শাহাদাতে কারবালা

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://2.bp.blogspot.com/-8tQ71sl5iBI/WdiVaO0_qHI/AAAAAAAABGs/IRNX8hgzg4gCDoRZBu86a_fQEZW9ZlqWACLcBGAs/s1600/download-9.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="225" data-original-width="225" loading="lazy" src="https://2.bp.blogspot.com/-8tQ71sl5iBI/WdiVaO0_qHI/AAAAAAAABGs/IRNX8hgzg4gCDoRZBu86a_fQEZW9ZlqWACLcBGAs/s1600-rw/download-9.jpg" /></a></div><br />★৬০ হিজরীর রজব<br />মাসে হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ওফাতের পর ইয়াযিদ মদীনা মুনাওয়ারাহর গভর্ণর ওয়ালিদ বিন উতবার নিকট এই মর্মে পত্র প্রেরণ করে যে, “হযরত ইমাম হুসাইন, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ও আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা কর্তৃক ইয়াজিদের নিকট বায়’আত হওয়ার<br />স্বীকারোক্তি নামা দ্রুততার সাথে সংগ্রহ কর। এবং যতক্ষণ পর্যন্ততারা বায়’আত গ্রহণ না করে,তাদেরকে ছাড়বেনা ।<br />[১]<br />[ইবনে কাসীর ও তাবারীর বর্ণনায় এসেছে-<br />ﻓَﺨُﺬْ ﺣُﺴﻴﻨﺎً ﻭَﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻭَﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺮِ ﺑِﺎﻟْﺒَﻴْﻌَﺔِ<br />ﺃَﺧْﺬًﺍ ﺷَﺪِﻳﺪًﺍ ﻟَﻴْﺴَﺖْ ﻓِﻴﻪِ ﺭُﺧْﺼَﺔٌ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺒَﺎﻳِﻌُﻮﺍ<br />অর্থাৎ হুসাইন, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ও<br />ইবনে যুবাইর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম কে এমনভাবে পাকড়াও কর, যেন বাইয়াত না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি না পায় ।<br /><br />[২]হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ইয়াযিদের বায়’আত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান<br />করে মক্কা মুকাররামায় চলে যান। ইমাম<br />হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নিকট ইয়াযিদ<br />মুসলিম জাহানের ইমাম ও নেতৃত্ব প্রদানের<br />জন্য সম্পূর্ণ অযোগ্য ছিল, বরং; সে ফাসিক,<br />পাপিষ্ঠ, অত্যাচারী ও মদ্যপায়ী ছিল । আর<br />খলিফা হিসেবে তার নিযুক্তিও খোলাফায়ে রাশেদার নৈর্বাচনীক ইসলামী পদ্ধতির পরিপন্থী ছিল। কূফারঅধিবাসীগণ ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহুআনহুর নিকটএকে একে চিঠি এবং প্রতিনিধি প্রেরণকরে আরজ করেন যে, তিনি যেন কূফায় আগমণকরেন। এবংবলে, আমাদের কোন ইমাম নেই।<br />আমরা আপনার নিকটই বায়’আত গ্রহণ করব।তাদের (কূফাবাসীদের) চিঠি ও দূত<br />প্রেরণের পরিমাণ এতই বেড়ে যায় যে, ইমাম<br />হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর মনে হল তাদের<br />দিকনির্দেশনা প্রদান ও ফাসিক পাপিষ্ঠ<br />ইয়াযিদের বায়’আত গ্রহণহতে রক্ষা করতে তাঁর কূফা যাওয়া প্রয়োজন।পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য তিনি হযরত মুসলিম বিন আকীল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে কূফায় প্রেরণ করেন।সেখানে সকলে তাকে সাদরে গ্রহণ করলএবং অগণিত লোক তাঁর হাতে ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পক্ষে বায়’আত গ্রহণ করলো। কিন্তু যখন ইবনে যিয়াদসকলকে হুমকি প্রদান করল, তারা বায়’আতত্যাগ করল। আর হযরত মুসলিম বিন আকীল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বন্দী অবস্থায় শহীদকরা হল ।ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হযরত মুসলিম<br />বিন আকীল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদাত<br />ও কূফাবাসীর বিশ্বাসঘাতকতার সংবাদ<br />মক্কা হতে কূফার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর<br />লাভ করেন ।সংক্ষিপ্ত ঘটনা হল এই , এই যাত্রায় নারী-পুরুষ ও শিশু মিলে মোট বিরাশি (৮২) জনশাহাদাত গ্রহণ করেন, যাদের যুদ্ধের উদ্দেশ্য ও (সামরিক)প্রস্তুতি পর্যন্ত ছিল না ।<br />অন্যদিকে ইয়াযিদ বাহিনী তাদের মোকাবেলায় ২২ হাজার সৈন্যনিয়ে উপনীত হয় । এমনকি এই নির্দয় জালিম লোকেরা সম্মানিত আহলে বাইতেগণের জন্য ফোরাত নদীর পানি পর্যন্ত অবরুদ্ধকরে দেয়।<br />ত্বাবারীর বর্ণনা অনুসারে ইবনে যিয়াদের নির্দেশ –<br />ﻓﺤﻞ ﺑﻴﻦ ﺍﻟْﺤُﺴَﻴْﻦ ﻭﺃَﺻْﺤَﺎﺑﻪ ﻭﺑﻴﻦ ﺍﻟﻤﺎﺀ، ﻭَﻻ ﻳﺬﻭﻗﻮﺍ ﻣِﻨْﻪُ<br />ﻗﻄﺮﺓ، ﻛﻤﺎ ﺻﻨﻊ ﺑﺎﻟﺘﻘﻲ ﺍﻟﺰﻛﻲ ﺍﻟﻤﻈﻠﻮﻡ ﺃَﻣِﻴﺮ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻋُﺜْﻤَﺎﻥ<br />ﺑﻦ ﻋَﻔَّﺎﻥَ<br />অর্থাৎ হযরত হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ,<br />তাঁর সাথীদের মাঝে এবং ফোরাত নদীর<br />মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াও।পানি এমনভাবে বন্ধ করে দাও, যেন এক ফোঁটাও পানি পান না করতে পারে।যেমনটি মুত্তাকী এবং নির্মলচিত্ত মজলুম আমীরুল মুমিনীন হযরত ওসমান বিন আফফান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সাথে করা হয়েছিল।<br />[তারিখে ত্বাবারী ৫:৪১২]<br />তিন দিন যাবৎ ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত হযরত<br />ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং তাঁর<br />১৮ জন আহলে বাইত ও সঙ্গীদের মধ্য হতে ৫৪ জনকে ৬১ হিজরীর ১০ই মুহররম<br />কারবালা প্রান্তরে নির্দয় ভাবে শহীদকরা হয় । ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে অভিশপ্ত শিমার মস্তক মুবারক বিচ্ছিন্ন করে শহীদ করে ।(নাউজুবিল্লাহ)<br />হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহু হতে বর্ণিত ,<br />ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ<br />ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓِﻴﻤَﺎ ﻳَﺮَﻯ ﺍﻟﻨَّﺎﺋِﻢُ ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ ﺑِﻨِﺼْﻒِ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭِ ، ﺃَﺷْﻌَﺚَ<br />ﺃَﻏْﺒَﺮَ ، ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻗَﺎﺭُﻭﺭَﺓٌ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺩَﻡٌ ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﺑِﺄَﺑِﻲ ﺃَﻧْﺖَ ﻭَﺃُﻣِّﻲ ، ﻣَﺎ<br />ﻫَﺬَﺍ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ” ﻫَﺬَﺍ ﺩَﻡُ ﺍﻟْﺤُﺴَﻴْﻦِ ﻭَﺃَﺻْﺤَﺎﺑِﻪِ ، ﻭَﻟَﻢْ ﺃَﺯَﻝْ ﺃَﻟْﺘَﻘِﻄُﻪُ<br />ﻣُﻨْﺬُ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡُ ” ﻓَﺄُﺣْﺼِﻲ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟْﻮَﻗْﺖَ ﻓَﺄَﺟِﺪُ ﻗُﺘِﻞَ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟْﻮَﻗْﺖِ<br />অর্থাৎ একদিন দুপুরে আমি নবী করীম<br />সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্নে দেখতে পেলাম, তাঁর পবিত্র কেশরাজি বিক্ষিপ্ত ওধুলোবালি মিশ্রিত আর তাঁর হাত<br />মুবারকে ছিল রক্তে পূর্ণ একটি শিশি ।<br />আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম !<br />আমার পিতা-মাতা আপনার কদম<br />মুবারকে উৎসর্গ হোক, আপনার<br />নুরাণী হাতে এটা কি ? তিনি ইরশাদ<br />করলেন, এটা হুসাইন ও তাঁর সঙ্গীদের রক্ত ।<br />আমি আজ সারা দিনই এগুলো সংগ্রহ<br />করে যাচ্ছি । ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহু বলেন, আমি ঐ দিনক্ষণ হিসাব<br />করে স্মরণে রাখলাম, পরবর্তীতে ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদাতের সংবাদ এলে মিলিয়ে দেখলাম আমার স্বপ্ন ও ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র শাহাদাত একইসময়ে সংগঠিত হয়েছে ।<br /><br />[৩]<br />হযরত সালমা রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহা হতে বর্ণিত –<br />ﺩَﺧَﻠْﺖُ ﻋَﻠَﻰ ﺃُﻡِّ ﺳَﻠَﻤَﺔَ، ﻭَﻫِﻲَ ﺗَﺒْﻜِﻲ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﻣَﺎ ﻳُﺒْﻜِﻴﻚِ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ :<br />ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﺗَﻌْﻨِﻲ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﻨَﺎﻡِ،<br />ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ﻭَﻟِﺤْﻴَﺘِﻪِ ﺍﻟﺘُّﺮَﺍﺏُ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﻣَﺎ ﻟَﻚَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ :<br />ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﻗَﺘْﻞَ ﺍﻟﺤُﺴَﻴْﻦِ ﺁﻧِﻔًﺎ<br />অর্থাৎ আমি উম্মুল মুমিনীন হযরত<br />সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার নিকট<br />আসলাম। দেখলাম, তিনি কাঁদছেন।<br />আমি বললাম আপনি কেন কাঁদছেন ?<br />তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্নে দেখলামযে, তাঁর পবিত্র চুল ও<br />দাঁড়ি মুবারকে মাটি লেগে আছে।<br />আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম !<br />আপনার কি হয়েছে ? তিনি ফরমালেন,<br />আমি এইমাত্র আমার হুসাইনের শাহাদাতের<br />ময়দান(কারবালা) থেকে আসলাম ।<br /><br />[৪]<br />ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর<br />মাথা মুবারক দেহ হতে আলাদা করে কুফায়<br />ইবনে যিয়াদের নিকট রাখা করা হল ।<br />ইবনে যিয়াদ একটি ছড়ি দ্বারা ইমাম<br />পাকের ঠোঁট মুবারকে আঘাত করা শুরু করলো।সেই মজলিশে নবী করীম সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন প্রবীণ<br />সাহাবী হযরত যায়েদ বিন আরকাম<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উপস্থিত ছিলেন।<br />তিনি অভিশপ্ত ইবনে যিয়াদের এমন<br />ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ দেখে সহ্য করতে পারলেন<br />না । ব্যাকুল ও রাগত স্বরে তাকে উদ্দেশ্য<br />করে বলে উঠলেন , এই পবিত্র ঠোঁটহতে ছড়ি সরাও! আল্লাহরশপথ,নিঃসন্দেহে আমি নিজ<br />চোঁখে বারংবার দেখেছি যে, নবী করীম<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ঠোঁট<br />মুবারকে চুমো খেতেন । এ বলে তিনি অঝোরে কাঁদতে লাগলেন ।<br />ইবনে যিয়াদ বলল, আল্লাহর শপথ !<br />তুমি যদি আজ বৃদ্ধ না হতে,<br />তবে আমি তোমাকেও হত্যা করতাম ।<br /><br />[৫]<br />পবিত্র ইমাম আর অপবিত্র ইয়াযিদ<br />ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর<br />শাহাদাতে ইয়াযিদের সম্পৃক্ততার<br />বিষয়ে কারো কারো বক্তব্য হল যে, এই<br />ঘটনায় ইয়াযিদের কোন হাত<br />ছিলনা বরং যা করার ইবনে যিয়াদই<br />করেছে ।নিম্নে এই বিষয়ে কিছু ঐতিহাসিক প্রমাণ উপস্থাপন করা হচ্ছে যা দ্বারা সত্যান্বেষী ও ন্যয়পরায়ণ লোকেরা সহজেই নির্ধারণ করতে সক্ষম হবে যে, এই সকল ঘটনায় ইয়াযিদের সম্পৃক্ততা কতটুকু ছিল ।<br />প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক আল্লামা ইবনে জরীর<br />ত্বাবারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ<br />করেন যে, ইয়াযিদ নিজেইইবনে যিয়াদকে কুফার শাসনকর্তা নিয়োগ দেয় এবং নির্দেশ দেয়, হযরত মুসলিম বিন আকীল রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহুকে যেখানে পাও হত্যা কর অথবা শহর<br />হতে বের করে দাও ।<br /><br />[৬]<br />অতঃপর যখন মুসলিম বিন আকীল ও<br />হানী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা কে শহীদ<br />করে তাদের খণ্ডিত মস্তকদ্বয় দামেশকে ইয়াযিদের নিকট পেশ করা হয় ।আর ইয়াযিদ ইবনে যিয়াদকে এ হীন কর্মের<br />জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে চিঠি লিখে।<br /><br />[৭]<br />এখন জেনে রাখা প্রয়োজন যে, ইমাম হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদাতের পর<br />ইয়াযিদের প্রথম হীন কর্ম কি ছিল?<br />আল্লামা ইবনে জরীর ত্বাবারী লিখেন<br />যে, ইবনে যিয়াদ হযরত ইমাম হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পবিত্র মস্তক তাঁর<br />হত্যাকারীদের মাধ্যমে ইয়াযিদের নিকট<br />প্রেরণ করে । ইয়াজিদের দরবারে পৌঁছলে মস্তক মুবারক তার সামনে রাখা হয়। ইয়াযিদ তার হাতের ছড়ি দিয়ে ইমাম পাকের ওষ্ঠ ও দাঁত মুবারকে মৃদু আঘাত করছিল আর বলছিল, তাঁরএবং আমাদের উদাহরণ এমনই, যেমন হাসীন ইবনে হামাম মুররী (তার কবিতায়) বলেছে –<br />ﻳُﻔَﻠِّﻘْﻦَ ﻫَﺎﻣًﺎ ﻣِﻦْ ﺭِﺟَﺎﻝٍ ﺃَﻋِﺰَّﺓٍ … ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﻭَﻫُﻢْ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﺃَﻋَﻖَّ ﻭَﺃَﻇْﻠَﻤَﺎ<br />অর্থাৎ তারা এমন লোকদের মাথার<br />খুলি উড়িয়ে দিয়েছে, যারা আমাদের<br />চাইতেও প্রভাবশালী ছিল। আর তারা ছিল<br />অত্যাধিক অবাধ্য ও জালিম ।<br />(নাউজুবিল্লাহ)<br />সেখানে সাহাবী আবু বোরযা আল<br />আসলামী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুও উপস্থিত<br />ছিলেন, তিনি বলে উঠলেন, হে ইয়াযিদ !<br />আল্লাহর শপথ, ছড়ি সরিয়ে নাও।<br />তুমি যে স্থানে আঘাত করে যাচ্ছ,<br />সেস্থানে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বারবার<br />চুমতে দেখেছি।<br />তিনি আরো বললেন, হে ইয়াযিদ মনে রেখ !<br />ক্বিয়ামতের দিন হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহু যখন উত্থিত হবেন, তখন তাঁর<br />সুপারিশকারী হবেন হযরত মুহাম্মদ<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আর<br />তুমি যখন উত্থিত হবে এমন অবস্থায়, যখন তোমার পক্ষে সুপারিশ পাবে ইবনে যিয়াদকে।তখন সেই সাহাবী মজলিশ<br />হতে উঠে চলে যান ।<br /><br />[৮]<br />এখন আপনারা নিজেরাই ফয়সালা করুন যে,<br />ইয়াযিদের মনে কি ইমাম হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র শাহাদাতে কোন<br />আফসোস বা দুঃখ থাকতে পারে,<br />যে কিনা হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহু’র পবিত্র মস্তক সামনে রেখে তিরস্কার<br />ও অহংকার করে কবিতা আবৃতি করে।<br />যে মুবারক ঠোঁটদ্বয়ে স্বয়ং নবী করীম<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম<br />সর্বদা চুমু খেতেন, তাতে আঘাত করে ।এহেন<br />কাজের কারণে সে কি লা’নত ও<br />তিরস্কারের উপযুক্ত নয় ??<br />আহলে বায়তের সদস্যদের সাথে তার<br />( ইয়াযিদ ) দূর্ব্যবহার হতেও এ<br />সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যায় যে, যখন<br />আহলে বায়তের শোকাহত এই<br />কাফেলাকে অভিশপ্ত ইবনে যিয়াদ<br />দামেশকে ইয়াযিদের নিকট প্রেরণ করল;<br />ইয়াযিদ তখন সিরিয়ার আমীর উমরা ও রাজ<br />কর্মচারীদের দরবারে একত্রিত করল । আর<br />ভরা মজলিশে সকলের সামনে নবী পাক<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের<br />বংশের পবিত্র নারীদের আনা হল । আর<br />ইয়াজিদের মজলিশের উপস্থিত সবাই<br />ইয়াযিদকে তার বিজয়ের অভিনন্দন জানায়।<br /><br />[৯]<br />ইয়াযিদ কর্তৃক আহলে বায়তের<br />প্রতি নোংরা ও লজ্জাকর আচরণের<br />একটি উদাহরণ-<br />আহলে বায়তের পবিত্র মহিলাদের যখন<br />ইয়াযিদের দরবারে আনা হলে, এক সিরিয়<br />দুরাচার হযরত ফাতিমা বিনতে হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার<br />দিকে ইশারা করে বলল, হে আমীরুল মুমিনীন<br />(ইয়জিদ) ! এ মেয়েটি আমাকে দিন ।<br />নিস্পাপ<br />সাইয়্যিদা ফাতিমা রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহা এ কথা শুনে ভয় পেয়ে বড় বোন যয়নব<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার কাপড়<br />খামচে ধরলেন।<br />হযরত যয়নব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা ঐ<br />সিরিয়কে ভৎর্সনা করে বলে উঠলেন,<br />বাজে বকছিস কেন কমবখত ? এ কন্যা ( শরীয়ত<br />মতে ) তোর ভাগ্যে তো দূর স্বয়ং ইয়াযিদের<br />ভাগ্যেও জুটবে না ।<br />একথা শুনে ইয়াযিদ রাগন্বিত হল<br />এবং বলে উঠল, আল্লাহর শপথ ! সে আমার<br />অধীনস্থ আছে। আমি যদি তাকে দিতে চাই,<br />তাহলে দিতে পারব ।<br />হযরত যয়নব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা রাগত<br />স্বরে বললেন,কখনোই না। আল্লাহর শপথ!<br />আল্লাহ তা’আলা তোমাকে এমনটা করার<br />অধিকার দেননি । তবে,<br />তুমি যদি ঘোষণা পূর্বক আমাদের ইসলাম<br />হতে থেকে বহির্ভূত হও বা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ<br />করে তাঁর গন্ডি হতে বের হয়ে যাও<br />এবং ভিন্ন ধর্ম গ্রহণ কর, তবে ভিন্ন কথা ।<br />(অর্থাৎ যতক্ষন তুমি মুসলিম পরিচয় দিবে,<br />ততক্ষণ মুসলিম কন্যাকে গণিমত<br />হিসেবে কবজা করতে পারবে না)<br />এ কথায় ইয়াযিদ ক্ষিপ্ত হয়ে বলল, তুমি আমার<br />মোকাবেলা করে এ বলছ ? তোমার<br />বাবা আর তোমার ভাই দ্বীন ইসলাম<br />থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন ।<br />হযরত যয়নব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বললেন,<br />আল্লাহর ধর্ম,আমার বাবার ধর্ম এবং আমার<br />নানার ধর্ম ইসলাম হতেই তুমি ও তোমার বাপ-<br />দাদা হেদায়াত পেয়েছিলে।<br />ইয়াযিদ বলল, তুমি মিথ্যা বলছ ।<br />হযরত যয়নব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন,<br />তুমি জোর করে আমীর হয়ে রাজক্ষমতার<br />দম্ভে এমন অনুচিত ও কর্কশ ভাষা আর অশোভন<br />বাক্য প্রয়োগ করছ ।<br />এ কথা শুনে ইয়াযিদ চুপ হয়ে গেল । আর ঐ<br />পাপিষ্ঠ সিরিয় আবার একই প্রশ্ন করলে,<br />ইয়াযিদ বলে আল্লাহ তোমায় মৃত্যু দিক ।[১০]<br />কেউ কেউ আবার ইয়াযিদের অনুতাপ ও দুঃখ<br />প্রকাশ করার কথা উল্লেখ<br />করে তাকে নির্দোষ প্রমাণের প্রয়াস<br />চালায় । তার অনুতাপ প্রকাশের মূল উদ্দেশ্য<br />আল্লামা ইবনে আসীর<br />রহমাতুল্লাহি আলাইহি’র বক্তব্য হতেই স্পষ্ট<br />হয়ে যায় –<br />“(তিনি বলেন) ইমাম পাকের মস্তক মুবারক যখন<br />ইয়াযিদের নিকট পৌঁছল, তখন<br />সে খুশী হয়ে গেল। তার নিকট<br />ইবনে যিয়াদের মান মর্যাদা বেড়ে গেল ।<br />পরে যখন জানতে লাগল যে, এই ঘটনার দরুণ<br />মানুষ তাকে ঘৃণা করছে, তার উপর অভিশাপ<br />দিচ্ছে, গাল-মন্দ করছে তখন সে ইমাম পাকের<br />হত্যায় অনুতপ্ত হল।<br />তখন সে ইবনে যিয়াদকে গালমন্দ<br />করতে লাগল । বলতে লাগল, মারজানার<br />পুত্রের উপর খোদার লা’নত !<br />হুসাইনকে হত্যা করে সে মানুষের<br />অন্তরে আমার জন্য বিদ্বেষ ও শত্রুতার বীজ<br />বপন করে দিয়েছে । ভাল-মন্দ<br />নির্বিশেষে সকল লোকই হযরত হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র হত্যার কারণে আমায়<br />ঘৃণা করছে। কেননা তারা মনে করছে,<br />আমি ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহুকে হত্যা করে অনেক বড় জুলুম করেছি ।<br />আল্লাহর লা’নত ও গজব ইবনে যিয়াদের উপর।<br />সে আমায় বরবাদ করে দিল ।[১১]<br />তাবারী ও ইবনে কাসীরের<br />বর্ণনা অনুসারে-<br />যখন ইমাম হুসাইন ও তার সঙ্গী রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহুম’দের শহীদ করে তাঁদের<br />মাথা মুবারকগুলো ইয়াযিদের নিকট প্রেরণ<br />করা হল, তখন ইয়াজিদ<br />প্রথমদিকে খুশি হয়েছিল এবং এ<br />কারণে তার নিকট ইবনে যিয়াদের মান-<br />মর্যাদাও বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সে আনন্দ<br />বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না। খানিক পরে এ<br />ঘটনায় সে লজ্জিত হয়ে পড়ল। [১২]<br />ইবনে যিয়াদকে ইয়াযিদের কর্তৃক লা’নত<br />প্রদান ও নিজে অনুতপ্ত<br />হওয়া প্রসঙ্গে ইবনে কাসীর উল্লেখ করেন-<br />ইয়াযিদ ইবনে যিয়াদকে ঐ কার্যকলাপের<br />দায়ে লা’নত দিল বটে, তাকে গাল-মন্দও<br />করল।তা এই আশঙ্কায় যে, পরবর্তীতে এই<br />ঘটনা প্রকাশ পেলে তার বদনাম<br />ছড়িয়ে পড়বে,তখন কি হবে ?<br />কিন্তু ইবনে যিয়াদের এ নারকীয় তান্ডবের<br />দায়ে না তাকে ইয়াযিদ পদচ্যুত করল,<br />না তার কোন শাস্তি বিধান করল। না অন্য<br />কারো মাধ্যমে তাকে এর দায়ে তিরস্কার<br />করল ।[১৩]<br />ইয়াযিদের আচরণ ও তার অনুতপ্ত হওয়া প্রসঙ্গ<br />আপনারা অবগত হলেন। কিন্তু সেটা তার<br />সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও নিছক লোক<br />দেখানো কাজ ছিল । এ<br />বিষয়ে ন্যায়বিচারের কোন প্রয়াসই<br />ছিলনা। যেখানে একজন সাধারণ<br />মুসলমানকে হত্যা করা হলে তার কিসাস<br />(প্রতিশোধ) নেয়া বিচারকের জন্য ফরজ । আর<br />সেখানে স্বয়ং নবীয়ে পাক সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লামের<br />বংশকে গণহত্যা হয়েছিল। ইয়াযিদ<br />যদি সত্যিকারার্থে অনুতপ্ত<br />হত,তবে সে অবশ্যই ইমাম পাকের<br />হত্যাকারীদের পাকড়াও করত। আর তাঁদের<br />শাস্তি দিত ।কিন্তু সে এমনটা করেনি । আর<br />ঐতিহাসিকদের নির্ভরযোগ্য বর্ণনা হতেই<br />তার ভূমিকা স্পষ্ট বোঝা যায়।<br />দ্বিতীয় পর্বের জন্য ক্লিক করুন এখানে<br />তথ্যসূত্রঃ<br />——————————————————<br />১. তারিখে কামিল, ইবনে আসীর ৪র্থ খন্ড<br />পৃঃ ১৪/ ৩য় খন্ড পৃঃ ১২৭ দারুল কিতাবুল<br />আরাবী, বৈরুত<br />২. তারিখে ত্বাবারী ৫ম খন্ড পৃঃ ৩৩৮, দারুত<br />তুরাছ বৈরুত , ইবনে কাছীর আল বিদায়াহ<br />ওয়ান নিহায়াহ ৮ম খন্ড পৃঃ ১৫৭, দারু<br />ইহিয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত ।<br />৩. মিশকাতুল মাসাবীহ, কিতাবুল<br />মানাক্বিব হাদীস নং-৬১৮১, মুসনাদে আহমদ<br />হাদীস নং- ২৫৫৩, তাবরানী আল মু’জামুল<br />কাবীর ৩:১১০ হাদীস-২৮২২ [মাকতাবাতু<br />ইবনে তাইয়্যিমাহ,কায়রো] , হাকেম আল<br />মুস্তাদরাক, হাদীস- ৮২০১ ,<br />বায়হাক্বী দালায়িলুন নবুওয়াহ, ৬:৪৭১ ।<br />৪. সুনানে তিরমিযি, আবওয়াবুল<br />মানাক্বিব,হাদীস-৩৭৭১ , হাকেম আল<br />মুস্তাদরাক, হাদীস-৬৭৬৪,<br />বায়হাক্বী দালায়িলুন নবুওয়াহ ৭:৪৮ আল<br />বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৮:২০০ দারুল<br />ফিকর,বৈরুত ।<br />৫. আইনী উমদাতুল ক্বারী শরহে সহীহ বুখারী,<br />১৬:২৪১ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত,<br />ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান<br />নিহায়া,৮:২০৭ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল<br />আরাবী বৈরুত,৮:১৯০ দারুল ফিকর বৈরুত,<br />ইবনে আসীর আল কামিল ৩:১৮৫ দারুল<br />কিতাবুল আরাবী বৈরুত, ,<br />তারীখে ত্বাবারী ৫:৪৫৬ দারুত তুরাস<br />বৈরুত ।<br />৬. তারীখে ত্বাবারী ৫:৩৪৮ দারুত তুরাস<br />বৈরুত ।<br />৭. ইবনে আসীর তারীখে কামিল, ৩:১৪৬<br />দারুল কিতাবুল আরাবী বৈরুত ।<br />৮. তারিখে ত্বাবারী ৫:৪৬৫ দারুত তুরাস<br />বৈরুত, ইবনে আসীর তারীখে কামিল, ৩:১৮৮<br />দারুল কিতাবুল আরাবী বৈরুত, ইবনে কাসীর<br />আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া,৮:২০৯ দারু<br />ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত,৮:১৯২ দারুল<br />ফিকর বৈরুত ।<br />৯. ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান<br />নিহায়া,৮:২১৫ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল<br />আরাবী বৈরুত,৮:১৯৭ দারুল ফিকর বৈরুত,<br />তারিখে ত্বাবারী ৫:৩৯০ দারুত তুরাস<br />বৈরুত ।<br />১০. তারিখে ত্বাবারী ৫:৪৬১,৪৬২ দারুত<br />তুরাস বৈরুত, . ইবনে কাসীর আল<br />বিদায়া ওয়ান নিহায়া,৮:২১১-১২ দারু<br />ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত,৮:১৯৪-৫ দারুল<br />ফিকর বৈরুত, ইবনে আসীর তারীখে কামিল,<br />৩:১৮৮ দারুল কিতাবুল আরাবী বৈরুত ।<br />১১. ইবনে আসীর তারীখে কামিল, ৩:১৯০<br />দারুল কিতাবুল আরাবী বৈরুত ।<br />১২. তারিখে ত্বাবারী ৫:৫০৬ দারুত তুরাস<br />বৈরুত, ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান<br />নিহায়া,৮:২৫৪ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল<br />আরাবী বৈরুত,৮:২৩২ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br />১৩. ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান<br />নিহায়া,৮:২২১ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল<br />আরাবী বৈরুত,৮:২০৩ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br /><br />★কিছু অজ্ঞ<br />লোকের বক্তব্য হল, ইয়াযিদের<br />আনুগত্য গ্রহণ করা ইমাম হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর উপর আবশ্যক ছিল ।<br />আর এই বদ ধারণা খন্ডন করে শায়খ আব্দুল হক<br />মুহাদ্দিস<br />দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখছেন –<br />ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র<br />বিদ্যমান থাকা অবস্থায় ইয়াযিদ<br />কিভাবে আমীরুল মুমিনীন হতে পারে ? আর তার<br />আনুগত্য কিভাবে মুসলমানদের উপর আবশ্যক হয় ?<br />যেখানে কিনা ঐ সময়ে সাহাবা কেরাম এবং তাঁদের<br />বংশধরগণ জীবিত ছিলেন এবং সকলেই তখন ইয়াজিদের<br />আনুগত্যের ঘোষণার প্রতি অসন্তুষ্টি পোষণ<br />করেছিলেন ।<br />মদীনা মুনাওয়ারা হতে কয়েকজনকে জোর<br />করে সিরিয়ায় তার ( ইয়াযিদ ) নিকট আনা হয় ।<br />তারা ইয়াযিদের অপছন্দনীয় কাজসমূহ<br />দেখে মদীনা ফিরে এলেন এবং বায়’আতের আহবান<br />নাকচ করে দিলেন । ঐ লোকেরা প্রকাশ্যে বলেন যে,<br />ইয়াযিদ আল্লাহর শত্রু, মদ্যপায়ী, নামায<br />ত্যাগকারী, ব্যভিচারী, পাপাচারী ও মুহরিমের<br />সাথে মিলনে বিরত হয়না ।[১]<br />ইয়াযিদের পাপাচার ও<br />ফাসেকী সম্বন্ধে শীর্ষস্থানীয় সাহাবা ও<br />তাবেয়ীগণের বর্ণনা তারিখে ত্বাবারী,<br />তারিখে কামিল ও তারিখুল<br />খুলাফা তে পাওয়া যায় ।<br />সংক্ষেপে গসীলে মালাইকাহ ( যাকে ফিরিশতাগণ<br />শাহাদাতের পর গোসল দেন ) হযরত<br />হানযালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পুত্র<br />আব্দুল্লাহ বর্ণনা করেন, আল্লাহর শপথ!<br />আমরা ইয়াযিদের আনুগত্য তখনই ছেড়ে দিয়েছি যখন<br />আমাদের আশংকা হল যে, (তারই বদমায়েশীর কারণে)<br />না জানি আমাদের উপর আসমান হতে পাথর বর্ষিত<br />হয় কিনা । অবশ্যই লোকটি ( ইয়াযিদ ) মা-বোন ও<br />কন্যাদের সাথে বিবাহে বৈধতা দেয়,<br />প্রকাশ্যে মদ্যপান করতে থাকে এবং নামায<br />ত্যাগ করল ।[২]<br />হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু যখন<br />ইয়াযিদ বাহিনীর সামনে বক্তব্য দান করেন, তখনও<br />ইয়াযিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার একই কারণ<br />বর্ণনা করে বলেন-<br />“সাবধান ! নিশ্চয়ই ঐ লোকগুলো শয়তানের<br />আনুগত্য বেছে নিয়েছে এবং দয়ালু আল্লাহর<br />আনুগত্য ত্যাগ করেছে। তারা দেশে অনাচার<br />সৃষ্টি করেছে, শরীয়তের শাসনকে মুক্ত করে দিয়েছে,<br />গণীমতের সম্পদ ব্যক্তিসম্পদের মত কুক্ষিগত<br />করেছে । আল্লাহ কর্তৃক হারামকৃত<br />বস্তুকে হালাল ও হালালকৃত বস্তুকে হারাম<br />করে দিয়েছে।” [৩]<br />শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস<br />দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমাদের<br />নিকট ইয়াযিদ একজন জঘন্য ঘৃণিত ব্যক্তি ছিল ।<br />এই দুরাচার যে ঘৃণ্য কাজ সমূহ আঞ্জাম দেয়,<br />তা উম্মতের মধ্যে কোন ব্যক্তিই দিতে সক্ষম<br />হয়নি। ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর<br />শাহাদাত ও আহলে বায়তে পাক রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহুমের অবমাননার পর এই দুরাচার<br />মদীনা মুনাওয়ারায় সৈন্য প্রেরণ<br />করে মদীনা মুনাওয়ারার অবমাননার পর<br />মদীনাবাসীর রক্তে স্বীয় হাত রঞ্জিত করে।<br />মদীনা পাকে অবস্থানরত বহু সাহাবী ও তাবেঈ<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম তার নির্দেশে শহীদ হয়<br />।<br />মদীনা মুনাওয়ারায় ধ্বংস সাধনের পর<br />সে মক্কা মুকাররামায় ধ্বংসলীলা সাধনের<br />আদেশ দেয় । মক্কায় ব্যাপক<br />হামলা হয়,হত্যা লুন্ঠন চালায়, পবিত্র<br />কাবা ঘরের গিলাফ পুড়ে যায়,ছাদ<br />পুড়ে যায়,দেয়াল ধ্বসে পড়ে। এমতাবস্থায়<br />সে (ইয়াযিদ) মৃত্যু বরণ করে ।[৪]<br />আ’লা হযরত মুজাদ্দিদে দ্বীন ওয়া মিল্লাত<br />শাহ আহমদ<br />রজা ফাজেলে বেরেলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ<br />প্রসঙ্গে লিখছেন, ইয়াযিদ আহলে সুন্নাত ওয়াল<br />জামা’আতের ইজমা দ্বারা অভিশপ্ত, ফাসিক,<br />ঘৃণ্য ও কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি । এরপর<br />তার কৃতকর্ম ও অত্যাচারের ঘটনা লিখে বলেন-<br />লা’নতের উপযুক্ত হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে ঘৃণ্য<br />অভিশপ্ত কাজসমূহকে ঘৃণ্য ও পাপাচার<br />হিসেবে না মানে । কুরআনে কারীমে এই সকল<br />ব্যক্তিদের জন্য স্পষ্টত ‘তাদের<br />প্রতি আল্লাহর লা’নত’ উল্লেখ করা হয়।[৫]<br />ইদানীং কিছু পথভ্রষ্ট নির্বোধ লোক বলে থাকে,<br />“আমাদের হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহু ও ইয়াজিদের মধ্যকার<br />ব্যাপারে মাথা ঘামানোর কি প্রয়োজন,<br />তারা উভয়ই শাহজাদা।”<br />এরূপ মন্তব্যকারী অবশ্যই মরদুদ, খারেজী,<br />নাসেবী ও জাহান্নামী।[৬]<br />ইয়াযিদ কি লা’নতের উপযুক্ত ছিল ?<br />কুরআনে পাকে ইরশাদ হচ্ছে-<br />ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﺆْﺫُﻭﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﻟَﻌَﻨَﻬُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓِ<br />অর্থাৎ নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল<br />সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেয়, তাদের উপর<br />আল্লাহর অভিসম্পাত দুনিয়া ও আখিরাতে ।[৭]<br />হাদীস শরীফে হযরত সালমান<br />ফার্সী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,<br />তিনি বলেন-<br />ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﻘُﻮﻝُ: ﺍﻟْﺤَﺴَﻦُ<br />ﻭَﺍﻟْﺤُﺴَﻴْﻦُ ﺍﺑْﻨَﺎﻱَ، ﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺒَّﻬُﻤَﺎ ﺃَﺣَﺒَّﻨِﻲ، ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺒَّﻨِﻲ ﺃَﺣَﺒَّﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ،<br />ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣَﺒَّﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﺩْﺧَﻠَﻪُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ، ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺑْﻐَﻀَﻬُﻤَﺎ ﺃَﺑْﻐَﻀَﻨِﻲ، ﻭَﻣَﻦْ<br />ﺃَﺑْﻐَﻀَﻨِﻲ ﺃَﺑْﻐَﻀَﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ، ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺑْﻐَﻀَﻪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺃَﺩْﺧَﻠَﻪُ ﺍﻟﻨَّﺎﺭَ<br />আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছি,<br />হাসান-হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম<br />আমার বেটা।<br />যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালবাসলো সে আমাকে ভালবাসলো,<br />আর যে আমায় ভালবাসলো তাকে আল্লাহ<br />ভালবাসবেন। আর যাকে আল্লাহ ভালবাসবেন<br />তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন । আর<br />যে তাঁদের উভয়ের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করল,<br />সে আমার সাথে বিদ্বেষ পোষণ করল। আর যে আমার<br />সাথে বিদ্বেষ পোষণ করবে, তার সাথে আল্লাহ<br />বিদ্বেষ পোষণ করবে। আর যার সাথে আল্লাহ<br />বিদ্বেষ পোষণ করবেন,<br />তাকে তিনি জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। [৮]<br />হাদীস শরীফে আরও ইরশাদ হচ্ছে, হযরত যায়দ বিন<br />আরকাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-<br />ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ ﻟِﻔَﺎﻃِﻤَﺔَ ﻭَﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ<br />ﻭَﺍﻟْﺤُﺴَﻴْﻦِ: ﺃَﻧَﺎ ﺣَﺮْﺏٌ ﻟِﻤَﻦْ ﺣَﺎﺭَﺑَﻜُﻢْ، ﻭَﺳَﻠْﻢٌ ﻟِﻤَﻦْ ﺳَﺎﻟَﻤَﻜُﻢْ<br />অর্থাৎ নবী করীম সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ফাতিমা, ইমাম<br />হাসান-হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহুমকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ করেন,<br />যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করবে আমিও তাদের<br />সাথে যুদ্ধ করব । আর যারা তোমাদের<br />সাথে সন্ধি করবে আমিও তাদের সাথে সন্ধি করব ।[৯]<br />নবী করীম সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,<br />ﺃَﻭَّﻝُ ﻣَﻦْ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ ﺳُﻨَّﺘِﻲ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦْ ﺑَﻨِﻲ ﺃُﻣَﻴَّﺔَ ﻳُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ ﻳَﺰِﻳﺪُ<br />অর্থাৎ আমার উম্মতের মধ্যে যে সর্বপ্রথম<br />আমার সুন্নাতকে পরিবর্তন করে দিবে সে হল, বনু<br />উমাইয়ার ইয়াযিদ।[১০]<br />নবী করীম সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও ইরশাদ করেন-<br />ﻟَﺎ ﻳَﺰَﺍﻝُ ﺃَﻣْﺮُ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻗَﺎﺋِﻤًﺎ ﺑِﺎﻟْﻘِﺴْﻂِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺜْﻠَﻤَﻪُ ﺭَﺟُﻞٌ ﻣِﻦْ ﺑَﻨِﻲ ﺃُﻣَﻴَّﺔَ<br />ﻳُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ : ﻳَﺰِﻳﺪُ<br />অর্থাৎ আমার উম্মতের শাসন ন্যয়সঙ্গত<br />থাকবে অর্থাৎ শাসক ন্যয়পরায়ণ হবে ।<br />সর্বপ্রথম যে তা বিনষ্ট করবে সে হল বনু<br />উমাইয়ার ইয়াযিদ ।[১১]<br />মুহাদ্দিস<br />ইবনে জওযী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন,<br />ইমাম আহমদ বিন হাম্বল<br />রাহমাতুল্লাহি আলাইহির নিকট তার পুত্র<br />সালেহ<br />রাহমাতুল্লাহি আলাইহি জিজ্ঞাসা করলেন,<br />এক সম্প্রদায় আমাদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলল<br />যে, আমরা ইয়াযিদের শুভাকাঙ্খী ও<br />সাহায্যকারী । তিনি বললেন, হে আমার পুত্র!<br />যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ঈমান আনে,<br />সে কিভাবে নিজেকে ইয়াযিদের বন্ধু<br />দাবী করতে পারে ? বরং ঐ ব্যক্তির<br />প্রতি অভিসম্পাত দেই ,যার প্রতি আল্লাহ<br />পবিত্র কুরআনে অভিসম্পাত দিয়েছেন। ইরশাদ<br />হচ্ছে-<br />ﻓَﻬَﻞْ ﻋَﺴَﻴْﺘُﻢْ ﺇِﻥْ ﺗَﻮَﻟَّﻴْﺘُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗُﻔْﺴِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻭَﺗُﻘَﻄِّﻌُﻮﺍ<br />ﺃَﺭْﺣَﺎﻣَﻜُﻢْ ‏( 22 ‏)<br />ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﻌَﻨَﻬُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓَﺄَﺻَﻤَّﻬُﻢْ ﻭَﺃَﻋْﻤَﻰ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭَﻫُﻢْ ‏( 23 )<br />অর্থাৎ তবে কি তোমাদের এ লক্ষণ দৃষ্টিগোচর<br />হচ্ছে যে, যদি তোমরা শাসন ক্ষমতা লাভ কর,<br />তবে পৃথিবীতে বিপর্যয় ছড়াবে এবং আত্মীয়তার<br />বন্ধন ছিন্ন করবে।<br />এরা হচ্ছে ঐসব লোক যাদের উপর আল্লাহ<br />তা’আলা অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদেরকে সত্য<br />থেকে বধির করে দিয়েছেন, আর তাদের<br />চোখগুলোকে দৃষ্টিশক্তিহীন করে দিয়েছেন ।[১২]<br />অতঃপর ইমাম আহমদ বিন হাম্বল বললেন,<br />ﻓَﻬَﻞ ﻳﻜﻮﻥ ﻓَﺴَﺎﺩ ﺃﻋﻈﻢ ﻣﻦ ﺍﻟْﻘَﺘْﻞ<br />অর্থাৎ আর বল, হযরত ইমাম হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর হত্যার চেয়ে বড়<br />ফ্যাসাদ আছে কি ? । [১৩]<br />আল্লামা সা’দ উদ্দীন<br />তাফতাযানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,<br />ওলামায়ে কেরাম ঐ ব্যক্তিকে লা’নত দেয়া জায়েয<br />হওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন,<br />যে ব্যক্তি ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহুকে হত্যা করেছে বা হত্যার নির্দেশ<br />দিয়েছে কিংবা অনুমতি দিয়েছে এবং তাতে সন্তুষ্ট<br />হয়েছে ।<br />আসল কথা হল, ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহুর শাহাদাতের ব্যাপারে ইয়াযিদের<br />সন্তুষ্টি ছিল। ফলস্বরুপ ইয়াজিদের উপর লা’নত<br />দেয়া যায়। হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু<br />আনহুর শাহাদাতের সংবাদ পেয়ে ইয়াযিদের<br />আনন্দিত হওয়া এবং সরকারে দো আলম নবী পাক<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের<br />পবিত্র বংশধরগণের অপমান করা ও তাঁদের অপমান<br />করার বিষয়ে এমন অনেক বর্ণনা আছে, যা অর্থের দিক<br />থেকে মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌঁছেছে; যদিও পৃথক<br />পৃথকভাবে খবরে ওয়াহেদ।<br />আমরা ইয়াযিদের ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন<br />করছি না, বরং তার ঈমান সম্পর্কে আপত্তি পোষণ<br />করি । আল্লাহ তা’আলা ইয়াজিদ, তার সহযোগী ও<br />দলবলের ওপর অভিসম্পাত বর্ষণ করুক ।[১৪]<br />ইমাম জালালুদ্দীন<br />সুয়ূতী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ইমাম<br />হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদাতের<br />বর্ণনা শেষে বলেন, ইমাম হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর হত্যাকারী,<br />ইবনে যিয়াদ এমনকি ইয়াযিদের উপর আল্লাহর<br />অভিসম্পাত।[১৫]<br />প্রসিদ্ধ তাফসীরকারক আল্লামা শিহাব<br />উদ্দিন মাহমুদ<br />আলুসী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন,<br />আমার নিকট ইয়াযিদের মত কুখ্যাত ব্যক্তির উপর<br />লানত করা অকাট্যভাবে বৈধ।আর তার মত ফাসিক<br />ব্যক্তির জন্য চিন্তাও করা যাবে না ।<br />স্পষ্টত হচ্ছে যে, সে তাওবা করেনি । আর তার<br />তাওবা করার ধারণাটা তার ঈমানের চেয়েও অধিক<br />দূর্বল । ইয়াযিদের সাথে ইবনে যিয়াদ, ইবনে সা’দ ও<br />তার দলবলও এ হুকুমের সাথে শামিল হবে।<br />সুতরাং তাদের সকলের উপর কিয়ামত পর্যন্ত<br />আল্লাহর অভিসম্পাত হোক। এমনকি তাদের সাথী,<br />সহযোগীদের উপর এবং সেই গোষ্ঠীর উপর<br />যারা কিনা ইয়াজিদের হিতাকাংখী। এবং ততদিন,<br />যতদিন মুসলমানের চোঁখ হযরত ইমাম হুসাইন<br />রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর জন্য অশ্রুপাত<br />করবে ।[১৬]<br />সুতরাং প্রমাণিত হল যে, নাপাক ইয়াজিদ লা’নত<br />তথা অভিশাপের যোগ্য। মোদ্দাকথা হল যে, এই<br />অভিশপ্তের প্রতি লা’নত দিয়ে সময় নষ্ট করার<br />চেয়ে উত্তম হবে সে সময়টাতে আল্লাহর<br />যিকির,নবী করীম সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার আহলে বাইতের উপর<br />দরুদ শরীফ পাঠে মগ্ন থাকা।<br />মক্কা মুকাররমা ও মদিনা শরীফে আক্রমন<br />তথাপি ইয়াজিদ নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি বলবৎ<br />করতে হারামাইন শরীফের পবিত্র মক্কা ও<br />মদীনার উপরও হামলার ধৃষ্টতা দেখায় । এ<br />দুরাচার সেখানে এমন তান্ডব বইয়ে দিল, যা যে কোন<br />মু’মিনের হৃদয়ে কম্পন সৃষ্টি করবে । সাহাবা ও<br />তাবেঈ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমসহ বহু নিরীহ<br />লোক সেখানে শহীদ হলেন । হাদীস শরীফে ইরশাদ<br />হচ্ছে-<br />ﻣَﻦْ ﺃَﺧَﺎﻑَ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ ﺃَﺧَﺎﻓُﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻟَﻌْﻨَﺔُ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻠَﺎﺋِﻜَﺔِ<br />ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺃَﺟْﻤَﻌِﻴﻦَ ﻟَﺎ ﻳُﻘْﺒَﻞُ ﻣِﻨْﻪُ ﺻَﺮْﻑٌ ﻭَﻟَﺎ ﻋَﺪْﻝٌ<br />অর্থাৎ যে মদীনাবাসীদের ভীত সন্ত্রস্ত<br />করবে, আল্লাহ তা’আলা তকেও ভীত সন্ত্রস্ত<br />করবেন । আর তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতা ও সমগ্র<br />মানবজাতির অভিসম্পাত । তার না কোন ফরজ<br />ইবাদত কবুল হবে না কোন নফল ইবাদত।[১৭]<br />তাবরানীর অপর বর্ননায় বর্ণিত আছে,<br />যারা মদীনাবাসীকে কষ্ট দিবে ( ﺁﺫﻯ ) শব্দের<br />ব্যবহার হয় ।<br />মুসলিম শরীফে বর্ণিত হয়েছে-<br />ﻣَﻦْ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﻤَﺪِﻳﻨَﺔِ ﺑِﺴُﻮﺀٍ، ﺃَﺫَﺍﺑَﻪُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻛَﻤَﺎ ﻳَﺬُﻭﺏُ ﺍﻟْﻤِﻠْﺢُ ﻓِﻲ<br />ﺍﻟْﻤَﺎﺀِ<br />অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু<br />আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,<br />যে ব্যক্তি মদীনাবাসীদের কোন<br />ক্ষতি করতে চাইবে, আল্লাহ<br />তাকে এমনভাবে গলিয়ে দিবেন যেমন লবণ<br />পানিতে গলে যায় ।[১৮]<br />সুতরাং সাব্যস্ত হল যে, ইয়াযিদ তার সহযোগী ও<br />অনুসারীরা অভিশাপের উপযুক্ত ।<br />তথসূত্রঃ<br />—————————————–<br />১. তাকমীলুল ঈমান ১৭৮ পৃষ্ঠা ।<br />২. সুয়ূতী তারিখুল খুলাফা ১৫৮,১৫৯ পৃঃ ,<br />ইবনে সা’দ আত ত্ববকাতুল কুবরা ৫:৬৬ দারু<br />সাদির বৈরুত, ৫:৪৯ দারুল কুতুবিল<br />আলামিয়্যাহ বৈরুত, ইবনে আসাকির<br />তারিখে দামেশক ২৭:৪২৯ ।<br />৩. ইবনে আসীর তারীখে কামিল, ৩:১৫৯ দারুল<br />কিতাবুল আরাবী বৈরুত ,<br />তারিখে ত্বাবারী ৫:৪০৩ দারুত তুরাস বৈরুত ।<br />৪. তাকমীলুল ঈমান ১৭৯ পৃষ্ঠা ।<br />৫. ইরফানে শরীয়ত । ৭৮-৮০পৃঃ আল্লামা হাফেজ<br />আব্দুল জলীল (রহঃ) কর্তৃক অনুদিত ।<br />৬. বাহারে শরীয়ত, সদরুস শরীয়াহ মুফতি আমজাদ<br />আলী আজমী ১ম খন্ড ৭৮পৃঃ,<br />মোহাম্মদী কুতুবখানা চট্টগ্রাম কর্তৃক<br />অনুবাদ ১ম খন্ড ৮৭ পৃঃ ।<br />৭. সুরা আল আহযাব আয়াতঃ৫৭ অনুবাদ,<br />কানযুল ঈমান ।<br />৮. হাকেম আল মুস্তাদরিকু আলাস সাহিহাইন,<br />হাদীস -৪৭৭৬, তাবরানী আল মু’জামুল কবীর<br />৩:৫০, হাদীস-২৬৫৫ মাকতাবা ইবনে তায়্যিমাহ<br />কায়রো ।<br />৯. সহীহ ইবনে হিব্বান ১৫:৪৩৪ হাদীস-৬৯৭৭,<br />মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ-৩২১৮১,<br />তাবরানী আল মু’জামুল কবীর ৩:১৭৯,<br />হাদীস-২৮৫৪ ।<br />১০. সওয়ায়িকুল মুহাররিকাহ ২:৬৩৩<br />মুয়াসসাতুর রিসালাহ লেবানন, ইবনে আসাকির<br />তারিখে দামেশক ৬৫:২৫০ দারুল ফিকর, সিয়ারু<br />আ’লামুন নুবলা ৩:২০০ দারুল হাদীস কায়রো ।<br />১১. সওয়ায়িকুল মুহাররিকাহ ২:৬৩৭<br />মুয়াসসাতুর রিসালাহ লেবানন, ইবনে কাসীর আল<br />বিদায়া ওয়ান নিহায়া,৮:২৫৩ দারু ইহয়ায়ুত<br />তুরাসুল আরাবী বৈরুত,৮:২৩১ দারুল ফিকর<br />বৈরুত, বায়হাক্বী দালায়িলুন নবুওয়াহ ৬:৪৬৭,<br />সুয়ূতী তারিখুল খুলাফা ১৫৮ পৃঃ ।<br />১২. সূরা মুহাম্মদ, আয়াতঃ২২,২৩ , অনুবাদ,<br />কানযুল ঈমান ।<br />১৩. আবুল আব্বাস, সওয়ায়িকুল মুহাররিকাহ<br />২:৬৩৫ মুয়াসসাতুর রিসালাহ লেবানন ।<br />১৪. শরহু আকায়িদিন নাসাফিয়্যাহ ১০২/১৩৭<br />পৃঃ ।<br />১৫. সুয়ূতী তারিখুল খুলাফা ১৫৮<br />পৃঃ (ইয়াযিদ বিন মুয়াবিয়া অধ্যায়) ।<br />১৬. আল্লামা আলুসী তাফসীরে রুহুল<br />মা’আনী ১৩:২২৯ দারুল কিতাবিল আলামীয়্যাহ<br />বৈরুত ।<br />১৭. নাসাঈ আস সুনানুল কুবরা হাদীস-৪২৫১,<br />তাবরানী আল মু’জামুল কবীর ৭:১৪৩<br />হাদীস-৬৬৩১ মাকতাবা ইবনে তায়্যিমাহ কায়রো ।<br />১৮. সহীহ মুসলিম , কিতাবুল হজ্জ হাদীস<br />নং-১৩৮৭, সুনানে ইবনে মাজাহ-৩১১৪ , সহীহ<br />ইবনে হিব্বান-৩৭৩৭ ।<br /><br /></div>

শাহাদাতে কারবালা

★৬০ হিজরীর রজব মাসে হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ওফাতের পর ইয়াযিদ মদীনা মুনাওয়ারাহর গভর্ণর ওয়ালিদ বিন উতবার নিকট এই মর্মে পত্র প...

Read more »

ইয়াযিদ বিষয়ে হাদীসে কুসতুনতুনিয়ার অপব্যাখ্যার খন্ডন

<p dir="ltr"></p><p dir="ltr">মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান</p><p dir="ltr">[নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লি ওয়ানুসাল্লিমু আলা হাবীবিহিল করীম ওয়ালা আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমায়ীন আম্মা বা’দ ]</p><p dir="ltr">বর্তমান সময়ে প্রচলিত ফিতনা সমূহের মধ্যে একটি হল ইয়াযিদকে লা’নতি(অভিশপ্ত) না মেনে তাকে নিরাপরাধ এমনকি আল্লাহর নিকট মাকবুল এবং জান্নাতী ঘোষণা দিয়ে এর প্রচার করা । ইয়াযিদের ব্যাপারে নানা ঠুনকো বর্ণনা এবং কারবালা ও তার পরবর্তী ঘটনায় তার সরাসরি সম্পৃক্ত না থাকা দিয়ে তাকে নিষ্পাপ প্রমাণের এক নির্লজ্জ অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে । এমনকি সহীহ আল বুখারীতে বর্ণিত একটি হাদীসকে তার শানে সম্পৃক্ত করে তার পক্ষে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে । যেখানে কিনা এই হাদিসের অনুসারেও ইয়াযিদ এর হুকুমের অংশ নয়, এটাই আহলে ইলমের মত এবং এটাই সত্য । সত্যনিষ্ঠ ঐতিহাসিক বর্ণনার মাধ্যমেই ইয়াযিদ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের নিকট একজন পাপিষ্ঠ ও লাঞ্ছিত ব্যক্তি, তার উপর আল্লাহর লা’নত(অভিশম্পাত) । পরিতাপের বিষয় যে, নবীজাদা ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদাত ও তাঁর পরবর্তীতে পবিত্র শহর মক্কা মদীনায় নৃশংস হামলার পরও এর হুকুমদাতা ইয়াযিদ কিভাবে নিরাপরাধ হয় । একজন মু’মিনের পক্ষে কিভাবে তা চিন্তা করা বা বলা সম্ভব ?</p><p dir="ltr">হাদীসে কুসতুনতুনিয়া</p><p dir="rtl">حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ يَزِيدَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، قَالَ: حَدَّثَنِي ثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، أَنَّ عُمَيْرَ بْنَ الأَسْوَدِ العَنْسِيَّ، حَدَّثَهُ – أَنَّهُ أَتَى عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ وَهُوَ نَازِلٌ فِي سَاحَةِ حِمْصَ وَهُوَ فِي بِنَاءٍ لَهُ، وَمَعَهُ أُمُّ حَرَامٍ – قَالَ: عُمَيْرٌ، فَحَدَّثَتْنَا أُمُّ حَرَامٍ: أَنَّهَا سَمِعَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: أَوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أُمَّتِي يَغْزُونَ البَحْرَ قَدْ أَوْجَبُوا، قَالَتْ أُمُّ حَرَامٍ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَا فِيهِمْ؟ قَالَ: أَنْتِ فِيهِمْ، ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أُمَّتِي يَغْزُونَ مَدِينَةَ قَيْصَرَ مَغْفُورٌ لَهُمْ، فَقُلْتُ: أَنَا فِيهِمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: لا</p><p dir="ltr">অর্থাৎ হযরত উমাইর ইবনে আসওয়াদ আনসী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি উবাদা ইবনে সামিত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছে আসলেন । তখন উবাদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হিমস উপকূলে তার একটি ঘরে অবস্থান করছিলেন এবং তার সঙ্গে ছিলেন উম্মে হারাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা । উমাইর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, উম্মে হারাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা আমাদের কাছে বর্ণনা করেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছেন যে, আমার উম্মতের মধ্যে প্রথম যে দলটি নৌ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তাদের জন্য জান্নাত অনিবার্য । উম্মে হারাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা আরজ করলেন, আমি কি তাদের মধ্যে হব ? হুযুর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তুমি তাদের মধ্যে হবে । উম্মে হারাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তারপর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, আমার উম্মতের প্রথম যে দলটি কায়সার [রোমক সম্রাট] এর রাজধানী [কুসতুনতুনিয়া তথা কনস্টানটিনোপোল] আক্রমণ করবে তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত । তারপর আমি [উম্মে হারাম] বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি কি তাদের মধ্যে হব ? নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, না । [১]</p><p dir="ltr">ইয়াযিদ প্রেমীদের বক্তব্য হল- কুসতুনতুনিয়ায় আক্রমণকারী প্রথম সৈন্যবাহিনীকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে । আর ইয়াযিদ এ বাহিনীতে ছিল এতে করে সে ক্ষমাপ্রাপ্ত ।</p><p dir="ltr">কিন্তু এরূপ দাবী নিয়ে আগ্রাসনকারী ব্যক্তিরা এই হাদীসের বক্তব্যটুকু ভালভাবে পড়ে নেয়া জরুরী মনে করেননি বোধহয় । নইলে তারা ইয়াযিদকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হিসেবে দাবী করে কিভাবে । হাদিস শরীফের বক্তব্য অনুসারে কায়সারের শহর বা কুসতুনতুনিয়ায় হামলাকারী প্রথম বাহিনীকে ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে; এমন বলা হয়নি যে, এ জিহাদে অংশ নেয়া সকলেই ক্ষমাপ্রাপ্ত । এমন কথা কোথাও বর্ণিত আছে কি ? এ সম্পর্কিত দলীলগুলো নিম্নে উপস্থাপন করা হল ।</p><p dir="ltr">কায়সারের শহর</p><p dir="ltr">আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থে উল্লেখ করেন-</p><p dir="rtl">وَجَوَّزَ بَعْضُهُمْ أَنَّ الْمُرَادَ بِمَدِينَةِ قَيْصَرَ الْمَدِينَةُ الَّتِي كَانَ بِهَا يَوْمَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تِلْكَ الْمَقَالَةَ وَهِيَ حِمْصُ وَكَانَتْ دَارَ مَمْلَكَتِهِ إِذْ ذَاكَ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ কোন কোন উলামার মতে কায়সারের শহর দ্বারা ঐ শহরকে বুঝানো হয়েছে, যা হুযুর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময়ে কায়সারের অধীনে ছিল আর তা ছিল হিম্‌স বা হাম্‌স আর ঐ সময়ে সেখানেই কায়সারের শাসনকার্য চলত । [২]</p><p dir="ltr">এ বিষয়ক কোন হাদীসেই কুসতুনতুনিয়া শব্দের উল্লেখ হয়নি বরং উল্লেখ হয়েছে কায়সারের শহর এর । আর কায়সার রোমের বাদশাহর উপাধি । সে যেখানে অবস্থান করত সেটাকেই মদীনায় কায়সার বলা হত । আর এ মর্মে হাম্‌স ছিল সে শহর যেখানে প্রথম বাহিনী প্রেরণ হয় ১৫ হিজরীতে হযরত উমর ফারুক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলে । যেখানে বহু শীর্ষস্থানীয় সাহাবা কেরাম অংশ নেন । আল্লামা ইবনে আসীর উল্লেখ করেন –</p><p dir="rtl">فَلَمَّا فَرَغَ أَبُو عُبَيْدَةَ مِنْ دِمَشْقَ سَارَ إِلَى حِمْصَ، فَسَلَكَ طَرِيقَ بَعْلَبَكَّ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ হযরত আবু উবাইদাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু দামেশক হতে বের বা’লাবাক্ক শহরের রাস্তা হয়ে হিমসের দিকে রওনা হলেন । [৩]</p><p dir="ltr">আল্লামা হাফেজ ইবনে কাসীর বর্ণনা করেন –</p><p dir="rtl">لَمَّا وَصَلَ أَبُو عُبَيْدَةَ فِي اتِّبَاعِهِ الرُّومَ الْمُنْهَزِمِينَ إِلَى حِمْصَ، نَزَلَ حَوْلَهَا يُحَاصِرُهَا، وَلَحِقَهُ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ فَحَاصَرُوهَا حِصَارًا شَدِيدًا، وَذَلِكَ فِي زَمَنِ الْبَرْدِ الشَّدِيدِ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ ১৫ হিজরী সনে হযরত উমর ফারূক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হযরত আবু উবাইদাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্বে একটি বাহিনী প্রেরণ করেন, তারা রোম বিজয় করে হিম্‌সের দিকে এগিয়ে যায়, পরবর্তীতে হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাতে যোগ দেন । মুসলমানরা সেখানে অবস্থান নেন এবং অবরোধ করেন । সে সময় সেখানে প্রচন্ড শীত পড়ে এবং এ অবস্থায় মুসলমানরা কঠিন ধৈর্যের পরিচয় দেন । তারা হিমস জয় করেন । [৪]</p><p dir="ltr">এই ঘটনা তখনের যখন পাপিষ্ঠ ইয়াযিদের জন্মই হয়নি । ইয়াযিদের জন্ম প্রসঙ্গে ইতিহাসভিত্তিক বর্ণনা –</p><p dir="ltr">    হাফেজ ইবনে কাসীরের মতে-</p><p dir="rtl">وُلِدَ سَنَةَ خَمْسٍ أَوْ سِتٍّ أَوْ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ ইয়াযিদ বিন মুয়াবিয়ার জন্ম ২৫/২৬/২৭ হিজরী সনে । [৫]</p><p dir="ltr">    ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূতীর মতে-</p><p dir="ltr">২৫/২৬ হিজরীতে , ইবনে হাজর আসকালানীর মতে উসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলে, ইবনে আসীরের মতে ২৬ হিজরীতে । [৬]</p><p dir="ltr">কুসতুনতুনিয়ায় ১ম হামলা</p><p dir="ltr">এ বর্ণনা দ্বারা উদ্দেশ্য কুসতুনতুনিয়া হলেও সে বাহিনীতে ইয়াযিদ ছিলনা । সুতরাং সে ক্ষমার সংবাদ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত নয় ।</p><p dir="ltr">আল্লামা হাফেজ ইবনে কাসীরের বর্ণনানুসারে –</p><p dir="rtl">وَفِيهَا غَزَا مُعَاوِيَةُ بِلَادَ الرُّومِ حَتَّى بَلَغَ الْمَضِيقَ مَضِيقَ الْقُسْطَنْطِينِيَّةِ وَمَعَهُ زَوْجَتُهُ عَاتِكَةُ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ ৩২ হিজরী সনে হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রোমে আক্রমণ করেন এবং একের পর এক স্থান অতিক্রম করেন এমনকি তার নেতৃত্বাধীন মুসলিম বাহিনী কুসতুনতুনিয়া পর্যন্ত পৌছে যায় । তার সাথে তার স্ত্রী আতিকাহও ছিলেন । [৭]</p><p dir="ltr">আল্লামা ইবনে আসীর বর্ণনা করেন –</p><p dir="rtl">قِيلَ: فِي هَذِهِ السَّنَةِ غَزَا مُعَاوِيَةُ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ مَضِيقَ الْقُسْطَنْطِينِيَّةِ وَمَعَهُ زَوْجَتُهُ عَاتِكَةُ بِنْتُ قَرَظَةَ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ বর্ণিত আছে, এ বছরই হযরত আমীর মু’আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কুসতুনতুনিয়া পর্যন্ত আক্রমণ করেন এবং তার সাথে তার স্ত্রী আতিকাহ বিন্তে কারযাহ ছিল । [৮]</p><p dir="ltr">আল্লামা তাবারীর তারিখেও ৩২ হিজরীর ঘটনায় অনুরূপ উল্লেখ হয় ।</p><p dir="ltr">এটা ছিল কুসতুনতুনিয়ায় প্রথম হামলার বর্ণনা, যা ৩২ হিজরী সনে হয়েছিল । আর ইয়াযিদের জন্ম ২৫ বা ২৬ হিজরী সনে হয়েছিল । আর এ বর্ণনায় আমীর মু’আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সাথে তার স্ত্রী ছিলেন আর কারো কথা উল্লেখ হয়নি ।</p><p dir="ltr">কুসতুনতুনিয়ায় ২য় হামলাঃ</p><p dir="ltr">কুসতুনতুনিয়ায় দ্বিতীয়বার অভিযান ৪৩ হিজরী সনে হয় । হাফেজ ইবনে কাসীরের বর্ণনা-</p><p dir="rtl">فِيهَا غَزَا بُسْرُ بْنُ أَبِي أَرْطَاةَ بِلَادَ الرُّومِ فَوَغَلَ فِيهَا حَتَّى بَلَغَ مَدِينَةَ قُسْطَنْطِينِيَّةَ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ এ বছর অর্থাৎ ৪৩ হিজরীতে বসর বিন আবী আরতাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয় আর তা রোম ছড়িয়ে কুসতুনতুনিয়া পর্যন্ত পৌছে যায় । [৯]</p><p dir="ltr">তারিখে ইবনে খালদুনে উল্লেখ হয়-</p><p dir="rtl">ثم دخل بسر بن أرطاة أرضهم سنة ثلاث وأربعين ومشى بها وبلغ القسطنطينيّة</p><p dir="ltr">অর্থাৎ অতঃপর হযরত বসর বিন আরতাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী রোমে প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে তারা কুসতুনতুনিয়া পর্যন্ত পৌছে যায় । [১০]</p><p dir="ltr">ইবনে জারীর তাবারীর তারিখে ৪৩ হিজরীর বর্ণনায় এর উল্লেখ হয় ।</p><p dir="ltr">কুসতুনতুনিয়ায় ৩য় হামলাঃ</p><p dir="ltr">কুসতুনতুনিয়ায় ৩য় অভিযান ৪৪ অথবা ৪৬ হিজরী সনে পরিচালিত হয় । তারিখে কামিলে ৪৪ হিজরীর বর্ণনায় উল্লেখ হয়-</p><p dir="rtl">فِي هَذِهِ السَّنَةِ دَخَلَ الْمُسْلِمُونَ مَعَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ بِلَادَ الرُّومِ وَشَتَوْا بِهَا، وَغَزَا بُسْرُ بْنُ أَبِي أَرْطَأَةَ فِي الْبَحْرِ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ এ বছর অর্থাৎ ৪৪ হিজরীতে মুসলিম বাহিনী হযরত আব্দুর রহমান বিন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্বে রোমে জিহাদ পরিচালনা করে আর শীতকালীন সময়ে সেখানে অবস্থান করেন । আর হযরত বসর বিন আবী আরতাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সমুদ্রপথে সেখানে আক্রমণ পরিচালনা করেন । [১১]</p><p dir="ltr">হাফেজ ইবনে কাসীরের আল বিদায়া ওয়ান নিহায়াতেও অনুরূপ বর্ণনা পাওয়া যায় ।<br>তারিখে কামিলে ৪৬ হিজরীর বর্ণনায় উল্লেখ হয়-</p><p dir="rtl">فِي هَذِهِ السَّنَةِ كَانَ مَشْتَى مَالِكِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بِأَرْضِ الرُّومِ، وَقِيلَ: بَلْ كَانَ ذَلِكَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ، وَقِيلَ: بَلْ كَانَ مَالِكُ بْنُ هُبَيْرَةَ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ এ বছর অর্থাৎ ৪৬ হিজরীতে হযরত মালিক বিন আব্দুল্লাহ রোমে অবস্থান করেন, আর বলা হয় যে, আব্দুর রহমান বিন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সেখানে ছিলেন । আবার বলা হয়ে থাকে মালিক বিন হুবাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন । [১২]</p><p dir="ltr">হাফিজ ইবনে কাসীরের বর্ননাতেও অনুরূপ উল্লেখ হয় ।</p><p dir="ltr">হযরত আব্দুর রহমান বিন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্ব দানের কথা কেবল ইতিহাসের কিতাবেই নয়, হাদীসের কিতাবেও তা উল্লেখ হয়েছে । আর তা সিহাহ সিত্তাহর কিতাব সুনানে আবী দাউদে-</p><p dir="rtl">عَنْ أَسْلَمَ أَبِي عِمْرَانَ قَالَ : غَزَوْنَا مِنَ الْمَدِينَةِ نُرِيدُ الْقُسْطَنْطِينِيَّةَ، وَعَلَى الْجَمَاعَةِ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ، وَالرُّومُ مُلْصِقُو ظُهُورِهِمْ بِحَائِطِ الْمَدِينَةِ، فَحَمَلَ رَجُلٌ عَلَى الْعَدُوِّ، فَقَالَ النَّاسُ: مَهْ مَهْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، يُلْقِي بِيَدَيْهِ إِلَى التَّهْلُكَةِ، فَقَالَ أَبُو أَيُّوبَ: ” إِنَّمَا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ فِينَا مَعْشَرَ الْأَنْصَارِ لَمَّا نَصَرَ اللَّهُ نَبِيَّهُ، وَأَظْهَرَ الْإِسْلَامَ قُلْنَا: هَلُمَّ نُقِيمُ فِي أَمْوَالِنَا وَنُصْلِحُهَا “، فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى: {وَأَنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ} فَالْإِلْقَاءُ بِالْأَيْدِي إِلَى التَّهْلُكَةِ أَنْ نُقِيمَ فِي أَمْوَالِنَا وَنُصْلِحَهَا وَنَدَعَ الْجِهَادَ “، قَالَ أَبُو عِمْرَانَ: فَلَمْ يَزَلْ أَبُو أَيُّوبَ يُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ حَتَّى دُفِنَ بِالْقُسْطَنْطِينِيَّةِ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ আসলাম আবূ ইমরান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা মদীনা মুনাওয়ারাহ হতে কুসতুনতুনিয়া ( ইস্তাস্বুল) অভিমুখে যুদ্ধ যাত্রা করলাম। আমাদের সেনাপতি ছিলেন খালিদ ইবন ওয়ালীদের পুত্র আবদুর রহমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। রোমের সৈন্যদল ইস্তাম্বুল শহরের দেওয়ালে পিঠ লাগিয়ে যুদ্ধের জন্য দন্ডায়মান ছিল। এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি শত্রু- সৈন্যের উপর আক্রমণ করে বসল। তখন আমাদের লোকজন বলে উঠল : থাম, থাম, লা ইলাহা ইল্লাহ্, সে তো নিজেই ধ্বংসের দিকে নিজেকে ঠেলে দিচ্ছে। তখন আবূ আইয়ূব আনসারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ( অনুচ্ছেদে বর্ণিত) এ আয়াত আমাদের আনসার সম্প্রদায় সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছিল। যখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ সাহায্য করলেন এবং ইসলামকে জয়যুক্ত করলেন, তখন আমরা বলেছিলাম, আমরা যুদ্ধে না গিয়ে ঘরে থেকে আমাদের সহায় – সম্পদ দেখাশুনা করব এবং এর সংস্কার সাধন করব। তখন আল্লাহ্ এ আয়াত নাযিল করেনঃ ‘‘ আর তোমরা আল্লাহ রাস্তায় ব্যয় কর এবং নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না।’’ আমাদের ঘরে থেকে মালামালে রক্ষণাবেক্ষণ করা ও যুদ্ধে না যাওয়াই হল নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া। আবূ ইমরান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন , এ কারণেই আবূ আইয়ূব আনসারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আ্ল্লাহর রাস্তায় সর্বদা জিহাদে লিপ্ত থাকতেন। শেষ পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে কুসতুনতুনিয়ায় সমাহিত হলেন । [১৩]</p><p dir="ltr">তারিখে কামিলে ৪৬ হিজরীর বর্ণনা অনুসারে হযরত আব্দুর রহমান বিন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ৪৬ হিজরীতে হিমসে ওফাত লাভ করেন । বিদায়া নিহায়াতেও একই কথা উল্লেখ হয় ।</p><p dir="ltr">৪৭ হিজরী সনে মালিক বিন হুবাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্বে রোম অঞ্চলে অভিযান পরিচালিত হয় । এ বর্ণনাও তারিখে কামিল ও বিদায়া নিহায়াতে উল্লেখ হয় ।<br>উপরোক্ত আলোচনা হতে এ কথা স্পষ্ট হয় যে, কুসতুনতুনিয়াতে প্রথম দিকে যে জিহাদ পরিচালিত হয় তাতে ইয়াযিদের অংশগ্রহণ ছিল না । তাহলে হাদীসের বক্তব্য অনুসারে সে কিভাবে ক্ষমাপ্রাপ্তদের দলে অন্তর্ভুক্ত হয় ?</p><p dir="ltr"> </p><p dir="ltr">কুসতুনতুনিয়ার জিহাদে ইয়াযিদের অন্তর্ভুক্তিঃ</p><p dir="ltr">কুসতুনতুনিয়ায় ইয়াযিদের অন্তর্ভুক্তির সাল নিয়ে নানা বর্ণনা উল্লেখ হয়, হাফেজ ইবনে কাসীর বলেন-</p><p dir="rtl">فِيهَا غَزَا يَزِيدُ بْنُ مُعَاوِيَةَ بِلَادَ الرُّومِ حتى بلغ قسطنطينية</p><p dir="ltr">অর্থাৎ এ বছর ইয়াযিদ বিন মু’আবিয়া রোমে আক্রমণ করে এবং এ বাহিনী কুসতুনতুনিয়া পর্যন্ত পৌছে যায় । [১৪]</p><p dir="ltr">তারিখে তাবারীতেও ইবনে জারীর তাবারী একই বর্ণনা উল্লেখ করেন ।</p><p dir="ltr">আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ উমদাতুল কারীতে উল্লেখ করেন –</p><p dir="rtl">أَن يزِيد بن مُعَاوِيَة غزا القسنطينية فِي سنة اثْنَتَيْنِ وَخمسين</p><p dir="ltr">অর্থাৎ ইয়াযিদ বিন মুয়াবিয়া কুসতুনতুনিয়ায় অভিযানে ৫২ হিজরী সনে অংশ নেন । আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানীও ফাতহুল বারীতে একই বর্ণনা দেন ।</p><p dir="ltr">বর্ণিত হয়, এ সময়ে বহু সাহাবী তাতে অংশ নেন । হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদত ও দাফন এখানেই হয় । এরূপ বর্ণনা বুখারী শরীফের হাদীস হতেও পাওয়া যায়। কিন্তু তা হতে ইয়াযিদের ক্ষমাপ্রাপ্তির অন্তর্ভুক্তি হয় না । কেননা সুনানে আবু দাউদের বর্ণনা অনুসারে কুসতুনতুনিয়ায় হামলা আব্দুর রহমান বিন খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বে হয় । এছাড়াও তারিখের(ইতিহাসের) কিতাবসমূহে হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বাহিনীকে ৩২ হিজরীতে কুসতুনতুনিয়ায় অভিযানের কথা উল্লেখ হয় । আবার অন্য বর্ণনায় বসর বিন আবী আরতাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বাহিনী ৪৩ হিজরীতে অভিযানের কথা উল্লেখ হয় । প্রথম বাহিনীতে ইয়াযিদ ছিল কই ? ইয়াযিদ কুসতুনতুনিয়ায় হামলাকারী বাহিনীতে ছিল কিন্তু প্রথম আক্রমণকারী বাহিনীতে নয় আর সেটা স্পষ্ট উল্লেখিত দলীলসমূহ হতে ।</p><p dir="ltr">ইয়াযিদ কুসতুনতুনিয়ায় আক্রমণকারী বাহিনীতে ছিল; কিন্তু তা জিহাদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং তাকে তো সেখানে শাস্তিস্বরূপ পাঠানো হয়েছিল । আল্লামা ইবনে আসীর বর্ণনা করেন –</p><p dir="rtl">فِي هَذِهِ السَّنَةِ، وَقِيلَ:سَنَةَ خَمْسِينَ، سَيَّرَ مُعَاوِيَةُ جَيْشًا كَثِيفًا إِلَى بِلَادِ الرُّومِ لِلْغَزَاةِ وَجَعَلَ عَلَيْهِمْ سُفْيَانَ بْنَ عَوْفٍ وَأَمَرَ ابْنَهُ يَزِيدَ بِالْغَزَاةِ مَعَهُمْ، فَتَثَاقَلَ وَاعْتَلَّ، فَأَمْسَكَ عَنْهُ أَبُوهُ، فَأَصَابَ النَّاسُ فِي غَزَاتِهِمْ جُوعٌ وَمَرَضٌ شَدِيدٌ، فَأَنْشَأَ يَزِيدُ يَقُولُ: مَا إِنْ أُبَالِي بِمَا لَاقَتْ جُمُوعُهُمُ … بِالْغَزْقَذُونَةِ مِنْ حُمَّى وَمِنْ مُومِ<br>إذا اتكأت على الأنماط مرتفقاً … بدير سمعان عندي أم كلثوموَأُمُّ كُلْثُومٍ امْرَأَتُهُ، وَهِيَ ابْنَةُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرٍ.فَبَلَغَ مُعَاوِيَةَ شِعْرُهُ فَأَقْسَمَ عَلَيْهِ لَيَلْحَقَنَّ بِسُفْيَانَ إِلَى أَرْضِ الرُّومِ لِيُصِيبَهُ مَا أَصَابَ النَّاسَ، فَسَارَ وَمَعَهُ جَمْعٌ كَثِيرٌ أَضَافَهُمْ إِلَيْهِ أَبُوهُ</p><p dir="ltr">অর্থাৎ এই বছর, অর্থাৎ, ৪৯ বা ৫০ হিজরী সালে হযরত আমীরে মু’আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রোমের উদ্দেশ্যে এক বিশাল বাহিনী প্রেরণ করেন। তিনি এর দায়িত্বভার অর্পণ করেন সুফিয়ান বিন আউফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর প্রতি এবং তাঁর ছেলে ইয়াযিদকে ওই বাহিনীর সাথে যেতে নির্দেশ দেন। কিন্তু ইয়াযিদ অসুস্থ হওয়ার ভান করে এবং যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এ অভিযানে মুসলিম যোদ্ধারা ক্ষুধা ও রোগ-ব্যাধিগ্রস্ত এবং নানা কঠিন পরিস্থিতির শিকার হন । ইয়াযিদের কাছে যখন এ খবর আসে, তখন সে ব্যঙ্গ করে কবিতায় বলে, ‘ফারকুদওয়ানা-এ মহা গযবে তারা পতিত হয়েছে; তাদের জ্বর বা অন্য যা-ই কিছু হোক, তাতে আমার যায় আসে না। কেননা, আমি বসে আছি উচ্চ ফরাশে (ম্যাট্রেস), আর আমার বাহুবন্ধনে আছে উম্মে কুলসুম ।’ উম্মে কুলসুম ছিলেন ইয়াযিদের স্ত্রীদের একজন আব্দুল্লাহ বিন আমের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কন্যা । হযরত আমীরে মু’আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু যখন এই কবিতার শ্লোক সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন তিনি এয়াযীদকে শপথ গ্রহণ করতে ও কনস্টানটিনোপোলে সুফিয়ান ইবনে আউফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সাথে যোগ দিতে বাধ্য করেন, যাতে করে ’সেও ইসলামের মুজাহিদদের মোকাবেলাকৃত কঠিন পরীক্ষার অংশীদার হতে পারে’ (এটি ইয়াযিদের প্রতি শাস্তি ছিল)। এমতাবস্থায় ইয়াযিদ অসহায় হয়ে পড়ে এবং তাকে যুদ্ধে যেতে হয়; আর হযরত আমীরে মু’আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তার সাথে আরেকটি বাহিনী প্রেরণ করেন । [১৫]</p><p dir="ltr">এ ঘটনা ইবনে খালদুনের তারিখেও উল্লেখ হয় । [১৬]</p><p dir="ltr">এ থেকেই বুঝা যায় ইয়াযিদের মুসলিম বাহিনীতে অন্তর্ভূক্তি কিভাবে হয়েছে । সে মুসলিম সৈন্যদের নিয়ে বিদ্রুপ করার দরুন শাস্তিস্বরূপ সেখানে প্রেরিত হয় ।</p><p dir="ltr">আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর উমদাতুল কারীতে উল্লেখ করেন-</p><p dir="rtl">الْأَظْهر أَن هَؤُلَاءِ السادات من الصَّحَابَة كَانُوا مَعَ سُفْيَان هَذَا وَلم يَكُونُوا مَعَ يزِيد بن مُعَاوِيَة، لِأَنَّهُ لم يكن أَهلا أَن يكون هَؤُلَاءِ السادات فِي خدمته</p><p dir="ltr">অর্থাৎ অসংখ্য সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম হযরত সুফিয়ান ইবনে আউফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর অধীনে যুদ্ধে গিয়েছিলেন এবং ‘ইয়াযিদ ইবনে মুয়াবিয়ার নেতৃত্বে যান নি, কেননা সে তাঁদেরকে নেতৃত্বদানে অযোগ্য ছিল ‘। [১৭]</p><p dir="ltr">এরপরেও ইয়াযিদ প্রেমীরা তাকে ক্ষমাপ্রাপ্ত বা জান্নাতী দাবী কিভাবে করতে পারে, যেখানে কায়সারের শহর বা কুসতুনতুনিয়ায় আক্রমণকারী প্রথম বাহিনীতে সে ছিলই না । হাদীসে প্রথম বাহিনীর কথা বলা হয়েছিল, সেখানে যারা জিহাদ করবে সকলের কথা বলা হয়নি । এরপরও মেনে নেয়া হল সে ছিল, এর দ্বারা তার পরবর্তী গুনাহের কাজ, অনুমোদন ইত্যাদি যে মাফ হবে তা কিভাবে হয় । হাদীস শরীফে বহু জায়গায় ক্ষমার কথা উল্লেখ আছে এমনকি ”লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলার কারণে জান্নাতী হবার ঘোষণাও আছে। এর মানে এ নয় যে, এতে করে সব হিসেব নিকেশ মাফ হয়ে যাবে, এমন হলে তো আমলের প্রয়োজনই ছিল না । ক্ষমা তারই হবে যে এর উপযুক্ত থাকবে । আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী বলেন-</p><p dir="rtl">فَإِن قلت: قَالَ، صلى الله عَلَيْهِ وَسلم، فِي حق هَذَا الْجَيْش: مغْفُور لَهُم. قلت: لَا يلْزم، من دُخُوله فِي ذَلِك الْعُمُوم أَن لَا يخرج بِدَلِيل خَاص، إِذْ لَا يخْتَلف أهل الْعلم أَن قَوْله، صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: مغْفُور لَهُم، مَشْرُوط بِأَن يَكُونُوا من أهل الْمَغْفِرَة حَتَّى لَو ارْتَدَّ وَاحِد مِمَّن غَزَاهَا بعد ذَلِك لم يدْخل فِي ذَلِك الْعُمُوم، فَدلَّ على أَن المُرَاد مغْفُور لمن وجد شَرط الْمَغْفِرَة فِيهِ مِنْهُم</p><p dir="ltr">অর্থাৎ যদিও ইয়াযিদ এই বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়, তবুও সে এই সুসংবাদের হুকুম হতে বের হয়ে যায় তার পরবর্তী কৃতকর্মের কারণে । এ জন্যে যে, উলামা কেরামের এই মাসয়ালায় ঐকমত্য আছে যে হুযুর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই ঘোষণা ‘ তাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে’ কাজে দিবে এই শর্তে যে এর পরবর্তীতেও তারা এর উপযুক্ত থাকবে । পরে যদি কেউ ইসলাম হতে বের হয়ে যায়, ফাসিক, মুরতাদ হয়ে যায় তবে তার অন্তর্ভুক্তি হবে না । সুতরাং এ যুদ্ধে অংশ নেয়া লোকেরা ক্ষমা পাবে তখনই যখন এর উপযুক্ততা তদের মধ্যে উপস্থিত পাওয়া যাবে । [১৮]</p><p dir="ltr">উলামায়ে আহলে সুন্নাতের মতে ইয়াযিদ একজন পাপিষ্ঠ ও অভিশপ্ত ব্যক্তি । এতে কোন প্রকার সংশয় রাখা যাবে না । আর যে ব্যক্তির নির্দেশে আহলে বায়তের উপর নির্মমভাবে হামলা হয়, শহীদ করা হয় তাদের । শহীদ হন হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। অপদস্থ হন আহলে বায়তের পবিত্র নারীগণ, হামলা হয় পবিত্র দুই শহর মক্কা ও মদীনা শরীফে, শহীদ করা হয় সাহাবা ও তাবেয়ী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমদের, পবিত্রতা নষ্ট করা হয় মক্কা-মদীনা শরীফের, মসজিদে নববীর পবিত্রতা নষ্ট করা হয়, আজান বন্ধ করা হয়, কাবা ঘরের গিলাফ পোড়ানো হয় । এমনকি ইয়াযিদের মৃত্যুও হয় যখন মক্কা মুকাররামায় আগুন জ্বলছিল আর আর তার পাশে ছিল মদের পেয়ালা । একজন বিবেকবান মাত্রই বলতে ও বুঝতে সক্ষম যে, এ প্রকার ব্যক্তি ক্ষমাপ্রাপ্ত হয় কিভাবে । অথচ যে বাহিনীতে তার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তাকে বর্তমানে জান্নাতী বানানোর ঘৃণ্য পায়াতারা চালানো হচ্ছে, সে বাহিনীকে নিয়েই সে বিদ্রুপ করেছিল, আর তারই শাস্তি স্বরূপ সে সেখানে যেতে বাধ্য হয় । আল্লাহ আমাদের এসকল ফিতনা হতে হিফাজত করুন এবং তাঁর প্রিয় হাবীব, তাঁর আসহাব ও আহলে বাইতের পথে অটল রাখুন । আমিন, বিহুরমাতি সায়্যিদিল মুরসালীন ।</p><p dir="ltr">তথ্যসূত্রঃ</p><p dir="ltr">১. সহীহ আল বুখারী, কিতাবুল জিহাদ, ৪:৪২ হাদীস নং- ২৯২৪/২৭৬৬ , ৫ম খণ্ড ১৮৩ পৃষ্ঠা হাদীস-২৭২৩ [ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ], তাবরানী আল মু’জামুল কবীর ২৫:১৩৩ হাদীস-৩২৩ মাকতাবা ইবনে তাইয়্যিমাহ কায়রো ।<br>২. আসকালানী ফাতহুল বারী শরহে সহীহ বুখারী ৬:১০৩ দারুল মা’রেফাহ বৈরুত ।<br>৩. ইবনে আসীর তারিখে কামিল ২:৩২২ দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত ।<br>৪. ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া,৮:২৪৮ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত, ৭:৫২ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br>৫. ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া,৮:২৪৮ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত, ৮:২২৬ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br>৬. সুয়ূতী তারিখুল খুলাফা ১৫৬ পৃঃ (ইয়াযিদ বিন মুয়াবিয়া অধ্যায়), ইবনে আসীর তারিখে কামিল ২:৪৬০ দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত, তাহযীবুত তাহযীব ১১:৩৬০ ।<br>৭. ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৭:১৭৯ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত, ৭:১৫৯ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br>৮. ইবনে আসীর তারিখে কামিল ২:৫০৩ দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত।<br>৯. ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৮:২৭ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত, ৮:২৪ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br>১০. তারিখে ইবনে খালদুন ৩:১১ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br>১১. ইবনে আসীর তারিখে কামিল ৩:৩৮ দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত।<br>১২. ইবনে আসীর তারিখে কামিল ৩:৫১ দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত।<br>১৩. সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুল জিহাদ হাদীস নং-২৫১২, হাকেম আল মুস্তাদরিকু আলাস সাহিহাইন, কিতাবুল জিহাদ, হাদীস-২৪৩৪ ।<br>১৪. ইবনে কাসীর আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৮:৩৬ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত, ৮:৩২ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br>১৫. ইবনে আসীর তারিখে কামিল ৩:৫৬,৫৭ দারুল কিতাবিল আরাবী বৈরুত।<br>১৬. তারিখে ইবনে খালদুন ৩:১২ দারুল ফিকর বৈরুত ।<br>১৭. উমদাতুল ক্বারী শরহে সহীহ বুখারী, বাবু মা ক্বীলা ফি ক্বিতালির রূম, ১৪:১৯৮,১৯৯ দারু ইহয়ায়ুত তুরাসুল আরাবী বৈরুত ।<br>১৮. প্রাগুপ্ত ১৪:১৯৯ ।</p><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"> <a href="https://lh3.googleusercontent.com/-QHMWU21Dobg/WdiR5G5CklI/AAAAAAAABGY/BTD6BKyIO-ocdfa0TzflS2SC4qCE-s6dwCHMYCw/s1600/10592659_905791712764272_8060192252513083228_n.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"> <img border="0" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-QHMWU21Dobg/WdiR5G5CklI/AAAAAAAABGY/BTD6BKyIO-ocdfa0TzflS2SC4qCE-s6dwCHMYCw/s640-rw/10592659_905791712764272_8060192252513083228_n.jpg"> </a> </div>

ইয়াযিদ বিষয়ে হাদীসে কুসতুনতুনিয়ার অপব্যাখ্যার খন্ডন

মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান [নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লি ওয়ানুসাল্লিমু আলা হাবীবিহিল করীম ওয়ালা আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমায়ীন আম্মা বা’দ ] বর্তমান সময়ে প্...

Read more »