কিতাবঃ সালাফীদের জবাবে কালিমায়ে তাইয়্যেবাহঃ আল খাসাইসুল কোবরা
➖➖➖
ইমাম    জালাল   উদ্দিন    সুয়ূতি    রহমতুল্লাহ   আলাইহি   ‘আল  খাসাইসুল   কুবরা’   গ্রন্থে   ২৭   পৃষ্ঠা   থেকে   ৩০   পৃষ্ঠা   পর্যন্ত  ইমাম    হাকিম,    বায়হাকী,    তাবরানী,   আবু    নাঈম,    ইবনে  আসাকির,  ইবনে   আদি,    ইমাম  বাযযার,   দারুকুতনী,   সহ বিভিন্ন ইমামদের বর্ণনা সূত্রে ১০টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। যার  সবগুলোতেই  পুরো  কালিমার  বাক্য  উল্লেখিত  আছে।  নিম্নে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হল।

হাদিস-১
====
اخرج  الحاكم والبيهقى   والطبرانى   فى الصغير  وابونعيم وابن  عساكر عن عمر  ابن الخطاب رضى الله عنه قال قال    رسول الله صلى الله عليه وسلم لما  اقترف ادم الخطيئة  قال يا  رب  بحق محمد لما غفرت لى- قال وكيف عرفت  محمدا قال لانك  لما خلقتنى بيدك ونفخت  فى من روحك رفعت رأسى  فرأيت قوائم  العرش مكتوبا لا  اله  الا الله محمد رسول الله- فعلمت  انك   لم    تضف الى اسمك الا احب الخلق اليك- قال   صدقت يا ادم ولولا محمد ما خلقتك-

অর্থ: হযরত  উমর ইবনুল  খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু  আনহু  থেকে  বর্ণিত,      তিনি      বলেন-       রাসূলুল্লাহ       সাল্লাল্লাহু       আলাইহি  ওয়াসাল্লাম  বলেছেন-   যখন  আদম  আলাইহিস সালাম এর নিকট     তাঁর     ইজতেহাদী    ত্রুটি    ধরা      পড়ল      তখন    তিনি  বললেন-  হে   প্রভূ  মুহাম্মদ  সাল্লাল্লাহু  আলাইহি  ওয়াসাল্লাম  এর  উসিলায় আমাকে  ক্ষমা  কর।  আল্লাহতা’য়ালা বললেন- তুমি   মুহাম্মদ   সাল্লাল্লাহু   আলাইহি   ওয়াসাল্লামকে   কিভাবে  চিনলে?  আদম  আলাইহিস  সালাম  বললেন-  যখন  আপনি  আমাকে  স্বীয়  কুদরতে  সৃষ্টি  করে  আমার  মধ্যে  রূহ  প্রদান  করলেন    তখন    আমি    আমার      মাথা    উত্তোলন      করলাম।  অতঃপর    দেখতে   পেলাম   আরশের   প্রতিটি   খুটিতে     লিখা আছে-  ‘লা  ইলাহা    ইল্লাল্লাহু   মুহাম্মাদুর  রাসূলুল্লাহ’।    তখন আমি   বুঝতে  পারলাম সমগ্র  সৃষ্টির মধ্যে   সবচেয়ে প্রিয় না হলে আপনি   সে নাম  আপনার  নামের সাথে    যুক্ত করতেন  না। অতঃপর আল্লাহ বললেন- হে আদম তুমি ঠিকই বলেছ। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি  ওয়াসাল্লামকে   সৃষ্টি  না  করলে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না।

এই     হাদিসটি      ইমাম     হাকিম,      ইমাম     বায়হাকি,       ইমাম তাবরানী, ইমাম আবু নাঈম এবং ইবনে আসাকির প্রত্যেকে স্ব-স্ব কিতাবে বর্ণনা করেছেন। ইমাম হাকিম এ হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।

হাদিস- ২
=====
واخج  ابن   عدى   وابن عساكر  عن  انس قال قال  رسول الله صلى الله عليه وسلم لما عرج بى رأيت على ساق العرش مكتوبا لا اله الا الله محمد رسول الله

অর্থ: ইমাম  ইবনু  আদি এবং ইমাম  ইবনু আসাকির   হযরত আনাস     রাদিয়াল্লাহু     আনহু     থেকে     বর্ণনা     করেছেন     যে,  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি মিরাজ রজনীতে  দেখেছি আরশের উপর  লিখিত- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’।

হাদিস- ৩.
=====
واخرج الحاكم  وصححه  عن  ابن عباس   رضى  الله  عنه قال اوحى  الله الى  عيسى   امن   بمحمد ومر  من ادركه من امتك  ان يؤمنوا به فلولا محمد ما خلقت ادم ولا الجنة ولاالنار- ولقد خلقت العرش على الماء  فاضطرب  فكتبت  عليه  لا اله  الا  الله محمد رسول الله

অর্থ:   ইমাম    হাকিম   উক্ত   হাদিসটি  হযরত   ইবনে  আব্বাস রাদিয়াল্লাহু     আনহু   থেকে   বর্ণনা   করেছেন   এবং   বলেছেন হাদিসটি      সহিহ।       তিনি      বলেন-      আল্লাহ      তায়ালা     ঈসা আলাইহিস  সালাম  এর  প্রতি  নির্দেশ  প্রদান  করলেন  ‘তুমি  মুহাম্মদ   সাল্লাল্লাহু   আলাইহি   ওয়াসাল্লাম   এর   প্রতি   ঈমান  আনয়ন   কর।   এবং   তোমার   উম্মতদেরকে   নির্দেশ   প্রদান  কর। যে ব্যক্তি  মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাক্ষাত পাবে সে যেন তাঁর  প্রতি  ঈমান আনয়ন করে। যদি মুহাম্মদ  সাল্লাল্লাহু  আলাইহি  ওয়াসাল্লাম  না  হতেন  তাহলে  আমি  আদম কিংবা  জান্নাত,  জাহান্নাম কিছুই  সৃষ্টি করতাম   না।  যখন আমি   পানির উপরে আরশ তৈরি    করলাম   তখন তা   নড়াচড়া   করতে    লাগল।   অতঃপর    তার   উপরে   লিখে দিলাম ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’। অতঃপর স্থির হয়ে গেল।

হাদিস-৪
=====
اخرج الدار قطنى فى الافراد- والخطيب وابن عساكر عن ابى الدرداء عن البنى صلى الله عليه وسلم- قال رأيت ليلة اسرى بى العرش فرندة خضرة فيها مكتوب بنور الابيض لا اله الا الله محمد رسول الله ابو بكر الصديق وعمر الفارق-

অর্থ: ইমাম  দারুকুতনী ইফরাদ গ্রন্থে এবং  খতিব ও  ইবনে আসাকির  স্ব-স্ব  গ্রন্থে  বর্ণনা  করেছেন।  হযরত  আবু  দারদা  রাদিয়াল্লাহু     আনহু    থেকে    বর্ণিত,    নবী    করিম     সাল্লাল্লাহু  আলাইহি       ওয়াসাল্লাম      বর্ণনা       করেছেন।      আমি      মিরাজ রজনীতে    দেখেছি    আরশের     উপর    একটি     সবুজ      রঙের কাপড়ের  উপর   সাদা   রঙের   নূর  দ্বারা   লিখিত  রয়েছে  ‘লা ইলাহা   ইল্লাল্লাহু     মুহাম্মাদুর     রাসূলুল্লাহ’    এবং    আবু   বকর সিদ্দিক ও উমর ফারুক।

হাদিস- ৫
=====
واخرج  ابو نعيم فى الحلية  عن ابن عباس  قال قال رسول  الله صلى الله عليه وسلم ما فى الجنة شجرة  عليه ورقة الامكتوب عليها- لا اله الا الله محمد رسول الله

অর্থ:      আবু      নাঈম    হুলিয়া    গ্রন্থে     হযরত    ইবনে    আব্বাস রাদিয়াল্লাহু    আনহু   থেকে    বর্ণনা   করেছেন।   তিনি    বলেন- রাসূলুল্লাহ           সাল্লাল্লাহু         আলাইহি        ওয়াসাল্লাম        ইরশাদ করেছেন-     জান্নাতের     প্রত্যেকটি    গাছের      প্রতিটি    পাতায়  পাতায়     লিখা       রয়েছে      ‘লা     ইলাহা      ইল্লাল্লাহু     মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।’

হাদিস- ৬
=====
ইমাম     জালাল     উদ্দিন     সুয়ূতি      রাদিয়াল্লাহু     আনহু      ‘আল জামিউস সাগীর’ গ্রন্থে  নিম্নের হাদিসটি  বর্ণনা   করে ইহাকে সহিহ বলেছেন-

عن  انس بن  مالك  قال قال     رسول الله   صلى  الله عليه وسلم دخلت    الجنة   فرأيت    فى  عارضتى  الجنة  مكتوبا  ثلاثة   اسطر بالذهب  السطر   الاول  لا    اله  الا   الله  محمد  رسول  الله  والسطر الثانى- ما قدمنا وجدنا- وما اكلنا ربحنا- وما خلفنا خسرنا- والسطر الثالث امة مذنبة ورب غفور

অর্থ:  হযরত  আনাস  বিন  মালিক  রাদিয়াল্লাহু  আনহু  থেকে  বর্ণিত,        তিনি       বলেন-       রাসূলুল্লাহ      সাল্লাল্লাহু      আলাইহি ওয়াসাল্লাম     ইরশাদ      করেছেন,     মিরাজ      রজনীতে     আমি জান্নাতে       প্রবেশ       করলাম,       অতঃপর       দেখতে       পেলাম  জান্নাতের উভয় পার্শ্বে স্বর্ণাক্ষরে তিনটি লাইন লিখা রয়েছে। প্রথম      লাইনে         লিখা-     ‘লা     ইলাহা     ইল্লাল্লাহু     মুহাম্মাদুর  রাসূলুল্লাহ’।  দ্বিতীয়    লাইনে  লিখা-   আমরা   যা    অগ্রে   পেশ করেছি   তা  পেয়েছি,   যা  ভক্ষণ   করেছি  তা  থেকে    উপকৃত হয়েছি।   যা   ছেড়ে   এসেছি  তাতে   ক্ষতিগ্রস্থ  হয়েছি।  তৃতীয় লাইনে    লিখা-     উম্মত    হল     গোনাহগার    আর     রব    হলেন  ক্ষমাশীল। (হাদিস নং ৪১৮৬)

Top