প্রশ্ন (১) -নিকটের মাদ্রাসায় দান না করে অন্য জেলার মাদ্রাসায়      কুরবানির       পয়সা      দান     করলে     জায়েজ  কিনা?
উত্তর-      তা       জায়েজ      (ফাতাওয়ায়-আব্দুলহাই)     যদি আহলে    সুন্নাত এর   মাদ্রাসা হয়  তাহলে জায়েজ হবে। মাদ্রসা যদি ওহাবি দেওবন্দিদের হয় তাহলে কোরবানি নির্দেশ     অনুযায়ী     কোন    প্রকার     দান    দেয়া    জায়েজ হবেনা।

প্রশ্ন (২) -দানের পশু কুরবানি জায়েজ কিনা?
উত্তর -  জায়েজ (ফাতাওয়ায়-আব্দুল হাই)

প্রশ্ন     (৩)     -নিজের     পালিত     পশু     কুরবানি     জায়েজ  কিনা?
উত্তর-জায়েজ।  বরং যদি পালিত পশু  মোটা তাজা  হয় তাহলে উত্তম হবে (মসনাদে ইমাম আহমাদ)

প্রশ্ন (৪) -বেহেশতী জেওর   কিতাবে মৌলবি আশরাফ  আলি      থানুবি     সাহেব      লিখেছেন      পশুর     কান     এক তৃতীয়াংশ  কেটে   গেলে   অথবা  চোখের   জ্যোতিঃ  এক তৃতীয়াংশ      নষ্ট    হয়ে    গেলে    তার      কুরবানি     জায়েজ হবেনা। কিন্ত আমজাদ আলী আলাইহির রহমান বাহারে শরিয়াত    কিতাবে   তার     কুরবানি   জায়েজ    বলেছেন। কোন উক্তি টি সঠিক?
উত্তর-   বেহেশতি   জেওর   এর   মাশলা   টি   ভূল।   এক  তৃতীয়াংশ  নষ্ট হয়ে গেলে  তার  কুরবানি  জায়েজ হবে। তার   বেশি    নষ্ট    হলে   জায়েজ   হবেনা   (খোলাসা   তুল ফাতাওয়া ও ফাতাওয়া শামী, আলমগীরী)

প্রশ্ন  (৫) -  অনেক বেশি  মানুষ  বলে   থাকে যে  যাদের  কুরবানি   করার   সামর্থ্য     নেই    তারা    কুরবানির    দিনে কমপক্ষে  একটি   মোরগ   জবেহ   করলে  কুরবানি  হয়ে  যাবে। তা কি সঠিক?
উত্তর-যার   উপর    কুরবানি    ওয়াজিব     নয়    তার   জন্য  কুরবানির দিনে তে মোরগ  ও মুরগী  ইত্যাদি    কুরবানি নিয়েতে   জবেহ  করা  মাকরূহ।   কারণ   তা   অগ্নিপূজক দিগের প্রথা। (খোলাসা তুল ফাতাওয়া)

প্রশ্ন   (৬) -    কুরবানি   পয়সা সরাসরি ভাবে মসজিদ ও  মাদ্রাসার কাজে ব্যবহার করা যাবে কিনা?
উত্তর—কুরবানির   পয়সা   সমস্ত    প্রকার     ভালো   কাজে ব্যবহার     করা     জায়েজ।    কুরবানির     পয়সা     সরাসরি মসজিদ     ও    মাদ্রাসা    নির্মানের      জন্য     ব্যবহার    করা জায়েজ।  অবশ্য  যাকাত  ও  ফিতরার     পয়সা  সরাসরি মসজিদ    ও   মাদ্রাসাতে   দান   করা    জায়েজ   হবে   না। (বাহারে শরীয়াত ও ফাতাওয়ায় দামানে মোস্তাফা)

প্রশ্ন   (৭)  -  কোটি   কোটি   টাকার   মালিক   এই    প্রকার সাতজন মানুষ একটি গরু কুরবানি করলে জায়েজ হবে কিনা?
উত্তর- জায়েজ হবে (রদ্দুল মুহতার)

প্রশ্ন  (৮)  -   যদি   কোনো   ব্যক্তি    কুরবানি  মান্নত  করে  এবং  গরু   অথবা  ছাগল    নির্দিষ্ট   না   করে,   তাহলে   কি কুরবানি  করবে? এবং ঐ কুরবানির মাংস নিজে খেতে পারবে কিনা?
উত্তর—কমপক্ষে  একটি  ছাগল    কুরবানি  করতে  হবে। মান্নতের  কুরবানি  মাংস  নিজের  খাওয়া  জায়েজ  নয়।  সমস্ত মাংস সাদকা করতে হবে (আলমগিরী)

প্রশ্ন (৯) - যদি ছাগল কুরবানি করার মান্নত করে এবং গরু   কুরবানি  করে   দেয়,  তাহলে   মান্নত    আদায়   হবে কিনা?  যদি  মান্নতের   মাংস   খেয়ে  ফেলে   তাহলে   কি  করতে হবে?
উত্তর-ছাগলের   পরিবর্তে  গরু  কুরবানি  করলে  জায়েজ  হবে। যত টুকু মাংস  খেয়েছে তার মূল্য সাদকা করতে হবে (আলমগীরী)

প্রশ্ন (১০) -  কুরবানি মাংস বিক্রয় করা জায়েজ কিনা? মসজিদের  খতীব  বহু  মাংস  পেয়ে থাকেন। তার  জন্য তা বিক্রয় করা জায়েজ কিনা?
উত্তর- কুরবানির  মাংস বিক্রয় মূলত জায়েজ  নয়। চাই কুরবানি  দাতা  হোক  অথবা  মসজিদের  খতীব  হোক।  অবশ্য    উক্ত    মাংসের  পরিবর্তে  ব্যবহারিক  বস্তু  নিতে  পারে। (খোলাসাতুল ফাতাওয়া)

প্রশ্ন (১১) - অনেক স্থানে দানের মাংস একত্রিত করতঃ মহল্লায়   বিতরণ  করা হয়ে  থাকে। উক্ত  মাংস কুরবানি দাতার জন্য নেওয়া জায়েজ হবে কিনা?
উত্তর-   নিশ্চয়  জায়েজ  হবে।  কুরবানির  মাংস   বিতরণ করা মুস্তাহাব। ইচ্ছা করলে সমস্ত মাংস খাওয়া জায়েজ (আলমগিরী)

প্রশ্ন  (১২)   -  পোষণী  গরু   ছাগলের  কুরবানি   না  হবার কারণ কি?
উত্তর-   কুরবানির   জন্য   শর্ত    মালিক    হওয়া।   যেহেতু পালনকারী    পশুর  মালিক  নয়,  সেহেতু   তার  কুরবানি  জায়েজ হবেনা (রদ্দুল মুহতার)

প্রশ্ন (১৩)  -   যে  ব্যক্তির উপর  কুরবানি ওয়াজিব, যদি  তার    নিকট    হালাল      পয়সা     না     থাকে     তাহলে      কি করবে?
উত্তর-   কার   নিকট    হতে     পয়সা   ধার   নিয়ে   কুরবানি করবে     এবং     পরে    ঋণ      পরিশোধ     করবে    (কুতুবে  ফিকাহ)

প্রশ্ন (১৪)  - কোন মৃত ব্যক্তির নামে   অথবা  আউলিয়া  ও  আম্বিয়া  গণের  নামে  যে  কুরবানি  করা  হয়ে  থাকে,  কুরবানি    দাতার      জন্য    উক্ত    মাংস     খাওয়া    জায়েজ কিনা?
উত্তর- নিশ্চয় জায়েজ। অবশ্য মৃত ব্যক্তি  যদি কুরবানি করার   অসিয়ত  করে   যায়  তাহলে  তার  মাংস   খাওয়া  জায়েজ হবেনা। (আলামগিরী)

প্রশ্ন  (১৫)  -     নির্দোষ   পশু  ক্রয়  করার  পর  কুরবানির পূর্বে  যদি    দোষ  যুক্ত  হয়ে  যায়  তাহলে  তার  কুরবানি জায়েজ হবে কিনা?
উত্তর-ধনী  ব্যক্তির  জন্য  জায়েজ  নয়।  গরীব  মানুষের  জন্য জায়েজ।  অবশ্য গরীবের মান্নতের কুরবানি   হলে জায়েজ হবেনা (হিদায়া, রদ্দুল মুহাতার)

প্রশ্ন    (১৬) - অনেকে  বলে থাকে কুরবানির মাংস তিন  দিনের বেশি খাওয়া জায়েজ নয় তা কি ঠিক?
উত্তর-   তা    ঠিক   নয়।   তিন   মাস   ধরে    খেতে   পারে। অবশ্য   হুজুর  সাল্লালাহু   তায়ালা  আলাইহি  ওসাল্লালাম এই  প্রকার বলেছেন।  পরে তিনি  তা  বাতিল করেছেন  (মোসনাদে ইমাম আ'যম)।

প্রশ্ন (১৭) - যারা কুরবানির মাংস তৈরি করতে সাহায্য করে তাদের পারিশ্রমিক হিসেবে উক্ত মাংস প্রদান করা জায়েজ কিনা?
উত্তর-  পারিশ্রমিক   হিসেবে   গোশত,  চামড়া   ইত্যাদি  কিছু দেয়া জায়েজ হবে না (হিদাইয়া)

প্রশ্ন (১৮)  -  যদি কুরবানির   মাংস  চুরি হয়ে যায়   এবং পরে  চোরের  নিকট  হতে  মূল্য  আদায়  করলে   তা   কি করতে হবে?
উত্তর- সাদকা করে দেয়া জরুরী (আলামগীরি)

প্রশ্ন (১৯) - যদি কুরবানির দিনে পশু মারা যায় তাহলে কি করতে হবে?
উত্তর  -         ধনী  ব্যক্তির  জন্য  অন্য  পশু  কুরবানি   করা ওয়াজিব।  যদি পশু সংগ্রহ করা  সম্ভব  না হয়    তাহলে  কম পক্ষে  একটি  ছাগলের    মূল্য সাদকা  করতে হবে।  যদি  গরীব  মানুষের  পশু  মারা  যায়  তাহলে  অন্য  পশু  কুরবানি করা ওয়াজিব নয় (দুর্রে মুখতার) .

প্রশ্ন (২০)  -যদি পশু হারিয়ে  যায় অথবা চুরি হয়ে যায়  এবং  অন্য   পশু   ক্রয়  করার  পর  যদি  তা  পাওয়া   যায় তাহলে কি করতে হবে?
উত্তর-    ধনী    হলে    দুইটির   মধ্যে     যে    কোনো   একটি কুরবানি করলে হবে। যদি প্রথমটি কুরবানি করতে চায় এবং তার মূল্য দ্বিতীয়টির থেকে কম হয় তাতে কোনো দোষ হবেনা। যদি দ্বিতীয় টি কুরবানি করতে চায় এবং তার  মূল্য  প্রথমটির   অপেক্ষায়   কম   হয়,  তাহলে   যত টাকা  কম হবে ততটাকা সাদকা করতে হবে। গরীবের প্রতি    দুইটি     পশুর    কুরবানি    করা      ওয়াজিব      (রদ্দুল মুহতার)

প্রশ্ন (২১) -এক  ব্যক্তির প্রতি কুরবানি   ওয়াজিব ছিলো কিন্ত কোনো কারণে করা  হয়নি। সে    এই  বৎসর  তার কাজা করতে চাচ্ছে। তা জায়েজ হবে কিনা?
উত্তর- গত বৎসরের কুরবানি এই বৎসর জায়েজ নয়। একটি     ছাগলের    মূল্য    সাদকা    করতে     হবে     (রদ্দুল মুহতার)

প্রশ্ন  (২২) -একই  পশুতে   আক্বীকাহ ও  কুরবানি অংশ নেওয়া  জায়েজ হবে কি? তার মাংস কি প্রকারে বণ্টন  করতে হবে?
উত্তর-তা জায়েজ। কুরবানি ও আক্বীকাহ মাংস বন্টনের একই নিয়ম (রদ্দুল মুহতার)

প্রশ্ন  (২৩)    –  যদি  অংশীদারদের  মধ্যে  কারো  নিয়ত বিশুদ্ধ না হয়, তাহলে কি কারো কুরবানি হবে?
উত্তর-      এক      জনের    নিয়ত    খারাপ     থাকলে    কারো কুরবানি  হবে  না।  (রদ্দুল মুহতার) বর্তমানে  বহু মানুষ বিভিন্ন  নিয়তে  অংশ গ্রহণ  করে   থাকে। সেহেতু সম্ভব হলে একাই কুরবানি করা উচিৎ।

প্রশ্ন  (২৪)  -কুরবানির  জন্য  পশু  ক্রয়  করার  পর  যদি  বাচ্চা হয়ে যায় তাহলে কি করতে হবে?
উত্তর-  বাচ্চাসহ জবেহ   করে দিবে। যদি   বাচ্চা  বিক্রয় করে দেয় তাহলে তার মূল্য সাদকা করতে হবে।   যদি  জবেহ  ও   বিক্রয়  কিছুই  না  করে    এবং   কুরবানি   দিন গুলো  অতিক্রম  হয়ে  যায়,  তাহলে  ঐ  বাচ্চাটি  জীবিত  অবস্থায়  সাদকা  করে দিতে হবে। যদি  কিছুই  না  করে রেখে দেয় এবং পরের  বৎসর যদি তা কুরবানি করতে চায়  তাহলে  জায়েজ  হবেনা।  যদি   তা   কুরবানি   করে   দেয়  তাহলে  তার   মাংস সাদকা করে  দিতে হবে এবং আরো  একটি  পশু  কুরবানি  করতে  হবে  (আলমগিরী)  .

প্রশ্ন  (২৫)   -জবেহ  করার   পর  যদি  পেট  থেকে  বাচ্চা বের হয় তাহলে কুরবানি জায়েজ হবে  কিনা এবং তার মাংস খাওয়া চলবে কিনা?
উত্তর   -       কুরবানি  জায়েজ   হবে  এবং  তার   মাংস   ও খাওয়া জায়েজ হবে। এমন কি পেটের বাচ্চা টি জীবিত অবস্থায় বের হলে তাকে ও জবেহ করে খাওয়া হালাল। অবশ্য   মরা   বাচ্চাটির   মাংস   খাওয়া   হারাম   (বাহারে  শরীয়াত)

প্রশ্ন  (২৬)  -জবেহ  করার   পূর্বে   পশুর  চামড়া    বিক্রয় করা জায়েজ কিনা? তাতে কুরবানির কোনো ক্ষতি হবে কিনা?
উত্তর-কুরবানি   হয়ে   যাবে।   কিন্ত     জবেহ   করার   পূর্বে চামড়া বিক্রয়  করা নাজায়েজ।    চাই  কুরবানি চামড়া হোক  অথবা  অন্য  চামড়া  হোক  যেমন  পুকুরের  মাছ  পানিতে  থাকা  অবস্থায়  এবং  যে  কোনো  ফল  খোশার  মধ্যে থাকা অবস্থায় বিক্রয় না জায়েজ (হিদাইয়া)

প্রশ্ন  (২৭) -অনেক  স্থানে   মোল্লার পারিশ্রমিক  হিসেবে  কল্লা দিয়ে থাকে তা কি জায়েজ?
উত্তর-তা নাজায়েজ। পারিশ্রমিক হিসেবে মাথা ও মাংস কিছুই     দেয়া     যাবেনা।     পয়সা    দিতে     হবে।    অবশ্য কুরবানি ও আক্বীক্বাহ ছাড়া অন্য জবেহ এর ক্ষেত্রে ঐ গুলো দেয়া ও নেওয়া জায়েজ (বাহারে শরিয়াত)

প্রশ্ন   (২৮)   -অনেকেই  কলিজা   ইত্যাদি  নিজের  ভাগে রেখে  দেয়  এবং  তার  পরিবর্তে    নিজের  ভাগের  মাংস দিয়ে দেয়।  তা  কি  জায়েজ?  অনুরূপ অনেকেই  মাংস সম্পূর্ণ  তৈরি  হবার  পূর্বে  ২/৪  কিলো  নিয়ে  নেয়  এবং  পরে   তার   নিজের      ভাগ     হতে   দিয়ে   দেয়।   তা    কি   জায়েজ?
উত্তর-জায়েজ। তাতে  কুরবানির কোনো ক্ষতি হবেনা।  কারণ      কুরবানি    দাতার    জন্য    সমস্ত      মাংস    খাওয়া  জায়েজ। (খোলাসাতুল ফাতাওয়া ও হিদাইয়া)

প্রশ্ন (২৯) -অনেক স্থানে কুরবানীর সমস্ত পশু  একত্রিত করতঃ এক পশুর সামনে অন্য পশুকে জবেহ করা হয়। তাতে কোনো ক্ষতি হবে কিনা?
উত্তর--   পশুর     সামনে   ছুড়িতে   ধার    দেয়া   মাকরুহ। কারণ তাতে পশুর কষ্ট হয়ে থাকে। অতএব এক পশুর সম্মুখে অন্য পশুকে   জবেহ করলে  কুরবানি হয়ে যাবে  কিন্ত মাকরূহ হবে (দূর্রে মুখতার)

প্রশ্ন    (৩০)    -কুরবানির   পশুর   ভুড়ি   খাওয়া    জায়েজ  কিনা?
উত্তর-   ভূঁড়ি   খাওয়া মাকরূহে   তাহরিমী চাই কুরবানি পশুর  হোক অথবা অন্য  পশুর হোক (বাহারে শরিয়াত  ও আনওয়ারুল হাদীস)

প্রশ্ন   (৩১)  -স্ত্রীলোক  যদি   কুরবানির  পশু  জবেহ  করে তাহলে তা জায়েজ হবে কিনা?
উত্তর-স্ত্রীলোক    যদি      মুসলমান      হয়    এবং     কাফেরা, মোশরেকা   ও  ওহাবীয়া  না  হয়,  তাহলে   জায়েজ  হবে (আলামগিরী)

প্রশ্ন (৩২)   -যদি  কুরবানীর পশুর  মস্তক কেটে  আলাদা হয়ে যায় তাহলে কি হবে?
উত্তর-কুরবানি    হয়ে   যাবে।   কিন্ত     এই    প্রকার    মস্তক আলাদা করে ফেলা মাকরুহ। (হিদায়া)

প্রশ্ন    (৩৩)   -সাহেবে   নিসাব   ব্যক্তির   প্রতি     কি   প্রতি  বৎসর কুরবানি করা জরুরী?
উত্তর-হ্যাঁ।     প্রতি     বৎসর    কুরবানি     করা     ওয়াজিব।  অন্যের   নামে   কুরবানি   করতে   চাইলে   নিজের   নামে  কমপক্ষে    একাংশ    কুরবানি    করতে     হবে।    (      রদ্দুল মুহতার)।

প্রশ্ন  (৩৪)   -কুরবানি   দাতার    নখ,  চুল  কাটা   জায়েজ  আছে কিনা?
উত্তর-চাঁদ  ওঠার পর   হতে কুরবানি  করা পর্যন্ত কেবল  কুরবানি   দাতার    জন্য     নখ   চুল     না   কাটাই   মুস্তাহাব  (হিদাইয়া)

প্রশ্ন       (৩৫)       -কুরবানির       পশুকে       শোয়াবার          পর 'বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর' পাঠ করেছে। কিন্ত কোনো কারণে জবেহ না করে ঐ স্থলে অন্য পশু জবেহ করলে পশু হালাল হবে কিনা?
উত্তর-হালাল  হবে  না।  অবশ্য  অন্য  পশুর  জন্য  নতুন  ভাবে “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর” পাঠ করলে হালাল হবে (হিদাইয়া)

প্রশ্ন (৩৬) -যদি  কোনো ব্যক্তি   নিজস্ব পশুর  কুরবানির নিয়ত    করে     থাকে    অথবা    পশু     ক্রয়     করার      সময় কুরবানির  নিয়ত  ছিলোনা পরে নিয়ত  করেছে। এমতা বস্থায় তার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে কিনা?
উত্তর-    এপ্রকার    নিয়েতে    কুরবানি    ওয়াজিব    হবেনা  (আলমগিরী)

প্রশ্ন   (৩৭) -একই পরিবারে একাধিক  মানুষের   নিকট  যদি নেসাব পরিমান মাল থাকে তাহলে  কি সবার পক্ষ হতে কুরবানি করতে হবে?
উত্তর-যাদের     নিকট    নিসাব      পরিমাণ     মাল    থাকবে  তাদের     প্রত্যেকের    কুরবানি     করা     ওয়াজিব।    স্বামী  কুরবানি  করলে  স্ত্রীর   ওয়াজিব   আদায় হবেনা। অবশ্য মালিকে  নিসাব  ব্যক্তি   স্ত্রী   ও   বালেগ  পুত্রের   অনুমতি নিয়ে   কুরবানি   করলে   তাদের   ওয়াজিব   আদায়   হয়ে  যাবে (আলমগীরি)।

প্রশ্ন    (৩৮)   -আকাশ   মেঘাচ্ছন্ন    থাকার     কারণে    যদি ২৯তারিখে      চাঁদ     দেখা     সম্ভব     না     হয়     এবং      চাঁদ ২৯তারিখের   বলে যদি সন্দেহ হয়  তাহলে  কি প্রকারে কুরবানি করতে হবে?
উত্তর-এমতাবস্থায় ১২ই জিলহজ্বের পূর্বে কুরবানি করে ফেলতে    হবে।    যদি    ১২তারিখে    কুরবানি    করা    হয়  তাহলে        সমস্ত      মাংস       সাদকা      করে       দিতে       হবে (আলমগিরী)।

প্রশ্ন   (৩৯)   -যদি     ছাগলের    বয়স   এক    বৎসর    হতে  ২/৫দিন কম থাকে তাহলে তার  কুরবানি  জায়েজ হবে কিনা?
উত্তর- ছাগল যতই মোটা তাজা হোক না কেনো বৎসর পূর্ণ হতে ১দিন কম থাকলেও কুরবানি জায়েজ হবে না (দুর্রে মুখতার)

প্রশ্ন  (৪০) -ছাগলের বাচ্চা যদি কুকুরের দুধ পান করে থাকে তাহলে তার কুরবানি জায়েজ হবে কিনা?
উত্তর-  কুরবানি  জায়েজ  হবে।  যদি   দীর্ঘদিন   কুকুরের দুধপান   করে     থাকে    তাহলে   কিছুদিন   বেঁধে   রাখতে হবে।

প্রশ্ন (৪১) -পাঁঠা কুরবানি জায়েজ কিনা?
উত্তর-পাঁঠাকে  বহুদিন  বেঁধে  রাখতে    হবে  যাতে   তার দেহের গন্ধ দুরিভূত হয়ে যায় এবং তার মাংসে কোনো প্রকার     গন্ধ  না    থাকে  তাহলে   তার  কুরবানি  জায়েজ  হবে। (বাহারে শরীয়াত)

প্রশ্ন   (৪২)  -যে  ছাগলটির মূল্য ১০০০ টাকা যদি   ওই  ছাগল টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতঃ ২০০০০ টাকায় ক্রয় করে কুরবানি করা হয় তাহলে সওয়াব পাবে কিনা?
উত্তর-  সওয়াব   বেশি পাবে না।   বরং  আল্লাহর ওয়াস্তে না  হয়ে  যদি  সুনাম  অর্জনের জন্য   হয়  তাহলে  মূলতঃ কুরবানি হবে না।

প্রশ্ন (৪৩) -যদি আটজন অথবা ৯জন মানুষ সাতটি গরু সমান    অংশে    কুরবানি    করে    তাহলে      জায়েজ    হবে কিনা?
উত্তর-এপ্রকার    কুরবানি    জায়েজ    হবেনা    কারণ    গরু  ৭অংশের বেশি হয়  বা যখন ৮ অথবা ৯ব্যক্তি ৭টি গরু কুরবানি   করবে,  তখন  প্রতিটি  গরু    আট  অংশ  অথবা ৯অংশ হয়ে যাবে। যা না জায়েজ। (রদ্দুল মুহতার)

প্রশ্ন (৪৪)  -যদি গ্রামের মানুষ   ঈদের  নামাজের  আগে কুরবানি   করে    ফেলে   তাহলে    কুরবানি   জায়েজ   হবে কিনা?
উত্তর-জায়েজ     হবে।    অবশ্য     শহরের    মানুষ     ঈদের নামাজের    পূর্বে    কুরবানি    করলে    জায়েজ    হবে    না।  (আলমগিরী)

প্রশ্ন (৪৫) -যদি  কোনো কারণে   ১০ঐ জিলহজ্ব  ঈদের নামাজ না হয় তাহলে কুরবানি কখন করবে?
উত্তর-      ১০তারিখে     কুরবানি      করতে      ইচ্ছা      করলে জাওয়ালের আগে জায়েজ হবেনা।  ১১ ও   ১২ তারিখে কুরবানি  করলে  ঈদের  নামাজের   আগে   জায়েজ   হবে (দুর্রে মুখতার)

প্রশ্ন (৪৬)  -কুরবানি   পশু  জবেহ  করার পর  হাত তুলে দোয়া করা জায়েজ কিনা?
উত্তর-- জায়েজ।

প্রশ্ন   (৪৭)  -একটি ছাগলের মূল্য  ১০০০টাকা। একটি গরুর মূল্য ১০০০টাকা  এমতাবস্থায়  কোনটির কুরবানি উত্তম হবে?
উত্তর-গরু   কুরবানি     করা     উত্তম   হবে।    কারণ   ছাগল অপেক্ষা   গরুর   মাংস   বেশি   পাওয়া   যাবে   এবং   সাত  জনের নাম কুরবানি করা যাবে। (রদ্দুল মুহতার)

প্রশ্ন   (৪৮)  -উঁট,  গরু,   ও  মহিষের  মূল্য  ও  মাংস  যদি সমান   সমান   হয়   তাহলে   কোন   টির   কুরবানি   উত্তম  হবে?
উত্তর—যেহেতু উটের চামড়া বিক্রয় হয়না, সেহেতু তা অপেক্ষা গরু অথবা মহিষের মধ্যে যার মাংস পছন্দনীয় হবে   এবং   চামড়ার   মূল্য     বেশি    পাওয়া    যাবে   তার কুরবানি উত্তম হবে।

প্রশ্ন   (৪৯)  -যে  পশুর  জন্ম  হতে শিং  নেই অথবা  কান নেই   অথবা  একটি  কান  নেই।  তার   কুরবানি  জায়েজ কিনা?
উত্তর- জন্ম হতে শিং না থাকলে কুরবানি জায়েজ হবে। কিন্ত জন্ম হতে কান না   থাকলে  অথবা একটি   কান না থাকলে   কুরবানি  জায়েজ  হবেনা।    অবশ্য  কান   ছোট  থাকলে জায়েজ হবে। (আলমগিরী)

প্রশ্ন  (৫০)   -  পশুর  দাঁত  না   থাকলে  কুরবানি  জায়েজ হবে কিনা? অনুরূপ যদি তার থান কেটে অথবা শুকিয়ে যায় তাহলে কি হবে?
উত্তর-তার  কুরবানি  না  জায়েজ।  ছাগলের একটি  থান শুকিয়ে যাওয়া  না  জায়েজ    হবার জন্য যথেষ্ট।   গরু ও  মহিষের   একটি   থান   শুকিয়ে   গেলে  কুরবানি  জায়েজ  হবে (দুর্রে মুখতার)

প্রশ্ন (৫১) - হিজড়া পশুর কুরবানি জায়েজ কিনা?
উত্তর-নাজায়েজ। (দুররেমুখতার)

প্রশ্ন (৫২) - যদি গরীব মানুষ কুরবানি করে এবং সমস্ত মাংস নিজের জন্য রেখে দেয় তাহলে কুরবানি  জায়েজ হবে কিনা?
উত্তর-জায়েজ   হবে।  বরং  গরীবের     জন্য   সমস্ত  মাংস রেখে দেয়া উত্তম (আলমগিরী)।

প্রশ্ন     (৫৩)  -   কুরবানি  মাংস  অমুসলিমদের    কে  দান করলে কুরবানির কোনো ক্ষতি হবে কিনা?
উত্তর-   কুরবানি    হয়ে   যাবে।      কিন্ত   অমুসলিমদেরকে দেয়া  জায়েজ  হবেনা।    কারণ  এখানকার  অমুসলিমরা হারবী কাফের (শামী ও বাহারে শরীয়াত)

প্রশ্ন  (৫৪)  -  যদি   দুই   ব্যক্তি   অস্ত্র     ধরে   জবেহ  করে  তাহলে    কি    দুই    জনের    প্রতি   বিসমিল্লাহ   পাঠ   করা   ওয়াজিব হবে?
উত্তর-দুই  জনের  প্রতি  বিসমিল্লাহ্  পাঠ  করা  ওয়াজিব  হবে।   যদি   একজন     বিসমিল্লাহ্   ত্যাগ    করে    তাহলে  কুরবানি  তো  দুরের  কথা  পশু  হালাল  হবে  না।  (দুর্রে  মুখতার)

প্রশ্ন  (৫৫)  -  অনেকেই  জবেহ  করা  দেখতে  পারেনা।  এমতাবস্থায় যদি জবেহ করার সময় উপস্থিত  না থাকে তাহলে কুরবানির কোনো ক্ষতি হবে কিনা?
উত্তর-কোনো ক্ষতি  হবেনা। কিন্ত সম্ভব  হলে নিজ হস্তে জবেহ   করা   উত্তম।    কম   পক্ষে    জবেহ    করার    সময় উপস্থিত থাকা উচিৎ (হিদাইয়া)।

প্রশ্ন   (৫৬)    -   কোনো   দোয়া   পাঠ     না   করলে   কেবল বিসমিল্লাহে   আল্লাহু  আকবর  পাঠ  করে   জবেহ  করলে কুরবানি হবে কিনা?
উত্তর-কুরবানির      কোনো   ক্ষতি   হবেনা।   অবশ্য     যার নামে  কুরবানি  হবে  তার  নাম  জবেহ  করার  পর    এই  প্রকারে বলবে--
হে  আল্লাহ্ আমার অথবা অমুকের কুরবানি  কবুল করে নাও         যেমন        তোমার         দোস্ত        হজরত           ইব্রাহীম আলাইহিসালাম  ও   তোমার   হাবীব    হজরত  মোহাম্মদ সাল্লালাহু    তায়ালা    আলাইহি     ওসাল্লালামের   কুরবানি কবুল করেছো।

প্রশ্ন (৫৭) - আক্বীক্বার চামড়ার হুকুম কি?
উত্তর-  কুরবানি  ও  আক্বীক্বার   চামড়ার   একই  হুকুম। নিজের    কাজে     ব্যবহার    করা   জায়েজ।    কিন্ত   বিক্রয়  করলে  মসজিদ,   মাদ্রাসা,  অথবা  অন্য  কোনো   ভালো কাজে দান করতে হবে। (বাহারে শরীয়াত)।

Top