=======================
রাসূল (ﷺ) আজরাঈল (আলাইহিস সালাম) এর সাথে কথা বলেছেন, এ মর্মে সহিহ সূত্রে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিস ১ :
হযরত আলী ইবনে হুসাইন (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে একটি দীর্ঘ হাদিস রয়েছে,
‘‘অতঃপর আজরাঈল (আলাইহিস সালাম) রাসূল (ﷺ) এর হুযরা মোবারকে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তারপর জিবরাঈল (আঃ) বললেন যে, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! এই যে মালাকুল মওত আজরাঈলও আপনার নিকট আসবার অনুমতি চাইছেন। তিনি একমাত্র আপনি ব্যতিত আর কখনও কোন মানুষের নিকট আসতে অনুমতি চাননি। অতএব তাকে প্রবেশের অনুমতি দিন। তখন হুযুর পাক (ﷺ) তাকে অনুমতি দিলেন। তিনি এসে হুজুর (ﷺ) কে সালাম করলেন এবং বললেন, আপনি অনুমতি দিলে আপনার রূহ মোবারক কবজ করব। আর আমাকে তা বাদ দিতে বললে, আমি তা বাদ দিব। তখন হুযুর (ﷺ) বললেন, হে আজরাঈল (আঃ) আপনি কি এইরূপ করতে পারবেন? আজরাঈল (আঃ) বললেন, হ্যাঁ, আমি এরূপও আদিষ্ট হয়েছি যে, আমি যেন আপনার নির্দেশ অনুযায়ী চলি। রাবী বলেন, এই সময় হুযুর (ﷺ) হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর দিকে তাকালেন।
জিবরাঈল (আঃ) বললেন, হে মুহাম্মদ (ﷺ)! আল্লাহ পাক আপনার সাক্ষাত লাভের জন্য অত্যন্ত আগ্রহী। এটা শুনামাত্র হুযুরে পাক (ﷺ) আজরাঈল (আঃ) কে বললেন, যে জন্য আপনি আদিষ্ট হয়েছেন তা বাস্তবায়ন করুন। তারপর রূহ মোবারক কবজ করলেন।’’
- তথ্যসুত্রঃ
- ১. ইমাম বায়হাকী : দালায়েলুন নবুওয়াত : ৭/২৬৭পৃ., দারুল হাদিস, মিশর হতে প্রকাশিত।
- ২. খতিব তিবরিযী : মিশকাত শরীফ : হাদিস : ৫৭২০ : বাবু ওফাতুন্নাবী’’ (ﷺ) অধ্যায়।
- ৩. ইমাম ইবনে সা‘দ : আত্-তবকাতুল কোবরা : ২/২৬০ পৃ:
- ৪. আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি : আল-খাসায়েসুল কোবরা : ২/৫৩০ পৃ. হাদিস : ৩৩৯৯
- ৫. ইমাম তাবরানী : মুজামুল কবীর : ৩/১২৮ প: হাদিস : ২৮৯০
- ৬. ইমাম আদনী : আল মুসনাদ : ৫/২৪৫ পৃ:
- ৭. ইমাম জুরজানী : তারীখে জুরজান : ১/৩৬২ পৃ.
- ৮. ইমাম ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ : ৭/৩৫ পৃ
- ৯. ইমাম শাফেয়ী : আস সুনানিল নাক্কাস : ১/৩৩৪ পৃ :
- ১০. ইমাম কুস্তালানী : মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া : ৩/৩৬০ পৃ.
- ১১. যুরকানী,শরহুল মাওয়াহেব,১২/১২৭পৃ.দারুল কুতব ইলমিয়্যাহ,বযরুত।
হাদিস ২ :
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত,
রাসূল (ﷺ) এর কাছে মালাকুল মওত আযরাঈল (আঃ) (মানব বেশে) আগমন করল। হুযুর (ﷺ) এর মাথা মোবারক তখন হযরত আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর কোলে ছিল। মালাকুল মওত ভেতরে আসার অনুমতি চেয়ে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
হযরত আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, আপনি চলে যান। এখন আমরা আপনার প্রতি মনোযোগ দিতে পারব না। নবী করীম (ﷺ) বললেন, আবুল হাসান! তুমি কি তাকে চেন? ইনি মালাকুল মাওত। অতঃপর তিনি মালাকুল মাওতকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। মালাকুল মওত প্রবেশ করে বললেন,আপনার পরওয়ারদিগার আপনাকে সালাম প্রেরণ করেছেন। হযরত আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমরা জানতে পেরেছি যে, মালাকুল মাওত এর আগে কারও পরিবারকে সালাম বলেন নি এবং পরেও আর কাউকে সালাম বলবেন না।’’
- তথ্যসুত্রঃ
- ১. ইমাম তাবরানী : মুজামুল কবীর : ১২/১৪১ : হাদিস : ১২৭০৮
- ২. আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সূয়তী : খাসায়েসুল কোবরা : ২/৫৩১ পৃ : হাদিস : ৩৪০১
- ৩. আল্লামা ইমাম বায়হাকী : দালায়েলুন নবুওয়াত : ৭/২৬৮ পৃ.
- ৪. ইমাম কুস্তালানী : মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া : ৩/৩৬০ পৃ.
- ৫. ইমাম যুরকানী : শরহুল মাওয়াহেব : ১২/১২৭ পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত।
হাদিস ৩ :
অতঃপর আজরাঈল (আলাইহিস সালাম) এর অবস্থা সম্পর্কে অন্য হাদিস এসেছে এভাবে-
হযরত আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত,
"রাসূল (ﷺ) ওফাত হয়ে গেলে মালাকুল মাওত আযরাঈল (আঃ) আকাশে কাঁদতে কাঁদতে গেলেন। যিনি হুযুর (ﷺ) কে সত্য নবীরূপে প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম, আমি আকাশে ‘ওয়া মুহাম্মদ’ বলে (আজরাঈলকে) কাঁদতে শুনেছি।’’
তথ্যসুত্র:
১. ইমাম আবু নঈম : হুলিয়াতুল আউলিয়া :
২. আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সূয়তী : খাসায়েসুল কোবরা : ২/৫৩২ : হাদিস : ৩৪১১