অপরাধ ও তার কাফ্‌ফারা
========
সামনে     আগত      প্রশ্নোত্তর       অধ্যায়টি      পড়ার     পূর্বে কতিপয়     প্রয়োজনীয়    পরিভাষা     ইত্যাদি    স্মৃতি    পটে আয়ত্ব করে নিন।

দম ইত্যাদির সংজ্ঞা
========
﴾১﴿ দম: অর্থাৎ  একটি ছাগল। (এতে নর ছাগল, মাদী ছাগল  (ছাগী),  দুম্বা,   ভেড়া  এবং  গাভী  কিংবা  উটের  সপ্তাংশ সবই অন্তর্ভূক্ত)

﴾২﴿  বাদানাহ:  অর্থাৎ    উট   কিংবা  গাভী  (এতে  ষাড়,  বলদ,  মহিষ,   মহিষী   ইত্যাদি    সবই  অন্তর্ভূক্ত)   গাভী,  ছাগল   ইত্যাদি    সকল  পশু  ঐসব   শর্ত     সম্বলিত  হতে হবে, যা কোরবানীর জন্য নির্ধারিত রয়েছে।

﴾৩﴿     সদ্‌কা:     অর্থাৎ     সদকায়ে    ফিতরের    পরিমাণ।   বর্তমানের হিসাবানুযায়ী সদকায়ে ফিতরে পরিমাণ হল, ২  কিলো  থেকে  ৮০  গ্রাম  কম  গম  অথবা  তার  আটা  কিংবা এর  মূল্য বা  উহার  দ্বিগুন  জব  বা  খেজুর কিংবা এর মূল্য।

দম ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ
========
আপনি  যদি রোগী   কিংবা  কঠিন সর্দিগ্রস্থ কিংবা   খুবই  গরমের কারণে কিংবা ফোঁড়া, জখম (আঘাত), অথবা উকুনের  অসহ্য    যন্ত্রনার   কারণে  কোন   ‘অপরাধ’  হয়ে থাকে।      তখন      এটাকে      গাইরে      ইখতেয়ারী      জুরম  (অনিচ্ছাকৃত    অপরাধ)     বলা   হয়।    যদি   এমন   কোন  ‘জুরমে  গাইরে     ইখতেয়ারী’  সংঘটিত    হয়ে  যায়,  যার কারণে  দম  ওয়াজিব  হয়;   তখন  এ   অবস্থায়  আপনার জন্য   অনুমতি  থাকবে  যে,  হয়তঃ   আপনি  চাইলে  দম দিয়ে     দিতে    পারেন    কিংবা    তার     পরিবর্তে    ৬    জন মিসকীনকে    সদকা     দিয়ে    দিবেন,   আর   যদি    একই  মিসকীনকে   ৬টি   সদকা   দিয়ে   দেয়া   হয়,   তখন     তা  ‘একটি     সদ্‌কা’হিসেবে      গণ্য      হবে।     অতএব     এটা   আবশ্যক  যে,   আলাদা  আলাদা  ৬    জন   মিসকীনকেই দিতে হবে। দ্বিতীয়  বিশেষ সুযোগ হচ্ছে, যদি চায়    তা  হলে দম দেয়ার পরিবর্তে ৬    জন  মিসকিনকে  ২ বেলা পেট  ভর্তি করে খাওয়ানো।  আর তৃতীয় সুযোগ হচ্ছে;  যদি  সদ্‌কা ইত্যাদি দিতে  না চান, তাহলে ৩টি   রোজা রেখে নিবেন,  দম     আদায় হয়ে যাবে।  আর  যদি কেউ এমন   ‘গাইরে    ইখতিয়ারী   জুরম’করল,     যার     কারণে সদ্‌কা  ওয়াজিব  হয়;  তখন  আপনার  অনুমতি  থাকবে  যে,  সদ্‌কার  পরিবর্তে  একটি  মাত্র  রোযা  রেখে  নিতে  পারেন। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১১৬২ পৃষ্ঠা)

দম, সদ্‌কা ও রোযার জরুরী মাসআলা
========
যদি আপনি কাফ্‌ফারার রোযা রাখেন,   তখন শর্ত  এই যে, রাত থেকে অর্থাৎ সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার পূর্বেই এই নিয়্যত করে  নিবেন যে,    আমি  অমুক  কাফ্‌ফারার রোযা  রাখছি। ঐ রোযা গুলোর ক্ষেত্রে না ইহরাম  বাঁধা শর্ত, না ধারাবাহিকতা রক্ষা করা শর্ত। সদ্‌কা ও রোযা আপনি    চাইলে    নিজ    দেশে    এসেও    আদায়    করতে  পারবেন।   তবে     সদ্‌কা  ও খাবার যদি হারম শরীফের মিসকীনদের  দেওয়া  হয়,  তা   হবে  অতি  উত্তম   কাজ, আর  দম ও  বাদানার পশু  হারম শরীফের মধ্যে জবেহ হওয়াটা শর্ত।

হজ্বের    কোরবানী     ও   দমের   মাংসের    বিধান    হজ্বের  শোকরানা   কোরবানী    হুদুদে    হারমের   (অর্থাৎ    হারম শরীফের)   মধ্যেই    হওয়াটা   শর্ত।    এর   মাংস   আপনি নিজেও          খান,            ধনীদেরকেও          খাওয়ান           এবং  মিসকীনদেরও  পেশ  করুন।  কিন্তু    ‘দম’  ও   ‘বাদানাহ’  ইত্যাদির মাংস শুধুমাত্র  অভাবীদেরই   হক।   তা  থেকে না   নিজে   খেতে   পারবেন,   না   ধনীদেরকে   খাওয়াতে  পারবেন। (বাহারে  শরীয়াত, ১ম   খন্ড,  ১১৬২-১১৬৩ পৃষ্ঠা)। দম হোক কিংবা শোকরানার কোরবানী, জবেহ করার  পর  এর  মাংস  ইত্যাদি  হারম  শরীফের  বাইরে  নিয়ে   যেতে  কোন  অসুবিধা নেই।   কিন্তু জবেহ  ‘হুদুদে হারম’(অর্থাৎ          হারমের          সীমানার          মধ্যে          করা  আবশ্যক)।

আল্লাহ তাআলাকে ভয় করুন
========
অনেক অজ্ঞ লোকেরা জেনে বুঝে অপরাধ করে থাকে, আর  কাফ্‌ফারাও আদায় করে   না। এখানে দু’টি গুনাহ হয়েছে।  প্রথমত:  জেনে    বুঝে   গুনাহ   করা।  দ্বিতীয়ত: কাফ্‌ফারা  না   দেওয়া।  এদের   কাফ্‌ফারাও দিতে হবে এবং তাদের উপর তাওবা  করাও ওয়াজীব  হবে।  হ্যাঁ! যদি অপারগ অবস্থায় ‘অপরাধ’করে, কিংবা অসতর্কতা বশতঃ    হয়ে    যায়।     তখন    কাফ্‌ফারাই    যথেষ্ট     হবে, এরজন্য  তাওবা  ওয়াজিব  হবে  না,  আর  ইহাও  স্মরণ  রাখুন যে,  জুরম  (অপরাধ)  জানা  বশতঃ হোক  কিংবা   ভুলে     হোক,  এটা  যে  ‘জুরম’তা   জানা    থাকুক  কিংবা  জানা না থাকুক। খুশীতে হোক কিংবা বাধ্য হয়ে করুক, নিদ্রায়     হোক    কিংবা    জাগ্রতাবস্থায়,     অজ্ঞানে    কিংবা স্বজ্ঞানে,    নিজ    ইচ্ছায়    করে    থাকুক     কিংবা     অন্যের মাধ্যমে    করানো    হোক,    প্রতিটি    অবস্থায়    কাফ্‌ফারা  আবশ্যক  হবে।  যদি  কাফ্‌ফারা  না  দিয়ে  থাকে,  তবে  সে গুনাহগার হবে। যখন খরচ মাথার উপর এসে যায়, তখন কতিপয় লোক এরকমও বলে  দেয়  যে,  “আল্লাহ তাআলা মাফ  করে দিবেন”, আর   এটা বলে  তারা  দম ইত্যাদি  আদায়  করে  না।  এমন  লোকদের  চিন্তা  করা  প্রয়োজন যে,  ‘কাফ্‌ফারা’ শরীআতই ওয়াজিব করেছে, আর    জেনে  বুঝে  টালমটাল  করা   মানে   শরীআতেরই বিরোধীতা    করা,    যা   খুবই   কঠিন   জুরম    (অপরাধ)। অনেক সম্পদ   লোভী  অজ্ঞ হাজীরা!  ওলামায়ে  কেরাম থেকে   এতটুকু  পর্যন্ত   জিজ্ঞাসা   করতে   শুনা   যায়   যে, “শুধুমাত্র  গুনাহ  তাই  না!  দম  তো  ওয়াজিব  না?  مَعَاذَ  اللہ عَزَّوَجَلَّ শতকোটি আফসোস! তাদের অতি সামান্য পয়সা  বাঁচানোরই শুধু চিন্তা  গুনাহের কারণে  যে  কঠিণ আযাবের  উপযুক্ত  সাব্যস্থ   হচ্ছে  তার  কোন   পরওয়াই নেই। গুনাহকে হালকা (ছোট) মনে করা খুবই মারান্তক কথা  বরং  অনেক   সময়  (এরূপ  মনে  করা)   “কুফর”। আল্লাহ  তাআলা  আমাদের সবাইকে  মাদানী  চিন্তাধারা  দান করুন।

اٰمِين  بِجا  هِ  النَّبِيِّ  الْاَمين          صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم

কারিন হজ্বকারীর জন্য দ্বিগুণ কাফ্‌ফারা
========
যে  ক্ষেত্রে একটি   কাফ্‌ফারা (অর্থাৎ একটি  দম অথবা  একটি      সদ্‌কা)    আদায়ের     হুকুম    রয়েছে,     সেক্ষেত্রে কারিন  হজ্বকারীদের   জন্য  দু’টি  কাফ্‌ফারা   (আদায়ের হুকুম     রয়েছে)।     (হেদায়া,     ১ম     খন্ড,     ১৭১     পৃষ্ঠা)  না-বালিগ  যদি  কোন   ‘জুরম’(অপরাধ)   করে,   তাহলে  কোন কাফ্‌ফারা নেই।

কারিন হজ্বকারীর জন্য
কোথায় দ্বিগুণ কাফ্‌ফারা আর কোথায় নেই
========
সাধারণ   ভাবে   সকল   কিতাবে   বর্ণিত  রয়েছে  যে,   যে ক্ষেত্রে ইফরাদ হজ্বকারী অথবা তামাত্তু হজ্বকারীর উপর একটি দম অথবা একটি সাদ্‌কা দেওয়া আবশ্যক হয়, সেক্ষেত্রে কারিন হজ্বকারীর জন্য দু’টি  দম অথবা দু’টি  সদ্‌কা   দেওয়া  আবশ্যক  হয়ে   পড়ে।  এই  মাসআলা  তার  নিজস্ব    স্থানে   ঠিক  আছে  কিন্তু  এর   কিছু   বিশেষ  অবস্থা রয়েছে। অর্থাৎ এমন নয় যে, যেখানেই ইফরাদ ও তামুত্তু  হজ্বকারীর উপর    একটি দম দেয়া  আবশ্যক হবে    সেক্ষেত্রেই   কারিন    হজ্বকারীর     উপর   দু’টি    দম দেয়ার  বিধান  সাব্যস্ত  হবে।  অতএব  এ  মাসআলাটির  পরিপূর্ণ  ব্যাখ্যা  উপস্থাপন  করা হচ্ছে; যাতে কোন ভুল বুঝাবুঝির স্বীকার না হন। হযরত  আল্লামা  শামী رَحۡمَۃُ اللہِ    تَعَالٰی   عَلَیْہِ    এর   বাণীর    সারমর্ম    হচ্ছে:     ইহরাম পরিধানকারীর  উপর  শুধু  ইহরামের  কারণে   যে   সমস্ত কাজ করা হারাম যদি তৎমধ্য হতে কোন কাজ ইফরাদ হজ্বকারী    করে   তবে  তার  উপর  একটি  দম  ওয়াজিব  হবে,  আর  হজ্বে  কিরানকারীর  উপর  অথবা  যে  ব্যক্তি  তার  (কিরান  হজ্বকারীর)  হুকুমে  (অর্থাৎ  বিধানাবলীর  আওতায়)   রয়েছে;    যে    যদি   ঐ   (হারাম)   কাজ   করে তাহলে   তার   উপর      দু’টি    দম    ওয়াজিব     হবে,   আর সদ্‌কার ব্যাপারেও কারিন হজ্বকারীর    একই হুকুম যে, তার  উপর  দু’টি  সদ্‌কা ওয়াজিব হবে। কেননা সে হজ্ব ও ওমরা উভটির ইহরাম বেঁধেছে, আর যদি সে হজ্বের ওয়াজিব ছেড়ে দেয়, যেমন: সাঈ বা রমী করা ছেড়ে দিল,  অপবিত্র  (অর্থাৎ   গোসল   ফরয)  অবস্থায়  অথবা ওযু ছাড়া  হজ্ব  কিংবা   ওমরার  তাওয়াফ করল অথবা  হারম শরীফের  ঘাস কাটল,  তাহলে  তার  উপর দ্বিগুণ   শাসিন্ত  ওয়াজিব    হবে  না। কেননা এগুলোর ইহরামের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত নয় বরং তা হজ্ব ও ওমরার ওয়াজিব সমূহ  ও হারাম শরীফের নিষিদ্ধ কাজ  গুলোর অন্তর্ভূক্ত।     (রদ্দুল     মুহতার,     ৩য়     খন্ড,     ৭০১-৭০২  পৃষ্ঠা)

এই  মাসআলার   পূর্ণাঙ্গ  বিবরণ    হযরত  আল্লামা  আলী ক্বারী  رَحۡمَۃُ  اللہِ   تَعَالٰی     عَلَیْہِ   বর্ণনা  করেছেন:   কিরান হজ্বকারী   অথবা   কিরানকারীর   হুকুমের   আওতায়   যে  আছে, তার  উপর দম অথবা   সদ্‌কা  ইত্যাদি  ওয়াজিব হওয়ার     ক্ষেত্রে     মূলনীতি    হল    এটাই     যে,    (শুধুমাত্র  ইহরামের  কারণে)    প্রত্যেক ঐ  নিষিদ্ধ কাজ  যা  করার কারণে হজ্বে ইফরাদকারীর উপর একটি দম বা একটি সদ্‌কা   ইত্যাদি   দেয়া   ওয়াজিব   হয়,   ঐ   কাজ   করার  কারণে   হজ্বে    কিরানকারীর    উপর    অথবা     যে    ব্যক্তি কিরানকারীর  হুকুমের  মধ্যে   পড়ে  তার উপর হজ্ব   ও ওমরার ইহরামের কারণে দুইটি দম এবং দুইটি সদ্‌কা ওয়াজিব      হবে।    অবশ্য     এমন    কিছু    অবস্থা    রয়েছে যেগুলোর   কারণে   তাদের   উপর   শুধুমাত্র   একটি   দম  অথবা একটি সদ্‌কা ইত্যাদি ওয়াজিব হবে। (আর এর আসল কারণ ওটাই যে, ঐ সকল  বস্থর সম্পর্ক শুধুমাত্র ইহরামের কারণে নিষিদ্ধ বস্থ গুলোর সাথে নয়।)

﴾১﴿  যখন  হজ্ব  ও  ওমরাকারী   ইহরাম  ব্যতীত   মীকাত অতিক্রম   করে  ফেলল   এবং   পুনরায়    ফিরে   না  এসে ওখান থেকে হজ্বে কিরানের ইহরাম বেঁধে  নেয় তাহলে তার  উপর  একটি  দম  ওয়াজিব  হবে।  কেননা  সে  যে  নিষিদ্ধ   কাজটি   করেছে      তা     হজ্বে   কিরানের    ইহরাম বাঁধার পূর্বে করেছিল।﴾২﴿ যদি হজ্বে কিরানকারী অথবা যে ব্যক্তি   কিরানকারীর  হুকুমের মধ্যে পড়ে  সে    যদি হারাম   শরীফের    গাছ  কাটে,   তবে  তার  উপর  একটি  বিনিময়    দেয়া     ওয়াজিব     হবে।   কেননা   গাছ    কাটার সম্পর্ক ইহরামের  কারণে নিষিদ্ধ  বস্থগুলোর সাথে নয়। ﴾৩﴿ যদি পায়ে  হেঁটে  হজ্ব বা ওমরা করার মান্নত করে, অতঃপর  হজ্বের  দিন   সমূহে  হজ্বে  কিরান    করল  এবং আরোহী  হয়ে হজ্বের  জন্য  গিয়ে থাকে তবে  এ কারণে (আরোহী  হওয়ার   কারণে)   একটি দম  ওয়াজিব হবে। ﴾৪﴿  যদি তাওয়াফে  জেয়ারত অপবিত্র  (গোসল ফরয) অবস্থায়  করে  অথবা   অযু   ছাড়া  করে  তাহলে  একটি  মাত্র বিনিময়  দেয়া   ওয়াজিব হবে। কেননা   তাওয়াফে  জেয়ারতের   কারণে  নিষিদ্ধ  কাজগুলো  শুধুমাত্র   হজ্বের সাথেই নির্দিষ্ট।  অনুরূপভাবে  যদি শুধুমাত্র  ওমরাকারী  ওমরার  তাওয়াফ  ঠিক  একইভাবে  করে    তাহলে  তার উপর   একটি  বিনিময়  (দম    অথবা   সাদ্‌কা)  ওয়াজিব  হবে।  ﴾৫﴿  যদি  কিরানকারী  অথবা  কিরানের  হুকুমের  মধ্যে      অন্তর্ভূক্ত    সে      যদি    কোন     অপারগতা    ছাড়া  ইমামের পূর্বে আরাফাতের ময়দান থেকে ফিরে আসে, আর  এখনও   পর্যন্ত   সূর্যও  না  ডুবে    থাকে,   তবে  তার উপর  একটি  দম   ওয়াজিব  হবে।  কেননা  এটা   হজ্বের ওয়াজিবগুলোর সাথেই নির্দিষ্ট এবং ওমরার  ইহরামের সাথে    এর      কোন     সম্পর্ক     নেই।    ﴾৬﴿    কোন    ওজর (অপারগতা)    ছাড়াই    মুজদালিফার    অবস্থান    ছেড়ে  দিল, তাহলে কিরান হজ্বকারী এর যে কিরান হজ্বকারীর হুকুমের  আওতায়  হবে  তার  উপর    একটি    দম    দেয়া ওয়াজিব হবে। ﴾৭﴿ যদি  সে জবেহ করার পূর্বেই  মাথা মুন্ডিয়ে   নেয়, তাহলে তার উপর একটি  দম   ওয়াজিব  হবে।  ﴾৮﴿  যদি   সে কোরবানীর  দিন সমূহ অতিবাহিত হয়ে  যাওয়ার   পর  মাথা   মুন্ডায়,   তাহলে   তার    উপর  একটি  দম  ওয়াজিব  হবে।  ﴾৯﴿  যদি    সে    কোরবানীর দিন   সমূহ  অতিবাহিত  হয়ে  যাওয়ার  পর   কোরবানীর পুশু    জবেহ    করে,    তাহলে     তার     উপর    একটি    দম ওয়াজিব  হবে।   ﴾১০﴿  যদি   সে  পরিপূর্ণ   রমী  না   করে থাকে অথবা এতটি রমী   ছেড়ে   দিয়েছে, যার  কারণে দম  অথবা   সাদ্‌কা  ওয়াজিব    হয়,  তাহলে  তার   উপর একটি দম অথবা  একটি সাদ্‌কা  ওয়াজিব হবে।  ﴾১১﴿ যদি   সে   ওমরা    অথবা   হজ্ব   উভয়টি    হতে   যে    কোন একটির  সাঈ  ছেড়ে  দেয়,  তাহলে  তার  উপর  একটি  দম ওয়াজিব হবে।

﴾১২﴿       যদি      সে     তাওয়াফে     ছদর     (অর্থাৎ     বিদায়ী তাওয়াফ)  ছেড়ে দেয়,  তাহলে  তার উপর একটি দম  ওয়াজিব হবে। কেননা    এর  সম্পর্ক আফাকী হাজীদের সাথে,  ওমরাকারীদের  সাথে  সাধারনভাবে  এর  কোন  সম্পর্ক নেই।

নোট:    কিরান   হজ্বকারীর  উপর   দু’টি  বিনিময়  (অর্থাৎ দম    অথবা   সাদ্‌কা)   ওয়াজিব    হওয়ার    ব্যাপারে    যে  মূলনীতি বর্ণনা করা হয়েছে এর মধ্যে প্রত্যেক ঐ ব্যক্তি অন্তর্ভূক্ত,  যে  দুইটি    ইহরামকে  একত্রিত করেছে, আর দুইটি  ইহরামকে  একত্রিত  করা,  চাই  সুন্নাত  তরকিায়  হোক;      যেমন:       ঐ       হজ্বে      তামাত্তুকারী         যে      হাদী (কোরবানীর     পশু)    সাথে    করে    নিয়ে    আসেনি   কিন্তু এখনও ওমরার ইহরাম থেকে বেরিয়ে না এসেই হজ্বের ইহরাম  বেঁধে   নেয়।    অথবা   চাই  সুন্নাত  তরীকায়     না হোক, যেমন:  মক্কায়ে  মুকাররমার অধিবাসী অথবা যে পবিত্র    মক্কার    অধিবাসীর   অর্থে   অন্তর্ভূক্ত   হয়ে   আছে  (অর্থাৎ  মক্কায়   দীর্ঘ   কাল  ধরে   অবস্থান  করছে  অথবা চাকুরীর কারণে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে আসছে) এমন ব্যক্তি  যদি  হজ্বে  কিরানের ইহরাম  বেঁধে  নেয়।  এমনি ভাবে    প্রত্যেক   ঐ   ব্যক্তি  যে    এক   নিয়্যতের  মাধ্যমে অথবা   দুই   নিয়্যতের   মাধ্যমে   কিংবা   এক   নিয়্যতের  উপর অপর একটি নিয়্যত করে দুইটি হজ্ব অথবা দুইটি ওমরার ইহরাম কে একত্রিত  করে ফেল্‌ে এমনিভাবে যদি শত হজ্ব  কিংবা  শত ওমরা করার নিয়্যতে ইহরাম বেঁধেছে     কিন্তু     তা    পূর্ণ    করার    পূর্বেই      কোন    জুরম (অপরাধ)  প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে   ঐ ব্যক্তির উপর (ঐ  ‘জুরম’   এর   হিসাবানুসারে)   শত    বিনিময়  আদায় করা  ওয়াজিব    হবে।   (আল   মাসলাকুল  মুতাকাস্‌সিত লিলক্বারী, ৪০৬-৪১০ সংক্ষেপিত)

Top