▆প্রশ্ন হচ্ছে কার মতের নাম হানাফী মাযহাবঃ হানাফী মাযহাবের নাম হানাফী মাযহাব কেন▆
ইমাম আবু হানীফা রহ.-র শতকরা প্রায় ষাটভাগ মাসআলার বিরোধী ছিলেন তাঁর ছাত্রবর্গ-ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম মুহাম্মাদ, ইমাম যুফার রহ.। তাহলে হানাফী মাযহাব চলে কার মতামতের ওপর ভিত্তি করে? আর কার মতের নাম-ই-বা হানাফী মাযহাব?
এ প্রশ্ন আমার নয়, প্রশ্নটি ক্বুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসরণকারী তথা-কথিত শায়খের এক অন্ধ অনুসরণকারীর।
বেচারা এমনই সহীহ্ হাদীস অনুসরণকারী যে তার তথা-কথিত শায়খ মিয়া বলেছে "সহীহ হাদীস" তাই জাল হাদীসও তার কাছে সহিহ হাদীস।
'সহিহ' সে নির্ণয় করতে পারে না কিন্তু নিজে নির্ণয় না করা সত্ত্বেও তার কথিত শায়খ মিয়ার বলা সে কথাটিকেই বলে সহিহ হাদিস।
- কারন কি!
- শায়খে বলেছে!
- এই হল তার সহীহ তথা বাস্তব হাল! শায়খ মিয়ার অন্ধ অনুসরণ করে যার চলতে হয় তার আবার ভাবখানা এমন যেন সে নিজেই শায়খ, নিজেই ইমাম, নিজেই মুজতাহীদ! আসলে সহীহ বাত হলো সে 'লা মাযহাবী (পথ হারা)'।
মূল আলোচনাঃ
যাহোক, তার অমূল্য! প্রশ্নের ধরণ থেকে বুঝা যায় যে, তার মতে- হানাফী মাযহাব মানে ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মাযহাব এবং হানাফী মানে শুধু ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মতানুযায়ী আমলকারী হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে আরো ইমাম রয়েছে। তাঁরা হলেন তাঁরই ছাত্র। তাতেও সমস্যা ছিলো না, যদি তাঁর সাথে তাঁদের মতোবিরোধ না হতো। কিন্তু শুধু মতোবিরোধই হয়নি, হয়েছে প্রায় ষাট শতাংশ মাসআলায়। আবার হানাফীদের আমলও একেক মাসআলায় একেক জনের মতের ওপর। তাহলে সেই মাযহাবকে ‘হানাফী_মাযহাব’ বলা হয় কী করে?
তাই তিনি জানতে চেয়েছেন- কার মতের নাম হানাফী মাযহাব? হানাফী মাযহাব চলে কার মতামতের ওপর ভিত্তি করে?
মুহতারামের পাশ-দিক বা উত্তর-দক্ষিণ সম্পর্কে আমার কিঞ্চিত ধারণাও নেই। তবে তার প্রশ্ন দেখে মনে হয়েছে যে, প্রশ্নটি তৈরী করার জন্য তিনি বহু ঘাটের পানি খেয়েছেন এবং তার দৃষ্টিতে এমন প্রশ্ন হলো অব্যর্থ প্রতিরোধক। যার উত্তর দেয়া হানাফীদের পক্ষে অসম্ভব।
তাই এমন প্রশ্ন হলো হানাফী মাযহাবভুক্তদেরকে লা-দীনিয়্যাতের সিঁড়ি লা-মাযহাবিয়্যাতের প্রতি ধাবমান করার কার্যকর মহৌষধ।
তার সমীপে আমার প্রশ্ন হলো- মুহতারাম! আপনার ওই মরীচীকানির্ভর আত্মতৃপ্তি ও অন্ধত্বনির্ভর বদ্ধমূল ধারণার কি সামান্য বাস্তবতাও আছে? আসুন, তা...ই অনুসন্ধান করি!
আদতে এ হলো চরম বাচ্চাসুলভ প্রশ্ন। নামকরণ-বিধি সম্পর্কে যার সামান্য ধারণাও আছে, সেও এমন প্রশ্ন করবে না।
মাদ্রাসার কোন ছাত্র যখন মাদ্রাসায় মীযান জামাআতে পড়ি, তখনই ‘যর্রাদী’র হাশিয়ায় পড়ে- নামকরণের জন্য সর্বাঙ্গীন মিল শর্ত নয়।
‘আদনা মুনাসাবাতে’র ওপর ভিত্তি করেও নাম করণ করা হয়; বরং এমন নামকরণের সংখ্যাই অনেক।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার পথে আমতলী উপজেলা অতিক্রম করে কিছু দূর গেলেই নযরে আসবে ‘আলীপুর’। কথিত আছে- ওখানে আশপাশ মিলিয়ে ব্যক্তির নামের সাথে ‘পুর’যুক্ত স্থান ছত্রিশটি।
মুন্সীগঞ্জে একটি জায়গার নাম ‘মোস্তফাগঞ্জ’।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ট্রেনে কুমিল্লায় গেলে দেখবেন-‘হাজীগঞ্জ’। সেখানে আরো ‘গঞ্জ’ রয়েছে। জামালপুর-কেরানীগঞ্জ সহ এমন নামের অভাব নেই।
প্রণিধানযোগ্য বিষয় হলো- এক দিয়ে যেমন ‘পুর’ হয় না, ‘গঞ্জ’ও হয় না। তাহলে ব্যক্তির নামের সাথে তা যুক্ত করে স্থানের নাম কিভাবে রাখা হলো?
যদি বলা হয়- ওখানে ওই নামের আরো অনেক ব্যক্তি ছিলো, তাদের মিলিয়েই .....পুর বা ....গঞ্জ।
তাহলে প্রশ্ন হলো- ওখানে ওই নামের বাইরে অন্য কোনো নামধারীর কি নিবাস ছিলো না? যেহেতু আলী, জামাল বা মোস্তফার নামে গ্রাম বা স্থনের নাম, তো ওই গ্রাম বা স্থানের পরিধির মাঝে অন্য লোকের বাস করার অধিকার থাকে কি করে?
প্রশ্নে আস্ফালনকারী তথা-কথিত আহলে হাদীস লা মাযহাবী তথা পথহারার বাড়ীটি কোথায়, তাতো জানি না। দুর্ভাগ্যক্রমে কোনো ‘পুর’ বা ‘গঞ্জ’ বা ওই জাতীয় কোথাও হলে তো তার ঠিকানাই পরিবর্তন করতে হবে! আল্লাহ না করুক।
আসল কথা হলো- যদি ব্যক্তির নামে কোনো স্থানের নাম হয়, তা হয় সাধারণতঃ ওখানের প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তির নামে বা সামান্য কোনো যোগাযোগকে কেন্দ্র করে। এর অর্থ এ-নয় যে, সেখানে আর কেউ ছিলো না বা থাকতে পারবে না।
- এবার আসল কথায় আসি। মুহতারামের প্রশ্নটি যেমন কোনো ইলমী প্রশ্ন নয়, বরং বিদ্বেষ একটি ভুল বুঝকে গাঢ় করে প্রশ্নটির জন্ম দিয়েছে, তাই উত্তর দানের ক্ষেত্রেও সেই ভুল বুঝটি অপনোদনের চেষ্টাই করা হবে শুধু। তা...ই নিম্নরূপ-
ইমাম আবু হানীফা রহ.-র একটি ‘মাকতাবুল ফিকর’- চিন্তাকেন্দ্র বা গবেষণাবোর্ড ছিলো। যার সদস্য ছিলো ওই যুগের কুরআন, হাদীছ সহ উলূমে শরঈয়্যার পারদর্শী চল্লিশজন ‘মারজিউন নাস’ ইমাম।
মাওলানা আব্দুর রহীম লাজপুরী তাঁর ‘ফাতাওয়া রহীমিয়্যা’য় তাঁদের তালিকা উল্লেখ করেছেন। ইমাম আবু হানীফা রহ. ছিলেন তাদের প্রাণপুরুষ, পরিচালক, প্রধান ও নির্দেশক। তাঁকে কেন্দ্রে করেই তাঁরা আবর্তিত হতেন। মাসআলা উদ্ভাবনকে কেন্দ্র করে নিয়মিত গবেষণার ইমাম আবু হানীফা রহ.-ই ছিলেন প্রবর্তক। ওই চিন্তাকেন্দ্রের এতো প্রভাব ছিলো যে, দুনিয়ার তাবৎ ফিকহী চিন্তাকেন্দ্র সেখান থেকে উপকৃত হয়েছে এবং হচ্ছে।
এ কারণে ইমাম শাফেঈ রহ. বলেছেন- ‘মানুষ ফিকহ-র ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানীফা রহ.-র কাছে ঋণী।’ (মুকাদ্দামা-রদ্দুল মুহতার) তো সরাসরি ওই চিন্তাকেন্দ্র থেকে ফিক্বহ ও মাসআলার যে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয়েছে, চিন্তাকেন্দ্রের প্রধানপুরুষ হিসাবে সব ইমাম আবু হানীফা রহ.-র দিকে সম্বন্ধযুক্ত হয়ে এক শিরোনামে একীভূত হয়েছে। পরিচিতি লাভ করেছে ‘হানাফী মাযহাব’ নামে।
আগেই বলেছি- নাম সাধারণতঃ বড়োর নামানুসারেই হয়, হয় সামান্য যোগাযোগের কারণেও।
তাই তাদের সাথে ইমামের মতভেদ হওয়া সত্ত্বেও তারা ওই চিন্তাকেন্দ্রের সদস্য হিসাবে তাদের মতও ওই চিন্তাকেন্দ্রে মত, চিন্তাকেন্দ্রের প্রধান আবু হানীফা রহ., তাই তাদের মতও ‘হানাফী মাযহাবে’র মত।
হানাফী মাযহাব মানে ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মত নয়। বরং ইমাম আবু হানীফা রহ.-র পরিচালিত চিন্তাকেন্দ্রের সদস্যদের মতামত।
হানাফী মাযহাবের অনুসারী মানে শুধু ইমাম আবু হানীফা রহ.-র অনুসারী নয়, ইমাম আবু হানীফা রহ.-র পরিচালিত চিন্তা কেন্দ্রের অনুসারী।
আশা করি- এরপর আর এই প্রশ্নের অবকাশ থাকবে না যে, কার মতের নাম হানাফী মাযহাব?
আশ্চর্য বিষয় হলো- যারা অপবাদ দেয় যে, হানাফীরা হলো ইমাম আবু হানীফার অন্ধ পূজারী, তারাই আবার প্রশ্ন করে যে, হানাফী মাযহাব চলে কার মাতামতের ওপর? তোমাদের মাযহাবে তো একেক মাসআলায় ফাতওয়া একেক ইমামের মতের ওপর! আরে বোকা! একেক মাসআলায় একেক ইমামের মতের ওপর ফাতওয়া হওয়া থেকে তো এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, হানাফী মাযহাবের অনুসারীরা ইমাম আবু হানীফা রহ.-র অন্ধপূজারী তো দূরের কথা, অন্ধঅনুসারীও নয়।
তারা দলীলের আলোকে যে মতকে অধিক উপযোগী ও শক্তিশালী মনে করে, সে মতের ওপরই আমল করে।
ইমাম আবু হানীফা রহ. বলেছেন, তাই মানতে হবে; এমন মুর্খতা-অন্ধত্ব তাদের মাঝে নেই।
এখান থেকেই প্রমাণিত হয় যে, হানাফীরা কোনো ব্যক্তির বা ইমামের অনুসারী নয়, তারা দলীলের অনুসারী। যদি তারা ব্যক্তির অনুসারী হতো, তাহলে তারা সব মাসআলায় শুধু ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মতকেই অগ্রাধিকার দিতো। তার মতই মান্য করতো।
এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে তারা অন্য মাযহাবের ইমামের মতকেও অগ্রাধিকার দিয়ে সে মতে আমল করে থাকে। এটাই সরল, এটাই বাস্তব।
তো হানাফী মাযহাব চলে দলীলের আলোকে শক্তিশালী মতামতের ওপর ভিত্তি করে, যার প্রমাণ মুহতারাম আপনার প্রশ্নের মাঝেই নিহিত রয়েছে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা একবার প্রশ্ন করবে- তোমাদের মাযহাবে একেক মাসআলায় একেক ইমামের মতের ওপর ফাতওয়া কেনো? তাহলে কার মতের নাম হানাফী মাযহাব?
আবার তারাই বলবে- তোমরা ইমাম আবু হানীফা রহ.-র অন্ধঅনুসরণ কেনো করো? সবক্ষেত্রেই কি কোনো একব্যক্তির কথা যথার্থ হতে পারে?
মূলতঃ সত্যবিমুখিতা মানুষকে অন্ধ করে দেয়। তখন স্পষ্ট সত্যও তাদের সামনে অনুদঘাটিত বা অবহেলিত থেকে যায়। তাদের কথা হয়ে যায়- পরস্পর বিরোধী।
এ-জাতীয় পরস্পর বিরোধী প্রশ্ন-বক্তব্যের বারংবারতা এ কথাই প্রমাণ করে যে, এ যুগের কথিত আহলে হাদীছ ও প্রকৃত লা-মাযহাবীরা সত্য-বিমুখ, চরম বিদ্বেষী। আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন, এমন দলের সদস্য হওয়া থেকে তাদের হেফাযত করেন।
আল্লাহ! আমাকে ও আমাদেরকে হেফাযত করো। আমীন।।
__________
মাজহাবঃ
▆ প্রশ্ন হচ্ছে কার মতের নাম হানাফী মাযহাবঃ হানাফী মাযহাবের নাম হানাফী মাযহাব কেন।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1819140251734745
▆ প্রসঙ্গ : মাযহাব না মানলে বুখারী, মুসলিম মানা যায় না।
https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1680169845631787
▆ মাযহাব মানলে মুশরিক হয় না; যাদের হাত ধরে ইসলাম তাঁরা সকলেই মাযহাবভূক্ত।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1666045127044259
▆ প্রসঙ্গ : সূন্নাহ্ মান্য; হাদিস নয়। সকল হাদিস, সূন্নাহ্ নয়।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1680658558916249
▆ প্রসঙ্গ : ফিত্না বা বিশৃঙখলায় আহালূস সূন্নাহ্ হওয়া বা সূন্নাহ্ আঁকড়ে ধরে থাকা।
https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1681169245531847
▆ মাযহাব এত কেন।
https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1743491289299642
▆ প্রসঙ্গ : দ্বীনের বুঝ (ফিক্বাহ্) অর্জনকারীদের অনূসরণ।
https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1681989658783139
▆ চার মাজহাবের কোন একটি কি একক ভাবে স্বয়ং সম্পূর্ণ? বিচার বিশ্লেষণ করে একেক মাসয়ালায় একেক মাজহাব মানা যাবে কি?
https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1813184972330273
▆ "সালাফী" দাবীটি ভূঁয়া (Bogus)।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1686609804987791
▆ প্রসঙ্গঃ বিয়ে; লা মাযহাবী দৃষ্টিভঙ্গী।
ওহাবী লা-মাযহাবীদের কাছে প্রশ্ন- "মাযহাব/গবেষনা অস্বীকার করে নানী, দাদী ও নাতনীকে বিবাহ করবেন? নাকি মাযহাব/গবেষনা স্বীকার করে হারাম হতে নিজকে রক্ষা করবেন?
https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1813357312313039
▆ কাদের উপর তাকলীদ বা মাযহাব ওয়াজিব আর কাদের উপর ওয়াজিব নয়।
https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1813367185645385
▆ লা-মাযহাবীদের অবস্থা।
https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1813387635643340
▆ সাহাবাযুগে তাকলিদ বা মাজহাব বা অনূসরণ
প্রশ্নঃ লা মাযহাবী শেখের মুরিদ / মুকাল্লিদেরা বলে থাকে, সাহাবা যুগে তাকলিদ ছিলনা। তাই আমরা ও কারো তাকলিদ করবোনা। মাজহাব মানব না। এটা কি ঠিক ?
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1813421288973308
▆ চার মাযহাবের উপর ইজমা হওয়ার প্রমাণ, ইমাম মাহদী (আঃ) ও হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ) এঁর মাযহাব কী হবে এবং নাজাতপ্রাপ্ত দল কারা?
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1813948172253953
▆ আহলে হাদীস তথা লা মাজহাবীদের কাছে ১০টি প্রশ্ন।
[কোরআন ও সহীহ্ হাদিসের শব্দ, কোন ব্যক্তির শব্দ অগ্রহণীয়।]
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1811851752463595
▆ মাজহাব কি ও কেন? মাজহাব মানার কি কোন প্রয়োজন আছে? সাহাবী যুগে কি কোন মাযহাব ছিলো?
https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1814310098884427
▆কুরআন-সুন্নাহ থাকতে মাযহাব কেনঃ সরল মূল্যায়ণ▆
https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1814458098869627
▆কুরআন-হাদীসের আমলের ক্ষেত্রে আহলে হাদীস ও হানাফীদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য।
https://mbasic.facebook.com/story.php?story_fbid=1822773314704772
__________