▪ কিতাবঃ নূরে মুজাচ্ছাম (ﷺ)
▪ লেখক, সংকলকঃ মুফতি মােহাম্মদ আলাউদ্দিন জেহাদী
▪ Text Ready : Masum Billah Sunny
এ সম্পর্কে আরেক হাদিস লক্ষ্য করুন,
♣ “হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহ তা'য়ালা ঈসা (আঃ) এর প্রতি ওহী করলেন। হে ঈসা (আঃ) তুমি মুহাম্মদ (ﷺ) এর প্রতি ঈমান আন ও তােমার উম্মতদেরকে আদেশ দাও তারা যেন আমার নবীকে দেখা মাত্র ঈমান আনে। কেননা যদি মুহাম্মদ (ﷺ) কে না বানাইতাম তাহলে আদম (আঃ) কেও বানাইতাম না। আমি যদি মুহাম্মদ (ﷺ) কে না বানাইতাম তাহলে জান্নাত ও জাহান্নাম কিছুই বানাইতাম না। আর অবশ্যই পানির উপরে আমার আরশ সৃষ্টি করেছিলাম ফলে ইহা নড়াচড়া করছিল, অত:পর ইহার উপর লিখে দিলাম “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ফলে আরশ থেমে গেল।"
★ ইমাম হাকেম: আল-মুস্তাদরাক, ৪র্থ খন্ড, ১৫৮৩ পৃঃ
★ ইমাম আবুশ শায়েখ ইস্পাহানী: তাবাতুল মুহাদ্দেছীন, ৩য় খন্ড, ২৮৭ পৃঃ
★ ইমাম সুয়ূতী: খাসায়েছুল কোবরা, ১ম খন্ড, ২৯ পৃঃ
★ ইমাম আবু বকর ইবনে বিলাল তার আস সুন্নাহ’ এ, ১ম খন্ড, ২৬১ পৃ:, হাদিস নং ৩১৬;
★ ইমাম তকিউদ্দীন সুবকী : শিফাউস সিকাম
★ ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ'তেদাল, ৪র্থ খন্ড, ৩০৭ পৃঃ;
★ ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী : লিসানুল মিযান, ৫ম খন্ড, ৩৪৩ পু;
★ আলবানী সিলসিলায়ে আহাদিছুদ দ্বায়িকা, ১ম খন্ড, ৪৪৮ পৃ
♣ এই হাদিস উল্লেখ করে ইমাম হাকেম নিছাপুরী (রহঃ) বলেন:
“এই হাদিসের সনদ ছহীহু।”
★ (মুসতাদরাক আল হাকেম, ৪র্থ খন্ড, ১৫৮৩
♣ ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতী (রহঃ) ও
♣ আল্লামা নূরুদ্দিন আলী ইবনে আহমদ ছামহুদী (রহঃ) তদীয় কিতাবে হাদিসটি ছহীহ্ হওয়ার কথা এভাবে লিখেছেন:
“ইমাম হাকেম হাদিসখানা বের করেছেন ও ইহাকে ছহীহ্ বলে সমর্থন করেছেন।”
★ ইমাম সুয়ূ়তী: খাহায়েছুল কোবরা, ১ম খন্ড, ২৯ পু:
★ আল্লামা ছামহূদী: অফাউল অফা, ৪র্থ জি: ২২৪ পৃঃ
এই হাদিসের সনদে (ছাঈদ ইবনে আবী উরওয়া)” নামক রাবী সম্পর্কে কেউ কেউ জয়ীফ ধারণা করলেও তার সম্পর্কে-
♣ ইমাম বুখারী (রঃ) এর উস্তাদ ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে কাত্তান (রঃ) বলেন: ইমাম শরফুদ্দিন নববী (রঃ) তার ব্যাপারে সংকলন করেনঃ
“তার বিশ্বস্ততার ব্যাপারে সকলেই একমত হয়েছে। ইমাম বুখারীও মুসলীম তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন।"
★ ইমাম নববী: তাহজিবুল আসমাউ ওয়াস ছিফাত, রাবী নং ২১৩
♣ ইমাম ইবনে হিব্বান তাকে বিশ্বস্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছেন।
★ (ইমাম ইবনে হিব্বান: কিতাবুস ছিকাত, রাবী নং ৮১০৪)
♣ ইমাম ইবনে মাঈন (রহঃ) ও
♣ ইমাম নাসাঈ (রহঃ) বলেছেন,
"সে বিশ্বস্ত বলেছেন।"
♣ ইমাম আবু যুরআ (রহঃ) বলেছেন,
"সে বিশ্বস্ত ও গ্রহণযােগ্য।"
♣ ইমাম আবু হাইছামা (রহঃ) বলেন,
"সে মানুষদের মধ্যে প্রমাণিত ব্যক্তি।”
★ (ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ১১০),
♣“ইমাম ইবনে মাঈন (রহঃ) বলেন, সে হযরত কাতাদা (রহঃ), ইমাম সাঈদ (রহঃ), ইমাম দাসতুয়াঈ (রহঃ), ইমাম শুবা (রঃ) থেকে হাদিস বর্ণনায় প্রমাণিত।”
★ (ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাৰী নং ৬৭)
♣ প্রখ্যাত ফকিহু আল্লামা সুফিয়ান ইবনে হাবীব আলিম হয়েছেন হজরত শুবা (রঃ) ও ছাঈদ ইবনে উরওয়া (রহঃ) এর উছিলায়।”
★ (ইমাম যাহাবী মিযানুল এ'তেদাল, ২য় খন্ড, ৪৬৮)
♣ ইমাম ইবনে আদী (রঃ) বলেন:
“ছাঈদ ইবনে উরওয়া বিশ্বস্তদের মধ্যে একজন।” ★ (ইমাম যাহাবী: মিযানুল এ'তেদাল, ২য় খন্ড, ৪৬৮ পৃঃ)
♣ ইমাম মিযযী (রহঃ) বলেন,
ছাঈদ ইবনে উরওয়া (রহঃ)→
-“ইসহাক ইবনে মানছুর (রহঃ),
- হজরত ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন (রঃ),
- আবু যুরাআ (রঃ) ও
- ইমাম নাসাঈ (রঃ) থেকে বর্ণনা করেন,
সে বিশ্বস্ত।”
★ (ইমাম মিযী: তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২৩২৭)
♣“ইমাম আবু হাতিম (রহঃ) বলেন, সে বিশ্বস্ত।"
★ (ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং৬৭)
♣ “ইমাম ইবনে সাদ (রহঃ) বলেন,
সে বিশ্বস্ত ও তার প্রচুর হাদিস (বিশ্বস্ত)।”
★ (ইমাম মুগলতাঈঃ উকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২০১৬)।
♣“ইমাম আজলী বলেন, সে বিশ্বস্ত।"
★ (ইমাম মুগলতাঈ: উকমালু তাহজিবুল কামাল, রাবী নং ২০১৬)
♣ ইমাম যাহাবী (রহঃ) নিজেই অন্যত্র বলেন,
“সাঈদ ইবনে আবী উরওয়া বিশ্বস্ত।”
★ (ইমাম যাহাবী: আল মুগনী ফিদ দুয়াফা, রাবী নং২৪৩)
♣ এছাড়া (আমর ইবনে আওছ আনছারী) মাজহুল রাবী হলেও ইমাম হাকেম সহ অনেকেই তার উপর নির্ভর করে তার বর্ণিত হাদিস বর্ণনা করেছেন।
সর্বোপরি প্রমাণিত হল যে, এই হাদিস নির্ভরযােগ্য। এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়, জান্নাত-জাহান্নাম সকল কিছু সৃষ্টির পূর্বেই আল্লাহ পাক হজরত মুহাম্মদ (ﷺ) কে সৃষ্টি করেছেন। এমনকি হজরত আদম (আঃ) কে বানাইবার পূর্বেই আল্লাহ পাক হজরত মুহাম্মদ (ﷺ) কে সৃষ্টি করেছেন। আর মাটির তৈরী প্রথম মানুষ হল হজরত আদম (আঃ), আমাদের নবী এরও পূর্বে সৃষ্টি, তাই তিনি মাটির তৈরী নন, বরং আল্লাহর নূরের তৈরী।
♣ এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত লক্ষ্য করুন,
“হজরত আদম (আঃ) বলেন: যখন আমাকে সৃষ্টি করা হল, আমি আমার মাথা আপনার আরশের দিকে উঠালাম এবং এর মধ্যে লিখা দেখলাম না ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)। অতঃপর আমি জেনে নিলাম নিশ্চয় তিনি আপনার প্রিয় ভাজন ব্যতীত কেউ নয়। কারণ আপনার নামের পাশে নাম লিখা। তখন আল্লাহ তা'য়ালা ওহী করলেন: আমার ইজ্জত ও জালালের কসম! নিশ্চয় তােমার বংশের মধ্যে তিনি সর্বশেষ নবী, যদি তাকে না বানাইতাম তাহলে তােমাকেও বানাইতাম না।"
★ ইমাম কাজী আয়াজ (রহঃ) : আশ-শিফা শরীফ, ২য় জি: ২২১ পৃঃ
★ আশরাফ আলী থানভী : নুশরাত্বীব।
♣ যেমন আরেকটি রেওয়াত উল্লেখ করা যায়, ইমাম সুয়ূ়তী (রহঃ) ও ইমাম ইবনে ছালেহী (রহঃ) সনদসহ উল্লেখ করেছেন:-
-“হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে মারফু সূত্রে বর্ণিত আছে যে, জিব্রাইল (আঃ) এসে বললেন: হে মুহাম্মদ (ﷺ) আল্লাহ তায়ালা আপনাকে না বানাইলে জান্নাত ও জাহান্নাম (কিছুই) বানাইতেন না।"
★ ইমাম সুয়ূ়তী: জামেউল আহাদিস, হাদিস নং ৩৩৮;
★ ইয়াম দায়লামী : দায়লামী শরিফ, হাদিস নং ৮০৩১;
★ ইমাম হিন্দীঃ কানজুল উম্মাল, ১১তম খন্ড, ৪৩১ পৃ: হাদিস নং ৩২০২৫;
★ ইমাম ইবনে ছালেহী: সুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১ম খন্ড, ৭৫
★ ইমাম সুলতান মােল্লা আলী: মওজুমাতুল কবীর, ১০১ পৃঃ
★ ইমাম আজনী: কাশফুল খাফা, হাদিস নং ৫১;
★ আল্লামা আব্দুল হাই লাখনভী: আছারুল মারয়া, ১ম জি ৪৪
এজন্যই হয়ত মহান আল্লাহ হজরত আদম (আঃ) কে বলেছেন :
♣ “হে আদম! আমি মুহাম্মদ কে না বানাইলে তােমাকেও বানাইতাম না।”
★ ইমাম বায়হাকী: দালাইলুন্নবুয়াত, ৫ম খন্ড;
★ আল্লামা ছামহূদী: অফাউল অফা, ২য় জি: ২২২ পৃ:
★ মুস্তাদরাকে হাকেম, ৪র্থ খন্ড, ১৫৮৩ পৃ: ছহীহু সনদে
♣ এ সম্পর্কে আরেকটি বর্ণনায় আছে,
“হজরত আলী (রাঃ) হজরত রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন,
প্রিয় নবীজি (ﷺ) মহান আল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন,
"আল্লাহ তায়ালা বলেন: ইয়া মুহাম্মদ (ﷺ)! আমার ইজ্জত ও জালালের কসম! আপনাকে না বানাইলে আসমান জমীন কিছুই বানাইতাম না।"
★ ইমাম ইবনে সাবা (রঃ) এর শিফাউছ ছুদুর গ্রন্থে
★ নুজহাতুল মাজালিস, ২য় খন্ড, ১১৯ পু;
★ আল্লামা নুরুদ্দিন আলভী (রহঃ) ইনসানুল উথুন, ১ম খন্ড, ৩১৭ প:
★ ইমাম ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশীদ, ১ম খন্ড, ৭৫ পৃঃ
★ ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ২০২৫
♣ এ বিষয়ে অন্য হাদিসে আছে,
-“হজরত ছালমান ফারছী (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
রাসূলে পাক (ﷺ) আল্লাহ তা'য়ালা হতে বলেছেন:
"হে নবী (ﷺ)! আপনাকে না বানাইলে দুনিয়া বানাইতাম না।”
★ ইমাম ইবনে আসাকিরঃ তারিখে ইবনে আসাকির, ৩য় খন্ড, ৫১৭ , হাদিস নং ৮০১;
★ ইমাম কাজী আয়াযঃ আস-শিফা শরীফ, ২য় খন্ড, ১০৫ পৃঃ;
★ ইমাম ইবনে হালেহী: সুবলুল হূদা ওয়ার রাশাদ, ১ম খন্ড, ৭৫ পৃঃ
★ ইমাম যুৱকানী: শরহে মাওয়াহেব, ১ম খন্ড, ১৮২ পৃঃ
★ ইমাম মােল্লা আলী কারী : আল মওজুয়াতুল কবির, ১০১ : মারফু সনদে।
♣ এ বিষয়ে আরেক রেওয়াতে আছে,
“হযরত আদম (আঃ) কে আল্লাহ বললেন ইহা নূরে মুহাম্মদী (ﷺ) যে তােমার বংশধরদের মধ্যে একজন। আসমানে তার নাম আহমাদ, জমীনে তার নাম মুহাম্মদ। যদি তিনি না হতেন আমি আসমান-জমীন এমনকি তােমাকেও সৃষ্টি করতাম না।
★ (ইমাম কুস্তালানী : আল-মওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া ১ম খন্ড, ৭০ পূঃ)।
♣ হাফিজুল হাদিস ইমাম আবুল ফারাজ ইবনে জাওযী (রহঃ) (ওফাত ৫৯৭ হিজরী) তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেন,
→“যখন আল্লাহ তা'য়ালা কলম সৃষ্টি করলেন। তখন কলমকে বললেন লিখ। কলম বলল: কি লিখব?
→ আল্লাহ তায়ালা বললেন: সৃষ্টি জগতে আমার তাওহীদ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ লিখ।
→ অত:পর কলম একশ বছর যাবৎ লিখল পরে চুপ হল।
→ অতঃপর আল্লাহ বললেন: লিখ। কলম বলল কি লিখব?
→ আল্লাহ বললেন: লিখ "মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ"।
→ কলম বলল: এই (মহাসম্মানিত) মুহাম্মদ (ﷺ) কে যার নাম আপনার নামের সাথে লিখব?
→ আল্লাহ তাআলা বললেন: আদব রক্ষা কর হে কলম! আমার ইজ্জত ও জালালের কসম। আমি এই মুহাম্মদ (ﷺ) কে সৃষ্টি না করলে আমার সৃষ্টি জগতে কাউকেই সৃষ্টি করতাম না।
★ ইমাম ইবনে জাওযী: মাওলিদুন নববী শরীফ, ৩৬ পৃঃ
এরূপ অনেক হাদিস রয়েছে। যে সকল সাহাবীগণ অনুরূপ রেওয়াত বর্ণনা করেছেন তাদের তালিকা দেওয়া হলঃ
♣ হজরত উমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه)
♣ আলী ইবনে আবী তালিব (رضي الله عنه)
♣ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)
♣ হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه)
♣ হযরত সালমান ফারসী (رضي الله عنه) প্রমূখ।
বিষয়টি ৫ জন সাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে, যা মশহূর পর্যায়ের হাদিস।
উছুলে হাদিসের দৃষ্টিতে সব কয়টি সনদ দুর্বল হলেও পাঁচটি সূত্র একত্রিত হয়ে কাবী বা শক্তিশালী হয়ে যাবে।
সর্বোপরি প্রমাণিত হল যে, রাসূল (ﷺ) এর উছিলায় আল্লাহ সব কিছু সৃষ্টি করেছেন।
®
®
®
♣ দুনিয়া এক কথায় কোন কিছুই বানাইতেন না। আর এই কথাটাকেই রেওয়াত বিল মাআনা' হিসেবে বলা হয়:
-“ হে হাবীব (ﷺ) আপনাকে না বানাইলে কোন কিছুই বানাইতাম না।”
Reference :
★ ইমাম ইসমাইল হাক্কী (রঃ) : তাফছিরে রুহুল বয়ান ২য় খন্ড,২৯ পৃ: ও ৪৩০ পৃ:
★ ইমাম মােল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) : মাওজুয়াতুল কবীর, ১০১ পৃ:
★ ইমাম আজলুনী (রহঃ) : কাশফুল খাফা, ২য় খন্ড, ১৪৮ পৃঃ ১
★ শরহে শিফা, ১ম খন্ড, ১৩ পৃ: কৃত: মােল্লা আলী কারী (র:)
★ মােজাদ্দেদ আলফেছানী (রহঃ) : মাকতুবাত ৯ম খন্ড, ১৫৫ পৃঃ, মাকতুবাত নং ১২২
★ হুজুর সাইয়্যিদুনা গাউছে পাক আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ) : সিররুল আছরার : ১০২ পৃ:
★ মাওলানা হুছাইন আহমদ মাদানী : আশ শিহাবুছ ছাকিব, ৫০ পৃ:
♣ এই হাদিস সম্পর্কে হিজরী ১১শ শতাব্দির মােজাদ্দেদ আল্লামা মােলা আলী কারী (রহঃ) ও ইমাম আজলুনী (রহঃ) হাদিসটি উল্লেখ করেই বলেছেন।
“আমি বলছি, ইহার মাআনা ছহীহ।”
★ ইমাম মােলা আলী: মাওজুয়াতুল কবীর, ১০১ পৃঃ;
★ ইমাম আলুনী: কাশফুল খাফা, ২য় খন্ড, ১৪৮ পৃঃ
তাই বলা যায় হজরত মুহাম্মদ (ﷺ) সকল সৃষ্টির মূল উৎস।
পবিত্র কোরআনের আলােকে রাসূল (ﷺ) নূর।
আয়াত নং ১
মহান আল্লাহ তা'লা নবী করিম (ﷺ) সম্পর্কে এরশাদ করেন,
-“অবশ্যই আল্লাহর কাছ থেকে তােমাদের কাছে এসেছে নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব।”
(সূরা মায়েদা: ১৫ নং আয়াত)।
এ বিষয়ে স্পষ্ট জানতে হলে নিম্ন লিখিত তাফছিরের কিতাব সমূহ লক্ষ্য করুন:-
♣ হিজরী ৯ম শতাব্দির মােজাদ্দেদ ও হাফিজুল হাদিস, আল্লামা ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতী (রঃ) এই আয়াতের তাফছিরে বলেন,
-“অবশ্যই আল্লাহর তরফ থেকে তােমাদের কাছে নূর এসেছে আর তিনি হলেন নবী করিম (ﷺ)। আর কিতাব হল সুস্পষ্ট কুরআন।”
★ তাফছিরে জালালাইন, ৯৭ পৃঃ
★ তাফছিরে ছাবী, ১ম খন্ড, ৪৫১ পৃঃ
তাফছিরে জালালাইন কিতাব খানা আলিয়া এবং কওমী উভয় প্রকার মাদ্রাসাতেই পড়ানাে হয়। সুতরাং উক্ত এবারত দ্বারা প্রমাণ হয়, নূর হচ্ছে হজরত রাসূলে করিম (ﷺ) যিনি স্বয়ং আল্লাহর তরফ থেকে নূর হয়ে এসেছেন।
♣ এই নূর সম্পর্কে বিশ্ব বিখ্যাত ইমাম মিশকাত শরীফের মূল মাসাবিহুস সুন্নাহ' কিতাবের মুছান্নাফ আল্লামা ইমাম বাগভী (রহঃ) (ওফাত ৫১৬ হি.) প্রায় ১ হাজার বছর পূর্বে উল্লেখ করেন,
-“আল্লাহর তরফ থেকে তােমাদের কাছে এসেছে নূর অর্থাৎ মুহাম্মদ (ﷺ)। কেউ কেউ বলেছেন: ইসলাম।”
★ (তাফছিরে বাগভী, ২য় খন্ড, ১৩৮ পৃঃ)
এখানে ইমাম বাগভী (রহঃ) নূর দ্বারা স্পষ্ট নবী করিম (ﷺ) কে বুঝিয়েছেন। পাশাপাশি যারা নূর দ্বারা ইসলামকে বুঝায় তাদের অভিমতকে শব্দ দ্বারা দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।
♣ এ বিষয়ে প্রাচিনতম আরেকটি তাফছিরের কিতাবে ইমাম আবু জাফর তাবারী (রহঃ) {ওফাত ৩১০ হি.} বলেন,
-“হে আহলে তাওরাত ও ইঞ্জিলগণ ! আল্লাহর তরফ থেকে তােমাদের কাছে এসেছে নূর অর্থাৎ নূর দ্বারা অর্থ হচ্ছে হজরত মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম। যার মাধ্যমে আল্লাহ পাক সত্যকে উজ্জ্বল করেছেন এবং যার মাধ্যমে ইসলামকে প্রকাশ করেছেন।"
★ তাফছিরে তাবারী শরীফ, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৭৬ পৃঃ
♣ আল্লামা আবু ইসহাক জুযায (রঃ) {ওফাত ৩১১ হি.} তার তাফছিরের কিতাবে বলেন,
-“অবশ্যই আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব নূর হচ্ছে হজরত মুহাম্মদ (ﷺ)।
★ (তাফছিরে মাআনিল কুরআন ওয়া এরাবিহী, ২য় বন্ড, ১৬১ পৃঃ)।
♣ আল্লামা আবুল লাইছ নছর ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে ইব্রাহিম সমরকান্দি (রঃ) (ওফাত ৩৭৩ হি.) বলেন,
“আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর এসেছে অর্থাৎ গােমরাহীর মধ্যে আলাে আর তিনি হলেন মুহাম্মদ (ﷺ) এবং কুরআন।”
★ (তাফছিরে সমরকান্দি, ১ম খন্ড, ৩৭৮ পৃ:)।
♣ আল্লামা আবু হাছান আলী ইবনে মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হাবীব বছরী আল-বাগদাদী (রঃ) (ওফাত ৪৫০ হি.) তদীয় গ্রন্থে বলেন,
-“এই নূরের দু'টি ব্যাখ্যা রয়েছে। প্রথম (নূর) হল হজরত মুহাম্মদ (ﷺ) আর ইহা হল জুযায (রঃ) এর অভিমত।
- আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, নূর দ্বারা কুরআন, আর ইহা হল শেষ যুগের কিছু কিছু লােকের অভিমত।”
★ (তাফছিরে মাওয়ারদী, ২য় খন্ড, ২২ পৃঃ)
এখানে শেষ যুগের কিছু লােকের ঐ মতটিকে দুর্বল আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কেননা শেষ যুগের আলিমদের অভিমত দুর্বল, কারণ , (নূর) দ্বারা কোরআনকে বুঝানাে হলে, (কিতাবুম মুবীন) দ্বারা কি অর্থ হবে?
♣ আল্লামা আবুল হাছান আলী ইবনে আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আলী আল ওয়াহেদী নিছাপুরী (রঃ) (ওফাত ৪৬৮ হি.) বলেন,
-“বিশিষ্ট তাবেঈ হজরত কাতাদা (রঃ) বলেনঃ ; নূর হল নবী করিম (ﷺ)। এ ব্যাপারে হজরত জুযায (রঃ) সহমত প্রকাশ করে বলেন , ‘নূর' হল মুহাম্মদ (ﷺ)।”
★ (তাফছিরে ওয়াহিত লিলওয়াহেদী, ২য় খন্ড, ১৬৯ পৃঃ)।