"কারবালার করুণ কাহিনী-৮"



---জালিমের পরিণতি---



জালিম হারিছ হযরত ইমাম মুসলিম (রাঃ) এর ছেলেদ্বয়কে শহীদ করে পুরস্কারের আশায় মস্তক দু'টি নিয়ে ইবনে যিয়াদের কাছে গেল। ইবনে যিয়াদ সেই ছোট্ট নূরানী মস্তক দেখে জিজ্ঞেস করলো, এগুলো কারা? হারিছ বললো মুসলিমের ছেলেদ্বয়ের। ইবনে যিয়াদ আনন্দিয় হওয়ার পরিবর্তে রাগান্বিত হয়ে ওকে বললো,নাফরমান, আমিতো ইয়াযিদকে চিঠিতে বলেছি যে ছেলেদ্বয় আমার কাছে বন্দদী আছে। সে এদেরকে জীবিত তলব করে, তাহলে আমি কি কবরো? তুমি কেন এদের জীবিত আনো নি। হাসির বললো, জীবিত আনতে গেলে শগরবাসীরা আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিত এবং আমিও পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হতাম। ইবনে যিয়াদ বললো, তুমিতো আমাকে গোপনে খবর দিতে পারতে। হারিছ নিশ্চুপ হয়ে গেল। ইবনে যিয়াদ তার অন্যতম জাল্লাদ মকাতেলকে বললো যে ওকে ফোরাত নদীর তীরে যেন হত্যা করে এবয় ছেলেদ্বয়ের লাশ যেখানে আছে সেখানে যেন মস্তক গুলো ফেলে দেয়া হয়। মাকাতেল ছিল আহলে বায়তের ভক্ত।সে এ হুকুম পেয়ে দারুন খুশি হলো।সে হারিছকে বাইরে নিয়ে এসে হাত দু'টি পিছমোরা করে বাধলো এবং মাথা মুণ্ডিয়ে দিল। মাকাতেল সমমনাদেরকে বললো, এ দায়িত্বটা পেয়ে আমি এতটুকু খুশী হয়েছি যে ইবনে যিয়াদ আমাকে সারা সাম্রাজ্য দিয়া দিলেও আমি ততটুকু খুশি হতাম না। মস্তকদ্বয় ও হারিছকে নিয়ে মাকাতেল যখন বাজারের পথ দিয়ে যাচ্ছিল তখন লোকেরা মস্তকদ্বয় দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং হারিছকে লানত দিচ্ছিল। ফোরাত নদীর তীরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে মস্তকদ্বয় নদীতে ছেড়ে দিল, খোদার কুদরতে উভয়ের শরীর এসে মস্তকের সাথে মিলিত হয়ে পানিতে ডুবে গেল।

অতঃপর হারিছকে হত্যা করে লাশ ফোরাত নদীতে নিক্ষেপ করলো। কিন্তু ফোরাত নদী সেই লাশ গ্রহণ করলো না পাড়ে নিক্ষেপ করলো। নিরুপায় হয়ে নদীর পাড়ে গর্ত খুঁড়ে মাটি চাপা দিল। কিন্তু মাটিও গ্রহন করলো না, বের করে দিল। শেষ পর্যন্ত ওকে লাকড়ীর স্তুপের মধ্যে রেখে পুড়ে ফেললো।

----(তাজকিরা ৫০ পৃষ্টা)





সবকঃ- দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হলে পরিণতি এ রকমই হয়ে থাকে। এমন লোকের দুনিয়ার কোন জায়গায় ঠাঁই নেই।

Top