(১) মৌলিক নীতিমালাঃ প্রত্যেক বান্দা তার দুনিয়াবী আমল অনুযায়ী হাশরে উঠবে
عن جابر بن عبدا للّٰہؓ قال سمعت رسول اللّٰہﷺ یقول : یبعث کل عبد علی مامات علیہ رواہ مسلم
অর্থঃ হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) কে এরূপ এরশাদ করতে শুনেছি- “প্রত্যেক বান্দা তার দুনিয়াবী আমল অনুযায়ী হাশরে উঠবে” (মুসলিম)।
(২) শহীদগণ উঠবেন রক্তমাখা শরীর ও জামাকাপড় নিয়েঃ
عن ابی ھریرۃؓ ان النبی ﷺ قال والذی نفسی بیدہ لا یکلم اھد فی سبیل اللّٰہ۔ واللّٰہ اعلم بمن یکلم فی سبییلہ ۔ الاجاء یوم القیامۃ وجرحہ یثعب دما۔ اللون لنون الدم ولاعرف عرف المسک (بخاری ومسلم)
অর্থঃ হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত- নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করেছেন- “যার হাতে আমার প্রাণ- তাঁর শপথ করে বলছি- যারা আল্লাহর রাস্তায় আঘাত খেয়েছে- আল্লাহ্-ই ভাল জানেন কে তাঁর রাস্তায় আঘাত খেয়েছে- তাঁরা হাশরের দিনে এভাবে উঠবে যে, ক্ষতস্থান দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকবে। রং হবে রক্তের- কিন্তু তার সুগন্ধ হবে মেশক -এর মত” (বুখারী ও মুসলিম)।
(৩) মাতালরা মাতাল অবস্থায় উঠবেঃ
عن انس بن مالک قال : ال رسول اللّٰہ ﷺ من مات سکران فانہ یعاین ملک الموت سکران ، ویعاین منکرا ونکیرا سکرانی ویبعث یوم القیامۃ سکران الی خندق فی وسط جھنم یسمی السکران۔ فیہ عین یجری ماؤھا دما۔ لا یکون لہ طعام ولا شراب الامنہ رواہ ابو ھدبۃ ابرھیم بن ھدبۃ ۔
অর্থঃ হযরত আনাছ ইবনে মালেক (রাঃ) বর্ণনা করেন- রাসুলে করিম (ﷺ) এরশাদ করেছেন- “যে ব্যক্তি মাতাল অবস্থায় মারা যাবে- সে ব্যক্তি নিজের মাতাল অবস্থায়ই মালাকুল মাউত এবং মুনকার নকীরকে দেখতে পাবে এবং কিয়ামতের দিনে মাতাল অবস্থায়ই জাহান্নামের মধ্যবর্তী “মাতাল” নামক গর্তে নিক্ষিপ্ত হবে। সেখানে তার জন্য একটি নহর প্রবাহিত হবে- যার পানীয় হবে রক্ত। তার খাদ্য ও পানীয় উক্ত নহর থেকেই সরবরাহ করা হবে” (আবু হাদ্বা ইব্রাহীম)।
(৪) মুয়াযিযন ও হাজীগণ যথাক্রমে আযান ও তাল্বিয়া পাঠরত অবস্থায় হাশরে উঠবেঃ
روی عباد بن کثیر عن الزبیر عن جابر قال: ان المؤذنین والملبین یخرجون یوم القیامۃ من قبورھم یؤزن المؤذن ویلبی الملبی ۔ ذکرہ الحلیمی الحافظ ۔
অর্থঃ হযরত জাবের (রাঃ) থেকে মউকুফ হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, “হাশরের দিনে মুয়াযিযন ও তাল্বিয়া পাঠকারী হাজীগণ কবর থেকে এভাবে বের হবে যে, মোয়াযিযন আযান দিতে থাকবে- আর তালবিয়া পাঠকারী হাজী তালবিয়া পাঠ করতে থাকবে। ” (হাফিযুল হাদীস হালিমী)।
(৫) যিকিরকারীগণ মাথা ঝুলিয়ে যিকির অবস্থায় কবর থেকে উঠবেঃ
عن ابن عباس وعلی بن حسین ان رسول اللّٰہ ﷺ قال : اخبرنی جبرئیل علیہ السلام ان :لا الہ الا اللّٰہ انس للمسلم عند موتہ وفی قبرہ وحین یخرج من قبرہ ۔ یا محمد لو ترھم حین یمرقون من قبورھم ینفضون رؤوسھم ھذا یقول لا الہ الا اللّٰہ والحمد للّٰہ فیبیض وجھہ ۔ وھذا ینادی یا حسرتا علی ما فرطت فی جنب اللّٰہ مسودتہ وجوھھم ۔ وعن ابن عمر قال : قال رسول اللّٰہ ﷺ لیس علی اھل لا الہ الا اللّٰہ وحشۃ عند الموت ولا فی قبورھم ۔ ذکرہ ابو القاسم بن ابرھیم ۔
অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবং আলী ইবনে হোসাইন (জয়নুল আবেদীন) থেকে হাদীস বর্ণিত- নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেন- “আমাকে জিবরাঈল এসে গায়েবী সংবাদ দিয়ে গেলো যে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্” কলেমাটি মুসলমানের নিকট তাঁদের মউতের সময়, কবরের মধ্যে এবং কবর থেকে হাশরে যাবার পথে খুবই শান্তিদায়ক হবে। হে মুহাম্মদ (ﷺ)! আপনি যদি তাঁদেরকে কবর থেকে উঠে হাশরে যাবার সময় তাঁদের মাথা ঝুলানী দেখতেন! এরা তখন বলবে- ”লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ওয়াল হামদুলিল্লাহি”। তাদের চেহারা হবে উজ্জ্বল।
আর অন্যরা (বদকার) বলবে- হায় আফসোস! আমি আল্লাহর আয়ত্তে থেকেও সীমা লংঘন করেছি। তাদের চেহারা হবে কালো। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণনাটি এভাবে এসেছে-“রাসুল করিম (ﷺ) এরশাদ করেছেন-“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু যিকিরকারীর কোন ভয় থাকবেনা- মউতের সময় এবং কবরের মধ্যেও”। (আবুল কাছেম ইবনে ইব্রাহীম)।
(৬) বিলাপ কারিনীর হাশর হবে বিলাপরত অবস্থায়ঃ
روی النسائی عن النبی ﷺ انہ قال : تخرج النائحۃ من قبرھا یوم القیامۃ شعثاء غبراء ۔ علیھا جلباب من لعنۃ اللّٰہ ودرع من نار ۔ یدھا علی رأسھا تقول : یا ویلاہ وروی ابن ماجۃ عن ابی مالک الاشعری قال : قال رسول اللّٰہ ﷺ الیناحۃ من امر الجاھلیۃ ۔ وان النائحۃ اذا ما تت قطع اللّٰہ لھا ثیابا من نار ودرعا من لھب النار۔
অর্থঃ ইমাম নাছায়ী নবী করীম (ﷺ) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন- রাসুল পাক (ﷺ) এরশাদ করেছেন-“বিলাপ করে চিৎকার করে চুল ছিঁড়ে রোদন কারিনী মহিলারা কবর থেকে বের হবে ধূলামলিন অবস্থায়- আর তাঁদের মাথায় থাকবে লা’নতের নিকাব। তাদের ওড়না হবে আগুনের। আর হাত বাধা থাকবে মাথার উপরে। সে বলতে থাকবে- হায়! হায়! (নাছায়ী)
ইবনে মাজাহ্ আবু মালেক আশ্আরী থেকে রেওয়ায়াত করেছেন- রাসুল করিম (ﷺ) এরশাদ করেছেন- “চিৎকার করে বিলাপ করা জাহেলিয়াতের হারাম প্রথা এবং বিলাপকারিনী যখন মারা যাবে- আল্লাহ্পাক তার কাপড় আগুনের দ্বারা তৈরী করবেন এবং ওড়না তৈরী করবেন আগুনের শিখা দ্বারা” (ইবনে মাজাহ্)।
(৭) সুদখোররা উঠবে বড় ও ভারী পেট নিয়েঃ
قال اللّٰہ تعالی : الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لاَ يَقُومُونَ إِلاَّ كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ
অর্থঃ আল্লাহ্পাক এরশাদ করেন- “যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতের দিন ঐ লোকের মত দণ্ডায়মান হবে- যাকে শয়তান আছর করে মোহাবিষ্ট করে ফেলেছে” (ছুরা বাক্বারাহ্ ২৭৫ আয়াত)।
অর্থাৎ তারা কবর থেকে উঠে হাশরে যাওয়ার সময় তাদের পেট ভারী ও বড় হওয়ার কারনে তারা দাঁড়াতে পারবেনা- বরং আছাড় খেয়ে পড়ে যাবে।
(৮) মর্যাদাবান মুমিনদের হাশর হবে মর্যাদাপূর্ণঃ
روی عن النبی ﷺ من مات علی مرتبۃ من المراتب بعث علیھا یوم القیامۃ ذکرہ صاحب القوت وھو صحیح ۔
অর্থঃ “নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেছেন- দুনিয়াতে মর্তবাধারী লোকদের হাশর হবে তাঁদের মর্তবা অনুযায়ী”। (ছাহেবুল কুত কর্তৃক বর্ণিত সহীহ হাদীস) (তাযকিরাহ্ গ্রন্থ অবলম্বনে)।
(৯) গুনাহ্গারগণ দশদলে বিভক্ত হয়ে হাশরে উঠবেঃ- (হাদীসে মুয়ায)
وروی من حدیث معاذبن جبل قال قلت یا رسول اللّٰہ ارایت قول اللّٰہ (یوم ینفخ فی الصور فتاتون افواجا) سورۃ النبا ۸۱ فقال النبی ﷺ یا معاذ بن جبل لقد سألت عن امر عظیم ۔ ثم ارسل عینیہ بالبکاء والدموع ثم قال : تحشر عشرۃ اصناف من امتی اشتاتا قد میزھم اللّّہ تعالی من جماعات المسلمین وبدل وصورھم فمنھم علی صورۃ القردۃ ۔ وبعضھم علی صورۃ الحنازیر ۔ وبعضھم منکسین رؤوسھم وارجلھم اعلاھم ووجوھھم یسحبون علیھا ۔ وبعضھم عمی یتردون ۔ وبعضھم صم بکم لا یعقلون۔ وبعضھم یمضغون السنتھم مدلاۃ علی صدورھم یسیل القیح کم افواھھم لعابا تقذرھم اھل الجمع ۔ وبعضھم مقطعۃ ایدیھم وارجھلم۔ وبعضھم مصلبون علی جذوع النار۔ وبعضھم اشد نتنا من الجیفۃ ۔ وبعضھم یلبسون جلابیب سابغۃ من القطوان۔
فاما الذین علی صورۃ القردۃ قالفتات من الناس یعنی النمام ۔ واما الذین علی صورۃ الجنازیر فاھل السحت والحرام والمکس واما المنکسون رؤوسھم ووجوھھم فاکلۃ الرباء ۔ والعمی من یجور فی الحکم۔ والصم البکم الذین یعجون باعمالھم۔ والذی یمغضون السنتھم فالعلماء والقصاص الذین یخالفون قولھم فعلھم ۔ والمقطعۃ ایدیھم وارجلھم الذی یوذون الجیران۔ والمصلبون علی جذوع النار السعادۃ بالناس الی السلطان۔ والذین ھم اشد نتنا من الجیف الذین یتمتعون بالشھوات واللذات یمنعون حق اللّٰہ تعالی من اموالھم ۔ والذی یلبسون الجلابیب فاھل الکبر والفخر والخیلا۔ء
অর্থঃ হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আরয করলাম- ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আল্লাহ্পাক যে কোরআনের ছুরা নাবার ১৮ আয়াতে বলেছেন- “যেদিন সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে- সেদিন তোমরা দলে দলে বিভক্ত হয়ে হাশরে উঠবে” -এই আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
নবী করিম (ﷺ) এরশাদ করলেন- “হে মুয়ায! তুমি আমার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চেয়েছো। একথা বলেই রাসুলপাক (ﷺ) দো’চোখের পানি ছেড়ে দিলেন। তারপর বল্লেন- আমার গুনাহ্গার উম্মত দশ দলে বিভক্ত হয়ে হাশরে উঠবে। তাদেরকে আল্লাহ্পাক মুসলমানের প্রকৃত দল থেকে পৃথক করে দিবেন, তাদের আকৃতি বদলিয়ে দেয়া হবে।
ঐ দশদলের একদল হবে বানরের ছুরতে। দ্বিতীয়দল হবে শুকরের ছুরতে। তৃতীয়দল হবে উপুড় হয়ে চলাচলকারী। চতুর্থদল হবে অন্ধ হয়ে পায়চারীকারী। পঞ্চমদল হবে বে-আকল, বর্ধির ও বোবা। ষষ্ঠদল হবে-যাদের জিহ্বা বের হয়ে বুকের উপর ঝুলে পড়বে- আর তাদের মুখ দিয়ে দুর্গন্ধময় পুঁজ বের হয়ে আসবে। এতে হাশরবাসীরা ভীষন কষ্ট পাবে। সপ্তমদল হবে হাত-পা কাটা। অষ্টমদল হবে আগুনের শলায় গুলীবিদ্ধ অবস্থায়। নবমদল হবে মৃতজন্তুর চেয়ে বেশী দূর্গন্ধময়। দশমদল হবে ঐসব লোক- যারা পরিধান করবে আলকাত্রাপূর্ণ পরিচ্ছদ।
প্রথম দলের (বানর ছুরত) অপরাধ ছিল- তারা চোগলখোরী করে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করতো। দ্বিতীয় দলের (শুকুর ছুরত) অপরাধ ছিল- তারা হারামখোর ও ঘুষখোর ছিল। তৃতীয় দলের (পা উপরের দিকে) অপরাধ ছিল- তারা সুদ খেতো। চতুর্থ দলের (অন্ধ) অপরাধ ছিল- তারা বিচারের ক্ষেত্রে মানুষের উপর অত্যাচার করতো। পঞ্চম দলের (বোবা ও বধির) অপরাধ ছিল- তারা নিজেদের কুকর্মে গর্ব করতো। ষষ্ঠ দলের (জিহ্বা বুকের উপর ঝুলে পড়া) অপরাধ ছিল- তারা কিসসা কাহিনী বানিয়ে ওয়াজ করতো- তাদের কথায় ও কাজে মিল ছিলনা। সপ্তম দলের (আগুনের শলায় শুলীবিদ্ধ) অপরাধ ছিল- তারা লোক ধরে ধরে যালেম বাদশার হাতে তুলে দিত। নবম দলের (মৃতজন্তুর চেয়ে অধিক দূর্গন্ধময়) অপরাধ ছিল- তারা ভোগবিলাসে মত্ত ছিল, আর আল্লাহর সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করতোনা। দশম দলের (আলকাত্রার পোষাক পরিধানকারী) অপরাধ ছিল- তারা সবসময় অহঙ্কার ও ফখর বশতঃ পরিধানের কাপড় পায়ের টাখ্নুর নীচে পরিধান করতো”।
বিঃ দ্রঃ র্দোরাতুন নাসেহীন গ্রন্থে হযরত মুয়ায (রাঃ) সূত্রে আরো দুইটি দলের কথা উল্লেখ আছে। ১১ তম দল হবে ইয়াতিমের সম্পদ যুলুম করে নিজ দখলে নিয়ে তা ভোগকারী। তারা হাশরে উঠবে পেটে আগুন ভর্তি অবস্থায়। ১২ তম দল হবে- যাদের চেহারা হবে- রবি-শশীর মত উজ্জল এবং পোলসিরাত পার হবে বিদ্যুতের ন্যায়- তাঁরা ছিল সুন্নী ইমামের পিছনে নিয়মিত নামায আদায়কারী ও সঠিকভাবে রুকু-সিজদাকারী।
এই বার দল হলো উদাহরণ স্বরূপ। প্রত্যেক অপরাধীদের দল হবে ভিন্ন ভিন্ন। প্রত্যেক নেক্কারের দলও হবে আলাদা আলাদা। ইহারই প্রতিধ্বনী হয়েছে কোরআন মজিদের ছুরা বনী ইসরাইলের ৭১ আয়াতের মধ্যে।
আয়াতটি হলো-
يَوْمَ نَدْعُوا كُلَّ أُناسٍ بِإِمامِهِمْ
অর্থাৎ- “ঐ দিন আমি প্রত্যেক মানুষকে (নেক ও বদ) তার পথ প্রদর্শণকারী নেতার পিছনে ডাক দেবো”। শহীদগণকে আহ্বান করা হবে ইমাম হোসাইনের দলভুক্ত করে। হানাফীদেরকে ডাক দেয়া হবে ইমাম আযমের দলভূক্ত করে। সিদ্দীকগণকে ডাক দেয়া হবে হযরত আবু বকরের সাথে, কাদেরিয়া তরিকার মুরিদকে ডাক দেয়া হবে বড়পীর সাহেবের দলভূক্ত করে- ইত্যাদি।
অপরদিকে কাফেরদেরকে ডাক দেয়া হবে ফেরাউন ও আবু জাহেলের সাথে। কৃপন ও বখিলদেরকে ডাক দেয়া হবে কারুনের সাথে। ভন্ড নবীদেরকে ডাক দেয়া হবে মেসায়লামার সাথে। এরূপভাবে দলে দলে- গ্রুপে গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সুশৃংখলভাবে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে হাশরের ময়দানে। জান্নাতীরা আপন তরিকা ও আপন মাযহাবের ইমামদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে (তাফসীরে রুহুল বয়ান- ছুরা বনী ইসরাঈল ৭১ আয়াত ও ছুরা আল ফজর ২৯ ও ৩০ আয়াত)।
(১০) ইমাম গাযালী (রহঃ) এর বর্ণনা-
وقال ابو حامد الغزالی فی کتاب (کشف علوم الوخرۃ) : ومن الناس من یحشر بفتنتہ الدنیویۃ ۔ وکذلک یبعث السکران سکرانا والزامر تر امرا وکل واحدۃ علی الحال الذی صلہ عن سبیل اللّٰہ قال ومثل الحدیث الذی روی والصحیح ان شارب الخمر یحثر والکوز معلق فی عنقہ والقدؑ بیدہ وھو انتن من کل جیفۃ علی الارض یلعنہ کل من یمر بہ من الخلق ( التذکرۃ صف ۰۶۱۲)
অর্থাৎ আবু হামেদ ইমাম গাযালী ”কাশফু উলুমিল আমিরাহ্” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন- লোকেরা দুনিয়াতে যেসব ফিত্না বা অবাঞ্চিত কাজে লিপ্ত ছিল - সে অবস্থায়ই হাশর ময়দানে উত্থিত হবে। অনুরূপভাবে যারা দুনিয়াতে মাতাল ছিল, হাশর ময়দানেও তদ্রুপ মাতাল অবস্থায় উত্থিত হবে। তাশ খেলায় লিপ্ত লোকেরা ঐ খেলা অবস্থায়ই উত্থিত হবে। মোটকথা- প্রত্যেকেই ঐ বদ্হালে উঠবে, যে বদ্হাল তাকে আল্লাহর পথ হতে ফিরিয়ে রেখেছিল। ইমাম গাযালী (রহঃ) বলেন- ”উদাহরণ স্বরূপ- সহীহ বুখারীতে হাদীস বর্ণিত আছে- শরাবখোর হাশরে গমন করবে এমন অবস্থায় যে, তার গলায় লটকানো থাকবে শরাবের পেয়ালা- আর শরাবের ভাণ্ড থাকবে তার হাতে। তার শরীর হবে পৃথিবীর যাবতীয় দূর্গন্ধময় বস্তু হতে বেশী দূর্গন্ধময়। তাকে লা’নত দিতে থাকবে ঐ সব লোক- যারা তার পার্শ দিয়ে গমন করবে। (ইমাম কুরতুবীর আত্ তাযকিরাহ্ পৃষ্ঠা-২১৬)
-----
Home
»
কিতাবঃ হায়াত-মউত [লেখকঃ অধ্যক্ষ আবদুল জলিল (রহঃ)]
» ত্রিশতম অধ্যায়ঃ বিভিন্ন লোকদের হাশরে গমনের বিভিন্ন রূপ