রিসালাতের   উপর   বিশ্বাস   করার   জন্য   তিনটি   বিষয়  স্বীকার করা অত্যাবশ্যকীয়ঃ

(১)   স্বীকার  করতে   হবে-   আমরা  সোজাসোজি   মহান আল্লাহ থেকে কোন  নেয়ামত গ্রহণ করতে  পারিনা। যা কিছু    আল্লাহর    পক্ষ      হতে    মিলে-    তা    রাসূলে    পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  -এর মাধ্যমেই মিলে। কেননা, তা না হলে রাসূল প্রেরণই অর্থহীন হয়ে পড়বে এবং  প্রতিনিধিত্বের   কোন  গুরুত্বই  থাকবেনা।   আমরা হচ্ছি গ্রহীতা- আর রাসূল হচ্ছেন সেই দানের মাধ্যম বা বন্টনকারী  এবং আল্লাহ হচ্ছেন দাতা  (বুখারী শরীফ)।

রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমেই অন্য দেশের সাহায্য আসে।

(২) রিসালাতে বিশ্বাস করার জন্য   দ্বিতীয়   শর্ত   হলো- একথা স্বীকার করা যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের  মত অসহায় ও কর্তৃত্বহীন নন। তিনি বিশ্বজগতে কর্তৃত্বের ক্ষমতাপ্রাপ্ত। তিনি রব থেকে নিতে পারেন এবং আমাদেরকে দিতে পারেন। তিনি যদি রব থেকে   সরাসরি   নিতে   না   পারেন    তাহলে   তাঁর   জন্য  আরেকজন    রাসূলের      প্রয়োজন     হবে।    তখন    তাকে আরেকজনের উম্মত হতে হবে। এটা অবাস্তব।

(৩) একথাও স্বীকার   করতে  হবে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি  ওয়া    সাল্লাম  দাতা   রবকে  যেমন  ভালভাবে জানেন    ও   চিনেন-     তেমনিভাবে   গ্রহীতা   উম্মতকেও  জানেন ও চিনেন। হাদীসে তার অসংখ্য প্রমাণ  আছে।  উভয়দিকের     জ্ঞান    না      থাকলে    নেওয়া     ও     দেওয়া প্রমাণিত হয়না।

যেসব লোক সরাসরি এবং কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহ থেকে    সবকিছু   পাওয়া  যায়  বলে  বিশ্বাস  করে-  তারা মূলতঃ   রিসালাতকেই   অমান্য   করে।   তারা      কালেমা তাইয়েবার    দ্বিতীয়  অংশ-  ”মুহাম্মাদুর  রাসুলুল্লাহ”-এর অস্বীকারকারী।        কেননা,       রাসূল       হলেন       আল্লাহর  প্রতিনিধি। প্রতিনিধির মাধ্যম ছাড়া কোন কিছু পাওয়ার ধারণা    বাতুলতা    বৈ    আর    কিছুই    নয়।    বান্দা      যদি সরাসরি      সবকিছু      পেয়ে       যায়-      তাহলে       রাসূলের  প্রয়োজনীয়তা থাকে কোথায়?

এতে  পরিষ্কার  হয়ে   গেলো-   আল্লাহর   সাথে  রাসূলের সম্পর্ক     হলো     গ্রহণ     করার     এবং     আমাদের     সাথে  রাসূলের   সম্পর্ক    হলো    প্রদান    করার।   এই    কথাটুকু বুঝানোর       জন্যই      হুযুর      সাল্লাল্লাহু     আলাইহি      ওয়া সাল্লামকে  আমরা  বলি-  (رسول  الله)   অর্থাৎ  আল্লাহর  রাসূল   এবং আরো বলি-  (رسولنا) অর্থাৎ- আমাদেরও রাসূল।       তিনি      আল্লাহ       হতে       গ্রহণ       করেন      বলে “রাসুলুল্লাহ”     এবং     আমাদেরকে     দান     করেন     বলে  “রাসুলুনা”।  কোরআন মজিদে আল্লাহর রাসূল   (رسول الله)   এবং   তোমাদের    রাসূল  (رسولكم)  উভয়   শব্দই  ব্যবহার  করা  হয়েছে।  সুতরাং  তিনি আল্লাহরও রাসূল  এবং    আমাদেরও    রাসূল।    এই    হাকিকত    উপলদ্ধির  নামই প্রকৃত ঈমান।

ভিজিট করুন এই ব্লগ টিও - ইসলামী জীবন
Top