জানাযা সম্পর্কিত পাঁচটি মাদানী ফুল
“অমুক আমার জানাযার নামায পড়াবে” এরকম ওসিয়তের হুকুম
(১) মৃত ব্যক্তি ওসিয়ত করেছিল যে, আমার জানাযার নামায অমুক পড়াবে বা আমাকে অমুক ব্যক্তি গোসল দিবে তবে এই ওসিয়ত বাতিল হবে, অর্থাৎ-এই ওসিয়ত দ্বারা (মৃত ব্যক্তির) অভিভাবকের অধিকার বাতিল হবে না। হ্যাঁ! অভিভাবকের স্বাধীনতা রয়েছে যে, নিজে না পড়িয়ে তার দ্বারা পড়িয়ে দিবে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮৩৭ পৃষ্ঠা। আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১৬৩ পৃষ্ঠা) যদি কোন মুত্তাকী বুযুর্গ বা আলিম সম্পর্কে ওসিয়ত করে থাকে তবে উত্তরাধিকারীদের উচিত যে, এর উপর আমল করা।
ইমাম মৃত ব্যক্তির বুক বরাবর দাঁড়াবে
(২) মুস্তাহাব হচ্ছে;মৃত ব্যক্তির বুক বরাবর ইমাম দাঁড়াবে আর মৃত ব্যক্তি থেকে দূরে হবে না। মৃত ব্যক্তি পুরুষ হোক বা মহিলা, প্রাপ্ত বয়স্ক হোক বা না-বালিগ। এটি ঐ সময় হবে যখন, একজন মৃত ব্যক্তির জানাযা পড়ানো হয়। আর যদি কিছু সংখ্যক হয়, তবে যে কোন একটির সীনা তথা বুক বরাবর এবং কাছাকাছি দাঁড়াবে। (দুররে মুখতার ও রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ১৩৪ পৃষ্ঠা)
জানাযার নামায আদায় না করে দাফন করে দিলো তবে?
(৩) মৃত ব্যক্তিকে জানাযার নামায আদায় না করে দাফন করে দিল এবং মাটিও দেয়া হলো তবে এখন তার কবরে জানাযার নামায পড়বে যতক্ষণ ফেটে যাওয়ার ধারণা না হয়। আর মাটি দেয়া না হলে বের করে নামাযে জানাযা আদায় করে দাফন করবে। আর কবরে নামায আদায় করার সময় সীমা কোন সংখ্যা নির্দিষ্ট নেই যে, কতদিন পর্যন্ত আদায় করা যাবে। এটা মৌসুম, জমিন, এবং মৃত ব্যক্তির শরীর ও অসুস্থতার ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। গরমের মৌসুমে তাড়াতাড়ি ফেটে যাবে এবং শীতকালে দেরীতে ও বর্ষাকালে বা লবণাক্ত ভূমিতে তাড়াতাড়ি, শুকনো এবং লবণাক্ত নয় এমন জমিতে দেরীতে ফাটে মোটা শরীর তাড়াতাড়ি হালকা-পাতলা শরীর দেরীতে ফাটে।
ঘরে চাপা পড়া মৃত ব্যক্তির জানাযার নামায
(৪) কূপে পড়ে গিয়ে মারা গেলো বা তার উপর ঘর ভেঙ্গে পড়ল আর মৃত লাশ বের করা যাচ্ছে না তবে ঐ জায়গায় তার জানাযার নামায আদায় করে নিবে। সমূদ্রে ডুবে গেলো আর তাকে পাওয়া গেলো না তবে তার জানাযার নামায হতে পারে না কেননা মৃত লাশ নামায আদায়কারীদের সামনে থাকা পাওয়া যাচ্ছে না। (রদ্দে মুহতার, ৩য় খন্ড, ১৪৭ পৃষ্ঠা)
জানাযার নামাযে লোকসংখ্যা বাড়ানোর জন্য দেরী করা
(৫) জুমার দিন কারো ইন্তিকাল হলো তবে যদি জুমার আগে কাফন-দাফন হতে পারে তবে প্রথমে করে নিবেন, এই ধারণায় বিরত থাকা যে, জুমার পরে লোক সমাগম বেশি হবে, তবে তা মাকরূহ। (রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ১৭৩ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৮৪০ পৃষ্ঠা)
সালাতুত তাসবীহ
এ নামাযের অফুরন্ত সাওয়াব রয়েছে। হুযুর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم আপন চাচা হযরত সায়্যিদুনা আব্বাস رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ কে ইরশাদ করলেন: “হে আমার চাচা! যদি সামর্থ রাখেন তাহলে প্রতিদিন একবার করে সালাতুত তাসবীহের নামায আদায় করুন।যদি প্রতিদিন না পারেন, তাহলে প্রত্যেক জুমার দিনে একবার, আর এটাও না হলে প্রতি মাসে একবার আদায় করুন। তাও না হলে বৎসরে একবার আদায় করুন এবং তাও না হলে জীবনে একবার আদায় করে নিন।” (সুনানে আবি দাউদ, ২য় খন্ড, ৪৪-৪৫ পৃষ্ঠা, হাদীস-১২৯৭)