সাহাবায়ে কেরামের ইজমা বা ঐক্যমত

ইমাম ইবনে আব্দুল বার র. লিখেছেন,

وهو الصحيح عن أبي بن كعب من غير خلاف من الصحابة

অর্থাৎ বিশ রাকাত তারাবীই হযরত উবাই ইবনে কাব রা. থেকে বিশুদ্ধরূপে প্রমাণিত। সাহাবীগণের এক্ষেত্রে কোন দ্বিমত ছিল না। (আল ইসতিযকার , ৫খ, ১৫৭পৃ)

ইমাম ইবনে কুদামা র. আল মুগনী গ্রন্থে বিশ রাকাতকে দলিল দ্বারা সুপ্রমাণিত করে বলেছেন,

ما فعله عمر وأجمع عليه الصحابة في عصره أولى بالاتباع

অর্থাৎ উমর রা. যা করেছেন এবং তাঁর আমলে সাহাবীগণ যে বিষয়ে একমত হয়েছেন সেটাই অনুসরণের অধিক উপযুক্ত। (দ্র, ২খ, ৬০৪পৃ)

আল্লামা ইবনে তায়মিয়া র. বলেছেন,

انه قد ثبت أن أبى بن كعب كان يقوم بالناس عشرين ركعة فى قيام رمضان ويوتر بثلاث فرأى كثير من العلماء أن ذلك هو السنة لأنه أقامه بين المهاجرين والانصار ولم ينكره منكر

অর্থাৎ একথা প্রমাণিত যে, উবাই ইবনে কাব রা. রমযানে তারাবীতে লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত পড়তেন। এবং তিন রাকাত বেতের পড়তেন। তাই বহু আলেমের সিদ্ধান্ত এটাই সুন্নত। কেননা তিনি মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণের উপস্থিতিতেই তা আদায় করেছিলেন। কেউ তাতে আপত্তি করেননি। (মাজমূউল ফাতাওয়া, ২৩খ, ১১২-১৩পৃ)

আল্লামা ইবনে হাজার মক্কী র. তার ‘আলমিনহাজ’ গ্রন্থে লিখেছেন,

ثم التراويح وهي عشرون ركعة في كل ليلة من رمضان وتعيين كونها عشرين جاء في حديث ضعيف لكن أجمع عليه الصحابة رض

অর্থাৎ তারাবী রমযানের প্রত্যেক রাতেই বিশ রাকাত করে। বিশ রাকাতের নির্ণয়ণ একটি দুর্বল হাদীসে আসলেও সাহাবীগণ এর উপর সকলে একমত হয়েছিলেন। ( দ্র, পৃ ২৪০)

আবূ হানীফা র. এর চমৎকার বিশ্লেষণ:

روى أسد بن عمرو عن أبي يوسف قال: سألت أبا حنيفة عن التراويح وما فعله عمر فقال: التراويح سنة مؤكدة ولم يتخرصه عمر من تلقاء نفسة ولم يكن فيه مبتدعا ولم يأمر به إلا عن أصل لديه وعهد من رسول الله صلى الله عليه وسلم ولقد سن عمر هذا وجمع الناس على أبي بن كعب فصلاها جماعة والصحابة متوافرون، منهم عثمان وعلي وابن مسعود والعباس وابنه وطلحة والزبير ومعاذ وأبي وغيرهم من المهاجرين والأنصار رضي الله عنهم أجمعين وما رد عليه واحد منهم بل ساعدوه ووافقوه وأمروا بذلك.

অর্থাৎ আসাদ ইবনে আমর র. ইমাম আবূ ইউসুফ র. থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, আমি ইমাম আবূ হানীফা র.কে তারাবী ও এ ব্যপারে হযরত উমর রা.এর কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তারাবী সুন্নতে মুয়াক্কাদা। হযরত উমর রা. অনুমান করে নিজের পক্ষ থেকে এটা নির্ধারণ করেননি। এ ক্ষেত্রে তিনি নতুন কিছু উদ্ভাবন করেননি। তিনি তাঁর নিকট বিদ্যমান ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রাপ্ত কোন নির্দেশনার ভিত্তিতেই এই আদেশ প্রদান করেছেন। তাছাড়া হযরত উমর রা. যখন এই নিয়ম চালু করলেন এবং হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা. এর ইমামতিতে লোকদেরকে একত্রিত করলেন, আর উবাই রা. জামাতের সাথে এই নামায আদায় করলেন, তখন বিপুল সংখ্যক সাহাবী বিদ্যমান ছিলেন। তাঁদের মধ্যে হযরত উসমান, আলী, ইবনে মাসউদ, আব্বাস, ইবনে আব্বাস, তালহা, যুবায়র, মুআয ও উবাই রাদিয়ল্লাহু আনহুম প্রমুখ মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণ ছিলেন। তাঁদের কেউই তাঁর উপর আপত্তি করেননি। বরং সকলেই তাঁকে সমর্থন করেছেন, তাঁর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন এবং অন্যদেরও এরই আদেশ দিয়েছেন। (আল ইখতিয়ার লি তালীল মুখতার,১/৭০)

ইমাম সাহেবের এই সারগর্ভ বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় যে, ২০ রাকাত তারাবী রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রত্যক্ষ নির্দেশে না হলেও তাঁর পরোক্ষ নির্দেশেই হয়েছিল। উসূলে ফিকহের পরিভাষায় এটাকে মারফূ হুকমী বলা হয়।

স্বাভাবিকভাবেই কোন একজন সাহাবীর কোন কথা বা কর্ম যা ইজতিহাদের আওতাবহির্ভূত, সকল ফকীহ ও আলেমের দৃষ্টিতে মারফূ হুকমী (অর্থাৎ এর পেছনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনা ছিল) বলে গণ্য, তখন হযরত উমর রা. এর মতো ব্যক্তির উদ্যোগ এবং সকল সাহাবীর ঐকমত্য পোষণ কেন মারফূ হুকমী হবে না? কোন নামাযের রাকাত সংখ্যা নির্ধারণ ইজতিহাদের আওতা-বহির্ভূত ব্যাপার। সুতরাং এর পেছনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনা অবশ্যই ছিল বলতে হবে।

ইমাম ইবনে আব্দুল বার র. তাঁর ‘আততামহীদ’ গ্রন্থে কত সুন্দর লিখেছেন, হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. নতুন কিছু করেননি। তিনি তাই করেছেন যা স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দ করতেন। কিন্তু শুধু এ আশংকায় যে, নিয়মিত জামাতের কারণে তারাবী উম্মতের উপর ফরজ হয়ে যেতে পারে, জামাতের ব্যবস্থা করে যান নি। হযরত উমর রা. এই বিষয়টি জানতেন। তিনি দেখলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর এখন আর এই আশংকা নেই, কেননা ওহীর দরজা বন্ধ হয়ে গেছে, এবং শরীয়ত নির্ধারণের বিষয়টি চুড়ান্ত হয়ে গেছে। তখন তিনি নবী-পছন্দের অনুসরণ করে ১৪ হি. সনে এক জামাতের ব্যবস্থা করে দেন। আল্লাহ তায়ালা যেন এই মর্যাদা তাঁর ভাগ্যেই নির্ধারিত রেখেছিলেন। (দ্র. ৮/১০৮,১০৯) ইমাম বায়হাকী (মৃত্যু ৪৫৮ হি.) তার আস সুনানুস সাগীর গ্রন্থেও অনুরূপ কথা বলেছেন। (দ্র. হা. নং ৮১৭)

লা-মাযহাবী বন্ধুরা কখনও বলেন, বিশ রাকাত তারাবী হযরত উমর রা. থেকে প্রমাণিত নয়। তিনি এগার রাকাতেরই নির্দেশ দিয়েছিলেন। আবার কখনও বলেন, এটা হযরত উমর রা. এর কর্ম, যার পেছনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুমোদন ছিল না।

হযরত উমর রা. যদি এগারো রাকাতের আদেশই দিয়ে থাকেন, তবে তার আদেশ লংঘন করে কারা কখন থেকে বিশ রাকাত তারাবীর নিয়ম চালু করলো, সেটা তাদেরকে প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু কখনোই তারা সেটা প্রমাণ করতে পারবে না।

আর হযরত উমর রা. এর কর্মের পেছনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুমোদন ছিল না, এটা কেমন কথা? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেননি, আমার সুন্নত ও খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নত তোমরা আকড়ে ধরবে। তিনি কি বলেননি, তোমরা আমার পরে আবূ বকর ও উমরকে অনুসরণ করবে?

২.হযরত আলী রা. এর কর্মপন্থা

২০ রাকাত তারাবীর ক্ষেত্রে হযরত আলী রা. হযরত উমর রা.এর সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছিলেন। আলী রা. থেকে এক্ষেত্রে দুটি বর্ণনা পাওয়া যায়।

ক. সুলামীর বর্ণনা

আবূ আব্দুর রহমান সুলামী র. হযরত আলী রা. সম্পর্কে বলেন,

دعا القراء في رمضان فأمر منهم رجلا يصلي بالناس عشرين ركعة قال: وكان علي يوتر بهم

অর্থ : তিনি রমযানে হাফেজদেরকে ডাকলেন এবং তাদের একজনকে লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত পড়তে নির্দেশ দিলেন। তিনি বলেন, আলী রা. নিজে তাদের নিয়ে বেতের পড়তেন। (সুনানে বায়হাকী, ২খ, ৪৯৬,৪৯৭পৃ)

এ হাদীসটির সনদ যঈফ। এতে আতা ইবনুস সাইব রয়েছেন। শেষ জীবনে তার হাদীস ওলোটপালট হয়ে গিয়েছিল। আবার তার শিষ্য হাম্মাদ ইবনে শুআইব এমনিতেও যঈফ, আবার আতা থেকে কখন হাদীস শুনেছেন, শুরুর দিকে না শেষে, তারও কোন বিবরণ নেই। তবে এর সমর্থক একাধিক বর্ণনা রয়েছে, সেগুলোর দ্বারা এটিও শক্তিশালী হয়। একারণেই হয়তো হাফেজ ইবনে তায়মিয়া র. ‘মিনহাজুস সুন্নাহ’ গ্রন্থে (২/২২৪) ও যাহাবী র. ‘আল মুনতাকা’ গ্রন্থে (৫৪২) হাদীসটিকে দলিলরূপে পেশ করেছেন এবং এর মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন, হযরত আলী রা. তারাবীর জামাত, রাকাত-সংখ্যা ইত্যাদি বিষয়ে দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর রা. এর নীতিই অনুসরণ করেছিলেন।

খ. আবুল হাসনার বর্ণনা

আবুল হাসনা বলেন,

أن عليا أمر رجلا أن يصلي بهم في رمضان عشرين ركعة

অর্থ: আলী রা. রমযানে জনৈক ব্যক্তিকে আদেশ দিয়েছিলেন লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত পড়তে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৭৭৬৩।

ইমাম বায়হাকী রহ.ও এটি উদ্ধৃত করেছেন। তাঁর বর্ণনায় বলা হয়েছে:

إن علي بن ابي طالب أمر رجلا أن يصلى بالناس خمس ترويحات عشرين ركعة

অর্থাৎ আলী রা. জনৈক ব্যক্তিকে আদেশ করলেন, লোকদেরকে নিয়ে পাঁচ তারবীহা বিশ রাকাত পড়তে। অতঃপর তিনি বলেছেন: وفي هذا الإسناد ضعف অর্থাৎ এ সনদে একটু দুর্বলতা আছে। (দ্র. হাদীস: ৪২৯২)

ইমাম বায়হাকী উক্ত হাদীসকে কেন যঈফ বলেছেন সেটা চিহ্নিত করতে গিয়ে আলাউদ্দীন তুরকুমানী বলেছেন,الأظهر أن ضعفه من جهة أبي سعد سعيد بن مرزبان البقال فإنه متكلم فيه فإن كان كذلك فقد تابعه عليه غيره অর্থাৎ স্পষ্ট এটাই যে, তিনি আবু সাদ সাঈদ ইবনে মারযুবান আল বাক্কালের কারণেই এটাকে যঈফ বলেছেন। ব্যাপার যদি তাই হয়, তবে এক্ষেত্রে বাক্কালের সমর্থক রয়েছে। অর্থাৎ বায়হাকীর বর্ণনায় বাক্কাল হাদীসটি আবুল হাসনা থেকে বর্ণনা করেছেন, আর ইবনে আবু শায়বার বর্ণনায় আবুল হাসনা থেকে এটি বর্ণনা করেছেন আমর ইবনে কায়স। সুতরাং বাক্কাল ও আমর একে অন্যের সমর্থক হচ্ছেন। উল্লেখ্য, মুযাফফর বিন মুহসিন তুরকুমানীর বক্তব্যের অনুবাদ করেছেন এভাবে: ‘স্পষ্ট যে, আবূ সাঈদ ইবনে মারযুবানের কারণেই হাদীছটি যঈফ। কারণ সে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত। সে যদি এমনটিই হয় তাহলে অন্যান্য মুহাদ্দিছগণও এ কথারই অনুসরণ করেছেন।’ অনুবাদ থেকে লেখকের এলেমের দৌড় সহজেই বোঝা যায়। এরপর তিনি আলবানীর অনুসরণে বলেছেন, তাছাড়া আবুল হাসানা ও আলী রা.এর মাঝে আরো দুজন রাবী রয়েছে, যা সনদে উল্লেখ নেই। এটা আলবানী ও উক্ত লেখকের ভুল। সনদে একজন রাবীও বাদ পড়ে নি। তারা মূলত মীযান ও তাকরীব গ্রন্থদ্বয়ে উল্লেখকৃত আবুল হাসনাকে এই আবুল হাসনা মনে করে জটিলতায় পড়েছেন। যার বিবরণ একটু পরেই আসছে।

তাছাড়া বায়হাকী রহ. এ বর্ণনা দুটি পেশ করার পূর্বে আবুল খাসীব থেকে বর্ণনা করেছেন, রমজান মাসে সুওয়াইদ ইবনে গাফালা ইমামত করতেন এবং পাঁচ তারবীহা বিশ রাকাত পড়তেন। এরপর বায়হাকী রহ. বলেছেন,

وَرُوِّينَا عَنْ شُتَيْرِ بْنِ شَكَلٍ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ عَلِىٍّ رَضِىَ اللَّهُ عَنْهُ : أَنَّهُ كَانَ يَؤُمُّهُمْ فِى شَهْرِ رَمَضَانَ بِعِشْرِينَ رَكْعَةً ، وَيُوتِرُ بِثَلاَثٍ. وَفِى ذَلِكَ قُوَّةٌ لِمَا ...

অর্থাৎ আলী রা.এর শিষ্য শুতায়র ইবনে শাকাল থেকেও আমাদের নিকট বর্ণিত হয়েছে, রমযান মাসে তিনি বিশ রাকাত পড়াতেন এবং তিন রাকাত বেতের পড়তেন। এ দুটি বর্ণনা সামনের (সুলামী ও আবুল হাসনার) বর্ণনাদুটিকে শক্তি জোগায়।

সুতরাং লা মাযহাবী বন্ধুদের এতটুকু বলে ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয় যে, বায়হাকী এটিকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, আবুল খাসীবকে ইবনে হিব্বান বিশ্বস্ত আখ্যা দিয়েছেন। যাহাবী কাশিফ গ্রন্থে বলেন, وثق অর্থাৎ তাকে বিশ্বস্ত বলা হয়েছে। ইবনে হাজার তাকরীব গ্রন্থে বলেছেন, মাকবূল অর্থাৎ গ্রহণ করার মতো।

এরপর তারা লিখেছেন, আল্লামা আলবানী র. বলেন, এতে আবুল হাসানা ত্রুটিযুক্ত। তার সম্পর্কে ইমাম যাহাবী র. লিখেছেন, সে কে তা জানা যায়নি। হাফেজ র. বলেছেন, সে অজ্ঞাত। আবুল হাসানা কর্র্র্তৃক বর্ণিত হাদীস প্রত্যাখ্যাত। মিযানুল ই’তিদাল ১ম খ-, যয়ীফ সুনানুল কুবরা ২য় খ-, বায়হাকী।

এ হলো আলবানীর অন্ধ অনুসারীদের শেষ সম্বল। আলবানী ভুল করেছেন তো তারাও ভুল করেছেন। একই ভুল করেছেন মোবারকপুরীও। আসলে যাহাবী ও হাফেজ ইবনে হাজার র. যে আবুল হাসনার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি আর এই আবুল হাসনা দুই ব্যক্তি। ইনি হযরত আলী রা.এর শাগরিদ আর উনি হযরত আলী রা. এর ছাত্রের ছাত্র হাকাম ইবনে উতায়বার শাগরিদ। এই আবুল হাসনার ছাত্র আমর ইবনে কায়স ও আবূ সাদ আল বাক্কাল, আর ঐ আবুল হাসনার ছাত্র শারীক নাখায়ী। ঐ আবুল হাসনাকে ইবনে হাজার র. ‘তাকরীবে’ ৭ম স্তরের বলে উল্লেখ করেছেন। আর এই আবুল হাসনার ছাত্র আবূ সাদ বাক্কালকে ৫ম স্তরের উল্লেখ করেছেন। তাহলে তার উস্তাদ আবুল হাসনা অবশ্যই ৩য় বা ৪র্থ স্তরের হয়ে থাকবেন। সুতরাং দুজন এক ব্যক্তি হয় কিভাবে? তাছাড়া ইবনে হাজার র. তাকরীবের ভূমিকায় লিখেছেন, যে ব্যক্তি থেকে শুধু একজন রাবী হাদীস বর্ণনা করেছেন, আর কেউ তাকে ছিকাহ বা বিশ্বস্ত বলেননি তাকেই আমি মাজহুল বা অজ্ঞাত বলে পরিচয় দেব। তার এ কথার আলোকেও বোঝা যায়, এই আবুল হাসনাকে তিনি মাজহুল বা অজ্ঞাত বলেননি। কারণ তার থেকে দুজন রাবী হাদীস বর্ণনা করেছেন।

Top