ …١٨٥ ﴾ [البقرة: ١٨٥]
[২] রমযান হলো সেই মাস যে মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছিল। মানবজাতির জন্য হিদায়াত ও সুস্পষ্ট পথ নির্দেশক এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য নির্ণয়কারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যারাই এ মাস পাবে তারা যেন অবশ্যই সিয়াম পালন করে।
(বাকারাহ : ১৮৫)
(বাকারাহ : ১৮৫)
(খ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَصَوْمِ رَمَضَانَ وَحَجِّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيْلاً
ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি : এ মর্মে সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর সত্যিকার কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, সালাত কায়েম করা, যাকাত দেয়া, হজ করা এবং রমযান মাসের সিয়াম পালন করা।
(বুখারী : ৮; মুসলিম : ১৬)
(বুখারী : ৮; মুসলিম : ১৬)
২য় অধ্যায়
فضل شهر رمضان
রমযান মাসের ফযীলত
[১] এ মাসের সিয়াম পালন জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ آمَنَ بِاللهِ وَبِرَسُولِهِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وآتى الزَّكَاةَ وَصَامَ رَمَضَانَ كَانَ حَقًّا عَلَى اللهِ أَنْ يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ
অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, যাকাত আদায় করল, রমযান মাসে সিয়াম পালন করল তার জন্য আল্লাহর উপর সে বান্দার অধিকার হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেয়া।
(বুখারী : ২৭৯০)
(বুখারী : ২৭৯০)
সিয়াম যেমন এ মাসে, কুরআনও নাযিল হয়েছে এ মাসেই। ইতিপূর্বেকার তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জীলসহ যাবতীয় সকল আসমানী কিতাব এ মাহে রমযানেই নাযিল হয়েছিল। (সহীহ আল জামে)
এ মাসেই জিবরীল আলাইহিস সালাম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কুরআন শুনাতেন এবং তাঁর কাছ থেকে তিলাওয়াত শুন্তেন। আর রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনের শেষ রমযানে পূর্ণ কুরআন দু’বার খতম করেছেন।
(মুসলিম)
এ মাসেই জিবরীল আলাইহিস সালাম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কুরআন শুনাতেন এবং তাঁর কাছ থেকে তিলাওয়াত শুন্তেন। আর রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনের শেষ রমযানে পূর্ণ কুরআন দু’বার খতম করেছেন।
(মুসলিম)
[২] রমযান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।
إِذَا جَاءَ رَمَضَانَ فُتِحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةَ وَأُغْلِقَتْ أَبْوَابُ النَّارِ وَصُفِّدَتِ الشَّيَاطِيْنَ (وَفِيْ لَفْظٍ سُلْسِلَتِ الشَّيَاطِيْنَ)
‘‘যখন রমযান আসে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় আর জাহা্ন্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়।’’
(মুসলিম : ২৫৪৭)
(মুসলিম : ২৫৪৭)
[৩] এ রমযান মাসের লাইলাতুল কদরের এক রাতের ইবাদত অপরাপর এক হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও বেশি। অর্থাৎ ৮৩ বছর ৪ মাসের ইবাদতের চেয়েও বেশি সাওয়াব হয় এ মাসের ঐ এক রজনীর ইবাদতে।
(ক) আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
﴿ لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٞ مِّنۡ أَلۡفِ شَهۡرٖ ٣ تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيهَا بِإِذۡنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمۡرٖ ٤ سَلَٰمٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ ٥ ﴾ [القدر: ٣، ٥]
অর্থাৎ ‘‘কদরের এক রাতের ইবাদত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাতে ফেরেশতা আর রূহ (জিরীল আঃ) তাদের রবের অনুমতিক্রমে প্রত্যেক কাজে দুনিয়ায় অবতীর্ণ হয়। (এ রাতে বিরাজ করে) শান্তি আর শান্তি- তা ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত থাকে।’’
(সূরা ক্বদর : ৪-৫)
(সূরা ক্বদর : ৪-৫)
(খ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
.....لله فِيْهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ مَنْ حَرُمَ خَيْرُهَا فَقَدْ حَرُمَ
‘‘এ মাসে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল সে মূলতঃ সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হল।’’
(নাসায়ী : ২১০৬)
(নাসায়ী : ২১০৬)
[৪] এ পুরো মাস জুড়ে দু‘আ কবূল হয় :-
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
لِكُلِّ مُسْلِمٍ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ يَدْعُوْ بِهَا فِيْ رَمَضَانَ
অর্থাৎ ‘‘এ রমযান মাসে প্রত্যেক মুসলমান আল্লাহর সমীপে যে দু‘আই করে থাকে-তা মঞ্জুর হয়ে যায়।’’
(আহমাদ : ২/২৫৪)
(আহমাদ : ২/২৫৪)
[৫] এ মাসে মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হয়
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
إِنَّ لِلَّهِ عُتَقَاءَ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ، لِكُلِّ عَبْدٍ مِنْهُمْ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ
অর্থাৎ (মাহে রমাযানে) প্রতিরাত ও দিনের বেলায় বহু মানুষকে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম থেকে মুক্তির ঘোষণা দিয়ে থাকেন এবং প্রতিটি রাত ও দিনের বেলায় প্রত্যেক মুসলিমের দু‘আ- মুনাজাত কবূল করা হয়ে থাকে।
(মুসনাদ আহমদ : ৭৪৫০)
(মুসনাদ আহমদ : ৭৪৫০)
[৬] এ মাস জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের মাস
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
يُنَادِيْ مُنَادٍ كُلَّ لَيْلَةٍ : يَا بَاغِىَ الْخَيْرَ أَقْبِلْ وَيَا بَاغِيَ الشَّرِّ أَقْصِرْ وَلله عُتَقَاءُ مِنَ النَّارِ وَذَلِكَ فِيْ كُلِّ لَيْلَةٍ
‘‘(এ মাসের) প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে আহবান করতে থাকে যে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথ চলা বন্ধ কর। (তুমি কি জান?) এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তা‘আলা কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিযে থাকেন।
(তিরমিযী : ৬৮২)
(তিরমিযী : ৬৮২)
[৭] এ মাস ক্ষমা লাভের মাস
এ মাস ক্ষমা লাভের মাস। এ মাস পাওয়ার পরও যারা তাদের আমলনামাকে পাপ-পঙ্কিলতা মুক্ত করতে পারল না রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ধিক্কার দিয়ে বলেছেন :
এ মাস ক্ষমা লাভের মাস। এ মাস পাওয়ার পরও যারা তাদের আমলনামাকে পাপ-পঙ্কিলতা মুক্ত করতে পারল না রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ধিক্কার দিয়ে বলেছেন :
رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانَ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَن يَّغْفِرَلَهُ
‘‘ঐ ব্যক্তির নাক ধূলায় ধুসরিত হোক যার কাছে রমযান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করিয়ে নিতে পারল না।’’
(তিরমিযী : ৩৫৪৫)
(তিরমিযী : ৩৫৪৫)
[১০] রমযান মাসে সৎ কর্মের প্রতিদান বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেয়া হয়
এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ تَقَرَّبَ فِيْهِ بِخَصْلَةٍ مِنَ الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدَّى فَرِيْضَةً فِيْمَا سِوَاهُ وَمَنْ أَدَّى فِيْهِ فَرِيْضَةٌ كَانَ كَمَنْ أَدَّى سَبْعِيْنَ فَرِيْضَةً فِيْمَا سِوَاهُ
‘যে ব্যক্তি রমযান মাসে কোন একটি নফল ইবাদত করল, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরয আদায় করল। আর রমযানে যে ব্যক্তি একটি ফরয আদায় করল, সে যেন অন্য মাসের ৭০টি ফরয আদায় করল।’
(সহীহ ইবন খুযাইমা : ১৮৮৭)
‘যে ব্যক্তি রমযান মাসে কোন একটি নফল ইবাদত করল, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরয আদায় করল। আর রমযানে যে ব্যক্তি একটি ফরয আদায় করল, সে যেন অন্য মাসের ৭০টি ফরয আদায় করল।’
(সহীহ ইবন খুযাইমা : ১৮৮৭)
[১১] এ মাসে একটি উমরা করলে একটি হজ্জ আদায়ের সওয়াব হয় এবং তা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে হজ্জ আদায়ের মর্যাদা রাখে।
ক- হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ক- হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
فَإِنَّ عُمْرَةً فِيْ رَمَضَانَ ةَقْضِيْ حَجَّةً مَعِيْ
‘‘রমযান মাসে উমরা করা আমার সাথে হজ্জ আদায় করার সমতুল্য’’।
(বুখারী : ১৮৬৩)
(বুখারী : ১৮৬৩)
হাদীসে আছে,
খ-একজন মেয়েলোক এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করল,
مَا يَعْدِلُ حَجَّةٌ مَعَكَ؟ فَقَالَ : عُمْرَةُ فِيْ رَمَضَانَ
‘‘কোন ইবাদতে আপনার সাথী হয়ে হজ্জ করার সমতুল্য সাওয়াব পাওয়া যায়? তিনি উত্তর দিলেন, ‘‘রমযান মাসে উমরা করা’’
(আবূ দাউদ : ১৮৯৯০)
(আবূ দাউদ : ১৮৯৯০)
৩য় অধ্যায়
فضل الصيام
সিয়াম পালনের ফযীলত
فضل الصيام
সিয়াম পালনের ফযীলত
প্রশ্ন ৬ : সিয়াম পালনকারীকে আল্লাহ কী কী পুরস্কার দেবেন?
উত্তর : সিয়াম পালনকারীকে যেসব পুরস্কার ও প্রতিদান আল্লাহ তা‘আলা দেবেন তার অংশ বিশেষ এখানে উল্লেখ করা হল :
উত্তর : সিয়াম পালনকারীকে যেসব পুরস্কার ও প্রতিদান আল্লাহ তা‘আলা দেবেন তার অংশ বিশেষ এখানে উল্লেখ করা হল :
[১] আল্লাহ স্বয়ং নিজে সিয়ামের প্রতিদান দেবেন।
হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
كُلُّ عَمَلِ بَنِىْ آَدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَامَ فَإِنَّهُ لِيْ وَأَنَا أَجْزِئ بِهِ
‘‘মানুষের প্রতিটি ভাল কাজ নিজের জন্য হয়ে থাকে, কিন্তু সিয়াম শুধুমাত্র আমার জন্য, অতএব আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।
(বুখারী : ১৯০৪)
(বুখারী : ১৯০৪)
[২] সিয়াম অতি উত্তম নেক আমল
আবূ হুরাইরাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র একটি হাদীসে তিনি বলেছিলেন :
আবূ হুরাইরাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র একটি হাদীসে তিনি বলেছিলেন :
يَا رَسُوْلَ اللهِ مُرْنِيْ بِعَمَلٍ، قَالَ عَلَيْكَ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لاَ عَدْلَ لَهُ
‘‘হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমাকে একটি অতি উত্তম নেক আমলের নির্দেশ দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমমর্যাদা সম্পন্ন কোন আমল নেই।’’
(নাসাঈ : ২২২২)
(নাসাঈ : ২২২২)
[৪] জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সিয়াম ঢাল স্বরূপ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
اَلصِّيَامُ جُنَّةٌ يَسْتَجِنُّ بِهَا الْعَبْدُ مِنَ النَّارِ
‘‘সিয়াম ঢাল স্বরূপ। এ দ্বারা বান্দা তার নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে পার।’’
(আহমাদ : ১৫২৯৯)
(আহমাদ : ১৫২৯৯)
[৫] জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য সিয়াম একটি মজবুত দূর্গ
হাদীসে আছে,
হাদীসে আছে,
اَلصِّيَامُ جُنَّةٌ وَحِصْنُ حَصِيْنٌ مِنَ النَّارِ
‘‘সিয়াম ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক মজবুত দূর্গ।’’
(আহমাদ : ৯২২৫)
(আহমাদ : ৯২২৫)
[৬] আল্লাহর পথে সিয়াম পালনকারীকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে দূরে রাখেন।
এ বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
এ বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
ا- مَا مِنْ عَبْدٍ يَصُوْمُ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ إِلاَّ بَاعَدَ اللهُ بِذَلِكَ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا
(ক) ‘‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, তদ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন।
(বুখারী : ২৮৪০; মুসলিম : ১১৫৩)
(বুখারী : ২৮৪০; মুসলিম : ১১৫৩)
ب-مَنْ صَامَ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ بَاعَدَ اللهُ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا
(খ) ‘‘যে ব্যক্তি একদিন আল্লাহর পথে সিয়াম পালন করবে আল্লাহ তার কাছ থেকে জাহান্নামকে সত্তর বছরের রাস্তা দূরে সরিয়ে নেবেন।
(মুসলিম : ১১৫৩)
(মুসলিম : ১১৫৩)
ج-عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ مُرْنِي بِأَمْرٍ يَنْفَعُنِي اللهُ بِهِ قَالَ عَلَيْكَ بِالصِّيَامِ فَإِنَّهُ لاَ مِثْلَ لَهُ
(গ) আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, ‘‘আমি আল্লাহর রাসূলকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যার দ্বারা আমি লাভবান হতে পারি। তিনি বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমকক্ষ (মর্যাদা সম্পন্ন) কোন ইবাদত নেই।
(নাসাঈ : ২২২১)
(নাসাঈ : ২২২১)
[৭] ইফতারের সময় বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।
হাদীসে আছে :
হাদীসে আছে :
إِنَّ للهِ تَعَالَى عِنْدَ كُلِّ فِطْرٍ عُتَقَاءُ مِنَ النَّارِ، وَذَلِكَ كُلّ لَيْلَةٍ
ইফতারের মূহূর্তে আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমাযানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে।
(আহমাদ : ৫/২৫৬)
(আহমাদ : ৫/২৫৬)
[৮] সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশ্কের চেয়েও উত্তম (সুগন্ধিতে পরিণত হয়)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
وَالَّذِيْ نَفْسِ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَخُلُوْفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيْحِ الْمِسْكِ.
যার হাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র জীবন সে সত্তার শপথ করে বলছি, সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ তা‘আলার কাছে মিশকের ঘ্রাণের চেয়েও প্রিয় হয়ে যায়।
(বুখারী : ১৯০৪; মুসলিম : ১১৫১)
(বুখারী : ১৯০৪; মুসলিম : ১১৫১)
[৯] সিয়াম পালনকারীর জন্য রয়েছে দু’টি বিশেষ আনন্দ মুহূর্ত।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهِ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهِ
সিয়াম পালনকারীর জন্য দু’টো বিশেষ আনন্দ মুহূর্ত রয়েছে : একটি হল ইফতারের সময়, আর দ্বিতীয়টি হল তার রবের সাথে সাক্ষাতের সময়।
(বুখারী : ৭৪৯২; মুসলিম : ১১৫১)
(বুখারী : ৭৪৯২; মুসলিম : ১১৫১)
[১০] সিয়াম কিয়ামাতের দিন সুপারিশ করবে
হাদীসে আছে,
হাদীসে আছে,
اَلصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُولُ الصِّيَامُ أَيْ رَبِّ مَنَعْتُهُ الطَّعَامَ وَالشَّهَوَاتِ بِالنَّهَارِ فَشَفِّعْنِي فِيهِ وَيَقُولُ الْقُرْآنُ مَنَعْتُهُ النَّوْمَ بِاللَّيْلِ فَشَفِّعْنِي فِيهِ قَالَ فَيُشَفَّعَانِ
সিয়াম ও কুরআন কিয়ামাতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে আমার রব, আমি দিনের বেলায় তাকে (এ সিয়াম পালনকারীকে) পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবূল কর।
অনুরূপভাবে কুরআন বলবে, হে আমার রব, আমাকে অধ্যয়নরত থাকায় রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবূল কর। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবূল করা হবে।
(আহমাদ : ২/১৭৪)
অনুরূপভাবে কুরআন বলবে, হে আমার রব, আমাকে অধ্যয়নরত থাকায় রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবূল কর। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবূল করা হবে।
(আহমাদ : ২/১৭৪)
[১১] সিয়াম হল গুনাহের কাফফারা
(ক) আল্লাহ তাআলা বলেন,
(ক) আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿ ... إِنَّ ٱلۡحَسَنَٰتِ يُذۡهِبۡنَ ٱلسَّئَِّاتِۚ ١١٤ ﴾ [هود: ١١٤]
নিশ্চয়ই নেক আমল পাপরাশি দূর করে দেয়।
(সূরা হুদ : ১১৪)
(সূরা হুদ : ১১৪)
(খ) নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلَاةُ وَالصَّوْمُ وَالصَّدَقَةُ (بخارى ومسلم(
পরিবার পরিজন, ধন-সম্পদ ও প্রতিবেশিদের নিয়ে জীবন চলার পথে যেসব গুনাহ মানুষের হয়ে যায় সালাত, সিয়াম ও দান খয়রাত সেসব গুনাহ মুছে ফেলে দেয়।
(বুখারী : ৫২৫; মুসলিম : ১৪৪)
(বুখারী : ৫২৫; মুসলিম : ১৪৪)
[১২] সিয়াম পালনকারীর এক রমযান থেকে পরবর্তী রমাযানের মধ্যবর্তী সময়ে হয়ে যাওয়া ছগীরা গুনাহগুলোকে মাফ করে দেয়া হয়।
ক- আল্লাহ তাআলা বলেন,
ক- আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿ إِن تَجۡتَنِبُواْ كَبَآئِرَ مَا تُنۡهَوۡنَ عَنۡهُ نُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَئَِّاتِكُمۡ وَنُدۡخِلۡكُم مُّدۡخَلٗا كَرِيمٗا ٣١ ﴾ [النساء: ٣١]
‘‘তোমরা যদি নিষিদ্ধ কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাক তাহলে তোমাদের ছগীরা গুনাহগুলোকে মুছে দেব এবং (জান্নাতে) তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব।
(সূরা নিসা : ৩১)
(সূরা নিসা : ৩১)
খ-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
اَلصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ مُكَفَّرَاتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ إِذَا اجْتَنِبَتِ الْكَبَائِرُ
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এর মধ্যবর্তী সময় ও এক জুমুআ থেকে অপর জুমুআ এবং এক রমযান থেকে অপর রমযান পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে হয়ে যাওয়া ছগীরা গুনাহগুলোকে (উল্লেখিত ইবাদতের) কাফ্ফারাস্বরূপ মুছে দেয়া হয় সে যদি কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।
(মুসলিম : ২৩৩)
(মুসলিম : ২৩৩)
[১৩] সিয়াম পালনকারীর পূর্বেকার গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
(বুখারী : ৩৮; মুসলিম : ৭৬৯)
(বুখারী : ৩৮; মুসলিম : ৭৬৯)
[১৪] সিয়াম যৌনপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে রাখে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنْ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ
হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যে সামর্থ রাখে সে যেন বিবাহ করে।
কেননা বিবাহ দৃষ্টি ও লজ্জাস্থানের হেফাযতকারী। আর যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ রাখেনা সে যেন সিয়াম পালন করে। কারণ এটা তার জন্য নিবৃতকারী। (অর্থাৎ সিয়াম পালন যৌন প্রবৃত্তি নিবৃত করে রাখে)
(বুখারী : ১৯০৫; মুসলিম : ১৪০০)
(বুখারী : ১৯০৫; মুসলিম : ১৪০০)
[১৫] সিয়াম পালনকারীরা রাইয়ান নামক মহিমান্বিত এক দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ يُقَالُ أَيْنَ الصَّائِمُونَ فَيَقُومُونَ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ فَإِذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ
জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। যার নাম রাইয়্যান। কিয়ামতের দিন শুধু সিয়ামপালনকারীরা ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, সিয়াম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। তারা প্রবেশ করার পর ঐ দরজাটি বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ আর সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে ঢুকতে পারবেনা।
(বুখারী : ১৮৯৬; মুসলিম : ১১৫২)
(বুখারী : ১৮৯৬; মুসলিম : ১১৫২)
প্রশ্ন ৭ : কী ধরনের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে উপরে বর্ণিত অফুরন্ত ফযীলত ও সওয়াব হাসিল করা যাবে?
উত্তর : সিয়ামের বরকতময় সাওয়াব ও পুরস্কার হাসিলের জন্য নিম্নোক্ত শর্তাবলী পূরণ করা আবশ্যক।
[১] শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য সিয়াম পালন করতে হবে। মনের মধ্যে লোক দেখানোর ইচ্ছা বা অপরকে শুনানোর কোন ক্ষুদ্র অনুভূতি থাকতে পারবে না।
[২] সিয়াম পালন, সাহরী, ইফতার ও তারাবীহসহ সকল ইবাদত রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুন্নাত তরীকামত পালন করতে হবে।
[৩] খাওয়া-দাওয়া ও যৌনাচার ত্যাগের মত মিথ্যা, প্রতারণা, সুদ, ঘুষ, অশ্লীলতা, ধোঁকাবাজি ও ঝগড়াবিবাদসহ সকল অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। চোখ, কান, জিহবা ও হাত পা সকল ইন্দ্রীয়কে অন্যায় কাজ থেকে হেফাযতে রাখতে হবে।
রাসূলু্ল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
أ-مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ وَالْجَهْلَ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ (بخارى)
ক) যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মুর্খতা পরিত্যাগ করতে পারলনা, তার রোযা রেখে শুধুমাত্র পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। (বুখারী : ১৯০৩)
ب-...فَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفَثْ يَوْمَئِذٍ وَلاَ يَصْخَبْ فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي امْرُؤٌ صَائِمٌ
খ) তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও চেচামেচি করা থেকে বিরত থাকে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা তার দিকে মারমুখী হয়ে আসে তবে সে যেন তাকে বলে ‘আমি রোযাদার’। (অর্থাৎ রোযা অবস্থায় আমি গালিগালাজ ও মারামারি করতে পারি না।
(মুসলিম : ১১৫১)
(মুসলিম : ১১৫১)
ج-رُبَّ صَائِمٍ حَظُّهُ مِنْ صِيَامِهِ الْجُوعُ وَالْعَطَشُ وَرُبَّ قَائِمٍ حَظُّهُ مِنْ قِيَامِهِ السَّهَرُ (رواه أحمد)
গ) এমন অনেক রোযাদার আছে যার রোযা থেকে প্রাপ্তি হচ্ছে শুধুমাত্র ক্ষুধা ও তৃষ্ণা। তেমনি কিছু নামাযী আছে যাদের নামায কোন নামাযই হচ্ছে না। শুধু যেন রাত জাগছে। (অর্থাৎ সালাত আদায় ও সিয়াম পালন সুন্নাত তরীকামত না হওয়ার কারণে এবং মিথ্যা প্রতারণা ও পাপাচার ত্যাগ না করায় তাদের রোযা ও নামায কোনটাই কবুল হচ্ছে না)
(আহমাদ : ৮৮৪৩)
(আহমাদ : ৮৮৪৩)
[৪] চতুর্থতঃ ঈমান ভঙ্গ হয়ে যায় বা ঈমান থেকে বহিস্কৃত হয়ে যায় এমন কোন পাপাচার থেকে বিরত থাকা।
৪র্থ অধ্যায়
প্রশ্ন-১। চাঁদ দেখার উপর নির্ভর না করে সৌদি আরব বা অন্য কোনো দেশের উপর নির্ভর করে ভিন্ন কোনো দেশের অধিবাসীর সাওম পালন বা ভঙ্গ করা যাবে কিনা?
উত্তর ঃ চাঁদ দেখার উপর নির্ভর না করে সৌদি আরবের সাথে একই দিনে রমাদানের সাওম পালন শুরু করা এবং সাওম ভঙ্গ করে ঈদ করার যৌক্তিকতা শরীয়তের মানদন্ডে উন্নিত নয়। চাঁদের উদয় স্থানের ভিন্নতার দরুণ দিনের ব্যবধান হওয়া স্বাভাবিক। একই দিনের রাতের বেলায় যতটুকু এলাকাতে চাঁদ দেখা যায় ততটুকু এলাকা একই হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। উদাহরণ স্বরূপ শুক্রবার রাতে সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেল, ঠিক একই রাতে বাংলাদেশেও দেখা গেছে, তাহলে একই দিন সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের সাওম পালন ও সাওম ভঙ্গ করে ঈদ পালন করবে। কিন্তু শুক্রবার রাতে যদি সৌদি আরবে চাঁদ দেখা যায় আর বাংলাদেশে যদি ঐ রাতে চাঁদ দেখা না যায় বরং শনিবারে দেখা যায় তাহলে সৌদি আরবের সাথে সাওম পালন ও সাওম ভেঙ্গে ঈদ করা শরীয়ত পরিপন্থী। যেহেতু বিশ্বনবী (সাঃ) সাওম পালন ও সাওম ভঙ্গের সাথে চাঁদ দেখার শর্ত দিয়েছেন। তাই চাঁদ দেখার উপর নির্ভর না করে সৌদি আরবের সাথে চাঁদ দেখা বা জ্যোতিষ গণনার উপর নির্ভর করে সাওম পালন ও সাওম ভঙ্গ করে ঈদ উদযাপন করা ঠিক নয়।
প্রশ্ন-২। (ক) কেউ যদি ৩০ দিন সাওম পূর্ণ করে ভিন্ন কোনো দেশে সফর করে যেখানে রমাদান মাস চলছে, এক্ষেত্রে ঐ সফরকারীর করণীয় কি?
(খ) যদি কেউ রমাদান মাসে ২৭ টি অথবা ২৮টি রোজা পূর্ণ করে এমন কোনো দেশে গমন করে যেখানে ঈদের দিন চলছে এমতাবস্থায় এ ব্যক্তির করণীয় কি?
(খ) যদি কেউ রমাদান মাসে ২৭ টি অথবা ২৮টি রোজা পূর্ণ করে এমন কোনো দেশে গমন করে যেখানে ঈদের দিন চলছে এমতাবস্থায় এ ব্যক্তির করণীয় কি?
উত্তর ঃ কেউ যদি রমাদানের ৩০ দিন সাওম পূর্ণ করে এমন দেশে গমন করলো সেখানে রমাদান মাস এখনো চলছে তাহলে ঐ এলাকায় পৌছার পর বর্ধিত দিনে নফল হিসেবে সাওম পালন করবে অথবা চুপিসারে সাওম ভঙ্গ করবে। কিন্তু যদি ২৮ রমাদান পূর্ণ করে এমন দেশে গমন করলো যেখানে রমাদানের মাস শেষ হয়ে গেল এবং ঈদের দিন চলছে তাহলে ঐ এলাকার লোকদের সাথে ঈদ করবে এবং ঐ এলাকার রমাদান যদি ২৯ দিনের হয় তাহলে ১টি সাওম এবং ৩০দিনের হয় তাহলে ২টি সাওম ঈদের পর কাজা করবে।
প্রশ্ন-৩। পরীক্ষা বা অন্য কোনো কাজের চাপ বা অজুহাত দেখিয়ে সাওম পালন থেকে বিরত থাকা যাবে কিনা?
উত্তর ঃ পরীক্ষা বা পারিবারিক কাজের কারণে রমাদানের সাওম পালন থেকে বিরত থাকা হারাম। অনেক ছেলে-মেয়েকে দেখা যায় প্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়ার পরও পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে সাওম পালন থেকে বিরত থাকে এটা কবিরা গুনাহ।
প্রশ্ন-৪। জীবিকা নির্বাহের জন্য কোনো অত্যধিক কষ্টকর কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য সাওম ভঙ্গ বা সাওম পালন থেকে বিরত থাকা জায়েজ আছে কিনা?
উত্তর ঃ রিক্সা চালানো, মাটি কাটা, ভারি যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করা ইত্যাদি কষ্টকর পরিশ্রমের জন্য রমাদানের সাওম ভঙ্গ করা যায়েজ নেই। তবে সে কষ্টকর কাজ ছাড়া জীবিকা নির্বাহের আর কোনো সুযোগ নেই, তাহলে জীবন রক্ষার্থে যতদিন সাওম ভঙ্গ করা দরকার ততদিনের অনুমোদন আছে। কিন্তু সাওম ভঙ্গ করতে হয় এমন শ্রম থেকে বের হয়ে আসার জন্য সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করবে।
প্রশ্ন-৫। (ক) গরমের তীব্রতার কারণে সাওম পালনকারী মাথায় পানি দিয়ে গোসল করলে অথবা চোখে সুরমা ব্যবহার করলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কিনা?
(খ) সাওম পালনকারীর জন্য তরকারীর স্বাদ দেখা জায়েজ আছে কিনা?
(খ) সাওম পালনকারীর জন্য তরকারীর স্বাদ দেখা জায়েজ আছে কিনা?
উত্তর ঃ গরমের তীব্রতার কারণে সাওম পালনকারী কর্তৃক মাথায় পানি দেয়া, ভেজা কাপড় মাথায় বা কপালে দেয়া, গোসল করা, কুলি করা, চোখে সুরমা ব্যবহার করা, তেল ব্যবহার করা, কাঁচা বা শুকনো গাছের ডাল নিয়ে মেসওয়াক সাওমের ক্ষতি হবে না। প্রয়োজনে স্বাদ নেয়া যাবে। একান্তই প্রোয়োজন না হলে ডেক্সি বা পাতিলের তরকারীর স্বাদ দেখা মাকরূহ, তবে পেটে যেন কোনো কিছু প্রবেশ করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। প্রয়োজন না হলে এরকম করা উচিত নয়। বিনা প্রয়োজনে স্বাদ নেয়া মাকরূহ। তদ্রুপ বাধ্য হয়ে/অনোন্যোপায় হয়ে শিশুকে চাবিয়ে খাওয়ালে মাকরুহ হবে না।
প্রশ্ন-৬। সাওম পালন অবস্থায় খাবারের বিকল্প জাতীয় ইনজেকশন গ্রহণ করা যাবে কিনা?
উত্তর ঃ যে সব ইনজেকশন খাদ্যের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হয় তাতে সাওম ভেঙ্গে যাবে।
প্রশ্ন-৭। অসুস্থতার জন্য ডুশ (সাপোজিটর) ব্যবহার করা জায়েয কিনা?
উত্তর ঃ সাওম অবস্থায় ডুশ ব্যবহার করলে, নাক বা মুক দিয়ে ওষুধ ঢাললে সাওম ভঙ্গ হয়ে যাবে, কাযা আদায় ওয়াজিব হবে।
উত্তর ঃ সাওম অবস্থায় ডুশ ব্যবহার করলে, নাক বা মুক দিয়ে ওষুধ ঢাললে সাওম ভঙ্গ হয়ে যাবে, কাযা আদায় ওয়াজিব হবে।
প্রশ্ন-৮ । সাওম পালন অবস্থায় ক্রীম, সুরমা, আতর বা বডি স্প্রে ব্যবহারে সাওমের কোন ক্ষতি হবে কিনা?
উত্তর ঃ সাওম পালন অবস্থায় তেল, শুরমা ব্যবহার করা যাবে। আতর ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু বডি স্প্রে ব্যবহারে সাওম মাকরুহ হয়ে যেতে পারে তাই এর থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
উত্তর ঃ সাওম পালন অবস্থায় তেল, শুরমা ব্যবহার করা যাবে। আতর ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু বডি স্প্রে ব্যবহারে সাওম মাকরুহ হয়ে যেতে পারে তাই এর থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
প্রশ্ন-৯। সাওম পালনের সময় ব্রাশ, মাজন অথবা অন্য কোন পেস্ট ব্যবহার করা জায়েয কিনা?
উত্তর ঃ সাওম পালনের সময় মিসওয়াক করা সুন্নাত। ব্রাশ, মাজন ইত্যাদি যা পেটের ভিতর যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তা গিলে ফেললে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। না গিললেও রোজা মাকরূহ হবে।
উত্তর ঃ সাওম পালনের সময় মিসওয়াক করা সুন্নাত। ব্রাশ, মাজন ইত্যাদি যা পেটের ভিতর যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তা গিলে ফেললে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। না গিললেও রোজা মাকরূহ হবে।
প্রশ্ন-১০। সাওম পালন অবস্থায় হস্তমৈথুনের বিধান এবং করলে তার করণীয় কি?
উত্তর ঃ হস্তমৈথুন হারাম। এতে সাওম ভঙ্গ হবে ।
উত্তর ঃ হস্তমৈথুন হারাম। এতে সাওম ভঙ্গ হবে ।
প্রশ্ন-১১। রমাদানে সাওম পালনের জন্য হায়েজ বন্ধ করার বড়ি খাওয়া উচিত কিনা?
উত্তর ঃ রমাদানে সাওম পালনের জন্য হায়েজ বন্ধ করার বড়ি খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে শরীরের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী। তবে কেউ খেলে আর মাসিক রক্তস্রাব বন্ধ হলে সাওম পালন করতে হবে।
উত্তর ঃ রমাদানে সাওম পালনের জন্য হায়েজ বন্ধ করার বড়ি খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে শরীরের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী। তবে কেউ খেলে আর মাসিক রক্তস্রাব বন্ধ হলে সাওম পালন করতে হবে।
প্রশ্ন-১২। সাওম পালন অবস্থায় গেসট্রোসকপি, এন্ডোসকপি এবং কলোনোস্কপি এর ব্যবহার বিধান সম্মত কিনা?
উত্তর ঃ গেসট্রোসকপি এন্ড্রোসকপি যাতে মুখ দিয়ে ছোট পাইপ ঢুকিয়ে স্টোমাক ও নাড়িভুড়ির ছবি ধারণ করে যোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় এবং ক’লোনোস্কপি যাতে ক্যামেরা সহ ছোট পাইপ পায়ু পথে ঢুকিয়ে ভিতরে ছবি ধারণ করে রোগ নির্ণয় করা হয়। এগুলোতে যদি কোনো ধরণের পানি বা তেল জাতীয় জিনিস অথবা খাবার পেটে পৌঁছানো হয় তাহলে সাওম ভেঙ্গে যাবে। আর যদি কোনো ধরণের পানি বা তেল জাতীয় জিনিস প্রবেশ করানো না হয় তাহলে সাওম ভঙ্গ হবে না।
প্রশ্ন-১৩। সাওম পালন অবস্থায় নাকের ড্রপ ব্যবহার জায়েজ কিনা?
উত্তর ঃ নাকের ড্রপ যদি পেটে যায় তাহলে সাওম ভেঙ্গে যাবে। কারণ পেটের ভিতরে কিছু প্রবেশের জন্য নাক একটা বিকল্প পথ হিসেবে কাজ করে।
উত্তর ঃ নাকের ড্রপ যদি পেটে যায় তাহলে সাওম ভেঙ্গে যাবে। কারণ পেটের ভিতরে কিছু প্রবেশের জন্য নাক একটা বিকল্প পথ হিসেবে কাজ করে।
প্রশ্ন-১৪। কানে ও চোখে ড্রপ ব্যবহার করলে সাওমের কোনো ক্ষতি হবে কিনা?
উত্তর ঃ কান ও চোখের ড্রপ ব্যবহার করলে সাওম ভঙ্গ হবে না। কারণ পেটে কোনো জিনিস প্রবেশের জন্য কান ও চোখ বিকল্প কোনো পথ নয়। যদি চোখের ড্রপ ব্যবহারে গলায় এর স্বাদ অনুভব হয় তবুও রোজা ভাঙবে না।
প্রশ্ন-১৫। তারাবীহর সালাত কয় রাকাত?
উত্তর ঃ তারাবীহর সালাতে রাকাত নিয়ে যে যতই মতভেদ করুক না কেন ২০ রাকাত সালাত আদায় করার ব্যাপারে সাহাবীদের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই ওজর ব্যতীত ২০ রাকাত তারাবীহর সালাত আদায়ে অবহেলা করা উচিত নয়।
প্রশ্ন-১৬। রমাদানে তারাবীহর সালাতে কোরআন খতম করার বিধান কি?
উত্তর ঃ রমাদানের তারাবীহর সালাতে কোরআন খতম করা সুন্নাত। এক্ষেত্রে প্রতি দশ দিনে অথবা অন্ততঃ পুরো মাসে একবার খতম যেন দেওয়া হয় সেটা উত্তম। অবশ্যই শুদ্ধতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
উত্তর ঃ রমাদানের তারাবীহর সালাতে কোরআন খতম করা সুন্নাত। এক্ষেত্রে প্রতি দশ দিনে অথবা অন্ততঃ পুরো মাসে একবার খতম যেন দেওয়া হয় সেটা উত্তম। অবশ্যই শুদ্ধতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রশ্ন-১৭। কোনো ব্যক্তি জামাতে তারাবীহর সালাত আদায়ে আগ্রহী কিন্তু মসজিদে এসে দেখে তারাবীহর সালাত শুরু হয়ে গেছে, এমতাবস্থায় তার করণীয় কি?
উত্তর ঃ তারাবীহর সালাত এশার সালাতের পরে আদায় করা হয়। তাই কেউ যদি জামাতে শামিল হওয়ার জন্য এসে দেখে যে এশারের জামাত শেষ হয়ে তারাবীহর জামাত চলছে, সে প্রথমে এশারের সালাত আদায় করবে। তারপর তারাবীহের জামাতে শামিল হবে।
উত্তর ঃ তারাবীহর সালাত এশার সালাতের পরে আদায় করা হয়। তাই কেউ যদি জামাতে শামিল হওয়ার জন্য এসে দেখে যে এশারের জামাত শেষ হয়ে তারাবীহর জামাত চলছে, সে প্রথমে এশারের সালাত আদায় করবে। তারপর তারাবীহের জামাতে শামিল হবে।
প্রশ্ন-১৮। তারাবীহর সালাতে অতি দ্রুত তিলাওয়াত বৈধ আছে কিনা?
উত্তর ঃ তারাবীহর সালাতে প্রতি রাকাতে ভারসাম্যপূর্ণ তিলাওয়াত করা উচিত। তিলাওয়াত দীর্ঘায়িত করে মুসল্লিদের কষ্ট দেওয়া উচিত নয়। এটা শুধু তারাবীহের ক্ষেত্রে নয় বরং সব সালাতে ইমামের উচিত মুক্তাদীদের প্রতি খেয়াল রেখে তিলাওয়াতের ভারসাম্য রক্ষা করা। আবার এত দ্রুত তিলাওয়াত করাও জায়েয নেই যাতে অর্থ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং মুক্তাদীদের বুঝতে অসুবিধা যেন না হয়।
প্রশ্ন-১৯। রমাদান মাসে বিতরের সালাত জামাতের সহিত আদায় করার বিধান কি?
উত্তর ঃ রমাদান মাসে বিতরের সালাত জামাতের সহিত আদায় করার উপর ‘ইজমা’ হয়েছে। আর রমাদান ছাড়া অন্য মাসে বিতরের সালাত একাকী আদায় করার উপর ‘ইজমা’ হয়েছে।
উত্তর ঃ রমাদান মাসে বিতরের সালাত জামাতের সহিত আদায় করার উপর ‘ইজমা’ হয়েছে। আর রমাদান ছাড়া অন্য মাসে বিতরের সালাত একাকী আদায় করার উপর ‘ইজমা’ হয়েছে।