বিদায়ী তাওয়াফের ১৯টি মাদানী ফুল
============
﴾১﴿ যখন বিদায় নেওয়ার ইচ্ছা হবে, তখন বহিরাগত (মীকাতের বাইরের) হাজীর উপর বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। ইহা আদায় না করলে দম ওয়াজিব হবে। এটাকে তাওয়াফে বিদা ও তাওয়াফে সদরও বলে থাকে। ﴾২﴿ এর মধ্যে ইসেন্তবা, রমল এবং সাঈ নেই।﴾৩﴿ ওমরাকারীদের জন্য ওয়াজিব নয়। ﴾৪﴿ হায়েজ ও নেফাসরত মহিলার যদি (ফিরার) সিট বুকিং করা থাকে (যা অতি সন্নিকটে) তাহলে চলে যেতে পারবে, এখন তার উপর এই তাওয়াফ ওয়াজিব নয় এবং দমও ওয়াজিব নয়। ﴾৫﴿ বিদায়ী তাওয়াফে শুধুমাত্র তাওয়াফের নিয়্যতই যথেষ্ট। ওয়াজিব, আদা, বিদা (অর্থাৎ বিদায়) ইত্যাদি শব্দ সমূহ নিয়্যতের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করা আবশ্যক নয়। এমনকি নফল তাওয়াফের নিয়্যত করলেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। ﴾৬﴿ সফরের (অর্থাৎ চলে যাওয়ার) ইচ্ছা ছিল, বিদায়ী তাওয়াফ করে নিল। অতঃপর কোন কারণে অবস্থান করতে হচ্ছে, যেমন গাড়ী ইত্যাদির ক্ষেত্রে সাধারণত বিলম্ব হয়ে যায়, আর এখন একামত তথা অবস্থানের নিয়্যত না করলে ঐ তাওয়াফই যথেষ্ট। দ্বিতীয়বার করার প্রয়োজন নেই এবং মসজিদুল হারমে নামায ইত্যাদির জন্য যেতেও কোন অসুবিধা নেই। তবে হ্যাঁ মুশতাহাব হল যে, পূনরায় তাওয়াফ করে নেওয়া যাতে তাওয়াফই সর্বশেষ কাজ হয়। ﴾৭﴿ তাওয়াফে জিয়ারতের পরে প্রথম যে তাওয়াফ করা হবে উহাই বিদায়ী তাওয়াফ। ﴾৮﴿ যে তাওয়াফ ছাড়া বিদায় হয়ে গেল সে যদি মীকাত অতিক্রম না করে থাকে তাহলে আবার ফিরে আসবে এবং তাওয়াফ করে নিবে। ﴾৯﴿ যদি মীকাত অতিক্রম করার পরে স্মরণ হয় তখন আবার ফিরে আসা আবশ্যক নয়। বরং দমের জন্য কোন পশু হেরমে পাঠিয়ে দিবে, আর যদি পূনরায় ফিরে আসে তাহলে ওমরার ইহরাম করে প্রবেশ করবে এবং ওমরা হতে অবসর হয়ে বিদায়ী তাওয়াফ করবে। এখন এই অবস্থায় তার থেকে পূর্বের দম রহিত হয়ে যাবে। ﴾১০﴿ বিদায়ী তাওয়াফের যদি তিন চক্কর ছুটে যায়, তাহলে প্রতি চক্করের পরিবর্তে একটি করে সদকা দিবে, আর যদি চার চক্করের কম করে থাকে, তাহলে দম দিতে হবে।
﴾১১﴿ যদি সম্ভব হয় তাহলে অস্থিরভাবে অঝোরনয়নে কেঁদে কেঁদে বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করুন। কারণ আপনি তো জানেন না যে, আগামীতে এ সৌভাগ্য সহজে আর আসবে কিনা? ﴾১২﴿ তাওয়াফের পরে নিয়মানুযায়ী দুই রাকাত ‘ওয়াজিবুত তাওয়াফ’ (তথা তাওয়াফের ওয়াজিব নামাজ) আদায় করুন। ﴾১৩﴿ বিদায়ী তাওয়াফের পর নিয়ামানুযায়ী জমজম শরীফের পাশে উপস্থিত হয়ে জমজমের পানি পান করুন এবং শরীরের উপরও ঢালুন। ﴾১৪﴿ অতঃপর কাবার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে যদি সম্ভব হয় তাহলে কাবার পবিত্র চৌকাটে চুম্বন দিন এবং হজ্ব ও জেয়ারত কবুল হওয়ার জন্য এবং বারবার উপস্থিত হওয়ার তৌফিক কামনা করে দোআ করুন, আর দোআয়ে জামে (অর্থাৎ رَبَّنَا اٰتِنَا....... শেষ পর্যন্ত) পড়ুন অথবা এই দোআটি পড়ুন:
اَلسَّآ ئِلُ بِبَابِکَ يَسْأَلُکَ مِنْ فَضْلِکَ وَ مَعْرُوْفِکَ وَ يَرْجُوْ رَحْمَتَکَ
অনুবাদ: তোমার দরজায় দাঁড়িয়ে ভিক্ষুক তোমার নিকট দয়া ও করুণা ভিক্ষা চাচ্ছে এবং তোমার রহমত কামনা করছে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১১৫২ পৃষ্ঠা) ﴾১৫﴿ মুলতাজিমে এসে কাবার গিলাফ জড়িয়ে ধরে পূর্বের নিয়মে আলিঙ্গন করুন এবং জিকির দরূদ ও দোআ বেশী বেশী করে করুন। ﴾১৬﴿ অতঃপর যদি সম্ভব হয় তাহলে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করুন এবং যে অশ্রু অবশিষ্ট আছে উহাও প্রবাহিত করুন। ﴾১৭﴿ অতঃপর কাবার দিকে মুখ করে উল্টো পায়ে অথবা নিয়মানুযায়ী চলতে চলতে বারবার ফিরে ফিরে কাবায়ে মুআজ্জমাকে বেদনার দৃষ্টিতে দেখে দেখে উহার বিচ্ছেদে অশ্রু প্রবাহিত অবস্থায় অথবা কমপক্ষে কান্নার আকৃতি ধারণ করে মসজিদে হারম হতে নিয়মানুযায়ী বাম পা বাড়িয়ে বের হয়ে আসুন এবং বের হয়ে যাওয়ার দোয়া পড়ুন। ﴾১৮﴿ হায়েজ ও নেফাস বিশিষ্ট ইসলামী বোন মসজিদের দরজায় দাড়িয়ে বেদনার দৃষ্টিতে কেঁদে কেঁদে কা’বা শরীফের জেয়ারত করুন এবং ক্রন্দনরত অবস্থায় দোয়া করতে করতে ফিরে আসুন। ﴾১৯﴿ অতঃপর সামর্থ অনুযায়ী মক্কায়ে মুআজ্জমার ফকীরদের মধ্যে ধন সম্পদ বন্টন করুন। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১১৫১-১১৫৩ পৃষ্ঠা)
ইয়া ইলাহী! হার বরছ হজ্ব কি সাআদাত হো নসিব
বাদ হজ্ব, জা কর করেঁ দিদার দরবারে হাবিব।
صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب! صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد