★লেখক:-হাসনাইন আহমদ আলকাদেরী★



১.নিয়ত করা বেদাআত!

২.শবে বরাত বেদাআত!

৩.শবে মে’রাজ বেদাআত!

৫.ইসালে সাওয়াব বেদাআত!

৬.মিলাদ কিয়াম বেদাআত!

৮.তারাবীহ বিশ রাকাত নয় বরং আট রাকাত!

৯.মসজিদে জিকির করা বেদাআত!

১০.হাত তুলে সম্মিলিত মোনাজাত বেদাআত!

১১.মাজহাব মানা যাবেনা!

সবার জাওয়াব একটাই না আমিও শুনিনাই আমার বাপদাদারাও শুনেনাই।



আরে ভাই!এই কথাটাইতে নবিজী আমাদেরকে বুঝাতে চাইছেন-



عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: ((سَيَكُونُ فِي آخِرِ أُمَّتِي أُنَاسٌ يُحَدِّثُونَكُمْ مَا لَمْ تَسْمَعُوا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ)).

নবিজী বলেন,শেষ যামানায় এমন কিছু লোক বাহির হবে, তারা এমন সব কথা বা হাদীস বলবে যেগুলো তোমরাও শুনোনাই এবং তোমাদের বাপদাদারাও শুনেনাই।অতঃপর এজন্য এদের কাছ থেকে ঈমান ও আমল বাচানোর জন্য তোমরা দুরে থাকবে।



সুত্র:-সহীহ মুসলিম-কিতাবুল মুকাদ্দামাহ,باب النَّهْيِ عَنِ الرِّوَايَةِ عَنِ الضُّعَفَاءِ وَالاِحْتِيَاطِ فِي تَحَمُّلِهَا,হাদীস নং ১৫;



জ্ঞানীরা একটা কথা বলে থাকে “গেছে দিন ভালো আসতেছে দিন খারাপ”।কেয়ামতের বড় আলামতের মধ্যে একটা আলামত হলো দিনদিন জ্ঞানকে তুলে নেয়া হবে।তাই যারা বলে বেড়ায় আগের লোকেরা ভুল করে গেছে, এরা সব বেদাআত করে গেছে, বুঝতে হবে এরা তারাই যারা এই মুসলিম জাতীর ঈমান ও আমলকে ধ্বংস করে দিতে চায়।



এদের পরিচয় নবিজী আরো দিয়েছেন এই বলে,যারা খারেজী হবে তাদের অন্যতম আলামত হলো-السُّنَّةُ فيهم بدعة তারা আমার সুন্নাতকে বেদাআতেরর ফতোওয়া দিবে।



সুত্র-তাবরানী-মু’জামুস সাগীর ২/১১,হাদীস নং ৮৬৯;



তারা মানুষদেরকে একটা কথা বলে সবসময় বিভ্রান্ত করতে বলে থাকে ইসলামে সকল বেদাআত ভ্রষ্টতা!



আসুন, এর সমাধানওও আমরা নবিজী ও তার সাহাবীদের কথা থেকে পর্যালোচনা করি।







মনে রাখবেন ইসলামে সকল নতুন আবিস্কার ভ্রষ্টতা নয়।নিচে দেয়া হাদীসগুলো পডলে আশা করি বুঝতে পারবেন।



হযরত আব্দুর ইবনে আব্দুল কারী বর্ণনা করেন,তিনি বলেন আমি হযরত উমর (রা) সাথে এক রাত মসজিদের উদ্যেশ্যে বাহির হলাম,আমরা দেখলাম লোকেরা বিক্ষিপ্তভাবে নামাজ পডছে।কেউ একাকী পডছে আবার কোন লোক নামাজ পডছে কিন্তু তার পিছনে কতগুলো লোক ইকতেদা করছে।হযরতে উমার(রা) বলেন আমার মনে হলো এদেরকে যদি একজন কারীর পিছনে একত্রিত করে দিই তাহলে অনেক ভালো হবে।তাই তিনি উবাই ইবনে কা’ব এর পিছনে সবাই একত্রিত করে দিলেন।অতঃপর আমি হযরত উমার (রা) এর সাথে অন্য একটি রাতে যখন বাহির হলাম,আমি দেখলাম লোকেরা তাদের কারীর পিছনে নামাজ পডছে-

قال عمرُ نعمَ البدعةُ هذهِ

এটা কতইনা ভালো বিদাআত অর্থাৎ বিদাআতে হাসানা।



সুত্র:-সহীহ বুখারী-কিতাবু সালাতিত তারাবিহ,বাবু ফাদ্বলি মান কামা রমাদান,হাদীস নং ১৯০৬;

মোয়াত্তা ইমাম মালেক- কিতাবুস সালাতি ফি রমাদ্বান,বাবু মা জাআ ফি কিয়ামি রমাদান,হাদীস নং ৬৫০;



রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَن سنَّ في الاسلامِ سُنَّةً حسنةً فله اجرها،وأجرُ مَن عمِلَ بها بعده

যে ব্যক্তি ইসলামে কোন ভালো রীতি/পন্হার ভিত্তি স্হাপন করলো,তার উপর আমল অনুযায়ী সাওয়াব রয়েছে।এবং পরবর্তীতে যারা এটার উপর আমল করবে তার জন্যও সাওয়াব রয়েছে।



সুত্র:-সহীহ মুসলিম-কিতাবুয যাকাত,হাদীস নং১০১৭;

কিতাবুল ইলম,হাদীস নং ১০১৭

সুনান নাসায়ী-কিতাবুয যাকাত-বাবুত তাহরীদে আলাস সাদকাতে,হাদীস নং ২৫৫৪;

সুনান ইবনে মাজাহ-আল মোকাদ্দামা,হাদীস নং ২০৩;



তাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন-

فما رآه المؤمنُ حسنًا فهوا عند اللّٰهِ حسنٌ وما رآه المؤمنون قبيحاً فهو عند اللّٰهِ قبيح



যে আমল মুমিনের দৃষ্টিতে ভালো সেটা আল্লাহর নিকটও ভালো।আর যে আমলটি মুমিনদের দৃষ্টিতে খারাপ সেটা আল্লাহ তাআলার নিকটও খারাপ।



সুত্র:-মসনাদে বাজ্জার,হাদীস নং ১৮১৬;

তাবরানীর-মুজামুল কাবীর,হাদীস নং৮৫৮৩;

মসনাদে আহমদ,হাদীস নং৩৬০০;

মুসতাদরাক,হাদীস নং ৪৪৬৫;



শিক্ষনীয়:-বিদআতে হাসানা এটা ভালো আমল, যে আমল দ্বারা সাওয়াব পাওয়া যায়। যারা বলে বিদআতে হাসানা বলতে কোন কিছুই নাই, তারা মুলত নবিজীর অনেকগুলো হাদীসকে অস্বীকার করেছে।তাই আসুন আমরা অতীতের যে সঠিক সুত্র আছে, সে সুত্রের রশি ধরে এগিয়ে যাই,তাহলে কেউ আমাদের ঈমান ও আমল নিয়ে ফিতনাবাজি করতে পারবেনা।

Top