নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তো কখনও গুনাহর ইচ্ছাও করেননি
আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন –
اِنَّا فَتَحْنَالَكَ فَتْحًا مُّبِيْنًا- لِّيَغْفِرُ لَكَ اللهُ مَاتَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَاتَأَخَّرَ-
তরজমা: নিশ্চয় আমি আপনার জন্য সুষ্পষ্ট বিজয় দান করেছি, যাতে আল্লাহ্ আপনার কারণে ক্ষমা করে দেন আপনার পূর্ববর্তীদের ও আপনার পরবর্তীদের গুনাহ্ . . .। [সূরা ফাত্হ: আয়াত- ১-২, কান্যুল ঈমান]
এ আয়াত শরীফও হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর প্রশংসা সমষ্টি। এর শানে নুযূল এযে, একদা হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম স্বপ্নে দেখেছিলেন যে, তিনি তাঁর সাহাবীদের সাথে নিয়ে নিরাপদে মক্কায় প্রবেশ করেছেন, কা’বা শরীফের চাবি নিয়েছেন, তাওয়াফ করেছেন, ওমরাহ্ করেছেন। তিনি সাহাবীগণকে স্বপ্নের সংবাদ দিলেন। সবাই খুশী হলেন। তারপর হুযূর-ই আকরাম ওমরাহ্ করার ইচ্ছা করলেন। সুতরাং তিনি এক হাজার চারশ’ সাহাবীকে সাথে নিয়ে ৬ষ্ঠ হিজরীর ১ যিলক্বদ রওনা হলেন। মক্কা মুর্কারামার পথে যুল হুলায়ফায় ইহরাম বাঁধলেন। যখন ‘আসফান নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন খবর এলো যে, মক্কার কাফিরগণ যুদ্ধ করার জন্য প্রচুর যুদ্ধ সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুত।
যখন মুসলমানগণ হুদায়বিয়াহ্ নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন মুসলমানদের দিক থেকে কয়েকজনকে মক্কার কাফিরদের নিকট প্রেরণ করা হলো। তাঁরা মক্কার কাফিরদেরকে বললেন, ‘‘হুযূর সাইয়্যেদে আলম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ওমরাহ্ করার জন্য তাশরীফ এনেছেন। যুদ্ধের ইচ্ছা তাঁর নেই। ‘‘কিন্তু মক্কার কাফিরগণ তা বিশ্বাস করলো না। শেষ পর্যন্ত তারা ওরওয়াহ্ ইবনে মাস‘ঊদ সাক্বাফীকে অবস্থাদি দেখার জন্য হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর নিকট পাঠালো। ওরওয়াহ্ এসে হুযূর-ই আকরামের প্রতি সাহাবা-ই কেরামের আদব প্রদর্শন ও হুযূর মোস্তফার পবিত্র মজলিসের দৃশ্য দেখে হতভম্ভ হয়ে গেলো, ওরওয়াহ্ দেখলো- হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম যখন হাত মুবারক ধুতেন, তখন সাহাবা-ই কেরাম ওই হুযূর-ই আকরামের ওই ব্যবহৃত পানি আহরণের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছিলেন। যদি কখনো হুযূর-ই আকরাম থুথু ফেলতেন, তখন তাও আহরণ করার জন্য সাহাবা-ই কেরাম প্রতিযোগিতা মূলকভাবে চেষ্টা করছিলেন। যিনি তা পেয়ে যেতেন, তিনি তা বরকতের জন্য চেহারা ও শরীরে মালিশ করে নিতেন। হুযূর-ই আকরামের শরীর মুবারক থেকে কোন লোম শরীফ ঝরে পড়তেই তা সাহাবাই কেরাম অতি আদব সহকারে নিয়ে সংরক্ষণ করছিলেন এবং সেটাকে নিজের প্রাণের চেয়েও বেশী প্রিয় হিসেবে রেখে দিচ্ছিলেন। যখন হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম কথা বলতেন, তখন সবাই নিশ্চুপ হয়ে যেতেন। আর কেউ ওই পবিত্র মজলিসে চোখ উপরের দিকে তুলে দেখতেন না। তা ছিলো যেন এক জ্ঞান ও প্রজ্ঞা (বিজ্ঞান) এবং আদব, গাম্ভীর্য ও সম্ভ্রমের মজলিস। অথবা এভাবে বলুন, ‘যেন যমীনের উপরে ‘ক্বুদসী’ (পবিত্রাত্মা) নেমে এসেছেন।
ওরওয়াহ্ ফিরে গিয়ে এসব ঘটনা পূর্ণাঙ্গভাবে মক্কার কাফিরদেরকে বললো। আরো বললো, ‘‘আমি বড় থেকে বড়তর বাদশাহ্র দরবার দেখেছি, কিন্তু যেমন (হযরত) মুহাম্মদ (রাসূলুল্লাহ্)-এর মুক্তাবর্ষী দরবার দেখেছি, তেমন দরবার না আজ পর্যন্ত দেখেছি, না শুনেছি। কাজেই তোমরা তাঁর বিরুদ্ধে গিয়ে সফলকাম হতে পারবে না।
ক্বোরাঈশ বংশীয়রা বললো, ‘‘এটা বলো না, আমরা এ বছর তাঁকে ফিরিয়ে দেবো। তিনি আগামী বছর আসবেন।’’ যেসব সাহাবী হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর পক্ষ থেকে আলাপ-আলোচনার জন্য গিয়ে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে হযরত ওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুও ছিলেন। তিনি দশজন সাহাবীকে সাথে নিয়ে মক্কাবাসীদের নিকট গিয়েছিলেন। তাঁরা মক্কাবাসীদেরকে বুঝালেন। আর বললেন, ‘‘তোমরা হুযূর-ই আকরাম আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালামকে ওমরাহ্ করতে বাধা দিওনা।’’ কিন্তু তারা জেদ ছাড়লো না। মক্কা মুর্কারামায় হযরত ওসমানকে তিন দিন পর্যন্ত রাখা হলো। মক্কার কাফিরগণ তাঁর সমীপে আরয করলো, ‘‘আপনি চাইলে খানা-ই কা’বার তাওয়াফ করতে পারবেন।’’ কিন্তু হযরত ওসমান বললেন, ‘‘আমার দ্বারা এটা হতে পারবে না যে, হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর পূর্বে তাওয়াফ করে নেবো!’’
এদিকে মুসলমানদের মধ্যে খবর এলো যে, হযরত ওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে মক্কার কাফিরগণ শহীদ করে ফেলেছে। এ খবর আসলে হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম সমস্ত মুসলমান থেকে এমর্মে বায়‘আত নিলেন যে, ‘যদি যুদ্ধ করতে হয়, তবে কেউ যেন তা থেকে বিরত না থাকে।’ এ বায়‘আতকে ‘বায়‘আত-ই রিদওয়ান’ বলা হয়, যা এক কাঁটাযুক্ত গাছের নিচে সম্পন্ন হয়েছিলো। এ ঘটনার বিবরণ এ সূরার শেষভাগে এসেছে।
শেষ পর্যন্ত এ মর্মে সন্ধি হলো যে, এ বছর হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম ফিরে যাবেন এবং পরবর্তী বছর তাশরীফ এনে ওমরাহ্ পালন করবেন। যখন সন্ধিপত্র লিপিবদ্ধ হলো, তখন এ আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে। আর ইরশাদ হয়েছে, ‘‘হে মাহবূব! আমি আপনাকে বিজয় দিয়ে দিয়েছি। কেননা, এ সন্ধি মক্কা বিজয়ের মাধ্যম হয়ে গেছে। আর অনেক বিজয় এর পর অর্জিত হয়েছে। এ হলো এ আয়াতের শানে নুযূল (অবতরণের) প্রেক্ষাপট। এখন এ’তে দু’টি বিষয় অত্যন্ত লক্ষ্যণীয়: প্রথমত, ‘বিজয়’ মানে কি? দ্বিতীয়ত এযে, لِيَغْفِرَلَكَ اللهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ- -এর মর্মার্থ কি?
‘তাফসীর-ই রূহুল বয়ান’ প্রণেতা মহোদায় ‘ফাত্হ’ (বিজয়)-এর কয়েকটা ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন- প্রথমত, এখানে ‘ফাত্হ’ (বিজয়) মানে ‘ফাত্হে মক্কা’ (মক্কা বিজয়)। কিন্তু এটা বাহ্যত সংঘটিত ঘটনার বিপরীত মনে হচ্ছে। কেননা, এখনো তো মক্কাবাসীরা ওমরাহ্ও করতে দেয়নি এবং মুসলমানদেরকে ফিরে যেতে হলো। আর فَتَحْنَا অতীতকাল বাচক ক্রিয়াপদ, যার অর্থ হয়- ‘আমি বিজয় দিয়ে দিয়েছি।’ এর জবাবে বলা যাবে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি হয়ে যাওয়া-ই হচ্ছে ‘বিজয়’। কারণ, মক্কার কাফিরগণ চেষ্টা করেছিলো যেন সন্ধি না হয়। আর হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর ইচ্ছা ছিলো সন্ধি হয়ে যাক। সুতরাং কাফিরগণ যা চেয়েছিলো তা হয়নি, কিন্তু আল্লাহ্র হাবীব আল্লায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম যা চেয়েছিলেন, তা-ই হয়েছে। এটাই তো বিজয়।
অথবা, এর জবাবে বলা যাবে- এ সন্ধি বিজয়ের মাধ্যম (কারণ) হয়েছিলো। এজন্য এটাকে রূপকভাবে বিজয় বলা হয়েছে।
অথবা, যেহেতু এখন বিজয় নিশ্চিত হয়েছিলো, সেহেতু সেটাকে বিজয় বলা হয়েছে। কেননা, আরবের লোকেরা নিশ্চিত বিষয়কে অতীতকাল বাচক ক্রিয়া (শব্দ) দ্বারা বর্ণনা করেন। সুতরাং এখানেও অতীতকাল বাচক ক্রিয়া বলা হয়েছে।
অথবা, এ জন্য যে, এ সন্ধির কারণে কাফিরগণ মুসলমানের সাথে মেলামেশা করতে থাকে। আর এ মেলামেশার সুবাদে অনেক লোক ওই বছরই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।
অথবা, ‘ফাত্হ’ মানে খুলে দেওয়া। সুতরাং আয়াতের অর্থ হলো- হে মাহবূব! (আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম) আমি আপনার জন্য দরজা খুলে দিয়েছি।
এ অর্থও হতে পারে যে, প্রথমে ইরশাদ হয়েছে- عِنْدَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَا اِلَّا هُوَ-
অর্থাৎ: গায়বের চাবিগুচ্ছ মহান রবের নিকট রয়েছে, ওইগুলো তিনি ব্যতীত আর কেউ জানে না। এতদিন প্রশ্ন ছিলো- এসব চাবি দ্বারা কারো জন্য গায়বের ভাণ্ডারের দরজা খুলেছেন কি না? এখানে ইরশাদ করেছেন- اِنَّا فَتَحْنَا لَكَ (আমি, হে মাহবূব! নিশ্চয় আপনার জন্য খুলে দিয়েছি।)
বাকী রইলো দ্বিতীয় আলোচনা। তা হচ্ছে ذَنْبِكَ (আপনার গুনাহ্)। এটার মর্মার্থ কি? সমস্ত মুসলমানের সর্বসম্মত আক্বীদা হচ্ছে- সম্মানিত নবীগণ মা’সূম (সমস্ত গুনাহ্ থেকে পবিত্র, নিষ্পাপ)। আর ‘তাফসীরাত-ই আহমদিয়া’ এ আয়াত لَايَنَالُ عَهْدِى الظَّالِمِيْنَ -এর ব্যাখ্যায় লিখেছেন- ‘আমাদের হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম না নুবূয়ত প্রকাশের পূর্বে, না নুবূয়ত প্রকাশের পর, একটি মাত্র ক্ষুদ্র মুহূর্তের জন্য গুনাহ্র ইচ্ছাটুকুও করেননি। এতদসত্ত্বেও আয়াতের অর্থ কি? এ কারণে মুহাদ্দিসগণ ও মুফাস্সিরগণ এ আয়াতেরও অনেক ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
‘মাদারিজুন্নুবূয়ত’ (শায়খ মুহাক্বক্বিক্ব-ই দেহলভী) বলেছেন, এ আয়াতে مَا تَقَدَّمَ মানে হযরত আদমের ভুল-ত্র“টিগুলো আর مَا تَأَخَّرَ মানে উম্মতের গুনাহ্ ক্ষমা করে দিয়েছেন। সুতরাং ‘রূহুল বয়ান’ প্রণেতা মহোদয় এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ‘‘হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর ওসীলা নিয়ে দো‘আ করলে তা কবূল হয়েছে। কোন কোন সম্মানিত বিজ্ঞ ব্যক্তি, একথাও বলেছেন, ‘এখানে খাত্বা-ই ইজতিহাদী; (ইজতিহাদগত ত্র“টি) বুঝানো হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, يَغْفِرُ মানে يَعْصِمُ , অর্থাৎ আল্লাহ্ তা‘আলা আপনাকে বিগত সময়ও গুনাহ্ থেকে মুক্ত (নিরাপদ) রেখেছেন, আগামীতেও আপনাকে সংরক্ষিত রাখবেন। অর্থাৎ আপনি গুনাহ থেকে নিরাপদ (মুক্ত-পবিত্র)।
কেউ কেউ বলেছেন, উম্মতের গুনাহকে হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর শাফা‘আতের দামনের দিকে সম্পৃক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আর সর্বদা উম্মতদের গুনাহ্ সম্মানিত নবীগণের বদান্যতার দিকে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে।
অর্থাৎ: গুনাহ্ ও অপরাধ কখনো গুনাহ্গারের দিকে সম্পৃক্ত হয়ে, কখনো ক্ষমার দায়িত্বগ্রহণকারীর দিকে। যেমন- মুক্কাদ্দমাকে অপরাধীও বলে ‘আমার মুকাদ্দমা’ আর উকিল এবং জজ সাহেবও বলেন, ‘আমার মুক্কাদ্দমা।’ কিন্তু অর্থ হয় ভিন্ন ভিন্ন। অপরাধীর মুকাদ্দমা এ অর্থে যে, অপরাধী তাতে গ্রেফতার হয়, আর উকিল ও জজ সাহেবের মুকাদ্দমা এ অর্থে যে, তাঁরা সেটার (যথাক্রমে উপস্থাপন ও ফয়সালা বা রায় প্রদানের) যিম্মাদার (দায়িত্ব প্রাপ্ত)। সুতরাং গুনাহ্গারদের গুনাহ্ যাতে তারা গ্রেফতার হয়, হুযূর-ই আকরামের বদান্যতার দিকে সম্পৃক্ত। তাও এ অর্থে যে, তিনি তাদের পক্ষে সুপারিশ করার দায়িত্ব নিয়েছেন- দয়া পরবশ হয়ে।
অথবা, ذَنْبِكَ মানে ওই গুনাহ্, যেগুলোকে হুযূর-ই আকরাম গুনাহ্ সাব্যস্ত করেছেন। কেননা, যদি হুযূর-ই আকরাম তাশরীফ না আনতেন, তবে কোন কাজ গুনাহ্ হিসেবে চিহ্নিত হতো না। অর্থাৎ তাঁর বর্ণিত গুনাহ্। (রূহুল বয়ান) যেমন- বলা হয়- ‘চুরি ও যিনা ইত্যাদি আল্লাহর হারাম কৃত গুনাহ। কবির ভাষায়-
كركے تمهار ے گناه مانںইত تمهارى پناه- تم كهو دامن ميں ﺁتم په كروڑوں درود-
অর্থ: (বান্দা) আপনার গুনাহ্ করে আপনারই আশ্রয় প্রার্থনা করে, আর আপনি বলেন, ‘আমার আচঁলে এসে যাও! আপনার দরবারে জানাই কোটি কোটি দুরূদ।
এজন্য কোন কোন সম্মানিত বিজ্ঞ ব্যক্তি বলেন, হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম গুনাহ্ (ভুল) করেন নি, বরং ভুল-ত্র“টির কারণ ওই খবীস (দুষ্ট) মানুষই হয়েছে, যারা হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম-এর পৃষ্ঠ মুবারকে ছিলো। আল্লাহ্ এটা চাননি যে, এ খবীসগণ জান্নাতে পয়দা হোক। সুতরাং বলা হলো, ‘‘হে আদম! আপনি যমীনে গিয়ে তাদেরকে ফেলে দিয়ে আসুন! তারপর জান্নাতে তাশরীফ নিয়ে আসুন!’’
[সূত্র: রূহুল বয়ান: এ আয়াতের ব্যাখ্যায়, মিরক্বাত শরহে মিশকাত]
‘নবীগণ (আলায়হিমুস্ সলাম) নিষ্পাপ’’-এর পূর্ণাঙ্গ গবেষণা লব্ধ বিবরণ, আমার (মুফতি আহমদ ইয়ার খান) পুস্তিকা ‘ক্বহরে কিবরিয়া বর মুনকিরীন-ই ‘আস্মতে আম্বিয়া’য় দেখুন। এ ধরনের সমস্ত আয়াত, যেগুলো থেকে বে-দ্বীনগণ (ভ্রান্ত আক্বীদা পোষণকারীগণ) দলীল গ্রহণ করে, সব ক’টির ব্যাখ্যাগুলো ও সপ্রমাণ খণ্ডন তাতে অতি মজার পদ্ধতিতে বর্ণনা করা হয়েছে।
সুক্ষ্ম বিষয়
‘তাফসীর-ই রূহুল বয়ান’ প্রণেতা মহোদয় এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, হুযূর আলায়হিস্ সালামকে তিনটি বিজয় দান করা হয়েছে- ১. ‘নিকটবর্তী বিজয়’, তা হচ্ছে- হৃদয়ের দরজা খুলে দেওয়া, এবং সেটাকে রহস্যাদি সম্পর্কে অবহিত করা, ২. ‘সুস্পষ্ট বিজয়’, তা হচ্ছে- হুযূর মোস্তফার রূহ মুবারকের দরজা খুলে দেওয়া এবং ৩. ‘নিঃশর্ত বিজয়’। তা হচ্ছে নিজের সাহায্যের দরজা হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর জন্য খুলে দেওয়া। এর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে- اِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهُ والْفَتْحُ এর মধ্যে।
সাল্লাল্লাহু তা‘আলাহি ওয়া আলা আ-লিহী ওয়া আস্হাবিহী ওয়া বা-রাকা ওয়াসাল্লাম।