প্রশ্নঃ ইকামতের সময় মসজিদে প্রবেশ করা মুসল্লীর করণীয় কী?
উত্তরঃ
》তাহতাভী আলা মারাকিল ফালাহ’ তে (২য় খন্ডের ২২০ পৃষ্ঠায়) উল্লেখ আছে-
[ ﺍﺫﺍ ﺍﺧﺬ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻓﻰ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ ﻭﺩﺧﻞ ﺭﺟﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﻓﺎﻧﻪ ﻳﻘﻌﺪ ﻭﻻ ﻳﻨﺘﻈﺮ ﻗﺎﺋﻤﺎ ﻓﺎﻧﻪ ﻣﻜﺮﻭﻩ ﻛﻤﺎ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﻀﻤﺮﺍﺕ ﻗﻬﺴﺘﺎﻧﻰ ﻭﻳﻔﻬﻢ ﻣﻨﻪ ﻛﺮﺍﻫﺔ ﺍﺑﺘﺪﺍﺀ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ – ﻭﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﻨﻪ ﻏﺎﻓﻠﻮﻥ . ]
অর্থাৎ- যখন মুয়াজ্জিন ইকামত শুরু করবে, এমন সময় যদি কোন মুসল্লী মসজিদে প্রবেশ করে তা হলে তাকে বসে যেতে হবে। দাঁড়িয়ে (হাইয়্যা আলাছ ছালাহ বা ফালাহ) পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবে না কেননা উহা মাকরুহ। আল্লামা কাহাস্তানীর মুজমিরাত গ্রন্থে এরুপই বর্ণিত আছে। তাহতাভী প্রণেতা বলেন কাহাস্তানীর ইবারত দ্বারা বুঝা গেল – ইকামতের শুরুতে দাঁড়িয়ে যাওয়া মাকরুহে তাহরীমী। কিন্তু লোকেরা এ সম্পর্কে খুবই গাফেল।
(উল্লেখ্য যে, আল্লামা তাহতাভীর যুগের লোকেরাও এ সম্পর্কে গাফলতি করে একটি মারাত্মক মাকরুহ কাজে লিপ্ত ছিল। বর্তমান কালে এরুপ করা কোন নতুন বিষয় নয়। আমাদের বিপরীত চিন্তার লোকেরা ভারতের জন্মলাভ করার পূর্বে ফতোয়ায়ে আলমগীরী রচিত হয়েছে। বাদশাহ আলমগীর ৭০০ বিজ্ঞ আলেম দিয়ে তৎকালীন ষোল লক্ষ টাকা ব্যয় করে উক্ত ফতোয়া রচনা করেছেন যাদের মধ্যে শাহ্ আব্দুর রহীম দেহলভী [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তখন দেওবন্দ মাদ্রাসা ছিল না। উক্ত ফতোয়ায় মুসল্লিগণের দাঁড়ানোর একটি মাত্র পদ্ধতিই বর্ণনা করা হয়েছে তা হল “হাইয়্যা আলাল ফালাহ” তে দাঁড়ানো শেষ করা। নিন্মে আলমগীরীর ইবারত দেখুন।)
》(ফতোয়ায়ে) আলমগীরীতে উল্লেখ আছে-
[ ﺍﺫﺍ ﺩﺧﻞ ﺭﺟﻞ ﻋﻨﺪ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ ﻳﻜﺮﻩ ﻟﻪ ﺍﻻﻧﺘﻈﺎﺭ ﻗﺎﺋﻤﺎ – ﻭﻟﻜﻦ ﻳﻘﻌﺪ ﺛﻢ ﻳﻘﻮﻡ ﺍﺫﺍ ﺑﻠﻎ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻗﻮﻟﻪ ﺣﻰ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻔﻼﺡ ﻛﺬﺍ ﺍﻟﻤﻀﻤﺮﺍﺕ ﺍﻥ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻏﻴﺮ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻭﻛﺎﻥ ﺍﻟﻘﻮﻡ ﻣﻊ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﻓﺎﻧﻪ ﻳﻘﻮﻡ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻭﺍﻟﻘﻮﻡ ﺍﺫﺍ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﺣﻰ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻔﻼﺡ ﻋﻨﺪ ﻋﻠﻤﺎﺋﻨﺎ ﺍﻟﺜﻼﺛﺔ ﻭﻫﻮ ﺍﻟﺼﺤﻴﺢ . ]
অর্থাৎ- ইকামতের সময় কোন মুসল্লী মসজিদে প্রবেশ করলে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা মাকরুহ বরং সে বসে যাবে। মুয়াজ্জিন যখন “হাইয়্যা আলাল ফালাহ” বলবে তখন সে পূর্ণভাবে দাঁড়াবে। মুজমিরাত গ্রন্থে এরুপ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। অনুরুপভাবে ইমাম ও মুসল্লীগণ একসাথে মুয়াজ্জিনের “হাইয়্যা আলাল ফালাহ” বলার সময় দাঁড়াবে যদি তারা ইকামতের পূর্ব হতেই মসজিদে বসা থাকেন। হানাফী মাযহাবের প্রথম তিন ইমাম আবু ইউসূফের ইহা ঐক্যমত। ফতোয়ার নীতিমালা অনুযায়ী ইহাকে বিশুদ্ধ সহীহ্ একমাত্র গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বলা হয়। (ফতোয়ায়ে আলমগীরী, ১ম খন্ড ৫৭ পৃঃ)
# মাসআলাঃ ইকামত দাঁড়িয়ে শ্রবণ করা মাকরুহ। উলামায়ে কেরাম এমনও বলেছেন যে, ইকামত কালে কোন ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলে, তখন সে যেখানে ছিল ওই স্থানে বসে যাবে। যখন ‘মুকাব্বির’ ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ্’ পর্যন্ত পৌঁছবে তখন সবার সাখে দাঁড়াবে।
[ফাত্ওয়া-এ রযভীয়্যাহ দ, খন্ড-২, পৃ. ৪১৯]
[ বাংলাদেশ সরকারের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের
সপ্তম (০৭) শ্রেণীর ‘আল-আকাঈদ ওয়াল ফিক্হ’ -এর ৯৫ পৃষ্ঠায় রয়েছে-
ইকামতের সময় কিভাবে দাঁড়াতে হবেঃ
“ইকামতের সময় মুয়াজ্জিন প্রথমে দাঁড়াবে। আর মুসল্লিগণ বসে থাকবেন। তিনি যখন ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ্’ বলবেন, তখন মুক্তাদিগণ দাঁড়াবেন।”
[(ক). মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক; ৩য় খন্ড, পৃ.২৮০,
(খ). ফতোয়ায়ে আলমগীরী, ১ম খন্ড, ৫৭ পৃ.
(গ). ফতোয়ায়ে শামী, খন্ড-০২, পৃ. ৪৮,
(ঘ). কিতাবুল ফিকহ আলাল মাযাহিবিল আরবায়া, খন্ড-১, পৃ. ২৯৩]
একথাও উল্লেখ রয়েছে যে, কিন্তু বহু স্থানে দেখা যায় মুয়াজ্জিন ইকামত শুরু করলেই মুসল্লিগণ দাঁড়িয়ে যান। কোথাও কোথাও ইকামতের পূর্বেই মুসল্লিগণ দাঁড়িয়ে যান বা তাদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়। এটা সুন্নাতের খেলাফ। ]
উত্তরঃ
》তাহতাভী আলা মারাকিল ফালাহ’ তে (২য় খন্ডের ২২০ পৃষ্ঠায়) উল্লেখ আছে-
[ ﺍﺫﺍ ﺍﺧﺬ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻓﻰ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ ﻭﺩﺧﻞ ﺭﺟﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﻓﺎﻧﻪ ﻳﻘﻌﺪ ﻭﻻ ﻳﻨﺘﻈﺮ ﻗﺎﺋﻤﺎ ﻓﺎﻧﻪ ﻣﻜﺮﻭﻩ ﻛﻤﺎ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﻀﻤﺮﺍﺕ ﻗﻬﺴﺘﺎﻧﻰ ﻭﻳﻔﻬﻢ ﻣﻨﻪ ﻛﺮﺍﻫﺔ ﺍﺑﺘﺪﺍﺀ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ – ﻭﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﻨﻪ ﻏﺎﻓﻠﻮﻥ . ]
অর্থাৎ- যখন মুয়াজ্জিন ইকামত শুরু করবে, এমন সময় যদি কোন মুসল্লী মসজিদে প্রবেশ করে তা হলে তাকে বসে যেতে হবে। দাঁড়িয়ে (হাইয়্যা আলাছ ছালাহ বা ফালাহ) পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবে না কেননা উহা মাকরুহ। আল্লামা কাহাস্তানীর মুজমিরাত গ্রন্থে এরুপই বর্ণিত আছে। তাহতাভী প্রণেতা বলেন কাহাস্তানীর ইবারত দ্বারা বুঝা গেল – ইকামতের শুরুতে দাঁড়িয়ে যাওয়া মাকরুহে তাহরীমী। কিন্তু লোকেরা এ সম্পর্কে খুবই গাফেল।
(উল্লেখ্য যে, আল্লামা তাহতাভীর যুগের লোকেরাও এ সম্পর্কে গাফলতি করে একটি মারাত্মক মাকরুহ কাজে লিপ্ত ছিল। বর্তমান কালে এরুপ করা কোন নতুন বিষয় নয়। আমাদের বিপরীত চিন্তার লোকেরা ভারতের জন্মলাভ করার পূর্বে ফতোয়ায়ে আলমগীরী রচিত হয়েছে। বাদশাহ আলমগীর ৭০০ বিজ্ঞ আলেম দিয়ে তৎকালীন ষোল লক্ষ টাকা ব্যয় করে উক্ত ফতোয়া রচনা করেছেন যাদের মধ্যে শাহ্ আব্দুর রহীম দেহলভী [ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ] অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তখন দেওবন্দ মাদ্রাসা ছিল না। উক্ত ফতোয়ায় মুসল্লিগণের দাঁড়ানোর একটি মাত্র পদ্ধতিই বর্ণনা করা হয়েছে তা হল “হাইয়্যা আলাল ফালাহ” তে দাঁড়ানো শেষ করা। নিন্মে আলমগীরীর ইবারত দেখুন।)
》(ফতোয়ায়ে) আলমগীরীতে উল্লেখ আছে-
[ ﺍﺫﺍ ﺩﺧﻞ ﺭﺟﻞ ﻋﻨﺪ ﺍﻻﻗﺎﻣﺔ ﻳﻜﺮﻩ ﻟﻪ ﺍﻻﻧﺘﻈﺎﺭ ﻗﺎﺋﻤﺎ – ﻭﻟﻜﻦ ﻳﻘﻌﺪ ﺛﻢ ﻳﻘﻮﻡ ﺍﺫﺍ ﺑﻠﻎ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻗﻮﻟﻪ ﺣﻰ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻔﻼﺡ ﻛﺬﺍ ﺍﻟﻤﻀﻤﺮﺍﺕ ﺍﻥ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻏﻴﺮ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻭﻛﺎﻥ ﺍﻟﻘﻮﻡ ﻣﻊ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﻓﺎﻧﻪ ﻳﻘﻮﻡ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻭﺍﻟﻘﻮﻡ ﺍﺫﺍ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﺣﻰ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻔﻼﺡ ﻋﻨﺪ ﻋﻠﻤﺎﺋﻨﺎ ﺍﻟﺜﻼﺛﺔ ﻭﻫﻮ ﺍﻟﺼﺤﻴﺢ . ]
অর্থাৎ- ইকামতের সময় কোন মুসল্লী মসজিদে প্রবেশ করলে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা মাকরুহ বরং সে বসে যাবে। মুয়াজ্জিন যখন “হাইয়্যা আলাল ফালাহ” বলবে তখন সে পূর্ণভাবে দাঁড়াবে। মুজমিরাত গ্রন্থে এরুপ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। অনুরুপভাবে ইমাম ও মুসল্লীগণ একসাথে মুয়াজ্জিনের “হাইয়্যা আলাল ফালাহ” বলার সময় দাঁড়াবে যদি তারা ইকামতের পূর্ব হতেই মসজিদে বসা থাকেন। হানাফী মাযহাবের প্রথম তিন ইমাম আবু ইউসূফের ইহা ঐক্যমত। ফতোয়ার নীতিমালা অনুযায়ী ইহাকে বিশুদ্ধ সহীহ্ একমাত্র গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বলা হয়। (ফতোয়ায়ে আলমগীরী, ১ম খন্ড ৫৭ পৃঃ)
# মাসআলাঃ ইকামত দাঁড়িয়ে শ্রবণ করা মাকরুহ। উলামায়ে কেরাম এমনও বলেছেন যে, ইকামত কালে কোন ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলে, তখন সে যেখানে ছিল ওই স্থানে বসে যাবে। যখন ‘মুকাব্বির’ ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ্’ পর্যন্ত পৌঁছবে তখন সবার সাখে দাঁড়াবে।
[ফাত্ওয়া-এ রযভীয়্যাহ দ, খন্ড-২, পৃ. ৪১৯]
[ বাংলাদেশ সরকারের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের
সপ্তম (০৭) শ্রেণীর ‘আল-আকাঈদ ওয়াল ফিক্হ’ -এর ৯৫ পৃষ্ঠায় রয়েছে-
ইকামতের সময় কিভাবে দাঁড়াতে হবেঃ
“ইকামতের সময় মুয়াজ্জিন প্রথমে দাঁড়াবে। আর মুসল্লিগণ বসে থাকবেন। তিনি যখন ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ্’ বলবেন, তখন মুক্তাদিগণ দাঁড়াবেন।”
[(ক). মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক; ৩য় খন্ড, পৃ.২৮০,
(খ). ফতোয়ায়ে আলমগীরী, ১ম খন্ড, ৫৭ পৃ.
(গ). ফতোয়ায়ে শামী, খন্ড-০২, পৃ. ৪৮,
(ঘ). কিতাবুল ফিকহ আলাল মাযাহিবিল আরবায়া, খন্ড-১, পৃ. ২৯৩]
একথাও উল্লেখ রয়েছে যে, কিন্তু বহু স্থানে দেখা যায় মুয়াজ্জিন ইকামত শুরু করলেই মুসল্লিগণ দাঁড়িয়ে যান। কোথাও কোথাও ইকামতের পূর্বেই মুসল্লিগণ দাঁড়িয়ে যান বা তাদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়। এটা সুন্নাতের খেলাফ। ]