জুমার খুতবা:

*************

রবিউল আখের ১৪৪০ হি. জানুয়ারী-২০১৯ সাল।



বিষয়: মুসলিম কে?

=============





সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আযহারী

(বিএ. অনার্স, আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, কায়রো, মিশর। এম.এ. এম.ফিল. কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়, মিশর। পিএইচ.ডি গবেষক,চ.বি.)

সহকারী অধ্যাপক, সাদার্ন  বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ. খতীব, মুসাফির খানা জামে মসজিদ, নন্দন কানন, চট্টগ্রাম।



---------------------------------------------------------------------------------

بسم الله الرحمن الرحيم. الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على سيد المرسلين وعلى آله وصحبه أجمعين, أما بعد!



ইসলামে মানুষকে 'আশরাফুল মাখলুকাত' বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 ‍‍ وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَىٰ كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا

“নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদের স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।” (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ৭০) অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ 'আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।' (সুরা তীন:৪)

এ শ্রেষ্ঠত্বের জানান দিয়ে মহান আল্লাহ ফেরেশতাদের আদম আলাইহিস সালামকে সিজদা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনের ভাষায়,

 وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ أَبَى وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ 

“এবং যখন আমি হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সিজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলিস ব্যতীত সকলে সেজদা করল। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।” (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩৪)



এমনকি মানুষের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের কথা বিবেচনা করেই তার জান, মাল, বিবেক-সম্ভ্রম, ধর্ম ও বংশ রক্ষা করার জন্য ইসলাম বহু বিধি-বিধান প্রণয়ন করেছে। মানুষের ধর্ম রক্ষার জন্য জিহাদের নির্দেশনা; তার জান ও রক্তকে হেফাজত করার জন্য কিসাসের বিধান জারি করেছে। মানুষের সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষা করার জন্য গিবত-শেকায়েত ও পরনিন্দার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। মানুষের বংশপরম্পরাকে রক্ষা করার জন্য জিনা-ব্যভিচারের পথ রুদ্ধ করে বৈবাহিক জীবনাচারের নির্দেশ প্রদান করেছে। মানুষের মেধা-মনন, বিবেক-বুদ্ধি সতেজ ও পরিশোধিত রাখতে সব মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ করেছে। মানুষের সম্পদকে রক্ষা করার জন্য সব রকমের চুরি, ডাকাতি, লুটতরাজ, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি ও প্রতারণার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। এভাবেই ইসলাম মানুষকে মানবিক মর্যাদার সর্বোচ্চ শিখরে উন্নীত করেছে।



বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তা’লা যে মহান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে মানব ও জ্বিন জাতিকে সৃজন করেছেন সে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হাছিলের নিমিত্তে তিনিই মানব জাতির জন্য সর্বশেষ ধর্ম হিসেবে ইসলামকে মনোনীত করেছেন। এরশাদ হচ্ছে-

إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ ۗ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۗ وَمَن يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ

“নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হল, ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও তারা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত। (আলে ইমরান,আয়াত-১৯)। পবিত্র কোরআনে আরও ঘোষিত হয়েছে, وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ  “যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।(আলে ইমরান,আয়াত-৮৫)।

আর তিনি ইসলামে পরিপূর্ণরূপে প্রবেশ করতে বলেছেন। এরশাদ হচ্ছে-يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণরূপে প্রবেশ কর। আর শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। কেননা শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (বাক্বারা-২০৮)



এই ধর্ম সর্বদা শান্তি, সাম্য, সহমর্মিতা, মানব কল্যান, উদারতা ও পরমত সহিষ্ণুতার কথা বলে। ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বকালে আরবদের জাতিগত হিংসা-বিদ্বেষ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধবিগ্রহের বীভৎস কর্মকা-ে এবং বিভিন্ন জনপদে দুর্নীতি ও হানাহানিতে আড়ষ্ট হয়ে পড়েছিল পৃথিবী। পৃথিবীকে এ চরম দুর্গতি থেকে উদ্ধার করার জন্য বিশ্বমানবতার মুক্তিদাতা ও শান্তির অগ্রদূত রূপে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবির্ভূত হন। তিনি মানবতার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের জন্য সমাজের প্রত্যেক সদস্যকে ইসলামের সুমহান আদর্শে শিক্ষিত করে গড়ে তোলেন। অনুসারীদের আত্মিক, নৈতিক, চারিত্রিক গুণে বলীয়ান করে শান্তি প্রতিষ্ঠার অতন্দ্রপ্রহরীতে পরিণত করেন। 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দৃপ্তকন্ঠে ঘোষণা করেন, ( 1) الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ “সে-ই প্রকৃত মুসলমান, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদে থাকে।”(2 )

১৪শ’ বছর আগে ইসলামের মাধ্যমেই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শান্তির সেই পথ ধরে দুনিয়ার মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে ধন্য হয়েছেন যুগ যুগ ধরে। তাই বিশ্ব নিয়ন্তা কর্তৃক স্বীকৃত শান্তি প্রিয় ধর্ম ইসলাম। ইসলাম ধর্মের অনুসারীগণ কর্মফলে বিশ্বাসী। এ পৃথিবী তাদের জন্য কর্মক্ষেত্র স্বরুপ। এখানে যদি কেউ ভাল ও ন্যায় পথে জীবন যাপন করে তবে আখিরাতে সে ভাল ফল পাবে। আর অন্যায় পাপ কাজ করলে রয়েছে ভয়াবহ স্থান জাহান্নাম। কোন অরাজকতা, ধ্বংসযজ্ঞ, অকল্যাণ বা বিশৃংখলা এখানে স্থান নেই।

মুসলিম শব্দটি সালাম শব্দ থেকে উৎপত্তি যার শাব্দিক অর্থ শান্তি ও নিরাপত্তা বিধান করা। মুসলিম শব্দের অর্থ আতœসর্মপনকারী। ‘ইসলাম’ এর অর্থ আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে তাঁর নির্দেশ মান্য করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন। এ জন্য পৃথিবীতে সত্য-ন্যায়ের মাধ্যমে সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা বজায় রাখা ইসলামের দৃষ্টিতে অপরিহার্য কর্তব্য ও ইমানি দায়িত্ব। সুতরাং মানবসমাজে কোনো রকম অশান্তি সৃষ্টি, বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, উগ্রতা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ইসলামে নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে ঘোষিত হয়েছে,

 وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا ۚ إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ“তোমরা পৃথিবীতে শান্তি স্থাপনের পর এতে বিপর্যয় সৃষ্টি কোরো না।” (সূরা আল-আরাফ, আয়াত: ৫৬)

আরও বলা হয়েছে, وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا وَاللَّـهُ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ“তারা (ইসলামের শত্রুরা) দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, আর আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সূরা আল মায়িদা, আয়াত: ৬৪)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনগণের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন,

 عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : انْصُرْ أَخَاكَ ظَالِمًا أَوْ مَظْلُومًا قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذَا نَنْصُرُهُ مَظْلُومًا فَكَيْفَ نَنْصُرُهُ ظَالِمًا قَالَ تَأْخُذُ فَوْقَ يَدَيْهِ. ( 3)

“তুমি তোমার ভাইকে সাহায্য করো, সে অত্যাচারী হোক অথবা অত্যাচারিত হোক! যদি সে অত্যাচারী হয়, তবে তাকে প্রতিরোধ করো, আর যদি সে অত্যাচারিত হয়, তবে তাকে সাহায্য (রক্ষা) করো।’ (4 )

শান্তি, সাম্য ও মানবিক ধর্ম ইসলাম মানুষের জানমাল রক্ষা করার জন্য সব ধরনের জুলুম, অন্যায় ও রক্তপাত নিষিদ্ধ করেছে। বিদায় হজের ভাষণে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ بَيْنَكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا، فِي شَهْرِكُمْ هَذَا، فِي بَلَدِكُمْ هَذَا “আজ এই পবিত্র দিনে (বিদায় হজের দিন) পবিত্র মাসে এবং পবিত্র (মক্কা) শহরে তোমাদের জন্য যেমন (যুদ্ধবিগ্রহ ও অপকর্ম করা) অবৈধ, তেমনিভাবে তোমাদের জান ও মাল বিনষ্ট করাও অবৈধ।' (5 )



নিরপরাধ মানুষ হত্যা ইসলামে মহা-অপরাধ:

===========================

মানবতা ও নৈতিকতার কোনো স্তরেই নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি ও অহেতুক রক্তপাতকে সমর্থন করা হয় না। হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য, প্রতিশোধ গ্রহণের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যারা নিরপরাধ মানুষ হত্যা করে তারা মানবতাবর্জিত ও সভ্যতার শত্রু। এ জন্য ইসলাম নিরপরাধ মানুষ হত্যা করাকে শিরকের পর বড় অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, عَنْ أَنَسٍ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. قَالَ : " أَكْبَرُ الْكَبَائِرِ الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ ، وَقَتْلُ النَّفْسِ ، وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ ، وَقَوْلُ الزُّورِ ، أَوْ قَالَ : وَشَهَادَةُ الزُّورِ “কবিরা গোনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় গোনাহ হলো আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা, নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা কথা বলা।'(6 ) 



ভয়ানক নরহত্যার জঘন্যতা ও হত্যাকারীর জন্য কঠোর শাস্তির কথা হাদিস শরিফেও উল্লেখ করা হয়েছে,  হাদিসে এসেছে : لَزَوَال الدُّنْيَا أَهْوَنُ عِنْدَ اللَّهِ من قَتْلِ رَجُلٍ مُسْلِمٍ (7 ) “দুনিয়া ধ্বংস করার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণ্যতর কাজ হলো মানুষ হত্যা করা।' ( 8)



কিয়ামতের দিন নরহত্যার বিচার করা হবে সবার আগে। তারপর অন্যান্য অপরাধের বিচার করা হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব এরশাদ করেন, عنْ عبدِ اللَّهِ بنِ مسعودٍ رَضِيَ اللَّهُ عنهُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَوَّلُ مَا يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، في الدِّمَاءِ ‘কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে মোকদ্দমার ফয়সালা হবে, তাহলো রক্তপাত (হত্যা) সম্পর্কিত।’ (9 )



মুসলমান সব সময় আল্লাহর রহমত ও ফেরেশতাদের পাহারায় বিচরণ করতে থাকে; কিন্তু সে অবৈধ হত্যায় লিপ্ত হলে আল্লাহর রহমত উঠে যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,  عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لَنْ يَزَالَ الْمُؤْمِنُ فِي فُسْحَةٍ مِنْ دِينِهِ، مَا لَمْ يُصِبْ دَمًا حَرَامًا ‏"‏‏.‏ “একজন প্রকৃত মুমিন তার দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ণ আজাদ ও প্রশান্ত থাকে, যে পর্যন্ত সে অবৈধ হত্যায় লিপ্ত না হয়।”(10 )



অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা কেবল বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনাই নয়; ইসলামের দৃষ্টিতে সেটা পুরো মানবজাতির বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক কাজ। পবিত্র কোরআনের ভাষায়,

مِنْ أَجْلِ ذَٰلِكَ كَتَبْنَا عَلَىٰ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنَّهُ مَن قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا ۚ وَلَقَدْ جَاءَتْهُمْ رُسُلُنَا بِالْبَيِّنَاتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِيرًا مِّنْهُم بَعْدَ ذَٰلِكَ فِي الْأَرْضِ لَمُسْرِفُونَ

“নরহত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে দুনিয়ার সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করল আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে প্রাণে রক্ষা করল। তাদের কাছে আমার নবী-রাসূলগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছেন। বস্তুতঃ এরপরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমাতিক্রম করে।” (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৩২)



অন্যায় হত্যার পরিণতি ভয়াবহ:

===================

নিরীহ মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার চেয়ে ভয়াবহ পাপ আর সমাজে নেই। ইসলামী শরিয়ত মতে পৃথিবীর সব মানুষ মিলে যদি একটি অন্যায় হত্যাকা- ঘটায়, তবে কিয়ামতের দিন সবাইকে জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, لَوْ أَنَّ أَهْلَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ اجْتَمَعُوا عَلَى قَتْلِ مُسْلِمٍ لَكَبَّهُمُ اللَّهُ جَمِيعًا عَلَى وُجُوهِهِمْ فِي النَّارِ “যদি আসমান ও জমিনের সব অধিবাসী একজন মুসলমানকে অন্যায়ভাবে হত্যার জন্য একমত হয়, তবে আল্লাহ তাদের সবাইকে অবশ্যই জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।” (11 ) (মুসনাদে আহমদ)



চূড়ান্ত বিচারের দিনে অন্যায় হত্যাকা-ের মোকদ্দমা দিয়েই বিচারকার্য শুরু হবে। হাদিস শরিফে এসেছে, ( 12) أَوَّلُ مَا يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، في الدِّمَاءِ “কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে মোকদ্দমার ফায়সালা হবে তা হলো, রক্তপাত বা হত্যা সম্পর্কিত।' (13 )



পবিত্র কোরআনে হত্যাকা-কে মহাপাপ সাব্যস্ত করে ইচ্ছাকৃতভাবে একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানকে হত্যা করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে জাহান্নামে শাস্তির কঠোর বিধান সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন:

 وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ أَن يَقْتُلَ مُؤْمِنًا إِلَّا خَطَأً ۚ وَمَن قَتَلَ مُؤْمِنًا خَطَأً فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ وَدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰ أَهْلِهِ إِلَّا أَن يَصَّدَّقُوا ۚ فَإِن كَانَ مِن قَوْمٍ عَدُوٍّ لَّكُمْ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ ۖ وَإِن كَانَ مِن قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُم مِّيثَاقٌ فَدِيَةٌ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰ أَهْلِهِ وَتَحْرِيرُ رَقَبَةٍ مُّؤْمِنَةٍ ۖ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ تَوْبَةً مِّنَ اللَّهِ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا

“কোনো মুমিনের জন্য সমীচীন নয় যে সে অন্য মুমিনকে হত্যা করবে, অবশ্য ভুলবশত করে ফেললে অন্য কথা। যে ব্যক্তি মুসলমানকে ভূলক্রমে হত্যা করে, সে একজন মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে এবং রক্ত বিনিময় সমর্পন করবে তার স্বজনদেরকে; কিন্তু যদি তারা ক্ষমা করে দেয়। অতঃপর যদি নিহত ব্যক্তি তোমাদের শত্রু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয়, তবে মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে এবং যদি সে তোমাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোন সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয়, তবে রক্ত বিনিময় সমর্পণ করবে তার স্বজনদেরকে এবং একজন মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে। অতঃপর যে ব্যক্তি না পায়, সে আল্লাহর কাছ থেকে গোনাহ মাফ করানোর জন্যে উপর্যুপুরি দুই মাস রোযা রাখবে। আল্লাহ, মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। আর কেউ স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম, সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন ও তাকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি  প্রস্তুত করে রেখেছেন।” (সুরা : আন-নিসা, আয়াত : ৯২-৯৩)



  يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا “কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুণ হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।” (সুরা : আল-ফুরকান : ৬৮-৬৯)



হাদিস শরিফে এসেছে :

يَجِيءُ الْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُتَعَلِّقٌ بِرَأْسِ صَاحِبِهِ – وفي لفظ : يَجِيءُ مُتَعَلِّقًا بِالْقَاتِلِ تَشْخَبُ أَوْدَاجُهُ دَمًا - يَقُولُ : رَبِّ سَلْ هَذَا لِمَ قَتَلَنِي؟( 14) “হত্যাকৃত ব্যক্তি কিয়ামতের দিবসে হত্যাকারীর মাথার অগ্রভাগ নিজ হাতে ধরে এমনভাবে নিয়ে আসবে যে হত্যাকারীর গলার রগসমূহ থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকবে। তখন হত্যাকৃত ব্যক্তি এ কথা বলতে বলতে হত্যাকারীকে আরশের কাছে নিয়ে আসবে 'হে প্রভু! তুমি তাকে জিঙ্গেস কর, সে কেন আমাকে হত্যা করেছে?।' ( )

একজন মানুষের মৌলিক মানবাধিকারের প্রাথমিক বিষয় তার জীবনের নিরাপত্তা ও বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা। অন্যকে নিরাপদ রাখা ও বাঁচতে দেওয়া নাগরিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে অন্যতম । একজন প্রকৃত মুসলমানের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সে কখনোই কোনো মানুষকে কষ্ট দেবে না, চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম। এজন্য একজন মুসলমানকে কষ্টে ফেলা যেমন মুসলমানের জন্য অবৈধ তদ্রূপ কোনো অমুসলিমকে অহেতুক উত্ত্যক্ত করা কিংবা কষ্টে নিপতিত করা একই রকম অবৈধ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرِحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ وَإِنَّ رِيحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا. “যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না, যদিও জান্নাতের ঘ্রাণ ৪০ বছরের পথের দূর থেকে পাওয়া যাবে।”(15 )



ইসলামে কিসাস  ব্যবস্থা:

==============

মানুষ হত্যা এড়ানোর জন্য ইসলামে কিসাস ও দিয়াত তথা হত্যার বদলা ও প্রতিশোধ গ্রহণের ব্যবস্থা রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى ۖ الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالْأُنثَىٰ بِالْأُنثَىٰ ۚ فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ ۗ ذَٰلِكَ تَخْفِيفٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَرَحْمَةٌ ۗ فَمَنِ اعْتَدَىٰ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَلَهُ عَذَابٌ أَلِيمٌ . وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কিছাছ গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, দাস দাসের বদলায় এবং নারী নারীর বদলায়। অতঃপর তার ভাইয়ের তরফ থেকে যদি কাউকে কিছুটা মাফ করে দেওয়া হয়,তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করবে এবং ভালভাবে তাকে তা প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের পালন কর্তার তরফ থেকে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ। এর পরও যে ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করে,তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। হে বুদ্ধিমানগণ! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার’।(বাক্বারা-১৭৯)



অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যার প্রতিরোধ করার জন্য ইসলাম চমৎকার বিচার ব্যবস্থার উদ্ভাবন ঘটিয়েছে। এই কিসাসের মধ্যে জীবন নিহিত আছে বলা হয়েছে অর্থাৎ কিসাস পদ্ধতির মাধ্যমে যে হত্যা এড়ানো যায়, মূলত: সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। আজকের বর্তমান পরিস্থিতিতেও খুনী যেই হোক না কেন কিসাস পদ্ধতি চালু করা হয় তাহলে অন্যায় হত্যা বন্ধ হতে বাধ্য হবে। আর সন্ত্রাস প্রতিরোধই ইসলামের এই কার্যকারী ভূমিকা। যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় জীবনীতে প্রতিষ্ঠা করে বিশ্ববাসীর জন্য চিরন্তন সত্য দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে গেছেন।



আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম যে, ইসলাম কখনই সন্ত্রাসবাদ ও অহেতুক মানব হত্যার অনুমতি প্রদান করে না বরং ইসলামে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা ও অবৈধ হত্যা করাকে হারাম করা হয়েছে। চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম। কেননা ইসলাম সর্বদাই মানুষের নিরাপত্তা বিধানের জন্য শান্তির পক্ষেই কথা বলে। সমাজে ফেতনা-ফ্যাসাদ, মানবিক বিপর্যয় ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করাকে হত্যার চেয়ে জঘন্যতম অপরাধ সাব্যস্ত করা হয়েছে।



মহান আল্লাহ পরিষ্কার ভাষায় বলেন: وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ ۚ“ফিতনা (সন্ত্রাস) হত্যা অপেক্ষা জঘন্য অপরাধ“ (বাক্বরা-১৯১)। ফিতনা অর্থাৎ সন্ত্রাসকে হত্যার চেয়েও জঘন্য ও নিকৃষ্ট অপরাধ বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আর এই ঘোষণা আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে ইসলামের প্রাথমিক যুগের ঘোষণা। কাজেই সন্ত্রাসবাদের সাথে ইসলামের সামান্যতম ও কোন বিন্দু পরিমাণ সম্পর্ক নেই। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে, وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا ۚ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ “তারা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, আল্লাহ ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের ভালোবাসেন না।” (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ৬৪)



মুসলমান হিসেবে প্রমাণ করতে চাইলে আমাদের যে সুনাগরিক হতে হবে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সে শিক্ষাই দিয়েছেন। মুসলমানদের হতে হবে শান্তি ও শৃঙ্খলার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। মহান আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ পালনকে অবশ্য কর্তব্য বলে ভাবতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রকৃত মুসলমান হওয়ার তৌফিক দান করুন।

وصلى الله على سيدنا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين. والحمد لله رب العالمين

=============================================

 1- المسند:ج২ص২২৪ر৭০৮৬ سنن النسائي:ج৮ص১০৪ر৪৯৯৫ البخاري في صحيحه [ج১/ص১১/برقم১০] مسلم [ج১/ص৪৭/برقم৬৪ - ( ৪০ )]

2 - বুখারী, ১/১১, হা-১০, মুসলিম,১/৪৭, হা-৪৬, নাসায়ী ৮/১০৪, হা-৪৯৯৫

 - رواه البخاري (২৪৪৪)

 3-  বুখারী, হা-২৪৪৪

4 - (বুখারি : ১৭৪১, মুসলিম : ১৬৭৯)

5 - (বুখারি : ৬৮৭১, মুসলিম : ৮৮)

 6- أخرجه : ابن ماجه ( ২৬১৯ ) من حديث البراء بن عازب رضي الله عنه

 7-  ইবনু মাজা, হা-২৬১৯

 8- رواه البخاري في الرقاق باب القصاص يوم القيامة (৬৫৩৩) ، ومسلم في القسامة (৩১৭৮) ، والترمذي في الديات ( ১৩১৭) ، والنسائي في تحريم الدم (৩৯২৮) ، وابن ماجه في الديات (২৬০৫) ، وأحمد (৩৪৯২)

 9- (বুখারি : ৬৮৬২)

 10-  المعجم الأوسط للطبراني গ্ধ بَابُ الْأَلِفِ গ্ধ مَنِ اسْمُهُ أَحْمَدُ رقم الحديث: ১৪৪৪

 11- رواه البخاري في الرقاق باب القصاص يوم القيامة (৬৫৩৩) ، ومسلم في القسامة (৩১৭৮) ، والترمذي في الديات ( ১৩১৭) ، والنسائي في تحريم الدم (৩৯২৮) ، وابن ماجه في الديات (২৬০৫) ، وأحمد (৩৪৯২)

12 - (বুখারি : ৬৩৫৭)

13 - (মুসনাদে আহমদ : ২৫৫১, তিরমিজি : ২৯৫৫)

14- رواه ابن ماجه في الديات باب هل لقاتل مؤمن توبة (২৬১১) ، والنسائي في تحريم الدم (৩৯৩৪) ، وأحمد (১৮৪০) ، وصححه الألباني في صحيح ابن ماجه

 15- (বোখারি৩১৬৬)

Top