শবে বরাত সম্পর্কীয় বহু বর্ণনা হাদীসের কিতাবে

বিদ্যমান। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হাদীস নিম্নে

পেশ করছি-

*প্রথম হাদীস

হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রা. রাসূল স. থেকে বর্ণনা করেন,

আল্লাহ তায়ালা শাবান মাসের পনের তারিখ রাতে

সমস্ত সৃষ্টি কুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দান করে সকলকে

ক্ষমা করে দেন। তবে মুশরিক এবং হিংসুক ছাড়া। (দেখুন:

শুয়াবুল ঈমান-৫/২২৭ , আল-মু‘জামূল কাবীর-২০/১০৮)

░▒▓█►হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দিসদের অভিমত

ক. হাফেজ ইবনে রজব হাম্বলী র. মুয়ায রা. এর হাদীসটি

বর্ণনা করে বলেন, ইবনে হিবক্ষান হাদীসটিকে সহীহ

বলেছেন। আর নির্ভরযোগ্যতার জন্য এটুকুই যথেষ্ট।

*দ্বিতীয় হাদীস

হযরত আয়েশা রা. বলেন, একরাতে আমি রাসূল স.কে

বিছানায় পেলাম না। তাই (খোজার উদ্দেশ্যে) বের হলাম।

তখন দেখতে পেলাম,তিনি জান্নাতুল বাকীতে আছেন।

আমাকে দেখে তিনি বলে উঠলেন, তুমি কি এ আশঙ্কা

করছো যে, আল্লাহ এবং তার রাসূল তোমার প্রতি অবিচার

করবেন ? আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল ! আমি ধারণা

করছিলাম, আপনি আপনার অন্য স্ত্রীর ঘরে তাশরীফ

নিয়েছেন। রাসূল স. বলেন শাবানের পনের তারিখ রাতে

আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং ‘বনু

কালব’ গোত্রের ভেড়ার পশমের চেয়েও অধিক সংখ্যক

লোককে মাফ করে দেন। (তিরমিযী শরীফ: ১/১৫৬)

░▒▓█►হাদীসটির ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের অভিমত

ইবনে হিবক্ষান র. আয়েশা রা. এর হাদীসটিকে হাসান

বলেছেন। (শরহুল মাওয়াহিবিল লাদুনিয়্যাহ: ৭/৪৪১

*তৃতীয় হাদীস

হযরত আবী সা’লাবা আল খুশানী রা. থেকে বর্ণিত হুজুর স.

ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা‘আলা শা’বান মাসের পনের

তারিখ রাতে স্বীয় বান্দাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেন।

অতঃপর মুমিনদেরকে ক্ষমা করেন এবং কাফেরদেকে সুযোগ

দেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদেরকে বিদ্বেষ পরিত্যাগ

করা পযর্ন্ত অবকাশ দেন। (শুয়াবুল ঈমান: ৩/৩৮১ , মু‘জামূল

কাবীর: ২২/২২৩)

*চতুথ হাদীস:-

আবু মূসা আল আশ’আরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত,

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আল্লাহ তা‘আলা শাবানের

মধ্যরাত্রিতে আগমণ করে, মুশরিক ও ঝগড়ায় লিপ্ত

ব্যক্তিদের ব্যতীত, তাঁর সমস্ত সৃষ্টিজগতকে ক্ষমা করে

দেন। হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৫৫,

হাদীস নং ১৩৯০),এবং তাবরানী তার মু’জামুল কাবীর

(২০/১০৭,১০৮) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।

░▒▓█► আল্লামা বূছীরি বলেন: ইবনে মাজাহ বর্ণিত

হাদীসটির সনদ দুর্বল। তাবরানী বর্ণিত হাদীস সম্পর্কে

আল্লামা হাইসামী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) মাজমা‘

আয যাওয়ায়েদ (৮/৬৫) গ্রন্থে বলেনঃ ত্বাবরানী বর্ণিত

হাদীসটির সনদের সমস্ত বর্ণনাকারী শক্তিশালী।

হাদীসটি ইবনে হিব্বানও তার সহীহতে বর্ণনা করেছেন। এ

ব্যাপারে দেখুন, মাওয়ারেদুজ জাম‘আন, হাদীস নং (১৯৮০),

পৃঃ (৪৮৬)।

*৫ম হাদীস:-

আলী ইবনে আবী তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে

বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যখন শা‘বানের মধ্যরাত্রি আসবে

তখন তোমরা সে রাতের কিয়াম তথা রাতভর নামায পড়বে,

আর সে দিনের রোযা রাখবে; কেননা সে দিন সুর্যাস্তের

সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়ার আকাশে অবতরণ

করেন এবং বলেন: ক্ষমা চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি

ক্ষমা করব। রিযিক চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি

রিযিক দেব। সমস্যাগ্রস্ত কেউ কি আছে যে আমার কাছে

পরিত্রাণ কামনা করবে আর আমি তাকে উদ্ধার করব। এমন

এমন কেউ কি আছে? এমন এমন কেউ কি আছে? ফজর পর্যন্ত

তিনি এভাবে বলতে থাকেন”।

░▒▓█►সনদ পর্যালোচনা ঃ

হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪, হাদীস

নং ১৩৮৮) বর্ণনা করেছেন। আল্লামা বূছীরি

(রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার যাওয়ায়েদে ইবনে মাজাহ

(২/১০) গ্রন্থে বলেন, হাদীসটির বর্ণনাকারীদের মধ্যে ইবনে

আবি সুবরাহ রয়েছেন।যদি তিনি দুর্বল রাবী হন তাহলে

হাদীস টি হাসান।

*৬ষ্ট হাদীস:-

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ

(সা.) বলেছেন : ১৫ই শা’বানের রাত্রে আল্লাহ পাক তার

বান্দাদের ক্ষমা করে দেন দুই ব্যক্তি ছাড়া। এক.

পরশ্রীকাতর। দুই. অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যাকারী।

মুসনাদে আহমদ-৬/১৯৭, হাদীস-৬৬৪২, মাজমাউস

জাওয়ায়েদ-৮/৬৫, হাদীস-১২৯৬১, আত তারগীব ওয়াত তারহীব

লিল মুনজেরী-৩/৩০৮, হাদীস-৪৮৯২। ইত্যাদি অসংখ্য

কিতাব..।

░▒▓█►সনদ পর্যালোচনা ঃ

হাদীসটির মান : উক্ত হাদীসটি হাসান তথা প্রমাণযোগ্য।





*৭ম হাদীস:-

-‘‘হযরত আবু হুরায়রা () হতে বর্ণিত, আঁকা () ইরশাদ ফরমান,

যখন শাবানের ১৫ই তারিখের রাত আগমন করে তখন আল্লাহ

তা‘য়ালা ঈমানদার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন, শুধু

মুশরিক (আল্লাহর সাথে শরীককারী) ও হিংসুক ব্যতীত।’

░▒▓█►সনদ পর্যালোচনা ঃ

আল্লামা হাইসামী উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করে বলেন-

ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺭُ، ﻭَﻓِﻴﻪِ ﻫِﺸَﺎﻡُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﻭَﻟَﻢْ ﺃَﻋْﺮِﻓْﻪُ، ﻭَﺑَﻘِﻴَّﺔُ ﺭِﺟَﺎﻟِﻪِ ﺛِﻘَﺎﺕٌ .-

-‘‘উক্ত হাদিসটি ইমাম বায্যার () ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে বর্ণনা

করেন, তার বর্ণনাকারীদের একজন “হিশাম ইবনে আব্দুর

রহমান’’ তার সম্পর্কে আমি পরিচিত বা অবগত নই, বাকী সব

রাবী মজবুত ও সিকাহ বা বিশ্বস্ত। অতএব একজনের জন্য

হাদিস যঈফ হবে না; বরং “হাসান”।ইমাম বায্যার : আল

মুসনাদ : ১৬/১৬১পৃ. : হাদিস :৯২৬৮ (২) ইবনে হাজার

হায়সামী : মাযমাউয যাওয়াইদ,হাদিস, ৮/৬৫পৃ.

হাদিস,১২৯৫৮ (৩) সুয়ূতি, জামিউল আহাদিস, ৩/৪৮৪পৃ.

হাদিস,২৬২৩, (৪) খতিবে বাগদাদ, তারীখে বাগদাদ,

১৪/২৮৫পৃ. (৫) ইবনে যওজী, আল-ইল্ললুল মুতনাহিয়্যাহ, ২/৫৬০পৃ.

হাদিস,৯২১ (৬) ইমাম তবারী, শরহে উসূলুল আকায়েদ, ৩/৪৯৫পৃ.

হাদিস,৭৬৩, হাইসামী, কাশফুল আশতার, ২/৪৩৬পৃ.

হাদিস,২০৪৬

*৮নং হাদিস ঃ

-‘‘হযরত আওফ বিন মালেক আশজারী () হতে বর্ণিত, রাসূলে

খোদা () ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাবারাকা ও তায়ালা ১৫ই

শাবানের রাত্রে (শবে বরাত) সকল ঈমানদার বান্দাদেরকে

ক্ষমা করে দেন। তবে মুশরিক এবং হিংসুক ব্যতীত সবাইকে।

’░▒▓█►সনদ পর্যালোচনা ঃ

আল্লামা হাইসামী উক্ত হাদিসটি সংকলন করে বলেন-

-‘‘উক্ত হাদিসটি ইমাম বায্যার তার মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা

করেছেন, উক্ত সনদে “আব্দুর রহমান বিন যিয়াদ বিন আনআম”

ইমাম আহমদ বিন সালেহ এর মত তিনি সিকাহ আবার কিছু

মুহাদ্দিসের কাছে তিনি দুর্বল রাবী এবং ইবনে লাহিয়া

হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে নরম প্রকৃতির।’ একজন রাবী দ্বঈফ

হওয়াতে হাদিসটির সম্পূর্ণ সনদটি দুর্বল হবে না বরং

“হাসান”।

ইমাম বায্যার : আল-মুসনাদ :৭/১৮৬পৃ.হাদিস,২৭৫৪ (২) ইবনে

হাজার হায়সামী, মাযমাউয যাওয়াইদ, ৮/৬৫পৃ. (৩) খতিব

তিবরিযী : মিশকাতুল মাসাবীহ : হাদিস : ১৩০৬ : কিয়ামে

রামাদ্বান (৪) ইবনে কাসীর, জামিউল মাসানীদ ওয়াল

সুনান, ৬/৬৯১পৃ. হাদিস,৮৫৩৯

🏡* ৯নংহাদীস:-

-‘‘হযরত কাসীর ইবনে হাদ্বরামী () হতে বর্ণিত, রাসূল ()

ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা শাবানের ১৫ই তারিখ

রাতে ঈমানদার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন, তবে হ্যা দুই

ধরনের ব্যক্তি ছাড়া, তারা হল মুশরিক ও হিংসুক।’’

░▒▓█►সনদ পর্যালোচনা ঃ

উক্ত হাদীসের সনদ প্রসঙ্গে আহলে হাদীসের মুহাদ্দিস

মোবারকপুরী এবং ইমাম মুনযির বলেন- ﻗﺎﻝ ﻣﻨﺬﺭﻯ : ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻲ ﻭ ﻗﺎﻝ

ﻫﺬﺍ ﻣﺮﺳﻞ ﺟﻴﺪ

-‘‘ইমাম মুনযির বলেন, উক্ত হাদিসটি ইমাম বায়হাকী

বর্ণনা করেছেন। আর বলেছেন, উক্ত হাদিসটি মুরসাল, তবে

সনদ শক্তিশালী।’’ এ হাদিসটির ইমাম আবদুর রাজ্জাকের

সূত্রটি খুবই সংক্ষিপ্ত;অনেক শক্তিশালী।

ইবনে আবী শায়বাহ : আল মুসান্নাফ : ৬/১০৮পৃ.হাদিস :২৯৮৫৯

(২) ইমাম আব্দুর রাজ্জাক : আল মুসান্নাফ : ৪/৩১৭ : হাদিস :

৭৯২৩(৩) ইমাম বায়হাকী : শুয়াবুল ঈমান : ৫/৩৫৯পৃ.হাদিস :

৩৫৫০

🏡*১০ নং হাদীস:-

-‘‘হযরত আতা ইবনে ইয়াসার () হতে বর্ণিত, রাসূল () ইরশাদ

করেন, শাবানের মধ্য রজনীতে আয়ূ নির্ধারণ করা হয়। ফলে

দেখা যায় কেউ সফরে বের হয়েছে অথচ তার নাম মৃতদের

তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, আবার কেউ বিয়ে করছে

অথচ তার নাম জীবিতের খাতা থেকে মৃত্যুর খাতায় লিখা

হয়ে গেছে।’’

░▒▓█►সনদ পর্যালোচনা ঃ রাবী ‘‘ইবনে লাহিয়াহ’ সম্পর্কে

মোটামুটি তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত ছিলেন। তাছাড়া

মোবারকপুরী বলেন,

ﻗﺎﻝ ﻣﻨﺬﺭﻯ : ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺣﻤﺪ ﺑﺎﺳﻨﺎﺩ ﻟﻴﻦ- ﺗﺤﻔﺔ ﺍﻻﺣﻮﺫﻯ : ৪৪১/৩

-‘‘ইমাম মুনযিরী () বলেন, ইমাম আহমদ উক্ত হাদিসটি বর্ণনা

করেছেন এবং বলেন, উক্ত হাদীসের সনদটি ইবনে লাহিয়ার

কারণে লীন বা নরম প্রকৃতির।’’

ইমাম বায্যার : আল মুসনাদ :৩ পৃ- ১৫৮, হাদিস : ৭৯২৫(২)

সুয়ূতি, জামিউল আহাদিস, ৪১/৬৯পৃ. হাদিস,৪৪৩১৪, (৩) ইবনে

রাহবিয়্যাহ, মুসনাদ, ৩/৯৮১পৃ. হাদিস,১৭০২ (৪) তবারী, শরহে

উসূলুল আকায়েদ, ৩/৪৯৯পৃ. হাদিস,৭৬৯

🏡*১১ নং হাদীস:-

আয়শা (রা:) বলেন, “রাসূলুল্লাহ আমার ঘরে প্রবেশ করলেন

এবং তাঁর পোশাকটি খুলে রাখলেন। কিন্তু তত্ক্ষণাত্

আবার তা পরিধান করলেন। এতে আমার মনে কঠিন

ক্রোধের উদ্রেক হয়। কারণ আমার মনে হলো যে, তিনি

আমার কোন সতীনের নিকট গমন করেছেন। তখন আমি

বেরিয়ে তাঁকে অনুসরণ করলাম এবং দেখতে পেলাম যে,

তিনি বাক্বী গোরস্থানে মুমিন নরনারী ও শহীদদের পাপ

মার্জনার জন্য দোয়া করছেন। আমি (মনে মনে) বললাম,

আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কুরবানী হউন, আমি আমার

জাগতিক প্রয়োজন নিয়ে ব্যস্ত আর আপনি আপনার রবের

কাছে ব্যস্ত। অত:পর আমি ফিরে গিয়ে আমার কক্ষে প্রবেশ

করলাম, তখন আমি দীর্ঘশ্বাস নিয়ে হাঁপাচ্ছিলাম।

এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (স.) আমার নিকট আগমন করে

বললেন, আয়শা, তুমি এভাবে হাঁপাচ্ছ কেন? আয়শা বললেন,

আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কুরবানী হউন, আপনি

আমার কাছে আসলেন এবং কাপড় খুলতে শুরু করে তা আবার

পরিধান করলেন। ব্যাপারটি আমাকে খুব আহত করল। কারণ

আমি ধারণা করেছিলাম যে, আপনি আমার কোন সতীনের

সংস্পর্শে গিয়েছেন। পরে আপনাকে বাক্বী’তে দোয়া

করতে দেখলাম। তিনি বললেন, হে আয়েশা, তুমি কি

আশংকা করেছিলে যে, আল্লাহ ও তদীয় রাসুল তোমার

উপর অবিচার করবেন? বরং আমার কাছে জিবরাঈল (আ.)

আসলেন এবং বললেন, এ রাত্রটি মধ্য শাবানের রাত।

আল্লাহ তা’য়ালা এ রাতে ‘কালব’ সম্পদায়ের মেষপালের

পশমের চাইতে অধিক সংখ্যককে ক্ষমা করেন। তবে তিনি

শিরকে লিপ্ত, বিদ্বেষী, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী,

কাপড় ঝুলিয়ে (টাখনু আবৃত করে) পরিধানকারী, পিতা

মাতার অবাধ্য সন্তান ও মদ্যপায়ীদের প্রতি দৃষ্টি দেন না।

অত:পর তিনি কাপড় খুললেন এবং আমাকে বললেন, হে

আয়শা, আমাকে কি এ রাতে ইবাদত করার অনুমতি দিবে?

আমি বললাম, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উত্সর্গিত

হোন! অবশ্যই। অত:পর তিনি সালাত আদায় করতে লাগলেন

এবং এমন দীর্ঘ সিজদা করলেন আমার মনে হলো যে, তিনি

মৃত্যুবরণ করেছেন। অত:পর আমি (অন্ধকার ঘরে) তাকে

খুঁজলাম এবং তাঁর পদদ্বয়ের তালুতে হাত রাখলাম। তখন

তিনি নড়াচড়া করলেন। ফলে দুশ্চিন্তা-মুক্ত হলাম। আমি

শুনলাম, তিনি সিজদারত অবস্থায় বলছেন: ‘আমি আপনার

কাছে শাস্তির পরিবর্তে ক্ষমা চাই, অসন্তুষ্টির পরিবর্তে

সন্তুষ্টি চাই। আপনার কাছে আপনার (আজাব ও গজব) থেকে

আশ্রয় চাই। আপনি সুমহান। আপনার প্রশংসা করে আমি

শেষ করতে পারি না। আপনি তেমনই যেমন আপনি আপনার

প্রসংশা করেছেন। আয়শা (রা.) বলেন, সকালে আমি এ

দোয়াটি তাঁর কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, হে

আয়শা, তুমি কি এগুলো শিখেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন

তিনি বললেন, হে আয়শা তুমি এগুলো ভাল করে শিখ এবং

অন্যকে শিক্ষা দাও। জিবরাঈল (আ.) আমাকে এগুলো

শিক্ষা দিয়েছেন এবং সিজদার ভিতরে বারবার বলতে

বলেছেন।

(বায়হাকীর শুয়াবুল ইমান ২/৩৮৩)।

░▒▓█► হাদীসটির মান :

ইমাম বায়হাকী নিজেই উক্ত হাদীস উল্লেখ করে বলেন-

ﻗُﻠْﺖُ : ﻫَﺬَﺍ ﻣُﺮْﺳَﻞٌ ﺟَﻴِّﺪٌ ﻭَﻳُﺤْﺘَﻤَﻞُ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﺍﻟْﻌَﻠَﺎﺀ ﺑْﻦُ ﺍﻟْﺤَﺎﺭِﺙِ ﺃَﺧَﺬَﻩُ ﻣِﻦْ ﻣَﻜْﺤُﻮﻝٍ ﻭَﺍﻟﻠﻪُ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ،

অর্থাৎ : উক্ত হাদীসটি (মুরসাল) সনদ অনেক উত্তম। অতএব

হাদীসটি প্রমাণযোগ্য।

Top