▆ পাঁচ রাতের দুআ’র গুরুত্ববহ হাদিস📓
হযরত আবু উমামা রা. বর্ণিত সূত্র ছাড়াও অপর অনেক সূত্রে হাদিসটি বর্ণিত আছে।
যেমন
قال عبد الرزاق: وأخبرني من، سمع البيلماني يحدث عن أبيه، عن ابن عمر قال : “خمس ليال لا ترد فيهن الد عام: ليلة الجمعة، وأول ليلة من رجب ، وليلة النصف من شعبان ، وليلتي العيدين *
অর্থাৎ : “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনূ উমর রা. থেকে বর্ণিত।
প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله و سلم) ইরশাদ করেন :
পাঁচ রজনীর দুআ’ আল্লাহ্ পাক ফেরৎ দেন না।
১. জুমুঅা’র রজনী,
২. রজব মাসের প্রথম রজনী,
৩. শা’বান মাসের ১৫ তারিখের রজনী,
৪. ও ৫. ঈদুল ফিৎর ও ঈদুল আদ্বহার রজনীর দুআ’।”
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহ. : মুসান্নাফ; ৪/৩১৭, হাদিস ২৯২৭; মাক্তুবাতুল ইসলামী, বৈরুত।
*_* ইমাম বায়হাকী রহ. : শুয়াবুল ঈমান; ২/১৩।
*_* ইমাম বায়হাকী রহ. : ফাজায়েলে ওয়াক্ত; পৃষ্ঠা ৩১২, হাদিস ১৪৯।
*_* ইমাম বাজ্জার রহ. : আল মুসনাদ; হাদিস ৭৯২৭।
*_* ইমাম ইবনূ ‘আবিদিন শামী রহ. : ফাতাওয়ায়ে শামী; ৬/৫১-৫২ পৃষ্ঠা, ২/২৩৭ পৃষ্ঠা, অধ্যায় দাফন।
ইহা ছাড়াও
উক্ত হাদিসটি এই জগৎ বিখ্যাত ফাতাওয়ার কিতাবের যথাক্রমে
আযান অধ্যায়ের, ১/৩৮৯ পৃষ্ঠায়;
আহকামুল উমরাহ্ অধ্যায়ের, ২/৪৭৩ পৃষ্ঠায়;
কিতাবুল ওয়াক্বফ অধ্যায়ের, ৪/৩৬৪ পৃষ্ঠায়;
৫/১৬৭ পৃষ্ঠায়, ৫/১৭৬ পৃষ্ঠায়, ৫/৬৫৬ পৃষ্ঠায় উক্ত রজনীগুলোর গুরুত্ব আলোচনা করে উল্লেখ করেছেন, এই রেফারেন্স দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বৈরুত প্রকাশিত কিতাবে রয়েছে।
এই হাদিসটির সনদ সহিহ্।
তবে ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহ. তাদলীস করেছেন।
আর হাদিস অস্বিকারী সম্প্রদায়টি যে হাদিস সম্পর্কে মন্তব্য করছে তা হযরত আবু উমামা রা. বর্ণিত হাদিস পাক।
হাদিসটি হচ্ছে :
عن عن أبي أمامة رضى الله عنه قال رسول الله صلى الله عليه و سلم خمس ليال لا ترد فيهن الدعوة أول ليلة من رجب و ليلة النصف من يس عبان و ليلة الجمعة و ليلة الفطر و ليلة النحر*
অর্থাৎ : “প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله و سلم) ইরশাদ করেন :
পাঁচ রজনীর দুআ’ আল্লাহ্ পাক ফেরৎ দেন না।
১. রজবের প্রথম রাজনী,
২. মধ্য শা’বানের রজনী (লায়লাতুন নিসফ মিন শা’বান / শবে বারাআত),
৩. জুমুঅা’র রজনী,
৪. ও ৫. ঈদুল ফিৎর ও ঈদুল আদ্বহার রজনী।
গ্রন্থ সূত্র :
*_* ইবনূ আসাকীর রহ. : তারীখে দামিস্ক, ১০/৪০৮ পৃষ্ঠা, হাদিস ৯৬৮; দারুল ফিকর্ ইলমিয়্যাহ, বৈরুত লেবানান প্রকাশিত।
*_* ইমাম সুয়ূতি রহ. : জামিয়ুস সাগীর; ১/৬০৮ পৃষ্ঠা, হাদিস ৩৯৫২।
*_* ইমাম দায়লামী রহ. : আল মুসনাদুল ফিরদাউস; ২/১৯৬ পৃষ্ঠা, হাদিস ২৯৭৫।
*_* আল্লামা ইউসূফ নাবাহানী রহ. : ফাৎহুল কাবীর; ২/৮৭ পৃষ্ঠা, হাদিস ৬০৭৫।
উক্ত হাদিসটি ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি রহ. দ্বইফ বলেছেন; তিনি বা সকল মুহাদ্দিসিনে ক্বিরাম র. এঁর নিকট দ্বয়ীফ হাদিস ‘ফাজায়েলের ক্ষেত্রে আমলযোগ্য হাদিস।
তাঁদের নিকট অগ্রহনীয় হচ্ছে মঔদ্বু হাদিস। তাঁরা অগ্রহনীয় হাদিস হলে তাকে সরাসরি মাঔদ্বু রায় প্রদান করে থাকেন। অর্থাৎ বলেন, হাদিসটি মঔদ্বু বা জাল।
আর এ যুগের নাসিরুদ্দিন আলবানী স্ব-শিক্ষিত শেখ ইলমী ঘাটতির কারণে দ্বয়ীফ হাদিসকেও জাল অর্থাৎ মঔদ্বু বুঝে নিয়েছে।
তার নিকট দ্বয়ীফ ও মওদ্বু কোনো পার্থ্যক্য নেই।
তার এই বুঝ পূর্ববর্তী সকল মুহাদ্দিসিনে ক্বিরামের মতানুযায়ী হাদিস অস্বিকারের নামান্তর।
ইহা প্রিয় নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর প্রতি মিথ্যারোপ।
কাজেই
হাদিসের বর্ণনাকারীর বা হাদিসের মান যাচাইয়ে কোনো হাদিসকে জাল বা মঔদ্বু বলা মুহাদ্দিসিনে ক্বিরামের জন্যে মৃত্যু তূল্য বা সর্বস্বান্ত হওয়া বা দেউলিয়াপনা।
আর
সে কারণে মুহাদ্দিসিনে ক্বিরামের নিকট দ্বয়ীফ মানের হাদিস কয়েকটি সূত্রের বর্ণনার কারণে হাসান (Fair) মান বিশিষ্ট হয়। আর হাসান (Fair) মান বিশিষ্ট হাদিস সহিহ্ (Sound) মানের নিকটবর্তী হাদিস।
সুপ্রিয় পাঠক, এই আলোচোনার প্রথমোক্ত সহিহ্ মান বিশিষ্ট হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনূ উমর রা. বর্ণিত সহিহ্ হাদিস পূর্বেই উল্লেখ করেছি।
আমলের জন্যে পূর্বে উল্লোখিত হাদিসই যথেষ্ট। কেননা, সেই হাদিসটির ব্যাপারে কোনো মুহাদ্দিস মন্তব্য করেন নি। কাজেই আহলুস সূন্নাহর বিপরীত মতাবলম্বী, বাতীলদের কথার কোনোরুপ গ্রহণযোগ্যতা নেই।