অপেক্ষা....! অপেক্ষা....!
============
সবুজ   সবুজ  গম্বুজ  এবং    হুজরায়ে  মাকছুরা    (যেখানে ছরকারে  মদীনা,  হুযুর  صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  এর   নূরানী  রওজা  রয়েছে)   এর  উপর   দৃষ্টিপাত   করা সাওয়াবের কাজ। বেশী বেশী সময় মসজিদে নববীতে      عَلٰی صَاحِبِہَا الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام অতিবাহিত করার চেষ্টা করুন। মসজিদ  শরীফে বসে দরূদ ও   সালাম  পড়তে পড়তে  পবিত্র  হুজরার   উপর   যতটুকু সম্ভব বিশ্বাসের দৃষ্টি  জমিয়ে রাখুন এবং এ সুন্দর কল্পনার  মধ্যে ডুবে যান  যে, অতিসত্ত্বর আমাদের প্রিয় প্রিয় আক্বা   صَلَّی اللہُ تَعَالٰی     عَلَیْہِ    وَاٰلِہٖ    وَسَلَّم    হুজরা     শরীফ    হতে    বাহিরে তাশরীফ  নিয়ে  আসবেন।  আক্বায়ে  নামদার,  মদীনার  তাজেদার, মাহবুবে  গাফ্‌ফার صَلَّی   اللہُ   تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم   এর    ভালবাসা,    বিরহ,   বিচ্ছেদ       ও   অপেক্ষায় নিজের অশ্রুমালাকে প্রবাহিত হতে দিন।

কিয়া খবর আজ হি দীদার কা আরমা নিকলে
আপনি আখোঁ কো আকীদাত ছে বিছায়ে রাখিয়ে।

এক মেমন হাজীর দীদার হয়ে গেল
============
সগে মদীনাকে (লিখক) হিজরী ১৪০০ সালের মদীনার সফরে,  মদীনায়ে  পাকে   করাচীর  একজন যুবক  হাজী বলেছেন যে, আমি মসজিদে নববী عَلٰی صَاحِبِہَا الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام  এর   মধ্যে   রহমতে   আলম,   নূরে   মুজাস্‌সম, রাসুলে   দোআলম   صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  এর ‘হুজরায়ে মাকছুরা’ এর পিছনে পবিত্র পিষ্ঠ মোবারকের পাশে   সবুজ   জালি  সমূহের  নিকট   বসাবস্থায়  ছিলাম। বাস্তব জাগ্রত অবস্থায় আমি   দেখলাম  যে,  হঠাৎ সবুজ সবুজ    জালি   সমূহের   অন্তরায়    দূর   হয়ে       গেল   এবং তাজেদারে মদীনা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم হুজরা শরীফ   হতে   বাহিরে    তাশরীফ   নিয়ে   আসলেন    এবং  আমাকে  ইরশাদ  করলেন:  তুমি  কি  চাও  চেয়ে  নাও?  আমি   নূরের  তাজালস্নীতে  এমনভাবে    হারিয়ে  গেলাম যে, কোন কিছু বলার  সাহসও     ছিল না।  আহ!  আমার  আক্বা  صَلَّی   اللہُ تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ   وَسَلَّم দীদার দান করে আমাকে অস্থির বানিয়ে নিজের পবিত্র হুজরায় তাশরীফ নিয়ে গেলেন।

শরবতে দীদনে এক আগ লাগায়ি দিল মে, 
তাপিশে দিল কো বাড়ায়া হে বুজানে না দিয়া।
আব কাহা জায়ে গা নক্‌শা তেরা মেরে দিল ছে,
তেহ মে রাখা হে ইছে দিল নে গুমানে না দিয়া।

গলি সমূহে থু থু ফেলবেন না
============
মক্কা  মদীনার   গলি  সমূহে  থু   থু  ফেলবেন  না।  নাকও পরিস্কার  করবেন না।  আপনি  তো জানেন না যে,  এই গলি  সমূহ  দিয়ে   আমাদের   প্রিয়  আক্বা  صَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم পথ চলেছেন!

আও পায়ে নজর হুশ মে আ, কুয়ে নবী হে,

আঁখো ছে ভি চলনা তু ইহা বে আদবী হে।

জান্নাতুল বাক্বী
=========
জান্নাতুল  বাক্বী শরীফ এবং জান্নাতুল  মা’আল্লাহ  (মক্কা মুকাররমা)  উভয়  সম্মানিত  কবরস্থানের   সমাধি   গুলো এবং মাজার সমূহকে শহীদ করে দেয়া হয়েছে। হাজার হাজার  সাহাবায়ে  কিরাম عَلَیۡہِمُ الرِّضۡوَان এবং  অসংখ্য  আহলে   বায়তে   আতহার   عَلَیۡہِمُ   الرِّضۡوَان,   বড়   বড়  আউলিয়ায়ে  কিরাম   رَحِمَہُمُ  اللہُ   تَعَالٰی   ও  সত্যিকারের  আশিকানে রাসুলদের মাজার সমূহের চিহ্ন সহ নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে। আপনি যদি ভিতরে প্রবেশ করেন, তাহলে   আপনার   পা  (আল্লাহর  পানাহ)  কোন  সাহাবী  অথবা   কোন   ওলির   মাজারের  উপর   পড়তে    পারে! শরয়ী     মাসআলা     হলো    যে,    সাধারণ    মুসলমানদের কবরের   উপরও     পা   রাখা    হারাম।    “রদ্দুল    মুহতার” কিতাবে  রয়েছে, (কবরস্থানে কবরকে   ধ্বংস  করে) যে রাশতা   তৈরী   করা     হয়েছে    উহার     উপর    দিয়ে   চলা হারাম। (রদ্দুল মুহতার, ১ম খন্ড, ৬১২ পৃষ্ঠা) বরং যদি নতুন  রাশতার   ব্যাপারে  সন্দেহও হয় (যে এই রাশতা কবর সমূহ ধ্বংস করে    তৈরী করা হয়েছে) তাহলে  ঐ  রাশতা দিয়ে চলা না-জায়িয ও গুনাহ। (দুররে মুখতার, ৩য় খন্ড, ১৮৩ পৃষ্ঠা)

তাই   মাদানী   অনুরোধ    হচ্ছে   যে,    বাইরে   দাঁড়িয়েই  সালাম   পেশ  করুন,  আর  তাও   জান্নাতুল  বাক্বী  মেইন দরজায় নয় বরং তার চার দেয়ালের বাইরে এমনভাবে দাঁড়াবেন  যেখানে দাঁড়ালে   ক্বিবলার  দিকে  আপনার পিঠ    হবে    এবং     জান্নাতুল      বাক্বীতে      দাফনকৃতদের চেহারা আপনার দিকে হবে, অতঃপর এ নিয়মে

বাক্বীবাসীদেরকে সালাম পেশ করুন:

اَلسَّلَامُ عَلَیْکُمْ  دَارَ  قَوْمٍ مُّؤْمِنِیْنَ فَاِنَّآ   اِنْ شَآءَ  اللہُ بِکُمْ لَاحِقُوْنَ ط اَللّٰھُمَّ اغْفِرْ لِاَھْلِ الْبَقِیْعِ الْغَرْقَدِط اَللّٰھُمَّ اغْفِرْلَنَا وَلَھُمْ ط

অনুবাদ:           হে            মুমিনদের            বসিন্ত            (এলাকায়) বসবাসকারীগণ! আপনাদের উপর সালাম! আমরাও اِنۡ شَآءَ اللہ    عَزَّوَجَلّ আপনাদের সাথে এসে মিলিত   হব।  হে আল্লাহ! বাক্বীর কবর বাসীদের ক্ষমা করে দাও। হে আল্লাহ!     আমাদের    কে    ও     তাদেরকেও    ক্ষমা    করে দাও।

অন্তরের উপর খঞ্জর পড়ে যায়
============
আহ!     এমন    একটি   সময়   ছিল   যে,    যখন    হেজাজে  মুকাদ্দাসের   মধ্যে   আশিকদের    খিদমতের    যুগ   ছিল, আর ঐ সময়ের খতীব ও ইমামগণও আশিকানে রাসুল হয়ে    থাকতেন।   জুমার  খুতবা     দেওয়ার  সময়  খতীব সাহেব  মসজিদে  নববী  শরীফের  عَلٰی  صَاحِبِہَا  الصَّلٰوۃُ  وَالسَّلَام   রওজায়ে    আনোয়ারের   দিকে    হাতে   ইশারা  করে   যখন  বলতেনاَلصَّلٰوۃُ  وَالسَّلَامُ   عَلٰی     ہٰذَا  النَّبِیِّ  ط (অর্থাৎ  এই   সম্মানিত  নবী  صَلَّی    اللہُ  تَعَالٰی   عَلَیْہِ     وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর   উপর দরূদ ও   সালাম   বর্ষিত  হোক), তখন হাজার হাজার  নবীর আশিকদের    অন্তরের  উপর খঞ্জর পড়ে যেত, আর তারা নিজে নিজে ঐ সময়ে অঝোড় নয়নে কাঁদতে দেখা যেত।

বিদায়ী হাজেরী
========
যখন   মদীনা  মুনাওয়ারা  হতে  বিদায়   নেওয়ার   কঠিন  সময় ঘনিয়ে আসে তখন কান্না করতে করতে যদি ইহা সম্ভব     না    হয়,     তাহলে    কান্নার     মত     চেহারা     করে  ‘মুয়াজাহা    শরীফে’  উপস্থিত   হোন  এবং  কেঁদে    কেঁদে সালাম   পেশ   করুন   এবং   গভীর   বেদনা   ভরা   হৃদয়ে  ফুফিয়ে ফুফিয়ে এভাবে আরজ করুন:

اَلْوَدَاعُ یَارَسُوْلَ اللہ ط اَلْوَدَاعُ یَارَسُوْلَ اللہ ط اَلْوَدَاعُ یَارَسُوْلَ اللہ ط  اَلْفِرَاقُ  یَارَسُوْلَ اللہِ ط اَلْفِرَاقُ یَارَسُوْلَ اللہ ط اَلْفِرَاقُ یَارَسُوْلَ اللہ ط اَلْفِـرَاقُ یَاحَبِیْبَ اللہ ط اَلْفِرَاقُ یَا نَبِیَّ اللہط اَلْاَمَانُ یَاحَبِیْبَ اللہ ط لَا جَعَلَہُ اللہُ تَعَالٰی اٰخِرَ الْعَھْدِ مِنْکَ وَلَامِنْ     زِیَارَتِکَ     وَلَامِنَ      الْوُقُوْفِ      بَیْنَ      یَدَیْکَ     اِلَّا      مِنْ خَیْرٍوَّعَافِیَۃٍ   وَّصِحَّۃٍ  وَّسَلَامَۃٍ  اِنْ عِشْتُ اِنْ شَآءَ  اللہُ      تَعَالٰی جِئْتُکَ وَاِنْ  مِّتُّ فَاَوْدَعْتُ عِنْدَ کَ شَھَادَتِیْ وَاَمَانَتِیْ وَعَھْدِیْ وَمِیْثَاقِیْ مِنْ یَّوْمِنَا ھٰذَا اِلٰی  یَوْمِ  الْقَیٰمَۃِ وَھِیَ شَھَادَۃُ اَنْ لَّاۤ اِلٰہَ اِلَّا اللہُ وَحَدَہٗ  لَاشَرِیْکَ  لَہٗ  وَ اَشْھَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا   عَبْدُہٗ   وَ رَسُـوْلُہٗ ط ﴿سُـبْحٰـنَ رَبِّکَ   رَبِّ الْعِزَّۃِ   عَمَّا یَصِفُوْنَ وَط سَلٰمٌ عَلَی الْمُـرْسَلِیْنَ ط وَ الْـحَمْدُ لِلہِ رَبِّ  الْعٰلَمِیْنَ ط﴾ اٰمِیْن  اٰمِیْن    اٰمِیْن  یَارَبَّ  الْعٰلَمِیْن ط بِحَقِّ طٰہٰ  وَ یٰسٓ ۔

বিদায় তাজেদারে মদীনা
============
আহ!   আব   ওয়াক্তে   রুখসত    হে    আয়া,      আহ!     আব ওয়াক্তে  রুখসত  হে  আয়া,   সদ    মায়ে  হিজর     কেইসে সাহোঙ্গা,   বে   করারী       বড়ী    জারেহী   হে,    দিল   হুয়া জা-তা হে পারা পারা, কিস  তারাহ শওক সে মাই চলা থা, আহ! আব ছোট্‌তা হে মদীনা,  কুয়ে   জানা কি রঙ্গী  ফাজাও!    লো    সালাম     আখিরী    আব    হামারা,     কাশ! কিসমত  মেরা  সাথ  দেতী,   জান  কদমো   পে   কুরবান  করতা,  সুযে  উলফত  ছে জলতা  রাহো মাই,    মুঝ কো দিওয়ানা     সমজে  যমানা,  মাই  জাহা    ভী   রহো   মেরে আক্বা,   ইলতিজা   মেরী  মকবুল  ফরমা,  কুছ   না  হুসনে আমল কর সাকা হো, বস্‌ ইয়েহী হে মেরা কুল আছাছা, আঁখ সে আব হুয়া  খুন  জারী, জলদ  ‘আত্তার’   কো পির বুলানা,আল  ওয়াদা   তাজেদারে  মদীনা।  আল   ওয়াদা  তাজেদারে  মদীনা।  আল  ওয়াদা    তাজেদারে  মদীনা।  হিজর    কি     আব     ঘাঢ়ী    আ-রাহী       হে,     আল     ওয়াদা তাজেদারে   মদীনা।  দিল  কা  গুনছা  খুশি  ছে    খিলাথা, আল     ওয়াদা      তাজেদারে     মদীনা।      আই     মুআত্তার, মুআম্বর   হাওয়াওঁ,    আল    ওয়াদা    তাজেদারে   মদীনা। মওত    ভী    ইয়া    ওয়ারী    মেরী    করতী,    আল    ওয়াদা  তাজেদারে মদীনা। ইশক্‌  মে তেরে গুলতা রাহো মাই, আল  ওয়াদা  তাজেদারে   মদীনা।   হো নযর মে মদীনে কা  জলওয়া,  আল  ওয়াদা  তাজেদারে  মদীনা।    নযরে চন্‌দ আশক মাই কর রাহাহো, আল ওয়াদা তাজেদারে মদীনা।   রুহ    পর   ভী    হুয়া   রঞ্জ    তারী,    আল    ওয়াদা  তাজেদারে      মদীনা।এখন       পূর্বে       ন্যায়       শায়খাইনে করীমাঈনের (সিদ্দিকে আকবর ও ফারুকে  আজম رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُمَا) পাক দরবারেও সালাম আরজ করুন, খুব   বেশী    কান্না  করে  করে    দোআ   করুন।    বার  বার হাজির    হতে    পারার     তাওফিক    কামনা    করুন     এবং মদীনায়    ঈমান    ও   ক্ষমার   সাথে    মৃত্যু    ও   জান্নাতুল   বাক্বীতে  দাফন  হতে  পারার  সৌভাগ্য   প্রার্থনা    করুন। দোআ হতে অবসর হওয়ার পর কেঁদে কেঁদে বাম পায়ে (অর্থাৎ   পা  পিছন   দিকে  ফেলে  ফেলে)  ফিরে  আসুন, আর বার বার রাসুল صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم  এর দরবারকে বেদনাপূর্ণ দৃষ্টিতে দেখুন। যেমনভাবে কোন বাচ্চা   নিজের  মায়ের  কোল  থেকে   পৃথক  হয়ে  যাচ্ছে, তখন   সে   ফুঁফিয়ে    ফুঁফিয়ে  কাঁদছে   এবং  তাঁর  দিকে   বেদনার দৃষ্টিতে  থাকাচ্ছে যে,  মা হয়ত এখন  ডাকবে,  যেন  এই  ডাকছে,  আর   ডেকে  স্নেহপূর্ণভাবে   আমাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরবে।

হায়! যদি  বিদায়ের সময়   এমন  হত তাহলে  কতই  না সৌভাগ্য হত যে, যদি মদীনার ছরকার, দয়ালু নবী صَلَّی اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم   ডেকে   নিয়ে   আপন সিনার সাথে লাগিয়ে নিতেন এবং অস্থির প্রাণ  কদমে   পাকের উপর কোরবান হয়ে যেতয়।

হে তামান্নায়ে  ‘আত্তার’  ইয়া রব!    উন কে  কদমো মে ইউ মওত আয়ে।
ঝুম  কর জব ঘিরে     মেরা লাশা,    থা-ম  লে  বাড় কে শাহে মদীনা।

صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب!                          صَلَّی   اللہُ تَعَالٰی   عَلٰی  مُحَمَّد
تُوْبُوْا اِلَی اللہ!                 اَسۡتَغۡفِرُ اللہ
صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب!                            صَلَّی   اللہُ  تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

Top