*আবু হানিফা রহঃ সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যতবানী *



حدثني محمد بن رافع وعبد بن حميد قال عبدأخبرنا وقال ابن رافع حدثنا عبد الرزاق أخبرنا معمر عنجعفر الجزري عن يزيد بن الأصم عن أبي هريرة قال قال

رسول الله صلى الله عليه وسلم لو كان الدينُ عند

الثريا لذهبَ به رجلٌ من فارسٍ أو قال من أبناءِ

فارسٍ حتى يتناوَلَه

হযর আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন।যদি দ্বীন সপ্তর্ষিমন্ডলস্হ সুরাইয়া সেতারার কাছে গচ্ছিত থাকে তখনও পারস্যবাসীর এক ব্যক্তি তা অর্জন করে নিবে।



সুত্র:-মুসলিম-কিতাবু ফাদ্বায়েলিস সাহাবা,বাবু ফাদ্বলি ফারিস ৪/১৯৭২,হাদীস নং ২৫৪৬;



আবু হানিফা রহঃ সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যতবানী

এই হাদীসের ব্যখ্যায় ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী শাফেয়ী রহ: ‘তাবয়ীযুস সাহাবা’ কিতাবে ‘তাবশীরুন নাবীয়্যী বিহী’ শিরোনাম অধ্যায়ে বলেন-

اقولُ، وقدْ بُشِّرَ بالاِمامِ أبي حنيفةَ فى الحديثِ

আমি বলি,এই হাদীসে ইমাম আবু হানিফা রহ: সম্পর্কে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে।



পরিশেষে উক্ত কিতাবের ৩১-৩৩ পৃষ্টায় তিনি বলেন, ইমাম আজমের ব্যাপারে এ হাদীসের সুসংবাদ ও মর্যাদা বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য।



ইমাম ইবনে হাজার হায়তামী মক্কী শাফেয়ী (ওফাত ৯৭৩হি:) তার কিতাব খায়রাতুল হিসানের ২৪ পৃষ্টায় “ফিমা ওয়ারাদ মিন তাবশীরিন নাবিয়্যি বিল ইমামে আবি হানিফা রহঃ” অধ্যায়ে বলেন-

নিশ্চয়ই এখানে কোন সন্দেহ নেই যে এই হাদীস থেকে ইমাম আবু হানিফা রহঃ উদ্যেশ্য।কেননা তার যুগে কেউ পারস্যবাসী থেকে তাঁর মত ইলমদারী ও তার ছাত্রদের মত ইলমদারীর জন্ম হয়নি।এ হাদীস নবিজীর মুজিযার বহিঃপ্রকাশ।কেননা তিনি ভবিষ্যতের সংবাদ দিয়েছেন।ফারেস থেকে কোন শহর উদ্যেশ্য নয়; বরং তা দ্বারা অনারব এক জাতী বুঝানে হয়েছে যারা পারস্যবাসী নামে খ্যাত।



ইবনে হাজার মক্কী শাফেয়ী রহঃ এর কথা “অনারব এক জাতী” এ বিষয়ে সহীহ সনদে একটা হাদীস পাওয়া যায়-



নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম বলেন-



الْعَجَمُ يُشْرِكُونَكُم فى دينَكم وانسابِكم،قالوا العجَمُ يا رسولَ اللّٰه؟قال لو كان معلَّقًا بالثُّريَّا لنالَهُ رجالٌ مِنَ العجمِ واَسْعَدُهم به الناسُ

অনারব তোমাদের দ্বীন ও বংশে তোমাদের সাথে শরীক হবে।তারা প্রশ্ন করলো অনারব!ইয়া রাসুলাল্লাহ?নবিজী উত্তরে বললেন যদি ঈমান সপ্তর্ষিমণ্ডলস্হ সুরাইয়া সেতারা চুডায়ও পৌছে যায় তখনও পারস্যবাসী থেকে কিছু ব্যক্তি তা অর্জন করে নিবে;এর কারনে তারা মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে সৌভাগ্য অর্জন করবে।



সনদের মান:-ইমাম হাকেম বলেন হাদীসটি বুখারী মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ।



সুত্র:-মুসতাদরাক-কিতাবু তাবরিরুর রুইয়া ৪/৪৩৭, হাদীস নং ৮১৯৪;



এখন প্রশ্ন হলো ইমাম আবু হানিফা রহ: কোন বংশীয় ছিলেন?



তার জাওয়াব হলো, ইমাম আবু হানিফা রহঃ পারস্য বংশীয় ছিলেন।তাঁর পুর্ব পুরুষ পারস্য দেশের ‘আনবার’ শহরের অধিবাসী ছিলেন।অনেক ঐতিহাসিক ব্যবিলন শহর উল্লেখ করেছেন।তখন পারস্য সরকারের রাজধানী ছিলো ‘কুফা’।



১.তিনি ব্যবিলনের সাথে সম্পর্কীয় ছিলেন।এ ব্যপারে ইমাম আব্দুর রহমান মুকরী বলেন-

كانَ ابو حنيفةَ من اهلِ بابُلَ

আবু হানিফা রহঃ ব্যবিলনের অধিবাসী ছিলেন।



সুত্র:-খতিবে বাগদাদী-তারিখে বাগদাদ ১৩/৩২৭;

নববী-তাহযিবুল আসমা ওয়াল লুগাত ২/৫০২;

যাহাবী-সিয়ারুল আলামীন নুবালা ৬/৩৯৪;

মিযযি-তাহযীবুল কামাল ২৯/৪২২;



২.কাজী বাহলুল ইবনে হাসান আত-তানুখী ইমাম আযমের পিতা সম্পর্কে বলেন-

ثابِتٌ والِدُ أبي حنيفةَ مِن اهلِ الأنبارِ

ইমাম আবু হানিফার পিতা সাবিত ছিলেন আনবারের লোক।



খতিবে বাগদাদী- তারিখে বাগদাদ ১৩/৩২৭;

নববী-তাহযীবুল আসমা ওয়াল লুগাত ২/৫০২;

যাহাবী-সিয়ারু আলামিন নুবালা ৬/৩৯৫;

মিযযি-তাহযীবুল কামাল ২৯/৪২৩;



৩.এখন দেখুন ইমাম আযমের পৌত্র ঈসমাঈল ইবনে হাম্মাদ স্পষ্ট করে বলেন-

انّا اِسمَاعيْلُ بنُ حمَّادِ بنِ النعمانِ بنِ ثابِتٍ بْنِ الْمِرْزُبانِ مِن أبناءِ فارِسٍ الأَحْرَارِ والله ما وقَعَ علينا رِقٌّ قطٌّ

আমি ঈসমাঈল ইবনে হাম্মাদ ইবনে নুৃ্মান ইবনে সাবিত ইবনে নুমান ইবনে মিরযুবান পারস্যের স্বাধীন বংশের লোক।আল্লাহর কসম!আমরা কখনো দাসের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।

সুত্র:-খতিবে বাগদাদী-তারিখে বাগদাদ ১৩/৩২৭;

সাঈমুরী-আখবারু আবি হানিফা ওয়া আসহাবিহী ২পৃষ্টা;



অতএব বুঝা গেলো যে ঈমাম আবু হানিফা রহঃ পারস্য বংশীয় ছিলেন,যা ওনার পৌত্রের সাক্ষ থেকে আরো মজবুত হয়ে গেলো। কেননা আপন পরিবারের লোকজন বিষয়টির সাক্ষি।আর তাছাডা তৎকালীন সময় পারস্য সরকারের রাজধানী ছিলো কুফা।আর নবিজীর ভবিষ্যতবানী অনুযায়ী ঐ ব্যক্তিটি হলেন ইমাম আবু হানিফা রহঃ।

Top