ইকামতের সময় কখন দাঁড়াবেন তা নিয়ে অন্য তিন মাযহাবের মতামতঃ
পর্ব-৫।
————————————————-
১। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] এর মতামত সম্পর্কে ইমাম নববী শরহে মুসলিমে (মুসলিম শরীফ ১ম খন্ড ২২১ পৃষ্ঠায়) বলেন-
[ ﻭﻛﺎﻥ ﺍﻧﺲ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻳﻘﻮﻡ ﺍﺫﺍ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻗﺪ ﻗﺎﻣﺖ ﺍﻟﺼﻠﻮﺕ ﻭﺑﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﺣﻤﺪ . ]
অর্থাৎ- রাসূলে পাক [ ﷺ ] এর খাদেম হযরত আনাস [ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ] ইকামতের সময় তখন দাঁড়াতেন যখন মুয়াজ্জিন বলতেন ক্বাদ ক্বামাতিছ ছালাহ। ইহাই ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের অভিমত।
২। আল্লামা আইনী শরহে বুখারীতে (৪র্থ খন্ড ৩৫৭ পৃষ্ঠায়) ইমাম আহমদের অভিমত এভাবে উল্লেখ করেছেন-
[ ﻗﺎﻝ ﺍﺣﻤﺪ ﺍﺫﺍ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻗﺪ ﻗﺎﻣﺖ ﺍﻟﺼﻠﻮﺕ ﻳﻘﻮﻡ ﺍﻻﻣﺎﻡ . ]
অর্থাৎ- ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] এই অভিমত দিয়েছেন যে, যখন মুয়াজ্জিন বলবে ” ক্বাদ ক্বামাতিছ ছালাহ” তখন ইমাম দাঁড়াবে।
৩। ইমাম শাফেয়ী [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] এর অভিমত সম্পর্কে আল্লামা কাস্তুলানী বলেন-
[ ﻭﺍﺧﺘﻠﻒ ﻓﻰ ﻭﻗﺖ ﺍﻟﻘﻴﺎﻡ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﺊ ﻭﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻔﺮﺍﻍ ﻣﻦ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ ﻭﻫﻮ ﻗﻮﻝ ﺍﺑﻰ ﻳﻮﺳﻒ . ]
অর্থাৎ- নামাযের জামাতে দাঁড়ানোর সময়ের ব্যাপারে ইমামগণের মধ্যে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। ইমাম শাফেয়ী এবং অধিকাংশ উলামাগণের মতে ইকামত সমাপ্ত হওয়ার পর ইমাম ও মুসল্লীগণ দাঁড়াবে। হানাফী মাযহাবের ইমাম আবু ইউসুফ [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] তাঁর পৃথক একটি মতে ইমাম শাফেয়ীর ন্যায় অভিমত দিয়েছেন। [মুসলিম শরীফ ১ম খন্ড ২২১ পৃষ্ঠা এবং শরহে মুসলিম শরীফেও রয়েছে]
৪। ইমাম মালেক [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] এর অভিমত সম্পর্কে আউনুল মা’বুদ শরহে আবু দাউদ (২য় খন্ড ১২৮ পৃষ্ঠায়) এবং ফতহুল বারী শরহে বুখারী গ্রন্থদ্বয়ে উল্লেখ রয়েছে-
[ ﻭﻗﺎﻝ ﻣﺎﻟﻚ ﻓﻰ ﺍﻻﻣﺆﻃﺎ ﻟﻢ ﺍﺳﻤﻊ ﻓﻰ ﻗﻴﺎﻡ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺣﻴﻦ ﺗﻘﺎﻡ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﺑﺤﺪ ﻣﺤﺪﻭﺩ ﺍﻻ ﺍﻧﻰ ﺍﺭﻯ ﺯﻟﻚ ﻋﻠﻰ ﻃﺎﻗﻪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻓﺎﻥ ﻓﻴﻬﻢ ﺍﻟﺜﻘﻴﻞ ﻭﺍﻟﻀﻌﻴﻒ ﻭﺫﻫﺐ ﺍﻻﻛﺜﺮﻭﻥ ﺍﻟﻰ ﺍﻧﻬﻢ ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻣﻌﻬﻢ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﻟﻢ ﻳﻘﻮﻣﻮﺍ ﺣﺘﻰ ﻳﻔﺮﻍ ﻣﻦ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ . ]
অর্থাৎ- ইমাম মালেক [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] বলেছেন- নামাযের ইকামতের কোন পর্যায়ে মুসল্লীগণকে দাঁড়াতে হবে- এ সম্পর্কে আমি কোন চুড়ান্ত হাদীছ এ পর্যন্ত শুনিনি। তবে আমি মুসল্লীগণের শারীরিক শক্তির উপর দাঁড়ানোর বিষয়টি ন্যস্ত করছি। কেননা, মুসল্লীদের মধ্যে কেউ আছে শারীরিকভাবে দূর্বল এবং কেউ আছেন হালকা পাতলা। তবে অধিকাংশ আলেমগণ (মালেকী) অভিমত দিয়েছেন যে, ইকামত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইমাম ও মুসল্লীগণ দাঁড়াবে না।
বিঃ দ্রঃ ইমাম মালেক [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] কর্তৃক পরিষ্কারভাবে দাঁড়ানোর সীমারেখা না দেওয়ার কারণ হলো – এ সম্পর্কিত কোন চুড়ান্ত হাদীস তাঁর নিকট তখনও পৌঁছেনি। তাই তিনি সুনির্দিষ্টভাবে সীমারেখা না দিয়ে মুসল্লীদের শারীরিক অবস্থার উপর ন্যস্ত করেছেন। কিন্তু মালেকী মাযহাবের উল্লেখযোগ্য একজন ইমাম আল্লামা যোরকানী [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] শরহে মোয়াত্তা ইমাম মালেক – এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে, অধিকাংশ মালেকী উলামা এবং ফতোয়া বিশারদগণের মতে ইকামত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইমাম ও মুসল্লীগণ বসে থাকবেন।
পর্ব-৫।
————————————————-
১। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] এর মতামত সম্পর্কে ইমাম নববী শরহে মুসলিমে (মুসলিম শরীফ ১ম খন্ড ২২১ পৃষ্ঠায়) বলেন-
[ ﻭﻛﺎﻥ ﺍﻧﺲ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻳﻘﻮﻡ ﺍﺫﺍ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻗﺪ ﻗﺎﻣﺖ ﺍﻟﺼﻠﻮﺕ ﻭﺑﻪ ﻗﺎﻝ ﺍﺣﻤﺪ . ]
অর্থাৎ- রাসূলে পাক [ ﷺ ] এর খাদেম হযরত আনাস [ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ] ইকামতের সময় তখন দাঁড়াতেন যখন মুয়াজ্জিন বলতেন ক্বাদ ক্বামাতিছ ছালাহ। ইহাই ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের অভিমত।
২। আল্লামা আইনী শরহে বুখারীতে (৪র্থ খন্ড ৩৫৭ পৃষ্ঠায়) ইমাম আহমদের অভিমত এভাবে উল্লেখ করেছেন-
[ ﻗﺎﻝ ﺍﺣﻤﺪ ﺍﺫﺍ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻗﺪ ﻗﺎﻣﺖ ﺍﻟﺼﻠﻮﺕ ﻳﻘﻮﻡ ﺍﻻﻣﺎﻡ . ]
অর্থাৎ- ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] এই অভিমত দিয়েছেন যে, যখন মুয়াজ্জিন বলবে ” ক্বাদ ক্বামাতিছ ছালাহ” তখন ইমাম দাঁড়াবে।
৩। ইমাম শাফেয়ী [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] এর অভিমত সম্পর্কে আল্লামা কাস্তুলানী বলেন-
[ ﻭﺍﺧﺘﻠﻒ ﻓﻰ ﻭﻗﺖ ﺍﻟﻘﻴﺎﻡ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﺊ ﻭﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻔﺮﺍﻍ ﻣﻦ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ ﻭﻫﻮ ﻗﻮﻝ ﺍﺑﻰ ﻳﻮﺳﻒ . ]
অর্থাৎ- নামাযের জামাতে দাঁড়ানোর সময়ের ব্যাপারে ইমামগণের মধ্যে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। ইমাম শাফেয়ী এবং অধিকাংশ উলামাগণের মতে ইকামত সমাপ্ত হওয়ার পর ইমাম ও মুসল্লীগণ দাঁড়াবে। হানাফী মাযহাবের ইমাম আবু ইউসুফ [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] তাঁর পৃথক একটি মতে ইমাম শাফেয়ীর ন্যায় অভিমত দিয়েছেন। [মুসলিম শরীফ ১ম খন্ড ২২১ পৃষ্ঠা এবং শরহে মুসলিম শরীফেও রয়েছে]
৪। ইমাম মালেক [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] এর অভিমত সম্পর্কে আউনুল মা’বুদ শরহে আবু দাউদ (২য় খন্ড ১২৮ পৃষ্ঠায়) এবং ফতহুল বারী শরহে বুখারী গ্রন্থদ্বয়ে উল্লেখ রয়েছে-
[ ﻭﻗﺎﻝ ﻣﺎﻟﻚ ﻓﻰ ﺍﻻﻣﺆﻃﺎ ﻟﻢ ﺍﺳﻤﻊ ﻓﻰ ﻗﻴﺎﻡ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺣﻴﻦ ﺗﻘﺎﻡ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﺑﺤﺪ ﻣﺤﺪﻭﺩ ﺍﻻ ﺍﻧﻰ ﺍﺭﻯ ﺯﻟﻚ ﻋﻠﻰ ﻃﺎﻗﻪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻓﺎﻥ ﻓﻴﻬﻢ ﺍﻟﺜﻘﻴﻞ ﻭﺍﻟﻀﻌﻴﻒ ﻭﺫﻫﺐ ﺍﻻﻛﺜﺮﻭﻥ ﺍﻟﻰ ﺍﻧﻬﻢ ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻣﻌﻬﻢ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﻟﻢ ﻳﻘﻮﻣﻮﺍ ﺣﺘﻰ ﻳﻔﺮﻍ ﻣﻦ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ . ]
অর্থাৎ- ইমাম মালেক [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] বলেছেন- নামাযের ইকামতের কোন পর্যায়ে মুসল্লীগণকে দাঁড়াতে হবে- এ সম্পর্কে আমি কোন চুড়ান্ত হাদীছ এ পর্যন্ত শুনিনি। তবে আমি মুসল্লীগণের শারীরিক শক্তির উপর দাঁড়ানোর বিষয়টি ন্যস্ত করছি। কেননা, মুসল্লীদের মধ্যে কেউ আছে শারীরিকভাবে দূর্বল এবং কেউ আছেন হালকা পাতলা। তবে অধিকাংশ আলেমগণ (মালেকী) অভিমত দিয়েছেন যে, ইকামত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইমাম ও মুসল্লীগণ দাঁড়াবে না।
বিঃ দ্রঃ ইমাম মালেক [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] কর্তৃক পরিষ্কারভাবে দাঁড়ানোর সীমারেখা না দেওয়ার কারণ হলো – এ সম্পর্কিত কোন চুড়ান্ত হাদীস তাঁর নিকট তখনও পৌঁছেনি। তাই তিনি সুনির্দিষ্টভাবে সীমারেখা না দিয়ে মুসল্লীদের শারীরিক অবস্থার উপর ন্যস্ত করেছেন। কিন্তু মালেকী মাযহাবের উল্লেখযোগ্য একজন ইমাম আল্লামা যোরকানী [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] শরহে মোয়াত্তা ইমাম মালেক – এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে, অধিকাংশ মালেকী উলামা এবং ফতোয়া বিশারদগণের মতে ইকামত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইমাম ও মুসল্লীগণ বসে থাকবেন।