দেওবন্দী, তাবলীগি কওমীদের চাইতে বড় ভন্ড মুনাফিক দুনিয়ায় আছে কিনা সন্দেহ আছে। আমারা যে আমল গুলো করলে তারা শিরক- বিদয়াতের গরম ফতোয়া দেয়, সে কাজগুলো তাদের মুরুব্বীরা করলো সম্পূর্ণ নিশ্চুপ থাকে। নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আশেকগনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, উনারা মীলাদ শরীফ এবং ক্বিয়াম শরীফ করে থাকেন। অথচ দেওবন্দী – তাবলীগি- কওমী খারেজীরা এইটাকে সরাসরি বিদয়াত, কুফরী, শিরিক ফতোয়া দিয়ে থাকে।
অথচ, এই দেওবন্দী তাবলীগি দের মুরুব্বীরা ও মান্যবররা এই মীলাদ শরীফ এবং ক্বিয়াম শরীফকে জায়েজ বলেই ফতোয়া প্রদান করেছে এবং পালনও করেছে । তাদের ব্যাপারে দেওবন্দীদের ফতোয়ার ছুরি চলে না কেন?
আসুন তাদের কিতাব থেকেই দলীল প্রদান করি —
ইবনে তাইমিয়ার “ইক্বতিদ্বাউছ্ ছিরাতিল মুস্তাক্বিম” নামক কিতাবে উল্লেখ আছে,
وكذلك ما يحدثه بعض الناس اما مضاهاة للنصارىفى ميلاد عيسى عليه السلام واما محبة للنبى صلىالله عليه وسلم وتعظيما له والله قد يثيبهم على هذهالمحبة والاجتهاد.
অর্থাৎ- “কতক লোকের (অশুদ্ধ) বর্ণনা হচ্ছে যে, নাছারাদের দ্বারা হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার বিলাদত দিবস পালনের অনুসরণে পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য পবিত্র মীলাদ শরীফ করা হয়ে থাকে। আর এ মুহব্বত ও সম্মান প্রদর্শনের কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই ছওয়াব প্রদান করবেন।”
উক্ত কিতাবে আরো উল্লেখ আছে,
فتعظيم المولد واتخاذه موسما قد يفعله بعض الناسويكون له فيه اجر عظيم لحسن قصدة وتعظيمةلرسول الله صلى الله عليه وسلم.
অর্থ: “বরং ঐ দিনে (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমনের দিনে) পরিপূর্ণরূপে অনুষ্ঠান করা এবং এ দিনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা, উত্তম নিয়ত এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার কারণে বিরাট প্রতিদান লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ!
আশরাফ আলী থানবী , রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী, সহ সকল উলামায়ে দেওবন্দীদের পীর শায়েখে আরব ওয়াল আযম ,হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর কিতাবে বর্ননা করেন –
مولود شريف كو ذريعه بركلت سمجه كر هر سالمنعقد كرتاهون اورقيام كے وقت بے حد لطف ولذتپاتاهوی
অর্থ- মীলাদ শরীফের মাহফিলকে বরকত লাভের উসিলা মনে করে আমি প্রতি বছর মীলাদ শরীফ এর মজলিস করি এবং মীলাদ মাহফিলে ক্বিয়াম শরীফ করার সময় আমি অশেষ আনন্দ ও স্বাদ উপভোগ করি।”(দলীল ফয়সালায়ে হাফতে মাসায়লা পৃষ্ঠা ৫)
হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্য কিতাবে বলেন —
” আমাদের আলেমগন (দেওবন্দী) মীলাদ শরীফের বিষয়ে খুবই বিরোধ করছে। তবু আমি ক্বিয়াম শরীফ জায়েজ পন্থি আলেমগনের পক্ষেই গেলাম। যখন ক্বিয়াম শরীফ জায়েজ হওয়ার দলীল মওজুদ আছে , তখন কেন এতো বাড়াবড়ি করা হচ্ছে ? আমাদের জন্য তো মক্কা শরীফ মদীনা শরীফের অনুকরনই যথেষ্ট।অবশ্য ক্বিয়ামের সময় জন্মের এতেকাদ না রাখা চাই। যদি ( মাহফিলে) হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের বিষয়ে বিশ্বাস করা হয় , এতে কোন অসুবিধা নাই। কেননা আলমে খালক এবং কালের সাথে সম্পৃক্ত , এবং আলমে আমর উভয়বিধ অবস্থা থেকে পবিত্র । সূতরাং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ মাহফিলে আগমন করা উনার পবিত্র জাত মুবরকের জন্য অসম্ভব নয় !” (শামায়েলে এমদাদীয়া ৮ পৃষ্ঠা)
হযরত মাওলানা আব্দুল হাই লাখনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “মাজমুয়ায়ে ফতওয়া” কিতাবের মধ্যে লিখেন-
جو لوگ میلاد کی محفل کو بدعت مذ مومہ کھتےہے خلاف شرع کہتے ہے جس زمانہ میں بطرز مندوبمحفل میلاد کی جائے باعث ثواب ہے اور حرمیںبصرہ سشام یمن اور دوسرے ممالک کے لوگ بہیربیع الاول کا چاند دیکہ کر خوشی اور محفل میلاداور کار خیر کرتے ہیں قرائت اور سماعت میلاد میںاہتمام کرتے ہیں اور ربیع الاول کے علاوہ دوسرےمھینوں میں بہی ان ممالک میں محفل میلاد ہوتیہیں اور یہ اعتقاد نہ کرنا چاہئے کہ ربیع الاول میںمیلاد شریف کیا جائیگا تو ثواب ملیگا ورنہ نہیں.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মাহফিলকে নিন্দনীয় বিদয়াত বললো, সে নিশ্চয়ই সম্মানিত শরীয়ত উনার বিরোধী কথাই বললো। যে যুগে উত্তম তরতীব অনুযায়ী পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিল অনুষ্ঠান করা হবে, তা পুণ্যের মাধ্যম নিশ্চয়ই। পবিত্র হারামাইন শরীফাইন অর্থাৎ পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ, বছরা, সিরিয়া ইয়ামেনসহ অন্যান্য দেশসমূহে পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখে আনন্দ প্রকাশে পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিলের অনুষ্ঠান ও অন্যান্য পুণ্যময় কাজকর্ম সম্পাদন করে থাকেন, পবিত্র মীলাদ শরীফ পড়া ও ঐ সব ঘটনাবলীর শ্রবণকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এসব দেশে পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ ছাড়া অন্যান্য মাসেও পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। শুধু পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসে পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার অনুষ্ঠান করলে ছাওয়াব মিলে, অন্যথায় ছওয়াব মিলে না- একরম বিশ্বাস রাখা ঠিক নয়।”
দেওবন্দ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা কাসেম নানুতবী-এর জামাতা মালানা আব্দুল্লাহ ছাহেব “দুররুল মুনাজ্জাম” কিতাবের উপর অভিমত লিখতে গিয়ে কাসেম নানুতবী ও মালানা ইয়াকুব নানুতুবী (দেওবন্দের হেড মুহাদ্দিছ) সম্পর্কে লিখেছে,
زبۃ الفضلاء استاذ العلماء مولانا محمد یعقوبصاحب مرحوم مدرس اعلی مدرسہ عربیہ دیوبندخاص دیوبند میں بارھا محفل میلاد میں شریکہوئے اور بحالت قیام قاری وسامعین قیام بھی کیااور فرمایا کہ ...جبکہ تمام مجلس ذکر ولادت کیتعظیم کو اٹھ کھڑی ہو ایسی حالت میں قیام نہ کرناسوء ادبی سے خالی نہیں چنانچہ مولانا ومخدومناکے اس قول وفعل پر بہت سے شاگرت رشید اورباشندگا شہر شاہد ہں ما سوا اسکے سلسلہء خواندانمصطفی جامع الشریعہ والطر یقہ جاجی سید محمدعابد مہتمم مدرسہ دیوبند نے خاص مولانا ممدوحسے اپنے مکان پر ذکر ولادت شریف بطریق وعظکرایا اور شیرنی بھی تقسیم فرمائی اور کھفالفضلاء مولانا محمد قاسم صاحب ناظم مدرسہمذکور کی کثرۃ مرۃ سنا گیا ہے ذکر ولادت بااسعادت موجب خیر وبرکت اور خاص مولانا بھیبعض جگہ مجلس میلاد میں شریک ہوئے چنانچہپیر جی واجد علی صاحب جو مولانا کے مرید اورمیلاد خواں ہیں اس امرکے شاہد ہیں.
অর্থ: “আলিমকুল শ্রেষ্ঠ, উস্তাযুল আসাতিযা মালানা মুহম্মদ ইয়াকুব ছাহেব (প্রধান শিক্ষক মাদরাসায়ে আরাবিয়া দেওবন্দ) স্বয়ং দেওবন্দে বহুবার পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিলে শরীক হয়েছে। সবাই পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করার সময় তিনিও পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করেছেন এবং বলেছেন, ..... নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন আলোচনার সম্মানার্থে পুরো মজলিস যখন দাঁড়িয়ে যাবে, তখন না দাঁড়িয়ে বসে থাকা বেয়াদবী। মালানার এ উক্তি ও আমলের উপর তার অনেক প্রিয় শাগরেদ এবং শহরের অনেক বাসিন্দা সাক্ষী রয়েছেন।
তাছাড়াও হাজী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আবিদ (মুহতামিম মাদরাসায়ে দেওবন্দ)ও মালানাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন বৃত্তান্ত আলোচনা ওয়াযের মধ্যে করেছেন এবং শিরনীও বিতরণ করেছেন। মালানা কাসেম ছাহেবের (নাজেম উক্ত মাদরাসা) মুখ থেকেও এ কথাটি বহুবার শুনা গেছে যে- নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন-বৃত্তান্ত আলোচনা হচ্ছে খায়ের ও বরকত লাভের মাধ্যম। মালানাও কোনো কোনো জায়গায় পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিলে শরীক হয়েছে। পীর ওয়াজেদ আলী ছাহেব দেওবন্দী (যিনি মালানার মুরীদ এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠকারী ছিলেন) এ কথার সাক্ষী।”
মালানা আশরাফ আলী থানভী বলেছে,
ذکر ولادت شریف نبوی صلی اللہ علیہ مثل دیگر اذکار خیر کے ثؤاب اور افضل ھے اگر بدعات وقبائحسے خالی ھو تو اس سے بہتر کیا ھے؟ قال الشاعر:
ذکرک للمشتاق خیر شراب + وکل شراب دونہکسراب.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিল অনুষ্ঠান অন্যান্য উত্তম কার্যাবলীর মতো ছওয়াব ও উত্তম কাজ। যদি তা খারাপ বিদয়াত থেকে মুক্ত হয়, তবে এর চেয়ে ভালো ও উত্তম কাজ আর কীইবা হতে পারে? এ আলোচনার মাহফিল যে উত্তম এর সমর্থনে সে একজন কবির কবিতা আবৃত্তি করে। আশিকের তরে আপনার আলোচনাই অমৃত,
সে আলোচনাহীন স্থানেই আছে মরীচিকা মূর্ত।”(ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪র্থ খ- পৃষ্ঠা ৫৩)
দেওবন্দী সর্বোচ্চ গুরু আশরাফ আলী থানবী তার কিতাবে লিখেছে —
ولاحتفال بذكر الودة ان كان خاليا حن البدعاتالمروجة جاءز بل مندوب كساءر اذكاره صلي اللهعليه و سلم – والقيم عند ذكر ولادته الشريفة حاشاالله ان يكون كفرا
অর্থ– ” হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফের বর্ননা করার জন্য মাহফিল করা জায়েজ বরং মুস্তাহাব , যখন উহা (হিন্দুস্থনের) প্রচলিত বিদয়াত হতে পবিত্র হবে এবং ( মীলাদ শরীফে) তাওয়াল্লুদ শরীফ পাঠ করার সময় ক্বিয়ম করা কখনোই কুফরী নয় !”(ইমদাদুল ফতোয়া ৪ র্থ খন্ড ৩২০ পৃষ্ঠা)
আশরাফ আলী থানবী অপর এক কিতাবে লিখেছে —
” ঐ সকল কার্যাবলী ( অর্থাৎ শিরনী, ক্বিয়াম ইত্যাদি) প্রকৃত পক্ষে মুবাহ কাজ সমূহের অন্তর্ভুক্ত। তাতে কোন ক্ষতি নেই এবং সেজন্য প্রকৃত মীলাদ শরীফ এর ব্যাপারে কোন প্রকার নিষেধ আসতে পারে না।” (তরীকায়ে মীলাদ ৮ পৃষ্ঠা )
দেওবন্দী ইমাম মাওলানা খলীল আহমদ সাহারানপুরী রচিত “আল মুহান্নাদ আ’লাল মুফান্নাদ” কিতাবে পবিত্র মক্কা শরীফ এবং মদীনা শরীফ এর আলেমদের মীলাদ শরীফ সম্পর্কে প্রশ্নের জবাব দেওবন্দী খলীল আহমদ সাহারানপুরী লিখেন-
“সূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুবারক বেলাদতের আলোচনা বা মীলাদ শরীফ পাঠ এমন কি তাঁর পাদুকা সংশ্লিষ্ট ধূলি অথবা তাঁর বাহন গাধাটির প্রশ্রাব-পায়খানা মুবারক আলোচনাকে আমরা কেন কোন সাধারণ মুসলমান বেদআতে মুহররমা বা হারাম বলতে পারে না। না আমরা কখনো বলিনি বলিও না।
ঐ অবস্থা যার বিন্দুমাত্র সম্পর্ক হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে রয়েছে তার আলোচনা আমাদের মতে অধিকতর পছন্দনীয় ও উন্নতমানের মুস্তাহাব।”(আল মহান্নাদ আলাল মুফান্নাদ ২১ তম প্রশ্নের জবাব লেখক- মাওলানা খলীল আহমদ সাহারানপুরী দেওবন্দী।,প্রকাশনা-ইত্তেহাদ বুক ডিপো, দেওবন্দ (ইউ পি)
খলীল আহমদ সাহারানপুরী এই বইতে লিখেছে এটাই দেওবন্দী আকাবিরদের আক্বীদা। এর বিপরীত আক্বীদা পোষনকারীরা দেওবন্দী গ্রুপের নয়।
মৌলভী রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী ছাহেবের ওস্তাদ শাহ আব্দুল গণী দেহ্লভী ছাহেব মন্তব্য করেছে,
وحق انست كه نفس ذكر ولادت انحضرت صلى اللهعليه وسلم وسرور فاتحة نمودن يعنى ايصال ثواببروح پر فتوح سيد الثقلين كمال سعادت انساناست.
অর্থ: “সঠিক মতামত হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠে এবং পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ পাঠ করে ঈছালে ছাওয়াব করার এবং পবিত্র মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খুশি উদ্যাপনে মানবজাতির জন্য পূর্ণ সৌভাগ্য অবধারিত।” (শিফউস্ সা-ইল)
সকল দেওবন্দী ও বাংলাদেশর কওমীদের অন্যতম গর্ব আশরাফ আলী থানবীর খলীফা , শামছুল হক ফরিদপুরী তার ”তাছাউফ তত্ত্ব” কিতাবে মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ এর ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে লিখে —
“ক্বিয়াম জিনিসটা আসলে ফিকাহের অন্তর্ভুক্ত নাহে – ইহা তাছাউফের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ মুহব্বত বাড়ানোর উদ্দেশ্যে হযরত রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তারিফের কাসীদা পড়া হয় তাহা দ্বারা মুহব্বত বাড়ে এবং লোকজন মুহব্বতের জোশে খাড়া হইয়া যায় । মুহব্বতের জোশে খাড়া হইলে তাহাকে বিদয়াত বলা যায় না। তাহা ছাড়া হযরত নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে সালাম করার সময় বসিয়া বসিয়া সালাম করা শরীফ তবিয়তের লোকের কাছে বড়ই বেয়াদবী লাগে। ( তাছাউফ তত্ত্ব ৪১ পৃষ্ঠা)
শুধু তাই নয়, দেওবন্দী সিলসিলার প্রতিষ্ঠিাতা সহ সকল দেওবন্দীদের পীর সাহেব হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার নিজের ত্বরীকা সম্পর্কে সকল অনুসারি দের মধ্যে কিছু উপদেশ লিখিত আকারে রেখে গিয়েছিলেন ! আসুন দেখা যাক উপদেশগুলা কি ছিলো –
★ গৌরব করবে না।
★ নিজেকে বড় মনে করবে না।
★ খায়ের ও বরকতের জন্য মীলাদ মাহফিলের আঞ্জাম করবে এবং ক্বিয়াম করবে।
★ পীর আওলিয়া গনের ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে যোগদান করবে।
★ ফাতেহাখানীতে যোগদান করবে।
★ মাশায়েখ ও পীর আওলিয়াগনের মাযার শরীফ যিয়ারত করবে।
★ অবসর সময় তাঁদের মাযার শরীফের পার্শ্বে এসে রূহানীয়ত সহ মুতাওজ্জুহ হবে এবং স্বীয় মুর্শিদের সুরতে তাদের ধ্যান করবে ও ফয়েজ হাসিলের চেষ্টা করবে। কারন তাঁরা আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্থলাভিষিক্ত বলে গন্য।
★ এগুলোই আমার ত্বরীকা।
আর এসবই বরকতময় কর্ম। আমার লেখা “ফায়সালায়ে হাফতে মাসায়লা” কিতাবে এসকল বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।”(যিয়াউল কুলুব- কতিপয় বিশেষ উপদেশ পরিচ্ছেদ ,লেখক- হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি)
মুসলমান ভাইগন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে-দেওবন্দী সিলসিলায় কয়জন এই উপদেশ মান্যকরে ?
দেওবন্দী দের কাছে এই আমাল গুলাতো শিরিক আর বিদয়াত !!
তবে তারা কি উনাকে মুশরিক/বিদয়াতি বলবে ?
পীরের ত্বরীকা অস্বীকার করে কি তারা পীরের সিলসিলায় থাকতে পারে ?
জবাব পেলে ভালো হতো।
এবার একটু চিন্তা করুন দেওবন্দীরা কত নিকৃষ্ট। নিজেদের সিলসিলার সবাই মীলাদ -ক্বিয়ামে পক্ষে ফতোয়া দিয়ে গেছে সেটা দেখে না। আমরা সুন্নী মুসলমানরা মীলাদ ক্বিয়াম করলে সেটা তাদের কাছে শিরক-বিদায়াত হয়ে যায়। যদি আমাদেরকে শিরকি- বিদয়াতি ফতোয়া দিতে চায় তাহলে সর্বপ্রথম যেন নিজেদের মুরুব্বী দের মুশরিক আর বেদাতী ফতোয়া দিয়ে নেয় । নচেত আমাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার অধিকার তাদের নাই।