بسم الله الرحمن الرحيم
حَتَّى إِذَا رَأَوْا مَا يُوعَدُونَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ أَضْعَفُ نَاصِرًا وَأَقَلُّ عَدَدًا (২৪) قُلْ إِنْ أَدْرِي أَقَرِيبٌ مَا تُوعَدُونَ أَمْ يَجْعَلُ لَهُ رَبِّي أَمَدًا (২৫) عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَى غَيْبِهِ أَحَدًا (২৬) إِلَّا مَنِ ارْتَضَى مِنْ رَسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا (২৭) لِيَعْلَمَ أَنْ قَدْ أَبْلَغُوا رِسَالَاتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَى كُلَّ شَيْءٍ عَدَدًا (২৮)
তরজমা: তরজমা : (মহান আল্লাহ্ এরশাদ করেছেন) এমন কি যখন তারা প্রতিশ্রুত শাস্তি দেখতে পাবে, তখন তারা জানতে পারবে, কার সাহায্যকারী দুর্বল এবং কার সংখ্যা কম, (ওহে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপনি বলুন, আমি জানি না তা কি সন্নিকটে যা তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে, না আমার প্রতিপালক এর জন্য কোন অবকাশ দেবেন। (তিনি) অদৃশ্যের জ্ঞানী, আপন অদৃশ্যের বিষয় তিনি কারো কাছে প্রকাশ করেন না। আপন মনোনীত রাসূলগণ ব্যতীত। তখন তিনি তাদের অগ্রে-পশ্চাতে প্রহরী নিয়োজিত করে দেন। যাতে (মহান আল্লাহ প্রকাশ্যভাবে) জেনে নেন যে, তাঁরা তাঁদের প্রতিপালকের পয়গাম পৌছিয়ে দিয়েছেন এবং যা কিছু তাদের নিকট আছে সবই তাঁর (অর্থাৎ আল্লাহর) জ্ঞানে রয়েছে এবং তিনি সব কিছুর সংখ্যার হিসাব রাখেন। [সূরাহ্ আল-জি¦ন,২৪-২৮নম্বর আয়াত]।
আনুষঙ্গিক আলোচনা
حَتَّى إِذَا رَأَوْا مَا … وَأَقَلُّ عَدَدًا
পবিত্র কোরআনে কারীমের বিভিন্ন সূরায় অসংখ্য আয়াতে মহান আল্লাহ এরশাদ করেছেন- দুনিয়া-আখেরাত উভয় জাহানে সর্বাবস্থায় মুমিনের সাহায্যকারী অসংখ্য-অগণ্য। যথা সূরাহ্ মায়েদাহ এর ৫৫ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে-إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا অর্থাৎ (হে মু‘মিনগণ!) নিশ্চয় তোমাদের বন্ধু (অর্থাৎ সাহায্য-সহায়তাকারী) স্বয়ং আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনগণ।
সূরা ‘‘শুয়ারায়” ৮৮-৮৯ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ – إِلَّا مَنْ أَتَى اللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ অর্থাৎ (কেয়ামত দিবসে) না ধন-সম্পদ উপকারে আসবে এবং না সন্তান-সন্ততি। কিন্তু সেই ব্যক্তি (উপকারে আসবে) যে আল্লাহর সম্মুখে হাযির হয়েছে বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে। সূরা তাহরীম এর ৪নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَالْمَلَائِكَةُ بَعْدَ ذَلِكَ ظَهِيرٌ অর্থাৎ এর পর ফেরেশতাকুল ও সাহায্যকারী।
উদ্ধৃত আয়াতসমূহের মর্মবাণীর আলোকে প্রতিভাত হয় যে, মু‘মিনগণের সাহায্যকারী স্বয়ং আল্লাহ , তাঁর প্রিয়তম রাসূল এবং অলি-গাউস-কুতুব-আবদালসহ সর্বস্তরের সৎকর্মশীল মু‘মিনগণ।
পক্ষান্তরে কুরআনে কারীমের বিভিন্ন সুরার অসংখ্য আয়াতে সুস্পষ্টরূপে এরশাদ হয়েছে- কাফির-মুশরিক-বেইমানগণের জন্য কোন অভিভাবক, সাহায্যকারী কিংবা সুপারিশ-শাফায়াতকারী নেই। সূরাহ্ বাকারায় ১০৭ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে – وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرঅর্থাৎ (হে কাফির-মুশরিকগণ!) তোমাদের জন্য আল্লাহর মোকাবেলায় কোন বন্ধু কিংবা সাহায্যকারী নেই। সূরা শুরা এর ৮ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে –
وَالظَّالِمُونَ مَا لَهُمْ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ অর্থাৎ আর জালিমগণ অর্থাৎ (কাফির-মুশরিকগণ) না আছে তাদের জন্য কোন বন্ধু না আছে কোনরূপ সাহায্যকারী। সূরা শুআরার ৪৬ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَمَا كَانَ لَهُمْ مِنْ أَوْلِيَاءَ يَنْصُرُونَهُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ অর্থাৎ আর না আছে তাদের জন্য (কাফির-মুশরিকদের জন্য) এমন বন্ধু কিংবা অভিভাবক যারা তাদেরকে আল্লাহ্র মোকাবেলায় সাহায্য করবে।
সূরা তাওবা এর ৭৪ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَمَا لَهُمْ فِي الْأَرْضِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ অর্থাৎ আর তাদের জন্য (অর্থাৎ কাফির মুশরিকদের জন্য) পৃথিবীতে ও কোন বন্ধু কিংবা সাহায্যকারী নেই। (যারা আল্লাহর আযাব-গজব হতে তাদের রক্ষা করবে।)
উপরিউক্ত আয়াতসমূহের মর্মবাণীর আলোকে প্রমাণিত হয় যে, বেঈমান বেদ্বীনগণের জন্য আল্লাহর আযাব হতে রক্ষাকারী কোন বন্ধু কিংবা সাহায্যকারী নেই।
অতএব আলোচ্য আয়াতে মহান আল্লাহ উপরিউক্ত বিষয়টিকে আরো খোলাসা করে বিবৃত করেছেন- এমনকি যখন তারা অর্থাৎ কাফের-মুশরিকদের স্বচক্ষে প্রতিশ্রুত আযাব প্রত্যক্ষ করবে। তখন তারা জানতে পারবে কার সাহায্যকারী দুর্বল এবং কার সংখ্যা কম। অর্থাৎ কাফের-মুশরিকরা কেয়ামতের ময়দানে স্বচক্ষে লক্ষ করবে আল্লাহর দরবারে মু‘মিন নর নারীর জন্য সাহায্য-শাফায়াতকারী অসংখ্য। আর কাফের-মুশরিকদের জন্য আল্লাহর আযাব রক্ষাকারী কোন বন্ধু কিংবা সাহায্য-শাফায়াতকারী নেই। নাউজুবিল্লাহ্
حَتَّى إِذَا رَأَوْا مَا … وَأَقَلُّ عَدَدًا
পবিত্র কোরআনে কারীমের বিভিন্ন সূরায় অসংখ্য আয়াতে মহান আল্লাহ এরশাদ করেছেন- দুনিয়া-আখেরাত উভয় জাহানে সর্বাবস্থায় মুমিনের সাহায্যকারী অসংখ্য-অগণ্য। যথা সূরাহ্ মায়েদাহ এর ৫৫ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে-إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا অর্থাৎ (হে মু‘মিনগণ!) নিশ্চয় তোমাদের বন্ধু (অর্থাৎ সাহায্য-সহায়তাকারী) স্বয়ং আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনগণ।
সূরা ‘‘শুয়ারায়” ৮৮-৮৯ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ – إِلَّا مَنْ أَتَى اللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ অর্থাৎ (কেয়ামত দিবসে) না ধন-সম্পদ উপকারে আসবে এবং না সন্তান-সন্ততি। কিন্তু সেই ব্যক্তি (উপকারে আসবে) যে আল্লাহর সম্মুখে হাযির হয়েছে বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে। সূরা তাহরীম এর ৪নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَالْمَلَائِكَةُ بَعْدَ ذَلِكَ ظَهِيرٌ অর্থাৎ এর পর ফেরেশতাকুল ও সাহায্যকারী।
উদ্ধৃত আয়াতসমূহের মর্মবাণীর আলোকে প্রতিভাত হয় যে, মু‘মিনগণের সাহায্যকারী স্বয়ং আল্লাহ , তাঁর প্রিয়তম রাসূল এবং অলি-গাউস-কুতুব-আবদালসহ সর্বস্তরের সৎকর্মশীল মু‘মিনগণ।
পক্ষান্তরে কুরআনে কারীমের বিভিন্ন সুরার অসংখ্য আয়াতে সুস্পষ্টরূপে এরশাদ হয়েছে- কাফির-মুশরিক-বেইমানগণের জন্য কোন অভিভাবক, সাহায্যকারী কিংবা সুপারিশ-শাফায়াতকারী নেই। সূরাহ্ বাকারায় ১০৭ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে – وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرঅর্থাৎ (হে কাফির-মুশরিকগণ!) তোমাদের জন্য আল্লাহর মোকাবেলায় কোন বন্ধু কিংবা সাহায্যকারী নেই। সূরা শুরা এর ৮ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে –
وَالظَّالِمُونَ مَا لَهُمْ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ অর্থাৎ আর জালিমগণ অর্থাৎ (কাফির-মুশরিকগণ) না আছে তাদের জন্য কোন বন্ধু না আছে কোনরূপ সাহায্যকারী। সূরা শুআরার ৪৬ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَمَا كَانَ لَهُمْ مِنْ أَوْلِيَاءَ يَنْصُرُونَهُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ অর্থাৎ আর না আছে তাদের জন্য (কাফির-মুশরিকদের জন্য) এমন বন্ধু কিংবা অভিভাবক যারা তাদেরকে আল্লাহ্র মোকাবেলায় সাহায্য করবে।
সূরা তাওবা এর ৭৪ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَمَا لَهُمْ فِي الْأَرْضِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ অর্থাৎ আর তাদের জন্য (অর্থাৎ কাফির মুশরিকদের জন্য) পৃথিবীতে ও কোন বন্ধু কিংবা সাহায্যকারী নেই। (যারা আল্লাহর আযাব-গজব হতে তাদের রক্ষা করবে।)
উপরিউক্ত আয়াতসমূহের মর্মবাণীর আলোকে প্রমাণিত হয় যে, বেঈমান বেদ্বীনগণের জন্য আল্লাহর আযাব হতে রক্ষাকারী কোন বন্ধু কিংবা সাহায্যকারী নেই।
অতএব আলোচ্য আয়াতে মহান আল্লাহ উপরিউক্ত বিষয়টিকে আরো খোলাসা করে বিবৃত করেছেন- এমনকি যখন তারা অর্থাৎ কাফের-মুশরিকদের স্বচক্ষে প্রতিশ্রুত আযাব প্রত্যক্ষ করবে। তখন তারা জানতে পারবে কার সাহায্যকারী দুর্বল এবং কার সংখ্যা কম। অর্থাৎ কাফের-মুশরিকরা কেয়ামতের ময়দানে স্বচক্ষে লক্ষ করবে আল্লাহর দরবারে মু‘মিন নর নারীর জন্য সাহায্য-শাফায়াতকারী অসংখ্য। আর কাফের-মুশরিকদের জন্য আল্লাহর আযাব রক্ষাকারী কোন বন্ধু কিংবা সাহায্য-শাফায়াতকারী নেই। নাউজুবিল্লাহ্
عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ… إِلَّا مَنِ ارْتَضَى
উদ্ধৃত আল্লাহর পবিত্র বাণী তিনি অদৃশ্যেও জ্ঞানী। সুতরাং আপন অদৃশ্যের বিষয় তিনি কারো কাছে প্রকাশ করেন না, আপন মনোনীত রাসূলগণ ব্যতীত। এর ব্যাখ্যায় মুফাসসেরিনে কেরাম উল্লেখ করেছেন, আলোচ্য আয়াতসহ কোরআনে কারীমের অসংখ্য আয়াত আর হাদীসে নববী শরীফের অগণিত রেওয়ায়াতের মর্মবাণীর আলোকে দিবালোকের ন্যায় সু¯পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় যে, রাসূলে আকরাম নূরে মুজাসসাম মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইলমে গায়ব তথা অদৃশ্য বিষয়াবলীর জ্ঞান ভাণ্ডার দান করা হয়েছে। তিনি মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহে ইলমে গায়ব জানতেন। যথা:
প্রথমত, আলোচ্য আয়াতের মর্মবাণী “আল্লাহ্ অদৃশ্যের জ্ঞানী। সুতরাং আপন অদৃশ্য বিষয় তিনি কারো কাছে প্রকাশ করেন না, আপন মনোনীত রাসূলগণ ব্যতীত। এর আলোকে নিশ্চিতরূপে প্রতিভাত হয় যে, মহান আল্লাহ স্বীয় অদৃশ্য বিষয়াবলীর জ্ঞান মনোনীত রাসূলগণ এর নিকট প্রকাশ করেন। অদৃশ্য বিষয়ের এই বিশেষ জ্ঞান সর্ব সাধারনের নিকট প্রকাশ করেন না। অতএব সৃষ্টিকুল সরদার নবীকুল শিরোমণি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই ইলমে গায়ব এর অধিকারী।
দ্বিতীয়ত, সূরাহ আলে ইমরান এর ১৭৯ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُطْلِعَكُمْ عَلَى الْغَيْبِ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَجْتَبِي مِنْ رُسُلِهِ مَنْ يَشَاءُ অর্থাৎ এবং আল্লাহর শান এ নয় যে, হে সর্বসাধারণ! তোমাদেরকে অদৃশ্যের জ্ঞান দিয়ে দেবেন। তবে আল্লাহ নির্বাচিত করে নেন তাঁর রাসূলগণের মধ্য থেকে যাকে চান।’ (ইলমে গায়ব দানের জন্য) সুতরাং এর দ্বারাও প্রমাণিত হয- রাসূলগণের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী আহমদ মুজতবা মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যতম উল্লেখযোগ্য মু‘জিযা হলো ইলমে গায়ব এর অধিকারী হওয়া।
তৃতীয়ত, সূরা ‘‘তাকভীর”এর ২৪ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍঅর্থাৎ ‘এবং এ নবী অদৃশ্য বিষয় বর্ণনা করার ব্যাপারে কৃপণ নন’। সুতরাং এ আয়াতের আলোকেও প্রমাণিত হয় রাসূলে খোদা হাবীবে কিবরিয়া সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইলমে গায়ব জানেন। আর তা তিনি প্রয়োজনীয় মুহূর্তে প্রকাশ করতে কার্পণ্য করেন না।
চতুর্থত, সূরা ‘‘নিছা”এর ১১৩ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ অর্থাৎ (ও হে নবী!) ‘মহান আল্লাহ আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা কিছু আপনি জানতেন না।’
উপরিউক্ত আয়াতসমূহের মর্মবাণীর আলোকে সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় রাসূলে কারীম রাউফুর রাহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদি-অন্ত, দৃশ্য-অদৃশ্য, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, ক্ষুদ্র-বৃহৎ, জি¦ন-ইনসান-ফেরেশতা, ইহ-পরকাল তথা এক কথায় স্রষ্টা ও সৃষ্টিকুল সম্পর্কিত সকল জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে পাঠানো হয়েছে। তাই এরশাদ হয়েছে হাদীসে পাকে-اعطيت علم الاولين والاخرين অর্থাৎ আমাকে সৃষ্টির শুরু এবং শেষ সম্পর্কিত সকল বিষয়ের জ্ঞানদান করা হয়েছে। (সুবহানাল্লাহ) এ ধরনের অকাট্ট প্রমাণাদি থাকা সত্বেও কেউ যদি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইলমে গায়বকে অস্বীকার করেন তবে তিনি অবশ্যই কুরআন-সুন্নাহকে অস্বীকার-অবিশ^াসকারী হিসাবে গণ্য হবে। নবীজির শান-মান বিন্দু পরিমাণ ক্ষুণ্ন হবে না। আল্লাহ্ সবাইকে হেদায়াত নসীব করুন। আমীন।
উদ্ধৃত আল্লাহর পবিত্র বাণী তিনি অদৃশ্যেও জ্ঞানী। সুতরাং আপন অদৃশ্যের বিষয় তিনি কারো কাছে প্রকাশ করেন না, আপন মনোনীত রাসূলগণ ব্যতীত। এর ব্যাখ্যায় মুফাসসেরিনে কেরাম উল্লেখ করেছেন, আলোচ্য আয়াতসহ কোরআনে কারীমের অসংখ্য আয়াত আর হাদীসে নববী শরীফের অগণিত রেওয়ায়াতের মর্মবাণীর আলোকে দিবালোকের ন্যায় সু¯পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় যে, রাসূলে আকরাম নূরে মুজাসসাম মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইলমে গায়ব তথা অদৃশ্য বিষয়াবলীর জ্ঞান ভাণ্ডার দান করা হয়েছে। তিনি মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহে ইলমে গায়ব জানতেন। যথা:
প্রথমত, আলোচ্য আয়াতের মর্মবাণী “আল্লাহ্ অদৃশ্যের জ্ঞানী। সুতরাং আপন অদৃশ্য বিষয় তিনি কারো কাছে প্রকাশ করেন না, আপন মনোনীত রাসূলগণ ব্যতীত। এর আলোকে নিশ্চিতরূপে প্রতিভাত হয় যে, মহান আল্লাহ স্বীয় অদৃশ্য বিষয়াবলীর জ্ঞান মনোনীত রাসূলগণ এর নিকট প্রকাশ করেন। অদৃশ্য বিষয়ের এই বিশেষ জ্ঞান সর্ব সাধারনের নিকট প্রকাশ করেন না। অতএব সৃষ্টিকুল সরদার নবীকুল শিরোমণি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই ইলমে গায়ব এর অধিকারী।
দ্বিতীয়ত, সূরাহ আলে ইমরান এর ১৭৯ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُطْلِعَكُمْ عَلَى الْغَيْبِ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَجْتَبِي مِنْ رُسُلِهِ مَنْ يَشَاءُ অর্থাৎ এবং আল্লাহর শান এ নয় যে, হে সর্বসাধারণ! তোমাদেরকে অদৃশ্যের জ্ঞান দিয়ে দেবেন। তবে আল্লাহ নির্বাচিত করে নেন তাঁর রাসূলগণের মধ্য থেকে যাকে চান।’ (ইলমে গায়ব দানের জন্য) সুতরাং এর দ্বারাও প্রমাণিত হয- রাসূলগণের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী আহমদ মুজতবা মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যতম উল্লেখযোগ্য মু‘জিযা হলো ইলমে গায়ব এর অধিকারী হওয়া।
তৃতীয়ত, সূরা ‘‘তাকভীর”এর ২৪ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍঅর্থাৎ ‘এবং এ নবী অদৃশ্য বিষয় বর্ণনা করার ব্যাপারে কৃপণ নন’। সুতরাং এ আয়াতের আলোকেও প্রমাণিত হয় রাসূলে খোদা হাবীবে কিবরিয়া সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইলমে গায়ব জানেন। আর তা তিনি প্রয়োজনীয় মুহূর্তে প্রকাশ করতে কার্পণ্য করেন না।
চতুর্থত, সূরা ‘‘নিছা”এর ১১৩ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে- وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ অর্থাৎ (ও হে নবী!) ‘মহান আল্লাহ আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা কিছু আপনি জানতেন না।’
উপরিউক্ত আয়াতসমূহের মর্মবাণীর আলোকে সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় রাসূলে কারীম রাউফুর রাহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদি-অন্ত, দৃশ্য-অদৃশ্য, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, ক্ষুদ্র-বৃহৎ, জি¦ন-ইনসান-ফেরেশতা, ইহ-পরকাল তথা এক কথায় স্রষ্টা ও সৃষ্টিকুল সম্পর্কিত সকল জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে পাঠানো হয়েছে। তাই এরশাদ হয়েছে হাদীসে পাকে-اعطيت علم الاولين والاخرين অর্থাৎ আমাকে সৃষ্টির শুরু এবং শেষ সম্পর্কিত সকল বিষয়ের জ্ঞানদান করা হয়েছে। (সুবহানাল্লাহ) এ ধরনের অকাট্ট প্রমাণাদি থাকা সত্বেও কেউ যদি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইলমে গায়বকে অস্বীকার করেন তবে তিনি অবশ্যই কুরআন-সুন্নাহকে অস্বীকার-অবিশ^াসকারী হিসাবে গণ্য হবে। নবীজির শান-মান বিন্দু পরিমাণ ক্ষুণ্ন হবে না। আল্লাহ্ সবাইকে হেদায়াত নসীব করুন। আমীন।