নূরনবী ﷺ
শোকের বছর
চব্বিশতম অধ্যায়ঃ শোকের বছরঃ
প্রসঙ্গঃ চাচা আবু তালেব ও বিবি খাদিজা (رضي الله عنها)-এঁর ইন্তিকাল, ঐ বৎসরকে শোকের বৎসর ঘোষণা
নবী করীম [ﷺ]-এঁর বয়স যখন ৪৯ বৎসর আট মাস এগার দিন, তখন ছিল রমযান মাসের ২৩ তারিখ। ঐ তারিখেই নবী করীম [ﷺ]-এঁর প্রতিপালনকারী চাচা আবু তালেব ইনতিকাল করেন। এর পাঁচ দিন পর অর্থাৎ রমযানের ২৮ তারিখে হুযুর [ﷺ]-এঁর সুখ-দুঃখের জীবনসঙ্গিনী বিবি খাদিজা (رضي الله عنها)-ও জান্নাতবাসিনী হয়ে যান। জীবনের সবচেয়ে আপনজন হিসাবে বিবি খাদিজা (رضي الله عنها) ও চাচা আবু তালেবের ইনতিকালে নবী করীম [ﷺ] এতই শোকাভিভূত হয়ে পড়েন যে, তিনি ঐ সনের পূর্ণ বছরকে শোকের বছর বলে ঘোষণা করেন। কোরআন এবং হাদিস অনুসারে কোন প্রিয়জনের বিয়োগে তিনদিনের বেশি শোকপালন করা যায় না, কিন্তু নবীজীর ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়। তিনি তাঁর সবচেয়ে আপনজনদের জন্য পুরো বছরকে শোকের বছর বলে অভিহিত করেছেন।
বিবি খাদিজা (رضي الله عنها) মাল, দৌলত ও শান্তনা দিয়ে নবী করীম [ﷺ]-কে সবসময় চাঙ্গা করে রাখতেন। আবু তালেবের সমর্থনের কারণে কুরাইশরা নবী করীম [ﷺ]-কে চরম আঘাত করতে এতদিন সাহস পায়নি। তাঁদেরকে হারিয়ে নবী করীম [ﷺ] শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েন। কাফেরদের অত্যাচারের সকল বাধাই এবার দূর হয়ে গেলো।
বিবি খাদিজার (رضي الله عنها) ইনতিকালের পর নবী করীম [ﷺ] হযরত বিবি সওদা বিনতে জামআ (رضي الله عنها) কে তাঁর বৃদ্ধা বয়সে বিবাহ করেন। এর কিছুদিন পর তিনি আল্লাহর নির্দেশে হযরত আবু বকরের শিশুকন্যা হযরত আয়েশা (رضي الله عنها)-কে বিবাহ করেন। ৫১ বছর বয়সে ৬ বৎসরের কিশোরীকে বিবাহ করার মধ্যে নিশ্চয়ই জৈবিক কোন কারণ ছিলো না। হুযুর [ﷺ]-এঁর বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল খোদায়ী নির্দেশের বাস্তবায়ন। হযরত দাউদ (عليه السلام)-এঁর একশত বিবাহ ও হযরত সোলায়মান (عليه السلام)-এঁর এক হাজার বিবাহের তুলনায় আমাদের প্রিয় নবীর [ﷺ] ১১ বিবাহ ছিল খুবই সীমিত। সুতরাং ইহুদী ও খৃষ্টান লেখকদের অপবাদ আমাদের নবীর উপরে নয় - বরং তাদের নবীদের উপরেই প্রথমে বর্তায়। ক্ন্তি মুসলমানদের বিশ্বাস - নবীগণ আল্লাহর নির্দেশেই সবকিছু করেন।
এর কিছুদিন পরেই তিনি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আপন পালিত পুত্র যায়েদ ইবনে হারেছা (رضي الله عنه)-কে সাথে নিয়ে দুধ মাতার দেশ তায়েফ গমন করেন।