আহলে বাইতের ফজিলত / আলে রাসূলের মর্যাদা।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের আহলে বাইতকে মহব্বত করে ও ভালোবেসে থাকে।
আর আহলে বাইতের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের অসীয়তকে স্মরণ রাখে। সেই অসিয়ত মুববারাক তিনি (صلى الله عليه و آله و سلم) ‘গাদীরে খোম’ নামক স্থানে ব্যক্ত করেছিলেন:
«وَأَهْلُ بَيْتِي أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي»
“আমার আহল, আমার আহলের ব্যাপারে তোমাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আমার আহলের ব্যাপারে তোমাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আমার আহলের ব্যাপারে তোমাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।”
[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ২৪০৮]।
তাই আহলে সুন্নাত তাদেরকে ভালবাসে ও সম্মান করে। কেননা তা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসা ও সম্মান করারই অন্তর্ভুক্ত।
হজের সকল বিধি-বিধান পালন করার পর ১৪ই যিলহজ বুধবার মসজিদুল হারামে ফজরের সলাত আদায়ের পর রাসুল (ﷺ) তাঁর সাহাবীগণকে নিয়ে মদীনা অভিমুখে রওনা হয়ে যান।
[সূত্রঃ যাদুল মা‘আদ ২/২৭৫]।
পথে রাবেগের নিকটবর্তী খোম কুয়ার নিকট পোঁছালে বুরাইদা আসলামী (রা.) রাসুল (ﷺ)-এর নিকটে আলী(রা.) এর ব্যাপারে গনিমত বণ্টন সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু কথা বলেন। এর প্রেক্ষিতে রাসুল(ﷺ) সাহাবীদের সামনে কিছু বক্তব্য পেশ করেন। এই বক্তব্যের মধ্যকার কিছু অংশ ছিল –
قَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّىاللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا فِينَا خَطِيبًا، بِمَاءٍ يُدْعَى خُمًّا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، وَوَعَظَ وَذَكَّرَ، ثُمَّ قَالَ
: " أَمَّا بَعْدُ، أَلَا أَيُّهَا النَّاسُ فَإِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ يُوشِكُ أَنْ يَأْتِيَ رَسُولُ رَبِّي فَأُجِيبَ، وَأَنَا تَارِكٌ فِيكُمْ ثَقَلَيْنِ: أَوَّلُهُمَا كِتَابُ اللهِ فِيهِ الْهُدَى وَالنُّورُ فَخُذُوا بِكِتَابِ اللهِ، وَاسْتَمْسِكُوا بِهِ " فَحَثَّعَلَى كِتَابِ اللهِ وَرَغَّبَ فِيهِ، ثُمَّ قَالَ: «وَأَهْلُ بَيْتِي أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُاللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي»
অর্থঃ রাসুলুল্লাহ(ﷺ) একদিন মক্কা ও মদীনার মাঝামাঝি ‘খুম’ নামক স্থানে দাঁড়িয়ে আমাদের সামনে বক্তৃতা দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও সানা বর্ণনা শেষে ওয়ায-নাসিহত করলেন। অতঃপর বললেনঃ শোনো হে লোক সকল! আমি তো কেবল একজন মানুষ, অতি সত্ত্বরই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত দূত (মৃত্যুর ফেরেশতা) আসবেন, আর আমিও তাঁর আহ্বানে সাড়া দেবো। আমি তোমাদের নিকট ২টি ভারী জিনিস রেখে যাচ্ছি। এর প্রথমটি হলো আল্লাহর কিতাব (কুরআন)। এতে পথনির্দেশ এবং আলোকবর্তিকা আছে। অতএব তোমরা আল্লাহর কিতাবকে অনুসরণ করো, একে শক্ত করে আঁকড়ে রাখো। তারপর তিনি কুরআনের প্রতি উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিলেন। এরপর বলেন, আর [অন্যটি হলো] আমার আহলে বাইত[(আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (আঃ)]। আর আমি আমার আহলে বাইতের বিষয়ে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আমার আহলে বাইতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আমার আহলে বাইতের বিষয়ে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। …”
[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ২৪০৮]।
হযরত যাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন,
“হে মানব সম্প্রদায়! আমি তোমাদের মধ্যে দু‘টি ভারি বস্তু রেখে যাচ্ছি, যদি এ দু‘টিকে আঁকড়ে ধরে থাক (অনুসরণ কর) তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না।” আর যদি একটিকে ছাড় তাহলে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। তার প্রথমটি হচ্ছে “আল্লাহর কিতাব (কোরআন) দ্বিতীয়টি হচ্ছে আমার ইতরাত, আহলে বাইত” [(আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (আঃ)] এ দু‘টি কখনই পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন হবে না, যতক্ষণ না হাউজে কাউসারে আমার সাথে মিলিত হবে। তাদের সাথে তোমরা কিরূপ আচরণ কর, এটা আমি দেখবো।
[সূত্রঃ- সহীহ্ মুসলিম, খঃ-৫, হাঃ-৬০০৭, ৬০১০, (ই, ফাঃ); সহীহ মুসলিম, খঃ-৫, পৃঃ- ৩৭৪-৩৭৫, হাঃ-৬১১৯-৬১২২, (আহলে হাদীস লাইব্রেরী); সহীহ্ তিরমীজি, খঃ-৬, হাঃ-৩৭৮৬- ৩৭৮৮, (ই,ফাঃ); মেশকাত, খঃ-১১, হাঃ-৫৮৯২-৫৮৯৩, (এমদাদীয়া); তাফসীরে মাজহারী, খঃ-২, পৃঃ-১৮১, ৩৯৩, আল্লামা সানাউল্লাহ পানিপথি (ইফাঃ); তাফসীরে হাক্কানী (মাওলানা শামসুল হক ফরীদপূরি) পৃঃ-১২-১৩ (হামিদীয়া); তাফসীরে নূরুল কোরআন, খঃ-৪, পৃঃ-৩৩, খঃ-২২, পৃঃ-১৭ (মাওলানা আমিনুল ইসলাম); মাদারেজুন নাবুয়াত, খঃ-৩, পৃঃ-১১৫, (শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী); ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালিউল্লাহ), খঃ-১, পৃঃ-৫৬৬; সিলসিলাত আল আহাদিস আস সাহীহাহ্, নাসিরউদ্দিন আলবানী, কুয়েত আদদ্বার আস সালাফীয়া, খঃ- ৪, পৃঃ-৩৫৫-৩৫৮, হাঃ-১৭৬১, (আরবী); (নাসিরউদ্দিন আলবানীর মত এই হাদীসটি সহীহ্)]।
হযরত মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و سلم) যেরূপ আল্লাহর নিকট প্রিয়তম ও সম্মানিত ছিলেন বা আছেন। ঠিক তদ্রুপ হযরত মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و سلم)‘র আহলে বাইতগণও প্রিয়তম ও সম্মানীত।
তাই এরশাদ হচ্ছে :
“অবশ্যই আল্লাহ তাঁর ফেরেশতাদের নিয়ে নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করেছেন। হে ঈমানদারগণ তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করতে থাক।”
[সূরা-আহযাব, আয়াত ৫৬]
উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (صلى الله عليه و آله و سلم) আপনার উপর কিভাবে দরুদ পাঠ করতে হবে?
উত্তরে নবীজি বলেন :
“আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলে মুহাম্মাদ” অতঃপর তিনি বলেন : দেখ, তোমরা যেন আমার উপর লেজ কাটা দরুদ না পড়।
সাহাবারা বললেন লেজকাটা কেমন? নবীজি উত্তরে বলেন, আমার আহলে বাইত (আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (আঃ)-কে বাদ দিয়ে শুধু আমার উপর দরুদ পড়া যেমন “আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ” বলে চুপ থাকা। আমার ‘আলকে’ অবশ্যই সম্পৃক্ত করতে হবে।
[সূত্রঃ মুসনাদে আহমদ, খঃ-৫, পৃঃ-৩৫৩; যাখাইরুল উকবা, পৃঃ-১৯; ইয়া নাবিউল মাওয়াদ্দাত, পৃঃ-৭; কানযুল উম্মাল, খঃ-১, পৃঃ-১২৪; সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, পৃঃ-৮৭,৭৭১; মাজমাউল বয়ান, খঃ-৮, পৃঃ-৩৬৯; ফাজায়েলুল খামছা, খঃ-১, পৃঃ-২০৯]।
এ হাদীসে পাকের মাধ্যমে একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হল যে, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বংশধর তথা আহলে বাইতের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা কুরআনে কারীমের মতই। যেমনিভাবে ঈমানের জন্য কুরআনকে মানা অপরিহার্য, তেমনিভাবে নবীজী (صلى الله عليه و آله و سلم)'র আহলে বাইতকেও মানা অপরিহার্য।দ্বিতীয় কোন বংশ এ মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।
এ প্রসঙ্গ ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন, “ইয়া! আহলে বাইতে রাসূল! আপনাদের মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) পবিত্র কোরআনে ফরজ করা হয়েছে, যে ব্যক্তি নামাজ আপনাদের উপর দরুদ না পড়বে তার নামাজই কবুল হবে না।”
[সূত্রঃ ইবনে হাজার মাক্কীর-সাওয়ায়েকে মোহরেকা পৃঃ-৮৮]।
হযরত ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, দু‘আ ও নামাযসমূহ ততক্ষণ পর্যন্ত আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী স্থানে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে, উপরের দিকে যায় না, যতক্ষণ না নবী করীম (صلى الله عليه و آله و سلم) এর প্রতি দরুদ প্রেরণ করা না হয়।
[সূত্রঃ মাদারেজুন নবুয়াত, খঃ-২, পৃঃ-১০৬, (ই,ফা:); জামে আত তিরমিযি, খঃ -২, হাঃ-৪৫৮, (ই, সঃ); সহীহ তিরমিযি, পৃঃ-১৭২, হাঃ-৪৮৯, (সকল খণ্ড একত্রে, তাজ কোং)]।
পাঠকদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন? “মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) ও তাঁর আহলে বাইত (আঃ)-দের উপর নামাজে দরুদ না পড়লে, নামাজ কবুল হবে না”। তাই নামাজের মধ্যে একটি শর্ত হচ্ছে, তাঁদের (মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) ও তাঁর আহলে বাইতের) উপর দরুদ পড়তে হবে। যাঁদের উপর দরুদ না পড়লে নামাজই কবুল হয় না। তাদেরকে যদি আমরা না চিনি বা না জানি, তাহলে নামাজে দরুদ পড়লেও তা কোন উপকারে আসবে কি? একটু চিন্তা করুন!
একদা নাজরানের খ্রিস্টানদের একটি দল পাদ্রীসহ রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর নিকট উপস্থিত হন। তারা হযরত ঈসা (আঃ) সম্পর্কে নবীজির সাথে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হন নবীজির কোন যুক্তিই তারা মানছিলেন না। তখন নবীজির প্রতি কোরআনের এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়:
“আপনার নিকট যথাযথ জ্ঞান আসার পরও যে কেউ এই বিষয়ে তর্ক করবে, সন্দেহ করবে তাদের বলুন : আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের এবং তোমরা তোমাদের পুত্রদের, আমরা আমাদের নারীদের এবং তোমরা তোমাদের নারীদের এবং আমরা আমাদের নাফসদের (সত্তাদের) ডাকি তোমরা তোমাদের নাফসদের (সত্তাদের) কে ডাক। অতঃপর আমরা বিনীত আবেদন করি মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লা’নত (অভিসম্পাত) বর্ষিত হোক।”
[সূরা-আলে ইমরান, আয়াত ৬১]
মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) ইমাম হাসান, ইমাম হোসেইন, হযরত ফাতেমা ও ইমাম আলী (আঃ) -কে ডাকলেন এবং ইমাম হোসেইনকে কোলে নিলেন, ইমাম হাসানের হাত ধরলেন এবং হযরত ফাতেমা, নবীজির পিছনে এবং ইমাম আলী, হযরত ফাতেমার পিছনে হাটছিলেন। মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) তাঁদের উদ্দেশ্যে বললেন, হে আমার মিশনের সদস্যগণ আমি যখন অভিসম্পাতের জন্য প্রার্থনা করব, তখন তোমরা ‘আমিন’ বলবে।
এখানে বিশেষভাব উল্লেখ্য যে, আল্লাহর পছন্দসই ধর্ম ইসলামের সত্যতা নিরূপণের সাক্ষ্য দেয়ার জন্য মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) আর কাউকেও সঙ্গে নিলেন না, শুধু আহলে বাইত (হযরত আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (আঃ)-গণকেই নিলেন। যেমন আল্লাহর পছন্দসই ধর্ম সত্য ও পবিত্র, ঠিক তেমনি সাক্ষ্যও সত্য ও পবিত্র হতে হবে, তাই তিনি আহলে বাইত (হযরত আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (আঃ)-গণকেই সাথে নিলেন। কারণ তাঁহারাই ছিলেন প্রকৃত সত্যবাদী (সিদ্দিক আকবার) ।
মোবাহালার মাঠে নাজরানের পাদ্রী এই সত্যবাদী “পাক-পাঞ্জাতনকে” দেখে ভীত হয়ে খ্রিস্টানদের বলেন, আমি তাঁদের চেহারাতে এমন জ্যোতি দেখতে পাচ্ছি, যদি তাঁরা এই পাহাড়কে সরে যেতে বলে তাহলে তা সরে যাবে। সুতরাং তাঁদের সাথে মোবাহালা (অভিসম্পাতের) প্রার্থনা করো না। তাঁরা যে জিজিয়া কর ধার্য্য করেন তা মেনে নাও।
[সূত্রঃ তাফসীরে মাযহারী, খঃ-২, পৃঃ-৩১২ (ইফা); তাফসীরে তাবারী, খঃ-৬, পৃঃ-১৯-২২ (ইফাঃ);তাফসীরে ইবনে কাসীর, খঃ-২, পৃঃ-৪৭৭ (ইফাঃ); তাফসীরে মাজদী, খঃ-২, পৃঃ-৯৪ (ইফাঃ); তাফসীরে কানযুল ঈমান (আহম্মদ রেজাখা বেরেলভী), পৃঃ-১২২; তাফসীরে নুরুল কোরআন (মাওলানা আমিনুল ইসলাম), খঃ-৩, পৃঃ-২৭০; কোরানুল কারিম (মহিউদ্দিন খান), পৃঃ-১৮১; কোরআন শরিফ (আশরাফ আলী থানভী), পৃঃ-৯০, (মীনা বুক হাউস); সহীহ্ মুসলিম, খঃ-৬, হাঃ-৬০০২, (ইফাঃ);সহীহ্ তিরমিজী, খঃ-৫, হাঃ-২৯৩৭ (ই,সেন্টার); বোখারী (হামিদিয়া), খঃ-৫, পৃঃ-২৮২; মেশকাত(এমদাদীয়া), খঃ-১১, হাঃ-৫৮৭৫; কাতেবীনে ওহি, পৃঃ-১৬৫ (ইফাঃ); আশারা মোবাশশারা, পৃঃ-১৬২ (এমদাদীয়া); মাসিক মদীনা, (সেপ্টেম্বর-২০০০), পৃঃ-৬; মাসিক সুরেশ্বর (এপ্রিল-২০০০), পৃঃ-৭; শেখ আব্দুর রহীম গ্রন্থাবলী, পৃঃ-৩০৮, (বাংলা একাডমী); ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালিউল্লাহ), খঃ-২, পৃঃ-৪৯৮; তাফসীরে দুরেরে মানসুর, খঃ-৬, পৃঃ-৩৯, (মিশর); তাফসীরে তাবারী, খঃ-৩, পৃঃ-২৯৯, (মিশর); তাফসীরে কাশশাফ, খঃ-১, পৃঃ-৩৬৮, (বৈরুত); তাফসীরে কুরতুবি, খঃ-৪, পৃঃ-১০৪, (মিশর); তাফসীরে কাবীর (ফাখরে রাজী), খঃ-২, পৃঃ-৬৯৯, (মিশর)]।
অতি দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আজ থেকে চৌদ্দশত বছর পূর্বে খ্রিষ্টানরা আহলে বাইত (পাক-পাঞ্জতন)-কে চিনে গেলেন কিন্তু আজ আমরা নিজেকে শ্রেষ্ঠ নবী (সাঃ)-এর উম্মত বলে দাবি করি কিন্তু আহলে বাইতকে ঠিক মত চিনি না, জানি না। আবার অনেককে এমনও পাওয়া যায়, যারা এখন পর্যন্ত আহলে বাইত-এর নামও শুনেন নাই। আর অনুসরণ করার তো প্রশ্নই আসে না। উক্ত আয়াতটি দ্বারা এটা প্রমাণিত হলো যে, মহানবীর (صلى الله عليه و آله و سلم) পর যারা তাঁর উত্তরসূরি হবেন তাঁরা পাক পবিত্র-মাসুম ও প্রকৃত সত্যবাদী হবেন।
আহলে বাইত-এর মুয়াদ্দাত ও অনুসরণ ফরজ।
পবিত্র কোরআনে, মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর আহলে বাইত-এর মুয়াদ্দাত ও অনুসরণ ফরজ করা হয়েছে।
মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) যে রেসালাতের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন, আল্লাহ তার বান্দার কাছ থেকে তাঁর রেসালাতের পারিশ্রমিক বাবদ মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর আহলে বাইত-এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) ফরয করে দিয়েছেন। যদি আমরা আহলে বাইতকে প্রাণাধিক ভালো না বাসি, আনুগত্য না করি, তাহলে আল্লাহর হুকুম অকার্যকর থেকে যাবে বা মানা হবে না, তাই হুকুম হচ্ছে।
“বলুন, আমি আমার রিসালাতের পারিশ্রমিক তোমাদের কাছে কিছুই চাই না, শুধু আমার কুরবা (আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন)-এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) ব্যতিত।”
[সূরা-শুরা, আয়াত-২৩]।
হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, যখন এই আয়াত নাযিল হলো তখন সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ (صلى الله عليه و آله و سلم) কাঁরা আপনার নিকট আত্মীয়? যাদের মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) পবিত্র কোরআনে উম্মতের উপর ফরজ করা হয়েছে। উত্তরে নবী (সাঃ) বললেন-আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্য)।”
[সূত্রঃ কোরআন শরীফ (শুরা,২৩) (আশরাফ আলী থানভী), পৃঃ-৬৯২;তাফসীরে মাজহারী, খঃ-১১, পৃঃ-৬৩ (ই,ফাঃ); তাফসীরে নুরুল কোরআন (মাওলানা আমিনুল ইসলাম),খঃ-২৫, পৃঃ-৬৭; মাদারেজুন নাবুয়াত, খঃ-৩, পৃঃ-১১৭, শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী তাফসীরে দূররে মানসুর, খঃ-৬, পৃঃ-৭ (মিশর); তাফসীরে যামাখশারী, খঃ-২, পৃঃ-৩৯৯, (মিশর); তাফসীরে তাবারী, খঃ-২৫, পৃঃ-২৫ (মিশর); তাফসীরে কাশশাফ, খঃ-৩, পৃঃ-৪০২; খঃ-৪, পৃঃ-২২০ (মিশর); তাফসীরে কাবীর, খঃ-২৭, পৃঃ-১৬৬ (মিশর); তাফসীরে বায়যাভী, খঃ-৪, পৃঃ-১২৩ (মিশর); তাফসীরে ইবনে কাসির, খঃ-৪, পৃঃ-১১২ (মিশর); তাফসীরে কুরতুবি, খঃ-১৬, পৃঃ-২২ (মিশর); তাফসীরে নাসাফী, খঃ-৪, পৃঃ-১০৫ (মিশর); তাফসীরে আবু সাউদ, খঃ-১, পৃঃ-৬৬৫; তাফসীরে জামে উল বায়ান, (তাবারী), খঃ-২৫, পৃঃ-৩৩; তাফসীরে আল আকাম, খঃ-২, পৃঃ-১২১; তাফসীরে বাহরুল মুহিয়াত (ইবনে হাইয়্যান), খঃ-৯, পৃঃ- ৪৭৬; তাফসীরে বিহার আল মাদিদ (ইবনে আজি), খঃ-৫, পৃঃ-৪৩১; তাফসীরে আবু সাউদ, খঃ-৬, পৃঃ-৮০; তাফসীরে কাবীর, খঃ-১৩, পৃঃ-৪৩২; তাফসীরে বাইদাবী, খঃ-৫, পৃঃ-১৫৩; তাফসীরে আল নাসাফী, খঃ-৩, পৃঃ-২৮০; তাফসীরে আল নিশাবুরি, খঃ-৬,পৃঃ-৪৬৭; ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-১৭৩, (উর্দ্দু); আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-১০২, ৫৮৭, (উর্দ্দু)]।
আরো এরশাদ হচ্ছে: “বলুন, যে পারিশ্রমিকেই আমি তোমাদের কাছ চেয়ে থাকি না কেন, তা তো তোমাদেরই জন্য।”
[সূরা-সাবা, আয়াত ৪৭]।
হযরত আবু বকর (রাঃ) ও সে কথাটি বলেছেন যে, “মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর সন্তুষ্টি তাঁর আহলে বাইতের ভালবাসার মধ্যে নিহিত।”
[সূত্রঃ সহীহ্ বোখারী, খঃ-৬, হাঃ-৩৪৪৭, ৩৪৭৯, (ই. ফাঃ); তাফসীরে ইবনে কাসির, খঃ-১৬, পৃঃ-৫২৬; (হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, আহলে হাদীস)]।
“আল্লামা যামাখশারী ও আল্লামা ফাখরে রাজী প্রখ্যাত দুজন তাফসীরকারক” ও বিজ্ঞ আলেম, তারা তাদের সুবিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থদ্বয় “আল কাশশাফ ও আল কাবীর” তাফসিরদ্বয়ে এভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন যখন উক্ত আয়াত নাযিল হলো (সূরা-শুরা-আয়াত-২৩) তখন রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন:-
(১) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে শহিদী মর্যাদা পায়।
(২) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে নাজাত প্রাপ্ত হয় ইহজগৎ ত্যাগ করে ।
(৩) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে তওবাকারী হিসাবে ইহজগৎ ত্যাগ করে।
(৪) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে পূর্ণ ঈমানের সঙ্গে ইহজগৎ ত্যাগ করে।
(৫) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, তাকে মালোকুল মউত, মুনকীর ও নকীর ফেরেশতারা সুসংবাদ দেয়।
(৬) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, তাকে এমন ভাবে বেহেশতে নিয়ে যাওয়া হবে যেমন বিবাহের দিন কন্যা তার শ্বশুরালয়ে যায়।
(৭) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, তার কবরে জান্নাত মুখী দু‘টি দরজা খুলে দেয়া হবে।
(৮) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, আল্লাহ তার কবরকে রহমতের ফেরেশতাদের জিয়ারতের স্থানের মর্যাদা দেন।
(৯) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে নবীর সুন্নত ও খাঁটি-মুসলমানদের দলভুক্ত হয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করলো।
(*) সাবধান যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, কিয়ামতের দিনে তার কপালে লেখা থাকবে সে আল্লাহ পাকের রহমত হতে বঞ্চিত।
(*) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে কাফের হয়ে মারা যায়।
(*) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে বেহেশতের সুগন্ধও পাবে না।
সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (صلى الله عليه و آله و سلم) আপনার “আ’ল” আহলে বাইত, কারা? “নবীজি (صلى الله عليه و آله و سلم) বললেন, আলী, ফাতেমা, হাসান, ও হোসেইন, তিনি আরো বলেন, আল্লাহর কসম যার হস্তে আমার জীবন, যে ব্যক্তি আমার আহলে বাইতকে শত্রু মনে করবে, সে জাহান্নামী।”
[সূত্রঃ তাফসীরে কাবির, খঃ-২৭, পৃঃ-১৬৫, (মিশর); তাফসীরে আল কাশশাফ ওয়াল বায়ান, খঃ-৩, পৃঃ-৬৭, (মিশর); তাফসীরে কুরতুবি, খঃ-১৬, পৃঃ-২২, (মিশর); এহইয়াউল মাইয়াত, পৃঃ-৬; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৪১৮; সাওয়ায়েক মোহরিরকা, পৃঃ-১০৪; ইয়া নাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৫৫, ৫৯৯]।
হযরত মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و سلم) ও তাঁর আহলে বাইতের চির শত্রুদের প্রাপাগাণ্ডায়, আহলে বাইতের ভক্তদের বা প্রেমিকদের “রাফেযী” নামে ডাকা হতো।
এ প্রসঙ্গে ইমাম শাফেয়ী বলেন, যদি কেবল মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و سلم)-এর আহলে বাইতের প্রতি ভালবাসা রাখলেই মানুষ রাফেযী হয়ে যায়, তবে বিশ্ব জগতের সমস্ত জ্বীন ও মানব সাক্ষী থাকুক, আমিও রাফেযী।
[সূত্রঃ কোরআনুল করিম-(মাওলানা মহিউদ্দিন খান), পৃঃ-১২১৫; শেইখ সুলাইমান কান্দুযী-ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৫৭৭; ওবাইদুল্লাহ ওমরিতসারী-আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৮৮৬]।
আহলে সুন্নাতের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা জালাল উদ্দিন সূয়ুতী বর্ণনা করেন যে, পবিত্র কোরআন ও নবী (صلى الله عليه و آله و سلم)-এর হাদীস হতে এটা প্রমাণিত হয় যে, আহলে বাইত আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (আঃ)-এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) দ্বীনের ফরায়েজে গণ্য; সুতরাং ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) এটার সমর্থনে এরূপ সনদ দিয়েছেন যে, “ইয়া আহলে বাইত-এ রাসূল, আল্লাহ তাঁর নাজিল করা পবিত্র কোরআনে আপনাদের মুয়াদ্দাতকে ফরজ করেছেন, যারা নামাজে আপনাদের উপর দরুদ পড়বে না, তাদের নামাজই কবুল হবে না”।
[সূত্রঃ ইবনে হাজার মাক্কীর, সাওয়ায়েকুল মুহরেকা, পৃঃ ১০৩]।
রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, সাবধান! “যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, কিয়ামতের দিন তার কপালে লেখা থাকবে, সে আল্লাহপাকের রহমত হতে বঞ্চিত। যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে কাফের হয়ে মারা যায়। যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে বেহেশতের সুগন্ধও পাবে না।”
[সূত্রঃ তাফসীরে আল কাশশাফ ওয়াল বায়ান, খঃ-৩, পৃঃ-৬৭,(মিশর);তাফসীরে কাবির, খঃ-২৭, পৃঃ-১৬৫, (মিশর); তাফসীরে কুরতুবি, খঃ-১৬, পৃঃ-২২, (মিশর); এহইয়াউল মাইয়াত, পৃঃ-৬; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৪১৮; সাওয়ায়েক মোহরিকা, পৃঃ-১০৪; ইয়া-নাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৫৫, ৫৯৯]।
হযরত যাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم)-এর শেষ বাণী যা তিনি বিদায় হজ্জে একলক্ষ বিশ হাজার সাহাবীদের মাঝে এরশাদ করেছিলেন: “হে মানব সম্প্রদায়! আমি তোমাদের মধ্যে দু‘টি সমপরিমাণ ভারি বস্তু রেখে যাচ্ছি যদি এ দু‘টিকে আঁকড়ে ধরে থাক (অনুসরণ কর) তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। আর যদি একটিকে ছাড় তাহলে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। তার প্রথমটি হচ্ছে আল্লাহর কিতাব (কোরআন) দ্বিতীয়টি হচ্ছে আমার ইতরাত, আহলে বাইত [(আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (আঃ)]; এ দু‘টি কখনই পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না হাউজে কাউসারে আমার সাথে মিলিত হবে। তাদের সাথে তোমরা কিরূপ আচরণ কর এটা আমি দেখবো”।
[সূত্রঃ সহীহ্ তিরমীজি, খঃ-৬, হাঃ-৩৭৮৬, ৩৭৮৮ (ই,ফাঃ); সহীহ্ মুসলিম, খঃ-৫,হাঃ-৬০০৭, ৬০১০, (ই;ফাঃ); মেশকাত, খঃ-১১, হাঃ-৫৮৯২-৫৮৯৩, (এমদাদীয়া); তাফসীরে মাজহারী,খঃ-২, পৃঃ-১৮১, ৩৯৩, আল্লামা সানাউল্লাহ পানিপথি (ইফাঃ); তাফসীরে হাক্কানী (মাওলানা শামসুল হক ফরীদপূরি), পৃঃ-১২-১৩ (হামিদীয়া); তাফসীরে নূরুল কোরআন, খঃ-৪, পৃঃ-৩৩ (মাওলানা আমিনুল ইসলাম); মাদারেজুন নাবুয়াত, খঃ-৩, পৃঃ-১১৫ শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী, তাফসীরে মারেফুল কোরআন, খঃ-১, পৃঃ-৩৭১, মুফতি মোঃ সফী (ই,ফাঃ); কুরআনুল করিম (মাওলানা মহিউদ্দিন খান), পৃঃ-৬৫; সিরাতুন নবী, খঃ-২, পৃঃ-৬০৫, আল্লামা শবলি নুমানী (তাজ কোং); আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খঃ-৫, পৃঃ-৩৪৫ খঃ-৭, পৃঃ-৬১৬ (ই,ফাঃ); কাতেবীন ওহী, পৃঃ-১৬৬ (ই,ফাঃ); আশারা মোবাশশারা (ফাযেলে দওবন্দ), পৃঃ-১৬৩ (এমদাদীয়া); বোখারী শরীফ, খঃ-৫, পৃঃ-২৮০, ২৮২, (হামীদিয়া); রিয়াদুস সালেহীন, খঃ-১, পৃঃ-২৫৫ (ই, সেন্টার); মাসিক মদিনা (জুন,২০০৫), পৃঃ-১৫;সুফি দশর্ন, পৃঃ-৩৩, ৩৮, (ই,ফাঃ); দিওয়ানে মইনুদ্দিন, পৃঃ-৪৯১ (জেহাদুল ইসলাম); বিশ্ব নবী বিশ্ব ধর্ম (ফজলুর রহমান), পৃঃ-১৮৮ (মল্লিক ব্রাদার্স কলকাতা); বিশ্ব নবী, পৃঃ-৫৩৩ (অধ্যাপক মাওলানা সিরাজ উদ্দিন); যে ফুলের খুশবুতে সারা জাহান মাতোয়ারা (মাওলানা আমিনুল ইসলাম), প:-২৩০; শান্তির নবী,পৃঃ, ১৫৯-১৬২, (ফজলুর রহমান খান, দায়েমী কমপ্লেক্স); মাসিক সুরেশ্বর,(মার্চ,২০০১), পৃঃ-১০;শাহাদাতে আহলে বাইত, পৃঃ-৮৪, (খানকা আবুল উলাইয়াহ); সাহাবা চরিত, পৃঃ-২৮, ২৯ (মাওলানা,মোঃ যাকারিয়া); মহানবীর ভাষণ, পৃঃ-২১১ (আব্দুল কাইয়ুম নাদভী (ই,ফাঃ); আল মুরাজায়াত, পৃঃ-২৮, ২২৩ (আল্লামা শারাফুদ্দীন মুসাভী); ওহাবী পরিচয়, পৃঃ-১৩৫-১৩৭, (রেদওয়ানিয়া লাইঃ ১৯৯০ ইং); ইসলামিয়াত, পৃঃ-৩৩ (ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমী (ই, ফাঃ); রহমতে দো আলম মোহাম্মদ, পৃঃ-১১২, (ইস্টার্ন, লাইব্রেরী); যুলফিকারই মুর্তুজা, পৃঃ-১৫৪ (আটরশি); মদীনার আলো, পৃঃ-৫৮ (ডাঃ সুফী সাগর সাম্স, আজিমপুর দায়রা শরিফ); কাসাসুল আম্বিয়া, পৃঃ-৫২১-৫২২ (তাজ কোং, ১৪১০,বাংলা); রাষ্ট্র ও খিলাফত, পৃঃ-২০৬ (মোহাঃ আলাউদ্দিন খান); হযরত আলী, পৃঃ-৫৬ (এমদাদিয়া); আরজাহুল মাতালেব,পৃঃ-৫৬৮ (উদ্দু); ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৬৭-৭৬, (উর্দ্দু); মাদারেজুন নাবুয়াত, খঃ-২, পৃঃ-৫৮৫ (উর্দ্দু); সহীহ্ মুসলিম, খঃ-৫, পৃঃ-৩৭৪-৩৭৫, হাঃ-৬১১৯, ৬১২২, (আহলে হাদীস লাইব্রেরী); রিয়াদুস সালিহীন, খঃ-১, পৃঃ-৩০৯ (হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, আহলে হাদীস); সংক্ষিপ্ত তাফসীর আল মাদানী, খঃ-৮, পৃঃ-১৫ (হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, বংশাল, আহলে হাদীস); সিলসিলাত আল আহাদিস আস সাহীহাহ্ (নাসিরউদ্দিন আলবানী, কুয়েত আদদ্বার আস সালাফীয়া, খঃ-৪, পৃঃ-৩৫৫-৩৫৮, হাঃ-১৭৬১, (আরবী); (নাসিরউদ্দিন আলবানীর মত এই হাদীসটি সহীহ্)]।
রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন, “যে ব্যক্তি এজন্য আনন্দিত যে,সে চায় আমার মত জীবন যাপন করতে, আমার মত মৃত্যুবরণ করতে ও আমার প্রতিপালকের চিরস্থায়ী বেহেশতে বাস করতে সে যেন আমার পর, আমার আহলে বাইতকে অনুসরণ করে। কারণ তাঁরা আমার সর্বাধিক আপন এবং তাঁরা আমার অস্তিত্ব হতে অস্তিত্ব লাভ করেছে। আমার জ্ঞান ও প্রজ্ঞা থেকেই তারা জ্ঞান ও প্রজ্ঞা লাভ করেছে। ধ্বংস আমার সেই উম্মতের জন্য যারা আমার আহলে বাইতের শ্রষ্ঠত্বকে মিথ্যা মনে করে এবং আমার ও তাদের (আহলে বাইত (আঃ)-এর) মধ্যেকার সম্পর্ক ছিন্ন করে। আল্লাহ আমার শাফায়াতকে তাদের জন্য হারাম করেছেন”।
[সূত্রঃ মুস্তাদরাকে হাকেম, খঃ -৩, পৃঃ-১২৮; মুসনাদে আহম্মদ, খঃ -৫, পৃঃ-৯৪; কানজুল উম্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-২১৭, হাঃ-৩৭১৯; হুলিয়াতুল আউলিয়া,পৃঃ-৪৪৯]।
হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্নে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) ইরশাদ করেন, “যদি কোন ব্যক্তি পবিত্র কা’বার পাশে রুকন ইয়ামানি ও মাকাম ইব্রাহিমের মধ্যবর্তী স্থানে দন্ডায়মান হয়ে নামাজ আদায় করে এবং রোযাও রাখে, অতঃপর এমতাবস্থায় আহলে বাইতের সাথে বিদ্বেষ রেখে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে সে জাহান্নামে যাবে”।
[সূত্রঃ তাবরানী, আল মু’জাম আল আওসাত,খঃ- ৪, পৃঃ-২১২, হাঃ-৪০০২; হায়সামী, মাজমাউজ যাওয়ায়েদ, খঃ-৯, পৃঃ-১৭২; জুরজানী, তারিখ জুরজান, পৃঃ-৩৬৯; হাকেম আল মুস্তাদরাক, খঃ-৩, পৃঃ-১৬২, হাঃ-৪৭১৭; হায়সামী সাওয়াইক আল-মুহরিকা, পৃঃ-৯০; আল্লামা সূয়ুতী, এহইয়াউল মাইয়্যাত, পৃঃ-২০; ইবনে হিব্বান, আস সহীহ, খঃ-১৫, পৃঃ-৪৩৫, হাঃ-৬৯৭৮; যাহাবী সি’আরু আলামিন নুবালা, খঃ-২, পৃঃ-১২৩; (হাকেমের মত এই হাদীসটি ইমাম মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ্); মুহিবের তাবারী, যাখায়েরুল উকবা, পৃঃ-৫১; ফাসবী, আল ‘মা’রিফাতু ওয়াত তারিখ, খঃ- ১, পৃঃ-৫০৫; আল্লামা আলী হামদানি শাফায়ী, মুয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-১০৯; ওবাইদুল্লাহ অমৃতসারি-আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৬৭; কাওকাবে দুরির ফি ফাযায়েলে আলী, পৃঃ-২০৯, সৈয়দ মোঃ সালে কাশাফী সুন্নি হানাফী আরিফ বিল্লাহ; আল্লামা শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী-মাদারিজুন নবুওয়াত, খঃ-২, পৃঃ-৯০, (ইঃ, ফাঃ)]।
আহলে বাইত (আঃ)-এর অনুসরণ ব্যতিত ঈমানদার হওয়া যাবে না।
আহলে সুন্নাতের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ূতি লিখেছেন যে, রাসুল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন যে, “দেখ আমার আহলে বাইত-এর অনুসরণকে নিজেদের জন্য অতি আবশ্যকীয় কর্তব্য বলে মনে করবে, কারণ যে ব্যক্তি অন্তরে তাঁদের মহব্বতসহ আল্লাহর নিকট কিয়ামতে উপস্থিত হবে, সে আমার শাফায়াতে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং আল্লাহর কসম আমার আহলে বাইত-এর অনুসরণ ব্যতিত কোন ব্যক্তির কোন আমল উপকারে আসবে না”।
[সূত্রঃ আল্লামা জালাল উদ্দিন সূয়ূতীর এহইয়াউল মাইয়াত, পৃঃ-৩; আল্লামা ইবনে হাজার মাক্কী, সাওয়ায়েকুল মুহরেকা, পৃঃ-১১২]।
রাসুল (صلى الله عليه و آله و سلم) আরও এরশাদ করেছেন, “আল্লাহর কসম কোন মুসলমানের অন্তরে ঈমান ততক্ষণ পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে না, যতক্ষণ না আমার আহলে বাইতকে আল্লাহর নির্দেশনানুযায়ী ও আমার আত্মীয়তার কারণে অনুসরণ (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) না করবে”।
[সূত্রঃ আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ূতীর এহইয়াউল মাইয়াত, পৃঃ-৩; আল্লামা ইবনে হাজার মাক্কী, সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, পৃঃ-১১২]।
আহলে বাইত (আঃ)-এর অমান্যকারীদের হাউজে কাউসারে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় বিতাড়িত করে দেয়া হবে।
আল্লামা ইবনে হাজার মাক্কী বর্ণনা করেন যে, নবী (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, “আমার আহলে বাইতের শত্রুতাকারীগণ হাউজে কাউসারের নিকট পৌছিলে তাদেরকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় বিতাড়িত করে দয়া হবে”।
[সূত্রঃ ইবনে হাজার মাক্কীর, সাওয়ায়েকুল মোহরিকা, পৃঃ ১০৪]।
আহলে বাইত (আঃ)-ই জান্নাত ও জাহান্নামের বণ্টনকারী।
আল্লামা আলী হামদানী শাফেয়ী লিখিয়াছেন যে, “রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, আল্লাহ পাক কিয়ামতে জান্নাত ও জাহান্নামের চাবি আমাকে পাঠাইবেন আমি সেই চাবি আমার আহলে বাইতকে দিব তাঁরা যাকে ইচ্ছা জান্নাতে পাঠাবেন এবং যাকে ইচ্ছা জাহান্নামে পাঠাবেন”।
[সূত্রঃ আল্লামা আলী হামদানী শাফেয়ীর-মোয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-৩১; ইবনে হাজার মাক্কীর সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, পৃঃ-৭৫]।
আহলে বাইত (আঃ)-এর ভালোবাসা ও অনুসরণ, সাতটি কঠিন স্থানে কাজে আসবে।
হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসুদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন যে, আমার আহলে বাইতের ভালোবাসা অনুসরণ, সাতটি কঠিন স্থানে কাজে আসবে ও সহায়ক হবে।
(১) মৃত্যুর সময় (যখন রূহ কবজ করা হবে),
(২) কবরে (কবরের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে),
(৩) কিয়ামত বা হাশরে (কেউ কাউকে চিনবে না, ইয়া নাফসি),
(৪) আমলের (কৃতকর্মের) হিসাব নিকাশের সময়,
(৫) আমলের পরীক্ষার সময়,
(৬) যখন আমল ওজন করা হবে,
(৭) পুলসিরাত অতিক্রম করার সময়।
[সূত্রঃ কাওকাবে দুরির ফি ফাযায়েলে আলী, পৃঃ-২১৯, সৈয়দ মোঃ সালে কাশাফী সুন্নি হানাফী আরিফ বিল্লাহ; ওবাইদুল্লাহ ওমরিতসারী-আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৬৫]।
হযরত ফাতেমা (আঃ) জান্নাতের সকল মহিলাদের নেত্রী ও ইমাম হাসান-হোসাইন (আঃ) সমস্ত জান্নাতি যুবকদের সরদার।
হযরত আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসুল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, “হাসান-হোসাইন জান্নাতি যুবকদের নেতা। (একই হাদীস, হযরত আলী, হযরত ওমর, আবদুল্লাহ্ বিন ওমর, ও আবু হুরাইরা থেকেও বণির্ত হয়েছে) হযরত হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন, একটি ফেরেশতা যিনি ইতিপূর্বে পৃথিবীতে কখনো আসেননি। তিনি আল্লাহর নিকট অনুমতি চাইলেন যে তিনি যেন আমাকে সালাম দিতে পারেন এবং আমাকে সুসংবাদ দিতে পারেন যে, ফাতেমা (আঃ) জান্নাতের মহিলাদের নেত্রী এবং হাসান-হোসাইন জান্নাতের সকল যুবকদের নেতা”।
[সূত্রঃ সহীহ তিরমিযী, খঃ-৬, হাঃ-৩৭৬৮ (ইঃ ফাঃ); সহীহ্ তিরমিযী (সকল খণ্ড একত্রে), পৃঃ-১০৮১, হাঃ-৩৭৩০, (তাজ কোং); মেশকাত শরীফ, খঃ-১১, হাঃ-৫৯০৩, (এমদাদীয়া); তিরমিযী আল জামউস সুন্নাহ, খঃ-৫, পৃঃ-৬৫৬, হাঃ-৩৭৬৮; নাসায়ী আস সুনানুল কুবরা, খঃ-৫, পৃঃ-৫০, হাঃ-৮১৬৯; ইবনে হিববান-আস সহীহ্, খঃ-১৫, পৃঃ-৪১২, হাঃ-৬৯৫৯; আহম্মদ ইবনে হান্বাল আল মুসনাদ, খঃ-৩, পৃঃ-৩, হাঃ-১১০১২]।
আহলে বাইত (আঃ)-গণই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তা।
রাসুল (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবুজার আল গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم)-কে বলতে শুনেছি, “আমার আহলে বাইত এর সদস্যগণ {আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (আঃ)}। আমার উম্মতের জন্য তেমনি নাজাতের তরী, যেমনি আল্লাহর নবী নুহ (আঃ)-এর তরী মহাপ্রলয়ের সময় তার জাতির জন্য আশ্রয় ও নাজাতের তরী ছিল। অর্থাৎ যারাই হযরত নুহ (আঃ)-এর তরীতে উঠেছিল তারাই মহাপ্রলয় থেকে নাজাত পেয়েছিল (হযরত নূহের ছেলে তরীতে উঠেনি আল্লাহ্ তাকেও ক্ষমা করেন নি) তেমনি এই উম্মতের যারা আমার আহলে বাইতকে অনুসরণ করবে তারাই নাজাত পাবে এবং যারা অনুসরণ করবে না তারা সুষ্পষ্ট পথভ্রষ্ট (জাহান্নামী) হবে”।
[সূত্রঃ মেশকাত শরিফ,খঃ-১১, হাঃ-৫৯২৩; কাশফুল মাহজুব, পৃঃ-৭০, (দাতাগঞ্জ বকস); মাসিক মদীনা (সপ্টম্বর ২০০০) পৃঃ-৬; পীরের মর্যাদা ও ভুমিকা, পৃঃ-১১৪, (মুহাঃ মুখলেসুর রহমান এডভোকেট); জ্ঞানধারা, পৃঃ-১০৬, (মুখলেসুর রহমান); আস সাওয়ায়েকুল মুহরিকা (ইবনে হাজার হায়সামী), পৃঃ-২৩৪; তাফসীরে কাবির, খঃ-২৭, পৃঃ-১৬৭; মুসনাদে হাম্বাল,খঃ-২, পৃঃ-৭৮৬; কানযুল উম্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-২৫৬; মানাকেবে ইবনে মাগজিলি, পৃঃ-১৩২; মুস্তাদরাকে হাকেম, খঃ-৩, পৃঃ-১৫১, খঃ-২, পৃঃ-৩৪৩, কেফায়াতুত তালেব, পৃঃ, ২৩৩, আরবাইন নাবহানী,পৃঃ, ২১৬, তারিখে খোলাফা, পৃঃ, ৩০৭; যাখায়েরুল উকবা, পৃঃ-২০; সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, পৃঃ-১৫০ (ইবনে হাজার মাক্কী; ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৩৭০, ৩০৮; মুয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-৩৮, ১১১; নুরুল আবসার, পৃঃ-১১৪; আল তাবরানি, খঃ-৩, পৃঃ-৩৭-৩৮; হিলিয়াতুল আউলিয়া, খঃ-৪, পৃঃ-৩০৬; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৫৯ (উর্দ্দু); আল হাকিম, মুস্তাদরাক, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৪৩, তিনি বলেন হাদিসটি মুসলিমের শর্তে সহীহ; সুয়ূতি রহ., 'আল জামে আল সাগীর', খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৩৩, হাদিসটি হাসান; ইমাম সাখাভী রহ., আল বালদানাইত, পৃষ্ঠা ১৮৬, হাদিসটি হাসান]।
আহলে বাইত (আঃ)-এর (আনুগত্যপূর্ণ) ভালোবাসা, নবীজির ভালোবাসা, নবীজির ভালোবাসা, আল্লাহর ভালোবাসা।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, “তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস কেননা মহান আল্লাহ তাঁর নেয়ামত হতে তোমাদিগকে রিজিক প্রদান করছেন। আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাকে ভালোবাস (রাসূলকে)। আর আমার ভালোবাসা পেতে হলে আমার আহলে বাইতকে (আনুগত্যপূর্ণ) ভালোবাস”।
[সূত্রঃ সহীহ্ তিরমিযি, (সকল খণ্ড একত্রে), পৃঃ-১০৮৫, হাঃ-৩৭৫১, (তাজ কোং); সহীহ তিরমিযি, খঃ-৬, হাঃ-৩৭২৮, (ইঃ সঃ); মেশকাত শরীফ, খঃ-১১, পৃঃ-১৮৮, হাঃ- ৫৯২২, (এমদাদিয়া লাইঃ); শেইখ সুলাইমান কান্দুযী-ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৩১৭, (উর্দ্দু); কাওকাবে দুরির ফি ফাযায়েলে আলী, পৃঃ-২০০, সৈয়দ মোঃ সালে কাশাফী সুন্নি হানাফী আরিফ বিল্লাহ; ওবাইদুল্লাহ ওমরিতসারী-আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৭৯]।
কিয়ামতের দিন, আহলে বাইত (আঃ) ও তাঁদের আশেকরা আল্লাহর আরশের নিচে একই স্থানে থাকবেন।
হযরত আলী (আঃ) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) ইরশাদ করেন, “আমি, আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন এবং আমাদের সকল আশেকরা একই স্থানে একত্রিত হবে। কিয়ামতের দিন আমাদের পানাহারও একত্রে হবে, মানুষের বিচারের ফয়সালা হওয়া পর্যন্ত।”
[সূত্রঃ তাবরানী, আল মু’জামুল কবির, খঃ-৩, পৃঃ-৪১, হাঃ-২৬২৩; হায়সামী, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, খঃ-৯, পৃঃ-১৬৯; আহমাদ ইবনে হাম্বাল,আল মুসনাদ, খঃ-১, পৃঃ-১০১; বাযযার, আল মুসনাদ, খঃ-৩, পৃঃ-২৯, হাঃ-৭৭৯; শায়বানী আস সুন্নাহ্, খঃ-২, পৃঃ-৫৯৮, হাঃ-১৩২২; ইবনে আসীর উসদুল গাবা, খঃ-৭, পৃঃ-২২০; ইবনে আসাকির তারিখে দামেশ্ক, খঃ-১৩, পৃঃ-২২৭]।
মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) এরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি দুনিয়াতে যাকে ভালোবাসবে বা অনুসরণ করবে তার সাথে তার হাশর হবে”।
[সূত্রঃ সহীহ্ মুসলিম, খঃ-৭, হাঃ-৬৪৭০, (ই,ফাঃ); সহীহ্ তিরমীজি, (সকল খণ্ড একত্রে) পৃঃ-৭২৮, হাঃ-২৩৪০ (তাজ কোং)]।
হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন, “(শেষ বিচারের দিবসে) আমার শাফায়াত হবে মুসলিম উন্মাহর মধ্যে তাদের জন্য যারা আমার আহলে বাইতকে (অনুসরণ) মহব্বত করবে”।
[সূত্রঃ খতীব বাগদাদী, তারিখ বাগদাদ, খঃ -২, পৃঃ-১৪৬; হিন্দী, কানযুল উন্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-২১৭; সূয়ুতি ইয়াহইয়া আল মাইয়্যিত, পৃঃ-৩৭; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৬৬, ৫৮১ (উর্দ্দু)]।
হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) ইমাম হাসান-হোসাইনের হাত ধরে বললেন, “যে ব্যক্তি আমাকে এবং এই দু‘জনকে (হাসান-হোসাইন)-কে ভালোবাসবে সাথে সাথে তাঁদের পিতা-মাতাকে (আলী ও ফাতেমা) কে ভালোবাসবে সে কিয়ামত দিবসে আমার সাথেই থাকবে”।
[সূত্রঃ জামে আত তিরমিযী, খঃ-৬, পৃঃ-৩৩১, হাঃ-৩৬৭০, (ইঃ, সঃ); তিরমিযী, আল-জামেউস সহীহ্, খঃ-৫, পৃঃ-৬৪১, হাঃ-৩৭৩৩; আহমদ ইবনে হাম্বাল, আল মুসনাদ, খঃ-১, পৃঃ-৭৭, হাঃ-৫৭৬; আহম্মদ ইবনে হাম্বাল-ফাযায়িলুস সাহাবা, খঃ-২, পৃঃ-৬৯৩, হাঃ-১১৮৫; তাবরানী-আল মু’জামুল কবির, খঃ-৩, পৃঃ-৫০, হাঃ-২৬৫৪]।
________
★হযরত ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) লিখেনঃ
قال يحيـى بن عبد الملك بن أبـي غنية أحد الثقات، ثنا نوفل بن أبـي عقرب ثقة قال: كنت عند عمر بن عبد العزيز فذكر رجل يزيد بن معاوية، فقال: قال أمير المؤمنين يزيد، فقال عمر: تقول أمير المؤمنين يزيد، وأمر به فضرب عشرين سوطاً “
অর্থাৎঃ ইয়াহইয়া ইবনে আব্দিল মুলক্ বিন আবি গানিয়্যা যিনি ’সিকা (নির্ভরযোগ্য) বর্ণনাকারীদের একজন’, তিনি ‘সিকা’ বর্ণনাকারী নওফল বিন আবি আকরাব থেকে শুনেছেনঃ একবার খলীফা উমর ইবনে আবদিল আযীয (২য় উমর)-এর দরবারে মানুষেরা এয়াযীদ ইবনে মু’আবিয়া সম্পর্কে আলাপ করছিলেন। ওই সময় এক লোক এয়াযীদকে ‘আমীরুল মো’মেনীন’ (ঈমানদারদের শাসক) খেতাবে সম্বোধন করে। এটি শুনে খলীফা ২য় উমর (রাগান্বিত হয়ে) তাকে বলেন,
“তুমি এয়াযীদকে আমীরুল মো’মেনীন ডেকেছ?”
অতঃপর তিনি ওই লোককে ২০টি দোররা মারার হুকুম দেন।
[সূত্রঃ ইমাম আসকালানী ‘তাহযিবুত্ তাহযিব’ খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩১৩।]
★এজিদকে আমীর বলার শাস্তিঃ
যাহাবী আরো লিখেছেন,
عن نوفل بن أبي الفرات ، قال : كنت عند عمر بن عبد العزيز فقال رجل : قال أمير المؤمنين يزيد ، فأمر به فضرب عشرين سوطا.
অর্থাৎঃ ‘নওফাল বিন ফুরাত বলেন, আমি উমর ইবন আবদুল আযিযের সাথে ছিলাম । তখন এক ব্যক্তি এজিদের ব্যাপারে বললো, ‘আমিরুল মুমিনিন ইয়াযিদ।’ এটি শুনে উমর ইবন আবদুল আযিয সে লোককে বিশটি চাবুক মারতে আদেশ দিলেন।’
[সূত্রঃ যাহাবী রচিত সিয়ারু আলামিন নুবালা, খ- ৪, পৃ- ৩৯।]
___________
মহান রব আমাদেরকে বাম-লীগ ও নাছেবী- খারেজীসহ এজিদের বর্তমান সকল প্রেতাত্মাদের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করুন।
__________
____________
“শাহ্ আস্ত হুসাইন, বাদশাহ্ আস্ত হুসাইন,
দ্বীন আস্ত হুসাইন, দ্বীন পানাহ্ আস্ত হুসাইন,
ছার দাদ, না দাদ দাস্ত, দার দাস্তে ইয়াজিদ,
হাক্কা কে বিনায়ে লা ইলা আস্ত হোসাইন”
Shah Ast Hussain, Badshah Ast Hussain ,
Deen Ast Hussain, Deen Panah Ast Hussain ,
Sar Dad, Na Dad Dast, Dar Dast-E-Yazeed ,
Haqaa Key Binaey La Ila Ast Hussain
“আধ্যাত্বিক জগতের সম্রাট হলেন হোসাইন,
বাদশাহ হলেন হোসাইন, ধর্ম হলেন হোসাইন, ধর্মের আশ্রয় দাতা হলেন হোসাইন,
দিলেন মাথা, না দিলেন হাত ইয়াযীদের হাতে,
সত্য তো ইহাই যে, লা-ইলাহার সমস্ত স্তম্ভ হলেন হোসাইন”
- গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রহঃ)