|
হানাফী মাযহাবে অন্যতম ফক্বীহ ও মুজতাহিদ ইমাম হযরত তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি (২২৯- ৩২১ হিজরী) তিনি বলেন, পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রাতের মর্যাদা সকল রাতের চাইতে বেশি। তিনি উল্লেখ করেন-
وَنَقَلَ ط عَنْ بَعْضِ الشَّافِعِيَّةِ : أَنَّ أَفْضَلَ اللَّيَالِي لَيْلَةُ مَوْلِدِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ لَيْلَةُ الْقَدْرِ ، ثُمَّ لَيْلَةُ الْإِسْرَاءِ وَالْمِعْرَاجِ ، ثُمَّ لَيْلَةُ عَرَفَةَ ، ثُمَّ لَيْلَةُ الْجُمُعَةِ ، ثُمَّ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ ، ثُمَّ لَيْلَةُ الْعِيدِ
অর্থ: রাতসমূহের মধ্যে উত্তম রাত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রাত, অতঃপর পবিত্র ক্বদরে রাত,অতঃপর মি’রাজ শরীফের রাত, অতঃপর পবিত্র আরাফার রাত, অতপর পবিত্র জুমুয়ার রাত,অতঃপর পবিত্র ১৫ শা’বান (শবে বরাত) রাত,অতপর পবিত্র ঈদের রাত।” (দলীল: রদ্দুল মুহতার আলা দুররিল মুখতার ৩/৫২৮-৫২৯ : কিতাবুল হজ্জ্ব , তাফসীরে রূহুল মায়ানী ১৯/১৯৪, সূরা ক্বদরে তাফসীর)
|
রদ্দুল মুহতার ৩/৫২৯ |
লক্ষ্যণীয় যে হযরত ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রায় সাড়ে এগারো শত বছর আগের একজন জগৎবিখ্যাত ইমাম। তিনিও পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফযীলত সকল রাতের চাইতে বেশি সেটা বলে গেছেন।
উক্ত কওল শরীফ হানাফী মাযহাবের অন্যতম কিতাব “রদ্দুল মুহতার” বা ফতোয়ায়ে শামীকিতাবে থাকার মাধ্যমে এটা মাযহাবের একজন নির্ভরযোগ্য ইমামের ফতওয়া হিসেবে সাব্যস্ত হচ্ছে। এতে যা বোঝা যায়,
এছাড়া বিখ্যাত তাফসীর রুহুল মায়ানীর বক্তব্যের স্ক্যান সংযুক্ত করা হলো,
রুহুল মায়ানী |
রুহুল মায়ানীর |
প্রথমত, সকল রাতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ রাত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রাত। সুবহানাল্লাহ!
দ্বিতীয়ত, অন্য সকল রাতের মর্যাদা উক্ত রাতের পরে। সুবহানাল্লাহ!
তৃতীয়ত, পবিত্র শবে ক্বদর, পবিত্র আরাফা,পবিত্র শবে বরাতের রাত এমনকি যারা বলে, দুই ঈদ ছাড়া ঈদ নাই তাদের জ্ঞাতার্থে -ঈদের রাতের চাইতেও উক্ত পবিত্র রাতের মর্যাদা বেশি। স্বাভাবিকভাবে দুই ঈদের চাইতে যেখানে জুমুয়ার রাতের মর্যাদা বেশি সেখানে উক্ত পবিত্র রাতের মর্যাদা কত বেশি সেটা সহজেই অনুধাবনীয়। সুবহানাল্লাহ!
চতুর্থত, হযরত ইমাম তাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একজন মুজতাহিদ শ্রেণীর আলিম।
পঞ্চমত, এটা একটা মাযহাবের মুজতাহিদের বক্তব্য।
ষষ্ঠত, এটা ফিকাহর কিতাবেও আছে।
সুতরাং, পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রাতের গুরুত্ব কত বেশি সেটা উল্লেখিত বর্ণনা থেকেই স্পষ্ট হলো। আমাদের উচিত উক্ত পবিত্র রাতের যথাযথ সম্মান দেয়া এবং অত্যন্ত মর্যাদার সাথে পালন করা।
এক সময় বাতিল ফিরক্বারা বলতো, পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা কি কোন ফিক্বাহের কিতাবে আছে? এ রাত বিষয়ে মাযহাবের কোন ইমাম কিছু বলেছেন?
আজ তারা যখন ফিক্বাহর কিতাব থেকে ও একজন মাযহাবের মুজতাহিদের বক্তব্য দেখতে পাবে তারা কি করবে? বিরোধিতা করে গোমরাহীতে লিপ্ত থাকবে নাকি তওবা করে গোমরাহী ত্যাগ করবে?