যে ঘরে স্বামী ও স্ত্রী এক সাথে তাহাজ্জুত এর নামায পড়বে, সে ঘরে জীবনে কোনো দিন অশান্তি হবেনা।

১)   তাহাজ্জুদে উঠে দোয়া

রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ রাত্রে জাগ্রত হয় ও নিম্নের দোআ পাঠ করে এবং আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে, তা কবুল করা হয়। আর যদি সে ওযূ করে এবং ছালাত আদায় করে, সেই ছালাত কবুল করা হয়’।
উচ্চারণ : লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু; লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি ওয়ালা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবার; ওয়ালা হাওলা ওয়ালা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ। অতঃপর বলবে, ‘রবিবগফির্লী’ (প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর)। অথবা অন্য প্রার্থনা করবে।
অনুবাদ : আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁর জন্যই সকল রাজত্ব ও তাঁর জন্যই সকল প্রশংসা এবং তিনিই সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। মহা পবিত্র আল্লাহ। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোন ক্ষমতা নেই কোন শক্তি আল্লাহ ব্যতীত’।
[বুখারী, মিশকাত হা/১২১৩ ‘রাত্রিতে উঠে তাহাজ্জুদে কি বলবে,অনুচ্ছেদ-৩২, এছাড়া অন্যান্য দো‘আও পড়তেন। মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১১৯৫; আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১২০০, ‘রাত্রির ছালাত’ অনুচ্ছেদ-৩১]

স্ত্রী মায়মূনা (রাঃ)-এর ঘরে তাহাজ্জুদের ছালাতে উঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনি সূরা আলে ইমরানের ১৯০ আয়াত থেকে সূরার শেষ অর্থাৎ ২০০ আয়াত পর্যন্ত পাঠ করেন’ (বু: মু:)। একবার সফরে রাতে ঘুম থেকে উঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সূরা আলে ইমরান ১৯১-৯৪ আয়াত  পাঠ করেছেন (নাসাঈ)। একবার তিনি (গুরুত্ব বিবেচনা করে) সূরা মায়েদাহ ১১৮ আয়াতটি দিয়ে পুরা তাহাজ্জুদের ছালাত শেষ করেন’ (নাসাঈ)। মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১১৯৫; নাসাঈ, মিশকাত হা/১২০৯; নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২০৫, ‘রাত্রির ছালাত’ অনুচ্ছেদ-৩১; আহমাদ হা/২১৩৬৬; মির‘আত ৪/১৯১

২)     তাহাজ্জুদের ছালাতে রাসূল (ছাঃ) বিভিন্ন ‘ছানা’ পড়েছেন। 

(মুসলিম, আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১২১২, ১৪, ১৭; নাসাঈ হা/১৬১৭ ইত্যাদি
তন্মধ্য হ’তে যে কোন ‘ছানা’ পড়া চলে। তবে আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) রাতে যখন তাহাজ্জুদে দাঁড়াতেন, তখন তাকবীরে তাহরীমার পর নিম্নের দো‘আটি পড়তেন-

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা লাকাল হামদু আনতা ক্বাইয়িমুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া মান ফীহিন্না, ওয়ালাকাল হামদু আনতা নূরুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া মান ফীহিন্না, ওয়ালাকাল হামদু আনতা মালিকুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযি ওয়া মান ফীহিন্না; ওয়া লাকাল হামদু, আনতাল হাক্কু, ওয়া ওয়া‘দুকা হাক্কুন, ওয়া লিক্বা-উকা হাক্কুন, ওয়া ক্বাওলুকা হাক্কুন; ওয়া ‘আযা-বুল ক্বাবরে হাক্কুন, ওয়াল জান্নাতু হাক্কুন, ওয়ান্না-রু হাক্কুন; ওয়ান নাবিইয়ূনা হাক্কুন, ওয়া মুহাম্মাদুন হাক্কুন, ওয়াস সা-‘আতু হাক্কুন। আল্লা-হুম্মা লাকা আসলামতু ওয়া বিকা আ-মানতু, ওয়া ‘আলাইকা তাওয়াক্কালতু, ওয়া ইলাইকা আনাবতু, ওয়া বিকা খা-ছামতু, ওয়া ইলাইকা হা-কামতু, ফাগফিরলী মা ক্বাদ্দামতু ওয়া মা আখ্খারতু, ওয়া মা আসরারতু ওয়া মা আ‘লানতু, ওয়া মা আনতা আ‘লামু বিহী মিন্নী; আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুওয়াখখিরু, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, ওয়া লা ইলা-হা গাইরুকা।
অর্থঃ
‘হে আল্লাহ! তোমার জন্য যাবতীয় প্রশংসা, তুমি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এ সবের মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুর ধারক। তোমারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, তুমি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এ সবের মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুর জ্যোতি। তোমারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, তুমি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এ সবের মধ্যে যা আছে সবকিছুর বাদশাহ। তোমারই জন্য সমস্ত প্রশংসা, তুমিই সত্য, তোমার ওয়াদা সত্য, তোমার সাক্ষাত লাভ সত্য, তোমার বাণী সত্য, কবর আযাব সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, নবীগণ সত্য, মুহাম্মাদ সত্য এবং ক্বিয়ামত সত্য। হে আল্লাহ! আমি তোমারই নিকট আত্মসমর্পণ করি, তোমারই উপর ভরসা করি ও তোমার দিকেই প্রত্যাবর্তন করি। আমি তোমার জন্যই ঝগড়া করি এবং তোমার কাছেই ফায়ছালা পেশ করি। অতএব তুমি আমার পূর্বাপর, গোপন ও প্রকাশ্য সকল অপরাধ ক্ষমা কর। তুমি অগ্র ও পশ্চাতের মালিক। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং তুমি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই।  আবুদাঊদ হা/৭৭২; ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/১১৫১-৫২; বুখারী হা/৬৩১৭; মুসলিম হা/১৮০৮; মিশকাত -আলবানী, হা/১২১১ ‘রাত্রিতে উঠে তাহাজ্জুদে কি বলবে’ অনুচ্ছেদ-৩২; মির‘আত হা/১২১৮

যে স্ত্রী তার স্বামীকে সকালে ঘুম থেকে জাগিয়ে পবিত্র করে ফজরের সালাতে মসজিদে পাঠিয়ে দেয়,
ঐ স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অন্তরে আল্লাহর তরফ থেকে ভালোবাসার নুর পয়দা হয়।

হে আল্লাহ তুমি আমাদের জীবনে পরহেজগার স্বামী / স্ত্রী দান করো (#আমিন)
Top