জুমা ফরজ হওয়ার শর্ত

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">জুমা আদায় করা ফরয হওয়ার জন্য ১১টি শর্ত<br /><br />❁ শহরে  মুকীম হওয়া। ❁  সুস্থ হওয়া, অসুস্থের  উপর জুমা   ফরয   নয়।  অসুস্থ দ্বারা এটাই উদ্দেশ্য   যে, জুমা  মসজিদ   পর্যন্ত   যেতে    অক্ষম   অথবা   মসজিদে    গেলে রোগ    বৃদ্ধির    কিংবা    দেরীতে    সুস্থ    হওয়ার    সম্ভাবনা  রয়েছে।   অতিশয়   বৃদ্ধ    ব্যক্তি  অসুস্থ   ব্যক্তির  হুকুমের  অন্তুর্ভূক্ত।<br /><br />রাসুলুল্লাহ্    ﷺইরশাদ   করেছেন:     “যে   ব্যক্তি   আমার উপর   সারাদিনে   ৫০বার   দরূদ   শরীফ   পড়ে,   আমি  কিয়ামতের দিন তার  সাথে   মুসাফাহা  করবো।” (আল কওলুল  বদী)  ❁স্বাধীন  হওয়া,  গোলামের উপর জুমা   ফরয   নয়।   তার   মুনিব   তাকে   (জুমা   আদায়ে)   বাধা  দিতে  পারবে।  ❁পুরুষ   হওয়া,  ❁  প্রাপ্ত   বয়স্ক  হওয়া, ❁বিবেকবান হওয়া,  এই দু’টি  শর্ত জুমার জন্য নির্দিষ্ট নয়      বরং      প্রত্যেক      ইবাদত      ফরয      হওয়ার      জন্য  বিবেকবান     ও   প্রাপ্ত   বয়স্ক   হওয়া    শর্ত।❁দৃষ্টি   শক্তি  সম্পন্ন  হওয়া,   ❁  হাটতে  সক্ষম  হওয়া,  ❁   বন্দী     না  হওয়া,    ❁     বাদশা     (শাসক)     অথবা     চোর,    ডাকাত ইত্যাদি  কোন    প্রকারের   জালিমের ভয়ের আশংকা না থাকা।❁ঝড়,   তুফান,   শিলাবৃষ্টি   ও   ঠান্ডা   ইত্যাদির  ক্ষতির  সম্ভাবনা   হতে   মুক্ত  হওয়া   অর্থাৎ  তা  এতটুকু পরিমাণ   হওয়া  যাতে   ক্ষতি    হওয়ার  সত্যিই  সম্ভাবনা রয়েছে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৭৭০-৭৭২ পৃষ্ঠা) যার   উপর    নামায    ফরয   কিন্তু   কোন   শরয়ী   ওযরের  কারণে   জুমার     নামায   ফরয     হয়নি,   তাকে   অবশ্যই  জুমার দিন  যোহরের  নামায আদায়  করে  দিতে  হবে।  কেননা,  জুমার  দিন   জুমার   নামায  আদায়   করতে  না  পারলে, কিংবা  শর্ত পাওয়া না  যাওয়ার কারণে  জুমার  নামায ফরয না  হলে,    যোহরের  নামায  মাফ হবে না। তা অবশ্যই আদায় করতে হবে।<br /><br />জুমার সুন্নাত সমূহ<br /><br />জুমার নামাযের জন্য প্রথম ওয়াক্তে যাওয়া, মিসওয়াক করা, উত্তম (ভাল) ও সাদা কাপড় পরিধান করা, তৈল ও  সুগন্ধি  লাগানো  এবং  প্রথম  কাতারে  বসা  মুস্তাহাব  আর জুমার দিন গোসল  করা সুন্নাত। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১৪৯ পৃষ্ঠা। গুনিয়া, ৫৫৯ পৃষ্ঠা)<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgpRyJU0wPkWp_C9gG3DDh9l4ZNft3fycx8GSTnpYq63x_aqhN5cCehC28BhGPtjlobF86l0fOPsv1kUmzliRaQ5WFGo5V0dEyy6y16wuUAnj1AiulsuU4J316tNnIC9Box23muq7T4g_Ef/s1600/JUMMAH.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="742" data-original-width="990" height="239" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgpRyJU0wPkWp_C9gG3DDh9l4ZNft3fycx8GSTnpYq63x_aqhN5cCehC28BhGPtjlobF86l0fOPsv1kUmzliRaQ5WFGo5V0dEyy6y16wuUAnj1AiulsuU4J316tNnIC9Box23muq7T4g_Ef/s320-rw/JUMMAH.jpg" width="320" /></a></div><br /><br />জুমার দিন গোসল করার সময়<br /><br />প্রখ্যাত   মুফাস্সীর,     হাকীমূল    উম্মত,   হযরত   মুফতী আহমদ   ইয়ার    খাঁন    رَحْمَۃُ     اللّٰہِ    تَعَالٰی     عَلَیْہِ   বলেন: কতিপয় ওলামায়ে  কিরাম    বলেন; জুমার দিন  গোসল করা  জুমার  নামাযের জন্য সুন্নাত। জুমার দিনের জন্য নয়।     সুতরাং  যার  উপর  জুমা   ফরয    নয়,    তার  জন্য জুমার   দিন   গোসল    করাও     সুন্নাত    নয়।    কিছু   কিছু   ওলামায়ে  কিরাম  বলেন: জুমার দিনের  গোসল  জুমার নামাযের এতটুকু আগে করা  উচিত, যেন ঐ গোসলের ওযু দ্বারা  নামায আদায়   করা যায়। তবে সঠিক এটাই  যে, জুমার দিন গোসল করার সময় ফযর উদয় হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়। (মীরআত, ২য়  খন্ড, ৩৩৪ পৃষ্ঠা) জানা   গেলো,   নারী,   মুসাফির   ইত্যাদি    যাদের   উপর  জুমার    নামায   ফরয    নয়,   তাদের   জন্য    জুমার   দিন  গোসল করাও সুন্নাত নয়।<br /><br />জুমার গোসল সুন্নাতে যায়িদা<br /><br />হযরত আল্লামা  ইবনে আবেদীন শামী   رَحْمَۃُ  اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: জুমার নামাযের জন্য গোসল করা সুন্নাতে যায়িদা। এটা ত্যাগ করলে কোন অসুবিধা নেই। (রদ্দুল মুহতার, ১ম খন্ড, ৩৩৯ পৃষ্ঠা)<br /><br />খোৎবার সময় কাছাকাছি থাকার ফযীলত<br /><br />হযরত  সায়্যিদুনা  সামুরা  ইবনে জুনদুব  رَضِیَ  اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ  থেকে    বর্ণিত;নবী  করীম,   রউফুর  রহীমصَلَّی   اللّٰہُ تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “তোমরা  খোৎবা পাঠের সময় উপস্থিত থাকো   এবং ইমামের  কাছাকাছি থেকেই তা  শ্রবণ  করো। কেননা    খোৎবা পাঠের সময় যে  ইমাম  থেকে  যতটুকু  পরিমাণ    দূরত্বে  থাকবে,  সে জান্নাতেও ততটুকু  পরিমাণ  পিছনে  থাকবে।যদিও  সে (অর্থাৎ    মুসলমান)   নিশ্চিত   জান্নাতে    প্রবেশ   করবে।  (সুনানে       আবু       দাউদ,       ১ম       খন্ড,         ৪১০       পৃষ্ঠা, হাদীস-১১০৮)<br /><br />তখন জুমার নামাযের সাওয়াব পাওয়া যাবে না<br /><br />তাজেদারে  রিসালাত,   নবীয়ে   রহমত,  শফীয়ে  উম্মত  صَلَّی  اللّٰہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم  ইরশাদ  করেন:    “যে  ব্যক্তি,   ইমাম জুমার খোৎবা  দেয়ার  সময়   কথা বলে,  তার উদাহরণ ঐ গাধার মতো, যে  কিতাব বহন  করে। আর  ঐ  সময় যে কেউ  তার  সাথীকে  এরূপ বলল  যে, “চুপ    থাক”    বলে    সে     জুমার    সাওয়াব    পাবে     না।” (মুসনাদে ইমাম  আহমদ বিন্  হাম্বল,    ১ম খন্ড,  ৪৯৪  পৃষ্ঠা, হাদীস-২০৩৩)<br /><br />নিরবে খোৎবা শুনা ফরয<br /><br />যে সমস্ত  কাজ  নামাযের  মধ্যে  হারাম  যেমন-পানাহার করা,  সালাম  ও   সালামের  জবাব  দেওয়া   ইত্যাদি  তা খোৎবার  সময়ও  হারাম।     এমনকি  নেকীর   দা’ওয়াত  দেয়াও   হারাম।   তবে   খতিব  সাহেব  নেকীর  দাওয়াত দিতে    পারবেন।    যখন   খোৎবা   পাঠ   করা   হয়   তখন খোৎবা       শুনা     এবং     নিরব      থাকা      উপস্থিত     সকল   মুসল্লীদের   উপর    ফরয।  আর   যে  সমস্ত  লোক  ইমাম থেকে দূরে এবং   খোৎবার  আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে না   তাদের উপরও নিরব   থাকা  ওয়াজীব।  খোৎবা পাঠের সময় কাউকে কোন  খারাপ কথা  বলতে দেখলে তাকে হাত বা মাথার ইশারা দ্বারা নিষেধ করতে পারবে। মুখ দ্বারা   নাজায়িয।   (বাহারে   শরীয়াত,   ১ম   খন্ড,   ৭৭৪  পৃষ্ঠা। দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ৩৯ পৃষ্ঠা)<br /><br />খোৎবা শ্রবণকারী দরূদ শরীফ পড়তে পারবে না<br /><br />খতিব  সাহেব  খোৎবাতে  সুলতানে  মদীনা,   হুযুর   صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم এর নাম  মোবারক  উচ্চারণ  করার সময়   উপস্থিত  মুসল্লীরা মনে  মনে  দরূদ শরীফ পাঠ  করবে।  খোৎবা  পাঠের  সময়  মুখে  দরূদ  শরীফ  পড়ার অনুমতি নেই। অনুরূপ সাহাবায়ে  কিরামগণের عَلَیۡہِمُ  الرِّضۡوَان  নাম উচ্চারণ করার  সময়ও   মুখে  رَضِیَ  اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ বলার অনুমতি নেই। (বাহারে শরীয়াত, ১ম  খন্ড,  ৭৭৫  পৃষ্ঠা।  দুররে মুখতার, ৩য়  খন্ড,   ৪০  পৃষ্ঠা)</div>

জুমা ফরজ হওয়ার শর্ত

জুমা আদায় করা ফরয হওয়ার জন্য ১১টি শর্ত ❁ শহরে  মুকীম হওয়া। ❁  সুস্থ হওয়া, অসুস্থের  উপর জুমা   ফরয   নয়।  অসুস্থ দ্বারা এটাই উদ্দেশ্য   যে, ...

Read more »

বিয়ের খোতবা শুনা ওয়াজিব

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">বিয়ের খোৎবা শুনা ওয়াজীব<br /><br />জুমার খোৎবা  ছাড়াও   অন্যান্য  খোৎবা ও শ্রবণ করা  ওয়াজীব। যেমন-দুই  ঈদের  খোৎবা ও বিয়ের খোৎবা ইত্যাদি। (দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ৪০ পৃষ্ঠা)<br /><br />প্রথম  আযানের  সাথে   সাথেই    কাজ  কর্মও     নাজায়িয হয়ে যায়<br /><br />প্রথম    আযান    হওয়ার     সাথে   সাথেই   জুমার   নামাযে যাওয়ার    প্রস্তুতি    গ্রহণ    করা    ওয়াজীব।    ক্রয়    বিক্রয়  ইত্যাদি যা জুমায় যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা  সৃষ্টি   করে তা পরিত্যাগ   করা   ওয়াজীব।  এমন   কি  জুমার   নামাযের জন্য   রাস্তা     দিয়ে   যাওয়ার   সময়ও    ক্রয়-বিক্রয়    করা জায়িয নেই। আর মসজিদে ক্রয় বিক্রয় করা জঘন্যতম গুনাহ।   খাবার   গ্রহণ  করার  সময়    যদি  জুমার  আযান শুনা  যায়  এবং  খাবার  শেষ  করতে  গেলে  যদি  জুমার  নামায  ছুটে    যাওয়ার   আশংকা   থাকে,   তাহলে  খাবার শেষ  না করেই জুমার নামাযের জন্য চলে  যেতে হবে। ধীর-স্থির   ও   শান্তভাবে   জুমার   নামাযের   জন্য   যাবে।  (আলমগিরী, ১ম    খন্ড, ১৪৯  পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত,   ১ম  খন্ড,  ৭৭৫  পৃষ্ঠা।  দুররে  মুখতার, ৩য়  খন্ড,   ৪২ পৃষ্ঠা)  বর্তমানে  ইলমে দ্বীন থেকে দূরত্বের সময়  মানুষ অন্যান্য   ইবাদতের    ন্যায়   খোৎবা   শুনার   মতো    এক মহান ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতেও বিভিন্ন ধরণের ভুল-ভ্রান্তিু করে অনেক গুনাহে  লিপ্ত হচ্ছে। তাই    খতিব  সাহিবের প্রতি আমার মাদানী অনুরোধ তিনি যেন অসংখ্য  নেকী অর্জনের জন্য প্রত্যেক জুমাতে খোৎবার আযানের পূর্বে মিম্বরে উঠার আগে এ ঘোষণা দেন।<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjUO8Vfl5Td0dcXITXQRO64z2XJDYa1EINOEzfC0a2T73TBtWkx2xzr2K7BUjW4z-ENqfwRGd2VAoU-tAizW9j8GmA5bdQcmQ3mtE3ZBLXFf0-a23ft37FqNa5Zjra-Fhunrio_6y6aObua/s1600/3952_1-500x450-500x350.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="350" data-original-width="500" height="224" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjUO8Vfl5Td0dcXITXQRO64z2XJDYa1EINOEzfC0a2T73TBtWkx2xzr2K7BUjW4z-ENqfwRGd2VAoU-tAizW9j8GmA5bdQcmQ3mtE3ZBLXFf0-a23ft37FqNa5Zjra-Fhunrio_6y6aObua/s320-rw/3952_1-500x450-500x350.jpg" width="320" /></a></div><br /><br />খোৎবার ৭টি মাদানী ফুল<br /><br />❁হাদীস  শরীফে  বর্ণিত  আছে:   “যে ব্যক্তি  জুমার দিন মানুষের গর্দান টপকিয়ে টপকিয়ে সামনে যায়, সে যেন জাহান্নামের  দিকে  পুল  তৈরী  করল।”  (তিরমিযী,  ২য়  খন্ড,  ৪৮ পৃষ্ঠা,  হাদীস-৫১৩)  জাহান্নামের   দিকে পুল  তৈরী   করার   অর্থ    হলো,   তার    উপর   আরোহণ   করে মানুষ জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড,  ৭৬১-৭৬২  পৃষ্ঠা)  ❁    খতিবের  দিকে  মুখ   করে বসা     সাহাবীদের      সুন্নাত।     (মিশকাত     শরীফ     হতে  সংকলিত, ১২৩ পৃষ্ঠা) ❁বুজুর্গানে দ্বীন رَحِمَہُمُ اللہُ تَعَالٰی বলেন:   দু’জানু  হয়ে  বসে  খোৎবা  শ্রবণ  করুন।   প্রথম খোৎবায়    (নামাযের    মত)    হাত    বেঁধে    এবং    দ্বিতীয়  খোৎবায় উরুর উপর হাত রেখে খোৎবা শুনলে  اِنۡ شَآءَ  اللہ  عَزَّوَجَلَّ  দুই  রাকাআত  নামাযের  সাওয়াব  পাওয়া  যাবে।   (মিরাতুল   মানাজীহ,     ২য়    খন্ড,    ৩৩৮   পৃষ্ঠা) ❁আ’লা   হযরত   ইমাম  আহমদ   রযা   খাঁন   رَحْمَۃُ   اللّٰہِ تَعَالٰی  عَلَیْہِ  বলেন:  “খোৎবার  মধ্যে   হুযুর   পুরনূর  صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی   عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم   এর  নাম   মোবারক   শুনলে মনে মনে   দরূদ  শরীফ  পড়তে হবে।কেননা, খোৎবা  পাঠের সময় চুপ থাকা ফরয।” (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৮ম  খন্ড,   ৩৬৫  পৃষ্ঠা)    ❁  “দুররে   মুখতার”   কিতাবে উল্লেখ আছে; খোৎবার সময় পানাহার  করা, কথা বলা যদিও  سُبۡحٰنَ  اللہ  বলুক  না  কেন,  সালাম  ও  সালামের  জবাব দেয়া, সৎকাজের কথা  বলা ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে হারাম। (দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ৩৯ পৃষ্ঠা)<br /><br />❁আ’লা  হযরত رَحْمَۃُ اللّٰہِ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ বলেন: খোৎবা পাঠের সময় মসজিদে হাটাহাটি করা হারাম। ওলামায়ে কিরামগণ رَحِمَہُمُ اللہُ السَّلَامবলেন:খোৎবা  চলাকালীন সময়ে   কেউ   মসজিদে   আসলে   মসজিদের   যে   পর্যন্ত  এসে  পৌঁছেছে  সেখানেই  বসে  যাবে,  সামনে  অগ্রসর  হবে   না।   অগ্রসর  হলেই  তা  কাজে    পরিগণিত   হবে। আর   খোৎবা    চলাকালীন সময়ে কোন  কাজ বৈধ নয়। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৮ম খন্ড, ৩৩৩ পৃষ্ঠা) ❁আ’লা হযরত    رَحۡمَۃُ   اللّٰہ   ِتَعَالٰی    عَلَیہِ     আরো   বর্ণনা   করেন, “খোৎবা    পাঠের    সময়    কোন    দিকে    ঘাঁড়    ফিরিয়ে  দেখাও হারাম।” (প্রাগুক্ত, ৩৩৪ পৃষ্ঠা)<br /><br />জুমার ইমামতির গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা<br /><br />একটি অতীব জরুরী বিষয়, যার প্রতি সাধারণ মানুষের মোটেও  মনযোগ   নেই।   আর  তা  হলো,  তারা    জুমার নামাযকে   অন্যান্য   নামাযের   মতো   মনে   করে।   যার  ইচ্ছা   সে জুমা কায়েম  করে ফেলে, আর যার ইচ্ছা সে  জুমার  নামায    পড়িয়ে   দেয়।   অথচ   এটা  নাজায়েয। কেননা, জুমা কায়েম   করা ইসলামী সাম্রাজ্যের বাদশা  অথবা    তাঁর      প্রতিনিধিরই     কাজ।    যেখানে    ইসলামী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত নেই সেখানে সবচেয়ে বড় ফকীহ্ই সুন্নী  আলিম  বিশুদ্ধ    আকীদা  পোষণকারী     শরীয়াতের বিধি বিধান বাস্তবায়নে মুসলিম বাদশাহের স্থলাভিষিক্ত হবেন এবং তিনিই জুমা কায়েম করবেন। তাঁর অনুমতি ব্যতীত   জুমা    অনুষ্ঠিত    হতে     পারে   না।   আর   এরূপ ফকীহ  না   থাকলে   সাধারণ  মানুষ যাকে  ইমাম নিযুক্ত করবেন    তিনিই  জুমা   কায়েম  করতে   পারবেন।   আর আলিম     বিদ্যমান       থাকা      অবস্থায়     সাধারণ     জনগণ কাউকে    নিজেদের     ইচ্ছামত       ইমাম    নিযুক্ত    করতে  পারবে না।<br /><br />এটাও    হতে    পারে    না    যে,    দু’চারজন    লোক    মিলে  কাউকে     ইমাম      নিযুক্ত     করলো     এ     ধরণের    জুমার কোথাও   প্রমাণ    নেই।    (বাহারে    শরীয়াত,   ১ম   খন্ড, ৭৬৪ পৃষ্ঠা)<br /><br />صَلُّوْا  عَلَی الْحَبِیْب!           صَلَّی اللهُ    تَعَالٰی عَلٰی  مُحَمَّد</div>

বিয়ের খোতবা শুনা ওয়াজিব

বিয়ের খোৎবা শুনা ওয়াজীব জুমার খোৎবা  ছাড়াও   অন্যান্য  খোৎবা ও শ্রবণ করা  ওয়াজীব। যেমন-দুই  ঈদের  খোৎবা ও বিয়ের খোৎবা ইত্যাদি। (দুররে মুখতার...

Read more »

ঈদের নামাজের পদ্ধতি ও ফযীলত

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">ঈদের নামাযের পদ্ধতি<br />দরূদ শরীফের ফযীলত<br /><br />রহমতে আলম,  নূরে মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “যে  ব্যক্তি জুমার রাত ও  জুমার  দিন  আমার   উপর   একশত বার দরূদ   শরীফ   পড়বে,  আল্লাহ্   তাআলা   তার    ১০০টি অভাব  পূরণ করবেন।   (তার  মধ্যে)   ৭০টি আখিরাতে আর   ৩০টি   দুনিয়াতে।”  (তারিখে    দিমিশ্ক  লি   ইবনে আসাকির,    ৫৪তম    খন্ড,    ৩০১    পৃষ্ঠা,    দারুল    ফিক্র  বৈরুত)<br /><br />صَلُّوْا  عَلَی  الْحَبِیْب!           صَلَّی  اللهُ   تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /><br />অন্তর জীবিত থাকবে<br /><br />মদীনার  তাজেদার,    রাসূলদের  সরদার,   হুযুর  পুরনূর  صَلَّی   اللّٰہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ     وَسَلَّم  ইরশাদ   করেন:   “যে ব্যক্তি  দুই ঈদের   রাতে (অর্থাৎ-ঈদুল ফিতর  ও   ঈদুল আযহার রাত দু’টিতে) সাওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে জেগে থেকে  ইবাদত  করেছে,  তার   অন্তর  ঐ   দিন  মরবেনা,  যেদিন মানুষের অন্তর মরে যাবে।” (ইবনে মাজাহ, ২য় খন্ড,   ৩৬৫     পৃষ্ঠা   হাদীস   নং-১৭৮২,  দারুল  মারেফা বৈরুত)<br /><br />জান্নাত ওয়াজীব হয়ে যায়<br /><br />অন্য    এক    জায়গায়    হযরত    সায়্যিদুনা    মু‘আয    বিন  জাবাল  رَضِیَ  اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَنْہُ  বলেন:  “যে  ব্যক্তি  পাঁচটি  রাতে   জেগে  থাকে (অর্থাৎ-জেগে   সারা রাত ইবাদতে  কাটায়)   তার  জন্য   জান্নাত  ওয়াজীব  হয়ে     যায়।  (সে রাতগুলো   হলো,   )  যিলহজ্জ    শরীফের  ৮,    ৯  ও   ১০  তারিখের  রাত, (তিন রাততো এভাবে হলো) আর  ৪র্থ রাতটি   হলো   ঈদুল   ফিতরের   রাত   এবং   ৫ম   রাতটি  হলো শাবানের ১৫ তারিখ রাত (অর্থাৎ-শবে বরাত)  । (আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব,   ২য়  খন্ড,   ৯৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং-২)<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgAtrlDnRbJUmxAlOL54V7IZWnIq6M5rInw1ptkcsj7sXRGveWGtnOi6sfWmupU10Q5KWb-Lc9UMJ3wF3_E1QRCT2LDcadUHQSpELq0LMyAngQt5Mhy5pa86h7mkTBrPlGUU5-i5u2tIJEW/s1600/th+%25283%2529.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="158" data-original-width="244" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgAtrlDnRbJUmxAlOL54V7IZWnIq6M5rInw1ptkcsj7sXRGveWGtnOi6sfWmupU10Q5KWb-Lc9UMJ3wF3_E1QRCT2LDcadUHQSpELq0LMyAngQt5Mhy5pa86h7mkTBrPlGUU5-i5u2tIJEW/s1600-rw/th+%25283%2529.jpg" /></a></div><br /><br />ঈদের নামাযের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পূর্বেকার সুন্নাত<br /><br />হযরত  সায়্যিদুনা  বুরাইদা  رَضِیَ  اللّٰہُ  تَعَالٰی    عَنْہُ  থেকে বর্ণিত;    নবীয়ে    রহমত,    শফীয়ে    উম্মত,    তাজেদারে  রিসালাত,  হুযুর  صَلَّی  اللّٰہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  ঈদুল ফিতরের দিন   কিছু খেয়ে নামাযের  উদ্দেশ্যে  তাশরীফ নিয়ে যেতেন। আর ঈদুল আযহার দিন নামায শেষ না  হওয়া পর্যন্ত কিছু খেতেন না। (তিরমিযী, ২য় খন্ড, ৭০ পৃষ্ঠা,     হাদীস-    ৫৪২,     দারুল    ফিক্র     বৈরুত)    বুখারী  শরীফের   বর্ণনায়    হযরত   সায়্যিদুনা   আনাস  رَضِیَ  اللّٰہُ  تَعَالٰی عَنْہُ  থেকে বর্ণিত; হুযুর صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  ঈদুল   ফিতরের  দিন  কয়েকটি  খেজুর   না  খেয়ে  (নামাযের   উদ্দেশ্যে) তাশরীফ  নিয়ে  যেতেন  না। আর খেজুরের  সংখ্যা  বিজোড়    হতো। (বুখারী শরীফ, ১ম  খন্ড, ৩২৮ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৯৫৩)<br /><br />ঈদের নামাযের উদ্দেশ্যে যাওয়া আসার সুন্নাত সমূহ<br /><br />হযরত  সায়্যিদুনা   আবু     হুরাইরা  رَضِیَ   اللّٰہُ   تَعَالٰی   عَنْہُ থেকে বর্ণিত,  মদীনার  তাজেদার,  রাসূলদের   সরদার, হুযুরে আনওয়ার صَلَّی اللّٰہُ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ঈদের  দিন    (ঈদের    নামাযের    উদ্দেশ্যে)     এক     রাস্তা    দিয়ে (তাশরীফ    নিয়ে)  যেতেন  এবং  অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসতেন।    (তিরমিযী,    ২য়    খন্ড,    ৬৯    পৃষ্ঠা    হাদীস  নং-৫৪১)<br /><br />ঈদের নামাযের পদ্ধতি<br /><br />প্রথমে   এভাবে   নিয়্যত    করুন,   আমি    আল্লাহ্র   ওয়াস্তে কিবলামূখী  হয়ে    এই   ইমামের   পিছনে  অতিরিক্ত   ছয় তকবীরের সাথে  ঈদুল  ফিতরের অথবা ঈদুল আযহার দুই   রাকাত   নামাযের   নিয়্যত  করছি।”  অতঃপর  কান পর্যন্ত     হাত    উঠিয়ে     اَللهُ   اَكْبَرُ   বলে   স্বাভাবিকভাবে নাভীর  নিচে হাত  বেঁধে   নিবেন  এবং   সানা পড়বেন। এরপর কান পর্যন্ত হাত   উঠাবেন এবং اَللهُ اَكْبَرُ বলে হাত (না বেঁধে)  ঝুলিয়ে রাখবেন। অতঃপর কান   পর্যন্ত পুনরায়    হাত   উঠাবেন  এবং  اَللهُ  اَكْبَرُ   বলে  ঝুলিয়ে রাখবেন।   অতঃপর  আবার   কান   পর্যন্ত    হাত  উঠাবেন এবং   اَللهُ  اَكْبَرُ  বলে  হাত  বেঁধে  নিবেন।   অর্থাৎ-১ম তাকবীরের পর হাত বাঁধবেন, এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় তাকবীরে হাত (না বেঁধে) রাখবেন এবং ৪র্থ তাকবীরে হাত   বেঁধে   নিবেন।    এটাকে  এভাবে  স্মরণ    রাখবেন, দাঁড়ানো অবস্থায় তাকবীরে পর যেখানে কিছু পড়তে হবে    সেখানে  হাত বাঁধতে  হবে আর যেখানে   পড়তে হবে  না  সেখানে  হাত  ঝুলিয়ে  রাখতে  হবে।  অতঃপর  ইমাম     সাহেব      তাআউয়ুজ      ও      তাসমিয়াহ      (অর্থাৎ আউযুবিল্লাহ    ও  বিসমিল্লাহ)   নিম্নস্বরে   পড়বেন  এবং সূরা  ফাতিহা   ও   অন্য   সূরাকে  (উচ্চ   স্বরে)  পড়বেন, এরপর     রুকু   করবেন।    দ্বিতীয়   রাকাতে    প্রথমে    সূরা ফাতিহা এবং   অন্য একটি সুরাকে উচ্চস্বরে  পড়বেন। অতঃপর    তিনবার      কান    পর্যন্ত     হাত    উঠাবেন    এবং প্রতিবারে  اَللهُ اَكْبَرُ  বলবেন।    এ সময় হাত বাঁধবেন না বরং ঝুলিয়ে  রাখবেন। এরপর ৪র্থ   তাকবীরে   হাত  উঠানো  ছাড়াই  اَللهُ    اَكْبَرُ  বলে  রুকুতে  চলে  যাবেন এবং    নিয়মানুযায়ী    নামাযের    বাকী   অংশটুকু     সম্পন্ন করবেন।  প্রত্যেক  দুই  তাকবীরের  মাঝখানে  তিনবার  “سُبْحٰنَ    الله”    বলার   পরিমাণ   সময়   নিশ্চুপ     দাঁড়িয়ে   থাকতে হবে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৭৮১ পৃষ্ঠা। দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ৫১ পৃষ্ঠা)<br /><br />ঈদের নামায কার উপর ওয়াজীব?<br /><br />দুই    ঈদের   (অর্থাৎ-ঈদুল   ফিতর   ও   ঈদুল    আযহার) নামায  ওয়াজীব।   যাদের উপর জুমার নামায ওয়াজীব শুধুমাত্র তাদের জন্য (ঈদের নামায ওয়াজীব) । ঈদের নামাযে     আযানও    নেই,    ইকামতও     নেই।      (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৭৭৯ পৃষ্ঠা)<br /><br />ঈদের নামাযে খোৎবা সুন্নাত<br /><br />দুই  ঈদের নামায আদায়ের    শর্তাবলী জুমার নামাযের ন্যায়।   শুধুমাত্র  এতটুকুই  পার্থক্য   যে,  জুমার  নামাযে  খোৎবা শর্ত আর ঈদের নামাযে খোৎবা সুন্নাত। জুমার খোৎবা  নামাযের  আগে আর  ঈদের খোৎবা  নামাযের  পর    দিতে    হয়।   (বাহারে   শরীয়াত,   ১ম   খন্ড,   ৭৮১ পৃষ্ঠা। দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ৬০ পৃষ্ঠা)<br /><br />ঈদের নামাযের সময়<br /><br />এই   দুই  ঈদের    নামাযের  সময়  হলো,  সূর্য  এক  বর্শা পরিমাণ   উপরে  উঠার  (অর্থাৎ-সূর্যোদয়ের   ২০  অথবা ২৫         মিনিট)         পর         থেকে         দাহওয়ায়ে         কুবরা”  অর্থাৎ-শরয়ীভাবে অর্ধ্বদিন পর্যন্ত। কিন্তু ঈদুল ফিতরের নামায    একটু    দেরীতে    আর    ঈদুল    আযহার    নামায  তাড়াতাড়ি আদায় করা  মুস্তাহাব।  (বাহারে শরীয়াত, ১ম  খন্ড,  ৭৮১  পৃষ্ঠা।  দুররে  মুখতার,  ৩য়  খন্ড,  ৬০  পৃষ্ঠা)<br /><br />ঈদের         জামাআত         কিছু         অংশ        পাওয়া         গেলে  তখন……?<br /><br />ইমামের  প্রথম  রাকাতের   তাকবীর   সমূহের   পর  যদি  মুক্তাদী     (নামাযে)       সম্পৃক্ত       হয়     তখন     ঐ     সময়ই (তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া অতিরিক্ত) তিনটি তাকবীর বলবে   যদিও   ইমাম   ক্বিরাত   পড়া    শুরু    করে   দেয়।  ইমাম   যদিও   তিনটির   চেয়ে   অতিরিক্ত   বলে   থাকেন  তবুও মুক্তাদী তিনটিই বলবে এবং যদি  তার   তাকবীর বলার  পূর্বেই ইমাম রুকুতে চলে  যায়  তাহলে দাঁড়িয়ে  দাঁড়িয়ে তাকবীর  না  বলে ইমামের সাথে রুকুতে চলে যাবে    এবং   সেখানেই    তাকবীর   গুলো    বলবে।    যদি  ইমামকে রুকুতে পাওয়া যায় এবং মুক্তাদীর  এই প্রবল ধারণা জন্মে  যে,  তাকবীরগুলো  বলার   পরও ইমামকে রুকুতে     পাওয়া       যাবে     তাহলে      দাঁড়িয়ে      দাঁড়িয়ে  তাকবীর   বলবে   এবং  তারপর রুকুতে  যাবে আর  যদি তা     না  হয় তবে (اَللهُ  اَكْبَرُ) বলে  রুকুতে   চলে যাবে এবং    সেখানে    তাকবীরগুলো    পড়বে।    যদি    রুকুতে  তাকবীরগুলো   শেষ    করার   পূর্বেই    ইমাম   রুকু   থেকে মাথা উঠিয়ে নেন তখন বাকী তাকবীর সমূহ রহিত হয়ে যাবে।     (অর্থাৎ      অবশিষ্ট   তাকবীর   সমূহ   এখন   আর বলবে  না)  ।   আর   যদি  ইমাম   রুকু  থেকে  উঠার   পর  মুক্তাদী    জামাআতে     সম্পৃক্ত    হয়,    তবে    এখন     আর তাকবীর বলবে না বরং (ইমাম সালাম ফেরানোর পর) যখন      আপনার    অবশিষ্ট   নামায   পড়বেন   তখন    তা বলবেন।   রুকুতে   তাকবীর    বলার    কথা  যেখানে  বলা হয়েছে   সেখানে    হাত   উঠাবে    না   আর    যদি    মুক্তাদী দ্বিতীয় রাকাতে  জামাআতে  সম্পৃক্ত  হয়,  তাহলে প্রথম রাকাতের   তাকবীরগুলো   এখন   বলবে  না   বরং  যখন   তার না পাওয়া রাকাতটি আদায়   করার জন্য দাঁড়াবে তখন         তাকবীরগুলো        বলবে।       দ্বিতীয়        রাকাতের তাকবীরগুলো   যদি   ইমামের   সাথে  পাওয়া  যায়   তবে ভাল  আর  তা  না  হলে এক্ষেত্রে তা-ই প্রযোজ্য হবে যা প্রথম       রাকাতের     ক্ষেত্রে     বর্ণিত     হয়েছে।       (বাহারে শরীয়াত,  ১ম  খন্ড,  ৭৮২  পৃষ্ঠা।   দুররে  মুখতার,   ৩য় খন্ড, ৬৪ পৃষ্ঠা। আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১৫১ পৃষ্ঠা)<br /><br />ঈদের      জামাআত        পাওয়া      না      গেলে       তখন       কি করবে…?<br /><br />ইমাম  নামায   পড়ে   নিলেন   আর    এমতাবস্থায়  কোন ব্যক্তি    অবশিষ্ট   রয়ে    গেলো।    চাই     সে   শুরু    থেকেই জামাআতে   সম্পৃক্ত  হতে  না  পারুক   অথবা   অংশগ্রহণ করল     কিন্তু   কোন    কারণে   নামায   ভঙ্গ   হয়ে     গেলো, তাহলে  সে  অন্য  কোন  জায়গায় নামায পাওয়া    গেলে নামায  আদায়  করে  নেবে,  অন্যথায়  জামাআত ছাড়া নামায পড়া যাবে  না। তবে  উত্তম   এটাই যে, সে চার রাকাত    চাশ্তের   নামায   আদায়   করে   নেবে।     (দুররে   মুখতার, ৩য় খন্ড, ৬৭ পৃষ্ঠা)<br /><br />ঈদের খোৎবার হুকুম<br /><br />নামাযের  পর  ইমাম  সাহেব  দুইটি   খোৎবা   পড়বেন   এবং  জুমার  খোৎবায়  যে  সমস্ত   কাজ  সুন্নাত,      ঈদের খোৎবায়ও তা সুন্নাত।  আর যেগুলো    জুমার   খোৎবায় মাকরূহ ঈদের খোৎবায়ও সেগুলো মাকরূহ। শুধু দুইটি বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে;  জুমার  খোৎবা দেয়ার পূর্বে খতিবের (মিম্বরে) বসা সুন্নাত আর ঈদের নামাযে না বসাটা সুন্নাত। দ্বিতীয়টি হচ্ছে; ঈদের প্রথম খোৎবার পূর্বে ৯ বার এবং দ্বিতীয় খোৎবার পূর্বে ৭  বার   এবং   মিম্বর  থেকে  অবতরণের   পূর্বে  ১৪  বার (اَللهُ اَكْبَرُ) বলা সুন্নাত আর জুমার খোৎবাতে এরকম বিধান নেই। (বাহারে শরীয়াত,  ১ম  খন্ড, ৭৮৩ পৃষ্ঠা। দুররে মুখতার,   ৩য়    খন্ড, ৬৭ পৃষ্ঠা।  আলমগিরী,  ১ম খন্ড, ১৮৫ পৃষ্ঠা)<br /><br />ঈদের ২০টি সুন্নাত ও আদব<br /><br />(১) ক্ষৌরকর্ম সম্পাদন  করা (তবে  ঈদের দিন এইসব কাজ  (সুন্নাত)  মুস্তাহাব,    বাবরী  চুল   রাখবেন,  ইংলিশ কাট  নয়)   ,   (২)  নখ    কাটা,     (৩)  গোসল   করা,   (৪) মিসওয়াক  করা,  (এটা ওযুর জন্য যে মিসওয়াক  করা  হয়,   তা   ব্যতীত)  (৫)   উত্তম   কাপড়   পরিধান    করা, নতুন  থাকলে  নতুন,   নতুবা  ধোলাই   করা)   (৬)  খুশবু লাগানো,   (৭)   আংটি   পরা,   (যখনই   আংটি   পরবেন,  তখন   এ কথার প্রতি  বিশেষ  খেয়াল  রাখবেন যে,  শুধু সাড়ে    চার   মাশাহ্   (রত্তি)    থেকে   কম   ওজন   রূপার একটি মাত্র  আংটি যেন   হয়। একটির চেয়ে বেশি যেন  না    হয়     এবং    আংটিতে    পাথরও    যেন     একটি    হয়। একাধিক পাথর যাতে না হয়। পাথর ছাড়াও যেনো না পরা   হয়।     পাথরের   ওজনের   কোন    নির্দিষ্ট   পরিমাণ  নেই।   রূপার   আংটি   অথবা   বর্ণিত   পরিমাণ   ওজনের  রূপা ইত্যাদি ব্যতীত অন্য কোন ধাতব পদার্থের আংটি পুরুষ পরতে পারবে না) , (৮)  ফজরের নামায মহল্লার মসজিদে  আদায়  করা,  (৯)  ঈদুল  ফিতরের  নামাযের  উদ্দেশ্যে  যাওয়ার  পূর্বে  কয়েকটা  খেজুর  খেয়ে  নেয়া,  তিন, পাঁচ, সাত কিংবা কম বেশি, কিন্তু বিজোড় হওয়া চাই;   খেজুর   না   থাকলে   কোন   মিষ্টি   জাতীয়   জিনিস  খেয়ে নেবে।  যদি নামাযের পূর্বে কিছুই না খায়, তবুও  গুনাহ    হবে    না;   কিন্তু     ইশা    পর্যন্ত   না   খেলে   ‘ইতাব’ (তিরস্কার)    করা   যাবে,  (১০)  ঈদের   নামায  ঈদগাহে আদায় করা, (১১)  ঈদগাহে  পায়ে হেটে যাওয়া,  (১২) যানবাহনে    করে   গেলেও  ক্ষতি  নেই;     কিন্তু  যে   পায়ে হেটে    যাওয়ার   ক্ষমতা  রাখে,    তার    জন্য  পায়ে  হেটে যাওয়া    উত্তম।    আর    ফেরার     পথে    যানবাহন     করে  ফিরলেও ক্ষতি  নেই,  (১৩)  ঈদের নামাযের জন্য এক রাস্তা দিয়ে   যাওয়া  এবং অন্য   রাস্তা দিয়ে ফিরে আসা, (১৪)   ঈদের  নামাযের    পূর্বে  সদকায়ে  ফিতর  আদায়  করা। (এটাই  উত্তম,  তবে ঈদের নামাযের পূর্বে দিতে  না  পারলে     পরে  দিয়ে  দিবেন)    (১৫)  আনন্দ   প্রকাশ করা,     (১৬)     বেশি     পরিমাণে     সদকা     দেয়া,     (১৭)  ঈদগাহে প্রশান্ত মনে, হাসোউজ্জল ও দৃষ্টিকে নিচু করে যাওয়া,     (১৮)     ফিরার      সময়     পরস্পর     পরস্পরকে  মুবারকবাদ দেয়া, (১৯) ঈদের নামাযের পর মুসাহাফা অর্থাৎ হাত মিলানো ও মুয়ানাকা অর্থাৎ আলিঙ্গন করা, যেমন-সাধারণতঃ  মুসলমানদের    মধ্যে   এটার  প্রচলন রয়েছে,  এরূপ   করাটা   উত্তম  কাজ,  কারণ  এতে  খুশী প্রকাশ পায়। কিন্তু ‘আমরাদ’ বা সুদর্শন বালকের সাথে গলা   মিলানো   ফিৎনার   আশঙ্কা   থাকে।     (২০)   ঈদুল ফিতরের নামাযের জন্য যাওয়ার সময় রাস্তায় নিম্নস্বরে তাকবীর   বলবে   আর   ঈদুল   আযহার   নামাযের   জন্য  যাওয়ার পথে উচ্চরবে তাকবীর বলবে। তাকবীর হচ্ছে নিম্নরূপ:<br /><br />اَللهُ اَكْبَرُ ط اللهُ اَكْبَرُ ط لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ ط اَللهُ اَكْبَرُ وَلِلّٰهِ الْحَمْدُ ط<br /><br />অনুবাদ: আল্লাহ্ তাআলা মহান, আল্লাহ্ তাআলা মহান, আল্লাহ্ তাআলা ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই, আল্লাহ্ তাআলা      মহান,      আল্লাহ্       তাআলা      মহান,       আল্লাহ্ তাআলার জন্যই সমস্ত প্রশংসা। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড,  ৭৭৯-৭৮১  পৃষ্ঠা।  আলমগিরী,  ১ম    খন্ড,  ১৫২ পৃষ্ঠা, দারুল ফিক্র বৈরুত)<br /><br />কুরবানী ঈদের একটি মুস্তাহাব<br /><br />“ঈদুল আযহা (অর্থাৎ কুরবানীর ঈদ) সমস্ত হুকুম ঈদুল ফিতরের   মতই।   শুধু   কিছু      বিষয়ে    পার্থক্য    রয়েছে, যেমন-কুরবানীর ঈদে মুস্তাহাব হচ্ছে; কুরবানী করুক বা না   করুক   নামাযের   পূর্বে   কিছু   না   খাওয়া   আর   যদি  খেয়েও নেয় তাহলেও কোন মাকরূহও নয়।<br /><br />তাকবীরে তাশরিকের ৮টি মাদানী ফুল<br /><br />(১) যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখের ফযর থেকে শুরু করে ১৩      তারিখের     আছর     পর্যন্ত     পাঁচ     ওয়াক্তের    ফরয নামাযের পর  মসজিদে জামাআত সহকারে  আদায়রত নামাযীদেরকে একবার   উচ্চ  আওয়াজে তাকবীর  বলা  ওয়াজীব     এবং    তিনবার    বলা     উত্তম।    আর    একেই তাকবীরে তাশরীক বলা হয় এবং সেটি হচ্ছে:<br /><br />اَللهُ اَكْبَرُ ط اللهُ اَكْبَرُ ط لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ ط اَللهُ اَكْبَرُ وَلِلّٰهِ الْحَمْدُ ط<br /><br />(তানবীরুল   আবছার   সম্বলিত,   ৩য়     খন্ড,   ৭১   পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৭৭৯-৭৮৫পৃষ্ঠা)<br /><br />(২)  তাকবীরে   তাশরীক  সালাম    ফেরানোর  পরপরই   বলা ওয়াজীব। অর্থাৎ-যতক্ষণ পর্যন্ত এমন কোন আমল না   হয়  যার   কারণে  (নামাযরত  অবস্থায়  হলে)  নামায পুনরায় আদায়  করতে হয়। যেমন-মসজিদ থেকে বের হয়ে   গেলো  কিংবা  ইচ্ছাকৃতভাবে   ওযু  ভেঙ্গে  ফেলল, চাই  ভুল  করে কথা  বলুক,  তবে  তাকবীর  রহিত  হয়ে  গেলো।   আর   যদি   বিনা   ইচ্ছায়  ওযু  ভেঙ্গে  যায়  তবে (তাকবীর) বলে নিবে। (দুররে মুখতার, রদ্দুল মুহতার, ৩য়  খন্ড,    ৭৩  পৃষ্ঠা)  (৩)   শহরের  মধ্যে    অবস্থানরত মুকীম   ব্যক্তির     জন্য   তাকবীরে     তাশরীক   ওয়াজীব,  অথবা যে তার পেছনে ইকতিদা করল (তার জন্যও) । ঐ    ইকতিদাকারী  চাই   মুসাফির   হোক   কিংবা  গ্রামের অধিবাসী হোক  এবং  যদি  সে  ইকতিদা না   করে  তবে তার   (অর্থাৎ   মুসাফির   ও   গ্রামের   অধিবাসীর)   উপর  ওয়াজীব নয়। (দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ৭৪ পৃষ্ঠা)<br /><br />(৪)   মুকিম      যদি   মুসাফিরের   পিছনে   ইকতিদা   করে তবুও তার  উপর  (মুকিমের উপর) তাকবীরে তাশরীক আদায় করা ওয়াজীব, যদিও ঐ মুসাফির ইমামের জন্য ওয়াজীব নয়। (দুররে মুখতার রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৭৪  পৃষ্ঠা)  (৫)  নফল,  সুন্নাত  এবং  বিতরের  তাকবীর  ওয়াজীব নয়। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৭৮৫ পৃষ্ঠা। দুররে  মুখতার,  ৩য় খন্ড, ৭৩ পৃষ্ঠা) (৬)  জুমার পরও  ওয়াজীব এবং  ঈদের  নামাযের (কুরবানীর ঈদ)  পরও বলে      নিন।    (প্রাগুক্ত)    (৭)    মাসবুক    (যার    এক     বা ততোধিক  রাকাত    ছুটে   গেছে)   এর  উপরও  তাকবীর ওয়াজীব।   কিন্তু  সালাম ফিরানোর  পর বলবে।  (রদ্দুল  মুহতার,       ৩য়      খন্ড,      ৭৬      পৃষ্ঠা)      (৮)       মুনফারিদ (অর্থাৎ-একাকী       নামায       আদায়কারী)       এর      উপর  ওয়াজীব   নয়।   (আল   জাওহারাতুন   নাইয়িরাহ্,   ১২২  পৃষ্ঠা)   কিন্তু    এরপরও   বলে   নিন,     কেননা   সাহিবাইন (অর্থাৎ  ইমাম  আবু  ইউসুফ  ও  ইমাম  মুহাম্মদ  رَحِمَہُمُ  اللہُ تَعَالٰی)  এর মতে;  তার  উপরও  ওয়াজীব।  (বাহারে শরীয়াত,    ১ম     অংশ,    ৭৭৬   পৃষ্ঠা)   (ঈদের    ফযীলত সম্বলিত   বিস্তারিত   বিষয়াবলী     জানার   জন্য   ফয়যানে সুন্নাতের  অধ্যায়  “ফয়যানে  রমযান”  থেকে  “ফয়যানে  ঈদুল ফিতর” পড়ে নিন।)<br /><br />হে   আমাদের    প্রিয়    আল্লাহ্!    আমাদেরকে   বরকতময় ঈদের  খুশী সুন্নাতানুসারে  পালন করার তাওফীক দান করো!  আমাদেরকে মক্কা শরীফ  ও মদীনা শরীফ এবং তাজেদারে  মদীনা   صَلَّی   اللّٰہُ   تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم এর দীদার    লাভের   প্রকৃত     ঈদ   বা   খুশী     বার   বার    দান করো।<br /><br />তেরি যবকে দীদ্ হোগী যভী মেরি ঈদ হোগী,<br />মেরে খোয়াব মে তু আ-না মাদানী মদীনে ওয়ালে।</div>

ঈদের নামাজের পদ্ধতি ও ফযীলত

ঈদের নামাযের পদ্ধতি দরূদ শরীফের ফযীলত রহমতে আলম,  নূরে মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করে...

Read more »

কাফন-দাফনের নিয়মাবলী

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">মাদানী অসিয়তনামা<br /><br />(কাফন-দাফনের আহকাম সম্বলিত)<br /><br />দরূদ শরীফের ফযীলত<br /><br />নবীদের  তাজেদার,   রাসূলদের   সরদার,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم ইরশাদ করেন:  “আমার উপর     দরূদ     শরীফ     পাঠ     করো,     আল্লাহ্     তাআলা  তোমাদের উপর রহমত বর্ষণ  করবেন।” (আল কামিলু লি ইবনে আদী, ৫ম খন্ড, ৫০৫ পৃষ্ঠা)<br /><br />صَلُّوْا عَلَی  الْحَبِیْب!                صَلَّی  اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /><br />اَلْحَمْدُ لِلّٰہِ عَزَّوَجَلَّ এখন ফযরের নামাযের পর মসজিদে নববী   শরীফে         عَلٰی   صَاحِبِہَا    الصَّلٰوۃُ   وَالسَّلَام   বসে  “মদীনা মুনাওয়ারা  থেকে চল্লিশখানা   অসিয়ত” লিখার সৌভাগ্য     অর্জন  করছি।   আফসোস!  শত   আফসোস! আজ     আমার    মদীনা   মুনাওয়ারাতে   উপস্থিতির    শেষ সকাল। সূর্য প্রিয় মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর রওজা মোবারকে সালাম পেশ করার  জন্য  হাজির হতে    চলেছে।    আহ!     আজ        রাতেই    যদি    জান্নাতুল বাক্বীতে  সমাহিত   হওয়ার  কোন   ব্যবস্থা  না  হয়,  তবে (আগামীকালই) মদীনা শরীফ ত্যাগ করতে হবে। চোখ অশ্রুসিক্ত, মন অস্থির হয়ে আছে। হায়!<br /><br />আফসোস চন্দ ঘড়িয়া তয়্যবা কি রাহ গেয়ী হে,<br />দিল মে জুদায়ী কা গম তুফান মাচা রাহা হে।<br /><br />আহ! মন ব্যথা বেদনায় নিমজ্জিত। মদীনার বিচ্ছেদের হৃদয়  বিদারক   চিন্তা   আপাদমস্তক   বেদনার   প্রতিচ্ছবি  বানিয়ে  দিয়েছে।   এমন   মনে  হচ্ছে  যেন   মুখের   হাসি কেউ  ছিনিয়ে  নিয়ে গেছে। আহ!  শীঘ্রই   মদীনা ছেড়ে যেতে হবে। তখন মন ভেঙ্গে যাবে। আহ! মদীনা থেকে স্বদেশের   উদ্দেশ্যে   রাওয়ানা   হওয়ার   মূহুর্তটি   এমনি  বেদনা  দায়ক    হয়ে   থাকে   যে,  যেন   কোন  দুগ্ধপোষ্য শিশুকে তার মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আর   সে  খুবই   আফসোস করে! কেঁদে  কেঁদে  বারবার মায়ের    দিকে  ফিরে  দেখছে,  হয়ত  মা   পুনরায়  তাকে ডেকে   নিবেন…..স্নেহ  ভরে  তাকে  কোলে  তুলে    নিয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরবে। আর শ্লোক শুনিয়ে আপন মায়াভরা কোলে মধুর ঘুম পাড়াবেন। হায়!<br /><br />মে শিকাস্তা দিল লিয়ে বাওঝাল কদম রাখতা হুয়া<br />চল পড়াহো ইয়া শাহানশাহে মদীনা আলওয়াদা<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgJ9h3oh4TnbXbZXzwkNxSsCCg_Z9KaD3im0CIFqcpgA5XiradxJuODPBKn3Ssff84u_biyV5QsFQutc-Khamn7QN7rPzX42YTgtsWS6M1yMNqP30M7ddw6Sho8zsx1fKdPvDa-vzfUCo83/s1600/images4.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="249" data-original-width="589" height="135" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgJ9h3oh4TnbXbZXzwkNxSsCCg_Z9KaD3im0CIFqcpgA5XiradxJuODPBKn3Ssff84u_biyV5QsFQutc-Khamn7QN7rPzX42YTgtsWS6M1yMNqP30M7ddw6Sho8zsx1fKdPvDa-vzfUCo83/s320-rw/images4.jpg" width="320" /></a></div><br /><br />এখন   আমি    ভারাক্রান্ত   অন্তরে     আপনাদের   খেদমতে ৪০টি    অসিয়ত     পেশ   করছি।    দা’ওয়াতে    ইসলামীর সাথে সম্পৃক্ত  সকল ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোনের  প্রতিও   এমনকি,   আমার   সন্তান    সন্ততি  ও  পরিবারের অন্যান্য   সদস্যরা   আমার   এ    অসিয়ত    সমূহের   প্রতি বিশেষ মনযোগ দিবেন। মদীনার নুরানী মাটিতে, সবুজ গম্বুজ  ও মীনারের সুশীতল  ছায়াতলে  যদি আমার মত পাপি ও গুনাহগারকে সমাহিত করা হতো,   তবে কতই না    সৌভাগ্য    হতো।     হায়     আফসোস!    যদি    রাসূলে আকরাম, হুযুর পুরনূর   صَلَّی    اللہُ  تَعَالٰی   عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর  নূরানী জালওয়াতে  আমার  শাহাদাত নসীব  হতো  এবং  জান্নাতুল বাক্বীতে যদি আমার জন্য দু’গজ জমির ব্যবস্থা     হতো।  তবে  উভয়    জাহানে  আমার  সৌভাগ্য  আর সৌভাগ্যই হতো। আহ! আর তা না হলে যেখানেই ভাগ্য অবধারিত…….<br /><br />(১) যদি   মূমুর্ষ অবস্থা  পাই   তবে,  ঐ মুহূর্তের যাবতীয় কার্যাবলী  সুন্নাত  মোতাবেক   সম্পাদন  করবেন। সম্ভব হলে     ডান   পার্শ্বে   শুয়াবেন,   চেহারা   কিবলামুখী   করে দিবেন। সূরা ইয়াসীন শরীফও পাঠ করে শুনাবেন।<br /><br />(২) শেষ নিঃশ্বাস  ত্যাগের পরের সকল কার্যাবলীতেও  সুন্নাতের   প্রতি    লক্ষ্য  রাখবেন।  যেমন:   কাফন-দাফন ইত্যাদি     কার্যাবলী    তাড়াতাড়ি    সম্পাদন    করবেন।  বেশি লোক সমাগমের আশায় জানাযা,  দাফন ইত্যাদি অযথা  বিলম্ব  করা  সুন্নাত  নয়।  বাহারে  শরীয়াত,  ৪র্থ  খন্ডের     উল্লেখিত   বিধানাবলী  উপর   আমল  করবেন। বিশেষত জোরালো তাগিদ হলো;কখনো বিলাপ করবে না। কেননা, এটা হারাম এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ।<br /><br />(৩)  কবরের  সাইজ   ইত্যাদিও  যেন সুন্নাত মোতাবেক হয়   এবং  লাহাদ  কবরই  তৈরী    করবেন,  কেননা  এটা সুন্নাত।<br /><br />(৪) কবরের ভিতরের দেয়াল  ইত্যাদি যেন কাঁচা মটির হয় (যেভাবে আছে সেভাবেই রেখে দিবেন) । আগুনের পোড়ানো ইট দ্বারা তা পাকা করবেন না। যদি ভিতরে নিতান্তই ইটের দেয়াল করতে হয়, তাহলে মাটির কাদা দ্বারা ভিতরে ভালভাবে লেপে দিবেন।<br /><br />(৫)  সম্ভব হলে কবরের ভিতরের তক্তায় সূরা ইয়াসীন শরীফ,     সূরা   মুলক   ও   দরূদে   তাজ   পাঠ   করে   ফুঁক দিবেন।<br /><br />(৬)  সুন্নাত   মোতাবেক   কাফনের   ব্যবস্থা  সগে  মদীনা عُفِىَ  عَنْهُ  এর   (লিখকের)   নিজস্ব  টাকা  থেকেই   যেন  হয়। আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন (সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ এর নিজস্ব টাকা দ্বারা কাফনের খরচ নির্বাহ করা সম্ভব না   হলে)   কোন   বিশুদ্ধ   সুন্নী   আকীদা   সম্পন্ন   ব্যক্তির  হালাল উপার্জন থেকেই কাফনের ব্যবস্থা করবেন।<br /><br />(৭)  দাঁড়ি   ওয়ালা,   পাগড়ীধারী,  সুন্নাতের    অনুসারী কোন   ইসলামী   ভাই    দ্বারা   সুন্নাত  মোতাবেক   গোসল দিবেন।      (সৈয়দ       বংশের      কোন       ব্যক্তি        যদি      এ গুনাহগারকে  গোসল দেয়,  তবে সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ এটাকে নিজের জন্য বেয়াদবী মনে করবে।)<br /><br />(৮)   গোসল   দেয়ার   সময়   পরিপূর্ণভাবে  সতর  ঢেকে   রাখবেন।  খয়েরী   রঙের  কিংবা কোন গাঢ় রঙের   দু’টি মোটা   চাদর  দ্বারা  নাভী   থেকে   হাটু  পর্যন্ত  যদি   ঢেকে রাখা হয়, তাহলে সতর দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।   হ্যাঁ!   পানি   শরীরের   প্রতিটি    অঙ্গেই   বরং    চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত প্রবাহিত হওয়া জরুরী।<br /><br />(৯) কাফনের কাপড়    যদি   যমযমের পানি বা   মদীনা শরীফের পানি বা   উভয়ের পানি দ্বারা সিক্ত  করা    হয়,  তবে তো সৌভাগ্যই। আহ! সৈয়দ বংশের কোন লোক যদি মাথায় সবুজ পাগড়ী পরিয়ে দেন, তাহলে  বড়ই সৌভাগ্য হবে।<br /><br />(১০) মৃত  ব্যক্তির    গোসলের  পর কাফন দ্বারা  চেহারা  আবৃত    করার  পূর্বে   প্রথমে  কপালের    উপর  শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা “بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحيْمِ” লিখে দিবেন। শুধু ওলামা     ও    মাশায়িখকে   ইমামা   (পাগড়ী)    সহকারে  দাফন    করা     যেতে     পারে।     সাধারণ     মৃত    ব্যক্তিকে পাগড়ী সহকারে দাফন করা নিষেধ।<br /><br />(১১)  অনুরূপভাবে  বুকের  উপরও  لَاۤ  اِلٰهَ  اِلَّا  اللهُ  مُحَمَّدٌ  رَّسُوْ لُ الله صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم লিখে দিবেন।<br /><br />(১২) কলবের স্থানে یَارَسُوْلَ الله صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم লিখে দিবেন।<br /><br />(১৩)  নাভী   ও  বুকের   মধ্যবর্তী  স্থানে  কাফনের  উপর শাহাদাত    আঙ্গুল   দ্বারা   “ইয়া    গাউছে   আজম   দস্তগীর رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ, ইয়া ইমাম আবু হানিফা رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی   عَنْہُ,   ইয়া  ইমাম   আহমদ  রযা   رَحْمَۃُ  اللّٰہِ  تَعَالٰی عَلَیْہِ,  ইয়া    শেখ  জিয়া  উদ্দীন  رَحْمَۃُ   اللّٰہِ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ” লিখে দিবেন।<br /><br />(১৪)  (পিঠের  অংশ  ব্যতীত)  নাভী  থেকে  মাথা  পর্যন্ত  সম্পূর্ণ   কাফনে    মদীনা    মদীনা   লিখে     দিবেন।   স্মরণ রাখবেন!  এসব   কিছু   কালি  দ্বারা  নয়,    বরং  শাহাদাত আঙ্গুল    দ্বারাই    লিখবেন।   আর   সৈয়দ    বংশের   কোন  লোক তা লিখে দিলে বড়ই সৌভাগ্য হবে।<br /><br />(১৫)    উভয়     চক্ষুর      উপর    মদীনা     শরীফের      কাটা, খেজুরের বিচি রেখে দিবেন।<br /><br />(১৬) জানাযার লাশবাহী খাট বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময়ও সকল সুন্নাতের প্রতি যথেষ্ট লক্ষ্য রাখবেন।<br /><br />(১৭) জানাযার লাশবাহী খাট বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময়  সকল  ইসলামী  ভাই  এক  সাথে  ইমামে  আহলে  সুন্নাতের  লিখিত   দরূদ   শরীফের     কসীদা  “কা’বে  কে বদরুদ দোজা তুম  পে করোড়ো দুরূদ” পাঠ করবেন। (এটা  ছাড়াও  অন্যান্য  নাত  ইত্যাদি  পড়বেন।  কিন্তু  শুধুমাত্র     ওলামায়ে     আহলে     সুন্নাতের     নাতই         পাঠ করবেন)<br /><br />(১৮)   কোন   বিশুদ্ধ   সুন্নী   আকীদা   সম্পন্ন   আমলধারী  আলিম  বা  সুন্নাতের  পরিপূর্ণ  অনুসারী  কোন  ইসলামী  ভাই   অথবা  উপযুক্ত    থাকলে  আপন  সন্তানদের  মধ্যে কেউ   জানাযার  নামায পড়াবেন। কিন্তু আমার  একান্ত ইচ্ছা   হচ্ছে,  সৈয়দ  বংশের   কোন  ব্যক্তি   দ্বারা  আমার  জানাযার নামায পড়ানো।<br /><br />(১৯) সৈয়দ বংশের সম্মানিত ব্যক্তিরা নিজেদের পবিত্র হাত দ্বারা আমাকে কবরে নামিয়ে মহান প্রতিপালকের   নিকট সোপর্দ করলে সৌভাগ্য হবে।<br /><br />(২০)   কবরের   চেহারার  দিকস্থ  দেয়ালে  তাক  বানিয়ে সেখানে   সুন্নাতের     পরিপূর্ণ    অনুসারী   কোন   ইসলামী  ভাইয়ের হাতে লিখিত  আহাদ নামা, নালাইন  শরীফের নকশা,  সবুজ  গম্বুজ  শরীফের   নকশা, শাজারা শরীফ, নকশে হারকারা ইত্যাদি তাবাররুকাত রেখে দিবেন।<br /><br />(২১)  জান্নাতুল বাক্বীতে দাফনের সুব্যবস্থা হলে বড়ই সৌভাগ্য    হবে।  তবে   সেখানে   দাফন   করবেন  নতুবা আল্লাহ্র কোন ওলির কবরের পাশে, তাও সম্ভব না হলে ইসলামী    ভাইগণ    যেখানেই     ভালো     মনে      করবেন!  সেখানেই আমাকে  দাফন করবেন,   তবে কারো  জবর  দখলকৃত    জমিতে    দাফন    করবেন    না।    কেননা    তা  হারাম।<br /><br />(২২) (দাফনের পর) কবরে আযান দিবেন।<br /><br />(২৩) সৈয়দ বংশের কোন ব্যক্তি দ্বারা তালকীন করালে ধন্য হবো।<br /><br />তালকীনের      ফযীলত:     নবী    করীম,     রউফুর    রহীম,  রাসূলে  আমীন,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যখন তোমাদের কোন মুসলমান ভাই মৃত্যু বরণ করে, আর তাকে কবরে সমাহিত করার পর     তোমাদের   মধ্যে   একজন   তার   কবরের   শিয়রে দাঁড়িয়ে বলবে: হে অমুকের ছেলে অমুক! তখন সে তা শুনতে   পাবে,   কিন্তু   উত্তর   দিবে   না।   অতঃপর   যখন  আবারো বলবে:  হে  অমুকের ছেলে  অমুক!  তখন  মৃত  ব্যক্তি সোজা হয়ে বসে   পড়বে।   আবার যখন  বলবে: হে  অমুকের  ছেলে   অমুক!   তখন   সে  বলবে:     আল্লাহ্  তাআলা   তোমার   উপর      দয়া    করুক।   তুমি   আমাকে  শিখিয়ে দাও। কিন্তু মৃত ব্যক্তির একথা তোমরা শুনতে  পাবে     না।     অতঃপর     সে     (অর্থাৎ-     যিনি     তালকীন  করাবেন তিনি) বলবে:<br /><br />اُذْكُرْ   مَاخَرَجْتَ  عَلَيْهِ  مِنَ الدُّنْيَا:  شَهَادَةَ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ (صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم) وَاَنَّكَ رَضِيْتَ بِاللهِ رَبًّا  وَّبِالْاِسْلَامِ دِيْنًا وَّ بِمُحَمَّدٍ (صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم) نَبِيًّا وَّ بِالْقُرْاٰنِ اِمَامًا ـ<br /><br />অনুবাদ:  “তুমি  তা  স্মরণ  করো,  যা  বলে  তুমি  দুনিয়া  থেকে    বিদায়  নিয়েছ  অর্থাৎ   একথা  সাক্ষ্য    দাও   যে,  আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم    তাঁর  বান্দা  ও  রাসূল  এবং এটাও বলো  যে,   তুমি   আল্লাহ্কে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে    আল্লাহ্র     মনোনীত    ধর্ম     হিসেবে,    হযরত মুহাম্মদ   صَلَّی   اللّٰہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ    وَسَلَّم   কে   আল্লাহ্র  প্রেরিত রাসূল  হিসেবে  এবং   কুরআন মজীদকে ইমাম  হিসেবে   মনে-প্রাণে   স্বীকৃতি   দিয়েছ     এবং   এর   উপর সন্তুষ্ট     ছিলে।”     তালকীনকারী     এ     কথা     বলার     পর  মুনকার-নকীর   ফিরিশতাদ্বয়  একে  অপরের  হাত   ধরে বলবেন:   চলো   আমরা   চলে   যাই।   তার   পাশে     বসে থেকে  আমাদের  কোন  লাভ   নেই   যাকে  লোক  দলীল শিখিয়ে দিয়েছে।   এক   ব্যক্তি  রহমতে  আলম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর নিকট আরয করল, যদি তার মায়ের  নাম  জানা  না   থাকে,  তখন  কিভাবে   তালকীন করাবে?    রাসূলুল্লাহ্   صَلَّی   اللّٰہُ    تَعَالٰی   عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “হাওয়া رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا এর দিকে সম্পর্কিত  করবে।”   (আল   কবীর   লিত  তাবরানী,  ৮ম খন্ড, ২৫০ পৃষ্ঠা, হাদীস-৭৯৭৯)<br /><br />স্মরণ     রাখবেন!   অমুকের    ছেলে    অমুকের   স্থলে   মৃত ব্যক্তি    ও   তার  মায়ের  নাম  নিবে,   যেমন-হে   মুহাম্মদ ইল্ইয়াস বিন  আমেনা। আর   মৃত ব্যক্তির মায়ের নাম  জানা না  থাকলে  মায়ের  নামের  স্থলে  হাওয়া  رَضِیَ  اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا   এ  নাম নিবে। তালকীন কেবলমাত্র আরবী ভাষায়ই পড়বেন।<br /><br />(২৪)   যারা   আমাকে   ভালবাসেন,   তারা    সম্ভব     হলে আমার দাফনের পর  ১২ দিন   পর্যন্ত, আর তা সম্ভব না হলে  কমপক্ষে   ১২   ঘন্টা   হলেও   আমার  কবরের  চার পাশে বসে যিকির, দরূদ,  কুরআন তিলাওয়াত ও নাত ইত্যাদির মাধ্যমে  আমার (অন্তরকে) মনোরঞ্জন করতে থাকবে।   اِنْ     شَآءَ    اللّٰہ   عَزَّوَجَلَّ    এতে   নতুন   জায়গায় আমার    মন    বসে    যাবে।    তবে    উক্ত    সময়েও    আর  সর্বদাই      জামাআত   সহকারে   নামায   আদায়ের   প্রতি  যতœবান হবেন।<br /><br />(২৫)    আমার   উপর    কারো   ঋন   থাকলে   তা   আমার সম্পদ   থেকে   পরিশোধ    করবেন।   আর    যদি   আমার সম্পদ না  থাকে, তাহলে  আমার সন্তান সন্ততি    জীবিত থাকলে  তারা  নতুবা  অন্য   কোন  ইসলামী    ভাই   দয়া   করে     নিজের    সম্পদ    থেকে     আমার    ঋন    পরিশোধ করবেন। আল্লাহ্ তাআলা মহান প্রতিদান দান করবেন। (বিভিন্ন   ইজতিমাতে   ঘোষণা   করে   দিবেন   যে,   কেউ  আমার দ্বারা মনে কষ্ট পেয়ে থাকলে কিংবা আমার দ্বারা কারো     হক     ধ্বংস   হয়ে    থাকলে,    সে   যেন   আমাকে (মুহাম্মদ  ইল্ইয়াস কাদেরীকে)  ক্ষমা  করে দেয়। আর কেউ    আমার    নিকট     কর্জ    পেয়ে     থাকলে    সে     যেন তাড়াতাড়ি   আমার    ওয়ারিশদের    সাথে    যোগাযোগ করে তা নিয়ে নেয় অথবা যেন ক্ষমা করে দেয়।)<br /><br />(২৬)     অধিকহারে     আমার     প্রতি     (ইছালে     সাওয়াব  করবেন)   সাওয়াব  পৌঁছাতে  থাকবেন  এবং     আমাকে মাগফিরাতের দোয়া  দ্বারা ধন্য করতে থাকবেন।   এটা  আমার জন্য বড়ই দয়া হবে।<br /><br />(২৭) সকলেই  মসলকে আ’লা হযরত অর্থাৎ-   আহলে সুন্নাত     ওয়াল     জামাআতের    মতাদর্শের   উপর   অটল থাকবেন  এবং  ইমামে    আহলে  সুন্নাত  মাওলানা   শাহ্  আহমদ   রযা   খাঁন   رَحْمَۃُ  اللّٰہِ      تَعَالٰی   عَلَیْہِ  এর  বিশুদ্ধ ইসলামী     শিক্ষা     মোতাবেক     (সুপ্রতিষ্ঠিত     থাকবেন)  আমল করবেন।<br /><br />(২৮)     বদ      মাযহাব     ও     বদ      আকীদা     পোষণকারী ব্যক্তিদের সংস্পর্শ থেকে সর্বদা কয়েক শত মাইল দূরে থাকবেন, কেননা তাদের সঙ্গ খাতিমা বিল খায়ের তথা ঈমানের সাথে মৃত্যু   হওয়ার  ক্ষেত্রে  প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি  করে। আখিরাত বরবাদ হওয়ার কারণ।<br /><br />(২৯)  তাজদারে  মদীনা,   রাহাতে  কলবো  সীনা,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم  এর    ভালবাসা এবং সুন্নাতের   উপর সর্বদা দৃঢ়ভাবে  অটল   থাকবেন।<br /><br />(৩০)   সুন্নাত   ও    ওয়াজিব    সহ   পাঁচ   ওয়াক্ত   নামায,  রমযানের   রোযা,    হজ্ব,   যাকাত   ইত্যাদি    ফরয   সমূহ যথাযথ আদায় করবেন। এতে কোন রকমের অলসতা প্রদর্শন করবেন না।<br /><br />(৩১)    গুরুত্বপূর্ণ অসিয়ত:  সর্বদা দা’ওয়াতে ইসলামীর  মারকযী     মজলিশে     শুরার      প্রতি      আনুগত্য     প্রদর্শন করবেন।   এর   প্রত্যেক   রুকন   ও     নিজের    নিগরানের শরীয়াত     সম্মত       যাবতীয়     আদেশ     নিষেধের     প্রতি আনুগত্য    প্রদর্শন    করবেন।     শরীয়াত    সম্মত     কারণ ব্যতীত মজলিশে শূরা কিংবা দা’ওয়াতে ইসলামীর   যে কোন    যিম্মাদারের  কেউ বিরোধীতা করলে   আমি তার উপর অসন্তুষ্ট, সে আমার যতই নিকটতম বন্ধু হোক না কেন।<br /><br />(৩২) প্রত্যেক ইসলামী ভাই সপ্তাহে  কমপক্ষে একবার শুরু থেকে শেষ  পর্যন্ত এলাকায়ী  দাওরা বরায়ে  নেকীর দা’ওয়াতে       অংশ     গ্রহণ    করবেন    এবং    প্রতি    মাসে কমপক্ষে তিন  দিন,   ১২  মাসে ৩০   দিন এবং  জীবনে  একাধারে কমপক্ষে ১২ মাস মাদানী কাফেলাতে সফর করুন। প্রত্যেক ইসলামী ভাই ও প্রত্যেক ইসলামী বোন নিজের  চরিত্র সংশোধনের  উপর  অবিচল থাকার  জন্য দৈনন্দিন    মাদানী   ইনআমাতের    রিসালা    পূরণ   করে, প্রতি মাসে আপন যিম্মাদারের নিকট জমা দিবেন।<br /><br />(৩৩)  তাজদারে    মদীনা,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর  ভালবাসা   ও  সুন্নাতের  বার্তাকে  ব্যাপক     হারে      দুনিয়াতে     প্রচার     ও     প্রসার      করতে থাকুন।<br /><br />(৩৪) মন্দ আকীদা, মন্দ আমল, দুনিয়ার প্রতি অনর্থক ভালবাসা,   হারাম  সম্পদ  ও  অবৈধ   ফ্যাশন   ইত্যাদির বিরুদ্ধে  নিজ  প্রচেষ্টা  অব্যাহত রাখবেন। সুন্দর    চরিত্র, সুমিষ্ট  মাদানী  ব্যবহারের  মাধ্যমে  নেকীর  দাওয়াতের  সাড়া জাগাতে থাকবেন।<br /><br />(৩৫)   রাগ,   বদমেজাজ   ও    খিটখিটে   স্বভাব   ইত্যাদি  কাছেও আসতে দিবেন  না,  অন্যথায় দ্বীনের কাজ করা আপনার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।<br /><br />(৩৬)  আমার  লিখনী   ও   বয়ানের   ক্যাসেট  সমূহ  দ্বারা দুনিয়াবী   ধন  সম্পদ  উপার্জন  করা  থেকে  সম্পূর্ণরূপে  বিরত  থাকার  জন্য  আমার  ওয়ারিশদের  প্রতি  আমার  মাদানী অনুরোধ রইল।<br /><br />(৩৭)     আমার     পরিত্যক্ত     সম্পদ     ইত্যাদির       ক্ষেত্রে  শরীয়াত নির্দেশিত পন্থার উপরই আমল করবেন।<br /><br />(৩৮) কেউ আমাকে ভালমন্দ বলে থাকলে কিংবা গালি বা   আঘাত দিয়ে  থাকলে কিংবা  আমার মনে  যেকোন   ভাবে কষ্ট দিয়ে থাকলে আমি আল্লাহ্ তাআলার ওয়াস্তে তাকে অগ্রিম ক্ষমা করে দিলাম।<br /><br />(৩৯)      আমাকে      কষ্ট       দানকারী      লোকদের       থেকে কোনরূপ প্রতিশোধ নিবেন না।<br /><br />(৪০)  অবশ্য   যদি  কেউ   আমাকে    শহীদ    করে   দেয়, তাহলে আমার পক্ষ থেকে তাকে আমার যাবতীয় প্রাপ্য ক্ষমা    করে   দিলাম।    আমার    ওয়ারিশদেরকেও   আমি অনুরোধ    করছি,  তারা   যেন   তাকে  ক্ষমা    করে  দেয়। তাজেদারে  মদীনা  صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم এর  শাফায়াতের    বদৌলতে        যদি    আমি     হাশরের    মাঠে বিশেষ অনুগ্রহ প্রাপ্ত  হই,  তাহলে اِنْ  شَآءَ    اللّٰہ   عَزَّوَجَلَّ আমি    আমার    হত্যাকারী   তথা    আমাকে    শাহাদাতের অমীয়  সুধা  পানকারীকেও  জান্নাতে  নিয়ে  যাবো,  শর্ত  হলো;   যদি  সে  ঈমান সহকারে মৃত্যুবরণ করে  থাকে। (যদি  বাস্তবেই আমাকে শহীদ করে দেয়া হয়, তবে সে কারণে    কোন      ধরণের    দাঙ্গা    হাঙ্গামা,    অবরোধ     ও  হরতাল  ইত্যাদি  করবেন   না।  হরতালের   নামে   জোর জবরদস্তি মূলক মুসলমানদের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া, তাদের জান মালের  ক্ষতি   সাধন করা,  দোকান  পাঠ ও   গাড়িতে  পাথর  নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করা, যানবাহন  ভাংচুর  করা,   দেশে  অরাজকতা   ও  নৈরাজ্য সৃষ্টি করা, মানুষের অযথা হক  নষ্ট করা ইত্যাদির মত   ধ্বংসাত্মক   কার্যকলাপকে    ইসলামের   কোন    মুফতিই  বৈধ বলে  ফতোয়া  দিতে পারবেন  না।  এরূপ  হরতাল সম্পূর্ণরূপে  হারাম  ও  জাহান্নামে  নিয়ে  যাওয়ার  মতো  কাজ।<br /><br />হায়!    গুনাহ্     সমূহের      মার্জনাকারী     ক্ষমাশীল     দয়ালু মালিক     আল্লাহ্     তাআলা    যদি    আমি     গুনাহগার      ও  পাপীকে  তাঁর  প্রিয়    মাহবুব  صَلَّی    اللّٰہُ    تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উসিলায় ক্ষমা করে দিতেন। হে  আমার প্রিয় আল্লাহ্!   যতদিন    পর্যন্ত   আমি   জীবিত    থাকি   ততদিন পর্যন্ত আমাকে রাসূল صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর ভালবাসায়    মত্ত    রাখো,   যেন   মদীনার    স্মরণ   করতে থাকি,   নেকীর   দাওয়াতের জন্য  সচেষ্ট  রাখো, মাহবুব صَلَّی   اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর   শাফায়াত   নসীব করো  এবং আমাকে  বিনা হিসাবে   ক্ষমাও  করে  দাও। জান্নাতুল ফিরদাউসেও প্রিয় মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর প্রতিবেশি হওয়ার সুযোগ দান করো।<br /><br />হায়! যদি সর্বদাই প্রিয় মাহবুব صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  দীদার লাভে  ধন্য থাকতে পারতাম। হে আল্লাহ্! তোমার হাবীবের উপর আমার অসংখ্য দরূদ ও সালাম প্রেরণ      করো।      তাঁর     সকল     উম্মতকে      ক্ষমা     করে  দাও।اٰمِين بِجا هِ  النَّبِىِّ الْاَمين    صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم<br /><br />ইয়া ইলাহী! যব রযা খোয়াবে ঘিরাছে ছর উঠায়ে,<br />দৌলতে বেদারে ইশ্কে মুস্তফা কা সাথ হো।<br /><br />“মাদানী     অসিয়তনামা”    প্রথমবার   মুর্হারামুল   হারাম, ১৪১১  হিজরী মোতাবেক ১৯৯০ইং-তে মদীনা শরীফে বসে  লিখা  হয়েছিল।   কিন্তু  মাঝে  মধ্যে   এতে  সামান্য সংশোধন করা হয়েছে। বর্তমানে সংশোধিত আকারেই মাদানী অসিয়তনামা উপস্থাপন করা হয়েছে।<br /><br />صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                    صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /><br />অসিয়ত ক্ষমা প্রাপ্তির মাধ্যম<br /><br />রহমতে আলম,   নূরে মুজাস্সম, রাসূলে আকরাম صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেন:   “যে (ব্যক্তি) অসিয়ত করার পর মৃত্যু বরণ করলো, সে সোজা রাস্তা ও  সুন্নাতের উপর আমল করেই মৃত্যু বরণ করল  এবং তার  মৃত্যু  তাকওয়া ও শাহাদাতের উপরই  হলো এবং সে   যেন  ক্ষমাপ্রাপ্ত   হয়েই  মৃত্যুবরণ  করলো।”  (ইবনে মাজাহ, ৩য় খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা, হাদীস-২৭০১)<br /><br />কাফন-দাফনের নিয়মাবলী<br /><br />পুরুষের সুন্নাত মোতাবেক কাফন<br /><br />পুরুষের   জন্য সুন্নাত    মোতাবেক কাফন  তিনটি। যথা- (১)    লিফাফাহ (চাদর) ,   (২) ইযার (তাহবন্দ)  ও (৩) কামীস (জামা) ।<br /><br />মহিলাদের সুন্নাত মোতাবেক কাফন<br /><br />মহিলাদের   জন্য    সুন্নাত   মোতাবেক     কাফন    পাঁচটি।  যথা-   (১)   লিফাফাহ,   (২)   ইযার,   (৩)   কামীস,   (৪)  সীনাবন্ধ ও (৫) ওড়না।<br /><br />হিজড়া      অর্থাৎ      মেয়েলি      স্বভাবের      পুরুষদেরকেও  মহিলাদের অনুরূপ পাঁচটি কাফন পরাতে হবে।<br /><br />কাফনের বিস্তারিত বিবরণ<br /><br />(১) লিফাফাহ  অর্থাৎ  চাদর:  মৃত ব্যক্তির দেহের দৈর্ঘ্য হতে    এতটুকু   পরিমাণ   বড়  হতে    হবে,  যাতে  উভয়  প্রান্তে বাঁধা যায়।<br /><br />(২)  ইযার     অর্থাৎ  তাহ্বন্দ:   মাথার   চুল  থেকে  পায়ের  তালু  পর্যন্ত  হতে   হবে  অর্থাৎ   লিফাফাহ  হতে   এতটুকু পরিমাণ   ছোট  হতে   হবে  যা  বন্ধনের   জন্য   অতিরিক্ত রাখা হয়েছিল।<br /><br />(৩)  কামীস   বা   জামা:   গর্দান  থেকে  হাঁটুর   নিচ  পর্যন্ত হতে  হবে   এবং  সামনে  ও     পিছনে  উভয়দিকে  সমান হতে হবে।  এতে   কল্লি ও   আস্তিন থাকতে  পারবে  না। পুরুষদের কামীস কাঁধের  উপরিভাগে আর   মহিলাদের  কামীস সীনার দিকে ছিড়তে হবে।<br /><br />(৪)  সীনাবন্ধ:  এটা   মহিলাদের  স্তন থেকে  নাভী পর্যন্ত  হতে  হবে।  তবে   রান    পর্যন্ত   হওয়াই  উত্তম।  (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮১৮ পৃষ্ঠা)<br /><br />মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়ার নিয়মাবলী<br /><br />আগরবাতি বা লোবান বাতির ধোঁয়া দ্বারা তিন  বা পাঁচ  বা  সাতবার  গোসলের  খাটে  ধোঁয়া  দিতে  হবে  অর্থাৎ  তিন  বা   পাঁচ  বা  সাতবার  আগর  বা   লোবান  বাতিকে খাটের চারপাশে    ঘুরাতে হবে। অতঃপর মৃত ব্যক্তিকে খাটের  উপর  এভাবে  শোয়াতে    হবে  যেভাবে    কবরে   তাকে  শোয়ানো  হয়।   কাপড়   দ্বারা   নাভী  থেকে   হাঁটু পর্যন্ত    সতর   ঢেকে   রাখতে   হবে।    (বর্তমানে    গোসল দেয়ার  সময়  সাদা   কাপড়     দ্বারা   মৃত  ব্যক্তির    সতর এমনভাবে     ঢেকে    রাখা   হয়,   যার  ফলে  পানি  ঢালার সাথে সাথেই  তার লজ্জাস্থান  ভেসে  উঠে। তাই  খয়েরী বা  গাঢ়   রঙের  কোন  মোটা  কাপড়    দ্বারা  তার  সতর  এমনিভাবে ঢেকে রাখতে হবে, যাতে   পানি ঢালার পর তার   লজ্জাস্থান  ভেসে      না  উঠে।  কাপড়  ডাবল  করে দিয়েই        সতর        ঢেকে        রাখা         উত্তম।)        অতঃপর  গোসলদানকারী    ব্যক্তি    নিজ    হাতে     একটি     কাপড়  জড়িয়ে  প্রথমে  তাকে   উভয়   দিকে  ইস্তিন্জা  করাবেন  (অর্থাৎ  পানি দ্বারা তাকে  শৌচ কর্ম করাবেন)  তারপর নামাযের অযুর মত তাকে অযু করাবেন অর্থাৎ তিনবার মুখমন্ডল, কনুইসহ তিনবার উভয় হাত, অতঃপর মাথা মাসেহ   ও     তিনবার    উভয়   পা   ধুইয়ে   দিবেন।     মৃত   ব্যক্তিকে অযু করানোর সময়  প্রথমে উভয় হাত কবজি পর্যন্ত   ধৌত  করা,   কুলি  করানো   ও  নাকে  পানি  দেয়া আবশ্যক   নয়।  তবে কোন  কাপড়  বা  রুইয়ের  পুটলি ভিজিয়ে  তা   দ্বারা  দাঁত,   মাড়ি  ঠোঁট   ও   নাকের    ছিদ্র ইত্যাদি   মুছে  দেয়া   উত্তম।  তারপর  মৃত  ব্যক্তির  চুল, দাঁড়ি    থাকলে     তা     ধুইয়ে       দিবেন।    অতঃপর    মৃত  ব্যক্তিকে বাম  কাতে   শোয়ায়ে কুল (বরই) পাতা  দিয়ে গরম করা  পানি,    আর তা পাওয়া না গেলে বিশুদ্ধ  মৃদু গরম  পানি  মাথা   থেকে  পা  পর্যন্ত    তার  শরীরে   উপর এমনিভাবে ঢেলে দিবেন যাতে পানি তক্তা পর্যন্ত পৌছে যায়। অতঃপর তাকে ডান কাতে শোয়ায়ে অনুরূপভাবে পানি     ঢেলে   দিবেন।   তার   পর   হেলান    দিয়ে    তাকে বসিয়ে  পেটের নিচের অংশের উপর আস্তে   আস্তে হাত  দ্বারা   মালিশ   করবেন।  পেট   হতে  কিছু  বের  হলে   তা ধুইয়ে     পরিস্কার    করে    দিবেন।     এমতাবস্থায়      তাকে পুনরায়    অযু    ও    গোসল    করানোর    প্রয়োজন    নেই।  অতঃপর   মাথা   থেকে   পা    পর্যন্ত   তার   শরীরের  উপর তিনবার কাপুরের পানি ঢেলে দিবেন এবং কোন পবিত্র কাপড় দ্বারা তার শরীর আস্তে আস্তে মুছে নিবেন। মৃত ব্যক্তির সমস্ত শরীরে একবার পানি প্রবাহিত করা ফরয আর         তিনবার        প্রবাহিত        করা       সুন্নাত।       (মৃতের গোসলদানে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত করবেন না। মনে রাখবেন! আখিরাতে এক বিন্দু বিন্দুর হিসাব হবে)<br /><br />পুরুষকে কাফন পরানোর পদ্ধতি<br /><br />আগর  বা লোবান বাতির ধোঁয়া দ্বারা কাফনকে এক বা তিন    বা   পাঁচ    বা    সাতবার    ধোঁয়া   দিবেন।   অতঃপর কাফন  এমনভাবে  বিছাবেন  যে, প্রথমে খাটে  লিফাফা অর্থাৎ বড় চাদর,  এর    উপর  ইযার বা তাহবন্দ এবং  এর   উপর   কামীস  রাখবেন।   অতঃপর   মৃত   ব্যক্তিকে কাফনের উপর শোয়ায়ে তাকে কামীস পরাবেন। এখন দাঁড়িতে   (আর  দাঁড়ি   না   থাকলে     চিবুকে)  ও  সমস্ত  শরীরে সুগন্ধি মালিশ করে দিবেন। কপাল, নাক, হাত, হাঁটু ও পা ইত্যাদি অঙ্গ যা দ্বারা সিজদা করা হয় তাতে  কাপুর লাগিয়ে দিবেন। অতঃপর  তাহবন্দ প্রথমে বাম   দিক থেকে  তারপর ডান দিক থেকে জড়াবেন। শেষে লিফাফাহ   বা   চাদরও প্রথমে  বাম দিক থেকে তারপর ডান দিক থেকে জড়াবেন মাথা ও পায়ের দিকে বেঁধে দিবেন। যেন ডান দিকের অংশ উপরে থাকে।<br /><br />মহিলাদেরকে কাফন পরানোর নিয়ম<br /><br />মহিলাদেরকে        কামীস         পরিধান        করিয়ে       তাদের চুলগুলোকে   দুইভাগে     বিভক্ত     করে   কামীসের   উপর দিয়ে বুকের  উপরে রেখে দিবেন। তারপর অর্ধ পিঠের  নিচে ওড়না বিছিয়ে তা মাথার উপর দিয়ে এনে মুখের উপর  নিকাবের  মতো   করে    দেন,   যেন   বুকের  উপর থাকে।   ওড়নার দৈর্ঘ্য হতে  হবে  অর্ধ পিঠ থেকে   বুক পর্যন্ত     এবং   প্রস্থ  হতে  হবে  এক   কানের   লতি   থেকে  অপর কানের লতি  পর্যন্ত। কতিপয়  লোকেরা  মহিলারা জীবদ্দশায়   যেভাবে   মাথায়   ওড়না   পরিধান   করতো  সেভাবেই  মহিলাদেরকে ওড়না পরিধান করান।  কিন্তু এটা সুন্নাতের পরিপন্থী। অতঃপর পুরুষদের ন্যায় ইযার ও  লিফাফাহ  জড়াবেন।  অবশেষে   সবগুলোর  উপরে  স্তনের  উপরিভাগ  থেকে  রান   পর্যন্ত  সীনাবন্ধ  জড়ায়ে  সূতা বা রশি দ্বারা বেধে দিবেন।)<br /><br />জানাযার নামাযের পর দাফন<br /><br />(১)   জানাযার   লাশবাহী  খাট   কবরের  নিকট  কিবলার দিকে  রাখা মুস্তাহাব যাতে মৃত  ব্যক্তিকে কিবলার  দিক থেকে   কবরে    নামানো   যায়।   কবরের    পায়ের    দিকে জানাযার   খাট  রেখে  মাথার  দিক থেকে মৃত   ব্যক্তিকে কবরে নামাবেন না।<br /><br />(২)      প্রয়োজনানুসারে     দুইজন   বা   তিনজন   সবল   ও নেককার   ব্যক্তি  কবরে নেমে লাশ  নামাবেন। মহিলার লাশ   মুহরিম   ব্যক্তিই   নামাবেন।   মুহরিম   না   থাকলে  অন্যান্য        আত্মীয়রা,       তারাও         না       থাকলে       কোন পরহেজগার     ব্যক্তির    মাধ্যমে    মহিলার     লাশ    কবরে নামাবেন। ( )<br /><br />(৩)  মহিলার লাশ  কবরে  নামানোর সময়  থেকে তক্তা লাগানোর   সময় পর্যন্ত কোন  কাপড় দ্বারা   কবর ঘিরে  রাখবেন।<br /><br />(৪) মৃত  ব্যক্তিকে কবরে  নামানোর    সময় এ  দোয়াটি  পাঠ করবেন:<br /><br />بِسْمِ اللهِ وَ بِا للهِ وَعَلٰى مِلَّتِ رَسُوْلِ اللهِ<br /><br />(৫)  মৃত  ব্যক্তিকে  কবরে  ডান  কাতে  রেখে  তার  মুখ   কিবলার দিকে করে দিবেন  এবং কাফনের বাঁধনগুলো  খুলে  দিবেন।   কেননা,  এখন  আর   বাঁধনের    প্রয়োজন নেই, বাঁধন না খুললেও কোন অসুবিধা নেই। ( )<br /><br />(৬) কাঁচা ইট দ্বারা কবরের মুখ বন্ধ করে দিবেন। মাটি নরম  হলে  কবরের মুখে  কাঠের তক্তা  ব্যবহার  করাও  জায়েজ। (<br /><br />(৭)    তারপর   কবরে    মাটি  দিবেন   এ  ক্ষেত্রে  মুস্তাহাব হলো, উভয় হাত দ্বারা মাথার দিক থেকে তিনবার মাটি ফেলা।    প্রথমবার  مِنْهَا خَلَقْنٰكُمْ বলবেন, দ্বিতীয় বার وَفِيْهَا نُعِيْدُكُمْ  ও তৃতীয়বার  وَمِنهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً اُخْرٰى বলবেন।   অবশিষ্ট   মাটিগুলো    কোদাল   ইত্যাদি     দ্বারা ফেলবেন।<br /><br />(৮) যতটুকু মাটি কবর  থেকে বের করা হয়েছিল, তার চেয়ে অধিক মাটি কবরে ফেলা মাকরূহ।<br /><br />(৯) কবর উটের কুঁজের ন্যায় ঢালু করবেন। চার কোণা বিশিষ্ট করবেন না। (যেমন বর্তমানে দাফনের কিছুদিন পর   অনেকেই   ইট  ইত্যাদি   দ্বারা  কবরকে  চার  কোণা বিশিষ্ট করে থাকে।)<br /><br />(১০)    কবর    মাটি    থেকে    এক     বিঘত     উচুঁ    বা    এর চাইতেও সামান্য উচুঁ করবেন।<br /><br />(১১)   দাফনের  পর    কবরের উপর পানি ছিটিয়ে দেয়া সুন্নাত।<br /><br />(১২)       এছাড়াও       কবরে       জন্মানো       গাছের       চারা  ইত্যাদিতে পানি দেয়ার উদ্দেশ্যে কবরে পানি  ছিটানো জায়েজ।<br /><br />(১৩) বর্তমানে কতিপয় লোক   বিনা  প্রয়োজনে  কবরে  যে  পানি  ছিটায়, এটা   মন্দ ও নাজায়িয,  ফতোওয়ায়ে  রযবীয়া   শরীফ,   ৯ম   খন্ড,    ৩৭৩     পৃষ্ঠার    মধ্যে     তা অপচয় হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।<br /><br />(১৪) দাফনের  পর  কবরের  শিয়রে الٓـمّٓ থেকে مُفْلِحُوْنَ পর্যন্ত এবং পায়ের  দিকে اٰمَنَ الرَّسُوْلُ থেকে সূরার শেষ পর্যন্ত পাঠ করা মুস্তাহাব।<br /><br />(১৫) কবর তালক্বীন করবেন। (তালকীনের নিয়ম পূর্বে বর্ণিত হয়েছে)<br /><br />(১৬) কবরের শিয়রে দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হয়ে আযান দিবেন।<br /><br />(১৭) কবরের উপর ফুল দেয়া উত্তম। কেননা, যতদিন পর্যন্ত এ ফুল তাজা থাকবে, তা তাসবীহ   পাঠ  করবে।  এতে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পাবে।<br /><br />নির্বোধ শিশুদেরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়াকে<br /><br />হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে<br /><br />নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ     করেন:     “তোমরা     মসজিদ    সমূহকে     শিশু,  পাগল,   ক্রয়-বিক্রয়,   ঝগড়া-বিবাদ,   উচ্চ   স্বরে   কথা  বলা,   শরীয়াতের    শাস্তি     কার্যকর    করা     ও   তাওবারী ব্যবহার করা থেকে   রক্ষা  করো।”  (ইবনে মাযাহ,  ১ম  খন্ড, ৪১৫ পৃষ্ঠা, হাদীস৭৫০)<br /><br />শিশুর    প্রস্রাব    ইত্যাদির    কারণে     মসজিদে     অপবিত্র  হওয়ার    আশঙ্কা    থাকলে     এরূপ     শিশু     ও    পাগলকে মসজিদে  নিয়ে যাওয়া হারাম। আর মসজিদে অপবিত্র  হওয়ার  আশঙ্কা  না থাকলে   তাদরেকে মসজিদে   নিয়ে যাওয়া মাকরূহ। যে   সমস্ত লোক মসজিদে জুতা  নিয়ে   যায়,      তাদের      জুতায়      নাজাসাত     আছে      কিনা     তা ভালভাবে  লক্ষ্য  রাখতে  হবে।   যদি  জুতায়   নাজাসাত  থাকে, তাহলে তা ভালভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। আর    জুতা    পরিহিত   অবস্থায়    মসজিদে    প্রবেশ   করা বেয়াদবী। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৯২ পৃষ্ঠা) শিশু, পাগল,     অজ্ঞান    ও    জ্বিনগ্রস্থ   রোগীকে   ঝাঁড়   ফুঁকের জন্যও    মসজিদে    নিয়ে    যাওয়ার    ক্ষেত্রে    শরীয়াতের  অনুমতি        নেই,       শিশুদেরকে        ভালভাবে       কাপড়ে জড়িয়েও      মসজিদে      নেয়া     যাবে      না।     যদি      শিশু ইত্যাদিকে মসজিদে  নিয়ে  যাওয়ার  মত  ভুল আপনার থেকে      সংঘটিত     হয়ে      থাকে,       তাহলে      দয়া     করে অনতিবিলম্বে    তাওবা    করে   ভবিষ্যতে    আর   কখনও   তাদেরকে মসজিদে না নেয়ার প্রতিজ্ঞা করে নিন।<br /><br />এ অধ্যায়টি পাঠকালে কারো সাথে মসজিদে তার শিশু সন্তান থাকলে তার প্রতি আমার    সন্নিবদ্ধ অনুরোধ, সে যেন      তাড়াতাড়ি    তার    শিশু    সন্তানকে      মসজিদের বাইরে   নিয়ে   আসে।   তবে   হ্যাঁ   মসজিদের   আঙ্গিনায়  শিশুদেরকে       নেয়া      যাবে,       যদি       তাদেরকে      নিয়ে  মসজিদের ভিতর দিয়ে যেতে না হয়।<br /><br />তাহিয়্যাতুল অযু<br /><br />অযু   করার   পর   অঙ্গ   প্রত্যঙ্গ   শুষ্ক   হওয়ার   পূর্বে   দুই  রাকাত   নামায  আদায় করা মুস্তাহাব। (দুররে মুখতার,  ২য়  খন্ড,   ৫৬৩  পৃষ্ঠা)   হযরত   সায়্যিদুনা  উকবা   বিন  আমের  رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی  عَنْہُ থেকে বর্ণিত; তিনি  বলেন: নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ  করেন:  “যে  ব্যক্তি  অযু  করে  এবং  ভালভাবে  অযু  করে জাহের   ও  বাতেনের   সাথে মনোযোগী হয়ে  দুই  রাকাত  (নফল  নামায)  আদায়  করবে,  তার  জন্য  জান্নাত  ওয়াজিব  হয়ে   যায়।”  (সহীহ     মুসলিম,   ১৪৪  পৃষ্ঠা,   হাদীস-    ২৩৪)   গোসলের   পরেও   দুই   রাকাত  নামায মুস্তাহাব। অযু  করার পর ফরয ইত্যাদি পড়লে তাহিয়্যাতুল    অযুর    স্থলাভিষিক্ত    হয়ে    যাবে।     (রদ্দুল  মুহতার,  ২য় খন্ড, ৫৬৩ পৃষ্ঠা)  মাকরূহ  সময়ের  মধ্যে তাহিয়্যাতুল অযু ও গোসলের পরের দুই রাকাত নামায আদায় যাবেনা।<br /><br />صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                   صَلَّی  اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /><br /><br /></div>

কাফন-দাফনের নিয়মাবলী

মাদানী অসিয়তনামা (কাফন-দাফনের আহকাম সম্বলিত) দরূদ শরীফের ফযীলত নবীদের  তাজেদার,   রাসূলদের   সরদার,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی...

Read more »

কাফন-দাফনের নিয়মাবলী

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> মাদানী অসিয়তনামা<br /> <br /> (কাফন-দাফনের আহকাম সম্বলিত)<br /> <br /> দরূদ শরীফের ফযীলত<br /> <br /> নবীদের  তাজেদার,   রাসূলদের   সরদার,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم ইরশাদ করেন:  “আমার উপর     দরূদ     শরীফ     পাঠ     করো,     আল্লাহ্     তাআলা  তোমাদের উপর রহমত বর্ষণ  করবেন।” (আল কামিলু লি ইবনে আদী, ৫ম খন্ড, ৫০৫ পৃষ্ঠা)<br /> <br /> صَلُّوْا عَلَی  الْحَبِیْب!                صَلَّی  اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /> <br /> اَلْحَمْدُ لِلّٰہِ عَزَّوَجَلَّ এখন ফযরের নামাযের পর মসজিদে নববী   শরীফে         عَلٰی   صَاحِبِہَا    الصَّلٰوۃُ   وَالسَّلَام   বসে  “মদীনা মুনাওয়ারা  থেকে চল্লিশখানা   অসিয়ত” লিখার সৌভাগ্য     অর্জন  করছি।   আফসোস!  শত   আফসোস! আজ     আমার    মদীনা   মুনাওয়ারাতে   উপস্থিতির    শেষ সকাল। সূর্য প্রিয় মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর রওজা মোবারকে সালাম পেশ করার  জন্য  হাজির হতে    চলেছে।    আহ!     আজ        রাতেই    যদি    জান্নাতুল বাক্বীতে  সমাহিত   হওয়ার  কোন   ব্যবস্থা  না  হয়,  তবে (আগামীকালই) মদীনা শরীফ ত্যাগ করতে হবে। চোখ অশ্রুসিক্ত, মন অস্থির হয়ে আছে। হায়!<br /> <br /> আফসোস চন্দ ঘড়িয়া তয়্যবা কি রাহ গেয়ী হে,<br /> দিল মে জুদায়ী কা গম তুফান মাচা রাহা হে।<br /> <br /> আহ! মন ব্যথা বেদনায় নিমজ্জিত। মদীনার বিচ্ছেদের হৃদয়  বিদারক   চিন্তা   আপাদমস্তক   বেদনার   প্রতিচ্ছবি  বানিয়ে  দিয়েছে।   এমন   মনে  হচ্ছে  যেন   মুখের   হাসি কেউ  ছিনিয়ে  নিয়ে গেছে। আহ!  শীঘ্রই   মদীনা ছেড়ে যেতে হবে। তখন মন ভেঙ্গে যাবে। আহ! মদীনা থেকে স্বদেশের   উদ্দেশ্যে   রাওয়ানা   হওয়ার   মূহুর্তটি   এমনি  বেদনা  দায়ক    হয়ে   থাকে   যে,  যেন   কোন  দুগ্ধপোষ্য শিশুকে তার মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আর   সে  খুবই   আফসোস করে! কেঁদে  কেঁদে  বারবার মায়ের    দিকে  ফিরে  দেখছে,  হয়ত  মা   পুনরায়  তাকে ডেকে   নিবেন…..স্নেহ  ভরে  তাকে  কোলে  তুলে    নিয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরবে। আর শ্লোক শুনিয়ে আপন মায়াভরা কোলে মধুর ঘুম পাড়াবেন। হায়!<br /> <br /> মে শিকাস্তা দিল লিয়ে বাওঝাল কদম রাখতা হুয়া<br /> চল পড়াহো ইয়া শাহানশাহে মদীনা আলওয়াদা<br /> <div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> <a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgK_fgtdgpK-EYWGhwjnT3yit7GZbd4Q6cWHyb2ZzLdcRVmPDh1PL7VBoXFR0bIjMwDFaXtz9oda4ABWKvv9XgQ3gVb9FDZyoCVW2hPddA6TA1pYG8L9l_egfokMT0u7nD-HsxQUG-haY_b/s1600/images4.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="249" data-original-width="589" height="135" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgK_fgtdgpK-EYWGhwjnT3yit7GZbd4Q6cWHyb2ZzLdcRVmPDh1PL7VBoXFR0bIjMwDFaXtz9oda4ABWKvv9XgQ3gVb9FDZyoCVW2hPddA6TA1pYG8L9l_egfokMT0u7nD-HsxQUG-haY_b/s320-rw/images4.jpg" width="320" /></a></div> <br /> <br /> এখন   আমি    ভারাক্রান্ত   অন্তরে     আপনাদের   খেদমতে ৪০টি    অসিয়ত     পেশ   করছি।    দা’ওয়াতে    ইসলামীর সাথে সম্পৃক্ত  সকল ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোনের  প্রতিও   এমনকি,   আমার   সন্তান    সন্ততি  ও  পরিবারের অন্যান্য   সদস্যরা   আমার   এ    অসিয়ত    সমূহের   প্রতি বিশেষ মনযোগ দিবেন। মদীনার নুরানী মাটিতে, সবুজ গম্বুজ  ও মীনারের সুশীতল  ছায়াতলে  যদি আমার মত পাপি ও গুনাহগারকে সমাহিত করা হতো,   তবে কতই না    সৌভাগ্য    হতো।     হায়     আফসোস!    যদি    রাসূলে আকরাম, হুযুর পুরনূর   صَلَّی    اللہُ  تَعَالٰی   عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর  নূরানী জালওয়াতে  আমার  শাহাদাত নসীব  হতো  এবং  জান্নাতুল বাক্বীতে যদি আমার জন্য দু’গজ জমির ব্যবস্থা     হতো।  তবে  উভয়    জাহানে  আমার  সৌভাগ্য  আর সৌভাগ্যই হতো। আহ! আর তা না হলে যেখানেই ভাগ্য অবধারিত…….<br /> <br /> (১) যদি   মূমুর্ষ অবস্থা  পাই   তবে,  ঐ মুহূর্তের যাবতীয় কার্যাবলী  সুন্নাত  মোতাবেক   সম্পাদন  করবেন। সম্ভব হলে     ডান   পার্শ্বে   শুয়াবেন,   চেহারা   কিবলামুখী   করে দিবেন। সূরা ইয়াসীন শরীফও পাঠ করে শুনাবেন।<br /> <br /> (২) শেষ নিঃশ্বাস  ত্যাগের পরের সকল কার্যাবলীতেও  সুন্নাতের   প্রতি    লক্ষ্য  রাখবেন।  যেমন:   কাফন-দাফন ইত্যাদি     কার্যাবলী    তাড়াতাড়ি    সম্পাদন    করবেন।  বেশি লোক সমাগমের আশায় জানাযা,  দাফন ইত্যাদি অযথা  বিলম্ব  করা  সুন্নাত  নয়।  বাহারে  শরীয়াত,  ৪র্থ  খন্ডের     উল্লেখিত   বিধানাবলী  উপর   আমল  করবেন। বিশেষত জোরালো তাগিদ হলো;কখনো বিলাপ করবে না। কেননা, এটা হারাম এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ।<br /> <br /> (৩)  কবরের  সাইজ   ইত্যাদিও  যেন সুন্নাত মোতাবেক হয়   এবং  লাহাদ  কবরই  তৈরী    করবেন,  কেননা  এটা সুন্নাত।<br /> <br /> (৪) কবরের ভিতরের দেয়াল  ইত্যাদি যেন কাঁচা মটির হয় (যেভাবে আছে সেভাবেই রেখে দিবেন) । আগুনের পোড়ানো ইট দ্বারা তা পাকা করবেন না। যদি ভিতরে নিতান্তই ইটের দেয়াল করতে হয়, তাহলে মাটির কাদা দ্বারা ভিতরে ভালভাবে লেপে দিবেন।<br /> <br /> (৫)  সম্ভব হলে কবরের ভিতরের তক্তায় সূরা ইয়াসীন শরীফ,     সূরা   মুলক   ও   দরূদে   তাজ   পাঠ   করে   ফুঁক দিবেন।<br /> <br /> (৬)  সুন্নাত   মোতাবেক   কাফনের   ব্যবস্থা  সগে  মদীনা عُفِىَ  عَنْهُ  এর   (লিখকের)   নিজস্ব  টাকা  থেকেই   যেন  হয়। আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন (সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ এর নিজস্ব টাকা দ্বারা কাফনের খরচ নির্বাহ করা সম্ভব না   হলে)   কোন   বিশুদ্ধ   সুন্নী   আকীদা   সম্পন্ন   ব্যক্তির  হালাল উপার্জন থেকেই কাফনের ব্যবস্থা করবেন।<br /> <br /> (৭)  দাঁড়ি   ওয়ালা,   পাগড়ীধারী,  সুন্নাতের    অনুসারী কোন   ইসলামী   ভাই    দ্বারা   সুন্নাত  মোতাবেক   গোসল দিবেন।      (সৈয়দ       বংশের      কোন       ব্যক্তি        যদি      এ গুনাহগারকে  গোসল দেয়,  তবে সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ এটাকে নিজের জন্য বেয়াদবী মনে করবে।)<br /> <br /> (৮)   গোসল   দেয়ার   সময়   পরিপূর্ণভাবে  সতর  ঢেকে   রাখবেন।  খয়েরী   রঙের  কিংবা কোন গাঢ় রঙের   দু’টি মোটা   চাদর  দ্বারা  নাভী   থেকে   হাটু  পর্যন্ত  যদি   ঢেকে রাখা হয়, তাহলে সতর দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।   হ্যাঁ!   পানি   শরীরের   প্রতিটি    অঙ্গেই   বরং    চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত প্রবাহিত হওয়া জরুরী।<br /> <br /> (৯) কাফনের কাপড়    যদি   যমযমের পানি বা   মদীনা শরীফের পানি বা   উভয়ের পানি দ্বারা সিক্ত  করা    হয়,  তবে তো সৌভাগ্যই। আহ! সৈয়দ বংশের কোন লোক যদি মাথায় সবুজ পাগড়ী পরিয়ে দেন, তাহলে  বড়ই সৌভাগ্য হবে।<br /> <br /> (১০) মৃত  ব্যক্তির    গোসলের  পর কাফন দ্বারা  চেহারা  আবৃত    করার  পূর্বে   প্রথমে  কপালের    উপর  শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা “بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحيْمِ” লিখে দিবেন। শুধু ওলামা     ও    মাশায়িখকে   ইমামা   (পাগড়ী)    সহকারে  দাফন    করা     যেতে     পারে।     সাধারণ     মৃত    ব্যক্তিকে পাগড়ী সহকারে দাফন করা নিষেধ।<br /> <br /> (১১)  অনুরূপভাবে  বুকের  উপরও  لَاۤ  اِلٰهَ  اِلَّا  اللهُ  مُحَمَّدٌ  رَّسُوْ لُ الله صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم লিখে দিবেন।<br /> <br /> (১২) কলবের স্থানে یَارَسُوْلَ الله صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم লিখে দিবেন।<br /> <br /> (১৩)  নাভী   ও  বুকের   মধ্যবর্তী  স্থানে  কাফনের  উপর শাহাদাত    আঙ্গুল   দ্বারা   “ইয়া    গাউছে   আজম   দস্তগীর رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ, ইয়া ইমাম আবু হানিফা رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی   عَنْہُ,   ইয়া  ইমাম   আহমদ  রযা   رَحْمَۃُ  اللّٰہِ  تَعَالٰی عَلَیْہِ,  ইয়া    শেখ  জিয়া  উদ্দীন  رَحْمَۃُ   اللّٰہِ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ” লিখে দিবেন।<br /> <br /> (১৪)  (পিঠের  অংশ  ব্যতীত)  নাভী  থেকে  মাথা  পর্যন্ত  সম্পূর্ণ   কাফনে    মদীনা    মদীনা   লিখে     দিবেন।   স্মরণ রাখবেন!  এসব   কিছু   কালি  দ্বারা  নয়,    বরং  শাহাদাত আঙ্গুল    দ্বারাই    লিখবেন।   আর   সৈয়দ    বংশের   কোন  লোক তা লিখে দিলে বড়ই সৌভাগ্য হবে।<br /> <br /> (১৫)    উভয়     চক্ষুর      উপর    মদীনা     শরীফের      কাটা, খেজুরের বিচি রেখে দিবেন।<br /> <br /> (১৬) জানাযার লাশবাহী খাট বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময়ও সকল সুন্নাতের প্রতি যথেষ্ট লক্ষ্য রাখবেন।<br /> <br /> (১৭) জানাযার লাশবাহী খাট বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময়  সকল  ইসলামী  ভাই  এক  সাথে  ইমামে  আহলে  সুন্নাতের  লিখিত   দরূদ   শরীফের     কসীদা  “কা’বে  কে বদরুদ দোজা তুম  পে করোড়ো দুরূদ” পাঠ করবেন। (এটা  ছাড়াও  অন্যান্য  নাত  ইত্যাদি  পড়বেন।  কিন্তু  শুধুমাত্র     ওলামায়ে     আহলে     সুন্নাতের     নাতই         পাঠ করবেন)<br /> <br /> (১৮)   কোন   বিশুদ্ধ   সুন্নী   আকীদা   সম্পন্ন   আমলধারী  আলিম  বা  সুন্নাতের  পরিপূর্ণ  অনুসারী  কোন  ইসলামী  ভাই   অথবা  উপযুক্ত    থাকলে  আপন  সন্তানদের  মধ্যে কেউ   জানাযার  নামায পড়াবেন। কিন্তু আমার  একান্ত ইচ্ছা   হচ্ছে,  সৈয়দ  বংশের   কোন  ব্যক্তি   দ্বারা  আমার  জানাযার নামায পড়ানো।<br /> <br /> (১৯) সৈয়দ বংশের সম্মানিত ব্যক্তিরা নিজেদের পবিত্র হাত দ্বারা আমাকে কবরে নামিয়ে মহান প্রতিপালকের   নিকট সোপর্দ করলে সৌভাগ্য হবে।<br /> <br /> (২০)   কবরের   চেহারার  দিকস্থ  দেয়ালে  তাক  বানিয়ে সেখানে   সুন্নাতের     পরিপূর্ণ    অনুসারী   কোন   ইসলামী  ভাইয়ের হাতে লিখিত  আহাদ নামা, নালাইন  শরীফের নকশা,  সবুজ  গম্বুজ  শরীফের   নকশা, শাজারা শরীফ, নকশে হারকারা ইত্যাদি তাবাররুকাত রেখে দিবেন।<br /> <br /> (২১)  জান্নাতুল বাক্বীতে দাফনের সুব্যবস্থা হলে বড়ই সৌভাগ্য    হবে।  তবে   সেখানে   দাফন   করবেন  নতুবা আল্লাহ্র কোন ওলির কবরের পাশে, তাও সম্ভব না হলে ইসলামী    ভাইগণ    যেখানেই     ভালো     মনে      করবেন!  সেখানেই আমাকে  দাফন করবেন,   তবে কারো  জবর  দখলকৃত    জমিতে    দাফন    করবেন    না।    কেননা    তা  হারাম।<br /> <br /> (২২) (দাফনের পর) কবরে আযান দিবেন।<br /> <br /> (২৩) সৈয়দ বংশের কোন ব্যক্তি দ্বারা তালকীন করালে ধন্য হবো।<br /> <br /> তালকীনের      ফযীলত:     নবী    করীম,     রউফুর    রহীম,  রাসূলে  আমীন,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যখন তোমাদের কোন মুসলমান ভাই মৃত্যু বরণ করে, আর তাকে কবরে সমাহিত করার পর     তোমাদের   মধ্যে   একজন   তার   কবরের   শিয়রে দাঁড়িয়ে বলবে: হে অমুকের ছেলে অমুক! তখন সে তা শুনতে   পাবে,   কিন্তু   উত্তর   দিবে   না।   অতঃপর   যখন  আবারো বলবে:  হে  অমুকের ছেলে  অমুক!  তখন  মৃত  ব্যক্তি সোজা হয়ে বসে   পড়বে।   আবার যখন  বলবে: হে  অমুকের  ছেলে   অমুক!   তখন   সে  বলবে:     আল্লাহ্  তাআলা   তোমার   উপর      দয়া    করুক।   তুমি   আমাকে  শিখিয়ে দাও। কিন্তু মৃত ব্যক্তির একথা তোমরা শুনতে  পাবে     না।     অতঃপর     সে     (অর্থাৎ-     যিনি     তালকীন  করাবেন তিনি) বলবে:<br /> <br /> اُذْكُرْ   مَاخَرَجْتَ  عَلَيْهِ  مِنَ الدُّنْيَا:  شَهَادَةَ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ (صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم) وَاَنَّكَ رَضِيْتَ بِاللهِ رَبًّا  وَّبِالْاِسْلَامِ دِيْنًا وَّ بِمُحَمَّدٍ (صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم) نَبِيًّا وَّ بِالْقُرْاٰنِ اِمَامًا ـ<br /> <br /> অনুবাদ:  “তুমি  তা  স্মরণ  করো,  যা  বলে  তুমি  দুনিয়া  থেকে    বিদায়  নিয়েছ  অর্থাৎ   একথা  সাক্ষ্য    দাও   যে,  আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم    তাঁর  বান্দা  ও  রাসূল  এবং এটাও বলো  যে,   তুমি   আল্লাহ্কে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে    আল্লাহ্র     মনোনীত    ধর্ম     হিসেবে,    হযরত মুহাম্মদ   صَلَّی   اللّٰہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ    وَسَلَّم   কে   আল্লাহ্র  প্রেরিত রাসূল  হিসেবে  এবং   কুরআন মজীদকে ইমাম  হিসেবে   মনে-প্রাণে   স্বীকৃতি   দিয়েছ     এবং   এর   উপর সন্তুষ্ট     ছিলে।”     তালকীনকারী     এ     কথা     বলার     পর  মুনকার-নকীর   ফিরিশতাদ্বয়  একে  অপরের  হাত   ধরে বলবেন:   চলো   আমরা   চলে   যাই।   তার   পাশে     বসে থেকে  আমাদের  কোন  লাভ   নেই   যাকে  লোক  দলীল শিখিয়ে দিয়েছে।   এক   ব্যক্তি  রহমতে  আলম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর নিকট আরয করল, যদি তার মায়ের  নাম  জানা  না   থাকে,  তখন  কিভাবে   তালকীন করাবে?    রাসূলুল্লাহ্   صَلَّی   اللّٰہُ    تَعَالٰی   عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “হাওয়া رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا এর দিকে সম্পর্কিত  করবে।”   (আল   কবীর   লিত  তাবরানী,  ৮ম খন্ড, ২৫০ পৃষ্ঠা, হাদীস-৭৯৭৯)<br /> <br /> স্মরণ     রাখবেন!   অমুকের    ছেলে    অমুকের   স্থলে   মৃত ব্যক্তি    ও   তার  মায়ের  নাম  নিবে,   যেমন-হে   মুহাম্মদ ইল্ইয়াস বিন  আমেনা। আর   মৃত ব্যক্তির মায়ের নাম  জানা না  থাকলে  মায়ের  নামের  স্থলে  হাওয়া  رَضِیَ  اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا   এ  নাম নিবে। তালকীন কেবলমাত্র আরবী ভাষায়ই পড়বেন।<br /> <br /> (২৪)   যারা   আমাকে   ভালবাসেন,   তারা    সম্ভব     হলে আমার দাফনের পর  ১২ দিন   পর্যন্ত, আর তা সম্ভব না হলে  কমপক্ষে   ১২   ঘন্টা   হলেও   আমার  কবরের  চার পাশে বসে যিকির, দরূদ,  কুরআন তিলাওয়াত ও নাত ইত্যাদির মাধ্যমে  আমার (অন্তরকে) মনোরঞ্জন করতে থাকবে।   اِنْ     شَآءَ    اللّٰہ   عَزَّوَجَلَّ    এতে   নতুন   জায়গায় আমার    মন    বসে    যাবে।    তবে    উক্ত    সময়েও    আর  সর্বদাই      জামাআত   সহকারে   নামায   আদায়ের   প্রতি  যতœবান হবেন।<br /> <br /> (২৫)    আমার   উপর    কারো   ঋন   থাকলে   তা   আমার সম্পদ   থেকে   পরিশোধ    করবেন।   আর    যদি   আমার সম্পদ না  থাকে, তাহলে  আমার সন্তান সন্ততি    জীবিত থাকলে  তারা  নতুবা  অন্য   কোন  ইসলামী    ভাই   দয়া   করে     নিজের    সম্পদ    থেকে     আমার    ঋন    পরিশোধ করবেন। আল্লাহ্ তাআলা মহান প্রতিদান দান করবেন। (বিভিন্ন   ইজতিমাতে   ঘোষণা   করে   দিবেন   যে,   কেউ  আমার দ্বারা মনে কষ্ট পেয়ে থাকলে কিংবা আমার দ্বারা কারো     হক     ধ্বংস   হয়ে    থাকলে,    সে   যেন   আমাকে (মুহাম্মদ  ইল্ইয়াস কাদেরীকে)  ক্ষমা  করে দেয়। আর কেউ    আমার    নিকট     কর্জ    পেয়ে     থাকলে    সে     যেন তাড়াতাড়ি   আমার    ওয়ারিশদের    সাথে    যোগাযোগ করে তা নিয়ে নেয় অথবা যেন ক্ষমা করে দেয়।)<br /> <br /> (২৬)     অধিকহারে     আমার     প্রতি     (ইছালে     সাওয়াব  করবেন)   সাওয়াব  পৌঁছাতে  থাকবেন  এবং     আমাকে মাগফিরাতের দোয়া  দ্বারা ধন্য করতে থাকবেন।   এটা  আমার জন্য বড়ই দয়া হবে।<br /> <br /> (২৭) সকলেই  মসলকে আ’লা হযরত অর্থাৎ-   আহলে সুন্নাত     ওয়াল     জামাআতের    মতাদর্শের   উপর   অটল থাকবেন  এবং  ইমামে    আহলে  সুন্নাত  মাওলানা   শাহ্  আহমদ   রযা   খাঁন   رَحْمَۃُ  اللّٰہِ      تَعَالٰی   عَلَیْہِ  এর  বিশুদ্ধ ইসলামী     শিক্ষা     মোতাবেক     (সুপ্রতিষ্ঠিত     থাকবেন)  আমল করবেন।<br /> <br /> (২৮)     বদ      মাযহাব     ও     বদ      আকীদা     পোষণকারী ব্যক্তিদের সংস্পর্শ থেকে সর্বদা কয়েক শত মাইল দূরে থাকবেন, কেননা তাদের সঙ্গ খাতিমা বিল খায়ের তথা ঈমানের সাথে মৃত্যু   হওয়ার  ক্ষেত্রে  প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি  করে। আখিরাত বরবাদ হওয়ার কারণ।<br /> <br /> (২৯)  তাজদারে  মদীনা,   রাহাতে  কলবো  সীনা,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم  এর    ভালবাসা এবং সুন্নাতের   উপর সর্বদা দৃঢ়ভাবে  অটল   থাকবেন।<br /> <br /> (৩০)   সুন্নাত   ও    ওয়াজিব    সহ   পাঁচ   ওয়াক্ত   নামায,  রমযানের   রোযা,    হজ্ব,   যাকাত   ইত্যাদি    ফরয   সমূহ যথাযথ আদায় করবেন। এতে কোন রকমের অলসতা প্রদর্শন করবেন না।<br /> <br /> (৩১)    গুরুত্বপূর্ণ অসিয়ত:  সর্বদা দা’ওয়াতে ইসলামীর  মারকযী     মজলিশে     শুরার      প্রতি      আনুগত্য     প্রদর্শন করবেন।   এর   প্রত্যেক   রুকন   ও     নিজের    নিগরানের শরীয়াত     সম্মত       যাবতীয়     আদেশ     নিষেধের     প্রতি আনুগত্য    প্রদর্শন    করবেন।     শরীয়াত    সম্মত     কারণ ব্যতীত মজলিশে শূরা কিংবা দা’ওয়াতে ইসলামীর   যে কোন    যিম্মাদারের  কেউ বিরোধীতা করলে   আমি তার উপর অসন্তুষ্ট, সে আমার যতই নিকটতম বন্ধু হোক না কেন।<br /> <br /> (৩২) প্রত্যেক ইসলামী ভাই সপ্তাহে  কমপক্ষে একবার শুরু থেকে শেষ  পর্যন্ত এলাকায়ী  দাওরা বরায়ে  নেকীর দা’ওয়াতে       অংশ     গ্রহণ    করবেন    এবং    প্রতি    মাসে কমপক্ষে তিন  দিন,   ১২  মাসে ৩০   দিন এবং  জীবনে  একাধারে কমপক্ষে ১২ মাস মাদানী কাফেলাতে সফর করুন। প্রত্যেক ইসলামী ভাই ও প্রত্যেক ইসলামী বোন নিজের  চরিত্র সংশোধনের  উপর  অবিচল থাকার  জন্য দৈনন্দিন    মাদানী   ইনআমাতের    রিসালা    পূরণ   করে, প্রতি মাসে আপন যিম্মাদারের নিকট জমা দিবেন।<br /> <br /> (৩৩)  তাজদারে    মদীনা,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর  ভালবাসা   ও  সুন্নাতের  বার্তাকে  ব্যাপক     হারে      দুনিয়াতে     প্রচার     ও     প্রসার      করতে থাকুন।<br /> <br /> (৩৪) মন্দ আকীদা, মন্দ আমল, দুনিয়ার প্রতি অনর্থক ভালবাসা,   হারাম  সম্পদ  ও  অবৈধ   ফ্যাশন   ইত্যাদির বিরুদ্ধে  নিজ  প্রচেষ্টা  অব্যাহত রাখবেন। সুন্দর    চরিত্র, সুমিষ্ট  মাদানী  ব্যবহারের  মাধ্যমে  নেকীর  দাওয়াতের  সাড়া জাগাতে থাকবেন।<br /> <br /> (৩৫)   রাগ,   বদমেজাজ   ও    খিটখিটে   স্বভাব   ইত্যাদি  কাছেও আসতে দিবেন  না,  অন্যথায় দ্বীনের কাজ করা আপনার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।<br /> <br /> (৩৬)  আমার  লিখনী   ও   বয়ানের   ক্যাসেট  সমূহ  দ্বারা দুনিয়াবী   ধন  সম্পদ  উপার্জন  করা  থেকে  সম্পূর্ণরূপে  বিরত  থাকার  জন্য  আমার  ওয়ারিশদের  প্রতি  আমার  মাদানী অনুরোধ রইল।<br /> <br /> (৩৭)     আমার     পরিত্যক্ত     সম্পদ     ইত্যাদির       ক্ষেত্রে  শরীয়াত নির্দেশিত পন্থার উপরই আমল করবেন।<br /> <br /> (৩৮) কেউ আমাকে ভালমন্দ বলে থাকলে কিংবা গালি বা   আঘাত দিয়ে  থাকলে কিংবা  আমার মনে  যেকোন   ভাবে কষ্ট দিয়ে থাকলে আমি আল্লাহ্ তাআলার ওয়াস্তে তাকে অগ্রিম ক্ষমা করে দিলাম।<br /> <br /> (৩৯)      আমাকে      কষ্ট       দানকারী      লোকদের       থেকে কোনরূপ প্রতিশোধ নিবেন না।<br /> <br /> (৪০)  অবশ্য   যদি  কেউ   আমাকে    শহীদ    করে   দেয়, তাহলে আমার পক্ষ থেকে তাকে আমার যাবতীয় প্রাপ্য ক্ষমা    করে   দিলাম।    আমার    ওয়ারিশদেরকেও   আমি অনুরোধ    করছি,  তারা   যেন   তাকে  ক্ষমা    করে  দেয়। তাজেদারে  মদীনা  صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم এর  শাফায়াতের    বদৌলতে        যদি    আমি     হাশরের    মাঠে বিশেষ অনুগ্রহ প্রাপ্ত  হই,  তাহলে اِنْ  شَآءَ    اللّٰہ   عَزَّوَجَلَّ আমি    আমার    হত্যাকারী   তথা    আমাকে    শাহাদাতের অমীয়  সুধা  পানকারীকেও  জান্নাতে  নিয়ে  যাবো,  শর্ত  হলো;   যদি  সে  ঈমান সহকারে মৃত্যুবরণ করে  থাকে। (যদি  বাস্তবেই আমাকে শহীদ করে দেয়া হয়, তবে সে কারণে    কোন      ধরণের    দাঙ্গা    হাঙ্গামা,    অবরোধ     ও  হরতাল  ইত্যাদি  করবেন   না।  হরতালের   নামে   জোর জবরদস্তি মূলক মুসলমানদের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া, তাদের জান মালের  ক্ষতি   সাধন করা,  দোকান  পাঠ ও   গাড়িতে  পাথর  নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করা, যানবাহন  ভাংচুর  করা,   দেশে  অরাজকতা   ও  নৈরাজ্য সৃষ্টি করা, মানুষের অযথা হক  নষ্ট করা ইত্যাদির মত   ধ্বংসাত্মক   কার্যকলাপকে    ইসলামের   কোন    মুফতিই  বৈধ বলে  ফতোয়া  দিতে পারবেন  না।  এরূপ  হরতাল সম্পূর্ণরূপে  হারাম  ও  জাহান্নামে  নিয়ে  যাওয়ার  মতো  কাজ।<br /> <br /> হায়!    গুনাহ্     সমূহের      মার্জনাকারী     ক্ষমাশীল     দয়ালু মালিক     আল্লাহ্     তাআলা    যদি    আমি     গুনাহগার      ও  পাপীকে  তাঁর  প্রিয়    মাহবুব  صَلَّی    اللّٰہُ    تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উসিলায় ক্ষমা করে দিতেন। হে  আমার প্রিয় আল্লাহ্!   যতদিন    পর্যন্ত   আমি   জীবিত    থাকি   ততদিন পর্যন্ত আমাকে রাসূল صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর ভালবাসায়    মত্ত    রাখো,   যেন   মদীনার    স্মরণ   করতে থাকি,   নেকীর   দাওয়াতের জন্য  সচেষ্ট  রাখো, মাহবুব صَلَّی   اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর   শাফায়াত   নসীব করো  এবং আমাকে  বিনা হিসাবে   ক্ষমাও  করে  দাও। জান্নাতুল ফিরদাউসেও প্রিয় মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর প্রতিবেশি হওয়ার সুযোগ দান করো।<br /> <br /> হায়! যদি সর্বদাই প্রিয় মাহবুব صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  দীদার লাভে  ধন্য থাকতে পারতাম। হে আল্লাহ্! তোমার হাবীবের উপর আমার অসংখ্য দরূদ ও সালাম প্রেরণ      করো।      তাঁর     সকল     উম্মতকে      ক্ষমা     করে  দাও।اٰمِين بِجا هِ  النَّبِىِّ الْاَمين    صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم<br /> <br /> ইয়া ইলাহী! যব রযা খোয়াবে ঘিরাছে ছর উঠায়ে,<br /> দৌলতে বেদারে ইশ্কে মুস্তফা কা সাথ হো।<br /> <br /> “মাদানী     অসিয়তনামা”    প্রথমবার   মুর্হারামুল   হারাম, ১৪১১  হিজরী মোতাবেক ১৯৯০ইং-তে মদীনা শরীফে বসে  লিখা  হয়েছিল।   কিন্তু  মাঝে  মধ্যে   এতে  সামান্য সংশোধন করা হয়েছে। বর্তমানে সংশোধিত আকারেই মাদানী অসিয়তনামা উপস্থাপন করা হয়েছে।<br /> <br /> صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                    صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /> <br /> অসিয়ত ক্ষমা প্রাপ্তির মাধ্যম<br /> <br /> রহমতে আলম,   নূরে মুজাস্সম, রাসূলে আকরাম صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেন:   “যে (ব্যক্তি) অসিয়ত করার পর মৃত্যু বরণ করলো, সে সোজা রাস্তা ও  সুন্নাতের উপর আমল করেই মৃত্যু বরণ করল  এবং তার  মৃত্যু  তাকওয়া ও শাহাদাতের উপরই  হলো এবং সে   যেন  ক্ষমাপ্রাপ্ত   হয়েই  মৃত্যুবরণ  করলো।”  (ইবনে মাজাহ, ৩য় খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা, হাদীস-২৭০১)<br /> <br /> কাফন-দাফনের নিয়মাবলী<br /> <br /> পুরুষের সুন্নাত মোতাবেক কাফন<br /> <br /> পুরুষের   জন্য সুন্নাত    মোতাবেক কাফন  তিনটি। যথা- (১)    লিফাফাহ (চাদর) ,   (২) ইযার (তাহবন্দ)  ও (৩) কামীস (জামা) ।<br /> <br /> মহিলাদের সুন্নাত মোতাবেক কাফন<br /> <br /> মহিলাদের   জন্য    সুন্নাত   মোতাবেক     কাফন    পাঁচটি।  যথা-   (১)   লিফাফাহ,   (২)   ইযার,   (৩)   কামীস,   (৪)  সীনাবন্ধ ও (৫) ওড়না।<br /> <br /> হিজড়া      অর্থাৎ      মেয়েলি      স্বভাবের      পুরুষদেরকেও  মহিলাদের অনুরূপ পাঁচটি কাফন পরাতে হবে।<br /> <br /> কাফনের বিস্তারিত বিবরণ<br /> <br /> (১) লিফাফাহ  অর্থাৎ  চাদর:  মৃত ব্যক্তির দেহের দৈর্ঘ্য হতে    এতটুকু   পরিমাণ   বড়  হতে    হবে,  যাতে  উভয়  প্রান্তে বাঁধা যায়।<br /> <br /> (২)  ইযার     অর্থাৎ  তাহ্বন্দ:   মাথার   চুল  থেকে  পায়ের  তালু  পর্যন্ত  হতে   হবে  অর্থাৎ   লিফাফাহ  হতে   এতটুকু পরিমাণ   ছোট  হতে   হবে  যা  বন্ধনের   জন্য   অতিরিক্ত রাখা হয়েছিল।<br /> <br /> (৩)  কামীস   বা   জামা:   গর্দান  থেকে  হাঁটুর   নিচ  পর্যন্ত হতে  হবে   এবং  সামনে  ও     পিছনে  উভয়দিকে  সমান হতে হবে।  এতে   কল্লি ও   আস্তিন থাকতে  পারবে  না। পুরুষদের কামীস কাঁধের  উপরিভাগে আর   মহিলাদের  কামীস সীনার দিকে ছিড়তে হবে।<br /> <br /> (৪)  সীনাবন্ধ:  এটা   মহিলাদের  স্তন থেকে  নাভী পর্যন্ত  হতে  হবে।  তবে   রান    পর্যন্ত   হওয়াই  উত্তম।  (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮১৮ পৃষ্ঠা)<br /> <br /> মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়ার নিয়মাবলী<br /> <br /> আগরবাতি বা লোবান বাতির ধোঁয়া দ্বারা তিন  বা পাঁচ  বা  সাতবার  গোসলের  খাটে  ধোঁয়া  দিতে  হবে  অর্থাৎ  তিন  বা   পাঁচ  বা  সাতবার  আগর  বা   লোবান  বাতিকে খাটের চারপাশে    ঘুরাতে হবে। অতঃপর মৃত ব্যক্তিকে খাটের  উপর  এভাবে  শোয়াতে    হবে  যেভাবে    কবরে   তাকে  শোয়ানো  হয়।   কাপড়   দ্বারা   নাভী  থেকে   হাঁটু পর্যন্ত    সতর   ঢেকে   রাখতে   হবে।    (বর্তমানে    গোসল দেয়ার  সময়  সাদা   কাপড়     দ্বারা   মৃত  ব্যক্তির    সতর এমনভাবে     ঢেকে    রাখা   হয়,   যার  ফলে  পানি  ঢালার সাথে সাথেই  তার লজ্জাস্থান  ভেসে  উঠে। তাই  খয়েরী বা  গাঢ়   রঙের  কোন  মোটা  কাপড়    দ্বারা  তার  সতর  এমনিভাবে ঢেকে রাখতে হবে, যাতে   পানি ঢালার পর তার   লজ্জাস্থান  ভেসে      না  উঠে।  কাপড়  ডাবল  করে দিয়েই        সতর        ঢেকে        রাখা         উত্তম।)        অতঃপর  গোসলদানকারী    ব্যক্তি    নিজ    হাতে     একটি     কাপড়  জড়িয়ে  প্রথমে  তাকে   উভয়   দিকে  ইস্তিন্জা  করাবেন  (অর্থাৎ  পানি দ্বারা তাকে  শৌচ কর্ম করাবেন)  তারপর নামাযের অযুর মত তাকে অযু করাবেন অর্থাৎ তিনবার মুখমন্ডল, কনুইসহ তিনবার উভয় হাত, অতঃপর মাথা মাসেহ   ও     তিনবার    উভয়   পা   ধুইয়ে   দিবেন।     মৃত   ব্যক্তিকে অযু করানোর সময়  প্রথমে উভয় হাত কবজি পর্যন্ত   ধৌত  করা,   কুলি  করানো   ও  নাকে  পানি  দেয়া আবশ্যক   নয়।  তবে কোন  কাপড়  বা  রুইয়ের  পুটলি ভিজিয়ে  তা   দ্বারা  দাঁত,   মাড়ি  ঠোঁট   ও   নাকের    ছিদ্র ইত্যাদি   মুছে  দেয়া   উত্তম।  তারপর  মৃত  ব্যক্তির  চুল, দাঁড়ি    থাকলে     তা     ধুইয়ে       দিবেন।    অতঃপর    মৃত  ব্যক্তিকে বাম  কাতে   শোয়ায়ে কুল (বরই) পাতা  দিয়ে গরম করা  পানি,    আর তা পাওয়া না গেলে বিশুদ্ধ  মৃদু গরম  পানি  মাথা   থেকে  পা  পর্যন্ত    তার  শরীরে   উপর এমনিভাবে ঢেলে দিবেন যাতে পানি তক্তা পর্যন্ত পৌছে যায়। অতঃপর তাকে ডান কাতে শোয়ায়ে অনুরূপভাবে পানি     ঢেলে   দিবেন।   তার   পর   হেলান    দিয়ে    তাকে বসিয়ে  পেটের নিচের অংশের উপর আস্তে   আস্তে হাত  দ্বারা   মালিশ   করবেন।  পেট   হতে  কিছু  বের  হলে   তা ধুইয়ে     পরিস্কার    করে    দিবেন।     এমতাবস্থায়      তাকে পুনরায়    অযু    ও    গোসল    করানোর    প্রয়োজন    নেই।  অতঃপর   মাথা   থেকে   পা    পর্যন্ত   তার   শরীরের  উপর তিনবার কাপুরের পানি ঢেলে দিবেন এবং কোন পবিত্র কাপড় দ্বারা তার শরীর আস্তে আস্তে মুছে নিবেন। মৃত ব্যক্তির সমস্ত শরীরে একবার পানি প্রবাহিত করা ফরয আর         তিনবার        প্রবাহিত        করা       সুন্নাত।       (মৃতের গোসলদানে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত করবেন না। মনে রাখবেন! আখিরাতে এক বিন্দু বিন্দুর হিসাব হবে)<br /> <br /> পুরুষকে কাফন পরানোর পদ্ধতি<br /> <br /> আগর  বা লোবান বাতির ধোঁয়া দ্বারা কাফনকে এক বা তিন    বা   পাঁচ    বা    সাতবার    ধোঁয়া   দিবেন।   অতঃপর কাফন  এমনভাবে  বিছাবেন  যে, প্রথমে খাটে  লিফাফা অর্থাৎ বড় চাদর,  এর    উপর  ইযার বা তাহবন্দ এবং  এর   উপর   কামীস  রাখবেন।   অতঃপর   মৃত   ব্যক্তিকে কাফনের উপর শোয়ায়ে তাকে কামীস পরাবেন। এখন দাঁড়িতে   (আর  দাঁড়ি   না   থাকলে     চিবুকে)  ও  সমস্ত  শরীরে সুগন্ধি মালিশ করে দিবেন। কপাল, নাক, হাত, হাঁটু ও পা ইত্যাদি অঙ্গ যা দ্বারা সিজদা করা হয় তাতে  কাপুর লাগিয়ে দিবেন। অতঃপর  তাহবন্দ প্রথমে বাম   দিক থেকে  তারপর ডান দিক থেকে জড়াবেন। শেষে লিফাফাহ   বা   চাদরও প্রথমে  বাম দিক থেকে তারপর ডান দিক থেকে জড়াবেন মাথা ও পায়ের দিকে বেঁধে দিবেন। যেন ডান দিকের অংশ উপরে থাকে।<br /> <br /> মহিলাদেরকে কাফন পরানোর নিয়ম<br /> <br /> মহিলাদেরকে        কামীস         পরিধান        করিয়ে       তাদের চুলগুলোকে   দুইভাগে     বিভক্ত     করে   কামীসের   উপর দিয়ে বুকের  উপরে রেখে দিবেন। তারপর অর্ধ পিঠের  নিচে ওড়না বিছিয়ে তা মাথার উপর দিয়ে এনে মুখের উপর  নিকাবের  মতো   করে    দেন,   যেন   বুকের  উপর থাকে।   ওড়নার দৈর্ঘ্য হতে  হবে  অর্ধ পিঠ থেকে   বুক পর্যন্ত     এবং   প্রস্থ  হতে  হবে  এক   কানের   লতি   থেকে  অপর কানের লতি  পর্যন্ত। কতিপয়  লোকেরা  মহিলারা জীবদ্দশায়   যেভাবে   মাথায়   ওড়না   পরিধান   করতো  সেভাবেই  মহিলাদেরকে ওড়না পরিধান করান।  কিন্তু এটা সুন্নাতের পরিপন্থী। অতঃপর পুরুষদের ন্যায় ইযার ও  লিফাফাহ  জড়াবেন।  অবশেষে   সবগুলোর  উপরে  স্তনের  উপরিভাগ  থেকে  রান   পর্যন্ত  সীনাবন্ধ  জড়ায়ে  সূতা বা রশি দ্বারা বেধে দিবেন।)<br /> <br /> জানাযার নামাযের পর দাফন<br /> <br /> (১)   জানাযার   লাশবাহী  খাট   কবরের  নিকট  কিবলার দিকে  রাখা মুস্তাহাব যাতে মৃত  ব্যক্তিকে কিবলার  দিক থেকে   কবরে    নামানো   যায়।   কবরের    পায়ের    দিকে জানাযার   খাট  রেখে  মাথার  দিক থেকে মৃত   ব্যক্তিকে কবরে নামাবেন না।<br /> <br /> (২)      প্রয়োজনানুসারে     দুইজন   বা   তিনজন   সবল   ও নেককার   ব্যক্তি  কবরে নেমে লাশ  নামাবেন। মহিলার লাশ   মুহরিম   ব্যক্তিই   নামাবেন।   মুহরিম   না   থাকলে  অন্যান্য        আত্মীয়রা,       তারাও         না       থাকলে       কোন পরহেজগার     ব্যক্তির    মাধ্যমে    মহিলার     লাশ    কবরে নামাবেন। ( )<br /> <br /> (৩)  মহিলার লাশ  কবরে  নামানোর সময়  থেকে তক্তা লাগানোর   সময় পর্যন্ত কোন  কাপড় দ্বারা   কবর ঘিরে  রাখবেন।<br /> <br /> (৪) মৃত  ব্যক্তিকে কবরে  নামানোর    সময় এ  দোয়াটি  পাঠ করবেন:<br /> <br /> بِسْمِ اللهِ وَ بِا للهِ وَعَلٰى مِلَّتِ رَسُوْلِ اللهِ<br /> <br /> (৫)  মৃত  ব্যক্তিকে  কবরে  ডান  কাতে  রেখে  তার  মুখ   কিবলার দিকে করে দিবেন  এবং কাফনের বাঁধনগুলো  খুলে  দিবেন।   কেননা,  এখন  আর   বাঁধনের    প্রয়োজন নেই, বাঁধন না খুললেও কোন অসুবিধা নেই। ( )<br /> <br /> (৬) কাঁচা ইট দ্বারা কবরের মুখ বন্ধ করে দিবেন। মাটি নরম  হলে  কবরের মুখে  কাঠের তক্তা  ব্যবহার  করাও  জায়েজ। (<br /> <br /> (৭)    তারপর   কবরে    মাটি  দিবেন   এ  ক্ষেত্রে  মুস্তাহাব হলো, উভয় হাত দ্বারা মাথার দিক থেকে তিনবার মাটি ফেলা।    প্রথমবার  مِنْهَا خَلَقْنٰكُمْ বলবেন, দ্বিতীয় বার وَفِيْهَا نُعِيْدُكُمْ  ও তৃতীয়বার  وَمِنهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً اُخْرٰى বলবেন।   অবশিষ্ট   মাটিগুলো    কোদাল   ইত্যাদি     দ্বারা ফেলবেন।<br /> <br /> (৮) যতটুকু মাটি কবর  থেকে বের করা হয়েছিল, তার চেয়ে অধিক মাটি কবরে ফেলা মাকরূহ।<br /> <br /> (৯) কবর উটের কুঁজের ন্যায় ঢালু করবেন। চার কোণা বিশিষ্ট করবেন না। (যেমন বর্তমানে দাফনের কিছুদিন পর   অনেকেই   ইট  ইত্যাদি   দ্বারা  কবরকে  চার  কোণা বিশিষ্ট করে থাকে।)<br /> <br /> (১০)    কবর    মাটি    থেকে    এক     বিঘত     উচুঁ    বা    এর চাইতেও সামান্য উচুঁ করবেন।<br /> <br /> (১১)   দাফনের  পর    কবরের উপর পানি ছিটিয়ে দেয়া সুন্নাত।<br /> <br /> (১২)       এছাড়াও       কবরে       জন্মানো       গাছের       চারা  ইত্যাদিতে পানি দেয়ার উদ্দেশ্যে কবরে পানি  ছিটানো জায়েজ।<br /> <br /> (১৩) বর্তমানে কতিপয় লোক   বিনা  প্রয়োজনে  কবরে  যে  পানি  ছিটায়, এটা   মন্দ ও নাজায়িয,  ফতোওয়ায়ে  রযবীয়া   শরীফ,   ৯ম   খন্ড,    ৩৭৩     পৃষ্ঠার    মধ্যে     তা অপচয় হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।<br /> <br /> (১৪) দাফনের  পর  কবরের  শিয়রে الٓـمّٓ থেকে مُفْلِحُوْنَ পর্যন্ত এবং পায়ের  দিকে اٰمَنَ الرَّسُوْلُ থেকে সূরার শেষ পর্যন্ত পাঠ করা মুস্তাহাব।<br /> <br /> (১৫) কবর তালক্বীন করবেন। (তালকীনের নিয়ম পূর্বে বর্ণিত হয়েছে)<br /> <br /> (১৬) কবরের শিয়রে দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হয়ে আযান দিবেন।<br /> <br /> (১৭) কবরের উপর ফুল দেয়া উত্তম। কেননা, যতদিন পর্যন্ত এ ফুল তাজা থাকবে, তা তাসবীহ   পাঠ  করবে।  এতে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পাবে।<br /> <br /> নির্বোধ শিশুদেরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়াকে<br /> <br /> হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে<br /> <br /> নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ     করেন:     “তোমরা     মসজিদ    সমূহকে     শিশু,  পাগল,   ক্রয়-বিক্রয়,   ঝগড়া-বিবাদ,   উচ্চ   স্বরে   কথা  বলা,   শরীয়াতের    শাস্তি     কার্যকর    করা     ও   তাওবারী ব্যবহার করা থেকে   রক্ষা  করো।”  (ইবনে মাযাহ,  ১ম  খন্ড, ৪১৫ পৃষ্ঠা, হাদীস৭৫০)<br /> <br /> শিশুর    প্রস্রাব    ইত্যাদির    কারণে     মসজিদে     অপবিত্র  হওয়ার    আশঙ্কা    থাকলে     এরূপ     শিশু     ও    পাগলকে মসজিদে  নিয়ে যাওয়া হারাম। আর মসজিদে অপবিত্র  হওয়ার  আশঙ্কা  না থাকলে   তাদরেকে মসজিদে   নিয়ে যাওয়া মাকরূহ। যে   সমস্ত লোক মসজিদে জুতা  নিয়ে   যায়,      তাদের      জুতায়      নাজাসাত     আছে      কিনা     তা ভালভাবে  লক্ষ্য  রাখতে  হবে।   যদি  জুতায়   নাজাসাত  থাকে, তাহলে তা ভালভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। আর    জুতা    পরিহিত   অবস্থায়    মসজিদে    প্রবেশ   করা বেয়াদবী। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৯২ পৃষ্ঠা) শিশু, পাগল,     অজ্ঞান    ও    জ্বিনগ্রস্থ   রোগীকে   ঝাঁড়   ফুঁকের জন্যও    মসজিদে    নিয়ে    যাওয়ার    ক্ষেত্রে    শরীয়াতের  অনুমতি        নেই,       শিশুদেরকে        ভালভাবে       কাপড়ে জড়িয়েও      মসজিদে      নেয়া     যাবে      না।     যদি      শিশু ইত্যাদিকে মসজিদে  নিয়ে  যাওয়ার  মত  ভুল আপনার থেকে      সংঘটিত     হয়ে      থাকে,       তাহলে      দয়া     করে অনতিবিলম্বে    তাওবা    করে   ভবিষ্যতে    আর   কখনও   তাদেরকে মসজিদে না নেয়ার প্রতিজ্ঞা করে নিন।<br /> <br /> এ অধ্যায়টি পাঠকালে কারো সাথে মসজিদে তার শিশু সন্তান থাকলে তার প্রতি আমার    সন্নিবদ্ধ অনুরোধ, সে যেন      তাড়াতাড়ি    তার    শিশু    সন্তানকে      মসজিদের বাইরে   নিয়ে   আসে।   তবে   হ্যাঁ   মসজিদের   আঙ্গিনায়  শিশুদেরকে       নেয়া      যাবে,       যদি       তাদেরকে      নিয়ে  মসজিদের ভিতর দিয়ে যেতে না হয়।<br /> <br /> তাহিয়্যাতুল অযু<br /> <br /> অযু   করার   পর   অঙ্গ   প্রত্যঙ্গ   শুষ্ক   হওয়ার   পূর্বে   দুই  রাকাত   নামায  আদায় করা মুস্তাহাব। (দুররে মুখতার,  ২য়  খন্ড,   ৫৬৩  পৃষ্ঠা)   হযরত   সায়্যিদুনা  উকবা   বিন  আমের  رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی  عَنْہُ থেকে বর্ণিত; তিনি  বলেন: নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ  করেন:  “যে  ব্যক্তি  অযু  করে  এবং  ভালভাবে  অযু  করে জাহের   ও  বাতেনের   সাথে মনোযোগী হয়ে  দুই  রাকাত  (নফল  নামায)  আদায়  করবে,  তার  জন্য  জান্নাত  ওয়াজিব  হয়ে   যায়।”  (সহীহ     মুসলিম,   ১৪৪  পৃষ্ঠা,   হাদীস-    ২৩৪)   গোসলের   পরেও   দুই   রাকাত  নামায মুস্তাহাব। অযু  করার পর ফরয ইত্যাদি পড়লে তাহিয়্যাতুল    অযুর    স্থলাভিষিক্ত    হয়ে    যাবে।     (রদ্দুল  মুহতার,  ২য় খন্ড, ৫৬৩ পৃষ্ঠা)  মাকরূহ  সময়ের  মধ্যে তাহিয়্যাতুল অযু ও গোসলের পরের দুই রাকাত নামায আদায় যাবেনা।<br /> <br /> صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                   صَلَّی  اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /> <br /> <br /></div>

কাফন-দাফনের নিয়মাবলী

মাদানী অসিয়তনামা (কাফন-দাফনের আহকাম সম্বলিত) দরূদ শরীফের ফযীলত নবীদের  তাজেদার,   রাসূলদের   সরদার,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ ت...

Read more »

কাফন-দাফনের নিয়মাবলী

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><br />মাদানী অসিয়তনামা<br /><br /><br /><br />(কাফন-দাফনের আহকাম সম্বলিত)<br /><br /><br /><br />দরূদ শরীফের ফযীলত<br /><br /><br /><br />নবীদের  তাজেদার,   রাসূলদের   সরদার,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم ইরশাদ করেন:  “আমার উপর     দরূদ     শরীফ     পাঠ     করো,     আল্লাহ্     তাআলা  তোমাদের উপর রহমত বর্ষণ  করবেন।” (আল কামিলু লি ইবনে আদী, ৫ম খন্ড, ৫০৫ পৃষ্ঠা)<br /><br /><br /><br />صَلُّوْا عَلَی  الْحَبِیْب!                صَلَّی  اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /><br /><br /><br />اَلْحَمْدُ لِلّٰہِ عَزَّوَجَلَّ এখন ফযরের নামাযের পর মসজিদে নববী   শরীফে         عَلٰی   صَاحِبِہَا    الصَّلٰوۃُ   وَالسَّلَام   বসে  “মদীনা মুনাওয়ারা  থেকে চল্লিশখানা   অসিয়ত” লিখার সৌভাগ্য     অর্জন  করছি।   আফসোস!  শত   আফসোস! আজ     আমার    মদীনা   মুনাওয়ারাতে   উপস্থিতির    শেষ সকাল। সূর্য প্রিয় মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর রওজা মোবারকে সালাম পেশ করার  জন্য  হাজির হতে    চলেছে।    আহ!     আজ        রাতেই    যদি    জান্নাতুল বাক্বীতে  সমাহিত   হওয়ার  কোন   ব্যবস্থা  না  হয়,  তবে (আগামীকালই) মদীনা শরীফ ত্যাগ করতে হবে। চোখ অশ্রুসিক্ত, মন অস্থির হয়ে আছে। হায়!<br /><br /><br /><br />আফসোস চন্দ ঘড়িয়া তয়্যবা কি রাহ গেয়ী হে,<br /><br />দিল মে জুদায়ী কা গম তুফান মাচা রাহা হে।<br /><br /><br /><br />আহ! মন ব্যথা বেদনায় নিমজ্জিত। মদীনার বিচ্ছেদের হৃদয়  বিদারক   চিন্তা   আপাদমস্তক   বেদনার   প্রতিচ্ছবি  বানিয়ে  দিয়েছে।   এমন   মনে  হচ্ছে  যেন   মুখের   হাসি কেউ  ছিনিয়ে  নিয়ে গেছে। আহ!  শীঘ্রই   মদীনা ছেড়ে যেতে হবে। তখন মন ভেঙ্গে যাবে। আহ! মদীনা থেকে স্বদেশের   উদ্দেশ্যে   রাওয়ানা   হওয়ার   মূহুর্তটি   এমনি  বেদনা  দায়ক    হয়ে   থাকে   যে,  যেন   কোন  দুগ্ধপোষ্য শিশুকে তার মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আর   সে  খুবই   আফসোস করে! কেঁদে  কেঁদে  বারবার মায়ের    দিকে  ফিরে  দেখছে,  হয়ত  মা   পুনরায়  তাকে ডেকে   নিবেন…..স্নেহ  ভরে  তাকে  কোলে  তুলে    নিয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরবে। আর শ্লোক শুনিয়ে আপন মায়াভরা কোলে মধুর ঘুম পাড়াবেন। হায়!<br /><br /><br /><br />মে শিকাস্তা দিল লিয়ে বাওঝাল কদম রাখতা হুয়া<br /><br />চল পড়াহো ইয়া শাহানশাহে মদীনা আলওয়াদা<br /><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><br /><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh1MhmagYnfgE0jiwe4fouEqYclrowZQ_Y0bSYUC9e685cMbMuga7p0ygsxzxp7GOAzJv2Bm2xDns_x6QLW2VvqVhQYjuJw7wKV6bTRUX5C7vnBdlnHqbwDMH7JWm60TrSoGSS7mZ84KZ3F/s1600/images4.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="249" data-original-width="589" height="135" loading="lazy" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh1MhmagYnfgE0jiwe4fouEqYclrowZQ_Y0bSYUC9e685cMbMuga7p0ygsxzxp7GOAzJv2Bm2xDns_x6QLW2VvqVhQYjuJw7wKV6bTRUX5C7vnBdlnHqbwDMH7JWm60TrSoGSS7mZ84KZ3F/s320-rw/images4.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /><br /><br /><br />এখন   আমি    ভারাক্রান্ত   অন্তরে     আপনাদের   খেদমতে ৪০টি    অসিয়ত     পেশ   করছি।    দা’ওয়াতে    ইসলামীর সাথে সম্পৃক্ত  সকল ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোনের  প্রতিও   এমনকি,   আমার   সন্তান    সন্ততি  ও  পরিবারের অন্যান্য   সদস্যরা   আমার   এ    অসিয়ত    সমূহের   প্রতি বিশেষ মনযোগ দিবেন। মদীনার নুরানী মাটিতে, সবুজ গম্বুজ  ও মীনারের সুশীতল  ছায়াতলে  যদি আমার মত পাপি ও গুনাহগারকে সমাহিত করা হতো,   তবে কতই না    সৌভাগ্য    হতো।     হায়     আফসোস!    যদি    রাসূলে আকরাম, হুযুর পুরনূর   صَلَّی    اللہُ  تَعَالٰی   عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর  নূরানী জালওয়াতে  আমার  শাহাদাত নসীব  হতো  এবং  জান্নাতুল বাক্বীতে যদি আমার জন্য দু’গজ জমির ব্যবস্থা     হতো।  তবে  উভয়    জাহানে  আমার  সৌভাগ্য  আর সৌভাগ্যই হতো। আহ! আর তা না হলে যেখানেই ভাগ্য অবধারিত…….<br /><br /><br /><br />(১) যদি   মূমুর্ষ অবস্থা  পাই   তবে,  ঐ মুহূর্তের যাবতীয় কার্যাবলী  সুন্নাত  মোতাবেক   সম্পাদন  করবেন। সম্ভব হলে     ডান   পার্শ্বে   শুয়াবেন,   চেহারা   কিবলামুখী   করে দিবেন। সূরা ইয়াসীন শরীফও পাঠ করে শুনাবেন।<br /><br /><br /><br />(২) শেষ নিঃশ্বাস  ত্যাগের পরের সকল কার্যাবলীতেও  সুন্নাতের   প্রতি    লক্ষ্য  রাখবেন।  যেমন:   কাফন-দাফন ইত্যাদি     কার্যাবলী    তাড়াতাড়ি    সম্পাদন    করবেন।  বেশি লোক সমাগমের আশায় জানাযা,  দাফন ইত্যাদি অযথা  বিলম্ব  করা  সুন্নাত  নয়।  বাহারে  শরীয়াত,  ৪র্থ  খন্ডের     উল্লেখিত   বিধানাবলী  উপর   আমল  করবেন। বিশেষত জোরালো তাগিদ হলো;কখনো বিলাপ করবে না। কেননা, এটা হারাম এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ।<br /><br /><br /><br />(৩)  কবরের  সাইজ   ইত্যাদিও  যেন সুন্নাত মোতাবেক হয়   এবং  লাহাদ  কবরই  তৈরী    করবেন,  কেননা  এটা সুন্নাত।<br /><br /><br /><br />(৪) কবরের ভিতরের দেয়াল  ইত্যাদি যেন কাঁচা মটির হয় (যেভাবে আছে সেভাবেই রেখে দিবেন) । আগুনের পোড়ানো ইট দ্বারা তা পাকা করবেন না। যদি ভিতরে নিতান্তই ইটের দেয়াল করতে হয়, তাহলে মাটির কাদা দ্বারা ভিতরে ভালভাবে লেপে দিবেন।<br /><br /><br /><br />(৫)  সম্ভব হলে কবরের ভিতরের তক্তায় সূরা ইয়াসীন শরীফ,     সূরা   মুলক   ও   দরূদে   তাজ   পাঠ   করে   ফুঁক দিবেন।<br /><br /><br /><br />(৬)  সুন্নাত   মোতাবেক   কাফনের   ব্যবস্থা  সগে  মদীনা عُفِىَ  عَنْهُ  এর   (লিখকের)   নিজস্ব  টাকা  থেকেই   যেন  হয়। আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন (সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ এর নিজস্ব টাকা দ্বারা কাফনের খরচ নির্বাহ করা সম্ভব না   হলে)   কোন   বিশুদ্ধ   সুন্নী   আকীদা   সম্পন্ন   ব্যক্তির  হালাল উপার্জন থেকেই কাফনের ব্যবস্থা করবেন।<br /><br /><br /><br />(৭)  দাঁড়ি   ওয়ালা,   পাগড়ীধারী,  সুন্নাতের    অনুসারী কোন   ইসলামী   ভাই    দ্বারা   সুন্নাত  মোতাবেক   গোসল দিবেন।      (সৈয়দ       বংশের      কোন       ব্যক্তি        যদি      এ গুনাহগারকে  গোসল দেয়,  তবে সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ এটাকে নিজের জন্য বেয়াদবী মনে করবে।)<br /><br /><br /><br />(৮)   গোসল   দেয়ার   সময়   পরিপূর্ণভাবে  সতর  ঢেকে   রাখবেন।  খয়েরী   রঙের  কিংবা কোন গাঢ় রঙের   দু’টি মোটা   চাদর  দ্বারা  নাভী   থেকে   হাটু  পর্যন্ত  যদি   ঢেকে রাখা হয়, তাহলে সতর দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।   হ্যাঁ!   পানি   শরীরের   প্রতিটি    অঙ্গেই   বরং    চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত প্রবাহিত হওয়া জরুরী।<br /><br /><br /><br />(৯) কাফনের কাপড়    যদি   যমযমের পানি বা   মদীনা শরীফের পানি বা   উভয়ের পানি দ্বারা সিক্ত  করা    হয়,  তবে তো সৌভাগ্যই। আহ! সৈয়দ বংশের কোন লোক যদি মাথায় সবুজ পাগড়ী পরিয়ে দেন, তাহলে  বড়ই সৌভাগ্য হবে।<br /><br /><br /><br />(১০) মৃত  ব্যক্তির    গোসলের  পর কাফন দ্বারা  চেহারা  আবৃত    করার  পূর্বে   প্রথমে  কপালের    উপর  শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা “بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحيْمِ” লিখে দিবেন। শুধু ওলামা     ও    মাশায়িখকে   ইমামা   (পাগড়ী)    সহকারে  দাফন    করা     যেতে     পারে।     সাধারণ     মৃত    ব্যক্তিকে পাগড়ী সহকারে দাফন করা নিষেধ।<br /><br /><br /><br />(১১)  অনুরূপভাবে  বুকের  উপরও  لَاۤ  اِلٰهَ  اِلَّا  اللهُ  مُحَمَّدٌ  رَّسُوْ لُ الله صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم লিখে দিবেন।<br /><br /><br /><br />(১২) কলবের স্থানে یَارَسُوْلَ الله صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم লিখে দিবেন।<br /><br /><br /><br />(১৩)  নাভী   ও  বুকের   মধ্যবর্তী  স্থানে  কাফনের  উপর শাহাদাত    আঙ্গুল   দ্বারা   “ইয়া    গাউছে   আজম   দস্তগীর رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ, ইয়া ইমাম আবু হানিফা رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی   عَنْہُ,   ইয়া  ইমাম   আহমদ  রযা   رَحْمَۃُ  اللّٰہِ  تَعَالٰی عَلَیْہِ,  ইয়া    শেখ  জিয়া  উদ্দীন  رَحْمَۃُ   اللّٰہِ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ” লিখে দিবেন।<br /><br /><br /><br />(১৪)  (পিঠের  অংশ  ব্যতীত)  নাভী  থেকে  মাথা  পর্যন্ত  সম্পূর্ণ   কাফনে    মদীনা    মদীনা   লিখে     দিবেন।   স্মরণ রাখবেন!  এসব   কিছু   কালি  দ্বারা  নয়,    বরং  শাহাদাত আঙ্গুল    দ্বারাই    লিখবেন।   আর   সৈয়দ    বংশের   কোন  লোক তা লিখে দিলে বড়ই সৌভাগ্য হবে।<br /><br /><br /><br />(১৫)    উভয়     চক্ষুর      উপর    মদীনা     শরীফের      কাটা, খেজুরের বিচি রেখে দিবেন।<br /><br /><br /><br />(১৬) জানাযার লাশবাহী খাট বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময়ও সকল সুন্নাতের প্রতি যথেষ্ট লক্ষ্য রাখবেন।<br /><br /><br /><br />(১৭) জানাযার লাশবাহী খাট বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময়  সকল  ইসলামী  ভাই  এক  সাথে  ইমামে  আহলে  সুন্নাতের  লিখিত   দরূদ   শরীফের     কসীদা  “কা’বে  কে বদরুদ দোজা তুম  পে করোড়ো দুরূদ” পাঠ করবেন। (এটা  ছাড়াও  অন্যান্য  নাত  ইত্যাদি  পড়বেন।  কিন্তু  শুধুমাত্র     ওলামায়ে     আহলে     সুন্নাতের     নাতই         পাঠ করবেন)<br /><br /><br /><br />(১৮)   কোন   বিশুদ্ধ   সুন্নী   আকীদা   সম্পন্ন   আমলধারী  আলিম  বা  সুন্নাতের  পরিপূর্ণ  অনুসারী  কোন  ইসলামী  ভাই   অথবা  উপযুক্ত    থাকলে  আপন  সন্তানদের  মধ্যে কেউ   জানাযার  নামায পড়াবেন। কিন্তু আমার  একান্ত ইচ্ছা   হচ্ছে,  সৈয়দ  বংশের   কোন  ব্যক্তি   দ্বারা  আমার  জানাযার নামায পড়ানো।<br /><br /><br /><br />(১৯) সৈয়দ বংশের সম্মানিত ব্যক্তিরা নিজেদের পবিত্র হাত দ্বারা আমাকে কবরে নামিয়ে মহান প্রতিপালকের   নিকট সোপর্দ করলে সৌভাগ্য হবে।<br /><br /><br /><br />(২০)   কবরের   চেহারার  দিকস্থ  দেয়ালে  তাক  বানিয়ে সেখানে   সুন্নাতের     পরিপূর্ণ    অনুসারী   কোন   ইসলামী  ভাইয়ের হাতে লিখিত  আহাদ নামা, নালাইন  শরীফের নকশা,  সবুজ  গম্বুজ  শরীফের   নকশা, শাজারা শরীফ, নকশে হারকারা ইত্যাদি তাবাররুকাত রেখে দিবেন।<br /><br /><br /><br />(২১)  জান্নাতুল বাক্বীতে দাফনের সুব্যবস্থা হলে বড়ই সৌভাগ্য    হবে।  তবে   সেখানে   দাফন   করবেন  নতুবা আল্লাহ্র কোন ওলির কবরের পাশে, তাও সম্ভব না হলে ইসলামী    ভাইগণ    যেখানেই     ভালো     মনে      করবেন!  সেখানেই আমাকে  দাফন করবেন,   তবে কারো  জবর  দখলকৃত    জমিতে    দাফন    করবেন    না।    কেননা    তা  হারাম।<br /><br /><br /><br />(২২) (দাফনের পর) কবরে আযান দিবেন।<br /><br /><br /><br />(২৩) সৈয়দ বংশের কোন ব্যক্তি দ্বারা তালকীন করালে ধন্য হবো।<br /><br /><br /><br />তালকীনের      ফযীলত:     নবী    করীম,     রউফুর    রহীম,  রাসূলে  আমীন,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “যখন তোমাদের কোন মুসলমান ভাই মৃত্যু বরণ করে, আর তাকে কবরে সমাহিত করার পর     তোমাদের   মধ্যে   একজন   তার   কবরের   শিয়রে দাঁড়িয়ে বলবে: হে অমুকের ছেলে অমুক! তখন সে তা শুনতে   পাবে,   কিন্তু   উত্তর   দিবে   না।   অতঃপর   যখন  আবারো বলবে:  হে  অমুকের ছেলে  অমুক!  তখন  মৃত  ব্যক্তি সোজা হয়ে বসে   পড়বে।   আবার যখন  বলবে: হে  অমুকের  ছেলে   অমুক!   তখন   সে  বলবে:     আল্লাহ্  তাআলা   তোমার   উপর      দয়া    করুক।   তুমি   আমাকে  শিখিয়ে দাও। কিন্তু মৃত ব্যক্তির একথা তোমরা শুনতে  পাবে     না।     অতঃপর     সে     (অর্থাৎ-     যিনি     তালকীন  করাবেন তিনি) বলবে:<br /><br /><br /><br />اُذْكُرْ   مَاخَرَجْتَ  عَلَيْهِ  مِنَ الدُّنْيَا:  شَهَادَةَ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ (صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم) وَاَنَّكَ رَضِيْتَ بِاللهِ رَبًّا  وَّبِالْاِسْلَامِ دِيْنًا وَّ بِمُحَمَّدٍ (صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم) نَبِيًّا وَّ بِالْقُرْاٰنِ اِمَامًا ـ<br /><br /><br /><br />অনুবাদ:  “তুমি  তা  স্মরণ  করো,  যা  বলে  তুমি  দুনিয়া  থেকে    বিদায়  নিয়েছ  অর্থাৎ   একথা  সাক্ষ্য    দাও   যে,  আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم    তাঁর  বান্দা  ও  রাসূল  এবং এটাও বলো  যে,   তুমি   আল্লাহ্কে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে    আল্লাহ্র     মনোনীত    ধর্ম     হিসেবে,    হযরত মুহাম্মদ   صَلَّی   اللّٰہُ   تَعَالٰی   عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ    وَسَلَّم   কে   আল্লাহ্র  প্রেরিত রাসূল  হিসেবে  এবং   কুরআন মজীদকে ইমাম  হিসেবে   মনে-প্রাণে   স্বীকৃতি   দিয়েছ     এবং   এর   উপর সন্তুষ্ট     ছিলে।”     তালকীনকারী     এ     কথা     বলার     পর  মুনকার-নকীর   ফিরিশতাদ্বয়  একে  অপরের  হাত   ধরে বলবেন:   চলো   আমরা   চলে   যাই।   তার   পাশে     বসে থেকে  আমাদের  কোন  লাভ   নেই   যাকে  লোক  দলীল শিখিয়ে দিয়েছে।   এক   ব্যক্তি  রহমতে  আলম صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর নিকট আরয করল, যদি তার মায়ের  নাম  জানা  না   থাকে,  তখন  কিভাবে   তালকীন করাবে?    রাসূলুল্লাহ্   صَلَّی   اللّٰہُ    تَعَالٰی   عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم ইরশাদ করেন: “হাওয়া رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا এর দিকে সম্পর্কিত  করবে।”   (আল   কবীর   লিত  তাবরানী,  ৮ম খন্ড, ২৫০ পৃষ্ঠা, হাদীস-৭৯৭৯)<br /><br /><br /><br />স্মরণ     রাখবেন!   অমুকের    ছেলে    অমুকের   স্থলে   মৃত ব্যক্তি    ও   তার  মায়ের  নাম  নিবে,   যেমন-হে   মুহাম্মদ ইল্ইয়াস বিন  আমেনা। আর   মৃত ব্যক্তির মায়ের নাম  জানা না  থাকলে  মায়ের  নামের  স্থলে  হাওয়া  رَضِیَ  اللہُ تَعَالٰی عَنۡہَا   এ  নাম নিবে। তালকীন কেবলমাত্র আরবী ভাষায়ই পড়বেন।<br /><br /><br /><br />(২৪)   যারা   আমাকে   ভালবাসেন,   তারা    সম্ভব     হলে আমার দাফনের পর  ১২ দিন   পর্যন্ত, আর তা সম্ভব না হলে  কমপক্ষে   ১২   ঘন্টা   হলেও   আমার  কবরের  চার পাশে বসে যিকির, দরূদ,  কুরআন তিলাওয়াত ও নাত ইত্যাদির মাধ্যমে  আমার (অন্তরকে) মনোরঞ্জন করতে থাকবে।   اِنْ     شَآءَ    اللّٰہ   عَزَّوَجَلَّ    এতে   নতুন   জায়গায় আমার    মন    বসে    যাবে।    তবে    উক্ত    সময়েও    আর  সর্বদাই      জামাআত   সহকারে   নামায   আদায়ের   প্রতি  যতœবান হবেন।<br /><br /><br /><br />(২৫)    আমার   উপর    কারো   ঋন   থাকলে   তা   আমার সম্পদ   থেকে   পরিশোধ    করবেন।   আর    যদি   আমার সম্পদ না  থাকে, তাহলে  আমার সন্তান সন্ততি    জীবিত থাকলে  তারা  নতুবা  অন্য   কোন  ইসলামী    ভাই   দয়া   করে     নিজের    সম্পদ    থেকে     আমার    ঋন    পরিশোধ করবেন। আল্লাহ্ তাআলা মহান প্রতিদান দান করবেন। (বিভিন্ন   ইজতিমাতে   ঘোষণা   করে   দিবেন   যে,   কেউ  আমার দ্বারা মনে কষ্ট পেয়ে থাকলে কিংবা আমার দ্বারা কারো     হক     ধ্বংস   হয়ে    থাকলে,    সে   যেন   আমাকে (মুহাম্মদ  ইল্ইয়াস কাদেরীকে)  ক্ষমা  করে দেয়। আর কেউ    আমার    নিকট     কর্জ    পেয়ে     থাকলে    সে     যেন তাড়াতাড়ি   আমার    ওয়ারিশদের    সাথে    যোগাযোগ করে তা নিয়ে নেয় অথবা যেন ক্ষমা করে দেয়।)<br /><br /><br /><br />(২৬)     অধিকহারে     আমার     প্রতি     (ইছালে     সাওয়াব  করবেন)   সাওয়াব  পৌঁছাতে  থাকবেন  এবং     আমাকে মাগফিরাতের দোয়া  দ্বারা ধন্য করতে থাকবেন।   এটা  আমার জন্য বড়ই দয়া হবে।<br /><br /><br /><br />(২৭) সকলেই  মসলকে আ’লা হযরত অর্থাৎ-   আহলে সুন্নাত     ওয়াল     জামাআতের    মতাদর্শের   উপর   অটল থাকবেন  এবং  ইমামে    আহলে  সুন্নাত  মাওলানা   শাহ্  আহমদ   রযা   খাঁন   رَحْمَۃُ  اللّٰہِ      تَعَالٰی   عَلَیْہِ  এর  বিশুদ্ধ ইসলামী     শিক্ষা     মোতাবেক     (সুপ্রতিষ্ঠিত     থাকবেন)  আমল করবেন।<br /><br /><br /><br />(২৮)     বদ      মাযহাব     ও     বদ      আকীদা     পোষণকারী ব্যক্তিদের সংস্পর্শ থেকে সর্বদা কয়েক শত মাইল দূরে থাকবেন, কেননা তাদের সঙ্গ খাতিমা বিল খায়ের তথা ঈমানের সাথে মৃত্যু   হওয়ার  ক্ষেত্রে  প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি  করে। আখিরাত বরবাদ হওয়ার কারণ।<br /><br /><br /><br />(২৯)  তাজদারে  মদীনা,   রাহাতে  কলবো  সীনা,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ   تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم  এর    ভালবাসা এবং সুন্নাতের   উপর সর্বদা দৃঢ়ভাবে  অটল   থাকবেন।<br /><br /><br /><br />(৩০)   সুন্নাত   ও    ওয়াজিব    সহ   পাঁচ   ওয়াক্ত   নামায,  রমযানের   রোযা,    হজ্ব,   যাকাত   ইত্যাদি    ফরয   সমূহ যথাযথ আদায় করবেন। এতে কোন রকমের অলসতা প্রদর্শন করবেন না।<br /><br /><br /><br />(৩১)    গুরুত্বপূর্ণ অসিয়ত:  সর্বদা দা’ওয়াতে ইসলামীর  মারকযী     মজলিশে     শুরার      প্রতি      আনুগত্য     প্রদর্শন করবেন।   এর   প্রত্যেক   রুকন   ও     নিজের    নিগরানের শরীয়াত     সম্মত       যাবতীয়     আদেশ     নিষেধের     প্রতি আনুগত্য    প্রদর্শন    করবেন।     শরীয়াত    সম্মত     কারণ ব্যতীত মজলিশে শূরা কিংবা দা’ওয়াতে ইসলামীর   যে কোন    যিম্মাদারের  কেউ বিরোধীতা করলে   আমি তার উপর অসন্তুষ্ট, সে আমার যতই নিকটতম বন্ধু হোক না কেন।<br /><br /><br /><br />(৩২) প্রত্যেক ইসলামী ভাই সপ্তাহে  কমপক্ষে একবার শুরু থেকে শেষ  পর্যন্ত এলাকায়ী  দাওরা বরায়ে  নেকীর দা’ওয়াতে       অংশ     গ্রহণ    করবেন    এবং    প্রতি    মাসে কমপক্ষে তিন  দিন,   ১২  মাসে ৩০   দিন এবং  জীবনে  একাধারে কমপক্ষে ১২ মাস মাদানী কাফেলাতে সফর করুন। প্রত্যেক ইসলামী ভাই ও প্রত্যেক ইসলামী বোন নিজের  চরিত্র সংশোধনের  উপর  অবিচল থাকার  জন্য দৈনন্দিন    মাদানী   ইনআমাতের    রিসালা    পূরণ   করে, প্রতি মাসে আপন যিম্মাদারের নিকট জমা দিবেন।<br /><br /><br /><br />(৩৩)  তাজদারে    মদীনা,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ   وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর  ভালবাসা   ও  সুন্নাতের  বার্তাকে  ব্যাপক     হারে      দুনিয়াতে     প্রচার     ও     প্রসার      করতে থাকুন।<br /><br /><br /><br />(৩৪) মন্দ আকীদা, মন্দ আমল, দুনিয়ার প্রতি অনর্থক ভালবাসা,   হারাম  সম্পদ  ও  অবৈধ   ফ্যাশন   ইত্যাদির বিরুদ্ধে  নিজ  প্রচেষ্টা  অব্যাহত রাখবেন। সুন্দর    চরিত্র, সুমিষ্ট  মাদানী  ব্যবহারের  মাধ্যমে  নেকীর  দাওয়াতের  সাড়া জাগাতে থাকবেন।<br /><br /><br /><br />(৩৫)   রাগ,   বদমেজাজ   ও    খিটখিটে   স্বভাব   ইত্যাদি  কাছেও আসতে দিবেন  না,  অন্যথায় দ্বীনের কাজ করা আপনার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।<br /><br /><br /><br />(৩৬)  আমার  লিখনী   ও   বয়ানের   ক্যাসেট  সমূহ  দ্বারা দুনিয়াবী   ধন  সম্পদ  উপার্জন  করা  থেকে  সম্পূর্ণরূপে  বিরত  থাকার  জন্য  আমার  ওয়ারিশদের  প্রতি  আমার  মাদানী অনুরোধ রইল।<br /><br /><br /><br />(৩৭)     আমার     পরিত্যক্ত     সম্পদ     ইত্যাদির       ক্ষেত্রে  শরীয়াত নির্দেশিত পন্থার উপরই আমল করবেন।<br /><br /><br /><br />(৩৮) কেউ আমাকে ভালমন্দ বলে থাকলে কিংবা গালি বা   আঘাত দিয়ে  থাকলে কিংবা  আমার মনে  যেকোন   ভাবে কষ্ট দিয়ে থাকলে আমি আল্লাহ্ তাআলার ওয়াস্তে তাকে অগ্রিম ক্ষমা করে দিলাম।<br /><br /><br /><br />(৩৯)      আমাকে      কষ্ট       দানকারী      লোকদের       থেকে কোনরূপ প্রতিশোধ নিবেন না।<br /><br /><br /><br />(৪০)  অবশ্য   যদি  কেউ   আমাকে    শহীদ    করে   দেয়, তাহলে আমার পক্ষ থেকে তাকে আমার যাবতীয় প্রাপ্য ক্ষমা    করে   দিলাম।    আমার    ওয়ারিশদেরকেও   আমি অনুরোধ    করছি,  তারা   যেন   তাকে  ক্ষমা    করে  দেয়। তাজেদারে  মদীনা  صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم এর  শাফায়াতের    বদৌলতে        যদি    আমি     হাশরের    মাঠে বিশেষ অনুগ্রহ প্রাপ্ত  হই,  তাহলে اِنْ  شَآءَ    اللّٰہ   عَزَّوَجَلَّ আমি    আমার    হত্যাকারী   তথা    আমাকে    শাহাদাতের অমীয়  সুধা  পানকারীকেও  জান্নাতে  নিয়ে  যাবো,  শর্ত  হলো;   যদি  সে  ঈমান সহকারে মৃত্যুবরণ করে  থাকে। (যদি  বাস্তবেই আমাকে শহীদ করে দেয়া হয়, তবে সে কারণে    কোন      ধরণের    দাঙ্গা    হাঙ্গামা,    অবরোধ     ও  হরতাল  ইত্যাদি  করবেন   না।  হরতালের   নামে   জোর জবরদস্তি মূলক মুসলমানদের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া, তাদের জান মালের  ক্ষতি   সাধন করা,  দোকান  পাঠ ও   গাড়িতে  পাথর  নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করা, যানবাহন  ভাংচুর  করা,   দেশে  অরাজকতা   ও  নৈরাজ্য সৃষ্টি করা, মানুষের অযথা হক  নষ্ট করা ইত্যাদির মত   ধ্বংসাত্মক   কার্যকলাপকে    ইসলামের   কোন    মুফতিই  বৈধ বলে  ফতোয়া  দিতে পারবেন  না।  এরূপ  হরতাল সম্পূর্ণরূপে  হারাম  ও  জাহান্নামে  নিয়ে  যাওয়ার  মতো  কাজ।<br /><br /><br /><br />হায়!    গুনাহ্     সমূহের      মার্জনাকারী     ক্ষমাশীল     দয়ালু মালিক     আল্লাহ্     তাআলা    যদি    আমি     গুনাহগার      ও  পাপীকে  তাঁর  প্রিয়    মাহবুব  صَلَّی    اللّٰہُ    تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উসিলায় ক্ষমা করে দিতেন। হে  আমার প্রিয় আল্লাহ্!   যতদিন    পর্যন্ত   আমি   জীবিত    থাকি   ততদিন পর্যন্ত আমাকে রাসূল صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর ভালবাসায়    মত্ত    রাখো,   যেন   মদীনার    স্মরণ   করতে থাকি,   নেকীর   দাওয়াতের জন্য  সচেষ্ট  রাখো, মাহবুব صَلَّی   اللّٰہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم   এর   শাফায়াত   নসীব করো  এবং আমাকে  বিনা হিসাবে   ক্ষমাও  করে  দাও। জান্নাতুল ফিরদাউসেও প্রিয় মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর প্রতিবেশি হওয়ার সুযোগ দান করো।<br /><br /><br /><br />হায়! যদি সর্বদাই প্রিয় মাহবুব صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  দীদার লাভে  ধন্য থাকতে পারতাম। হে আল্লাহ্! তোমার হাবীবের উপর আমার অসংখ্য দরূদ ও সালাম প্রেরণ      করো।      তাঁর     সকল     উম্মতকে      ক্ষমা     করে  দাও।اٰمِين بِجا هِ  النَّبِىِّ الْاَمين    صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم<br /><br /><br /><br />ইয়া ইলাহী! যব রযা খোয়াবে ঘিরাছে ছর উঠায়ে,<br /><br />দৌলতে বেদারে ইশ্কে মুস্তফা কা সাথ হো।<br /><br /><br /><br />“মাদানী     অসিয়তনামা”    প্রথমবার   মুর্হারামুল   হারাম, ১৪১১  হিজরী মোতাবেক ১৯৯০ইং-তে মদীনা শরীফে বসে  লিখা  হয়েছিল।   কিন্তু  মাঝে  মধ্যে   এতে  সামান্য সংশোধন করা হয়েছে। বর্তমানে সংশোধিত আকারেই মাদানী অসিয়তনামা উপস্থাপন করা হয়েছে।<br /><br /><br /><br />صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                    صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /><br /><br /><br />অসিয়ত ক্ষমা প্রাপ্তির মাধ্যম<br /><br /><br /><br />রহমতে আলম,   নূরে মুজাস্সম, রাসূলে আকরাম صَلَّی  اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  ইরশাদ করেন:   “যে (ব্যক্তি) অসিয়ত করার পর মৃত্যু বরণ করলো, সে সোজা রাস্তা ও  সুন্নাতের উপর আমল করেই মৃত্যু বরণ করল  এবং তার  মৃত্যু  তাকওয়া ও শাহাদাতের উপরই  হলো এবং সে   যেন  ক্ষমাপ্রাপ্ত   হয়েই  মৃত্যুবরণ  করলো।”  (ইবনে মাজাহ, ৩য় খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা, হাদীস-২৭০১)<br /><br /><br /><br />কাফন-দাফনের নিয়মাবলী<br /><br /><br /><br />পুরুষের সুন্নাত মোতাবেক কাফন<br /><br /><br /><br />পুরুষের   জন্য সুন্নাত    মোতাবেক কাফন  তিনটি। যথা- (১)    লিফাফাহ (চাদর) ,   (২) ইযার (তাহবন্দ)  ও (৩) কামীস (জামা) ।<br /><br /><br /><br />মহিলাদের সুন্নাত মোতাবেক কাফন<br /><br /><br /><br />মহিলাদের   জন্য    সুন্নাত   মোতাবেক     কাফন    পাঁচটি।  যথা-   (১)   লিফাফাহ,   (২)   ইযার,   (৩)   কামীস,   (৪)  সীনাবন্ধ ও (৫) ওড়না।<br /><br /><br /><br />হিজড়া      অর্থাৎ      মেয়েলি      স্বভাবের      পুরুষদেরকেও  মহিলাদের অনুরূপ পাঁচটি কাফন পরাতে হবে।<br /><br /><br /><br />কাফনের বিস্তারিত বিবরণ<br /><br /><br /><br />(১) লিফাফাহ  অর্থাৎ  চাদর:  মৃত ব্যক্তির দেহের দৈর্ঘ্য হতে    এতটুকু   পরিমাণ   বড়  হতে    হবে,  যাতে  উভয়  প্রান্তে বাঁধা যায়।<br /><br /><br /><br />(২)  ইযার     অর্থাৎ  তাহ্বন্দ:   মাথার   চুল  থেকে  পায়ের  তালু  পর্যন্ত  হতে   হবে  অর্থাৎ   লিফাফাহ  হতে   এতটুকু পরিমাণ   ছোট  হতে   হবে  যা  বন্ধনের   জন্য   অতিরিক্ত রাখা হয়েছিল।<br /><br /><br /><br />(৩)  কামীস   বা   জামা:   গর্দান  থেকে  হাঁটুর   নিচ  পর্যন্ত হতে  হবে   এবং  সামনে  ও     পিছনে  উভয়দিকে  সমান হতে হবে।  এতে   কল্লি ও   আস্তিন থাকতে  পারবে  না। পুরুষদের কামীস কাঁধের  উপরিভাগে আর   মহিলাদের  কামীস সীনার দিকে ছিড়তে হবে।<br /><br /><br /><br />(৪)  সীনাবন্ধ:  এটা   মহিলাদের  স্তন থেকে  নাভী পর্যন্ত  হতে  হবে।  তবে   রান    পর্যন্ত   হওয়াই  উত্তম।  (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮১৮ পৃষ্ঠা)<br /><br /><br /><br />মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়ার নিয়মাবলী<br /><br /><br /><br />আগরবাতি বা লোবান বাতির ধোঁয়া দ্বারা তিন  বা পাঁচ  বা  সাতবার  গোসলের  খাটে  ধোঁয়া  দিতে  হবে  অর্থাৎ  তিন  বা   পাঁচ  বা  সাতবার  আগর  বা   লোবান  বাতিকে খাটের চারপাশে    ঘুরাতে হবে। অতঃপর মৃত ব্যক্তিকে খাটের  উপর  এভাবে  শোয়াতে    হবে  যেভাবে    কবরে   তাকে  শোয়ানো  হয়।   কাপড়   দ্বারা   নাভী  থেকে   হাঁটু পর্যন্ত    সতর   ঢেকে   রাখতে   হবে।    (বর্তমানে    গোসল দেয়ার  সময়  সাদা   কাপড়     দ্বারা   মৃত  ব্যক্তির    সতর এমনভাবে     ঢেকে    রাখা   হয়,   যার  ফলে  পানি  ঢালার সাথে সাথেই  তার লজ্জাস্থান  ভেসে  উঠে। তাই  খয়েরী বা  গাঢ়   রঙের  কোন  মোটা  কাপড়    দ্বারা  তার  সতর  এমনিভাবে ঢেকে রাখতে হবে, যাতে   পানি ঢালার পর তার   লজ্জাস্থান  ভেসে      না  উঠে।  কাপড়  ডাবল  করে দিয়েই        সতর        ঢেকে        রাখা         উত্তম।)        অতঃপর  গোসলদানকারী    ব্যক্তি    নিজ    হাতে     একটি     কাপড়  জড়িয়ে  প্রথমে  তাকে   উভয়   দিকে  ইস্তিন্জা  করাবেন  (অর্থাৎ  পানি দ্বারা তাকে  শৌচ কর্ম করাবেন)  তারপর নামাযের অযুর মত তাকে অযু করাবেন অর্থাৎ তিনবার মুখমন্ডল, কনুইসহ তিনবার উভয় হাত, অতঃপর মাথা মাসেহ   ও     তিনবার    উভয়   পা   ধুইয়ে   দিবেন।     মৃত   ব্যক্তিকে অযু করানোর সময়  প্রথমে উভয় হাত কবজি পর্যন্ত   ধৌত  করা,   কুলি  করানো   ও  নাকে  পানি  দেয়া আবশ্যক   নয়।  তবে কোন  কাপড়  বা  রুইয়ের  পুটলি ভিজিয়ে  তা   দ্বারা  দাঁত,   মাড়ি  ঠোঁট   ও   নাকের    ছিদ্র ইত্যাদি   মুছে  দেয়া   উত্তম।  তারপর  মৃত  ব্যক্তির  চুল, দাঁড়ি    থাকলে     তা     ধুইয়ে       দিবেন।    অতঃপর    মৃত  ব্যক্তিকে বাম  কাতে   শোয়ায়ে কুল (বরই) পাতা  দিয়ে গরম করা  পানি,    আর তা পাওয়া না গেলে বিশুদ্ধ  মৃদু গরম  পানি  মাথা   থেকে  পা  পর্যন্ত    তার  শরীরে   উপর এমনিভাবে ঢেলে দিবেন যাতে পানি তক্তা পর্যন্ত পৌছে যায়। অতঃপর তাকে ডান কাতে শোয়ায়ে অনুরূপভাবে পানি     ঢেলে   দিবেন।   তার   পর   হেলান    দিয়ে    তাকে বসিয়ে  পেটের নিচের অংশের উপর আস্তে   আস্তে হাত  দ্বারা   মালিশ   করবেন।  পেট   হতে  কিছু  বের  হলে   তা ধুইয়ে     পরিস্কার    করে    দিবেন।     এমতাবস্থায়      তাকে পুনরায়    অযু    ও    গোসল    করানোর    প্রয়োজন    নেই।  অতঃপর   মাথা   থেকে   পা    পর্যন্ত   তার   শরীরের  উপর তিনবার কাপুরের পানি ঢেলে দিবেন এবং কোন পবিত্র কাপড় দ্বারা তার শরীর আস্তে আস্তে মুছে নিবেন। মৃত ব্যক্তির সমস্ত শরীরে একবার পানি প্রবাহিত করা ফরয আর         তিনবার        প্রবাহিত        করা       সুন্নাত।       (মৃতের গোসলদানে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত করবেন না। মনে রাখবেন! আখিরাতে এক বিন্দু বিন্দুর হিসাব হবে)<br /><br /><br /><br />পুরুষকে কাফন পরানোর পদ্ধতি<br /><br /><br /><br />আগর  বা লোবান বাতির ধোঁয়া দ্বারা কাফনকে এক বা তিন    বা   পাঁচ    বা    সাতবার    ধোঁয়া   দিবেন।   অতঃপর কাফন  এমনভাবে  বিছাবেন  যে, প্রথমে খাটে  লিফাফা অর্থাৎ বড় চাদর,  এর    উপর  ইযার বা তাহবন্দ এবং  এর   উপর   কামীস  রাখবেন।   অতঃপর   মৃত   ব্যক্তিকে কাফনের উপর শোয়ায়ে তাকে কামীস পরাবেন। এখন দাঁড়িতে   (আর  দাঁড়ি   না   থাকলে     চিবুকে)  ও  সমস্ত  শরীরে সুগন্ধি মালিশ করে দিবেন। কপাল, নাক, হাত, হাঁটু ও পা ইত্যাদি অঙ্গ যা দ্বারা সিজদা করা হয় তাতে  কাপুর লাগিয়ে দিবেন। অতঃপর  তাহবন্দ প্রথমে বাম   দিক থেকে  তারপর ডান দিক থেকে জড়াবেন। শেষে লিফাফাহ   বা   চাদরও প্রথমে  বাম দিক থেকে তারপর ডান দিক থেকে জড়াবেন মাথা ও পায়ের দিকে বেঁধে দিবেন। যেন ডান দিকের অংশ উপরে থাকে।<br /><br /><br /><br />মহিলাদেরকে কাফন পরানোর নিয়ম<br /><br /><br /><br />মহিলাদেরকে        কামীস         পরিধান        করিয়ে       তাদের চুলগুলোকে   দুইভাগে     বিভক্ত     করে   কামীসের   উপর দিয়ে বুকের  উপরে রেখে দিবেন। তারপর অর্ধ পিঠের  নিচে ওড়না বিছিয়ে তা মাথার উপর দিয়ে এনে মুখের উপর  নিকাবের  মতো   করে    দেন,   যেন   বুকের  উপর থাকে।   ওড়নার দৈর্ঘ্য হতে  হবে  অর্ধ পিঠ থেকে   বুক পর্যন্ত     এবং   প্রস্থ  হতে  হবে  এক   কানের   লতি   থেকে  অপর কানের লতি  পর্যন্ত। কতিপয়  লোকেরা  মহিলারা জীবদ্দশায়   যেভাবে   মাথায়   ওড়না   পরিধান   করতো  সেভাবেই  মহিলাদেরকে ওড়না পরিধান করান।  কিন্তু এটা সুন্নাতের পরিপন্থী। অতঃপর পুরুষদের ন্যায় ইযার ও  লিফাফাহ  জড়াবেন।  অবশেষে   সবগুলোর  উপরে  স্তনের  উপরিভাগ  থেকে  রান   পর্যন্ত  সীনাবন্ধ  জড়ায়ে  সূতা বা রশি দ্বারা বেধে দিবেন।)<br /><br /><br /><br />জানাযার নামাযের পর দাফন<br /><br /><br /><br />(১)   জানাযার   লাশবাহী  খাট   কবরের  নিকট  কিবলার দিকে  রাখা মুস্তাহাব যাতে মৃত  ব্যক্তিকে কিবলার  দিক থেকে   কবরে    নামানো   যায়।   কবরের    পায়ের    দিকে জানাযার   খাট  রেখে  মাথার  দিক থেকে মৃত   ব্যক্তিকে কবরে নামাবেন না।<br /><br /><br /><br />(২)      প্রয়োজনানুসারে     দুইজন   বা   তিনজন   সবল   ও নেককার   ব্যক্তি  কবরে নেমে লাশ  নামাবেন। মহিলার লাশ   মুহরিম   ব্যক্তিই   নামাবেন।   মুহরিম   না   থাকলে  অন্যান্য        আত্মীয়রা,       তারাও         না       থাকলে       কোন পরহেজগার     ব্যক্তির    মাধ্যমে    মহিলার     লাশ    কবরে নামাবেন। ( )<br /><br /><br /><br />(৩)  মহিলার লাশ  কবরে  নামানোর সময়  থেকে তক্তা লাগানোর   সময় পর্যন্ত কোন  কাপড় দ্বারা   কবর ঘিরে  রাখবেন।<br /><br /><br /><br />(৪) মৃত  ব্যক্তিকে কবরে  নামানোর    সময় এ  দোয়াটি  পাঠ করবেন:<br /><br /><br /><br />بِسْمِ اللهِ وَ بِا للهِ وَعَلٰى مِلَّتِ رَسُوْلِ اللهِ<br /><br /><br /><br />(৫)  মৃত  ব্যক্তিকে  কবরে  ডান  কাতে  রেখে  তার  মুখ   কিবলার দিকে করে দিবেন  এবং কাফনের বাঁধনগুলো  খুলে  দিবেন।   কেননা,  এখন  আর   বাঁধনের    প্রয়োজন নেই, বাঁধন না খুললেও কোন অসুবিধা নেই। ( )<br /><br /><br /><br />(৬) কাঁচা ইট দ্বারা কবরের মুখ বন্ধ করে দিবেন। মাটি নরম  হলে  কবরের মুখে  কাঠের তক্তা  ব্যবহার  করাও  জায়েজ। (<br /><br /><br /><br />(৭)    তারপর   কবরে    মাটি  দিবেন   এ  ক্ষেত্রে  মুস্তাহাব হলো, উভয় হাত দ্বারা মাথার দিক থেকে তিনবার মাটি ফেলা।    প্রথমবার  مِنْهَا خَلَقْنٰكُمْ বলবেন, দ্বিতীয় বার وَفِيْهَا نُعِيْدُكُمْ  ও তৃতীয়বার  وَمِنهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً اُخْرٰى বলবেন।   অবশিষ্ট   মাটিগুলো    কোদাল   ইত্যাদি     দ্বারা ফেলবেন।<br /><br /><br /><br />(৮) যতটুকু মাটি কবর  থেকে বের করা হয়েছিল, তার চেয়ে অধিক মাটি কবরে ফেলা মাকরূহ।<br /><br /><br /><br />(৯) কবর উটের কুঁজের ন্যায় ঢালু করবেন। চার কোণা বিশিষ্ট করবেন না। (যেমন বর্তমানে দাফনের কিছুদিন পর   অনেকেই   ইট  ইত্যাদি   দ্বারা  কবরকে  চার  কোণা বিশিষ্ট করে থাকে।)<br /><br /><br /><br />(১০)    কবর    মাটি    থেকে    এক     বিঘত     উচুঁ    বা    এর চাইতেও সামান্য উচুঁ করবেন।<br /><br /><br /><br />(১১)   দাফনের  পর    কবরের উপর পানি ছিটিয়ে দেয়া সুন্নাত।<br /><br /><br /><br />(১২)       এছাড়াও       কবরে       জন্মানো       গাছের       চারা  ইত্যাদিতে পানি দেয়ার উদ্দেশ্যে কবরে পানি  ছিটানো জায়েজ।<br /><br /><br /><br />(১৩) বর্তমানে কতিপয় লোক   বিনা  প্রয়োজনে  কবরে  যে  পানি  ছিটায়, এটা   মন্দ ও নাজায়িয,  ফতোওয়ায়ে  রযবীয়া   শরীফ,   ৯ম   খন্ড,    ৩৭৩     পৃষ্ঠার    মধ্যে     তা অপচয় হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।<br /><br /><br /><br />(১৪) দাফনের  পর  কবরের  শিয়রে الٓـمّٓ থেকে مُفْلِحُوْنَ পর্যন্ত এবং পায়ের  দিকে اٰمَنَ الرَّسُوْلُ থেকে সূরার শেষ পর্যন্ত পাঠ করা মুস্তাহাব।<br /><br /><br /><br />(১৫) কবর তালক্বীন করবেন। (তালকীনের নিয়ম পূর্বে বর্ণিত হয়েছে)<br /><br /><br /><br />(১৬) কবরের শিয়রে দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হয়ে আযান দিবেন।<br /><br /><br /><br />(১৭) কবরের উপর ফুল দেয়া উত্তম। কেননা, যতদিন পর্যন্ত এ ফুল তাজা থাকবে, তা তাসবীহ   পাঠ  করবে।  এতে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পাবে।<br /><br /><br /><br />নির্বোধ শিশুদেরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়াকে<br /><br /><br /><br />হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে<br /><br /><br /><br />নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ     করেন:     “তোমরা     মসজিদ    সমূহকে     শিশু,  পাগল,   ক্রয়-বিক্রয়,   ঝগড়া-বিবাদ,   উচ্চ   স্বরে   কথা  বলা,   শরীয়াতের    শাস্তি     কার্যকর    করা     ও   তাওবারী ব্যবহার করা থেকে   রক্ষা  করো।”  (ইবনে মাযাহ,  ১ম  খন্ড, ৪১৫ পৃষ্ঠা, হাদীস৭৫০)<br /><br /><br /><br />শিশুর    প্রস্রাব    ইত্যাদির    কারণে     মসজিদে     অপবিত্র  হওয়ার    আশঙ্কা    থাকলে     এরূপ     শিশু     ও    পাগলকে মসজিদে  নিয়ে যাওয়া হারাম। আর মসজিদে অপবিত্র  হওয়ার  আশঙ্কা  না থাকলে   তাদরেকে মসজিদে   নিয়ে যাওয়া মাকরূহ। যে   সমস্ত লোক মসজিদে জুতা  নিয়ে   যায়,      তাদের      জুতায়      নাজাসাত     আছে      কিনা     তা ভালভাবে  লক্ষ্য  রাখতে  হবে।   যদি  জুতায়   নাজাসাত  থাকে, তাহলে তা ভালভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। আর    জুতা    পরিহিত   অবস্থায়    মসজিদে    প্রবেশ   করা বেয়াদবী। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৯২ পৃষ্ঠা) শিশু, পাগল,     অজ্ঞান    ও    জ্বিনগ্রস্থ   রোগীকে   ঝাঁড়   ফুঁকের জন্যও    মসজিদে    নিয়ে    যাওয়ার    ক্ষেত্রে    শরীয়াতের  অনুমতি        নেই,       শিশুদেরকে        ভালভাবে       কাপড়ে জড়িয়েও      মসজিদে      নেয়া     যাবে      না।     যদি      শিশু ইত্যাদিকে মসজিদে  নিয়ে  যাওয়ার  মত  ভুল আপনার থেকে      সংঘটিত     হয়ে      থাকে,       তাহলে      দয়া     করে অনতিবিলম্বে    তাওবা    করে   ভবিষ্যতে    আর   কখনও   তাদেরকে মসজিদে না নেয়ার প্রতিজ্ঞা করে নিন।<br /><br /><br /><br />এ অধ্যায়টি পাঠকালে কারো সাথে মসজিদে তার শিশু সন্তান থাকলে তার প্রতি আমার    সন্নিবদ্ধ অনুরোধ, সে যেন      তাড়াতাড়ি    তার    শিশু    সন্তানকে      মসজিদের বাইরে   নিয়ে   আসে।   তবে   হ্যাঁ   মসজিদের   আঙ্গিনায়  শিশুদেরকে       নেয়া      যাবে,       যদি       তাদেরকে      নিয়ে  মসজিদের ভিতর দিয়ে যেতে না হয়।<br /><br /><br /><br />তাহিয়্যাতুল অযু<br /><br /><br /><br />অযু   করার   পর   অঙ্গ   প্রত্যঙ্গ   শুষ্ক   হওয়ার   পূর্বে   দুই  রাকাত   নামায  আদায় করা মুস্তাহাব। (দুররে মুখতার,  ২য়  খন্ড,   ৫৬৩  পৃষ্ঠা)   হযরত   সায়্যিদুনা  উকবা   বিন  আমের  رَضِیَ اللّٰہُ تَعَالٰی  عَنْہُ থেকে বর্ণিত; তিনি  বলেন: নবী করীম, রউফুর রহীম صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ  করেন:  “যে  ব্যক্তি  অযু  করে  এবং  ভালভাবে  অযু  করে জাহের   ও  বাতেনের   সাথে মনোযোগী হয়ে  দুই  রাকাত  (নফল  নামায)  আদায়  করবে,  তার  জন্য  জান্নাত  ওয়াজিব  হয়ে   যায়।”  (সহীহ     মুসলিম,   ১৪৪  পৃষ্ঠা,   হাদীস-    ২৩৪)   গোসলের   পরেও   দুই   রাকাত  নামায মুস্তাহাব। অযু  করার পর ফরয ইত্যাদি পড়লে তাহিয়্যাতুল    অযুর    স্থলাভিষিক্ত    হয়ে    যাবে।     (রদ্দুল  মুহতার,  ২য় খন্ড, ৫৬৩ পৃষ্ঠা)  মাকরূহ  সময়ের  মধ্যে তাহিয়্যাতুল অযু ও গোসলের পরের দুই রাকাত নামায আদায় যাবেনা।<br /><br /><br /><br />صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                   صَلَّی  اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد<br /><br /><br /><br /><br /></div><br />

কাফন-দাফনের নিয়মাবলী

মাদানী অসিয়তনামা (কাফন-দাফনের আহকাম সম্বলিত) দরূদ শরীফের ফযীলত নবীদের  তাজেদার,   রাসূলদের   সরদার,  হুযুর  পুরনূর  صَلَّی  اللّٰہُ تَعَالٰی...

Read more »