হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাঃ আব্দুর রাজ্জাক যেভাবে মিথ্যা কথাগুলো বলে যায় মনে হয় বিশাল “আল্লামা” বক্তব্য দিচ্ছে।
আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বলেছে হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কিত যে ঘটনা প্রচলিত আছে সেটি নাকি ডাহা মিথ্যা কথা।
ঘটনাটির সারমর্ম হল, হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) কে হত্যা করার জন্য যাচ্ছিলেন, তো পথিমধ্যে এক সাহাবীর সাথে দেখা। তিনি বললেন, তোমার বোন মুসলমান হয়ে গেছে। তো ওখানে গিয়ে বোনকে মারতে শুরু করে। তারপর তাদের মাঝে পরিবর্তন না হলে তাদের কাছে বলেন, তোমরা কি পড়? আমাকে শোনাও। তখন তারা বলেন, আপনি পবিত্র হয়ে আসুন। তারপর পবিত্র হয়ে আসলে তাকে সূরা ত্বহার আয়াত শুনান।
এটি বলে আব্দুর রাজ্জাক বলেছে ঘটনাটি নাকি ডাহা মিথ্যা কথা।
যেহেতু আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে গায়রে মুকাল্লিদ বলে দাবি করেন। দাবি করেন তিনি একজন আহলে হাদীস। তাই আমরা প্রথমে একজন গায়রে মুকাল্লিদের গ্রন্থ থেকেই উক্ত বর্ণনাটি হুবহু তুলে দিচ্ছি।
প্রসিদ্ধ গায়রে মুকাল্লিদ আলেম সফীউর রহমান মুবারকপুরী।
সাউদী আরবে পক্ষ থেকে আয়োজিত বিশ্বব্যাপী সীরাত প্রতিযোগিতায় এক নং পুরস্কারপ্রাপ্ত গ্রন্থ “আররহীকুল মাখতুম”। পরিচিত সীরাত গ্রন্থ। রাবেতা আলমে ইসলামী থেকে প্রকাশিত।
উক্ত গ্রন্থ থেকে দেখা যাক, হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে গায়রে মুকাল্লিদ তথা কথিত আহলে হাদীস আলেম সফীউর রহমান মুবারকপুরীর লিখিত ঘটনাটি।
আমরা দেখবো, সফীউর রহমান মুবারকপুরী আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করছেন নাকি আব্দুর রাজ্জাক মুবারকপুরীকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করেছেন?
ঘটনা
________
كان هذا أول وقوع نواة الإسلام في قلبه، لكن كانت قشرة النزعات الجاهلية، والعصبية التقليدية، والتعاظم بدين الآباء هي غالبة على مخ الحقيقة التي كان يتهمس بها قلبه، فبقي مجدا في عمله ضد الإسلام، غير مكترث بالشعور الذي يكمن وراء هذه القشرة.
وكان من حدة طبعه وفرط عداوته لرسول الله صلى الله عليه وسلم أنه خرج يوما متوشحا سيفه، يريد القضاء على النبي صلى الله عليه وسلم، فلقيه نعيم بن عبد الله النحام العدوي «1» ، أو رجل من بني زهرة «2» ، أو رجل من بني مخزوم «3» فقال: أين تعمد يا عمر؟ قال: أريد أن أقتل محمدا قال: كيف تأمن من بني هاشم ومن بني زهرة وقد قتلت محمدا؟ فقال له عمر: ما أراك إلا قد صبوت وتركت دينك الذي كنت عليه، قال: أفلا أدلك على العجب يا عمر! إن أختك وختنك قد صبوا، وتركا دينك الذي أنت عليه، فمشى عمر دامرا حتى أتاهما، وعندهما خباب بن الأرث، معه صحيفة فيها طه يقرئهما إياها- وكان يختلف إليهما ويقرئهما القرآن- فلما سمع خباب حس عمر توارى في البيت، وسترت فاطمة- أخت عمر- الصحيفة، وكان قد سمع عمر حين دنا من البيت قراءة خباب إليهما، فلما دخل عليهما قال: ما هذه الهينمة التي سمعتها عندكم؟ فقالا: ما عدا حديثا تحدثناه بيننا. قال: فلعلكما قد صبوتما. فقال له ختنة: يا عمر أرأيت إن كان الحق في غير دينك؟ فوثب عمر على ختنة فوطئه وطأ شديدا. فجاءت أخته فرفعته عن زوجها فنفحها نفحة بيده، فدمى وجهها- وفي رواية ابن إسحاق أنه ضربها فشجها- فقالت- وهي غضبى-: يا عمر إن كان الحق في غير دينك، أشهد ألاإله إلا الله، وأشهد أن محمدا رسول الله.
فلما يئس عمر، ورأى ما بأخته من الدم ندم واستحى، وقال: أعطوني هذا الكتاب الذي عندكم فأقرؤه، فقالت أخته: إنك رجس، ولا يمسه إلا المطهرون، فقم فاغتسل، فقام فاغتسل، ثم أخذ الكتاب، فقرأ: «بسم الله الرحمن الرحيم» فقال: أسماء طيبة طاهرة. ثم قرأ: طه حتى انتهى إلى قوله: إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لا إِلهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي، وَأَقِمِ الصَّلاةَ لِذِكْرِي فقال: ما أحسن هذا الكلام وأكرمه؟ دلوني على محمد. فلما سمع خباب قول عمر خرج من البيت، فقال: أبشر يا عمر، فإني أرجو أن تكون دعوة الرسول صلى الله عليه وسلم لك ليلة الخميس (اللهم أعز الإسلام بعمر بن الخطاب أو بأبي جهل بن هشام) ورسول الله صلى الله عليه وسلم في الدار التي في أصل الصفا.
فأخذ عمر سيفه، فتوشحه، ثم انطلق حتى أتى الدار، فضرب الباب، فقام رجل ينظر من خلل الباب فرآه متوشحا السيف، فأخبر رسول الله صلى الله عليه وسلم، واستجمع القوم، فقال لهم حمزة: ما لكم؟ قالوا: عمر، فقال: وعمر، افتحوا له الباب، فإن كان جاء يريد خيرا بذلناه له، وإن كان جاء يريد شرا قتلناه بسيفه، ورسول الله صلى الله عليه وسلم داخل يوحى إليه فخرج إلى عمر حتى لقيه في الحجرة، فأخذ بمجامع ثوبه وحمائل السيف، ثم جبذه جبذة شديدة فقال: أما أنت منتهيا يا عمر حتى ينزل الله بك من الخزي والنكال ما نزل بالوليد بن المغيرة؟ اللهم! هذا عمر بن الخطاب، اللهم أعز الإسلام بعمر بن الخطاب، فقال عمر:
أشهد ألاإله إلا الله، وأنك رسول الله.
(تاريخ عمر بن الخطاب ص 7، 10، 11، مختصر سيرة الرسول للشيخ عبد الله ص 102، 103، ابن هشام 1/ 343، 344، 345، 346.
হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সেই সময়েই আমার মনে ইসলাম রেখাপাত করে। কিন্তু তখনো তাঁর মনে পূর্ব পুরুষদের ধর্মের প্রতি বিশ্বাস ও ভালবাসা ছিল অটুট। এ কারণেই হৃদয়ের গোপন গভীরে ইসলামের প্রতি ভালবাসার বীজ বোপিত হলেও ইসলামের বিরোধিতার প্রকাশ্য কাজকর্মে তিনি ছিলেন সোচ্চার।
তাঁর স্বভাবের কঠোরতা এবং রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) এঁর সাথে শত্রুতার অবস্থা এমন ছিল যে, একদিন তলোয়ার হাতে নিয়ে রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) কে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই বেরিয়ে পড়লেন। পথে নঈম বিন আব্দুল্লাহ নাহহাম আদবীর বা বনি যোহরা বনি মাজুমের কোন এক লোকের সাথে তার দেখা হল। সেই লোক তার রুক্ষ্ম চেহারা দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ওমর! কোথায় যাচ্ছো? তিনি বললেন, মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و) কে হত্যা করতে যাচ্ছি। সেই লোক বললেন, মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و) কে হত্যা করে বনু হাশেম এবং বনু যোহরার হাত থেকে কিভাবে রক্ষা পাবে? তিনি বললেন, মনে হয় তুমিও পূর্ব পুরুষদের ধর্ম ছেড়ে বেদ্বীন হয়ে পড়েছো? সেই লোক বললেন, উমর একটা বিস্ময়কর কথা শুনাচ্ছি। তোমার বোন এবং ভগ্নিপতিও তোমাদের দ্বীন ছেড়ে দিয়ে বেদ্বীন হয়ে গেছে।
একথা শুনে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ক্রোধে দিশেহারা হয়ে সোজা ভগ্নিপতির বাড়ি অভিমুখে রওনা হলেন। সেখানে গিয়ে দেখলেন, তারা হযরত খাব্বাব বিন আরত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর কাছে সূরা ত্ব হা লেখা সহীফা পাঠ করছেন। কুরআন শিক্ষা দেয়ার জন্যে হযরত খাব্বাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সে বাড়িতে যেতেন। হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পায়ের আওয়াজ শুনে সবাই নীরব হয়ে গেলেন। হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বোন সূরা লেখা পাতাটি লুকিয়ে ফেললেন। কিন্তু ঘরের বাইরে থেকেই হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কুরআনের আওয়াজ শুনেছিলেন। তিনি তাই জিজ্ঞাসা করলেন, কিসের আওয়াজ শুনছিলাম?
তারা বললেন, কই কিছু নাতো! আমরা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছিলাম। হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, সম্ভবত তোমরা উভয়ে বেদ্বীন হয়ে গেছো। তার ভগ্নিপতি বললেন, আচ্ছা উমর! সত্য যদি তোমাদের দ্বীন ছাড়া অন্য কোন ধর্মে থাকে তখন কি হবে? হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু একথা শুনামাত্র ভগ্নিপতির উপর ঝাপিয়ে পড়লেন এবং তাঁকে মারাত্মকভাবে প্রহার করলেন।
তাঁর বোন ছুটে গিয়ে স্বামীকে ভাইয়ের হাত থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেন। এক সময় তাকে সরিয়ে দিলেন।
হঠাৎ হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তার বোনকে এতো জোরে চড় দিলেন যে, তাঁর চেহারা রক্তাক্ত হয়ে গেল। ইবনে ইসহাকের বর্ণনায় এসেছে যে, তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছিল। তাঁর বোন ক্রুদ্ধভাবে বললেন, উমর! যদি তোমাদের ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মে সত্য থাকে, তখন কি হবে? আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং হযরত মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و) তাঁর রাসূল। একথা শুনে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতাশ হয়ে পড়লেন। বোনের চেহারায় রক্ত দেখে লজ্জাও পেলেন। তিনি বললেন, আচ্ছা, তোমরা যা পাঠ করছিলে, আমাকেও একটু পড়তে দাও। তার বোন বললেন, তুমি নাপাক। এ কিতাব শুধু পাক পবিত্র লোকই স্পর্শ করতে পারে। যাও গোসল করে আসো। হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু গিয়ে গোসল করলেন। এরপর কিতাবের সেই অংশবিশেষ হাতে নিয়ে বসলেন এবং পড়লেন বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। এরপর বললেন, এতো বড় পবিত্র নাম!
হযরত খাব্বাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর মুখে একথা শুনে ভেতর থেকে বাইরে এলেন এবং বললেন, উমর খুশি হও! রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে যে দুআ করেছিলেন, আমার মনে হয় এটা তারই ফল। এ সময়ে রাসূল (صلى الله عليه و آله و) সাফা পাহাড়ের নিকটবর্তী এক ঘরে অবস্থান করছিলেন।
একথা শুনে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তলোয়ার হাতে সেই ঘরের সামনে এসে দরজায় করাঘাত করলেন। একজন সাহাবী দরজায় উঁকি দিয়ে দেখলেন যে, তলোয়ার হাতে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। আশে পাশেই সবাই একত্রিত হলেন। হযরত হামযা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞাসা করলেন কি ব্যাপার? তাকে বলা হল যে, উমর এসেছেন। তিনি বললেন, উমর এসেছে? দরজা খুলে দাও। যদি ভালোর জন্যে এসে থাকে, তবে ভালোই পাবে। আর যদি খারাপ উদ্দেশ্যে এসে থাকে, তবে তার তলোয়ার দিয়েই আমরা তাকে শেষ করে দিবো। এদিকে রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) ভেতরে ছিলেন। তার উপর ওহী নজিল হচ্ছিল। ওহী নাজিল হওয়ার পর তিনি এদিকের কামরায় হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছে এলেন এবং তাঁর পরিধানের পোশাক এবং তলোয়ারের একাংশ ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে বললেন, উমর তুমি কি ততোক্ষণ পর্যন্ত বিরত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তোমার উপরও ওলীদ বিন মুগিরার মত অবমাননাকর শাস্তি নাজিল করবেন? হে আল্লাহ! উমর বিন খাত্তাবের দ্বারা দ্বীনের শক্তি ও সম্মান দান কর। একথা বলার সাথে সাথে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইসলাম গ্রহণ করে নিলেন।
[সূত্রঃ আররহীকুল মাখতুম, হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর ইসলাম গ্রহণ পরিচ্ছেদ।]
এ আরহীকুল মাখতুম সীরাত গ্রন্থটি সৌদি সংস্থা রাবেতা আলমে ইসলামী কর্তৃক নির্বাচিত গ্রন্থ। এবং রাবেতা আলমে ইসলামীর সৌদী সরকারী মুখপত্র “আখবার আল আলমুল ইসলামী পত্রিকায় কয়েক সংখ্যায় প্রকাশিত গ্রন্থ।
তাহলে প্রিয় পাঠক, বলতে হয় যে,
১/ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের বক্তব্য অনুপাতে এমন ডাহা মিথ্যা কথার উপর রাবেতা আলমে ইসলাম পুরস্কার দিয়েছে।
– তাই নয় কি?
২/ সৌদি সরকার এ ডাহা মিথ্যা কথা নির্ভর বই নিজস্ব অর্থে প্রকাশ করেছে।
– বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়?
– সৌদি সরকার আর রাবেতা আলমের বিরুদ্ধে আব্দুর রাজ্জাকের মুখ থেকে কি ফাতওয়া হতে পারে?
– সৌদি সরকার আর রাবেতা আলমের বিরুদ্ধে হুকুম কি হবে?
কুপের ব্যাঙ এর কাছে তার দৃষ্টি সীমায় নিবদ্ধ আকাশ সীমাকেই মনে হয় আকাশ। এরপর আরো আকাশের আরো সুবিশাল অংশ রয়েছে সে তা বিশ্বাসই করে না। কারণ এর চেয়ে বেশি দেখার মত ক্ষমতা কুপের ব্যাঙের নেই।
এসব কথিত শায়েখদের অবস্থাও তাই। নিজের সীমাবদ্ধ জ্ঞানকেই চূড়ান্ত এবং সর্বশেষ মনে করে বকওয়াজ করে যায় দিনের পর দিন। না জানলে জ্ঞানীদের থেকে জেনে নেবার কুরআনী আদেশ অগ্রাহ্য করে দিনের পর দিন মানুষের সামনে করে যায় মিথ্যাচার। যেভাবে মিথ্যা কথাগুলো বলে যায় মনে হয় বিশাল “আল্লামা” বক্তব্য দিচ্ছে।
আসুন এবার দেখি আরো কতটি গ্রন্থে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর উপরোক্ত ঘটনাটি বর্ণিত।
০১. মুসনাদুল বাজ্জার-১/৪০১,
০২.
মুস্তাদরাকে হাকেম-৪/৬৬,
০৩. সুনানে দারা কুতনী-১/১২১,
০৪.
তাবাকাতুল কুবরা লিইবনে সাদ-৩/২৬৭,
০৫.
সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী-১/৮৭,
০৬. তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে সূরা ত্বহা।
০৭.
আততাহরীর ওয়াততানয়ীর, তাফসীরে সূরা ত্বহা।
০৮.
হায়াতুস সাহাবা।
আরো অসংখ্য কিতাবে বর্ণিত হয়েছে এ ঘটনাটি।
উক্ত বর্ণনা বিষয়ে মুহাদ্দিসীনদের মন্তব্য
০১. ইমাম বায়হাকী রহমাতুল্লাহি ‘আলাইহি বলেন, এর অনেক শাওয়াহেদ তথা প্রমাণবাহী বর্ণনা রয়েছে।
[সূত্রঃ সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী-১/৮৮।]
০২.
আল্লামা যায়লায়ী রহমাতুল্লাহি ‘আলাইহি এঁর সনদটি জাইয়্যিদ।
[সূত্রঃ নসবুর রায়াহ-১/১৯৯।]
নিজের পড়াশোনার গভীরতা না থাকায়, কোন কিছু না পাওয়ায় উক্ত বস্তুকে অস্বিকার করা মুর্খতা ছাড়া কী বলা যায়?
এত অসংখ্য কিতাবে বর্ণিত বহুল প্রচলিত এ সহীহ ঘটনাকে কতটা স্পর্ধার সাথে এ কথিত শায়েখ ডাহা মিথ্যা বলে নিজের মিথ্যাকে প্রকাশ করলেন।
অবাক হই এসব জাহিল শায়েখদের পিছনেই নাকি ছুটছে এদেশের ইংরেজী শিক্ষিতরা। হায় এদেশের শিক্ষা। হায় শিক্ষা ব্যবস্থা।
এমন শিক্ষার উপর মাতম ছাড়ার কি’ইবা করা যায়, যে শিক্ষা মানুষকে শিক্ষিত আর অশিক্ষিত চিনতে পারার মত জ্ঞানও দান করতে পারে না।
আল্লাহ তাআলা এসব কথিত শায়েখদের মিথ্যাচার থেকে হিফাযত করুন।
আমীন।
আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বলেছে হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কিত যে ঘটনা প্রচলিত আছে সেটি নাকি ডাহা মিথ্যা কথা।
ঘটনাটির সারমর্ম হল, হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) কে হত্যা করার জন্য যাচ্ছিলেন, তো পথিমধ্যে এক সাহাবীর সাথে দেখা। তিনি বললেন, তোমার বোন মুসলমান হয়ে গেছে। তো ওখানে গিয়ে বোনকে মারতে শুরু করে। তারপর তাদের মাঝে পরিবর্তন না হলে তাদের কাছে বলেন, তোমরা কি পড়? আমাকে শোনাও। তখন তারা বলেন, আপনি পবিত্র হয়ে আসুন। তারপর পবিত্র হয়ে আসলে তাকে সূরা ত্বহার আয়াত শুনান।
এটি বলে আব্দুর রাজ্জাক বলেছে ঘটনাটি নাকি ডাহা মিথ্যা কথা।
যেহেতু আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে গায়রে মুকাল্লিদ বলে দাবি করেন। দাবি করেন তিনি একজন আহলে হাদীস। তাই আমরা প্রথমে একজন গায়রে মুকাল্লিদের গ্রন্থ থেকেই উক্ত বর্ণনাটি হুবহু তুলে দিচ্ছি।
প্রসিদ্ধ গায়রে মুকাল্লিদ আলেম সফীউর রহমান মুবারকপুরী।
সাউদী আরবে পক্ষ থেকে আয়োজিত বিশ্বব্যাপী সীরাত প্রতিযোগিতায় এক নং পুরস্কারপ্রাপ্ত গ্রন্থ “আররহীকুল মাখতুম”। পরিচিত সীরাত গ্রন্থ। রাবেতা আলমে ইসলামী থেকে প্রকাশিত।
উক্ত গ্রন্থ থেকে দেখা যাক, হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে গায়রে মুকাল্লিদ তথা কথিত আহলে হাদীস আলেম সফীউর রহমান মুবারকপুরীর লিখিত ঘটনাটি।
আমরা দেখবো, সফীউর রহমান মুবারকপুরী আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করছেন নাকি আব্দুর রাজ্জাক মুবারকপুরীকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করেছেন?
ঘটনা
________
كان هذا أول وقوع نواة الإسلام في قلبه، لكن كانت قشرة النزعات الجاهلية، والعصبية التقليدية، والتعاظم بدين الآباء هي غالبة على مخ الحقيقة التي كان يتهمس بها قلبه، فبقي مجدا في عمله ضد الإسلام، غير مكترث بالشعور الذي يكمن وراء هذه القشرة.
وكان من حدة طبعه وفرط عداوته لرسول الله صلى الله عليه وسلم أنه خرج يوما متوشحا سيفه، يريد القضاء على النبي صلى الله عليه وسلم، فلقيه نعيم بن عبد الله النحام العدوي «1» ، أو رجل من بني زهرة «2» ، أو رجل من بني مخزوم «3» فقال: أين تعمد يا عمر؟ قال: أريد أن أقتل محمدا قال: كيف تأمن من بني هاشم ومن بني زهرة وقد قتلت محمدا؟ فقال له عمر: ما أراك إلا قد صبوت وتركت دينك الذي كنت عليه، قال: أفلا أدلك على العجب يا عمر! إن أختك وختنك قد صبوا، وتركا دينك الذي أنت عليه، فمشى عمر دامرا حتى أتاهما، وعندهما خباب بن الأرث، معه صحيفة فيها طه يقرئهما إياها- وكان يختلف إليهما ويقرئهما القرآن- فلما سمع خباب حس عمر توارى في البيت، وسترت فاطمة- أخت عمر- الصحيفة، وكان قد سمع عمر حين دنا من البيت قراءة خباب إليهما، فلما دخل عليهما قال: ما هذه الهينمة التي سمعتها عندكم؟ فقالا: ما عدا حديثا تحدثناه بيننا. قال: فلعلكما قد صبوتما. فقال له ختنة: يا عمر أرأيت إن كان الحق في غير دينك؟ فوثب عمر على ختنة فوطئه وطأ شديدا. فجاءت أخته فرفعته عن زوجها فنفحها نفحة بيده، فدمى وجهها- وفي رواية ابن إسحاق أنه ضربها فشجها- فقالت- وهي غضبى-: يا عمر إن كان الحق في غير دينك، أشهد ألاإله إلا الله، وأشهد أن محمدا رسول الله.
فلما يئس عمر، ورأى ما بأخته من الدم ندم واستحى، وقال: أعطوني هذا الكتاب الذي عندكم فأقرؤه، فقالت أخته: إنك رجس، ولا يمسه إلا المطهرون، فقم فاغتسل، فقام فاغتسل، ثم أخذ الكتاب، فقرأ: «بسم الله الرحمن الرحيم» فقال: أسماء طيبة طاهرة. ثم قرأ: طه حتى انتهى إلى قوله: إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لا إِلهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي، وَأَقِمِ الصَّلاةَ لِذِكْرِي فقال: ما أحسن هذا الكلام وأكرمه؟ دلوني على محمد. فلما سمع خباب قول عمر خرج من البيت، فقال: أبشر يا عمر، فإني أرجو أن تكون دعوة الرسول صلى الله عليه وسلم لك ليلة الخميس (اللهم أعز الإسلام بعمر بن الخطاب أو بأبي جهل بن هشام) ورسول الله صلى الله عليه وسلم في الدار التي في أصل الصفا.
فأخذ عمر سيفه، فتوشحه، ثم انطلق حتى أتى الدار، فضرب الباب، فقام رجل ينظر من خلل الباب فرآه متوشحا السيف، فأخبر رسول الله صلى الله عليه وسلم، واستجمع القوم، فقال لهم حمزة: ما لكم؟ قالوا: عمر، فقال: وعمر، افتحوا له الباب، فإن كان جاء يريد خيرا بذلناه له، وإن كان جاء يريد شرا قتلناه بسيفه، ورسول الله صلى الله عليه وسلم داخل يوحى إليه فخرج إلى عمر حتى لقيه في الحجرة، فأخذ بمجامع ثوبه وحمائل السيف، ثم جبذه جبذة شديدة فقال: أما أنت منتهيا يا عمر حتى ينزل الله بك من الخزي والنكال ما نزل بالوليد بن المغيرة؟ اللهم! هذا عمر بن الخطاب، اللهم أعز الإسلام بعمر بن الخطاب، فقال عمر:
أشهد ألاإله إلا الله، وأنك رسول الله.
(تاريخ عمر بن الخطاب ص 7، 10، 11، مختصر سيرة الرسول للشيخ عبد الله ص 102، 103، ابن هشام 1/ 343، 344، 345، 346.
হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সেই সময়েই আমার মনে ইসলাম রেখাপাত করে। কিন্তু তখনো তাঁর মনে পূর্ব পুরুষদের ধর্মের প্রতি বিশ্বাস ও ভালবাসা ছিল অটুট। এ কারণেই হৃদয়ের গোপন গভীরে ইসলামের প্রতি ভালবাসার বীজ বোপিত হলেও ইসলামের বিরোধিতার প্রকাশ্য কাজকর্মে তিনি ছিলেন সোচ্চার।
তাঁর স্বভাবের কঠোরতা এবং রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) এঁর সাথে শত্রুতার অবস্থা এমন ছিল যে, একদিন তলোয়ার হাতে নিয়ে রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) কে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই বেরিয়ে পড়লেন। পথে নঈম বিন আব্দুল্লাহ নাহহাম আদবীর বা বনি যোহরা বনি মাজুমের কোন এক লোকের সাথে তার দেখা হল। সেই লোক তার রুক্ষ্ম চেহারা দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ওমর! কোথায় যাচ্ছো? তিনি বললেন, মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و) কে হত্যা করতে যাচ্ছি। সেই লোক বললেন, মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و) কে হত্যা করে বনু হাশেম এবং বনু যোহরার হাত থেকে কিভাবে রক্ষা পাবে? তিনি বললেন, মনে হয় তুমিও পূর্ব পুরুষদের ধর্ম ছেড়ে বেদ্বীন হয়ে পড়েছো? সেই লোক বললেন, উমর একটা বিস্ময়কর কথা শুনাচ্ছি। তোমার বোন এবং ভগ্নিপতিও তোমাদের দ্বীন ছেড়ে দিয়ে বেদ্বীন হয়ে গেছে।
একথা শুনে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ক্রোধে দিশেহারা হয়ে সোজা ভগ্নিপতির বাড়ি অভিমুখে রওনা হলেন। সেখানে গিয়ে দেখলেন, তারা হযরত খাব্বাব বিন আরত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর কাছে সূরা ত্ব হা লেখা সহীফা পাঠ করছেন। কুরআন শিক্ষা দেয়ার জন্যে হযরত খাব্বাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সে বাড়িতে যেতেন। হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পায়ের আওয়াজ শুনে সবাই নীরব হয়ে গেলেন। হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বোন সূরা লেখা পাতাটি লুকিয়ে ফেললেন। কিন্তু ঘরের বাইরে থেকেই হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কুরআনের আওয়াজ শুনেছিলেন। তিনি তাই জিজ্ঞাসা করলেন, কিসের আওয়াজ শুনছিলাম?
তারা বললেন, কই কিছু নাতো! আমরা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছিলাম। হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, সম্ভবত তোমরা উভয়ে বেদ্বীন হয়ে গেছো। তার ভগ্নিপতি বললেন, আচ্ছা উমর! সত্য যদি তোমাদের দ্বীন ছাড়া অন্য কোন ধর্মে থাকে তখন কি হবে? হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু একথা শুনামাত্র ভগ্নিপতির উপর ঝাপিয়ে পড়লেন এবং তাঁকে মারাত্মকভাবে প্রহার করলেন।
তাঁর বোন ছুটে গিয়ে স্বামীকে ভাইয়ের হাত থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেন। এক সময় তাকে সরিয়ে দিলেন।
হঠাৎ হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তার বোনকে এতো জোরে চড় দিলেন যে, তাঁর চেহারা রক্তাক্ত হয়ে গেল। ইবনে ইসহাকের বর্ণনায় এসেছে যে, তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছিল। তাঁর বোন ক্রুদ্ধভাবে বললেন, উমর! যদি তোমাদের ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মে সত্য থাকে, তখন কি হবে? আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং হযরত মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و) তাঁর রাসূল। একথা শুনে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতাশ হয়ে পড়লেন। বোনের চেহারায় রক্ত দেখে লজ্জাও পেলেন। তিনি বললেন, আচ্ছা, তোমরা যা পাঠ করছিলে, আমাকেও একটু পড়তে দাও। তার বোন বললেন, তুমি নাপাক। এ কিতাব শুধু পাক পবিত্র লোকই স্পর্শ করতে পারে। যাও গোসল করে আসো। হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু গিয়ে গোসল করলেন। এরপর কিতাবের সেই অংশবিশেষ হাতে নিয়ে বসলেন এবং পড়লেন বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। এরপর বললেন, এতো বড় পবিত্র নাম!
হযরত খাব্বাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর মুখে একথা শুনে ভেতর থেকে বাইরে এলেন এবং বললেন, উমর খুশি হও! রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে যে দুআ করেছিলেন, আমার মনে হয় এটা তারই ফল। এ সময়ে রাসূল (صلى الله عليه و آله و) সাফা পাহাড়ের নিকটবর্তী এক ঘরে অবস্থান করছিলেন।
একথা শুনে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তলোয়ার হাতে সেই ঘরের সামনে এসে দরজায় করাঘাত করলেন। একজন সাহাবী দরজায় উঁকি দিয়ে দেখলেন যে, তলোয়ার হাতে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। আশে পাশেই সবাই একত্রিত হলেন। হযরত হামযা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞাসা করলেন কি ব্যাপার? তাকে বলা হল যে, উমর এসেছেন। তিনি বললেন, উমর এসেছে? দরজা খুলে দাও। যদি ভালোর জন্যে এসে থাকে, তবে ভালোই পাবে। আর যদি খারাপ উদ্দেশ্যে এসে থাকে, তবে তার তলোয়ার দিয়েই আমরা তাকে শেষ করে দিবো। এদিকে রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله و) ভেতরে ছিলেন। তার উপর ওহী নজিল হচ্ছিল। ওহী নাজিল হওয়ার পর তিনি এদিকের কামরায় হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছে এলেন এবং তাঁর পরিধানের পোশাক এবং তলোয়ারের একাংশ ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে বললেন, উমর তুমি কি ততোক্ষণ পর্যন্ত বিরত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তোমার উপরও ওলীদ বিন মুগিরার মত অবমাননাকর শাস্তি নাজিল করবেন? হে আল্লাহ! উমর বিন খাত্তাবের দ্বারা দ্বীনের শক্তি ও সম্মান দান কর। একথা বলার সাথে সাথে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইসলাম গ্রহণ করে নিলেন।
[সূত্রঃ আররহীকুল মাখতুম, হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর ইসলাম গ্রহণ পরিচ্ছেদ।]
এ আরহীকুল মাখতুম সীরাত গ্রন্থটি সৌদি সংস্থা রাবেতা আলমে ইসলামী কর্তৃক নির্বাচিত গ্রন্থ। এবং রাবেতা আলমে ইসলামীর সৌদী সরকারী মুখপত্র “আখবার আল আলমুল ইসলামী পত্রিকায় কয়েক সংখ্যায় প্রকাশিত গ্রন্থ।
তাহলে প্রিয় পাঠক, বলতে হয় যে,
১/ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের বক্তব্য অনুপাতে এমন ডাহা মিথ্যা কথার উপর রাবেতা আলমে ইসলাম পুরস্কার দিয়েছে।
– তাই নয় কি?
২/ সৌদি সরকার এ ডাহা মিথ্যা কথা নির্ভর বই নিজস্ব অর্থে প্রকাশ করেছে।
– বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়?
– সৌদি সরকার আর রাবেতা আলমের বিরুদ্ধে আব্দুর রাজ্জাকের মুখ থেকে কি ফাতওয়া হতে পারে?
– সৌদি সরকার আর রাবেতা আলমের বিরুদ্ধে হুকুম কি হবে?
কুপের ব্যাঙ এর কাছে তার দৃষ্টি সীমায় নিবদ্ধ আকাশ সীমাকেই মনে হয় আকাশ। এরপর আরো আকাশের আরো সুবিশাল অংশ রয়েছে সে তা বিশ্বাসই করে না। কারণ এর চেয়ে বেশি দেখার মত ক্ষমতা কুপের ব্যাঙের নেই।
এসব কথিত শায়েখদের অবস্থাও তাই। নিজের সীমাবদ্ধ জ্ঞানকেই চূড়ান্ত এবং সর্বশেষ মনে করে বকওয়াজ করে যায় দিনের পর দিন। না জানলে জ্ঞানীদের থেকে জেনে নেবার কুরআনী আদেশ অগ্রাহ্য করে দিনের পর দিন মানুষের সামনে করে যায় মিথ্যাচার। যেভাবে মিথ্যা কথাগুলো বলে যায় মনে হয় বিশাল “আল্লামা” বক্তব্য দিচ্ছে।
আসুন এবার দেখি আরো কতটি গ্রন্থে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এঁর উপরোক্ত ঘটনাটি বর্ণিত।
০১. মুসনাদুল বাজ্জার-১/৪০১,
০২.
মুস্তাদরাকে হাকেম-৪/৬৬,
০৩. সুনানে দারা কুতনী-১/১২১,
০৪.
তাবাকাতুল কুবরা লিইবনে সাদ-৩/২৬৭,
০৫.
সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী-১/৮৭,
০৬. তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে সূরা ত্বহা।
০৭.
আততাহরীর ওয়াততানয়ীর, তাফসীরে সূরা ত্বহা।
০৮.
হায়াতুস সাহাবা।
আরো অসংখ্য কিতাবে বর্ণিত হয়েছে এ ঘটনাটি।
উক্ত বর্ণনা বিষয়ে মুহাদ্দিসীনদের মন্তব্য
০১. ইমাম বায়হাকী রহমাতুল্লাহি ‘আলাইহি বলেন, এর অনেক শাওয়াহেদ তথা প্রমাণবাহী বর্ণনা রয়েছে।
[সূত্রঃ সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী-১/৮৮।]
০২.
আল্লামা যায়লায়ী রহমাতুল্লাহি ‘আলাইহি এঁর সনদটি জাইয়্যিদ।
[সূত্রঃ নসবুর রায়াহ-১/১৯৯।]
নিজের পড়াশোনার গভীরতা না থাকায়, কোন কিছু না পাওয়ায় উক্ত বস্তুকে অস্বিকার করা মুর্খতা ছাড়া কী বলা যায়?
এত অসংখ্য কিতাবে বর্ণিত বহুল প্রচলিত এ সহীহ ঘটনাকে কতটা স্পর্ধার সাথে এ কথিত শায়েখ ডাহা মিথ্যা বলে নিজের মিথ্যাকে প্রকাশ করলেন।
অবাক হই এসব জাহিল শায়েখদের পিছনেই নাকি ছুটছে এদেশের ইংরেজী শিক্ষিতরা। হায় এদেশের শিক্ষা। হায় শিক্ষা ব্যবস্থা।
এমন শিক্ষার উপর মাতম ছাড়ার কি’ইবা করা যায়, যে শিক্ষা মানুষকে শিক্ষিত আর অশিক্ষিত চিনতে পারার মত জ্ঞানও দান করতে পারে না।
আল্লাহ তাআলা এসব কথিত শায়েখদের মিথ্যাচার থেকে হিফাযত করুন।
আমীন।