বিষয়ঃ শবে বরাত সম্পর্কে প্রশ্নোত্তর।
লেখকঃ (মাসুম বিল্লাহ সানি)

░▒▓█► প্রশ্ন ১ : “শবে বরাত” এটি কুরআন হাদিসে কোথায় আছে?
জবাবঃ এটি ফার্সি শব্দ তাই কুরআন হাদিসে কোথাও নেই। যেমনঃ নামাজ, রোজা এসব শব্দও ফার্সী শব্দ।

░▒▓█► প্রশ্ন ২ : তাহলে এর আরবি শব্দ কি? সহিহ হাদিসে কি এই রাত্রীর কথা আছে?
জবাবঃ “আল-কুরআন এর তফসীর দ্বারা একে একে “লাইলাতুল মুবারাকাহ” সহ আরো অনেক নাম দ্বারা বর্ননা করা হয়েছে। (নিচের লিংকে আলোচিত হয়েছে)
হাদিস শরীফে এই পবিত্র রাতকে “লাইলাতুন নিফসে মিন শাবান ”অর্থাৎ “অর্ধ শাবানের রাত্র” হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে।
আমরা জানি না তাই এটা আমাদের ব্যর্থতা। এজন্য না জেনে বিদআত বলাটা মারাত্মক কবীরা গুনাহ হবে।

░▒▓█► প্রশ্ন ৩ : অনেকে বলে ইহা বিদআত এদের ফয়সালা ইসলামী বিধান অনুযায়ী কি হবে?
জবাবঃ
(A) সওয়াবের কাজকে গোনাহের কাজ বলে যারা কোটি কোটি মানুষের উপর অপবাদ দিচ্ছে সকল লক্ষ-কোটি মানুষকে সেই অপবাদ দেয়ার তাদের মাথায় সমস্ত গোনাহ বর্তাবে।
(B) কুরআন বা হাদিস কোনটা অস্বীকার করা ইমানদারের কাজ নয়। অস্বীকার করা কুফরি।
(C) তাছাড়া হারামকে হালাল বলা/মনে করা আর হালালকে হারাম বলা/মনে করাও কুফর।
(D) “যে লোক সৎ কাজের জন্য কোনো সুপারিশ করবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক সুপারিশ করবে মন্দ কাজের জন্য, সে তার পাপের বোঝারও একটি অংশ পাবে। বস্তুত, আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান।”
★ (আল-কুর’আন: সুরা নিসা, আয়াত ৮৫)


(অজ্ঞতা বশত কেউ করলে সেটার ফয়সালা ভিন্ন কথা।)
░▒▓█► প্রশ্ন ৪ : তাহলে শবে বরাতের প্রমাণ দিতে পারবেন?
জবাবঃ

প্রমান :

শুধুমাত্র উদাহরনের জন্য ১টি প্রমান দিলাম এ ব্যাপারে আরো অনেক হাদিস রয়েছে।

░▒▓█► হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) এর হাদীস-

5665 – أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُعَافَى الْعَابِدُ بِصَيْدَا، وَابْنُ قُتَيْبَةَ وَغَيْرُهُ، قَالُوا: حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ خَالِدٍ الْأَزْرَقُ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو خُلَيْدٍ عُتْبَةُ بْنُ حَمَّادٍ، عَنِ الْأَوْزَاعِيِّ، وَابْنِ ثَوْبَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ يُخَامِرَ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَطْلُعُ اللَّهُ إِلَى خَلْقِهِ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ»

অর্থ : হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন-অর্ধ শাবানের রাতে [শবে বরাতে]আল্লাহ তাআলা তাঁর সমস্ত মাখলুকের প্রতি মনযোগ আরোপ করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ব্যক্তি ছাড়া সকলকে ক্ষমা করে দেন।

Reference :

★ সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৬৬৫,
★ মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২৭৫৪,
★ মুসনাদে ইসহাক বিন রাহওয়াই, হাদীস নং-১৭০২,
★ তাবারানী : আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৭৭৬,
★ আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-২১৫,
★ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৩৯০,
★ মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-২০৩,
★ মুসন্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩০৪৭৯,
★ শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২০৪ ও ৩৫৫২
★ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ১/৪৪৫;
★ মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং- ২/১৭৬;
★ সুনানে বায়হাকী, হাদীস নং- ৩/৩৮১; হাদীসটি সহীহ)
★ কিতাবুস সুন্নাহ-১/২২৪, হাদীস-৫১২,
★ আল ইহসান-৭/৪৭,
★ মাওয়ারিদুয যমআন-৪৮৬, হাদীস-১৯৮০,
★ মাজমাউ যাওয়াইদ-৮/৬৫,
★ সিলসিলাতুস সহীহা-৩/১৩৫, হাদীস-১১৪৪,
★ আততারগীব-২/২৪২

░▒▓█► হাদীসটির মান :

হাদীসটি সম্পূর্ণ সহীহ

০১. ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ.-৩৫৪) বলেন, হাদীসটি সহীহ। সহীহ ইবনে হিব্বান-১২/৪৮১, হাদীস-৫৬৬৫।

০২. যারা শবে বরাত অস্বীকার করে সেই আহলে হাদীসদের মহাগুরু শায়খ নাসীর উদ্দীন আলবানী উল্লেখ করেছে-

سلسلة الأحاديث الصحيحة وشيء من فقهها وفوائدها (3/ 135)
1144 – ” يطلع الله تبارك وتعالى إلى خلقه ليلة النصف من شعبان، فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن “.
حديث صحيح، روي عن جماعة من الصحابة من طرق مختلفة يشد بعضها بعضا وهم معاذ ابن جبل وأبو ثعلبة الخشني وعبد الله بن عمرو وأبي موسى الأشعري وأبي هريرة وأبي بكر الصديق وعوف ابن مالك وعائشة.

উক্ত হাদীসটি সহীহ, যা সাহাবায়ে কেরাম (রা.) এর এক বড় জামাত বর্ণনা করেছেন এবং একটি হাদীস অন্য হাদীস এর সনদকে আরো মজবুত করে তুলে। সাহাবীদের থেকে বর্ণনাকারীগণ হলেন :

(০১) হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.)

(০২) আবূ সালাবা আল খাসানী (রা.)

(০৩) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা)

(০৪) আবূ মূসা আল আশআরী (রা.)

(০৫) আবূ হুরায়রা (রা.)

(০৬) আবূ বকর সিদ্দীক (রা.)

(০৭) আউফ ইবনে মালেক (রা.)

(০৮) হযরত আয়েশা (রা.)।

Reference : সিলসিলাতুস সহীহা-৩/১৩৫, হাদীস-১১৪৪।
Top