“হাদিসের নামে জালিয়াতি” বইয়ের ২৮০ পৃষ্ঠায় আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর “রাসুল (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর দাঁত মোবারক থেকে নুর প্রকাশ পেত” এই বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন,এগুলো নাকি মিথ্যা কাহিনী শুধুমাত্র “মা’আরিজুন নবুয়ত” গ্রন্থ ছাড়া আর কোন গ্রন্থে পাওয়া যায় না।

উক্ত জঘন্য বক্তব্যের জবাবঃ★★★★

দলীল নং-১
“হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, রাসুল (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সামনের দন্ত মোবারক প্রশস্ত ছিল।যখন তিনি কথা বলতেন তখন তাঁর দন্ত সমূহ থেকে নূর(আলো) বের হত।

★কঃইমাম বায়হাকীঃদালায়েলুন নবুয়তঃ১/২১৫পৃঃ
★খঃইমাম তিরমিযিঃশামায়েলে তিরমিযিঃ১২পৃঃ,হাদিস নং-১৪
★ইমাম বাগভীঃশরহে সুন্নাহঃ১৩/২২৩পৃঃ,হাদিসঃ৩৬৪৪
★ঘঃখতিব তিবরিযিঃমিশকাতুল মাসাবিহঃ৪/৫১৮পৃঃ,হাদিসঃ৫৭৯৭
★ঙঃইমাম দারেমীঃআস সুনানঃ১/২০৩পৃঃ,হাদিসঃ৫৯
★চঃইমাম সৈয়ুতিঃখাসায়েসুল কোবরাঃ১/১১১পৃঃ,হাদিসঃ২৮৪
★ছঃইমাম আবদুর রাজ্জাকঃআল মুসান্নাফঃ১১/২৬০পৃঃ
★জঃইমাম নাবহানীঃহুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিনঃ৬৬৩পৃঃ
★ঞঃইবনে আসাকিরঃ তারিখে দামেস্কঃ২/৫৭পৃঃ
★টঃইবনে হাজর হায়তামীঃমাযমাউদ যাওয়াইদঃ৮/২৭৯পৃঃ
★ঠঃইমাম তাবরানিঃমু’জামুল আওসাতঃহাদিস নং-৩৫৬৩
★ইবনে কাসিরঃআল বেদায়া ওয়ান নেহায়াঃ৬/২৫পৃঃ
★ইমাম তাবরানিঃমু’জামুল কবীরঃ১১/৪১৬পৃঃ হাদিসঃ১২১৮১
★উমর ইবনে শাবাহ(ওফাত ২৬২হিঃ) :তারিখে মদীনাঃ২/৬১০পৃঃ
★যিয়া মোকাদ্দাসীঃআহাদিসুল মুখতারঃ১৩/৪৮পৃঃ হাদিসঃ৭০-৭১

সনদ পর্যালোচনাঃ
এ হাদিসটি এ সাহাবী হতে দুইটি সূত্রে বর্ণিত আছে।তাবরানির সংকলিত সনদের একজন রাবীর ব্যাপারে হাইতামী তাঁর মাযমাউদ যাওয়াইদ গ্রন্থে বলেনঃ
“হাদিসটি তাবরানী বর্ণনা করেছেন, আর সনদে ‘ আবদুল আজিজ বিন আবি সাবিত’ রাবী রয়েছেন আর তিনি দুর্বল।”
★ইবনে হাজর হাইতামীঃমাযমাউয যাওয়াইদঃ৮/২৭৯পৃঃ,হাদিসঃ১৪০৩১
★ইমাম বায়হাকীঃদালায়েলুন নবুয়তঃ২/১৪৮পৃঃ

কিন্তু সুনানে দারেমী,শামায়েলে তিরমিযি, উমর ইবনে শাবাহ তার তারিখে মদীনায়, যিয়া মোকাদ্দাসীর গ্রন্থে এ রাবী নেই।তাই সনদটি প্রথম সূত্রে দ্বঈফ হলেও দ্বিতীয় অন্য সূত্রে সহীহ।

দলীল নং-২
“হযরত আবু কিরসাপা(রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন,আমি ও আমার মা এবং আমার খালা রাসুল (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট বায়াত গ্রহন করলাম।অতঃপর আমরা যখন ফিরে আসলাম তখন আমার মা ও খালা আমাকে বললেন হে প্রিয় ছেলে! আমরা রাসুল (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মত সুশ্রী,সুভাষী ও নম্রভাষী কাউকে দেখিনি।যখন তিনি কথা বলতেন তখন আমরা তাঁর পবিত্র মুখ মোবারক থেকে নূর বের হতে দেখতাম।

★ইমাম সৈয়ুতিঃখাসায়েসুল কোবরাঃ১/১১১পৃঃ,হাদিসঃ২৮৫
★ইবনে হাজর হাইতামীঃমাযমাউয যাওয়াইদঃ৮/২৭৯পৃঃ,হাদিসঃ১৪০৩২
★ইমাম নাবহানীঃহুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিনঃ৬৬৩পৃঃ
★ইমাম তাবরানীঃমু’জামুল কবীরঃ৩/১৮পৃঃ,হাদিসঃ২৫১৮

দলীল নং-৩
হযরত আবু হুরায়রা(রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, ” নবী করীম (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন হাসতেন,তখন পবিত্র দাঁত সমুহ থেকে নূর বের হত, যা দ্বারা দেয়াল আলোকিত হয়ে যেত।
★ইমাম সৈয়ুতিঃখাসায়েসুল কোবরাঃ১/১৩৬পৃঃ,হাদিসঃ৪০০
★ইমাম বায়হাকীঃদালায়েলুন নবুয়তঃ২/১৪৮পৃঃ
★ইবনে হাজর হাইতামীঃমাযমাউয যাওয়াইদঃ৮/২৭৯পৃঃ
★মোল্লা আলী ক্বারীঃজামিউল ওয়াসায়েলঃ২/১৫পৃঃ
★ ইমাম হালবীঃ সিরাতে হালবিয়্যাহঃ৩/৪৬৮পৃঃ

দলীল নং-৪
হযরত আবু হুরায়রা(রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলে আকরাম (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দাঁড়ি মোবারক কাল এবং সামনের দাঁত মোবারক অত্যন্ত আলোকময় ও সুন্দর ছিল।

★দালায়েলুন নবুয়তঃ১/১২৭পৃঃ
★খাসায়েসুল কোবরাঃ১/১৩৪পৃঃ হাদিসঃ৩৮৭
★বুখারীঃআদাবুল মুফরাদাতঃ১/৩৯৫পৃঃ,হাদিসঃ১১৫
★সিরাতে হালবিয়্যাহঃ৩/৪৬৮পৃঃ

দলীল নং-৫
হযরত হাসান(রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন
“রাসুল (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন রাগান্বিত হতেন মুখ মোবারক ফিরিয়ে নিতেন এবং মন সংকুচিত হয়ে যেত বলে মনে হত।আনন্দিত হলে দৃষ্টি ঝুঁকিয়ে নিতেন, তাঁর বরকতময় হাসি ছিল মুচকি হাঁসি।হাঁসির সময় দাঁত থেকে শিলার মত নূর বের হত বা ঝলমল করত।”

★খাসায়েসুল কোবরাঃ১/১৩৯পৃঃহাদিসঃ৪১৪
★মাযমাউদ যাওয়াইদঃ৮/২৭৮পৃঃ
★শামায়েলে তিরমিযিঃ১/১৩৫পৃঃ,হাদিসঃ২১৬
★দালায়েলুন নবুয়তঃ১/২৮৮পৃঃ
★শুয়াবুল ঈমানঃ৩/২৪পৃঃ,হাদিসঃ১৩৬২
★বাগভী,শরহুস সুন্নাহঃ১৩/২৭২পৃঃ
★আর রাহিকুল মাখতুমঃ১/৪৪৬পৃঃ

দলীল নং-৬
তাবেঈ ইমাম আবু ইসহাক(রহঃ) এর সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, জৈনক ব্যক্তি বারা ইবনে আযাব(রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন,রাসুল (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর চেহারা মোবারক কি তরবারীর মত ছিল? তিনি(উক্ত সাহাবী) জবাবে বললেন, না [রাসুল (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর চেহারা ছিল] চাঁদের মত।” ইমাম তিরমিযি বলেন, উক্ত হাদিসটি হাসান, সহীহ।

★তিরমিযিঃআস সুনানঃকিতাবুল মানাকিবঃ৫/৪৬০পৃঃ,হাদিসঃ৩৫৮৫
★সহীহ বুখারীঃ৪/১৮৮পৃঃ,হাদিসঃ৩৫৫২
★দারেমীঃ১/২০৬পৃঃ,হাদিসঃ৬৫
★সহীহ ইবনে হিব্বানঃ১৪/১৯৮পৃঃ,হাদিসঃ৬২৮৭
★আলবানীঃসহীহুত তিরমিযির ৫/৫৯৮পৃঃ,হাদিসঃ৩৬৩৬ এ বলেন, হাদিসটি সহীহ।

Top