হাজীদের জন্য মূল্যবান ১৬টি মাদানী ফুল
=========================
[আল্লাহ তাআলা ও রাসুল صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর সন্তুষ্টির প্রত্যাশী প্রিয় হাজী সাহেবগণ! আপনার হজ্বের সফর ও মদীনা শরীফের জেয়ারত খুব বেশী মোবারক হোক। সফরের প্রয়োজনীয় প্রস্থতি রওয়ানা হওয়ার ৩/৪ দিন আগে থেকে যথাযথ প্রস্থতি গ্রহণ করে নিন। আর কোন অভিজ্ঞ হাজী সাহেবের সাথেও পরামর্শ করে নিন।] নিজ দেশ হতে ফল কিংবা রান্নার ডেক্সী, মিষ্টি জাতীয় ইত্যাদি খাদ্য বস্থ নিয়ে যাওয়াতে হাজীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।] মক্কায়ে মোকাররমায় زَادَہَا للہُ شَرَفًا وَّ تَعۡظِیۡمًا আপনার আবাসিক বিশ্রামাগার থেকে মসজিদে হারামে পায়ে হেঁটে যেতে হবে। এই পথ এবং তাওয়াফ ও সাঈতে সব মিলিয়ে প্রায় ৭কি:মি: পথ হয়। এমনকি মীনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় অনেক দূর পথ পায়ে চলতে হবে। তাই হজ্বের অনেকদিন আগে থেকে প্রতিদিন পৌনে ১ ঘন্টা করে পায়ে হাঁটার অভ্যাস গড়ুন। (এই অভ্যাস যদি সব সময়ের জন্য করে নেয়া যায় তাহলে স্বাসে'র জন্য اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ খুবই উপকার হবে।) অন্যথায় হঠাৎ করে অনেক পথ পায়ে চলার কারণে হজ্বে আপনি খুবই পরীক্ষার সম্মুখীন হতে পারেন। ] কম খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন। সুফল না পেলে তখন বলবেন! বিশেষ করে হজ্বের ১ম থেকে ৫ম দিন পর্যন্ত খুব হালকা পাতলা খাবারের উপরে তুষ্ট থাকুন, যাতে বার বার ইস্তিঞ্জায় যাওয়ায় প্রয়োজন না পড়ে। বিশেষ করে মীনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে ইস্তিঞ্জাখানায় লম্বা লম্বা লাইন লেগে থাকে।] ইসলামী বোনেরা কাঁচের চুড়ি পরিধান করে তাওয়াফ করবেন না। ভিড়ের মধ্যে যদি তা ভেঙ্গে যায়, তবে আপনি নিজে এবং অন্যরাও আহত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।] ইসলামী বোনেরা উঁচু হিল বিশিষ্ট সেন্ডেল পরিধান করবেন না। এতে রাশতায় পায়ে চলার ক্ষেত্রে খুব সমস্যা হবে।
[ হেরম শরীফের আবাসিক বিল্ডিংয়ের টয়লেটে ‘ইংলিশ কমোড’হয়ে থাকে। নিজ দেশে তার ব্যবহার শিখে নিন, অন্যথায় কাপড় পবিত্র রাখা অত্যন্ত কষ্টকর হবে। ] কারো দেয়া “প্যাকেট” বা ব্যাগ খুলে চেক করা ব্যতিত কখনো সাথে নিবেন না। যদি চেক করার সময় কোন নিষিদ্ধ বস্থ পাওয়া যায়, তবে বিমান বন্দরে সমস্যায় পড়তে পারেন।] উড়োজাহাজে আপনার প্রয়োজনীয় ঔষধাদি সহ ডাক্তারী সনদ আপনার গলায় ঝুলানো ব্যাগের মধ্যে রাখুন। যাতে জরুরী অবস্থায় সহজে কাজে আসে।] জিহ্বা এবং চোখের কুফ্লে মদীনা লাগাবেন। যদি বিনা প্রয়োজনে কথা বলার অভ্যাস থাকে তাহলে গীবত, অপবাদ দেয়া এবং মানুষের মনে কষ্ট দেয়ার মত ইত্যাদি গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা খুবই কষ্টকর হবে। অনুরূপ ভাবে যদি চোখের হিফাযত এবং অধিকাংশ সময় দৃষ্টিকে নত রাখার তরকীব না হয়, তাহলে কুদৃষ্টি দেয়া থেকে বেঁচে থাকা খুবই কঠিন হবে। হেরম শরীফে একটি নেকী এক লক্ষ নেকীর বরাবর, আর একটি গুনাহ এক লক্ষ গুনাহের সমপরিমান। হেরম শরীফ বলতে শুধু মসজিদে হেরম উদ্দেশ্য নয় বরং সম্পূর্ণ হেরমের সীমানা অন্তর্ভুক্ত।] নামাযরত অবস্থায় মুহরিম ব্যক্তির সীনা অথবা পেটের কিছু অংশ অনাবৃত হয়ে যায়। এতে কোন প্রকারের অসুবিধা নেই। কেননা ইহরাম অবস্থায় এ ধরণের হওয়াটা অভ্যাসের পরিপনি' নয়, আর এ ব্যাপারে খেয়াল রাখাটা খুবই কঠিন।] কাফনের কাপড়কে জমজম কূপের পানিতে চুবিয়ে নেয়া খুবই উত্তম। অনুরূপভাবে মক্কা মদীনার বাতাসও একে চুমু দিবে, কিন্তু ঐ কাপড় নিংড়ানোর ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করাটা যুক্তিযুক্ত যে, এই পবিত্র পানির এক ফোটাও যেন গড়িয়ে নালা, নর্দমা ইত্যাদিতে না যায়। কোন চারা গাছ ইত্যাদির গোড়ায় ঢেলে দেয়া উচিত। (জমজমের পানি নিজ দেশেও ছিটাতে পারেন।) ] অনেক সময় তাওয়াফ ও সাঈ করার সময় হজ্বের কিতাবাদির পৃষ্ঠা ফ্লোরের নিচে পতিত অবস্থায় দৃষ্টিগোচর হয়, সম্ভবপর অবস্থায় তা উঠিয়ে নিন, কিন্তু তাওয়াফ কালে কা’বা শরীফের দিকে যেন পিঠ বা সীনা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। অবশ্য কারো পড়ে যাওয়া টাকা পয়সা অথবা থলে ইত্যাদি উঠাবেন না। (কয়েক বছর পূর্বে এক পাকিশতানি হাজী তাওয়াফ করার সময় সহানুভূতি দেখাতে দিয়ে অন্য এক হাজীর পড়ে যাওয়া টাকা তুলে নিলেন। টাকার মালিক ভূল বুঝে বসল, আর ঐ সহানুভূতিশীল হাজীকে পুলিশে দিয়ে দিল, আর এই বেচারাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য জেলখানায় ঢুকিয়ে দেয়া হল।)] পবিত্র হেজায ভূমিতে খালি পায়ে থাকা ভাল কিন্তু ঘর এবং মসজিদের গোসলখানায় ও রাশতার ময়লা ইত্যাদি জায়গায় চলার সময় সেন্ডেল পড়ে নিন। এভাবে ময়লা, ধূলাবালি যুক্ত পায়ে মসজিদাঈনে করিমাঈনে এমনকি কোন মসজিদেও প্রবেশ করবেন না। যদি পা যুগলকে পরিষ্কার রাখতে সক্ষম না হন, তবে সেন্ডেল ছাড়া খালি পায়ে থাকবেন না।] ব্যবহৃত সেন্ডেল পরিধান করে বেসিনে ওযু করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলস্বন করুন। কারণ নিচে অধিকাংশ সময় পানি ছড়িয়ে পড়ে, তাই যদি সেন্ডেল নাপাক হয়ে থাকে তবে পানির ছিটা লাফিয়ে আপনার পোষাক ইত্যাদিতে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। (এটা স্মরণে রাখবেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সেন্ডেল বা পানি অথবা কোন বস্থর ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে নাপাক হওয়ার জ্ঞান অর্জিত হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তা পাক।) ] মিনা শরীফের ইস্তিঞ্জাখানার নলের পানি সাধারণত খুব জোর গতিতে নির্গত হয়। তাই খুব আসতে আসতে খুলবেন যাতে আপনি ছিটা থেকে বাঁচতে পারেন।
প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র আপনার সাথে নিয়ে যান
=====================
মাদানী পাঞ্জে সূরা, নিজ পীর ও মুরশিদের শাজরা, ‘বাহারে শরীয়াত’নামক কিতাবের ৬ষ্ঠ খন্ড এবং ১২ কপি ‘রফিকুল হারামাঈন, নিজে পড়ুন এবং হাজীদের মাঝে বন্টন করে খুব বেশী সাওয়াব অর্জন করুন, কলম ও প্যাড, ডায়েরী, ক্বিবলা নুমা (কিবলা নির্ধারনী) ইহা হেজাযে মুকাদ্দাসে গিয়ে ক্রয় করবেন, মীনা, আরাফাত ইত্যাদি স্থানে ক্বিবলা নির্ধারনে অনেক সাহায্য করবে, কিতাব সমুহ, পাসপোর্ট, টিকেট, ট্রাভেল চেক, হেল্থ সার্টিফিকেট ইত্যাদি রাখার জন্য নিজ গলাতে ঝুলিয়ে রাখার জন্য একটি ছোট ব্যাগ, ইহরামের কাপড়গুলো ইহরামের লুঙ্গির উপরে বাঁধার জন্য পকেট বিশিষ্ট নাইলেন অথবা চামড়ার একটি বেল্ট, আতর, জায়-নামায, তাসবীহ, চার জোড়া কাপড়, গেঞ্জি, সুয়েটার ইত্যাদি পরিধানের প্রয়োজনীয় কাপড় (মৌসুম অনুযায়ী), (শরীর) আবৃত করার জন্য কম্বল কিংবা চাদর। বাতাস ভর্তি করা যায় এমন বালিশ, টুপি, ইমামা শরীফ ও সরবন্দ বিছানোর জন্য চাটাই কিংবা চাদর, আয়না, তৈল, চিরুনী, মিস্ওয়াক, সুরমা, সুঁই-সূতা, কাঁচি, সফরে সঙ্গে নেয়া সুন্নাত, নেইল কাটার, জিনিস পত্রে নাম, ঠিকানা লিখার জন্য মোটা মারকার কলম, তোয়ালে, রুমাল, ব্যবহার করে থাকলে চোখের চশমা ২টি, সাবান, মাজন, সেপটি রেজার, বদনা, গ্লাস, প্লেইট, পেয়ালা, দস্তর খানা, গলায় লটকনো পানির বোতল, চামচ, ছুরি, মাথার ব্যথা এবং সর্দি কাঁশি ইত্যাদির জন্য ট্যাবলেট, সাথে প্রয়োজনীয় ঔষধাদি, গরম কালে নিজের উপর পানি ছিটানোর জন্য স্প্রে। (মীনা ও আরাফাত শরীফে এর মূল্যায়ণ হবে), প্রয়োজন মত খাবার তৈরীর থালা।
মালপত্রের ব্যাগের জন্য ৫টি মাদানী ফুল
=============
﴾১﴿ হাতের জিনিসের জন্য মজবুত একটি হাত ব্যাগ। ﴾২﴿ কাউন্টারে মালামাল যাচাই ও পারাপার করানোর জন্য একটি বড় ব্যাগ নিন। (যাতে বড় মারকার কলম দ্বারা নাম, ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখে নিন। এমনকি কোন চিহ্ন লাগিয়ে নিন। যেমন: স (তারকা চিহ্ন।) আপনার ব্যাগে লোহার গোলাকৃতি ইত্যাদিতে রঙ্গিন কাপড়ের টুকরা অথবা ফিতার ছোট পট্টি দেখা যায় মত করে বেধেঁ দিন। ﴾৩﴿ ব্যাগে তালা লাগিয়ে নিন, কিন্তু ১টি চাবি ইহরামের বেল্টের পকেটে আর অপর ১টি হাত ব্যাগে রাখুন। অন্যথায় চাবি হারিয়ে যাওয়া অবস্থায় জেদ্দা কাষ্টমে “বড় বড় কাঁচি” দ্বারা কেটে ব্যাগ খুলতে হবে। এরকম হলে আপনি চিন্তায় পড়ে যাবেন। ﴾৪﴿ হাত ব্যাগের মধ্যেও নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি তথ্য সম্বলিত একটি ছোট কাগজের টুকরো ফেলে দিন। ﴾৫﴿ উভয় ট্রলি ব্যাগ যদি চাকা বিশিষ্ট হয়, তাহলে সহজতর হবে اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ।
হেলথ্ সার্টিফিকেট এর মাদানী ফুল
=================
সকল হাজী সাহেবগণ আইন অনুযায়ী সফরের সকল কাগজপত্র অনেক আগে থেকে প্রস্থত করে নিবেন, যেমন- “হেল্থ সার্টিফিকেট”(সুস্থতার সনদ) এটা আপনাকে হাজ্বী ক্যাম্পে মারান্তক জ্বর, জন্ডিস, এবং পোলিও ভ্যাকসিন ইত্যাদি রোগের টিকা দেয়ার পর প্রদান করা হবে। আর এতে কোন ঘাটতি হলে আপনাকে বিমানে আরোহন করা থেকে বাঁধা প্রদান করা যেতে পারে। নতুবা জিদ্দা শরীফের বিমান বন্দরেও আপনার বাঁধা আসতে পারে। ঞ প্রতিরক্ষা টিকা হজ্বে যাওয়ার ২/৪ দিন পূর্বে দেওয়াটা বিশেষ কোন উপকার সাধন করেনা। ১৫ দিন পূর্বে দেওয়াটা খুবই উপকারী। নতুবা বরকতময় সফরের তড়িঘড়িতে খুব মারান্তক বরং জীবন বিনাশী রোগের সম্ভাবনা রয়েছে’। ঞ সরকারীভাবে বাধ্য না করলেও নিউমোনিয়া ও হেপাটাইটিস রোগের টিকা দিয়ে যাওয়াটা খুবই উত্তম। এই ডাক্তারী ব্যবস্থাপনাকে বোঝা মনে করবেন না। এতে আপনারই কল্যাণ রয়েছে। ঞ অধিকাংশ ট্রাভেল এজেন্টরা অথবা হজ্বের ব্যবস্থাপকরা কোন প্রকারের ডাক্তারি ব্যবস্থাপনা ছাড়া ঘরে বসেই “হেলথ্ সার্টিফিকেট” ফরম দিয়ে দেয়। যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর হওয়ার সাথে সাথে এক প্রকারের ধোঁকা, হারাম কাজ এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মত কাজ। ঐ সকল ট্রাভেল এজেন্ট, ইচ্ছাকৃতভাবে ফরমে স্বাক্ষরকারী ডাক্তার এবং জেনে বুঝে ঐ মিথ্যা সার্টিফিকেট গ্রহণকারী হাজী (অথবা ওমরাকারী) সকলই গুনাহগার এবং জাহান্নামের আগুনের হকদার হবেন। যারা এ সমস্ত কাজ করেছেন, তারা সবাই সত্যিকার তাওবা করে নিন।
বিমানে হজ্ব পালণকারীরা কখন ইহরাম পরিধান করবে ?
================
বাংলাদেশ থেকে জিদ্দা শরীফ পর্যন্ত বিমানে প্রায় ছয় ঘন্টার সময়ের সফর (দুনিয়া মধ্যে যে কোন জায়গা থেকে সফর করে), আর বিমানে আরোহণ অবস্থায় মীকাতের ঠিকানা পাওয়া যায় না। তাই নিজ ঘর থেকে তৈরী হয়ে রওয়ানা হবেন। যদি মাকরুহ সময় না হয়, তাহলে ইহরামের নফল নামাজও নিজ ঘরে আদায় করে নিন, আর ইহরামের চাদরও নিজের ঘর থেকে পরিধান করে নিন। তবে ঘর থেকে ইহরামের নিয়্যত করবেন না। বিমানে নিয়্যত করে নিবেন। কেননা নিয়্যত করার পর لَبَّیۡکَ পাঠ করার সাথে সাথে আপনি ‘মুহরিম’ (অর্থাৎ ইহরামকারী) হয়ে যাবেন এবং বাধ্যবাধকতা শুরু হয়ে যাবে। হতে পারে কোন কারণে আরোহণে দেরী হয়ে যাবে। “মুহরিম” এয়ারপোর্টে সুগন্ধিময় ফুলের মালা ও পরিধান করতে পারবেন না। তাই বাংলাদেশ থেকে সফরকারীরা এরকম ও করতে পারেন যে, ইহরামের চাদর সমূহ পরিধান করতঃ অথবা সারাদিনের স্বাভাবিক পোষাকে এয়ারপোর্টে তাশরীফ নিয়ে আসবেন। এয়ারপোর্টেও গোসলখানা, ওজুখানা এবং জায়নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে ইহরামের তরকীব (ব্যবস্থা) করে নিন। তবে সহজ উপায় এই যে, যখন বিমান আকাশে উড়তে থাকবে তখনই নিয়্যত ও لَبَّیۡکَ এর তারকীব করুন। হ্যাঁ! যে জ্ঞান রাখে ও ইহরামের বাধ্যবাধকতা নিয়মানুবতির্তা সম্পাদন করতে পারবে সে যত তাড়াতাড়ি “মুহরিম” হয়ে যাবে তত তাড়াতাড়ি ইহরামের সাওয়াব পাওয়া শুরু হয়ে যাবে। (নিয়্যত ও মীকাতের বিশতারিত বর্ণনা সামনে আসবে)
বিমানে সুগন্ধিযুক্ত টিস্যু পেপার
==============
সাবধান! উড়োজাহাজে অধিকাংশ সময় সুগন্ধিভরা টিস্যু পেপারের ছোট প্যাকেট দিয়ে থাকে। ইহরাম পরিধানকারীরা ওটা কখনো খুলবেন না। যদি হাতে সুগন্ধির স্যাতস্যাতে ভাব বেশি লেগে যায় তবে দম ওয়াজিব হয়ে যাবে। কম লাগলে তবে সদকা করতে হবে। যদি সুগন্ধির ভেজা অংশ না লাগে শুধু হাত সুগন্ধিময় হয়ে যায়, তবে এমতাবস্থায় কিছু হবে না।
জিদ্দা শরীফ থেকে মক্কায়ে মুয়ায্যমা زَادَہَا للہُ شَرَفًا وَّ تَعۡظِیۡمًا
=============
জিদ্দা শরীফের বিমান বন্দরে পৌঁছে আপনার হাতে থাকা জিনিস পত্র সঙ্গে নিয়ে “লাব্বায়িক”পড়তে পড়তে খুবই নম্র অন্তরে বিমান থেকে নেমে আসবেন। কাষ্টমস অফিসের কাউন্টারে নিজের পাসপোর্ট ও হেল্থ সার্টিফিকেট চেক করাবেন। অতঃপর জিনিস পত্রের ষ্টক থেকে নিজের জিনিসপত্র চিহ্নিত করে পৃথক করে নিবেন। কাস্টমস ইত্যাদি থেকে অব্যহতি পেতে এবং বাসের যাত্রার ব্যবস্থা করতে প্রায় ৬/৮ ঘন্টা সময় লাগতে পারে। খুব ধৈর্য্য ও সাহসিকতার সাথে কাজ করে যাবেন। জেদ্দা শরীফের হজ্ব টারমিনাল থেকে মক্কায়ে মুকাররমার زَادَہَا للہُ شَرَفًا وَّ تَعۡظِیۡمًا দূরত্ব প্রায় ১/১.৫ ঘন্টায় শেষ হতে পারে। কিন্তু গাড়ির ভিড় এবং সরকারী নিয়ম কানুনের কঠোরতার কারণে অনেক ধরণের পেরেশানী সামনে আসতে পারে। বাস ইত্যাদির ও অপেক্ষা করতে হয়। প্রত্যেক অবস্থায় ধৈর্য্য ও সন্তুষ্টির প্রতীক হয়ে لَبَّیۡکَ (তলবিয়া) পড়তে থাকবেন। রাগের বশবর্তী হয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যাপারে এবং শোরগোল করার দ্বারা সমস্যার সমাধান হওয়ার পরিবর্তে উল্টো আরো বেশী সমস্যায় পড়া, ধৈর্য্যের সাওয়াব নষ্ট হওয়া এবং আল্লাহর পানাহ! মুসলমানকে কষ্ট দেয়া, গীবত, অপবাদ দেয়া, দোষ অন্বেষণ করা ও কুধারণা ইত্যাদি ইত্যাদি গুনাহের আপদে ফেঁসে যাওয়ার মত অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এক চুপ, শত সুখ। রওয়ানার তরকীব (ব্যবস্থা) হওয়ার পর জিনিস পত্র সহ নিজের মুয়াল্লিমের বাসের মধ্যে বসে লাব্বায়িকা পড়তে পড়তে মক্কা মুয়ায্যমা زَادَہَا للہُ شَرَفًا وَّ تَعۡظِیۡمًا দিকে রওয়ানা হয়ে যান।