মদীনায়ে মুনাওয়ারার জেয়ারতের স্থান সমূহ
============
রওজাতুল জান্নাহ

তাজেদারে  মদীনা   صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم    এর  হুযুরা মোবারকা  (যেখানে ছরকার صَلَّی   اللہُ تَعَالٰی   عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم    এর   নূরানী   মাজার   রয়েছে)  এবং   নূরভরা মিম্বরের  (যেখানে  তিনি  صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم  খুৎবা ইরশাদ করতেন)মধ্যবর্তী  স্থান,   যার   দৈর্ঘ্য  ২২ মিটার    ও  প্রস্থ   ১৫  মিটার।    ‘রওজাতুন   জান্নাহ’অর্থাৎ জান্নাতের বাগান। যেমন; আমাদের প্রিয় আক্বা صَلَّی اللہُ تَعَالٰی   عَلَیْہِ     وَاٰلِہٖ  وَسَلَّمইরশাদ  করেছেন:مَابَيْنَ   بَيْتِيْ  وَ مِنْبَرِيْ  رَوْضَةٌ   مِنْ رِيَاضِ  الْجَنَّةِ  ــــــ অর্থাৎ  আমার  ঘর এবং মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানটি জান্নাতের বাগান গুলোর মধ্য   হতে   একটি   বাগান।   (বুখারী,   ১ম   খন্ড,   ৪০২  পৃষ্ঠা,        হাদীস:        ১১৯৫)        সাধারণভাবে        লোকজন কথাবার্তার    মধ্যে      এটাকে    “রিয়াজুল    জান্নাহ”     বলে থাকে। কিন্তু মূলত শব্দটি হচ্ছে ‘রওজুল জান্নাহ’।

ইয়ে পিয়ারী পিয়ারী কিয়ারী তেরে খানা বাগ কি’
সরদ   ইছ    কি   আ-ব   ও      তা-ব   ছে    আ-তিশ    সাকার কিহে।(হাদায়িকে বখশিশ শরীফ)

صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب!                           صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی  عَلٰی   مُحَمَّد

মসজিদে কুবা
========
মদীনায়ে তাইয়্যেবা থেকে  কমপক্ষে তিন কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের   দিকে   “কুবা”   নামে   একটি   পুরাতন  নগরী রয়েছে। যেখানে  এই বরকতময় মসজিদ নির্মাণ করা    হয়েছে।    কোরআন    মজীদ    ও    অসংখ্য    বিশুদ্ধ  হাদীসে মোবারকার মধ্যে এর ফযীলত  খুবই  গুরুত্বসহ বর্ণিত   হয়েছে।  আশিকানে  রাসুলগণ   মসজিদে   নববী শরীফ হতে  মধ্যম গতিতে পায়ে হেঁটে প্রায় ৪০ মিনিট পথ   চললে   ‘মসজিদে   কুবা’      পৌঁছে   যেতে     পারেন। বুখারী  শরীফে  বর্ণিত   আছে:    প্রত্যেক  শনিবারে  হুযুর صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم   কখনো পায়ে চলে আর কখনো       আরোহী       হয়ে        এখানে       তাশরীফ       নিয়ে  যেতেন।(বুখারী,       ১ম     খন্ড,     ৪০২      পৃষ্ঠা,      হাদীস:  ১১৯৩)

ওমরার সাওয়াব
========
নবী করীম صَلَّی اللہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم     এর  দুইটি  বাণী:  ﴾১﴿  “মসজিদে  কুবাতে  নামায  পড়াটা  ওমরার  সমতুল্য।”   (তিরমিযি,  ১ম  খন্ড,  ৩৪৮  পৃষ্ঠা,  হাদীস:  ৩২৪)  ﴾২﴿  “যে ব্যক্তি নিজ    ঘরে অযু  করে,  অতঃপর  মসজিদে কুবায় গিয়ে নামায পড়ে, তবে তার ওমরার সাওয়াব মিলবে।(ইবনে  মাযাহ,  ২য় খন্ড,  ১৭৫ পৃষ্ঠা, হাদীস নং: ১৪১২)

সায়্যিদুনা    হামযা    رَضِیَ    اللہُ    تَعَالٰی    عَنۡہُ    এর    মাযার  শরীফ
========
তিনি رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ  উহুদ    যুদ্ধে   ৩য় হিজরী  সনে শাহাদত    বরণ     করেন।    তাঁর     মাযার      শরীফ     উহুদ শরীফের      নিকটেই      অবস্থিত।       তাঁর       সঙ্গে      হযরত সায়্যিদুনা মুছয়াব বিন  উমাইর رَضِیَ   اللہُ    تَعَالٰی عَنۡہُ ও হযরত   সায়্যিদুনা   আব্দুল্লাহ  বিন জাহাশ رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ এর মাযারদ্বয়ও রয়েছে।  এমনকি   উহুদ   যুদ্ধে যে ৭০  জন সাহাবায়ে  কিরাম عَلَیۡہِمُ الرِّضۡوَان  শাহাদাতের  অমিয়  সুধা    পান  করেছেন,  তাঁদের  মধ্যে     অধিকাংশ শোহাদায়ে  উহুদ   ঐ  স্থানে   একসাথে  তৈরী  করা    চার দেয়ালের বেষ্টনীর মধ্যে আরাম করছেন।

শোহাদায়ে উহুদকে সালাম করার ফযীলত
========
সায়্যিদুনা শাইখ  আব্দুল  হক মুহাদ্দিসে দেহলভী  رَحۡمَۃُ اللہِ     تَعَالٰی     عَلَیْہِ     বর্ণনা     করেছেন:     যে     ব্যক্তি     এই  শোহাদায়ে   উহুদগণের  মাযার  শরীফ    অতিক্রম   করে  এবং    তাদেরকে   সালাম    করে,   তার   উপর    কিয়ামত পর্যন্ত   ঐ   শোহাদায়ে   উহুদগণ   সালাম   প্রেরণ   করতে  থাকেন। শোহাদায়ে  উহুদগণ  عَلَیۡہِمُ الرِّضۡوَان বিশেষত সায়্যিদুশ শোহাদা সায়্যিদুনা হামযা رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ এর  মাযার থেকে অনেকবার    সালামের জবাব  দেয়ার  আওয়াজ শোনা গেছে। (জযবুল কুলুব, ১৭৭ পৃষ্ঠা)

সায়্যিদুনা    হামযা    رَضِیَ   اللہُ   تَعَالٰی  عَنۡہُ   এর  খিদমতে সালাম
========
اَلسَّلَامُ عَلَیْکَ یَا سَیِّدَنَا حَمْزَۃُ ط اَلسَّلَامُ عَلَیْکَ یَاعَمَّ رَسُوْلِ اللہِ  ط     اَلسَّلَامُ   عَلَیْکَ  یَاعَمَّ  نَبِیِّ  اللہِ  ط  اَلسَّلَامُ   عَلَیْکَ یَاعَمَّ  حَبِیْبِ  اللہِ ط اَلسَّلَامُ   عَلَیْکَ یَا   عَمَّ  الْمُصْطَفٰی  ط    اَلسَّلَامُ عَلَیْکَ یَا سَیِّدَ الشُّہْدَآءِ  وَ یَا اَسَدَ اللہِ  وَاَسَدَ  رَسُوْلِہٖ ط     اَلسَّلَامُ  عَلَیْکَ    یَا      سَیِّدَنَا  عَبْدَاللہِ   بۡنَ   جَحْـشٍ   ط  اَلسَّلَامُ  عَلَیْکَ یَا  مُصْعَبَ  بْنَ عُـمَیْرٍط   اَلسَّلَامُ عَلَیْکُمْ  یَا شُھَدَآءَ اُحُدٍکَآفَّۃً عَامَّۃً وَّرَحْمَۃُ اللہِ وَبَرَکَاتُہٗ ط

অনুবাদ:   হে   সায়্যিদুনা    হামযা   رَضِیَ   اللہُ    تَعَالٰی   عَنۡہُ! আপনার   উপর  সালাম    বর্ষিত  হোক,   হে  রাসুলুল্লাহর  চাচা!      আপনার      উপর      সালাম      বর্ষিত      হোক,      হে  নাবিয়াল্লাহর চাচা! আপনার উপর সালাম বর্ষিত হোক, হে   হাবিবাল্লার   চাচা!   আপনার     উপর   সালাম   বর্ষিত   হোক,  হে  মুস্তফার চাচা!  আপনার উপর সালাম বর্ষিত   হোক,   হে  শহীদদের  সরদার!  আপনার    উপর  সালাম বর্ষিত  হোক, হে   আল্লাহর  সিংহ  ও রাসুলাল্লাহর সিংহ! আপনার   উপর   সালাম    বর্ষিত   হোক,     হে    সায়্যিদুনা  আবদুল্লাহ  বিন  জাহাশ  رَضِیَ  اللہُ  تَعَالٰی  عَنۡہُ!  আপনার  উপর   সালাম  বর্ষিত   হোক,  হে  মুছআব   বিন   উমাইর  رَضِیَ   اللہُ    تَعَالٰی    عَنۡہُ!   আপনার   উপর    সালাম   বর্ষিত হোক,  হে  সকল    শোহাদায়ে  উহুদগণ  عَلَیۡہِمُ  الرِّضۡوَان! আপনাদের সকলের উপর  ব্যাপক হারে সালাম  বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

শোহাদায়ে উহুদকে একত্রে সালাম প্রদান
========
اَلسَّلَامُ عَلَیْکُمْ  یَا شُھَدَآءُ   یَا سُعَدَآءُ   یَا نُجَبَآءُ  یَا نُقَبَآءُ یَآ  اَھْلَ  الصِّدْقِ  وَالْوَفَآءِط   اَلسَّلَامُ  عَلَیْکُمْ  یَا   مُجَاھِدِیْنَ  فِیْ سَبِیْلِ اللہِ حَقَّ جِھَادِہٖ ط ﴿سَلَامٌ عَلَیْکُمْ بِمَا صَبَرْتُمْ فَنِعْمَ عُقْبَی الدَّارِط﴾ اَلسَّلَامُ  عَلَیْکُمْ یَا  شُھَدَآءَ  اُحُدٍکَآفَّۃً عَآمَّۃً وَّ رَحْمَۃُ اللہِ وَبَرَکَاتُہٗ ۔

অনুবাদ:  আপনাদের  উপর      সালাম  বর্ষিত   হোক,   হে শহীদগণ,      হে      সৎকর্মকারীগণ,        হে       ভদ্রগণ,       হে সরদারগণ,     হে     সততা     ও     অঙ্গিকার      পূর্ণকারীগণ!  আপনাদের          উপর        সালাম        বর্ষিত         হোক,         হে  জিহাদকারীগণ!         আল্লাহর        পথে         জিহাদের         হক আদায়কারীগণ!      ﴾কানযুল      ঈমান      থেকে      অনুবাদ:  আপনাদের   উপর   সালাম   বর্ষিত    হোক,    আপনাদের   ধৈর্য্যের           ফলশ্রুতিতে,           আর           কতইনা           উত্তম  আপনাদেরকে   পরকাল।﴿    আপনাদের   উপর   ব্যাপক  হারে   সালাম  বর্ষিত  হোক,   হে   সকল   উহুদ  শহীদগণ এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

জিয়ারতগাহ সমূহে পৌঁছার দু’টি পদ্ধতি
========
প্রিয়   মক্কা   মদীনার   জিয়ারতকারীগণ!   জেয়ারত   করা  এবং জেয়ারতের স্থান সমূহের দীর্ঘ বিশতারিত বিবরণ  ও  পরিচিতি  “রফিকুল  হারামাঈনে”  তুলে  ধরা  হয়নি।  উৎসুক    আশিকানে    রাসুলগণ    যিয়ারত    এবং    ঈমান  উজ্জীবিত কারী ঘটনা  সমূহের বিশতারিত জানার জন্য তবলীগে           কোরআন           ও          সুন্নাতের           বিশ্বব্যাপী অরাজনীতিক  সংগঠণ  দা’ওয়াতে  ইসলামীর  প্রকাশনা  প্রতিষ্ঠান    মাকতাবাতুল   মদীনা   থেকে   প্রকাশিত     উর্দূ কিতাব  “আশিকানে   রাসুল  কি  হিকায়াতে   মাআ  মক্কে মদীনে   কি জেয়ারত” বেশী করে   অধ্যয়ণ   করুন  এবং আপনার  ঈমানকে  তাজা   করুন।    অবশ্য  কিতাব  পাঠ করে   প্রত্যেক   ব্যক্তি   জেয়ারতের   ঐ   সকল   জায়গায়  পৌঁছাতে  পারবে এটা  খুবই  কঠিণ ব্যাপার।  জেয়ারত  দু’ধরণের হয়ে থাকে; একটা  এই যে:  মসজিদে  নববী  عَلٰی صَاحِبِہَا الصَّلٰوۃُ وَالسَّلَام এর বাইরে সকাল বেলায় গাড়ী চালকগণ জিয়ারাহ! জিয়ারাহ! বলে বলে ডাকতে থাকে। আপনি তাদের গাড়ীতে উঠে যাবেন, আর এটা আপনাকে মসজিদে খামছা,  মসজিদে কুবা ও মাযারে   সায়্যিদুনা  হামযা  رَضِیَ  اللہُ  تَعَالٰی  عَنۡہُ  এ  নিয়ে  যাবে।  দ্বিতীয়টা  এই  যে:  মক্কা  মদীনার আরো   মোবারক স্থান জেয়ারত   করতে    চাইলে   আপনাকে    এমন   এক   জন লোকের   সন্ধান    করতে   হবে   যিনি    পারিশ্রমিক   নিয়ে জেয়ারত করিয়ে থাকেন।

صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب!                             صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی  عَلٰی مُحَمَّد

Top