তাফসীরঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, প্রসঙ্গ- শানে রিসালাত, মীলাদ বা আবির্ভাব।

<p dir="ltr">তাফসীরঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, প্রসঙ্গ- শানে রিসালাত, মীলাদ বা আবির্ভাব।</p><p dir="ltr">সউদি বাদশাহের অর্থায়নে মুদ্রিত ও অনুমোদন কৃত দেওবন্দের অন্যতম আকাবীর মুফতী মাওলানা মুহাম্মদ শফীর তাফসীরকৃত ও অপর আকাবীর মাসিক মদিনা পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ মহিউদ্দীন খানের অনূদিত তাফসীরে মাআরেফুল কোরআন এর সংক্ষিপ্ত তাফসীর সংষ্করণ থেকে সংগৃহীত।</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আন্ নুরের তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ৯৪৪-৯৪৫-এ "নবী করিম (সাঃ)-এর নুর" শিরোনামের আলোচনায় রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"ইমাম বগাভী বর্ণিত এক রেওয়ায়েতে আছে, একবার হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) কা'ব আহবারকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এই আয়াতের তাফসীরে আপনি কি বলেন? কা'ব অাহবার তাওরাত ও ইঞ্জিলে সুপণ্ডিত মুসলমান ছিলেন। তিনি বললেনঃ এটা রসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর পবিত্র অন্তরের দৃষ্টান্ত। মিশ্কাত তথা তাক মানে তাঁর বক্ষস্থল, زُجَاجَةٍ তথা কাঁচপাত্র মানে তাঁর পুতঃপবিত্র অন্তর এবং مِصْبَاحٌ তথা প্রদীপ মানে নুবুয়্যাত। এই নুবুয়্যাতরুপি নুরের বৈশিষ্ট্য এই যে, প্রকাশিত ও ঘোষিত হওয়ার পূর্বেই এতে মানবমণ্ডলীর জন্যে আলো ও ঔজ্জল্য ছিল। এরপর ওহী ও ঘোষণা এর সাথে সংযুক্ত হলে এটা এমন নুরে পর্যবসিত হয়, যা সমগ্র বিশ্বকে আলোকজ্জল করে দেয়।<br>রসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর নুবুওয়াত প্রকাশ বরং তাঁর জন্মেরও পূর্বে তাঁর নুবুওয়াতের সুসংবাদবাহী অনেক অত্যাশ্চর্য ঘটনা পৃথিবীতে সংঘটিত হয়েছে। হাদীসবিদগণের পরিভাষায় এসব ঘটনাকে 'এরহাসাত' বলা হয়। কেননা, 'মুজেযা' শব্দটি বিশেষভাবে এমন ঘটনাবলী বোঝাবার জন্যে প্রয়োগ করা হয়, যেগুলো নবুওয়তের দাবীর সত্যতা প্রকাশ করার জন্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন পয়গম্বরের হাতে প্রকাশিত হয়। পক্ষান্তরে নবুওয়ত দাবীর পূর্বে এ ধরনের অনেক অত্যাশ্চর্য ঘটনা প্রকাশ পেলে তার নাম দেয়া হয় 'এরহাসাত'। এ ধরনের অনেক অত্যাশ্চর্য ঘটনা সহীহ্ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে। শায়খ জালালুদ্দীন সুয়ূতি (রঃ) 'খাসায়েসে কোবরা' গ্রন্থে, অাবু নায়ীম 'দালায়েল-নবুওয়াত' গ্রন্থে এবং অন্যান্য আলেমগণও স্বতন্ত্র গ্রন্থাদিতে এসব ঘটনা সন্নিবেশিত করেছেন। তাফসীরে মাযহারীতেও অনেক তথ্য বর্ণিত হয়েছে।"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আন্ নুরের তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ৯৪৪-৯৪৫-এ "নবী করিম (সাঃ)-এর নুর" শিরোনামের আলোচনা।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, আয়াত ৭-এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ১০৭২-এ ডান কলামে লাইন ২৩ থেকে লাইন ২৯-এ রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">" وَمِنكَ وَمِن نُّوح- <br>সাধারণভাবে সমস্ত নবীগণের কথা উল্লেখের পর পাঁচ জনের নাম বিশেষভাবে এজন্য উল্লেখ করা হয়েছে যে, নবীকূলের মধ্যে তাঁরা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও উচ্চ মর্যাদার অধিকারী। এঁদের মধ্যে রসুলে মকবুল (সাঃ)-এর আবির্ভাব সকলের শেষে হয়ে থাকলেও وَمِنك শব্দের মাধ্যমে নবীজীকে সর্বাগ্রে উল্লেখ করা হয়েছে। যার কারণ হাদীসে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছেঃ আমি (নবীকূলের মাঝে) সৃষ্টিগত দিক দিয়ে আগে, কিন্তু আবির্ভাব ও নবুওয়াত প্রাপ্তির দিক দিয়ে সকলের পরে।-(মাযহারী)<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, আয়াত ৭-এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ১০৭২-এ ডান কলামে লাইন ২৩ থেকে লাইন ২৯।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আল-আনআম, পৃষ্ঠা ৪২৮, ডান কলামে লাইন ৮ থেকে লাইন ১৫-এ রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"আর আমি সর্বপ্রথম মুসলমান। উদ্দেশ্য এই যে, এ উম্মতের মধ্যে সর্বপ্রথম মুসলমান আমি। কেননা, প্রত্যেক উম্মতের প্রথম মুসলমান স্বয়ং ঐ পয়গম্বরই হন যাঁর প্রতি ওহী অবতরণ করা হয়। প্রথম মুসলমান হওয়া দ্বারা এদিকেও ইঙ্গিত হতে পারে যে, সৃষ্টজগতের মধ্যে সর্বপ্রথম রসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর নুর সৃষ্টি করা হয়েছে। এরপর সমস্ত নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও অন্যান্য সৃষ্টজগত অস্থিত্ব লাভ করেছে। এক হাদীসে বলা হয়েছেঃ<br>আল্লাহ্ তাআলা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন।- (রুহুল-মা'আনী)<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আল-আনআম, পৃষ্ঠা ৪২৮, ডান কলামে লাইন ৮ থেকে লাইন ১৫।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা বাকারাহ-এর তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ৬৪ এর বাম কলামে "রসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর জন্মের বৈশিষ্ট্য" শিরোনামের আলোচনায় রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"রসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর জন্মের বৈশিষ্ট্যঃ মুসনাদে আহমদ গ্রন্থে উদ্ধৃত এক হাদীসে বর্ণিত আছে যে, মহানবী (সাঃ) বলেনঃ 'আমি আল্লাহর কাছে তখনও পয়গম্বর ছিলাম, যখন আদম (আঃ)-ও পয়দা হয়নি; বরং তাঁর সৃষ্টির জন্য উপাদান তৈরি হচ্ছিল মাত্র। আমি আমার সূচনা বলে দিচ্ছিঃ আমি পিতা হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর দোয়া, ঈসা (আঃ)-এর সুসংবাদ এবং স্বীয় জননীর স্বপ্নের প্রতীক। ঈসা (আঃ)-এর সুসংবাদের অর্থ তাঁর এ উক্তি وَمُبَشِّرًا بِرَسُولٍ يَأْتِي مِن بَعْدِي اسْمُهُ أَحْمَدُ (আমি এমন এক পয়গম্বরের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আসবেন। তাঁর নাম আহমদ। ৬১/৬।) তাঁর জননী গর্ভাবস্থায় স্বপ্নে দেখেন যে, তাঁর পেট থেকে একটি নুর বের হয়ে সিরিয়ার প্রাসাদসমূহ আলোকোজ্জল করে তুলেছে। কোরআনে হুযুর (সাঃ)-এর আবির্ভাবের আলোচনা প্রসঙ্গে দু'জায়গায় সুরা আলে-ইমরানের ১৬৪ তম আয়াতে এবং সুরা জুমু'আয় ইবরাহীমের দোয়ায় উল্লেখিত ভাষারই পূনরাবৃত্তি করা হয়েছে। এভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) যে পয়গম্বরের জন্যে দোয়া করেছিলেন, তিনি হচ্ছেন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ)।"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা বাকারাহ-এর তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ৬৪-এর বাম কলামে "রসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর জন্মের বৈশিষ্ট্য" শিরোনামের আলোচনা।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আল আহজাবের তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ১০৮৮-এ বাম কলামের লাইন ২৬ থেকে লাইন ৩৮-এ রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"سراج<br>অর্থ প্রদীপ منير অর্থ জোতির্ময়। রসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর পঞ্চম গুণ ও বৈশিষ্ট্য এই বলা হয়েছে যে, তিনি জোতিষ্মান প্রদীপ বিশেষ। আবার কতক মনিষী سراج منير এর মর্মার্থ কোরআন পাক বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কোরআন পাকের বর্ণনাধারা ও প্রকাশভংগী দ্বারা এই কথায় বোঝা যায় যে, ইহাও হযরত (সাঃ)-এরই বৈশিষ্ট্য ও গুণ বিশেষ।<br>কোরআনে বর্ণিত রসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর এই গুণাবলী তাওরাতেও উল্লেখ রয়েছে। যেমন, ইমাম বুখারী (রঃ) উদ্ধৃত করেছেন যে, হযরত আতা ইবনে ইয়াসার (রাঃ) এরশাদ করেন যে, আমি একদিন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আসের (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে অনুরোধ করলাম যে, তাওরাতে রসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর যেসব গুণাবলীর উল্লেখ রয়েছে মেহেরবাণী পূর্বক আমাকে সেগুলো বলে দিন। তিনি এরশাদ করলেন, আমি তা অবশ্যই বলবো। আল্লাহর কসম! রসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর যেসব গুণাবলীর বর্ণনা কোরআনে রয়েছে তা তাওরাতেও রয়েছে।"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আল আহজাবের তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ১০৮৮-এ বাম কলামের লাইন ২৬ থেকে লাইন ৩৮।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা ইউনুস, আয়াত ৯৩ এর তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ৬১৬-এ ডান কলামের লাইন ২০ থেকে শেষ লাইন পর্যন্ত রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"বিস্ময়ের বিষয় যে, মহানবী (সাঃ)-এর আবির্ভাবের পূর্বে তো এরা শেষ নবীর উপর বিশ্বাস পোষণ করত, তার নিদর্শনসমূহ ও তাঁর আগমনের সময় নিকটবর্তী হওয়ার সংবাদ লোকদেরকে বলত, নিজেরাও দোয়া করতে গিয়ে শেষ যামানার নবীর ওসীলা দিয়ে দোয়া করত, কিন্তু যখন শেষ যমানার নবী (সাঃ) তাঁর যাবতীয় প্রমাণাদি এবং তওরাতের বাতলানো নিদর্শনসহ আগমন করলেন, তখন এরা পরষ্পর মতবিরোধ করতে লাগল এবং কিছু লোক ঈমান আনলেও অন্যান্য সবাই অস্বীকার করল। এ আয়াতে রাসুলে কারিম (সাঃ)-এর আগমনকে جَاءَهُمُ الْعِلْم শব্দে ব্যক্ত করা হয়েছে। এখানে ُ الْعِلْم বলতে 'নিশ্চিত বিশ্বাস'ও উদ্দেশ্য হতে পারে। তাহলে অর্থ হবে এই যে যখন প্রত্যক্ষ করার সাথে সাথে বিশ্বাসের উপকরণসমূহ সংযোজিত হয়ে গেল, তখন তারা মতবিরোধ করতে লাগল।<br>কোন কোন তাফসীরবিদ একথাও বলেছেন যে, এখানে الْعِلْم অর্থ যখন সে সত্তা সামনে এসে উপস্থিত হল, যা তওরাতে ভবিষ্যদ্বাণীর মাধ্যমে পূর্বাহ্নেই জানা ছিল, তখন তারা মতবিরোধ করতে আরম্ভ করল।"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা ইউনুস, আয়াত ৯৩ এর তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ৬১৬-এ ডান কলামের লাইন ২০ থেকে শেষ লাইন পর্যন্ত।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, পৃষ্ঠা ৩০২-এ ডান কলামের লাইন ১ থেকে লাইন ৮ পর্যন্ত রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"আলোচ্য আয়াত نور (নুর) শব্দ দ্বারা কোরআন শরীফকে বোঝানো হয়েছে।-(রুহুল-মা'আনী) যেমন, সুরা মায়েদার আয়াত قَدْ جَاءكُم مِّنَ اللّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ অর্থাৎ, তোমাদের কাছে আল্লাহ্ তাআলার পক্ষ থেকে এক উজ্জল আলো তথা এক প্রকৃষ্ট কিতাব অর্থাৎ, কোরআন এসেছে।- (বয়ানুল কোরআন)<br>আবার নুর অর্থ রসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এবং কিতাব অর্থ আল-কোরআনও হতে পারে।- (রুহুল মা'আনী) তবে তার অর্থ এই নয় যে, রসুলুল্লাহ্ (সাঃ) মানবীয় দৈহিকতা থেকে পবিত্র শুধু নুর ছিলেন।"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, পৃষ্ঠা ৩০২-এ ডান কলামের লাইন ১ থেকে লাইন ৮ পর্যন্ত।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আত্ তাগাবুনের তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ১৩৭৭-এ ডান কলামের লাইন ২৩ থেকে লাইন ২৬ এ রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"মানব হওয়া নবুওয়তেরও পরিপন্থী নয় এবং রেসালাতের উচ্চ মর্যাদারও প্রতিকূল নয়। রসুল (সাঃ) নুর হলেও মানব হতে পারেন। তিনি নুরও এবং মানবও। তাঁর নুরকে প্রদীপ, সূর্য ও চন্দ্রের নুরের নিরীখে বিচার করা ভুল।"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আত্ তাগাবুনের তাফসীর প্রসঙ্গে পৃষ্ঠা ১৩৭৭-এ ডান কলামের লাইন ২৩ থেকে লাইন ২৬।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা বনী ইসরাঈলের তাফসীর প্রসঙ্গে পৃৃষ্ঠা ৭৯৩-এ বাম কলামের লাইন ২ থেকে লাইন ৫-এ রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"প্রশ্ন হয় যে, রসুল ও উম্মতের সমজাতি হওয়া যখন শর্ত, রসুলুল্লাহ্ (সাঃ) জ্বিন জাতির রসুল নিযুক্ত হলেন কিরুপে! জ্বিন তো মানুষের সমজাতি নয়। উত্তর এই যে, রসুল শুধু মানবই নন; বরং তিনি ফেরেশ্তাসূলভ ব্যক্তিত্ব এবং মর্যাদারও অধিকারী  এ কারণে তাঁর সাথে জ্বিনদেরও সম্পর্ক থাকতে পারে।"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা বনী ইসরাঈলের তাফসীর প্রসঙ্গে পৃৃষ্ঠা ৭৯৩-এ বাম কলামে লাইন ২ থেকে লাইন ৫।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আল্ মুনাফিকুন এর তাফসীর প্রসঙ্গে পৃৃষ্ঠা ১৩৭১-এ রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"কা'ব ইবনে লুবাই রসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর পূর্বপুরুষদের অন্যতম। আল্লাহ্ তায়ালা মুর্খতাযুগেও তাঁকে প্রতিমা পুঁজা থেকে রক্ষা করেন এবং একত্ববাদের বিশ্বাস রাখার তৌফীক দান করেন। তিনি রসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর আবির্ভাবের সুসংবাদও মানুষকে শুনিয়েছিলেন। কোরাইশ গোত্র তাঁকে একজন মহান ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করত। ফলে রসুলুল্লাহ্ (সাঃ) নবুওয়ত লাভের পাঁচশত ষাট বছর পূর্বে যেদিন তাঁর মৃত্যু হয়, সেদিন থেকেই কোরাইশরা তাদের বছর গণনা শুরু করে। শুরুতে কা'বা গৃহের ভিত্তি স্থাপন থেকে আরবদের বছর গণনা আরম্ভ করা হত। কা'ব ইবনে লুবাই- এর মৃত্যুর পর তাঁর মৃত্যুদিবস থেকেই বছর গণনা প্রচলিত হয়ে যায়। এরপর রসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর জন্মের বছর যখন হস্তিবাহিনীর ঘটনা সংঘটিত হয়, তখন এদিন থেকেই তারিখ গণনা আরম্ভ হয়। সারকথা এই যে, ইসলাম পূর্বকালেও কা'ব ইবনে লুবাই -এর আমলে শুক্রবার দিনকে গুরুত্ব দান করা হত। তিনিই এই দিনের নাম জুমুআর দিন রেখেছিলেন।- (মাযহারী)"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, সুরা আল্ মুনাফিকুন এর তাফসীর প্রসঙ্গে পৃৃষ্ঠা ১৩৭১।]</p><p dir="ltr">তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, পৃষ্ঠা ২১৫-এ "মহানবী (সঃ)-এর আগমন সমগ্র মানবতার জন্য সর্ববৃহৎ অনুগ্রহ" শিরোনামের আলোচনায় রয়েছেঃ</p><p dir="ltr">"মহানবী (সঃ)-এর আগমন সমগ্র মানবতার জন্য সর্ববৃহৎ অনুগ্রহঃ  لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ আয়াতে বর্ণিত বিষয়বস্তুর প্রায় অনুরূপ বিষয়েরই একটি আয়াত সূরা বাক্বারায় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ আয়াতে একটি শব্দ অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে-<br>لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ<br>এ প্রসঙ্গে প্রথম লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, কুরআন কারীমের বিশ্লেষণ অনুযায়ী মহানবী (সঃ) হচ্ছেন সমগ্র বিশ্বের জন্য সবচাইতে বড় নেয়ামত ও মহা অনুগ্রহ। কিন্তু এখানে এই আয়াতে শুধুমাত্র মু’মিনেদের জন্য নির্দিষ্ট করাটা কুরআনের অন্যান্য আয়াতের মাধ্যমে কুরআন সমগ্র বিশ্বের জন্য হিদায়াত হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত থাকা সত্ত্বেও هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ বলারই অনুরূপ যে, কোন কোন ক্ষেত্রে তাকে মুত্তাকীনেদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তার কারণ, উভয় ক্ষেত্রেই এক। তা হল এই যে, যদিও রসূলে মকবূল (সঃ)-এর অস্তিত্ব মু’মিন-কাফের নির্বিশেষে সমগ্র বিশ্বের মহা নেয়ামত এবং বিরাট অনুগ্রহ, তেমনিভাবে কুরআন কারীমও সমগ্র বিশ্ব-মানবতার জন্য হিদায়াত, কিন্তু যেহেতু এই হিদায়াত ও নেয়ামতের ফল শুধু মু’মিন-মুত্তাকীরাই উপভোগ করছে, সেহেতু কোন কোন স্থানে একে তাঁদেরই সাথে সম্পৃক্ত করে বর্ণনা করা হয়েছে।"<br>[সূত্রঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, পৃষ্ঠা ২১৫-এ "মহানবী (সঃ)-এর আগমন সমগ্র মানবতার জন্য সর্ববৃহৎ অনুগ্রহ" শিরোনামের আলোচনা।]<br>__________<br>তাফসীরে মাআরেফুল কুরআনের Apps-টি ডাউনলোড নিনঃ<br>https://play.google.com/store/apps/details?id=com.uniquebanglaapps.tafsir_maariful_quran_bangla</p>

তাফসীরঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, প্রসঙ্গ- শানে রিসালাত, মীলাদ বা আবির্ভাব।

তাফসীরঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, প্রসঙ্গ- শানে রিসালাত, মীলাদ বা আবির্ভাব। সউদি বাদশাহের অর্থায়নে মুদ্রিত ও অনুমোদন কৃত দেওবন্দের অন্যতম আকাব...

Read more »

নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) কে আমাদের মত মানুষ বলা কাফেরদের স্বভাব।

<p dir="ltr" style="text-align: justify;">নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) কে আমাদের মত মানুষ বলা কাফেরদের স্বভাব।</p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">প্রশ্ন : নিম্নোক্ত আলোচনার ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহ’র আলোকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘য়াতের বক্তব্য কি? উল্লেখ্য যে, আমি নিজে সুন্নী মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং এ বক্তব্যটি জনৈক মুফতি সিরাজী সাহেবের একটি লেখা থেকে নেয়া।</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তা‘য়ালা মানব জাতীকে মাটি থেকে, জিন জাতিকে আগুন থেকে এবং ফেরেশতাদেরকে নূর থেকে সৃষ্টি করেছেন। মানুষ মাটির তৈরী এ কথা পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে। মহানবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও মানুষ ছিলেন কিন্তু মহামানব। তবে অনেকেই বিশ্বাস করে আল্লাহ’র রাসূল আল্লাহ’র জাতী নূরের সৃষ্টি, অথচ কুরআন-সুন্নাহ বলছে তিনি মাটি থেকে সৃষ্টি। সাধারণভাবে চিন্তা করলে বুঝা যাবে যে, নবীজীর পিতা-মাতা মানুষ ছিলেন। আবার বুঝা যাবে মানুষ থেকে মানুষই সৃষ্টি হয়। অনুরূপ পূর্ববর্তী সকল নবীগণও মানুষ ছিলেন, তেমনি নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও মানুষ। তবে মর্যাদার দিক দিয়ে তিনি সবার উর্ধ্বে এবং ওনার সীরত সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বিশদ বিবরণ রয়েছে।</div><div style="text-align: justify;">নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) কিসের তৈরী সে ব্যাপারে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহ বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">ولقد خلقنا الانسان من صلالة من طين</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, আমিতো মানুষকে সৃষ্টি করেছি মৃত্তিকা মূল উপাদান হতে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মু’মিনূন : ১২।]</div><div style="text-align: justify;">আর তিনিও যেহেতু মানুষ তাই স্বাভাবিকভাবেই তিনিও মাটির তৈরী।</div><div style="text-align: justify;">পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণও যে মানুষ ছিলেন এ মর্মে কুরআন থেকে দলীল:</div><div style="text-align: justify;">(১) নূহ আলাইহিস সলিাম সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فقال الملأ الذين كفروا من قومه ما ترك الا بشرا مثلنا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তার সম্প্রদায়ের প্রধানেরা যারা কাফের ছিল, তারা বলল, আমরাতো তোমাকে আমাদের মতই মানুষ ব্যতীত আর কিছুই দেখিনা।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা হুদ : ২৭।]</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">(২) আল্লাহ তা‘য়ালা আরো বলেন-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قالت رسلهم أفي الله شك فاطر السموات والارض يدعوكم ليغفرلكم من ذنوبكم ويوخركم الي اجل مسمى قالوا ان انتم الا بشر مثلنا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তাদের রাসূলগণ বলেছিলেন, আল্লাহ সম্বন্ধে কি সন্দেহ আছে, যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর স্রষ্টা? তিনি তোমাদেরকে আহবান করেন তোমাদের পাপ মার্জনা করার জন্য এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদেরকে অবকাশ দেবার জন্য? তারা বলত, তোমরাতো আমাদের মতই মানুষ।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা ইব্রাহীম : ১০।]</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">(৩) আল্লাহ তা‘য়ালা আরও বলেন-</div><div style="text-align: justify;">قالت لهم رسلهم ان نحن الا بشر مثلكم</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তাদের রাসূলগন তাদেরকে বলেছিলেন, নিশ্চয় আমরা তোমাদের মত মানুষ।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা ইব্রাহীম : ১১।]</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">(৪) আল্লাহ পাক আরও ইরশাদ করেন-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">وما منع الناس ان يومنوا ان جاءهم الهدى الا ان قالوا ابعث الله بشرا رسولا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, যখন তাদের নিকট আসে পথ-নির্দেশ, তখন লোকদেরকে এই উক্তিই বিশ্বাস স্থাপন হতে বিরত রাখে যে, আল্লাহ কি মানুষকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন!</div><div style="text-align: justify;">[সূরা বনী ইসরাইল : ৯৪।]</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">(৫) আল্লাহ আরো বলেন-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">واسروا النجوى الذين ظلموا اهل هذا الا بشر مثلكم</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, যারা জালিম তারা গোপনে পরামর্শ করে, এতো তোমাদের মত একজন মানুষই।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা আম্বিয়া : ৩।]</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">(৬) আল্লাহ ইরশাদ করেন-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فقال الملأ الذين كفروا من قومه ما ترك الا بشرا مثلنا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তার সম্প্রদায়ের প্রধানেরা যারা কাফের ছিল, তারা বলল, আমরাতো তোমাকে আমাদের মতই মানুষ ব্যতীত আর কিছুই দেখিনা।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মু’মিনূন : ২৪।]</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">(৭) আল্লাহ বলেন-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">وقال الملأ من قومه الذين كفروا وكذبوا بلقاء الاخرة واترفناهم فى الحياة الدنيا ماهذا الا بشر مثلكم يأكل مما تأكلون منه و ويشرب مما تشربون ولئن اطعتم بشرا مثلكم انكم اذا لخاسرون</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, সম্প্রদায়ের প্রধানগণ, যারা কুফুরী করেছিল ও আখিরাতের সাক্ষাতকারকে অস্বীকার করেছিল এবং যাদেরকে আমি দিয়েছিলাম পার্থিব জীবনে প্রচুর ভোগ-সম্ভার, তারা বলেছিল, এতো তোমাদের মত একজন মানুষ, তোমরা যা আহার করো সেও তাই করে এবং তোমরা যা পান কর সেও তাই পান করে। যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর, তবে তোমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মু’মিনূন : ৩৩, ৩৪।]</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">(৮) মূসা ও হারুন সম্পর্কে এসেছে-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فقالوا أنومن لبشرين مثلنا وقومهما لنا عابدون</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তারা বলল, আমরা কি এমন দু’ ব্যক্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করব, যারা আমাদের মত মানুষ এবং তাদের সম্প্রদায় আমাদের দাসত্ব করে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মু’মিনূন : ৪৭।]</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">(৯) ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">ان مثل عيسى عند الله كمثل ادم خلقه من تراب</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, নিশ্চয় আল্লাহ’র নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের অনুরূপ; তিনি তাঁকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা আলে ইমরান : ৫৯।]</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীর মোবারক কিসের তৈরী এ সম্পর্কে কুরআনের দলীল:</div><div style="text-align: justify;">(১) আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قل سبحان ربى هل كنت الا بشرا رسولا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, বলুন, পবিত্র মহান আমার প্রতিপালক! আমিতো শুধু একজন মানুষ, একজন রাসূল।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা বনী ইসরাইল : ৯৩।]</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">(২) আল্লাহ তা‘য়ালা আরো বলেন-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قل انما انا بشر مثلكم يوحى الى انما الهكم اله واحد فمن كان يرجو لقاء ربه فليعمل عملا صالحا ولا يشرك بعبادة ربه احدا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, বলুন, আমি তোমাদেরই মত একজন মানুষ, আমার নিকট ওহী আসে, তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে তার রবের সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে সে যেন নেক আমল করে এবং তার রবের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা কাহাফ : ১১০।]</div><div style="text-align: justify;">প্রমানিত হল যে, সকল নবীগণ এবং আমাদের নবীও মাটির তৈরী মানুষ।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">জবাব :</div><div style="text-align: justify;">নবীগনকে আমাদের মত মানুষ বলা মূলতঃ কাফেরদেরই প্রথা। যেমন, ‘সূরা ইয়াসীন’-এর ১৫ নং আয়াতে এসেছে-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قالوا ما انتم الا بشر مثلنا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তারা (কাফেররা) বলত, তোমরা (নবীগণ) আমাদের মতই মানুষ ছাড়া অন্য কিছু নও। অনুরূপ আরো আয়াতে রয়েছে। যেমন-</div><div style="text-align: justify;">(১) সূরা হুদ : ১০</div><div style="text-align: justify;">(২) সূরা ইবরাহীম : ১০</div><div style="text-align: justify;">(৩) সূরা বনী ইসরাইল : ৯৪</div><div style="text-align: justify;">(৪) সূরা আম্বিয়া : ৩</div><div style="text-align: justify;">(৫) সূরা মু’মিনূন : ২৪</div><div style="text-align: justify;">(৬) সূরা মুমিনূন : ৩৪</div><div style="text-align: justify;">(৭) সূরা মু’মিনূন : ৪৭; প্রভৃতি।</div><div style="text-align: justify;">এখন শুনুন কথিত মুফতি সাহেবের উদৃতিগুলোর জবাব:</div><div style="text-align: justify;">প্রথমত,</div><div style="text-align: justify;">সকল মানুষই সরাসরি মাটি থেকে সৃষ্টি নয়, সেখানে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কি করে মাটির তৈরী বলে প্রমান করা যাবে? একমাত্র হযরত বাবা আদম আলাইহিস সালামই হলেন সরাসরি মাটি হতে সৃষ্টি। হযরত মা হাওয়া হলেন বাবা আদমের বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম হযরত জিব্রাইল-এর ফুৎকারে সৃষ্টি। আমরা হলাম নুতফা বা বীর্য হতে সৃষ্টি। আর এ নুতফা যেহেতু রক্ত হতে আর রক্ত মাটিতে উৎপাদিত খাদ্য সামগ্রী হতে সৃষ্টি হয়, সে হিসেবে নুতফার মূল নির্যাস মাটি হতে সাব্যস্ত হয়। আর আল্লাহ পাক এ আয়াতেও তাই বলেছেন যে-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">ولقد خلقنا الانسان من صلالة من طين</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, আমিতো মানুষকে সৃষ্টি করেছি মৃত্তিকা মূল উপাদান হতে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মু’মিনূন : ১২।]</div><div style="text-align: justify;">অনুরূপ অন্য আয়াতে এসেছে-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فَإِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি মাটি হতে অতঃপর বীর্য হতে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা হাজ্জ্ব : ৫।]</div><div style="text-align: justify;">আর কারো শানে ‘বাশার’ শব্দের ব্যবহার হলেই প্রমান হয়না যে, সে মাটি হতে সৃষ্টি। যেমন, হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম-এর ব্যাপারেও ‘বাশার’ শব্দটি কুরআনে ব্যবহার হয়েছে। কুরআন পাকে এসেছে-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فتمثل لها بشرا سويا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, আর সে তার নিকট পূর্ণ ‘বাশার’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মারইয়াম : ১৭।]</div><div style="text-align: justify;">সরকারে দু’ আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ব্যাপারে একথা কোথাও নেই যে, তিনি মাটি হতে সৃষ্টি, বরং ‘বাশার’ শব্দটিই ব্যবহার হয়েছে। আর নবী পাক (صلى الله عليه و آله وسلم)এর ‘বাশারিয়াত’ তথা মানবাকৃতির কথা কেউ অস্বীকারও করেনা। তিনি জাতীতে নূর অর্থাৎ, তাঁর প্রকৃত সত্ত্বা নূর হওয়া সত্ত্বেও মানবরূপ বিশিষ্ট ছিলেন এবং মানবীয় পূর্ণতা সহকারেই এ পৃথিবীতে আগমন করেছেন এবং এ কারণেই তিনি আমাদের মত পানাহার করেছেন, বিবাহ করেছেন, সন্তানাদী হয়েছে এবং মাতা-পিতার মাধ্যমে এ ধরাধামে আগমন করেছেন। এ মানবীয়তা এবং মানবীক গুণাবলী তাঁর অন্যতম মু‘জেযারই বহিঃপ্রকাশ। আর এ বিষয়গুলো নূর হওয়ারও প্রতিবন্ধকতা নয়। যেমন হারুত-মারুত উভয়ই ফেরেশতা এবং নূরের তৈরী। কিন্তু যখন তাঁদেরকে মানবীয় আকৃতি এবং গুণাবলী দিয়ে পাঠানো হয়েছে তখন তাঁদের পানাহার, পোষাক-পরিচ্ছেদ, এবং সহবাসেরও প্রয়োজন হয়েছে। হযরত আযরাইল আলাইহিস সালাম হযরত মূসা নবীর দরবারে যখন মানবাকৃতি নিয়ে আসলেন মূসা নবীর থাপ্পরে তাঁর চক্ষু খসে পড়েছিল। তখনও এ ফেরেশতারা নূরই ছিলেন, এমনটি নয় যে, মানবাকৃতি ধারন করার কারনে তখন তাঁরা মাটিরই মানুষ হয়ে গিয়েছিলেন। এগুলোর কোনটিই তাঁদের নূরানিয়াত অস্বীকার করে না।</div><div style="text-align: justify;">অতএব নবীয়ে কায়েনাত হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্ষেত্রে মানব রূপ বিশিষ্ট হওয়ায় তিনি কি করে মাটির তৈরী মানুষ হয়ে যাবেন, যার প্রকৃত সত্ত্বা সমস্ত সৃষ্টি এমনকি মাটি সৃষ্টিরও পূর্বে নূর হতেই আল্লাহপাক সৃষ্টি করেছেন! আর হযরত আদম আলাইহিস সালাম ব্যতিত মানব জাতির কেউই সরাসরি মাটির নন।</div><div style="text-align: justify;">দ্বিতীয়ত,</div><div style="text-align: justify;">এখানে কথিত মুফতী সাহেব পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণকে মানুষ প্রমান করার জন্য পবিত্র কুরআন কারীম থেকে ৯টি আয়াতে কারীমা তুলে ধরেছেন। আসলে নবীগণকে মানুষ বলার জন্য আদা-জল খেয়ে এভাবে ব্যর্থ চেষ্টায় নামলেন কেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়।</div><div style="text-align: justify;">মুফতী সাহেবের উল্লেখিত একটি আয়াত দ্বারাও প্রমাণিত হয় না যে, পূর্ববর্তী নবীগণ আমাদের মত মানুষ ছিলেন; যদিও আহলুস সুন্নাহ’র সকল উলামাগণ এ ব্যাপারে একমত যে, পূর্ববর্তী সকল নবীগণ মূলতঃ মানুষই ছিলেন, তবে সাধারণ মানুষের মত ছিলেন না। কোন মুসলমানই তা অস্বীকার করছে না। তথাপিও এ নিয়ে বিভ্রান্ত্রি ছড়ানোর অন্তর্নিহিত রহস্য কি নবীগণের প্রতি জনসাধারণকে বিতশ্রদ্ধ করা এবং ইসলাম বিদ্বেষীদেরকে উসকানী দেয়া নয়?</div><div style="text-align: justify;">যাই হোক, নিম্নে তার উল্লেখিত আয়াতে কারীমাগুলোর সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা পেশ করা হল। যাতে এ কথাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, নবীগণকে আমাদের মত মানুষ বলে জপ করা মূলতঃ কাফেরদেরই অভ্যাস।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">১নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">হযরত নূহ আলাইহিস সালাম সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فقال الملأ الذين كفروا من قومه ما ترك الا بشرا مثلنا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তার সম্প্রদায়ের প্রধানেরা যারা কাফের ছিল, তারা বলল, আমরাতো তোমাকে আমাদের মতই মানুষ ব্যতীত আর কিছুই দেখিনা।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা হুদ : ২৭।]</div><div style="text-align: justify;">এখানে বলা হয়েছে যে, কাফেররা হযরত নূহ আলাইহিস সালামকে তাদের মতই মানুষ বলত।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">২নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তা‘য়ালা আরো বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قالت رسلهم أفي الله شك فاطر السموات والارض يدعوكم ليغفرلكم من ذنوبكم ويوخركم الي اجل مسمى قالوا ان انتم الا بشر مثلنا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তাদের রাসূলগণ বলেছিলেন, আল্লাহ সম্বন্ধে কি সন্দেহ আছে, যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর স্রষ্টা? তিনি তোমাদেরকে আহবান করেন তোমাদের পাপ মার্জনা করার জন্য এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদেরকে অবকাশ দেবার জন্য? তারা বলত, তোমরাতো আমাদের মতই মানুষ।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা ইব্রাহীম : ১০।]</div><div style="text-align: justify;">এখানেও কাফেরদের কথাই উদৃত হয়েছে যে, তারা নবীগণকে তাদের মত বলত।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">৪নং আয়াতের পর্যালোচনাঃ</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ পাক আরও ইরশাদ করেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">وما منع الناس ان يومنوا ان جاءهم الهدى الا ان قالوا ابعث الله بشرا رسولا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, যখন তাদের নিকট আসে পথ-নির্দেশ, তখন লোকদেরকে এই উক্তিই বিশ্বাস স্থাপন হতে বিরত রাখে যে, আল্লাহ কি মানুষকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন!</div><div style="text-align: justify;">[সূরা বনী ইসরাইল : ৯৪।]</div><div style="text-align: justify;">এখানেও কাফের-বিধর্মীদের কথাই বলা হয়েছে।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">৫নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ আরো বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">واسروا النجوى الذين ظلموا اهل هذا الا بشر مثلكم</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, যারা জালিম তারা গোপনে পরামর্শ করে, এতো তোমাদের মত একজন মানুষই।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা আম্বিয়া : ৩।]</div><div style="text-align: justify;">এখানেও নবীকে কাফির-মুশরিকরাই তাদের মত বলত বলে উদ্ধৃত হয়েছে এবং বলা হয়েছে তারা তা গোপনে বলত। কেননা একথা প্রকাশ্যে বলার সাহস তাদের ছিলনা। কারণ তারাও নবীগণের সাথে অনেক দিকেই তাদের পার্থক্য স্বচক্ষে দেখতে পেত। কিন্তু আপসোস! মুসলিম নাম নিয়ে নবীগণের শানে যা-তাই না বলে বেড়াচ্ছে।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">৬নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ ইরশাদ করেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فقال الملأ الذين كفروا من قومه ما ترك الا بشرا مثلنا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তাঁর সম্প্রদায়ের প্রধানেরা যারা কাফের ছিল, তারা বলল, আমরাতো তোমাকে আমাদের মতই মানুষ ব্যতীত আর কিছুই দেখিনা।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মু’মিনূন : ২৪।]</div><div style="text-align: justify;">এটিও কাফিরদেরই উক্তি।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">৭নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">وقال الملأ من قومه الذين كفروا وكذبوا بلقاء الاخرة واترفناهم فى الحياة الدنيا ماهذا الا بشر مثلكم يأكل مما تأكلون منه و ويشرب مما تشربون ولئن اطعتم بشرا مثلكم انكم اذا لخاسرون</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, সম্প্রদায়ের প্রধানগণ, যারা কুফুরী করেছিল ও আখিরাতের সাক্ষাতকারকে অস্বীকার করেছিল এবং যাদেরকে আমি দিয়েছিলাম পার্থিব জীবনে প্রচুর ভোগ-সম্ভার, তারা বলেছিল, এতো তোমাদের মত একজন মানুষ, তোমরা যা আহার করো সেও তাই করে এবং তোমরা যা পান কর সেও তাই পান করে। যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর, তবে তোমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মু’মিনূন : ৩৩, ৩৪।]</div><div style="text-align: justify;">এখানেও কাফেরদের কথাই বলা হয়েছে যে, তারা নবীগণকে তাদেরই মত মনে করত এবং বলত তারাতো আমাদেরই মত পানাহার করে।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">৮নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">মূসা ও হারুন সম্পর্কে এসেছে-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فقالوا أنومن لبشرين مثلنا وقومهما لنا عابدون</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তারা বলল, আমরা কি এমন দু’ ব্যক্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করব, যারা আমাদের মত মানুষ এবং তাদের সম্প্রদায় আমাদের দাসত্ব করে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা মু’মিনূন : ৪৭।]</div><div style="text-align: justify;">এখানে ফেরাউন ও তার সাথীদের কথা উদৃত হয়েছে যে, তারা নবী মূসা ও হারুন আলাইহিমাস সালামকে তাদেরই মত বলত।</div><div style="text-align: justify;">লক্ষ্যণীয় যে, পূর্ববর্তী নবীগণ মানুষ বটে, তবে আমাদের মত নয়। কিন্তু কথিত মুফতী সাহেব ৯ টি উদ্ধৃতির একটি দ্বারাও নবীগণ আমাদের মত দূরের কথা মানুষই প্রমান করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তার উদ্ধৃত নয়টি আয়াতের সাতটি আয়াতই প্রমান করে যে, নবীগণকে আমাদের মত মানুষ কাফেররাই বলত।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">৯নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">ان مثل عيسى عند الله كمثل ادم خلقه من تراب</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, নিশ্চয় আল্লাহ’র নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের অনুরূপ; তিনি তাকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা আলে ইমরান : ৫৯।]</div><div style="text-align: justify;">এখানে ঈসা আলাইহিস সালামকে আদম আলাইহিস সালাম-এর সাথে উপমা দেয়া হয়েছে এ অর্থে যে, আদম আলাইহিস সালাম যেমন পিতা-মাতা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছেন অনুরূপ ঈসা আলাইহিস সালামও সৃষ্টি হয়েছেন পিতা ছাড়াই জিব্রাইল আলাইহিস সালাম-এর ফুঁক দ্বারা। এখানে ঈসা আলাইহিস সালামকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি বলা হয়নি, বরং তাঁকে যেন খোদার পূত্র বলা না হয়- এরই প্রতিবাদ করা হয়েছে।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">৩নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তা‘য়ালা আরও বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قالت لهم رسلهم ان نحن الا بشر مثلكم</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তাদের রাসূলগন তাদেরকে বলেছিলেন, নিশ্চয় আমরা তোমাদের মত মানুষ।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা ইব্রাহীম : ১১।]</div><div style="text-align: justify;">এখানে পূর্ববর্তী রাসূলগণ তাঁদের অস্বীকারকারীদেরকে লক্ষ্য করে বলেছেন যে, আমরা তোমাদের মত মানুষ। এটা ছিল তাঁদের বিনয় ও নম্রতা। এর অর্থ এ নয় যে, তাদের উম্মতগণও তাদের মত মানুষ বলবে।</div><div style="text-align: justify;">জ্ঞাতব্য যে, নবীগণকে ‘বাশার’ শব্দ দ্বারা হয়তো আল্লাহ পাক নিজে সম্বোধন করেছেন, না হয় নবীগণ নিজেই নিজের ক্ষেত্রে বলেছেন। আর তৃতীয়ত, তাঁদেরকে অস্বীকারকারী কাফেররা ‘বাশার’ বলে সম্বোধন করেছে। এছাড়া অন্যকেহ কখনোই নবীগণকে নিজেদের মত ‘বাশার’ বলে সম্বোধন করেছেন মর্মে কোন প্রমান নেই। অতএব আজকে যারা নবীগণকে ‘বাশার’ বলে বলে হয়রান হয়ে যাচ্ছে, তারা না খোদা, আর না নবী। কাজেই তারা কারা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন কারীমে এভাবে উদ্ধৃত হয়েছে যে-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">فقالوا أبشر يهدوننا فكفروا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তারা বললো, আমাদেরকে কি মানুষই হিদায়াত করবে? অতএব তারা কাফের হয়ে গেল।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা আত-তাগাবুন : ৬।]</div><div style="text-align: justify;">উল্লেখিত আলোচনার দ্বারা দিবালোকের ন্যায় প্রমাণিত হয়ে গেল যে, পূর্ববর্তী সকল নবীগণ মূলতঃ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁদেরকে মানুষ বলা সম্পূর্ণ বেয়াদবী এবং কাফেরদেরই স্বভাব।</div><div style="text-align: justify;">তৃতীয়ত,</div><div style="text-align: justify;">দয়াল নবী সরকারে দু’ আলম রবের প্রেমাষ্পদ নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে মাটির তৈরী প্রমান করতে গিয়ে কথিত মুফতী পবিত্র কুরআন হতে দু’টি আয়াত উপস্থাপন করেছে। নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মূলতঃ কিসের তৈরী এ ব্যাপারে আমাদের পক্ষ হতে একটি জবাব দেয়া হয়েছে, যা এ আলোচনার শেষাংশে সংযোজন করা হবে (ইন শাআ-ল্লাহ)। এখন উদ্ধৃত দু’টি আয়াতের পর্যালোচনায় আসা যাক।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">১নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قل سبحان ربى هل كنت الا بشرا رسولا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, বলুন, পবিত্র মহান আমার প্রতিপালক! আমিতো শুধু একজন মানুষ, একজন রাসূল।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা বনী ইসরাইল : ৯৩।]</div><div style="text-align: justify;">সূরা বনী ইসরাইলের ৯৩নং এ আয়াতের পূর্বাংশে এবং তৎপূর্বের ৯১ ও ৯২ নং আয়াতসমূহে আলোচনা করা হয়েছে যে, কুরআনের ব্যাপারে কাফের-মুশরিকরা যখন চ্যালেঞ্জে হেরে গেল-অপারগ হলো, তখন তারা বলতে লাগল যে, আপনি নিম্নোক্ত কাজগুলো করে দেখান, না হয় আপনার উপর আমরা ঈমান আনব না। আপনি ভূমি হতে কোন প্রস্রবণ উৎসারিত করবেন অথবা আপনার জন্য খেজুর ও আঙ্গুরের কোন বাগান থাকবে এবং তাতে চলমান নদী নালা প্রবাহিত করবেন। অথবা, আমাদের উপর আসমানকে খন্ড-বিখন্ড করে পতন ঘটান কিংবা আল্লাহ ও ফেরেশতাদেরকে জমীনে নিয়ে আসুন। অথবা, আপনার জন্য একটি স্বর্ণ নির্মিত ঘর হবে কিংবা আপনি আকাশে আরোহন করবেন এবং একটি কিতাব নিয়ে আসবেন।</div><div style="text-align: justify;">আর এর জবাব হিসেবেই আল্লাহ পাক নবীজীকে এ বিনয় প্রকাশের কথা বলেছেন এবং বলেছেন যে, এর পূর্বেও এ সকল সম্প্রদায় পূর্ববর্তী নবীগণকে এ ধরনের অনেক কিছু বলেছিল এবং তারা ঈমান আনেনি। কাজেই আপনি বলে দিন যে, আমিতো ‘বাশার’ এবং আল্লাহ’র রাসূল।</div><div style="text-align: justify;">এখন কথিত সে মুফতির নিকট জিজ্ঞাসা যে, এখানে কোথায় বলা হয়েছে, নবী পাক মাটি দ্বারা সৃষ্টি? বরং এখানে ‘বাশার’ শব্দটিই ব্যবহার হয়েছে। আর পূর্বেই আলোচনা করা হয়েছে যে, ‘বাশার’ মানেই মাটির তৈরী মানুষ নয়। এছাড়াও এ আয়াতসমূহে অনেক কিছুরই অপারগতার কথা বলা হয়েছে। যেমন, জমীন হতে প্রস্রবণ, আসমান খন্ড-বিখন্ড করা প্রভৃতি। এ আয়াত দ্বারা যদি নবীজী মূলতঃ বা জাতীতেই মানুষ বলে সাব্যস্ত হয়, তবে বাকীগুলোরও অপারগ বলে সাব্যস্ত হবেন। অথচ এগুলো হুযুর পাকের মু’জেযা ও ক্ষমতার অধিন ছিল। এর অনেক দৃষ্টান্ত হাদীস শরীফে রয়েছে। এমনকি নবী পাকের এ ক্ষমতার কথা খোদ কুরআন পাকেও রয়েছে। যেমন, নবী পাকের আঙ্গুলের ইশারায় চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হয়েছে। (সূরা আল-ক্বামার)</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">২নং আয়াতের পর্যালোচনা:</div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ তা‘য়ালা আরো বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قل انما انا بشر مثلكم يوحى الى انما الهكم اله واحد فمن كان يرجو لقاء ربه فليعمل عملا صالحا ولا يشرك بعبادة ربه احدا</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, বলুন, আমি তোমাদেরই মত একজন মানুষ, আমার নিকট ওহী আসে, তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে তার রবের সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে সে যেন নেক আমল করে এবং তার রবের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।</div><div style="text-align: justify;">[সূরা কাহাফ : ১১০।]</div><div style="text-align: justify;">এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় তাফসীরে রুহুল বায়ান শরীফে বলা হয়েছে-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قل يا محمد ما انا الا أدمي مثلكم فى الصورة ومساويكم في بعض الصفات البشرية</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, বলুন হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আমিতো আকৃতিতে তোমাদের মতই মানুষ আর কতেক মানবীয় বৈশিষ্ট্যে তোমাদের সমান।</div><div style="text-align: justify;">[সূত্রঃ রুহুল বায়ান ফি তাফসিরিল কুরআন, খন্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ৩৫৩, ছাপা: দারুল ফিকর, বৈরুত, লেবানন।]</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">এ বর্ণনা দ্বারা বুঝা গেল যে, নবী পাক (صلى الله عليه و آله وسلم) আকৃতি ও কতেক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে মানুষের মত, কিন্তু হাকীকতে আমাদের মত নয়।</div><div style="text-align: justify;">আর এ বিষয়টি ছিল নবী পাকের একান্ত নিজস্ব বিষয় এবং তাঁর জন্যই খাছ। এ কারণেই আয়াতে انما শব্দটি ব্যবহার হয়েছে। যা আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী সীমাবদ্ধতার অর্থে এসে থাকে। সুতরাং অর্থ হবে এই যে, হে নবী একমাত্র আপনি বলুন। নবীগণ নিজের ক্ষেত্রে বিনয় শিক্ষা দেয়ার জন্য অনেক কিছুই বলতে পারেন, যা উম্মতের জন্য বলা হারাম বরং কখনো কুফুরীও বটে। যেমন- আদম আলাইহিস সালাম বলেছিলেন- ربنا ظلمنا انفسنا অর্থাৎ, হে আমার রব, আমি আমার নফসের উপর যুলুম করেছি। হযরত ইউনূস আলাইহিস সালাম বলেছিলেন- لا اله الا انت سبحانك انى كنت من الظالمين অর্থাৎ, হে আল্লাহ, তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, পবিত্রতা তোমারই। নিশ্চয়ই আমি যালিমদের অন্তর্ভূক্ত।</div><div style="text-align: justify;">অথচ উম্মতের কেহ তাদেরকে যালিম বললে কাফের হয়ে যাবে। নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) নিজেকে নিজে ‘বাশার’ বলেছেন এটাও নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) এর একান্ত একক বৈশিষ্ট্য-বিনয় ছিল। এর অর্থ এ নয় যে, উম্মত তোমরাও আমাকে তোমাদের মত বল।</div><div style="text-align: justify;">অনেকে আবার বলে থাকে যে, নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) জাতীতে মানুষ ছিলেন বটে, তবে আমাদের মত নয় এবং দলীল হিসেবে এ আয়াতটিও উপস্থাপন করে থাকে। তাদেরকে বলছি, এ আয়াত দ্বারা যদি নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) জাতীতেই অর্থাৎ মূলতই মানুষ বলে সাব্যস্ত হয়ে থাকে, তবে এ আয়াতে ‘বাশার’ শব্দের সাথে সাথে ‘মিছলুকুম’ শব্দটিও এসেছে। কাজেই নবীজীকে আমাদের মতও বলতে হবে। সুতরাং উভয় দাবীই বাতিল। তবে নবী পাক (صلى الله عليه و آله وسلم) এর বাশারীয়াত তথা মানবীয় আকৃতি ও গুণাবলীকে অস্বীকার করলেও কুফুরী হবে। আল্লাহ বুঝার তৌফিক দিন।</div><div style="text-align: justify;">অতএব, প্রেমিক হৃদয় প্রেমাষ্পদের দোষ খোঁজে না বরং সর্বদা তার গুণই প্রত্যক্ষ করে। আর নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) কে আমাদের মত মানুষ বলার দ্বারা দোষীই সাব্যস্ত করা হয়। কেননা-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">الانسان مركب من الخطاء والنسيان</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, মানুষ ভুল-ত্রুটির সংমিশ্রণেই হয়ে থাকে। কিন্তু তিনিতো সেই সত্ত্বা যিনি যাবতীয় ভুল-ত্রুটির অনেক উর্ধ্বে, স্বয়ং রবের মাহবুব।</div><div style="text-align: justify;">হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূর হওয়ার ব্যাপারে পূর্বে প্রদত্ত ফতোয়াটি হলো:</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">সকল সৃষ্টির মূল, আল্লাহপাকের প্রিয়তম প্রেমাষ্পদ, হুযুর নবী করীম রাউফুর রাহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহর জাতী নূর থেকে সৃষ্টি। আর এর অর্থ এ নয় যে, তিনি আল্লাহ’র নূরের টুকরা বা অংশ বরং তিনি কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহর জাতী (সত্ত্বাগত) নূরের ফয়য বা জ্যোতি। যেমনটি যারকানী আলাল মাওয়াহিব কিতাবের ১ম খন্ডের ৪৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে। এমনকি দেওবন্দী ও নূর অস্বীকারকারীদের ইমাম আশ্রাফ আলী থানবী সাহেবও তার নশরুত্বীব নামক কিতাবের ৫নং পৃষ্ঠায় অনুরূপ বর্ণনা করেন। মাতালিউল মাস্রাত শরহে দালাইলুল খায়রাত নামক কিতাবে রয়েছে, ইমামে আহলে সুন্নাত আবুল হাসান আশয়ারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন –</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">انه تعالى نور ليس كالانوار والروح القدسية لمعة من نوره والملاءكته شرر تلك الانوار وقال صلى الله عليه و سلم اول ما خلق الله نورى ومن نورى خلق كل شىء</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা নূর, তবে অন্য কোন নূরের মত নন। আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র রূহ্ সে নূরেরই ফয়য বা জ্যোতি। আর ফেরেশ্তাগণ ঐ জ্যোতিরই ফুল। হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- “আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূরকে সৃষ্টি করেছেন, আর আমার নূর হতেই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।”</div><div style="text-align: justify;">-সালাতুচ্ছফা ফী নূরিল মুস্তফা, পৃষ্ঠা: ০৩।</div><div style="text-align: justify;">* পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قد جاءكم من الله نور و كتاب مبين</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, তোমাদের নিকট আল্লাহ্ হতে নূর এসেছে এবং স্পষ্ট কিতাব।</div><div style="text-align: justify;">-সূরা মায়িদা, আয়াত: ১৫।</div><div style="text-align: justify;">* রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাহাবী, পবিত্র কুরআনের ভাষ্যকার হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন-</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قد جاءكم من الله نور رسول يعنى محمدا صلى الله عليه وسلم</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ তোমাদের নিকট আল্লাহ্ হতে নূর তথা রাসূল এসেছে, অর্থাৎ এ নূর হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।</div><div style="text-align: justify;">-তাফসীরে ইবনে আব্বাস, পৃষ্ঠা: ১১৯ (ছাপা: দারুল কুতুবুল এলমিয়া, বৈরুত, লেবানন)</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">* বাংলাদেশের সকল আলীয়া ও খারেজী মাদ্রাসাসমূহের পাঠ্য ও সর্বজনমান্য কিতাব তাফসীরে জালালাইন শরীফে বলা হয়েছে-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قد جاءكم من الله نور رسول هو النبى صلى الله عليه وسلم</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, আল্লাহ হতে তোমাদের নিকট নূর এসেছে। আর এ নূর হলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।</div><div style="text-align: justify;">-তাফসীরে জালালাইন, পৃষ্ঠা: ১৩৯ (ছাপা: দারুল হাদিস, কায়রো, মিশর)</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">* যারা ‘কিতাবুম মুবিন’ তথা কুরআন শরীফকেই নূর বলে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন তাদেরকে লক্ষ্য করে আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন –</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">هذا ضعيف لان العطف يوجب المغايرة بين المعطوف عليه</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, কিতাবই নূর এ অভিমতটি দূর্বল। কারণ ‘আতফ’ (ব্যাকরণগত সংযোজন) ‘মা’তুফ’ (সংযোজিত) ও ‘মা’তুফ আলাইহি’ (যার সাথে সংযোজন করা হয়েছে) এর মধ্যে ভিন্নতা আবশ্যক।</div><div style="text-align: justify;">-তাফসীরে কবীর, খন্ড: ১১, পৃষ্ঠা: ১৮৯ (ছাপা: আল ই’লাম আল ইসলামী)</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">* মারফু’-মুত্তাসিল সূত্রে হুযুর পাকের একনিষ্ঠ খাদেম ও মদীনার ৬ষ্ঠ সাহাবী হযরত জাবের ইব্নে আব্দুল্লাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত-</p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">قال سألت رسول الله صلى الله عليه وسلم عن اول شىء خلقه الله تعالى فقال هو نور نبيك يا جابر خلقه الله</div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ, হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা-এর নিকট আরজ করলাম যে, আল্লাহ্ তায়ালা সবকিছুর পূর্বে সর্বপ্রথম কি সৃষ্টি করেছেন। জবাবে আল্লাহ’র রাসূল বললেন- হে জাবের, আল্লাহ্ সর্বপ্রথম তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেছেন।</div><div style="text-align: justify;">-মুসান্নাফে আবর্দু রাযযাক (আল জুুযউল মাফকুদ মিনাল জুযইল আওয়াল), খন্ড: ০১, পৃষ্ঠা: ৬৩ (ছাপা: দুবাই থেকে ডঃ ঈসা বিন আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন মানে’ আল হুমায়রী’র তাহক্বীক্ব সম্বলিত, ২০০৫ইং)</div><div style="text-align: justify;">উক্ত হাদীসটি ‘আল মুসান্নাফ’ কিতাবে ইমাম আবদুর রায্যাক মুত্তাসিল ও মারফু’ সূত্রে বর্ণনা করেন। আর তিনি স্বয়ং ইমাম বুখারীর দাদা উস্তাদ এবং ইমাম মালেকের ছাত্র। পরবর্তীতে এ হাদীসখানা কিছু শব্দগত পার্থক্যসহ অন্যান্য অনেক হাদীস বিশারদগন তাঁদের স্ব-স্ব গ্রন্থেও সন্নিবেশিত করেন। তন্মধ্যে কয়েকটি হল-</div><div style="text-align: justify;">১) শারেহে বুখারী ইমাম কাসতুলানী’র আল মাওয়াহেবুল্লাদুনিয়াহ্,</div><div style="text-align: justify;">২) আল্লামা ইউসুফ নাব্হানী রচিত আনোয়ারে মুহাম্মদীয়াহ্,</div><div style="text-align: justify;">৩) আল্লামা আব্দুল হক মুহাদ্দেসে দেহ্লবী কৃত মাদারেজুন্নবুয়াত,</div><div style="text-align: justify;">৪) ইমাম যারকানী এর র্শহে মাওয়াহেব,</div><div style="text-align: justify;">৫) ইমাম বায়হাকী রচিত দালেলুন্ নবূয়াত,</div><div style="text-align: justify;">৬) আল্লামা ফাসী এর মাতালিউল মাস্রাত,</div><div style="text-align: justify;">৭) ইমাম আহ্মাদ রেজা রচিত নূরুল মুস্তফা এবং</div><div style="text-align: justify;">৮) স্বয়ং নূর অস্বীকারকারীদের মান্যবর আশরাফ আলী থানবী এর নশরুত্বীব।</div><div style="text-align: justify;">এত অধিকসংখ্যক মুহাদ্দিস ও মুহাক্কিক আলেমগণের উদ্ধৃতির দ্বারাই বুঝা যায় যে, হাদিসটি নিঃসন্দেহে গ্রহণযোগ্য।</div><div style="text-align: justify;">এছাড়াও-</div><div style="text-align: justify;">(১) তাফসীরে রুহুল বয়ান, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা: ৫৪৩।</div><div style="text-align: justify;">(২) যারকানী শরীফ, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা: ২২০।</div><div style="text-align: justify;">(৩) কিতাবুশ্ শিফা, পৃষ্ঠা: ২৪২।</div><div style="text-align: justify;">(৪) দেওবন্দীদের ইমাম রশিদ আহ্মাদ গাঙ্গুহী রচিত ইমদাদুস সুলুক, পৃষ্ঠা: ৮৫।</div><div style="text-align: justify;">(৫) দেওবন্দীদের আরেক ইমাম আশ্রাফ আলী থানবী রচিত নশরুত্বীব, পৃষ্ঠা: ৫ সহ অনেক তাফসীর, হাদীস ও অন্যান্য কিতাবে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূর হওয়ার ব্যাপারে বহুসংখ্যক বর্ণনা রয়েছে। বিবেকবানদের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট।</div><div style="text-align: justify;">______</div><p></p><p dir="ltr">মাহবুবে খোদা আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি নূর।<br /> <a href="https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1854750851507018">https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1854750851507018</a><br /> ______<br /> ▆ আল্লাহ্ (سبحانہ و تعا لی) এঁর প্রথম সৃষ্টি হিসেবে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর প্রথম সৃষ্টি হওয়া সম্পর্কিত আক্বিদা।<br /> নোটঃ ০১.<br /> <a href="https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853893521592751">https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853893521592751</a></p><div style="text-align: justify;"> <p dir="ltr">নোটঃ ০২.<br /> <a href="https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853902801591823">https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853902801591823</a><br /> _________<br /> ▆ মানুষঃ সকলেই মাটির সৃষ্টি নয়; আদি পিতার দেহটিই কেবল মাটির; আদি মাতাও তেমন নন।<br /> <a href="https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1836654783316625">https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1836654783316625</a><br /> _________<br /> ▆ প্রসঙ্গ নূর (Noor) : প্রিয়নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)<br /> ______<br /> <a href="https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1695737607408344">https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1695737607408344</a><br /> ▆ প্রসঙ্গ- প্রিয়নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর নুবূয়্যাত কখন থেকে?<br /> <a href="https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1701002633548508">https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1701002633548508</a><br /> ________<br /> শা'নে রিসালাতঃ<br /> ______________<br /> হাকিকতে নূরে মুহাম্মদী (صلى الله عليه و آله و سلم)<br /> নোটঃ ০১.<br /> <a href="https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853803314935105">https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853803314935105</a></p> <p dir="ltr">নোটঃ ০২.<br /> <a href="https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853806041601499">https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853806041601499</a><br /> ________<br /> ▆ তাবলীগের কিতাব ফাযায়েলে আমাল [Fazail-e-Amaal] এ বর্ণিত ঈমান ও আমলের বহুদ ফায়দা হাসিলের মুবারাক হাদীস।<br /> "যদি তিনি [হযরত মুহাম্মাদ (صلى الله عليه و آله و سلم)] না হতেন, তাহলে (হে আদম!) তোমাকেও সৃষ্টি করা হতো না"।<br /> <a href="https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1844768532505250">https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1844768532505250</a><br /> _________<br /> ▆ তাবলীগের কিতাব ফাজায়েলে আমল [Fazail-e-Amal] এর ফাজায়েলে হজ্জ [Fazail-e-Haj] এর ঈমান ও আমলের বহুদ ফায়দা হাসিলের বর্ণনায় "সমগ্র সৃষ্টির মাঝে আরশ-কুরসী থেকেও সেরা স্থান"।<br /> <a href="https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853129401669163">https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853129401669163</a><br /> ________<br /> তাফসীরঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, প্রসঙ্গ- শানে রিসালাত, মীলাদ বা আবির্ভাব।<br /> <a href="https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1914671212181648">https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1914671212181648</a><br /> _________</p></div><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;"><br /></div><p></p>

নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) কে আমাদের মত মানুষ বলা কাফেরদের স্বভাব।

নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) কে আমাদের মত মানুষ বলা কাফেরদের স্বভাব। প্রশ্ন : নিম্নোক্ত আলোচনার ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহ’র আলোকে আহলে সুন্...

Read more »

হুযুর কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর হাকীকত ও নূরে মুহাম্মদী (صلى الله عليه و آله وسلم)

<p dir="ltr"><br>মাহবুবে খোদা আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি নূর।<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1854750851507018<br>______<br>▆ আল্লাহ্ (سبحانہ و تعا لی) এঁর প্রথম সৃষ্টি হিসেবে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর প্রথম সৃষ্টি হওয়া সম্পর্কিত আক্বিদা।<br>নোটঃ ০১.<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853893521592751</p><p dir="ltr">নোটঃ ০২.<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853902801591823<br>_________<br>▆ মানুষঃ সকলেই মাটির সৃষ্টি নয়; আদি পিতার দেহটিই কেবল মাটির; আদি মাতাও তেমন নন।<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1836654783316625<br>_________<br>▆ প্রসঙ্গ নূর (Noor) : প্রিয়নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)<br>______<br>https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1695737607408344<br>▆ প্রসঙ্গ- প্রিয়নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর নুবূয়্যাত কখন থেকে?<br>https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1701002633548508<br>________<br>শা'নে রিসালাতঃ<br>______________<br>হাকিকতে নূরে মুহাম্মদী (صلى الله عليه و آله و سلم)<br>নোটঃ ০১.<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853803314935105</p><p dir="ltr">নোটঃ ০২.<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853806041601499<br>________<br>▆ তাবলীগের কিতাব ফাযায়েলে আমাল [Fazail-e-Amaal] এ বর্ণিত ঈমান ও আমলের বহুদ ফায়দা হাসিলের মুবারাক হাদীস।<br>"যদি তিনি [হযরত মুহাম্মাদ (صلى الله عليه و آله و سلم)] না হতেন, তাহলে (হে আদম!) তোমাকেও সৃষ্টি করা হতো না"।<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1844768532505250<br>_________<br>▆ তাবলীগের কিতাব ফাজায়েলে আমল [Fazail-e-Amal] এর ফাজায়েলে হজ্জ [Fazail-e-Haj] এর ঈমান ও আমলের বহুদ ফায়দা হাসিলের বর্ণনায় "সমগ্র সৃষ্টির মাঝে আরশ-কুরসী থেকেও সেরা স্থান"।<br>https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1853129401669163<br>________<br>তাফসীরঃ তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, প্রসঙ্গ- শানে রিসালাত, মীলাদ বা আবির্ভাব।<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1914671212181648<br>_________<br>নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) কে আমাদের মত মানুষ বলা কাফেরদের স্বভাব।<br>https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1916168898698546<br>___________</p>

হুযুর কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর হাকীকত ও নূরে মুহাম্মদী (صلى الله عليه و آله وسلم)

মাহবুবে খোদা আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি নূর। https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1854750851507018 ______ ▆ আল্লাহ্ (سبحانہ و تعا لی) এঁ...

Read more »