যয়ীফ হাদীস কি গ্রহণযোগ্য নয়?

যয়ীফ হাদীসকে প্রায় সকল মুহাদ্দিসই শর্ত সাপেক্ষে ফযিলতের ক্ষেত্রে, ইতিহাস বর্ণনার ক্ষেত্রে ও রিকাক বা চিত্তবিগলনের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচনা করেছেন। আর আহকাম বা বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসগণ যয়ীফকে দুভাগে ভাগ করেছেন। এক. এমন যয়ীফ হাদীস, যার সমর্থনে কোন শরয়ী দলিল নেই, বরং এর বক্তব্য শরীয়তের দৃষ্টিতে আপত্তিজনক। এ ধরণের যয়ীফ আমলযোগ্য নয়। দুই. সনদের বিবেচনায় হাদীসটি যয়ীফ বটে, তবে এর সমর্থনে শরয়ী দলিল প্রমাণ আছে, সাহাবী ও তাবেয়ীগণের যুগ থেকে এ হাদীস অনুসারে আমল চলে আসছে। এমন যয়ীফ হাদীস শুধু আমলযোগ্যই নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে তা মুতাওয়াতির বা অসংখ্য সূত্রে বর্ণিত হাদীসের মানোত্তীর্ণ। ‘আল আজবিবাতুল ফাযিলা’ গ্রন্থের পরিশিষ্টে শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবূ গুদ্দাহ র. এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন।

হাফেজ ইবনুল কায়্যিম র. তার ‘কিতাবুর রূহ’ গ্রন্থে একটি যয়ীফ হাদীস সম্পর্কে বলেছেন,

فهذا الحديث وإن لم يثبت فاتصال العمل به في سائر الأمصار والأعصار من غير إنكار كاف في العمل به

অর্থাৎ এ হাদীসটি প্রমাণিত না হলেও বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন শহরে কোন রূপ আপত্তি ছাড়া এ অনুযায়ী আমল চালু থাকাই হাদীসটি আমলযোগ্য হওয়ার জন্য যথেষ্ট। (দ্র, পৃ, ১৬)

ইমাম যারকাশী র. তাঁর হাদীস শাস্ত্রের মূলনীতি বিষয়ক গ্রন্থ ‘আন নুকাত’ এ বলেছেন,

إن الحديث الضعيف إذا تلقته الأمة بالقبول عمل به على الصحيح حتى ينزل منزلة المتواتر

অর্থাৎ যয়ীফ হাদীসকে যখন উম্মাহ ব্যাপকভাবে গ্রহন করে নেয়, তখন সঠিক মতানুসারে সেই হাদীসটি আমলযোগ্য হয়, এমনকি তা মুতাওয়াতির হাদীসের মানে পৌঁছে যায়। (দ্র, ১খ, ৩৯০ পৃ) হাফেজ শামসুদ্দীন সাখাবী তাঁর ‘ফাতহুল মুগীছ’ গ্রন্থে লিখেছেন,

وكذا إذا تلقت الأمة الضعيف بالقبول يعمل به على الصحيح حتى أنه ينزل منزلة المتواتر في أنه ينسخ المقطوع به ولهذا قال الشافعي رحمه الله في حديث لا وصية لوارث إنه لا يثبته أهل الحديث ولكن العامة تلقته بالقبول وعملوا به حتى جعلوه ناسخا لآية الوصية.

অর্থাৎ উম্মাহ যখন যয়ীফ হাদীসকে ব্যাপক হারে গ্রহণ করে নেয়, তখন সহীহ মত অনুসারে সেটি আমলযোগ্য হয়, এমনকি তার দ্বারা অকাট্য বিধান রহিত হওয়ার ক্ষেত্রে সেটি মুতাওয়াতির দলিলের মানোত্তীর্ণ হয়। এ কারণেই ইমাম শাফেয়ী র. ‘উত্তরাধিকারীর জন্য কোন ওসিয়ত নেই’ হাদীসটি সম্পর্কে বলেছেন, হাদীস বিশারদগণ এটিকে সুপ্রমাণিত মনে না করলেও ব্যাপকহারে আলেমগণ এটি গ্রহণ করে নিয়েছেন, এ অনুযায়ী আমল করেছেন, এমনকি তারা এটিকে ওসিয়ত সম্পর্কিত আয়াতটির বিধান রহিতকারী আখ্যা দিয়েছেন। (দ্র,১খ, ৩৩৩পৃ)

আমাদের আলোচ্য হাদীসটি এই দ্বিতীয় প্রকার যয়ীফের অন্তর্ভূক্ত। সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত উম্মাহর ধারাবাহিক ও অবিচ্ছিন্ন আমল এ অনুযায়ী চলে আসছে। সুতরাং উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে এটি অবশ্যই আমলযোগ্য বলে গণ্য হবে। এটিকে জাল আখ্যায়িত করা হাদীস শাস্ত্রের স্বীকৃত মূলনীতি উপেক্ষা করারই নামান্তর। (টীকা-১)

মওকুফ হাদীস

১. হযরত উমর রা. এর কর্মপন্থা

হযরত উমর রা.এর উদ্যোগে ২০ রাকাত তারাবী’র ব্যবস্থা সম্পর্কে মোট সাতটি বর্ণনা পাওয়া গেছে। নিম্নে তা তুলে ধরা হলো :

ক. ইয়াযীদ ইবনে খুসায়ফার বর্ণনা

ইয়াযীদ ইবনে খুসায়ফা বর্ণনা করেন:

عن السائب بن يزيد قال: كانوا يقومون على عهد عمر بن الخطاب في شهر رمضان بعشرين ركعة

অর্থ: হযরত সাইব ইবনে ইয়াযীদ রা. বলেছেন, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর আমলে সাহাবায়ে কেরাম রমযান মাসে বিশ রাকাত পড়তেন। (বায়হাকী , আসসুনানুল কুবরা ২/৪৯৬)

এ হাদীসের দুটি সনদ :

ইয়াযীদ ইবনে খুসায়ফার নীচে বায়হাকী পর্যন্ত এই হাদীসের দুটি সনদ আছে। একটি সনদ ইমাম বায়হাকী তার ‘আসসুনানুল কুবরা’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। এই সনদে ইয়াযীদ ইবনে খুসায়ফার শিষ্য হলেন ইবনে আবূ যি’ব রহ.।

অপর সনদটি তিনি উল্লেখ করেছেন তার ‘আল-মারিফা’ গ্রন্থে। এই সনদে ইবনে খুসায়ফার শিষ্য হলেন মুহাম্মদ ইবনে জা’ফর। প্রথম সনদে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন ইমাম নববী, ওয়ালিউদ্দীন ইরাকী, বদরুদ্দীন আয়নী, জালালুদ্দীন সুয়ূতী ও আল্লামা নিমাভী র. প্রমুখ। আর দ্বিতীয় সনদে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন তাজুদ্দীন সুবকী ও মোল্লা আলী কারী প্রমুখ। তার মানে মূল হাদীসটি সাত জন বড় বড় মনীষীর দৃষ্টিতে সহীহ।

(দ্র, রাকাতে তারাবী, পৃ. ৫৪)। মোবারকপুরী ও আলবানী সাহেবের পূর্বে কোন মনীষী এই হাদীসকে যয়ীফ বলেননি।

প্রথম সনদটির আলোচনা

লা-মাযহাবী বন্ধুরা তাদের সহীহ বুখারীর টীকায় প্রথম সনদটির কথা উল্লেখই করেননি। অবশ্য লা-মাযহাবী আলেম মাওলানা আব্দুর রহমান মোবারকপুরী তার তিরমিযীর ভাষ্য তুহফাতুল আহওয়াযীতে ও মুযাফফর বিন মুহসিন তার তারাবীহ’র রাকআত সংখ্যা পুস্তকে উল্লেখ করেছেন। মুযাফফর বিন মুহসিন লিখেছেন, বর্ণনাটি জাল। এটি তিন দোষে দুষ্ট। প্রথমত, এর সনদে আবূ আব্দুল্লাহ ইবনে ফানজুবী আদ-দায় নূরী নামক রাবী আছে। সে মুহাদ্দিসগণের নিকট অপরিচিত। রিজাল শাস্ত্রে এর কোন অস্তিত্ব নেই। এজন্য শায়খ আব্দুর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ) বলেন, لم أقف على ترجمته فمن يدعي صحة هذا الأثر فعليه أن يّثْبُتَ كونه ثقة قابلا للاحتجاج. আমি তার জীবনী সম্পর্কে অবগত হতে পারিনি। সুতরাং যে ব্যক্তি এই আছারের বিশুদ্ধতা দাবী করবে তার উপর অপরিহার্য হবে নির্ভরযোগ্য হিসাবে দলীলের উপযুক্ততা প্রমাণ করা।

যার কোন পরিচয়ই নেই তার বর্ণনা কিভাবে গ্রহণীয় হতে পারে? মুহাদ্দিসগণের নিকটে এরূপ বর্ণনা জাল বলে পরিচিত।

দ্বিতীয়ত, উক্ত বর্ণনায় ইয়াযীদ ইবনু খুছায়ফাহ নামে একজন মুনকার রাবী আছে। সে ছহীহ হাদীছের বিরোধী হাদীছ বর্ণনাকারী।ঠ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল এজন্য তাকে মুনকার বলেছেন এবং আল্লামা যাহাবী ও ইবনু হাজার আসক্বালানী তা সমর্থন করেছেন। তাছাড়া সে যে মুনকার রাবী তার প্রমাণ হ’ল, সায়েব ইবনু ইয়াযীদ থেকে সে এখানে ২০ রাকআতের কথা বর্ণনা করেছে। অথচ আমরা ৮ রাকআতের আলোচনায় সায়েব ইবনু ইয়াযীদ থেকে মোট ৪টি হাদীস উল্লেখ করেছি, যার সবগুলোই সহীহ। সুতরাং এই বর্ণনা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তৃতীয়ত, এটি কখনো মুযত্বরাব পর্যায়ের। এই বর্ণনায় বিশ রাকআতের বর্ণনা এসেছে। কিন্তু অন্য বর্ণনায় ২১ রাকআতের কথা বর্ণিত হয়েছে। তাই শায়খ আলবানী বলেন, এটি মুযত্বারাব পর্যায়ের হওয়ায় পরিত্যাজ্য। (তারাবীহ’র রাকাত সংখ্যা)

এ হলো লেখকের বাগাড়ম্বর। তার লেখার মৌলিক ত্রুটিগুলো তুলে ধরার পূর্বে কয়েকটি ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ ভুলের প্রতি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ক. তিনি লিখেছেন, আদ-দায়নূরী। শুদ্ধ হলো আদ দীনাওয়ারী।

খ. তিনি লিখেছেন, ইয়াযীদ ইবনু খুছায়ফাহ নামে একজন মুনকার রাবী আছে। এখানে মুনকার রাবী কথাটি ভুল। মুহাদ্দিসগণ রাবীর ক্ষেত্রে মুনকার (আপত্তিকর) শব্দটি ব্যবহার করেন না। করেন হাদীসের ক্ষেত্রে। হ্যাঁ, রাবীর ক্ষেত্রে ‘মুনকারুল হাদীস’ কথাটি তারা ব্যবহার করেন, যার অর্থ হলো আপত্তিকর হাদীস বর্ণনাকারী। সুতরাং ইমাম আহমাদ তাকে মুনকার বলেছেন একথাটিও ভুল। আহমাদ রহ. বলেছেন, মুনকারুল হাদীস।

গ. তিনি বলেছেন, মুযত্বারাব। শুদ্ধ হবে মুযতারিব।

হাদীস শাস্ত্রের মূলনীতি বিষয়ে আনাড়ি হওয়ার কারণে এসব ভুল প্রকাশ পেয়েছে। এবার মূল আলোচনায় আসা যাক। লেখক এ হাদীসটিকে জাল বলেছেন। শীর্ষ পাঁচজন মুহাদ্দিস যে হাদীসকে সহীহ বলেছেন, সেটাকে জাল বলে দেওয়া দুঃসাহসিকতা বৈ কি। আলবানী ও মুবারকপুরীও যে সাহস দেখাতে পারেন নি, সেই সাহস দেখিয়েছেন আমাদের দেশের কৃতিসন্তান। লেখক হাদীসটি জাল হওয়ার তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন। প্রথমটি হলো ফানজুবীর অপরিচিত হওয়া। লেখকের আলোচনা থেকে বোঝা যায় এটিই মূল কারণ। এর সমর্থনেই তিনি মুবারকপুরীর বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন। কিন্তু ঐ বক্তব্যের অনুবাদে ভুল করেছেন। ঐ বক্তব্যে ان يثبت শব্দটি তার লাগানো যের-যবরসহ উল্লেখ করেছি, যাতে পাঠক তার এলেমের দৌড় বুঝতে পারেন। বক্তব্যটির সঠিক অনুবাদ হবে, আমি তার জীবনী সম্পর্কে অবগত হতে পারি নি। সুতরাং যে ব্যক্তি এই আছারের বিশুদ্ধতা দাবী করবে তার উপর অপরিহার্য হবে তার (অর্থাৎ ফানজুবীর) বিশ্বস্ততা ও প্রমাণযোগ্য হওয়া প্রমাণ করা।

মুবারকপুরী বলেছেন, অবগত হতে পারি নি। ব্যাস! এর উপর নির্ভর করেই লেখক বলে দিয়েছেন, সে মুহাদ্দিসগণের নিকট অপরিচিত। রিজাল শাস্ত্রে এর কোন অস্তিত্ব নেই।

ফানজুবী কি অপরিচিত?

ফানজুবী শুধু পরিচিতই নন, বরং বিখ্যাত ও সুপ্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ছিলেন। ইমাম নাসাঈ রহ.এর বিশিষ্ট শিষ্য আবু বকর ইবনুস সুন্নী ছিলেন এই ফানজুবীর খাস উস্তাদ। ইবনুস সুন্নী সুনানে নাসাঈর রাবী। তার থেকেই সেটি বর্ণনা করেছেন ফানজুবী। ইমাম নাাসাঈ থেকে যেসব সনদে নাসাঈ শরীফ বর্ণিত হয়েছে তার একজন রাবী হলেন এই ফানজুবী। মুবারকপুরী তাকে না চিনলে নাও চিনতে পারেন। কারণ তার অধ্যয়নের গ-ি ছিল খুবই সীমিত। তার তুহফাতুল আহওয়াযী দেখলে যে কোন পাঠকই তা আঁচ করতে পারবেন। কিন্তু এই কম্পিউটার যুগে যখন ফানজুবী লিখে সার্চ দিলেই সব নাড়ি-নক্ষত্র প্রত্যক্ষ করা যায়, এসময় যদি কেউ পূর্ববর্তী কারোও অন্ধ অনুসরণ করে এমন লাফালাফি করেন তবে নিজের পা ভাঙ্গা ছাড়া কিছুই হবে না। (টীকা-২)

ফানজুবীর জীবনী নিয়ে অনেক মনীষীই আলোচনা করেছেন। ইবনুল আছীর আল জাযরী রহ. করেছেন তার আল লুবাব ফী তাহযীবিল আনসাব গ্রন্থে, তিনি তাকে হাফেজে হাদীস উপাধিতে উল্লেখ করেছেন। যাহাবী রহ. করেছেন তার সিয়ারু আ’লামিন নুবালা (১৩/২৪৫), আল ইবার (১/৪২৬) ও তাযকিরাতুল হুফফাজ (৩/১০৫৭) গ্রন্থত্রয়ে, ও ইবনুল ইমাদ করেছেন তার শাযারাতুয যাহাব গ্রন্থে (৩/২০০)। সুয়ূতী লাআলিল মাসনূআহ গ্রন্থে বলেছেন, حافظ كبير বড় হাফেজে হাদীস। (২/৩৭) যাহাবী আল ইবার গ্রন্থে একথাও লিখেছেন যে, وكان ثقة مصنفا তিনি বিশ্বস্ত ও গ্রন্থকার ছিলেন।

এমন একজন মহান ব্যক্তি সম্পর্কে মুযাফফর বিন মুহসিন পূর্বোক্ত বক্তব্যের পর একথাও বলেছেন যে, যার কোন পরিচয়ই নেই তার বর্ণনা কিভাবে গ্রহণীয় হতে পারে? মুহাদ্দিসগণের নিকটে এরূপ বর্ণনা জাল বলে পরিচিত।

এই শেষ কথাটিও তিনি ভুল বলেছেন। রাবী অপরিচিত হলে তার বর্ণনাকে মুহাদ্দিসগণ যঈফ বলেন, জাল বলেন না। আবার যদি তার সমর্থক বর্ণনা থাকে, তখন সেটা হাসান স্তরে উন্নীত হয়। হাদীস শাস্ত্রের মূলনীতি বিষয়ে লেখা প্রায় সকল কিতাবেই একথা পাওয়া যাবে। এখানে ফানজুবী তো সুপরিচিত। অপরিচিত হলেও তার বর্ণনার সমর্থনে আরেকটি সনদ বা সূত্র রয়েছে। সুতরাং এটিকে যঈফ বলারও সুযোগ নেই, জাল বলা তো দূরের কথা।

এ দীর্ঘ আলোচনার কারণ

এ দীর্ঘ আলোচনা করতে হলো তাদের দাবী যে কত অসার শুধু তা প্রমাণ করার জন্য। অন্যথায় হাদীসটির এমন সূত্র রয়েছে, যেখানে ফানজুবী, আবু উসমান ও আবু তাহির কেউ নেই। আল ফিরয়াবী তার আস সিয়াম গ্রন্থে (হা. ১৭৬) ইয়াযীদ ইবনে হারূন থেকে এটি বর্ণনা করেছেন। ইয়াযীদ ইবনে হারূন বর্ণনা করেছেন ইবনে আবূ যিব রহ.এর সূত্রে ইয়াযীদ ইবনে খুসায়ফা থেকে, তিনি সাইব ইবনে ইয়াযীদ রা. থেকে। এমনিভাবে আলী ইবনুল জা’দ রহ. স্বীয় মুসনাদ গ্রন্থে এটি বর্ণনা করেছেন। (হা. ২৮২৫) ইমাম মালেকও সরাসরি ইয়াযীদ ইবনে খুসায়ফা থেকে এটি বর্ণনা করেছেন। (দ্র. ফাতহুল বারী, ২০১০ নং হাদীসের আলোচনা)

২য় আপত্তিটির জবাব একটু পরেই আসছে।

৩য় আপত্তিটি হলো হাদীসটি মুযতারিব। পরিভাষায় মুযতারিব ঐ হাদীসকে বলা হয়, যার এক বা একাধিক রাবী বিভিন্ন শব্দে হাদীসটি বর্ণনা করেন। এই বিভিন্ন শব্দের মধ্যে যদি সমন্বয় করা সম্ভব হয়, কিংবা কোন একটিকে অগ্রগণ্য সাব্যস্ত করা যায় তবে হাদীসটি আর যঈফ বলে গণ্য হয় না।

আলোচ্য হাদীসটির ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেম ২৩ রাকআতের বর্ণনাকে অগ্রগণ্য আখ্যা দিয়েছেন। কেননা দুটি অবিচ্ছিন্ন সূত্রের বর্ণনা ও চারটি সহীহ মুরসাল বর্ণনা এর সমর্থনে রয়েছে, আবার এর উপর সালাফে সালেহীনের আমলও ছিল।

Top