❏ দরসে হাদীসঃ [হাদীস নং- (০৬)]
○ অধ্যায়ঃ [ كتاب الايمان : ঈমান পর্ব ]
[ وعن انس رضي الله عنه قال قال رسول الله ﷺ لا يؤمن احدكم حتى اكون احب اليه من والده وولده والناس اجمعين .]
: (متفق عليه)
হযরত আনাস [رضي الله عنه] হতে বর্ণিত, (টীকাঃ ১) তিনি বলেন, রাসূলাল্লাহ্ [ﷺ] এরশাদ করেছেনঃ "তোমাদের কেউ মু'মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতামাতা, সন্তান-সন্ততি এবং সকল লোকের চেয়েও অধিক প্রিয় হবো।" (টীকাঃ ২)
[ বোখারী ও মুসলিম ]
□ উক্ত হাদীস শরীফের ব্যাখায় বলা হয়েছেঃ #MustShAre
___________________________________
◇ টীকাঃ ১.
তিনি হলেন- আনাস ইবনে মালিক ইবনে নাদ্বর আনসারী খায়রাজী। হুযূরের বিশেষ খাদিম। দশ বছর তাঁর পবিত্র সংস্পর্শে ছিলেন। তিনি শত বছরের অধিক হায়াত পান। ফারুক্ব-ই আ'যমের যুগে বসরায় চলে যান। খুব সম্ভব তিনি সেখানেই হিজরী ৯৩ সনে ইন্তিকাল করেন। বসরায় সর্বশেষ সাহাবী হিসেবে তাঁর ওফাত হয়। তার নূরানী মাযার শরীফ সর্বস্তরের মানুষের যিয়ারতস্থল।★
★ উল্লেখ্য, তিনি ওই ৪ জন সৌভাগ্যবান সাহাবীর অন্যতম, যাঁরা হুযূরের খেদমত করে বিশেষ নি'মাতের অধিকারী হয়েছেন। তাঁরা হলেন-
এক. হযরত আবূ বকর সিদ্দীক্ব [رضي الله عنه]। তিনি হুযূরের খিদমতের ফলে নবীগণের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হবার গৌরব লাভ করেন।
দুই. হযরত আনাস [رضي الله عنه]। তিনি দীর্ঘ দশ বছর যাবদ হুযূরের খেদমত করলে হুযূর তাঁর দীর্ঘায়ু ও অধিক সন্তানের জন্য দো'আ করেন। ফলে তিনি এত দীর্ঘ হায়াত লাভ করেন যে, শেষ বয়সে তিনি লোক সমক্ষে আসতেও সঙ্কোচ বোধ করতেন। কারণ, তিনি নিজ হাতে পুত্র ও পৌত্রসহ সর্বমোট ১০৪ জনকে দাফন করার সুযোগ পান। এতে তাঁর দীর্ঘায়ু ও সন্তানের আধিক্য সহজে অনুমেয়।
তিন. হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস [رضى الله عنهما]। তিনি মাত্র সাত বছর বয়সে হুযূর [ﷺ]'র খিদমত এমনিভাবে করেছেন যে, হুযূরের জন্য তাহাজ্জুদের ওযূর পানি ও শৌচকর্ম সম্পাদনের পানি গভীর রাতে আলাদা আলাদাভাবে ব্যবস্থা করতেন। হুযূর খুশী হয়ে তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরে দো'আ করেছিলেন- "আল্লিমহুল্ কিতা-ব। " (হে আল্লাহ্! তাঁকে কিতাবুল্লাহ্'র ইলম দান করুন!) ফলে তিনি মুফাস্সিরকুল সরদার (رئيس المفسرين) হবার গৌরভ অর্জন করেন।
চার. হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাস্'ঊদ [رضي الله عنه]। তিনি হুযূর-ই আকরাম [ﷺ]'র জুতো মুবারক ও বিছানা মুবারক বহনের খিদমত আঞ্জাম দেওয়ার ফলে হুযূর [ﷺ] তাঁর জন্য দো'আ করেছিলেন- اللهم فقهه فى الدين (হে আল্লাহ্! তাঁকে দ্বীনের বুঝশক্তি দান করুন)। সুতরাং তিনি 'ফক্বীহ্'কুল সরদার হবার মর্যাদা লাভ করেছেন।
◇ টীকাঃ ২.
এখানে 'প্রিয়' দ্বারা স্বভাবগত ভালবাসার প্রেমাষ্পদ (طبعى محبوب) বুঝানো উদ্দেশ্য। শুধু আক্বলী বা যুক্তিগত নয়। কেননা, সন্তানদের, মাতাপিতার প্রতি স্বভাবগত ভালোবাসা হয়ে থাকে। এ ভালবাসাই হুযূরের প্রতি অধিকতর হওয়া চাই।
মহান আল্লাহ্'র প্রশংসাক্রমে প্রত্যেক মু'মিনের কাছে হুযূর জান-মাল ও সন্তান-সন্ততির চেয়ে অধিক প্রিয়। সাধারণ মুসলমানও ওইরুপ স্বধর্ম ত্যাগকারী সন্তানগণ এবং বেদ্বীন মাতাপিতাকে ত্যাগ করে থাকে, প্রিয় নবী [ﷺ]'র সম্মানে প্রাণও উৎসর্গ করে দেয়। এ বিষয়ে গাযী আব্দুর রশীদ, গাযী-ই ইলমে দ্বীন আব্দুল ক্বাইয়ূম প্রমুখের জীবন্ত উদাহরণ মওজূদ রয়েছে।
প্রচারেঃ facebook.com/SunniAqidah
□ হাদীস শরীফের ব্যাখ্যা সম্বলিত টীকা পেতে সার্চ করুনঃ
f/Ishq-E-Mustafa ﷺ
[সূত্রঃ মিরআতুল মানাজীহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ, কৃত- মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী আশরাফী বদায়ূনী, বঙ্গানুবাদঃ মাওলানা আব্দুল মান্নান, ১ম খন্ড, পৃ. ২৫,২৬ হাদীস নং-০৬ এর টীকাঃ ৩৭,৩৮ দ্রব্যষ্ট, প্রকাশনায়ঃ ইমাম আহমদ রেযা রিসার্চ একাডেমী, চট্টগ্রাম। সবুজ ভবন, খাজা রোড, কুলগাঁও, ডাকঘর-জালালাবাদ-৪২১৪, বায়েজীদ, চট্টগ্রাম। ফোনঃ ০৩১-৬৮৪২২৪, মোবাইলঃ ০১১৯৯-২২৪৪০৩, ০১৮৬৮-০৩১৬২১