"কারবালার করুণ কাহিনী-৩"



---রাওজা পাকে হাজেরী---

ইয়াজিদ যখন এ কথা জানতে পারলেন যে ইমাম হোসাইন ওর বায়াত করেন নি, তখন সে খুবই রাগান্বিত হয়ে মদীনার প্রশাসককে কড়া নির্দেশ দিল যে ইমাম হোসাইনকে ওর বায়াত করার জন্য যেন চাপ সৃষ্টি করে। বায়াত না করলে ওনার মাথা কেটে ওর কাছে যেন পাটিয়ে দেয়া হয়। হযরত ইমাম হোসাইন (রাদি আল্লাহু আনহু) ইয়াজিদের এ নির্দেশের কথা জানতে পেরে মদীনা মনোয়ারা ত্যাগ করে মক্কা মোয়াজ্জমা চলে যাওয়ার মনস্থ করলেন। মদীনা ত্যাগের পূর্বে রাত্রে তাঁর নানাজান হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর রোঝা পাকে হাজির হলেন এবং রাওজা পাক জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে ইয়াজিদের আচরনের বর্ণনা দিতে লাগলেন। এ অবস্থায় হঠাৎ তাঁর চোখ লেগে আসলে তিনি স্বপ্নে দেখেন যে নানাজান তশরীফ এনেছেন,তাঁকে চুমু দিলিন এবং বুকে জড়িয়ে ধরলেন। অতঃপর বললেন, প্রিয় হোসাইন শীঘ্রই জালিমেরা তোমাকে কারবালার ময়দানে ভূখা ও তৃষ্ণার্থ অবস্থায় শহীদ করবে। তোমার মা-বাবা ও ভাই তোমার অপক্ষায় আছে। তোমার জন্য বেহেস্ত নতুন ভাবে সজ্জিত করা হচ্ছে। তথায় এমন সম্মানিত উচ্চ স্থান রয়েছে যেটা শহীদ হোয়া ছাড়া তুমি পেতে পার না। যাও তুমি যাও ,সবর ও ধৈর্য সহকারে শাহাদাত বরণ করে আমার কাছে এসে যাও। হযরত ইমাম হোসাইন (রাদি আল্লাহু আনহু) জাগ্রত হোয়ার পর ঘরে আসলেন এবং আহলে বায়তের সবাইকে একত্রিত করে এ স্বপ্ন শুনালেন এবং মদীনা ত্যাগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। অতঃপর ভাইয়ের মাজারে গিয়ে বিদায় নিলেন।এরপর মায়ের কবরের পাশে গিয়ে আরয করলেন-আম্মাজান আজ তোমার হোসাইন তোমার থেকে বিদায় নিতে এসেছে এবং আখেরী সালাম পেশ করছে। পবিত্র কবর থেকে আওয়াজ আসলো,ওয়া আলাইকুমুর সালাম ওহে আমার মজলুম বৎস। তিনি ওখানে দাড়িঁয়ে অনেক্ষন কাঁদলেন। অতঃপর ওখান ফিরে এসে মক্কা মুয়াজ্জমার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলেন।

---(তাজকিরায়ে হোসাইন-২৭ পৃষ্ঠা)







সবকঃ- হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) নিজেও তাঁর শাহাদাতের কথা জানতেন। তা সত্বেও তাঁর মনোভাবের মধ্যে কোন পরিবর্তন আসে নি এবং শাহাদাতের উৎসাহে কোন কমতি দেখা যায়নি। বরং উৎসাহ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

Top