উপমহাদেশে সৃষ্ট আহলে হাদিস নামধারী বাতীল ফির্কার বেদাতী নামায।
পৃথিবীর মানুষকে রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান উপহার দিয়েছেন। অন্যান্য নবী-রাসূলগণের সাথে রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এর একটি বিশেষ পার্থক্য হলো, অন্যান্য নবীর উম্মত নবীর মৃত্যুর পর তাদের ধর্ম ভুলে গেছে। ধর্মের বিধি-বিধান পালনে শৈথিল্য প্রদর্শন করেছে। কিন্তু রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এর আনিত দ্বীনের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি কিয়ামত পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকবে। সর্বদা একটি দল রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এর সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের জামাতকে আঁকড়ে থাকবে। রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এর ইন্তেকালের পরে সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের দ্বীনকে সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায় তাবেয়ীগণের নিকট পৌছে দিয়েছেন। একইভাবে তাবেয়ীগণ তাবে-তাবেয়ীগণের নিকট দ্বীন পৌছে দিয়েছেন। সাহাবায়ে কেরাম রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এর কথা, কাজ ও সম্মতিকে শুধু বক্তব্যের মাধ্যমেই অন্যের কাছে পৌছে দেন নি। বরং রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আমল অন্যের কাছে পৌঁছানোর সবচেযে গুরুত্বপূণর্ মাধ্যম হলো, বাস্তব জীবনে হুবহু রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর সুন্নাহের উপর আমল। সাহাবায়ে কেরাম শুধু মৌখিক বণর্নার মাধ্যমেই দ্বীনের বিধানাবলী বণর্না করেননি, বরং তারা সকলে রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর সুন্নাহের উপর পরিপূর্ণ আমল করে অন্যদেরকে রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আমল শিক্ষা দিয়েছেন।
সাহাবাযে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম সম্পর্কে কখনও এটা কল্পনাও করা যায় না যে, তারা রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) কে একটি আমল করতে দেখে নিজেরা তার বিপরীত আমল করবেন। একারণেই ইমাম মালিক রহমাতুল্লাহি 'আলাইহি মদীনার আমলকে শরীয়তের একটি দলিল মনে করতেন। কারণ অনেক হাদীস মাত্র এক ব্যক্তির বণর্না দ্বারা বর্ণিত, কিন্তু প্রচলিত আমলগুলো হাজার সাহাবা ও তাবেয়ীগণের মাধ্যমে বণির্ত। হাজার হাজার সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের আমলের বিপরীতে একক বর্ণনার কোন হাদীস দলিল হতে পারে না। এজন্যই মুহাদ্দিসগণের একটি নীতি হলো, ألف عن ألف خير من واحد عن واحد অর্থাৎ এক হাজার লোক যখন অপর এক হাজার লোক থেকে কোন একটি বিষয় বণর্না করে, এটি এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তি থেকে বনির্ত হাদীস বা আমলের চেয়ে অধিক শক্তিশালী। এক হাজার সাহাবার আমলের বিপরীতে একক সনদে বর্নিত হাদীস কখনও দলিল হতে পারে না। শরীয়তে যেসব আমল এতো অধিক সংখ্যক লোকের মাধ্যমে বণির্ত যে, একই সাথে এতো সাহাবী ও তাবেয়ীকে ভুল সাব্যস্ত করা অসম্ভব, সেগুলোকে আমলে মুতাওয়ারিসা বলে।
ইসলামের বিধি-বিধান সংরক্ষণে আমলে মুতাওয়ারিসার গুরুত্ব অপরিসীম। রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم)এঁর থেকে মুতাওয়াতির বা অসংখ্য লোকের বর্ণনার মাধ্যমে যেমন পবিত্র কুরআন বর্ণিত হয়েছে, তেমনি হাজার হাজার সাহাবায়ে কেরামের আমল ও বর্ণনার মাধ্যমে রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আমল বর্ণিত হয়েছে। এই ধারণা করা সম্পূর্ণ ভুল যে, রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আমল কেবল বর্তমানের হাদীসের কিতাবে লিখিত হাদীসের মাধ্যমেই সংকলিত হয়েছে। বরং রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর আমল সংরক্ষণের সবচেয়ে বিশুদ্ধ পদ্ধতি ছিলো, প্রচলিত আমল বা আমলে মুতাওয়ারিসা।
রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর থেকে সাহাবায়ে কেরাম নামাযের পদ্ধতি শিখেছেন, সাহাবায়ে কেরাম থেকে তাবেয়ীগণ, তাবেয়ী থেকে তাবে-তাবেয়ীগণ নামায শিখেছেন। নামায শেখার পদ্ধতিই হলো, দেখে দেখে শেখা। নামায বই পড়ে শেখার বিষয় নয় আর সুন্নাহসম্মত নামায বই পড়ে শিখাও সম্ভব নয়। যারা রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর থেকে দেখে নামায শিখেছে, এবং তাদের থেকে অন্যরা যখন দেখে নামায শিখেছে, তখন নামাযের পদ্ধতির মাঝে বিদয়াতের অনুপ্রবেশের সুযোগ কম ছিলো। বিভিন্ন নতুন নতুন ব্যাখ্যা উদ্ভাবনের সুযোগও কম ছিলো। কিন্তু বর্তমানে একটি শ্রেণি ইসলামে বিকৃতির হাত প্রসারিত করেছে। তারা হাদীস অনুসরণের নামে ইসলামের স্বত:সিদ্ধ বিষয়গুলোকে বিকৃত ব্যাখ্যা করে রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর সুন্নাহ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। অথচ তাদের মস্তিষ্ক প্রসূত এই বিষয়গুলো আদৌ রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর সুন্নত নয়। এগুলো গর্হিত বিদয়াত আমল। তারা প্রচলিত আমল থেকে দূরে নিজের বিকৃত বুঝকে প্রাধান্য দিয়ে এগুলো করছে। এদের সাথে রাসুলে কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এর সুন্নতের কোন সম্পর্ক নেই।
বর্তমানে নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর সুন্নাহসম্মত নামাযে বিদয়াত অনুপ্রবেশের মৌলিক কারণ দু'টি।
১. রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এর থেকে প্রচলিত আমলের বিপরীতে নিজেদের মনগড়া মতবাদের প্রচলন।
২. কুরআন ও হাদীসের শব্দের প্রচলিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা থেকে দূরে সড়ে নিজেদের বিকৃত ব্যাখ্যাকে রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর সুন্নতের নামে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা। এক্ষেত্রে কুরআন সুন্নাহের শব্দ ব্যবহার করা হয়, কিন্তু অর্থ বা বুঝ কুরআন সুন্নাহের নয়। বরং এটি সম্পূর্ণ তার নিজের আবিষ্কৃত বুঝ। কুরআন ও হাদীসের বুঝের সাথে তার এই নব আবিষ্কৃত বুঝের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই।
বর্তমানের অধিকাংশ বেদয়াতের ক্ষেত্রে এই দু'টি কারণই মৌলিক হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমরা মূল আলোচনা শুরুর পূর্বে এই দু'টি বিষয়ের গুরুত্ব প্রসঙ্গে সামান্য আলোচনা করবো।
রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) থেকে প্রচলিত আমলের গুরুত্বঃ
সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম থেকে শুরু করে পূর্ববর্তী কেউ-ই শুধু হাদিস বর্ণনা আমলের জন্য যথেষ্ট মনে করতেন না। বরং তারা দেখতেন, হাদিসের উপর আমল করা হয়েছে কি না?
আরবের বিখ্যাত শায়খ আল্লামা যাহেদ আল-কাউসারি রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর বক্তব্য উল্লেখ করা যেতে পারে। তিনি বলেছেন, ফিকাহের থেকে বিচ্ছিন্ন অনেক রাবির ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছে। তারা কোন হাদিসটি আমলযোগ্য এবং কোনটি আমলযোগ্য নয়, তা পার্থক্য করতে পারত না।”
[সূত্রঃ ইমাম হাযেমী রহ. কৃত শুরুতুল আইম্মাতিল খামসা এর উপর ইমাম যাহেদ আল-কাউসারী রহ. এর টীকা সংযোজন। পৃ.৩৬।]
এটি একটি বিস্তর বিষয়। এ বিষয়ে ইমাম ইবনে আবি যায়েদ কাইরাওয়ানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি (৩৮৪ হি:) এর বক্তব্য কিতাবুল জামে থেকে উল্লেখ করবো। সেই সাথে কাজি ইয়াজ রহমাতুল্লাহি অালাইহি এর বক্তব্যও তারতিবুল মাদারেক থেকে উদ্ধৃত করবো। এখানে তারা সালাফে সালেহিনের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। সালাফে-সালেহিন কেবল সেসব হাদিসের উপর আমল করতেন, যার উপর পূর্বে কেউ আমল করেছে। কিন্তু যেসব হাদিসের উপর কেউ আমল করেনি, হাদিসগুলো বিশ্বস্ত সূত্রে বর্ণিত হলেও তারা তার উপর আমল করতেন না।
ইমাম ইবনে আবি যায়েদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আক্বিদা, আদর্শ ও রীতির আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছেন,
والتسليم للسنن لا تعارض برأي ولا تدافع بقياس، وما تأوله منها السلف الصالح تأولناه وما عملوا به عملناه وما تركوه تركناه ويسعنا أن نمسك عما أمسكوا، ونتبعهم فيما بينوا، ونقتدي بهم فيما استنبطوه ورأوه في الحوادث، ولا نخرج من جماعتهم فيما اختلفوا فيه أو في تأويله، وكل ما قدمنا ذكره فهو قول أهل السنة وأئمة الناس في الفقه والحديث على ما بيناه وكله قول مالك، فمنه منصوص من قوله، ومنه معلوم من مذهبه
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস গ্রহণ করতে হবে। যুক্তি দ্বারা হাদিসের বিরোধিতা করা যাবে না। কিয়াস দ্বারা হাদিস প্রত্যাখ্যান করা হবে না। পূর্ববর্তী উলামায়ে কেরাম যার উপর আমল করেছেন, আমরাও তার উপর আমল করি। তারা যার উপর আমল করেন নি, আমরাও তার উপর আমল করি না। তারা যা থেকে বিরত থেকেছেন, তা থেকে বিরত থাকা আমাদেরও কর্তব্য। তারা যেসব বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা করেছেন, আমরা তার আনুগত্য করি। তারা বিভিন্ন বিষয়ে যেসব মাসআলা গ্রহণ করেছেন, আমরা তার অনুসরণ করি। যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করেছেন কিংবা যার ব্যাখ্যায় মতানৈক্য হয়েছে, সেক্ষেত্রে আমরা পূর্ববর্তীদের জামাত থেকে বের হই না।
উপর্যুক্ত বক্তব্যগুলো আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বক্তব্য। এটি ফিকাহ ও হাদিসের ইমামগণের অভিমত। এগুলো ইমাম মালেকেরও বক্তব্য। কিছু বিষয় সরাসরি তাঁর থেকে বর্ণিত এবং কিছু বিষয় তাঁর গৃহীত মাজহাব থেকে আহরিত।
ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, একটি হাদিসের উপর ফকিহদের মতানুযায়ী আমল করা নিজস্ব মতানুযায়ী আমলের চেয়ে শক্তিশালী।
তিনি আরও বলেন, আমি যেসব হাদিসের উপর আমল করি, তার ব্যাপারে একথা বলা কঠিন যে, আমার কাছে এর বিপরীত অমুক অমুক বর্ণনা করেছে। কেননা তাবেয়িদের অনেকের কাছে বিভিন্ন সূত্রে হাদিস বর্ণিত হলেও তারা বলতেন, “আমি হাদিসটি সম্পর্কে সম্যক অবগত আছি। কিন্তু এর বিপরীত আমল চলে আসছে।” মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকর ইবনে হাযাম রহমাতুল্লাহি 'আলাইহি তাঁর ভাইকে কখনও কখনও বলতেন, তুমি এ হাদিস অনুযায়ী কেন ফয়সালা করলে না? তিনি উত্তর দিতেন, আমি মানুষকে এর উপর আমল করতে দেখিনি। হযরত ইবরাহিম নাখয়ি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি যদি সাহাবাগণকে কব্জী পর্যন্ত ওজু করতে দেখতাম, তবে আমিও তাই করতাম; যদিও আমি কনুই পর্যন্ত ওযুর আয়াত পাঠ করি। কেননা তাদের ব্যাপারে সুন্নত পরিত্যাগের অভিযোগ করা সম্ভব নয়। তারা ইলমের দিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণের ব্যাপারে সর্বাধিক আগ্রহী। সুতরাং নিজ ধর্মের ব্যাপারে সন্দেহপোষণকারী ছাড়া কেউ তাদের ব্যাপারে এ অভিযোগ করার দু:সাহস দেখাবে না। ইমাম আব্দুর রহমান ইবনে মাহদি বলেন, মদিনাবাসীর মাঝে প্রচলিত সুন্নত, হাদিসে বর্ণিত সুন্নত থেকে উত্তম। ইমাম ইবনে উয়াইনা বলেন, ফকিহগণ ব্যতীত অন্যদের জন্য হাদিস ভ্রষ্টতার কারণ। এর দ্বারা তিনি উদ্দেশ্য নিয়েছেন, অন্যরা হাদিসকে তার বাহ্যিক অর্থের উপর প্রয়োগ করে। অথচ অন্য হাদিসের আলোকে এ হাদিসের বিশেষ ব্যাখ্যা রয়েছে। অথবা, হাদিসের বিপরীতে সূক্ষ্ম দলিল রয়েছে যা তার কাছে অস্পষ্ট। হাদিসটি অন্য কোন দলিলের আলোকে পরিত্যাজ্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এ সব বিষয়ে গভীর পান্ডিত্যের অধিকারী ফকিহ ছাড়া অন্যরা অবগত নয়। ইমাম ইবনে ওহাব রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে মুহাদ্দিসের কোন ফকিহ ইমাম নেই, সে ভ্রষ্ট। আল্লাহ পাক যদি আমাদেরকে ইমাম লাইস ইবনে সা’য়াদ ও ইমাম মালেকের দ্বারা মুক্তি না দিতেন, তবে আমরা পথভ্রষ্ট হয়ে যেতাম।
[সূত্রঃ কিতাবুল জামে, পৃ.১১৭।]
ইমাম ইবনু আবি যায়েদ বলেন, ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, মদিনায় এমন কোন মুহাদ্দিস ছিলেন না, যিনি কখনও দু’টি পরস্পর বিরোধী হাদিস বর্ণনা করেছেন। ইমাম আশহাব বলেন, ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর দ্বারা উদ্দেশ্য নিয়েছেন, কোন মুহাদ্দিস এমন হাদিস বর্ণনা করতেন না, যার উপর আমল করা হয় না।
[সূত্রঃ কিতাবুল জামে’. পৃ.১৪৬।]
কাজি ইয়াজ রহ. তারতিবুল মাদারেক-এ লিখেছেন,
باب ما جاء عن السلف والعلماء في الرجوع إلى عمل أهل المدينة في وجوب الرجوع إلى عمل أهل المدينة وكونه حجة عندهم وإن خالف الأكثر روي أن عمر بن الخطاب رضي الله تعالى عنه قال على المنبر: احرج بالله على رجل روى حديثاً العمل على خلافه.قال ابن القاسم وابن وهب رأيت العمل عند مالك أقوى من الحديث، قال مالك: وقد كان رجال من أهل العلم من التابعين يحدثون بالأحاديث وتبلغهم عن غيرهم فيقولون ما نجهل هذا ولكن مضى العمل على غيره، قال مالك: رأيت محمد بن أبي بكر ابن عمر بن حزم وكان قاضياً، وكان أخوه عبد الله كثير الحديث رجل صدق، فسمعت عبد الله إذا قضى محمد بالقضية قد جاء فيها الحديث مخالفاً للقضاء يعاتبه، ويقول له: ألم يأت في هذا حديث كذا؟ فيقول بلى.فيقول أخوه فما لك لا تقضي به؟ فيقول فأين الناس عنه، يعني ما أجمع عليه من العلماء بالمدينة، يريد أن العمل بها أقوى من الحديث، قال ابن المعذل سمعت إنساناً سأل ابن الماجشون لمَ رويتم الحديث ثم تركتموه؟ قال: ليعلم أنا على علم تركناه.
"পরিচ্ছেদ: অধিকাংশের আমল বিপরীত হওয়া সত্ত্বেও মদিনা বাসীর আমল গহণ ও তা হুজ্জত হওয়া প্রসঙ্গে উলামায়ে কেরাম ও সালাফে সালেহিনের বক্তব্য। বর্ণিত আছে, হজরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মিম্বারে ভাষণ দেয়ার সময় বলেছেন, আল্লাহর শপথ, আমি ঐ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করবো, যে এমন হাদিস বর্ণনা কওযার উপর সাহাবাদের আমল নেই। ইমাম ইবনে কাসেম ও ইবনে ওহাব রহমাতুল্লাহি আলাইহিম বলেন, ইমাম মালেক রহ. এর কাছে প্রচলিত আমল বর্ণিত হাদিস থেকে অধিক শক্তিশালী। ইমাম মালেক রহমাতুল্লহি আলাইহি বলেন, অনেক তাবেয়ি এমন ছিলেন যারা হাদিস বর্ণনা করতেন, এরপর তাদের কাছে এর বিপরীত হাদিস উল্লেখ করা হলে তারা বলতেন, আমি হাদিসটি সম্পর্কে সম্যক অবগত আছি। কিন্তু এর বিপরীত আমল চলে আসছে। ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, আমি মুহাম্মাদ বিন আবু বকর ইবনে হাযাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে দেখেছি, তিনি একজন বিশিষ্ট কাজি ছিলেন। তাঁর ভাই আব্দুল্লা ছিলেন সত্যবাদী ও বড় মাপের মুহাদ্দিস। মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকর রহমাতুল্লাহি আলাইহি যখন এমন কোন ফয়সালা করতেন, যার বিপরীতে হাদিস রয়েছে, তখন আব্দুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাকে ভর্ৎসনা করে বলতেন, এ ব্যাপারে তো এই হাদিসটি বর্ণিত আছে? তিনি বলতেন, হ্যাঁ। হযরত আব্দুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি জিজ্ঞাসা করতেন, তাহলে এ অনুযায়ী বিচার করলেন না কেন? তিনি বলতেন, এ ব্যাপারে মদিনাবাসীর আমল কি? অর্থাৎ মদিনার আলেমগণ কোনটির উপর আমলের ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাঁর মূল উদ্দেশ্য হলো, মদিনার আলেমগণের মাঝে প্রচলিত ঐকমত্যপূর্ণ বিষয়ের উপর আমল করা হাদিসের উপর আমলের চেয়ে শক্তিশালী। ইমাম ইবনুল মুয়াজ্জাল বলেন, এক ব্যক্তি ইবনুল মাজিশুনকে জিজ্ঞাসা করলো, তোমরা হাদিস বর্ণনা করে তা পরিত্যাগ করো কেন? তিনি উত্তর দিলেন, যেন লোকদেরকে এ বিষয়ে জানিয়ে দেই যে, হাদিসটি সম্পর্কে আমাদের অবগতি থাকা সত্ত্বেও আমরা তার উপর আমল করি নি। ইমাম ইবনে মাহদি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মদিনাবাসীর মাঝে পূর্ব থেকেই প্রচলিত সুন্নত হাদিস থেকে উত্তম। তিনি আরও বলেন, একটি বিষয়ে অনেক হাদিস আমার সংগ্রহে থাকে। কিন্তু ইসলামের শুরু থেকে প্রচলিত আমল যদি এর বিপরীত হয়, তখন হাদীসগুলি আমার কাছে দুর্বল বিবেচিত হয়। ইমাম রবীয়া’ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমার কাছে এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তির বর্ণনার চেয়ে এক হাজারের লোক থেকে অপর এক হাজার লোকের বর্ণনা অধিক উত্তম। কেননা আমার আশঙ্কা হয় এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তির বর্ণনা তোমাদের থেকে সুন্নত ছিনিয়ে নেবে। ইবনে আবি হাযেম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আবু দারদা রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হতো। তিনি প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতেন। অত:পর তাঁকে বলা হতো, আমাদের কাছে তো এই হাদিস এভাবে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলতেন, আমিও হাদিসটি শুনেছি, কিন্তু প্রচলিত আমল এর বিপরীত। ইমাম ইবনে আবিয যিনাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, উমর বিন আব্দুল আযিয ফকিহদেরকে একত্র করতেন। যেসব হাদিস ও সুন্নতের উপর আমল করা হয়, তাদেরকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন। এরপর তিনি তাদের বক্তব্য অনুযায়ী ফয়সালা করতেন। যেসব হাদিসের উপর আমল করা হয় না, সেগুলো পরিত্যাগ করতেন, যদিও তা বিশ্বস্ত সূত্রে বর্ণিত হতো।
[সূত্রঃ কাজি ইয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি : তারতীবুল মাদারেক, খ.১, পৃ.৬৬।]
উপর্যুক্ত বক্তব্যগুলো কাযি ইয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন। এবার খতিব বাগদাদি রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর বক্তব্যের প্রতি লক্ষ করুন।
তিনি আল-ফকিহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ-এ শিরোনাম দিয়েছেন, “যেসব কারণে খবরে ওয়াহিদকে পরিত্যাগ করা হবে।” তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বিন ঈসা তাব্বা’ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর বক্তব্য দিয়ে পরিচ্ছেদটি শুরু করেছেন। ইমাম মুহাম্মাদ বিন ঈসা রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর বিশিষ্ট ছাত্র; একজন বিশিষ্ট ফকিহ ও মুহাদ্দিস। তিনি বলেন,“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত প্রত্যেকটি হাদিসের উপর আমলের ব্যাপারে কোন সাহাবি থেকে যদি কোন বর্ণনা না পাওয়া যায়, তবে হাদিসটি পরিত্যাগ করো।”
[সূত্রঃ আল-ফকীহ ওয়াল মুতাফাক্কীহ। খ.১, পৃ.১৩২।]
নিজের বিকৃত বুঝকে কুরআন-সুন্নাহের নামে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টাঃ
ইসলামের বিশুদ্ধ বিধি-বিধানকে বিকৃত করার জন্য এই পদ্ধতিটি বাতিল দলগুলো লুফে নিয়েছে। তারা তাদের নতুন আবিষ্কৃত বিদয়াত চালুর জন্য কুরআনের আয়াত কিংবা হাদীস ব্যবহার করে, কিন্ত এর ব্যাখ্যা তারা নিজেরা করে। তাদের এসব নতুন নতুন বিকৃত ব্যাখ্যার সাথে তাদের ব্যবহৃত কুরআন ও হাদীসের আদৌ কোন সম্পর্ক থাকে না।
অনেক বাতিল দলগুলো তাদের বিদয়াত চালুর জন্য বিকৃত ব্যাখ্যার পাশাপাশি মিথ্যাচারের আশ্রয় নেই। নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم)এর সুন্নাহের মাঝে নিজেদের আবিষ্কৃত বিদয়াত চালু করার ক্ষেত্রে বিকৃত ব্যাখ্যা ও মিথ্যাচার বর্তমানে একটি স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে তাদের এই বিকৃত ব্যাখ্যা এবং মিথ্যা উদ্ধৃতি যাচাই করার সুযোগ হয় না। একারণে সাধারণ মানুষ কুরআন ও হাদীসের উদ্ধৃতি দেখে ধোঁকায় পড়ে যায়।
আসুন কুরআন ও হাদীসের নামে কীভাবে ইসলামকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে তার কিছু নমুনা দেখে নেই।
এসব বিকৃতির ক্ষেত্রে কুরআনের শব্দ ব্যবহার করছে, হাদীসের শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু ব্যাখ্যা করা হচ্ছে সম্পূর্ণ নিজের মস্তিষ্ক থেকে। এখানেই বাতিলপন্থীদের সাথে আমাদের মতভেদ।
আমরা বলি, আমরা কুরআন ও হাদীস যেমন সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম থেকে নিয়েছি, কুরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যাও সাহাবা, তাবেয়ী ও তাবেয়ীন থেকে নিবো। বাতিল পন্থীদের দাবী হলো, কুরআন ও হাদীস তারা সাহাবাদের কাছ থেকে নিবে, কিন্তু কুরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যা তারা নিজেরা করবে। আর এভাবেই তারা ইসলামকে বিকৃত করে চলেছে।
আমরা জানি যে, ইহুদী, খ্রিষ্টান প্রত্যেক ধর্মের লোকের জন্য কুরআন বোঝার অধিকার আছে। মুসলিম বিশ্বে যে সমস্ত খ্রিষ্টান মিশনারী কাজ করে, তাদের সম্পর্কে যারা জানেন তাদের নিকট বিষয়টি অস্পষ্ট নয় যে, তারা মুসলমানদেরকে খ্রিষ্টবাদের দিকে আহ্বান করার সময় কুরআন থেকে প্রমাণ পেশ করে। কুরআন থেকে ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকে। তারা বলে, কুরআনে হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) কে “কালিমাতুল্লাহ” বলা হয়েছে। আল্লাহর একটি সত্তাগত গুণ হল, সিফতে কালাম। সুতরাং হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) আল্লাহর সত্তার একটি অংশ বা সিফত। কুরআনে হযরত ঈসা (আঃ) কে “রুহুল্লাহ” বা আল্লাহর রূহ বলা হয়েছে। হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) আল্লাহর রুহ ছিলেন। আর হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর সাথে আল্লাহর সম্পর্ক এমন যেমন দেহ ও আত্মার সম্পর্ক। আর কুরআনে বলা হয়েছে, আমি ঈসা (আলাইহিস সালাম) কে রুহুল কুদুস দ্বারা শক্তিশালী করেছি। আর এর দ্বারা তারা ঐ ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত দেয়, যা বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে যে, রুহুল কুদুস হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর কবুতরের আকৃতিতে অবতীর্ণ হয়েছিল। দেখুন! খোদা, কালেমা ও রুহুল কুদুস এ তিনটি মৌলিক উপাদানই কুরআন দ্বারা প্রমাণিত হল। অর্থাৎ যে কুরআন ত্রিত্ববাদের ঘোর বিরোধী, এই নতুন ব্যাখ্যার বদৌলতে স্বয়ং কুরআনের দ্বারাই এ অসার আক্বীদার প্রমাণ মিলে গেল। এখন শুধু থেকে গেল, কুরআনের ঐ আয়াত যাতে স্পষ্টভাবে ত্রিত্ববাদের কথা নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং যেহেতু ত্রিত্ববাদের আক্বীদা প্রমাণিত হয়ে গেল, তাহলে বলা যায়, এই আয়াতে প্রকৃত ত্রিত্ববাদের কথা নিষেধ করা হয়েছে। আর একথা খোদ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরাও স্বীকার করে যে, খোদা মূলতঃ তিন জন নয় বরং এ তিনটি মৌল উপাদানের সমন্বয়ে মূলতঃ একজনই। আর কুরআনে যে বলা হয়েছে, যারা মসীহ ইবনে মরিয়মকে আল্লাহ বলবে, তারা কাফের’ এটা মূলতঃ মনোফেসি ফেরকার বিরুদ্ধাচরণ করা হয়েছে। যেখানে যেখানে নাসারাদের জাহান্নামের আযাবের কথা বলে ভয় প্রদর্শন করা হয়েছে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য ক্যাথলিক ফেরকা নয় বরং এর দ্বারা মনোফেসি ফেরকাকে সম্বোধন করা হয়েছে। বাকী রইল একথা যে, কুরআনে কারীমে বলা হয়েছে যে, হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) কে শূলিতে চড়ান হয়নি, এটাও ঠিক। খ্রিস্টানদের সাধারণ আক্বীদা হচ্ছে, হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর মধ্যে নিহিত খোদায়ী মৌল উপাদান শূলিতে চড়ান হয় নি। শুধু পেট্রিপেশন ফেরকা এই আক্বীদা পোষণ করে যে, হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর মধ্যে নিহিত খোদায়ী মৌল উপাদানের সমষ্টিকে শূলিতে চড়ান হয়েছিল। কুরআনে এটাই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আর হযরত ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর শরীর সম্পর্কে কথা হল, কুরআনে তার গঠানাকৃতিকে ফাঁসিতে ঝুলানোর কথা অস্বীকার করা হয় নি।
[সূত্রঃ আধুনিক যুগে ইসলাম। পৃষ্ঠা-১৪১।]
এই ধারাবাহিকতায় খ্রিষ্টধর্মের অন্যান্য বিষয়গুলিও তারা খুব সহজে কুরআনের দ্বারা ব্যাখ্যা ও প্রমাণ করে থাকে।
আল্লামা মুফতী তাকী উসমানী “আসরে হাজের মে ইসলাম কেইসে নাফেয হোঁ” নামক কিতাবে পাকিস্তানে কুরআন ব্যাখ্যার নতুন ধারা সম্পর্কে বলতে গিয়ে লিখেছেন, “পাকিস্তানে ‘ইসলামী গবেষণা পরিষদের মহাপরিচালক ড. ফজলুর রহমান তার লিখিত ‘ইসলাম’ গ্রন্থে অত্যন্ত জোরালোভাবে ইসলামের নতুন ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছেন।
তার মতে ইসলামে মৌলিকভাবে মূলতঃ তিন ওয়াক্তের নামায ফরয করা হয়েছে। নবী করীম (صلى الله عليه و آله وسلم)এর জীবনের শেষ বছরে আরও দু‘ওয়াক্তের নামায সংযোজন করা হয়। এজন্য নামাযের রাকাতেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘মোট কথা এই সত্যতা যে মৌলিকভাবে শুধু তিন ওয়াক্তের নামাযই ফরয ছিল, এর সাক্ষ্য ঐ ঘটনা দ্বারা দেয়া সম্ভব যে, এক বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে, রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم)কোন কারণ ছাড়াই চার নামাযকে দু’ওয়াক্তের নামাযে জমা করেছিলেন। সুতরাং নববী যুগের পরে নামাযের সংখ্যা অত্যন্ত কঠোরভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নির্ধারণ করা হয়। আর সত্য কথা হল, মৌলিকভাবে নামায তিন ওয়াক্ত, হাদীসের বরােতর টানে যা পাঁচ ওয়াক্তের বর্ণনায় তলিয়ে গেছে।”
অতঃপর আল্লামা তাকী উসমানী সাহেব লিখেছেন, “সংস্কারবাদীদেরও তাফসীরের নমুনা দেখনু! সেখানে আপনি নতুন ব্যাখ্যার স্বরূপ দেখতে পাবেন। ওই লোকদের কাছে ‘ওহী’ হচ্ছে রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم)এর কালাম, ফেরেশতা দ্বারা উদ্দেশ্য হল, পানি বিদ্যুৎ ইত্যাদি। ইবলিস দ্বারা উদ্দেশ্য হল, পশুত্ব শক্তি। ইনসান দ্বারা উদ্দেশ্য হল, সত্যলোক। মৃত্যু দ্বারা উদ্দেশ্য হল, তন্দ্রা, জিল্লতি ও কুফর। জিন্দা হওয়া দ্বারা উদ্দেশ্য হল, সম্মান ফিরে পাওয়া, হুশ ফিরে আসা বা ইসলাম গ্রহণ করা। পাথরে লাঠি দ্বারা আঘাত করার অর্থ হল, লাঠির উপর ভর করে পাহাড়ে আরোহণ করা। এই তাফসীরের কথা মাথায় রেখে চিন্তা করুণ যে, খ্রিষ্টানদের ব্যাখ্যার সাথে এদের ব্যাখ্যার মধ্যে যে কোন পার্থক্য নেই’ এ বিষয়ে আমি অতিরঞ্জিত কিছু বলেছি কি না?”
[সূত্রঃ আধুনিক যুগে ইসলাম, মুফতী তাকী উসমানী, পৃষ্ঠা-১৪২।]
মদীনা পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত কাজী জাহান মিয়ার আল-কুরআন দ্য চ্যলেঞ্জ সমকাল পর্ব-১।
নিচে সমকাল পর্ব-১ থেকে কয়েকটি বিষয় আলোচনা করা হল-মেজর কাজী জাহান মিয়ার সমকাল পর্ব-১ এ লিখেছেন,
“ইয়াজুজ-মাজুজ কোন অতিপ্রাকৃতিক জীব নয়, সাধারণ মানুষ। যারা আবিষ্কার ও অর্থনৈতিক শক্তির দ্বারা আল্লাহর দুনিয়া হতে আল্লাহর আইনকে মুছে দিয়ে তাদের নিজস্ব আইন প্রচলন করে এবং সম্পদের একচ্ছত্র ব্যবহার নিশ্চিত করে এবং সাধারণ মানুষের রিযিক হরণ ও জন জীবন অশান্তি ও ক্ষতি সৃষ্টির কারণ হয় এবং পরিণামে ইসলামের মূলোৎপাটন যাদের কার্যক্রম ধাবিত হয়, কোরআনের পরিভাষায় তারাই ইয়াজুজ! প্রচলিত ধারণায় পাহাড় হতে লাফিয়ে পড়ার ভয়ঙ্কর জীবদের তথা সত্য নয়, কল্পনাপ্রসূত! সিঙ্গার ফুৎকারে কিয়ামত হয়ে যাওয়া (ইয়াজুজ-মাজুজের সাথে সংশ্লি আয়াত ১৮:৯৯) এর ধারণাও সত্য নয়। সুস্পষ্টভাবে এটি এক বিশ্বায়নের চিত্র।”
[সূত্রঃ আধুনিক যুগে ইসলাম, মুফতী তাকী উসমানী, পৃষ্ঠা-১৮।]
এখানে তিনি তার বিকৃত, মনগড়া, কল্পনাপ্রসূত একটি ধারণাকে প্রমাণ করতে গিয়ে ইসলামে প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত সকল বিষয়কে অস্বীকার করেছেন। এমনকি সিঙ্গা ফুৎকারে কিয়ামত হওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন (নাউযুবিল্লাহ) আল-কুরআন দ্য চ্যলেঞ্জ এর প্রথম অধ্যায়ের শিরোনাম হল, “এই সেই ফিইফা” কাযী জাহান মিয়া তার বক্তব্যের প্রমাণ হিসেবে কুরআনের ১৭ নং সুরার ১০৪ নং আয়াতকে উপস্থাপন করেছেন। কুরআনের আয়াত ও তার অর্থ নিম্নে প্রদান করা হল-
وَقُلْناَ مِنْ بَعْدِهِ لِبَنِيْ إِسْرَائِيلَ اسْكُنُوا الْاَرْضَ فَأِذاَ جَاءَ وعْدُ الآخِرَةِ جِئْناَ بِكُمْ لَفِيْفاً
অর্থঃ অতঃপর আমি বনী ইসরাইলকে বললাম, তোমরা ভূ-পৃষ্ঠে বসবাস কর, এরপর যখন পরকালের প্রতিশ্রুতিকাল এসে পড়বে, তখন আমি সবাইকে একত্রিত করে উপস্থিত করবো। আর কাযী জাহান মিয়াঁ এ আয়াতের অনুবাদ করেছেন, “অতঃপর আমি বনি ইসরাইলকে বলিলাম, পৃথিবীতে তোমরা বসবাস করিতে থাকে এবং যখন তোমাদের প্রতি আল্লাহর শেষ প্রতিজ্ঞা পূর্ণ হইবে তষন তিনি তোমাদের সকলকে “ফিইফা”-তে একত্রিত করিবেন। (১৭:১০৪) পরবর্তীতে তিনি বলেছেন, কোরআন প্রতিশ্রুত ফি-ই -ফা কি? (فِيْفاً) (faifa/faifan) এর আভিধানিক অর্থ হলো অর্থ মরুভূমি। কিন্তু (فيفة) শব্দটির আরো সুনির্দিষ্ট অর্থ প্রদান করেছেন F.Steingass-dangerous desert কিংবা dangerous plain সুতরাং ১৭:১০৪ আয়াতে বনি ইসরাইলের একত্রিকরণের প্রতিশ্রুত বিষয়টি অবশ্যই একটি বিপজ্জনক একত্রিকরণ, যা মূলত ইসরাইল জাতির সর্বনাশের সঙ্গে জড়িত।”
[সূত্রঃ আধুনিক যুগে ইসলাম, মুফতী তাকী উসমানী, পৃষ্ঠা-১৯।]
সুধি পাঠক! কুরআন ব্যখ্যার কারিশমা দেখুন! কাজী জাহান মিয়া কোন কুরআন পাঠ করেছেন আল্লাহ পাকই ভাল জানেন। আমরা জানি না, তার উপর নতুন কোন কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে কি না। আমরা যে কুরআন পাঠ করি এবং রাসুল (صلى الله عليه و آله وسلم)এঁর উপর যে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, তাতে “লা ফি ফা” আছে। অথচ জাহান মিয়ার কুরআনে লাম নেই। তিনি এ নতুন কুরআন কোথায় পেলেন কে জানে? লাম বাদ দিয়ে “ফি-ইফা” নিয়ে কত কী না লিখেছেন।
সুধি পাঠক! পৃথিবীর সব কুরআনে লাফিফা আছে। আর আরবী ভাষায় ‘লাফিফা’ অর্থ হল, একত্র করা। মূল ধাতু হলো, ل - ف- ف (লাম-ফা-ফা)। আরবী জানা একটা শিশুও বুঝবে যে, ধাতুর মূল অক্ষর ফেলে দিয়ে শব্দ-ই ঠিক থাকে না। নিজের মতকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এধরণের গবেষক বুদ্ধিজীবিরা কত কিছুরই না আশ্রয় নিয়ে থাকেন। মাঝে মাঝে কুরআন তৈরি করেন। কুরআনের অর্থ তৈরি করেন। কখনও হাদীস অস্বীকার করেন। কুরআন অস্বীকার করে থাকেন। কাজী জাহান মিয়া তার বইয়ে এয়াজুজ মা’জুজ সম্পর্কে লিখেছেন, কাজী জাহান মিয়া আহমদ, তিরমিযী বর্ণিত হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ইনশাআল্লাহ বলার বদৌলতে ইয়াজুজ, মাজুজ দেওয়াল ভাঙতে পারবে। এ সম্পর্কে কাজী জাহান মিয়া লিখেছেন, “আহমেদ, তিরমিযী ইত্যাদি হাদীসের উদ্ধৃতিতে হযরত আবু হুরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর রেয়ায়েত হতে বর্ণিত একটি হাদীস এ যুগে একটি বিস্ময় ও জিজ্ঞাসাবাদের সৃষ্টি করে। (এর পর তিনি হাদীসটি উল্লেখ করেছেন, অবশেষে তিনি লিখেছেন) “এ হাদীস বা উদ্ধৃতিগুলো কি সত্য?” এর সহজ উত্তর, না।” (নাউযুবিল্লাহ)
[সূত্রঃ আধুনিক যুগে ইসলাম, পৃষ্ঠা-৩৯।]
ইয়াজুজ মা‘জুজের ব্যপারে তিনি একটা সূত্র দিয়েছেন, বনি ইসরাইলের একত্রিকরণ ইয়াজুজ মা‘জুজের দুনিয়া জোড়া নিয়ন্ত্রণ! অর্থাৎ ইয়াজুজ-মা‘জুজ = দুনিয়ার শীর্ষতম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে যারা (রাষ্ট্র, জাতি, সম্প্রদায়, ব্যক্তি) প্রচলিত তাফসীরসমূহের কতকে ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে এমন ধারণা দেওয়া হয়েছে যে, উঁচু উঁচু পাহাড় হতে লাফিয়ে লাফিয়ে নেমে আসবে একটি বিশেষ জীব যার লক্ষ্যবস্তু হবে মুসলমান। তারা এসে এক সঙ্গে পৃথিবীর সমস্ত পানি চুষে খেয়ে ফেলবে। কোরআন এমন সব ব্যাখ্যায় কোন দায়িত্ব বহন করে না।”
একই পৃষ্ঠায় পরবর্তীতে তিনি লিখেছেন, “অতএব গ্রেট ব্রিটেন ও আমেরিকার সাথে সংশ্লিষ্ট জাতি সত্তাই হবে কোরআনের উপসর্গ অনুযায়ী ইয়াজুজ-মাজুজ।”
[সূত্রঃ আল-কোরআন দ্য চ্যলেঞ্জ সমকাল পর্ব-১, পৃষ্ঠা, ৩৫।]
কাজী জাহান মিয়া লিখেছেন, বলা দরকার যে ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে ইবনে খালদুন হতে প্রাপ্ত শিক্ষায় জ্ঞানী সম্প্রদায়ের সুবিশাল অংশ একে একটি হযরত ঈসা (صلى الله عليه و آله وسلم)বা তার পরবর্তী ঘটনা বলে মনে করেন। মূলতঃ এমন কতিপয় হাদীস আছে, যে সব হাদীস সমূহকে ভুল বোঝা হয়েছে এই কারণে যে, এখন থেকে মাত্র ১০ কিংবা ৫ বছর পূর্বেও ঐসব হাদীসের আবেদন সুস্পষ্ট ছিল না। কারণ হিসেবে ঘটনার সাদৃশ্যহীনতা এবং আকস্মিক বৈচিত্র এবং যুক্তিযুক্ততা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্তের অভাব। বর্তমানে বিবিধ ঘটনাসমূহ ঘটার কারণেই কেবল ঐ হাদীসগুলোর নিঁখুত সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়েছে। হাদীসসমূহ মূলত দাজ্জাল, ইয়াজুজ মাজুজ ও শেষকালে খৃষ্টান-ইহুদী আক্রমণ ও মুসলমানদের নির্ঘাত-পরাজয় সংক্রান্ত”
[সূত্রঃ আল-কোরআন দ্য চ্যালেঞ্জ সমকাল পর্ব-১, পৃষ্ঠা-৩০।]
প্রিয় পাঠক! এবার আসুন, আরেকজন বুদ্ধিজীবির কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।
তিনি হলেন, ডক্টর মোহাম্মাদ আলী খান মজলিশ। বইয়ের নাম হলো, “কুরআনের আলোকে সত্যের সন্ধান”। লেখক পরিচিতি দেওয়া আছে, প্রথম জীবনে শিক্ষকতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে, পরবর্তীতে পাট গবেষণাগারে গবেষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি পূর্বোক্ত বইয়ে লিখেছেন, “ইবলিশ বা শয়তান এবং গন্ধম খাওয়া হল রূপক। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, ইবলিশকে সৃষ্টি করলে ইবলিশের কি করে ক্ষমতা হলো সৃষ্টিকর্তার আদেশ অমান্য করার?......এর ব্যাখ্যায় পরবর্তীতে তিনি লিখেছেন, “ইবলিশ বা শয়তান হলো, মানুষের দেহে বিভিন্ন প্রকারের হরমোন সৃষ্টি হওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে যে “ইচ্ছা” সৃষ্টি হয়। এই ইচ্ছাটিকে যখন অন্যভাবে ব্যবহার করা হয় তখন তাকেই বলা হয় ইবলিশ বা শয়তান। আদম (অর্থাৎ প্রথম পুরুষ) এবং হাওয়া (প্রথম নারী) যখন ছোট ছিল, তখন তাদের মধ্যে কোন সেক্স ছিল না। এরা বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদের মধ্যে সেক্স হরমোন সৃষ্টি হয় প্রাকৃতিক সংবিধান অনুযায়ী।”
[সূত্রঃ কোরআনের আলোকে সত্যের সন্ধান, ড. মোহাম্মাদ আলী খান মজলিশ, পৃষ্ঠা-২৭,২৮।]
তিনি অন্য জায়গায় লিখেছেন, “ফেরেস্তা এবং হুর পরীও রূপক। ফেরেস্তা হলো রেকর্ডিং এজেন্ট। কোরআনেই উল্লেখ আছে, আমরা যা করছি বা বলছি তা ফেরেস্তা রেকর্ড করে রাখছে। কারও কারও মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ফেরেস্তার কাগজ কলম কোথায় এবং তারা কি সব ভাষাই জানে? প্রকৃত ঘটনা হল, ফেরেস্তা হলো, আলো ও বাতাস।”
[সূত্রঃ কোরআনের আলোকে সত্যের সন্ধান, ড. মোহাম্মাদ আলী।]
তিনি লিখেছেন, “পরিবেশ নষ্টের মূল কারণ পৃথিবীতে মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং মানুষের নৈতিক চরিত্রের সীমাহীন অবক্ষয়, রাজনৈতিক নেতাদের স্বার্থপরতা এবং ধর্ম প্রচারকগণ কর্তৃক মানুষের কাছে ধর্মগ্রন্থের মূল বাণী প্রচার না করে ও রূপকের অর্থ না বুঝে রূপককেই সত্য বলে প্রচার করা। উদাহরণ স্বরূপ, পবিত্র কুরআনের ছুরা ইমরান আয়াত-৭ কতক বাণী সংবিধান, এটিই মূল কিতাব ও অপর অংশ রূপক। রূপক নিয়েই যত মতবিরোধ, ফেরেস্তাদের আবির্ভাব, হযরত মুছার নদী পার হওয়া ও ফেরাউনদের ডুবানো, হযরত ঈসার জন্ম, শবে-মেরাজ, আদমের গন্ধম খাওয়া, বেহেস্ত দোযখের বিবরণ, মৃত্যুর পর পুনরায় শরীর গঠন, (পুনঃজন্ম), কবরের যাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ এবং আজাব। আত্মা ও রূহ সৃষ্টিকর্তার আদেশ হলে বৈধ অবৈধ বলি কেন? এবং তা নিয়ে এত হট্টগোল কেন?
[সূত্রঃ কোরআনের আলোকে সত্যের সন্ধান, ড. মোহাম্মাদ আলী।]
ডঃ মোহাম্মাদ আলী খান মজলিশের বইটি পড়ে মনে হয়েছিল, মৃত্তিকা বিজ্ঞানী হয়ে তিনি যদি মাটি নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত থাকতেন, তাহলে হয়ত এভাবে তার জীবনটা মাটি হয়ে যেত না।
নবীজী (صلى الله عليه و آله وسلم)এঁর নামাযের মধ্যেও যে বিভিন্ন ধরনের বিদয়াত চালু করা হয়েছে, এগুলোও কুরআন ও হাদীসের রেফারেন্স দিয়ে করা হয়েছে। বিদয়াত চালুর ক্ষেত্রেও হাদীসের উদ্ধৃতি দেয়া হয়, কিন্তু ব্যাখ্যা করা হয় নিজেদের পক্ষ থেকে। এসব বিকৃত ব্যাখ্যার সাথে রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم)এঁর সুন্নতের আদৌ কোন সম্পর্ক থাকে না। এজন্য দ্বীন পালনে কে কতোগুলো আয়াত মুখস্থ বলল, কিংবা কে কতগুলো হাদীস মুখস্থ এগুলো মুখ্য বিষয় নয়, বরং কে কুরআন সবচেয়ে বিশুদ্ধভাব বুঝেছে এবং কে হাদীসের সঠিক বুঝ অর্জন করেছে এটিই মুখ্য বিষয়। বর্তমানে মুখস্থ উদ্ধৃতি বলা, সম্পর্কহীন রেফারেন্স বলা একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অথচ বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যায়, এসব মুখস্থ উদ্ধৃতি শুধু তোতা-পাখির মতো বলা হচ্ছে। কুরআন ও সুন্নাহের বুঝের সাথে এসব তোতা-পাখিদের কোন সম্পর্ক নেই। পূববর্তী মুহাদ্দিস ও ফকীহগণ হাদীসের বুঝকেই সর্বদা প্রাধান্য দিতেন। তাদের নিকট এটিই ছিলো মূখ্য বিষয়। কুরআন ও হাদীসের সহীহ বুঝই হলো মৌলিক বিষয়। ইসলামে যতো বাতিল ফেরকার উদ্ভব হয়েছে, সব বাতিল ফেরকার একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো, এরা কুরআন ও সুন্নাহকে নিজেদের উদ্ভাবিত বুঝ দ্বারা ব্যাখ্যা করেছে। তারাও কুরআন ও হাদীস থেকে দলিল দিয়েছে, কিন্তু তাদের বুঝ ছিলো সম্পূর্ণ নিজস্ব বিকৃত বুঝ। এজন্য ইসলামে কে কোন আয়াত বা হাদীসের উদ্ধৃতি দিচ্ছে, সেটি মুখ্য নয়, বরং আয়াত ও হাদীস সম্পর্কে কার বুঝ বিশুদ্ধ সেটিই মূখ্য ও মৌলিক।
____________
উপমহাদেশে সৃষ্ট আহলে হাদিস নামধারী বাতীল ফির্কার বেদাতী নামায Versus নবীজি (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর নামাজ।
নোটঃ ০২.
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1902818620033574
নোটঃ ০৩.
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1902819536700149
___________