কিতাবঃ রিয়াদুস সালেহীন

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,  “আর তোমাদের প্রভু বলেছেন, আমাকে ডাক,  আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” (সূরা মু’মিনঃ ৬০)
তিনি আরো বলেছেন,  “তোমারা বিনীতভাবে ও সংগোপনে তোমাদের প্রতিপালকে ডাকবে, তিনি সীমা অতিক্রমকারীদেরকে ভালবাসেন না।” (সূরা আরাফঃ ৫৫)
তিনি আরো বলেছেন,  “আর যখন আমার বান্দা তোমার নিকটে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে তখন (তুমি বলে দাও) আমি নিকটেই আছি। আমি আহ্ববানকারীর আহ্বানে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে আহ্বান করে।” (সূরা বাকারাঃ ১৮৬)
তিনি আরো বলেছেন, “কে শোনে পেরেশান ও অশান্ত হৃদয় ব্যক্তির ডাক,  যখন সে তাকে ডাকে এবং তার বিপদ-আপদ দূর করে?” (সূরা নামালঃ ৬২)


১৪৬৫. হযরত নোমান ইবনে বশীর (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (স) বলেছেনঃ  “দুআ-ই হচ্ছে ইবাদত।” (আবু দাউদ ও তিরমিযী)

১৪৬৬. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) দোয়ার মধ্যে জামে দোয়া (সকল বৈশিষ্ট্যমন্ডিত দোয়া) পছন্দ করতেন এবং এছাড়া অন্য সব দুআ পরিহার করতেন। (আবু দাউদ)

১৪৬৭. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (স) অধিকাংশ সময় এ বলে দুআ করতেন, অর্থঃ “হে আল্লাহ্! আমাকে দুনিয়াতে কল্যাণ ও পারকালের কল্যাণ দান কর এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে আমাকে বাঁচাও। (বুখারী ও মুসলিম)

১৪৬৮. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেছেন) নবী করীম (স) নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করতেনঃ “হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে চাচ্ছি হিদায়েত, তাকওয়া, সচ্চরিত্র ও দুনিয়ার প্রতি অমুখাপেক্ষীতা।” (মুসলিম)

১৪৬৯. তারেক ইবনে আশইয়াম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন,  যখন কোন ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করতেন নবী করীম (স) তাকে নামায শেখাতেন তার পর তাকে নিম্নোক্ত কথায় দোয়া করার নির্দেশ দিতেন,  “হে আল্লাহ্,  আমাকে ক্ষমা করুন,  আমার প্রতি করুণা করুন,  আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দিন,  আমকে নিরাপত্তা দান করুন এবং আমাকে জীবিকা দান করুন।” (মুসলিম)
আর মুসলিম শরীফের অপর এক বর্ণনায় রয়েছে,  হযরত তারেক (রা) হতে বর্ণিত আছে যে,  তিনি নবী করীম (স) থেকে শুনেছেন, এক ব্যক্তি তার কাছে এসে বলল,  হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার রবের কাছে প্রার্থনার সময় কি বলব?  রাসূলুল্লাহ (স) বললেন,  তুমি বলবে,  “আল্লাহুম্মাগ ফিরলী …।” কারণ এ বাক্যসমূহ তোমার জন্য দুনিয়া ও পরকালের নিয়ামত একত্র করে দেবে।

১৪৭০. হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আমর(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) নিম্নেক্ত দোয়াটি করেছেন, অর্থ, “হে হৃদয়সমূহকে ঘুরিয়ে দেয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন আল্লাহ্,  আমাদের হৃদয়গুলোকে আপনার আনুগত্যের দিকে ঘুরিয়ে দিন।” (মুসলিম)

১৪৭১. হযরত আবূ হুরাইরা (রা) নবী করীম (স) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন,  “তোমরা আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় চাও কঠিন পরীক্ষা, চরম দুর্ভাগ্য, ভাগ্যের খারাপ দিক ও শত্রুদের আনন্দিত হওয়া থেকে।” (বুখারী ও মুসলিম)

১৪৭২. হযরত আবূ হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) দোয়া করতেন,  অর্থ “হে আল্লাহ্! আমার দ্বীনকে আমার জন্য সঠিক করে দাও যা আমার কাজের সংরক্ষক,  আমার দুনিয়াকে আমার জন্য সংশোধন করে দাও যার মধ্যে রয়েছে আমার জীবন-জীবিকা, আমার আখেরাতকে আমার জন্য সুসংস্কৃত করে দাও যেখানে আমাকে ফিরে যেতে হবে, প্রত্যেক পুণ্য কাজে আমার জীবনকে বৃদ্ধি করে দাও এবং প্রত্যেক মন্দ কাজ হতে মৃত্যুকে আমার জন্য শান্তির কারণে পরিণত কর।”(মুসলিম)

১৪৭৩. হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন,  তুমি বল,  অর্থ “হে আল্লাহ্। আমাকে হিদায়াত দান করুন এবং আমাকে সরল পথে রেখ।” অপর এক বর্ণনায় রয়েছে অর্থ “হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে হিদায়াত ও সোজা পথের সন্ধান চাই।” (মুসলিম)

১৪৭৪. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ (স) এ বলে দোয়া করতেন,  অর্থ “হে আল্লাহ্! আমি আশ্রয় কামনা করছি তোমার কাছে অক্ষমতা ও আলস্য থেকে,  কাপুরুষতা,  বার্ধক্য ও কার্পণ্য হতে। আমি আশ্রয় কামনা করছি তোমার কাছে কবরের আযাব হতে এবং আশ্রয় কামনা করছি তোমার কাছে জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে।” অপর একটি বর্ণনায় রয়েছে,  অর্থ “ঋণের বিপুল বোঝা ও লোকদের প্রতিপত্তি বিস্তার করা হতে।” (মুসলিম)

১৪৭৫. হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (স)-কে বললেন,  আমাকে এমন একটি দোয়া শিক্ষা দিন যা আমি আমার নামাযের মধ্যে পাঠ করব। রাসূলুল্লাগ (স) বললেন,  তুমি বলবে,  “হে আল্লাহ্! আমি আমার নিজের প্রতি যুলুম করেছি অনেক বেশি। আর তুমি ছাড়া পাপ ক্ষমা করার আর কেউ নেই। তুমি আমাকে ক্ষমা কর, আর আমার উপর রহম কর। অবশ্যই তুমি ক্ষমাকারী ও দয়ালু।” (বুখারী ও মসলিম)

১৪৭৬. হযরত আবূ মূসা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (স) নিম্নোক্ত দুআ গুলো করতেনঃ অর্থ “হে আল্লাহ্‌! আমার পাপ ও অজ্ঞতাকে ক্ষমা করে দাও, আমার কাজে বাড়াবাড়িকে ক্ষমা করে দাও আর আমার সে পাপ ক্ষমা করে দাও যা তুমি আমার চেয়ে অধিক জান। হে আল্লাহ্‌! ক্ষমা করে দাও সেই কাজ যা আমি ভেবে চিন্তে করেছি ও যা তামাসাচ্ছলে করেছি এবং যা আমি সজ্ঞানে করেছি ও যা অজ্ঞানে আর এসবগুলো আমার মধ্যে আছে। হে আল্লাহ্‌! ক্ষমা করে দাও আমার পূর্বের ও পরের সকল পাপ এবং যা আমি গোপনে ও প্রকাশ্যে করছি আর সেই পাপও মাফ করে দাও যা তুমি আমার চেয়ে অধিক জান। তুমিই সামনে বাড়িয়ে দাও ও তুমিই পেছনে ঠেলে দাও। আর তুমি প্রতিটি বস্তুর উপর ক্ষমতাবান।” (বুখারী ও মুসলিম)

১৪৭৭. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (স) তাঁর দোয়ার মধ্যে বলতেন,  “হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে আশ্রয় কামনা করছি যা কিছু আমি আমল করেছি ও যা আমি আমল করিনি তার অনিষ্টকারিতা হতে।” (মুসলিম)

১৪৭৮. হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) যেসব কথা বলে দোয়া করতেন তার মধ্যে ছিল,  “হে আল্লাহ্! অবশ্যই আমি তোমার নিকট তোমার অনুগ্রহের অপসরণ, নিরাপত্তার প্রত্যাবর্তন, আকস্মিক পাকড়াও এবং যাবতীয় অসন্তোষ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি” (মুসলিম)

১৪৭৯. হযরত যায়দ ইবনে আরকাম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ (স) এ বলে দোয়া করতেন “হে আল্লাহ্! আমি আশ্রয় কামনা করছি তোমার কাছে অক্ষমতা ও আলস্য থেকে,  কার্পণ্য ও বার্ধক্য হতে এবং কবরের আযাব থেকে। হে আল্লাহ্! আমার অন্তরকে তাক্ওয়া দান কর এবং তাকে পবিত্র করে দাও, তুমি সবচেয়ে ভাল পবিত্রকারী, তুমিই তার কার্য সম্পাদনকারী ও মালিক। হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে আশ্রয় কামনা করছি এমন ইলম হতে যা উপকার প্রদান করে না, এমন হৃদয় হতে যা আল্লাহ্ ভয়ে ভীত হয় না, এমন প্রবৃত্তি হতে যা পরিতৃপ্ত হয় না এবং এমন দুআ হতে যা কবূল হয় না। (মুসলিম)

১৪৮০. হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (স) এ বলে দোয়া করতেন,  অর্থ “হে আল্লাহ্! আমি তোমারই অনুগত হয়েছি, তোমারই ওপর ঈমান এনেছি, তোমারই ওপর তাওয়াক্কুল করেছি, তোমারই দিকে ফিরেছি, তোমারই দেয়া শক্তি দ্বারা আমি শত্রুদের সাথে বিবাদ করেছি, এবং তোমারই দিকে আমি ফয়সালা পেশ করছি। কাজেই আমার পূর্বের ও পরের গোপন ও প্রকাশ্য সকল পাপ ক্ষমা করে দাও। তুমিই সামনে বাড়িয়ে দাও ও তুমিই পেছনে ঠেলে দাও। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই।” তবে কোন কোন বর্ণনাকারী এর সাথে একটি কথা বাড়িয়েছেন যেমন, অর্থঃ আল্লাহ্ প্রদত্ত শক্তি ছাড়া পাপ হতে দূরে থাকা ও নেকীর কাজ করার শক্তি কারো নেই। (বুখারী ও মুসলিম)

১৪৮১. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (স) এ কথাগুলো বলে দোয়া করতেন,  অর্থঃ “হে আল্লাহ্! আমি আশ্রয় কামনা করছি তোমার কাছে জাহান্নামের পরিক্ষা ও জাহান্নামের আযাব থেকে প্রাচুর্য ও দারিদ্রের অনিষ্টকারিতা হতে।” (আবু দাউদ ও তিরমিযী)

১৪৮২. হযরত কুতবাহ ইবনে মালেক(র) বলেন তিনি বলেন,  নবী করীম (স) এ বলে দোয়া করতেন,  অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাই তোমার কাছে খারাপ আখলাক, খারাপ আমল ও কুপ্রবৃত্তি হতে।” (তিরমিযী)

১৪৮৩. হযরত শাকাল ইবনে হুমাইদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম,  ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে একটি দোয়া শিক্ষা দিন। উত্তরে তিনি বললেন, তুমি এই বলে দোয়া করবে,  অর্থঃ “হে আল্লাহ্! আমি আশ্রয় কামনা করছি তোমার কাছে আমার শ্রবণের অনিষ্টকারিতা হতে,  আমার দৃষ্টির অনিষ্টকারিতা থেকে, আমার কথার অনিষ্টকারিতা হতে,  আমার হৃদয়ের অনিষ্টকারিতা থেকে এবং আমার লজ্জস্থানের অনিষ্টকারিতা থেকে।” ইমাম আবূ দাউদ ও ইমাম তিরমিযী (র) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (র) এ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।

১৪৮৪. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (স) বলতেন, অর্থঃ “হে আল্লাহ্! আমি আশ্রয় কামনা করছি তোমার কাছে শ্বেতকুষ্ঠ,  মানসিক রোগ, কুষ্ঠরোগ ও সকল প্রকার মন্দ রোগ হতে।” (আুব দাউদ)

১৪৮৫. হযরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ (স) এ বলে দোয়া করতেন,  অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাই ক্ষুধা ও অনাহার হতে,  কারণ তা হচ্ছে নিকৃষ্ট শয়ন-সঙ্গী। আর আমি আশ্রয় চাই তোমার কাছে খেয়ানত ও আত্নসাৎ থেকে, কারন তা হচ্ছে নিকৃষ্ট  অন্তরঙ্গ অভ্যাস। (আবু দাউদ)

১৪৮৬. হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত। একবার এক মুকাতাব ক্রীতদাস তাঁর কাছে এসে বলল,  আমি নিজের মুক্তির জন্য চুক্তিবদ্ধ অর্থ পরিশোধ করতে অক্ষম হয়ে পড়েছি। আমাকে সাহায্য করুন। জবাবে তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (স) আমাকে যে কথাগুলো শিখিয়ে ছিলেন আমি কি সেগুলো তোমাকে শিখিয়ে দেব?  যদি তোমার ওপর পাহাড় সমান ঋণ থাকে তবে আল্লাহ্ তোমার হতে তা আদায় করে দেবেন। বলঃ অর্থ “হে আল্লাহ্! তোমার হারাম হতে তোমার হালালকে আমার জন্য যথেষ্ট করে দাও এবং তোমার অনুগ্রহের মাধ্যমে তোমার ছাড়া অন্যদের থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী বানিয়ে দাও।” (তিরমিযী)

১৪৮৭. হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (স) তাঁর পিতা হুসাইনকে দুটি বাক্য বলে দুআ করতে শিখিয়েছেন। তা হল, অর্থ, “ হে আল্লাহ! আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দাও, আর আমাকে আমার নফসের অনিষ্টকারিতা থেকে আশ্রয় দান কর।” (তিরমিযী)

১৪৮৮. হযরত ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  আমি বললাম,  ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে এমন কিছু দুআ শিখিয়ে দেন যা দিয়ে আমি আল্লাহ কাছে দুআ করব। তিনি বললেনঃ “আপনি আল্লাহর কাছে শান্তি কামনা করুন।” কিছুদিন পর আমি পুনরায় তাঁর কাছে এসে বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে এমন একটি দুআ শিখিয়ে দেন যা দিয়ে আমি আল্লাহর কাছে দুআ করব। তিনি আমাকে বললেন, “ হে আব্বাস! হে রাসূলের চাচা! আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি কামনা করুন।” (তিরমিযী)

১৪৮৯. যহরত ইবনে হাওশাব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উম্মে সালামা (রা)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে উম্মুল মু’মিনীন! রাসূলুল্লাহ (স) যখন আপনার কাছে অবস্থান করতেন তখন বেশির ভাগ সময় তিনি কি দুআ করতেন? উত্তরে তিনি বললেন,  বেশির ভাগ সময় তিনি এই বলে দোয়া করতেন,  অর্থঃ “হে হৃদয়সমূহকে ঘুরিয়ে দেবার অধিকারী,  আমার হৃদয়কে তোমার দ্বীনের উপর অবিচলভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখ। (তিরমিযী)

১৪৯০. হযরত আবূ দারদা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন,  দাউদ (আ)-এর একটি দোয়া ছিল, অর্থঃ “ হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে তোমার ভালবাসা প্রার্থনা করছি এবং সেই ব্যক্তির ভালবাসা প্রার্থনা করছি যে তোমাকে ভালোবাসে আর এমন আমল প্রার্থনা করছি যা আমাকে তোমার ভালবাসার কাছে পৌঁছিয়ে দেবে। হে আল্লাহ! তোমার ভালবাসাকে আমার কাছে আমার প্রাণ, আমার পরিবার-পরিজন ও ঠান্ডা পানির চেয়ে বেশি প্রিয় কর।” (তিরমিযী)

১৪৯১. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেনঃ  “ইয়া যাল জালালে ওয়াল ইকরাম” এ দুআটি খুব বেশি করে পড় (তিরমিযীঃ আবওয়াবুদ্দাওয়াত, নাসায়ী হাকিম)।

১৪৯২. হযরত আবু উমামা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ (স)-এর অসংখ্য দুআ এমন আছে যা আমরা সংরক্ষণ করতে পারি নি। আমরা বললাম, ইয়া আল্লাহর রাসূল! আপনি অসংখ্য দোয়া করেছেন,  আমরা তার মধ্যে হতে কিছুই সংরক্ষণ করতে পারি নি। জবাবে তিনি বললেনঃ “ আমি আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি দুআ শিখিয়ে দেব না যা এসব দোয়াকে একটিত্রত করে দিবে?  তা হল,  তোমরা এ বলে দোয়ার করবে। “আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন খাইরি মা সাআলাকা মিনহু নাবীয়্যূকা মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ওয়া আ’উযু বিকা মিন শাররি মাস্তা’আযাকা মিনহু নাবিয়্যূকা মুহাম্মাদুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম,  ওয়া আনতাল মু্সতা’আনু ওয়া আলাইকাল বালাগ, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা, ইল্লা বিল্লাহ” অর্থ “হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে সেসব কল্যাণ প্রার্থনা করছি যা তোমার নবী মুহাম্মদ (স) তোমার নিকট প্রার্থনা করেছেন এবং আমি তোমর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি সেই সমস্ত অনিষ্ট থেকে যা থেকে তোমার নবী মহাম্মাদ (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাল্লাম) তোমার কাছে আশ্রয় চেয়েছেন। আর তুমিই সাহায্যকারী। তোমারই কাছে সব পৌঁছে যাবে এবং তোমার সাহায্য ব্যতীত পাপ হতে দূরে থাকার ও পুণ্য করার ক্ষমতা কারোর নেই। (তিরমিযী)

১৪৯৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স)-এর একটি দুআ ছিল,  অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে তোমার রহমতের কার্যকারণসমূহ প্রার্থনা করছি,  তোমার মাগফিরাতের কার্যকারণসমূহ প্রার্থনা করছি আর (প্রার্থনা করছি) প্রত্যেকটি পাপ হতে নিরাপদে থাকার ও প্রত্যেকটি পণ্য অর্জন করা এবং জান্নাত লাভে ধন্য হওয়া ও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির।” (হাকিম। 
Top