ক ওকুফে আরাফাত প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর
========
প্রশ্ন: ১০ তারিখের রাতেও কি ওকুফে আরাফাত হয়?
উত্তর: জ্বি হ্যাঁ! কারণ ওকুফের সময় জুলহিজ্জার ৯ তারিখ যোহরের প্রথম ওয়াক্ত হতে শুরু করে ১০ তারিখের ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ২২৯ পৃষ্ঠা)
মুজদালিফা প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
========
প্রশ্ন: যার কোন প্রতিবন্ধকতা নেই তাকে মুযদালিফা থেকে মীনার উদ্দেশ্যে কখন বের হওয়া উচিৎ?
উত্তর: সূর্য উদয়ের শুধু এতটুকু সময় অবশিষ্ট থাকে, যাতে (সুন্নাত অনুযায়ী ক্বিরাতের সাথে) দু’রাকাত নামায আদায় করা যেতে পারে, সেই সময় চলা শুরু করবে। যদি সূর্য্য উদিত হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করে, তাহলে সুন্নাতে মুআক্কাদাহ বাদ পড়ে গেল। এমন করা “মন্দ কাজ” কিন্তু দম ইত্যাদি ওয়াজিব নয়। হ্যাঁ! যদি মীনা শরীফের দিকে চলা শুরু করল কিন্তু ভীড় ইত্যাদির কারণে মুযদালিফাতেই সূর্য উদিত হয়ে গেল তখন সুন্নাত ত্যাগকারী বলা যাবে না।
রমী প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর
========
প্রশ্ন: যদি কোন দিন অর্ধেকের চেয়েও বেশী কংকর নিক্ষেপ করল, যেমন: এগার দিবসে তিনটি শয়তানকে ২১ টি কংকর মারার কথা ছিল কিন্তু ১১টি কংকর নিক্ষেপ করল, তাহলে তার কি শাসিন্ত?
উত্তর: প্রতিটি কংকরের বিনিময়ে একটি একটি সদ্কা দিতে হবে। সদরুশ শারীয়াহ رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: এক দিনও কংকর মারেনি অথবা এক দিন সম্পূর্ণ করেছে কিংবা মারল অথবা এগার দিবস ইত্যাদিতে ১০টি কংকর পর্যন্ত মারল কিংবা কোন দিন সম্পূর্ণ অথবা অধিকাংশ কংকর অন্যান্য দিনে মারল তবে এই সমস্ত অবস্থাতে দম ওয়াজিব, আর কোন দিন অর্ধেক থেকে কম ছেড়ে দিল, যেমন: দশম দিবসে চারটি কংকর মারল। তিনটি ছেড়ে দিল। অথবা অন্যান্য দিনে ১১টি মারল ১০টি ছেড়ে দিল, কিংবা অন্যান্য দিনে করল, তবে প্রতিটি কংকরের বিনিময়ে একটা সদকা দিতে হবে, আর যদি সদ্কার মূল্য দমের সমান হয়ে যায়, তবে কিছু কম করে দেবে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ১১৭৮ পৃষ্ঠা)
কোরবানী প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর
========
প্রশ্ন: দশম তারিখের রমী করার পরে যদি জিদ্দা শরীফে গিয়ে তামাত্তুর কোরবানী এবং হলক করতে চায় তাহলে পারবে কিনা?
উত্তর: করতে পারবে না। কেননা জিদ্দা শরীফ হেরমের সীমানার বাইরে। যদি করে তবে একটি কোরবানীর, আর দ্বিতীয়টা হলক্বের (মাথা মুন্ডানোর) এ রকম দু’টি দম দেয়া ওয়াজিব হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: তামাত্তু ও কিরানকারী হাজী যদি রমী করে নেয়ার পূর্বে কোরবানী করে দেয়, কিংবা কোরবানীর আগে হলক করে। তখন তার জন্য কোন কাফ্ফারা আছে কি?
উত্তর: উভয় অবস্থায় দম দিতে হবে।
প্রশ্ন: যদি ইফরাদ হজ্বকারী কোরবানীর আগে হলক (মাথা মুন্ডায়) করে তাহলে কোন শাসিন্ত আছে কিনা?
উত্তর: নেই। কেননা মুফরিদ হাজীর উপর কোরবানী ওয়াজিব নয়। তার জন্য ইহা মুশতাহাব। (প্রাগুক্ত, ১১৪০ পৃষ্ঠা) যদি সে কোরবানী করতে চায়, তখন তার জন্য উত্তম হল, প্রথম হলক করবে তারপর কোরবানী করবে।
মাথা মুন্ডানো ও চুল ছোট করার প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর
========
প্রশ্ন: যদি হাজী সাহেব দ্বাদশ দিবসের পরে হারাম থেকে বের হয়ে মাথা মুন্ডাইয়া নিল, তখন তার শাসিন্ত কি?
উত্তর: দুটি দম দিবে। একটি হল হারমের বাইরে গিয়ে হলক করার জন্য, আর অন্যটি হলক দ্বাদশ দিবসের পরে হওয়ায় জন্য। (রদ্দুল মুখতার, ৩য় খন্ড, ৬৬৬ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন: যদি ওমরার হলক (মাথা মুন্ডানো) হারমের বাইরে করতে চায়, তখন করে নিতে পারবে কিনা?
উত্তর: করতে পারবে না। যদি করে নেয়া হয়, দম ওয়াজিব হবে। তবে তার জন্য কোন সময় নির্দিষ্ট নেই। (দুররে মুখতার ও রদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৬৬৬ পৃষ্ঠা)
প্রশ্ন: যারা জেদ্দা শরীফ ইত্যাদিতে কাজ করে তাদেরকেও কি প্রত্যেকবার ওমরার মধ্যে মাথার চুল মুন্ডাতে হবে?
উত্তর: জ্বি হ্যাঁ! না হলে ইহরামের বাধ্যবাধকতা শেষ হবে না।
প্রশ্ন: যে মহিলার চুল ছোট (যেভাবে আজকাল ফ্যাশন হিসেবে চুল রাখা হয়) ওমরা করার আগ্রহ আছে কিন্তু বার বার চুল ছোট করলে মাথার চুল শেষ হয়ে গেল অর্থাৎ আঙ্গুলের এক তৃতীয়াংশ বা এক দাগ থেকে কম বাকি থাকল। এখন যদি ওমরা করে তবে চুল কমানো সম্ভব নয় এ অবস্থায় ক্ষমা পাবে কিন?
উত্তর: যতক্ষণ মাথার চুল অবশিষ্ট থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত মহিলার জন্য প্রত্যেকবার চুল কমানো ওয়াজিব। হুজুর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন: “মহিলাদের জন্য সম্পূর্ণ মাথা মুন্ডানো নয় বরং চুল কমানো ওয়াজিব”। (আবু দাউদ, ২য় খন্ড, ২৯৫ পৃষ্ঠা, হাদীস: ১৯৮৪)
এমন মহিলা যার চুল আঙ্গুলের এক তৃতীয়াংশ বা এক দাগ থেকে কম রয়ে গেল তার জন্য এখন কমাতে হবে না। কেননা কমানো সম্ভব নয় এবং তার জন্য সম্পূর্ণ মাথা মুন্ডানো নিষেধ। এমন অবস্থায় যদি হজ্ব করতে হয়, তবে উত্তম হল আয়্যামে নহর (অর্থাৎ ১২ই জিলহজ্জ এর সূর্য্য অস্ত যাওয়ার পর) এর শেষে ইহরাম থেকে বের হয়ে আসবে, আর যদি আয়্যামে নহর এর শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করেনি, তবে তার জন্য কোন জিনিস আবশ্যক হবে না।